শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

ডলারসংকটেও ফল আমদানি বেড়েছে

ফাইল ছবি
আপডেটেড
৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১২:০৪
আসাদুজ্জামান নূর
প্রকাশিত
আসাদুজ্জামান নূর
প্রকাশিত : ৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১২:০৩

দেশে ডলারসংকটের মধ্যে মে মাসে ফল আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে সরকার। জুলাইতে বন্ধ করে দেয়া হয় পণ্য আমদানিতে ব্যাংকের ঋণসুবিধা। মনে করা হচ্ছিল, এসবের প্রভাবে দাম বেড়ে যাওয়ায় ফলের আমদানি কমে আসবে। কিন্তু ঘটেছে তার উল্টোটা। কমেনি, বরং আরও বেড়েছে ফলের আমদানি।

সুস্বাদু ও পুষ্টিকর আপেল, আঙুর, কমলা, মাল্টাসহ কোনো ফলের আমদানি কমেনি। প্রতি মাসে আগের মাসের তুলনায় তা বেড়ে চলেছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের পঞ্চম মাস নভেম্বরের প্রথম মাস জুলাইয়ের চেয়ে বিভিন্ন ধরনের ফল আমদানি ৬১ হাজার ৫৪০ মেট্রিক টন বেশি হয়েছে। শতকরা হিসাবে যা ২২০ শতাংশ বেশি। জুলাইয়ে ফল আমদানি হয়েছিল ২৭ হাজার ৯৪৫ টন। ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত তা প্রায় সাড়ে তিন গুণ বেড়ে ৮৯ হাজার ৪৮৪ টনে উঠেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ‘ফ্রেশ ফ্রুট’ ও ‘ড্রাই ফ্রুটস’- এই দুই ক্যাটাগরিতে দেশে সব ধরনের ফল আমদানি করা হয়। ড্রাই ফ্রুটস ক্যাটাগরিতে খেজুর, কিশমিশ ও বাদাম আমদানি করা হয়। ফ্রেশ ফ্রুটস ক্যাটাগরিতে রয়েছে আপেল, কমলা, নাশপাতি, আঙুর, মাল্টা, মান্দারিন, আনার, ড্রাই চেরি, ড্রাগন, স্ট্রবেরিসহ ৫২ রকমের ফল। এসব ফল আমদানি হয় দক্ষিণ আফ্রিকা, চীন, নিউজিল্যান্ড, মিসর, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, ভারত, থাইল্যান্ড, তিউনিসিয়া, পোল্যান্ড ও ব্রাজিল থেকে।

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক রাকিব হোসেন বলেন, ‘আমাদের চাহিদার ৪০ শতাংশের মতো ফল দেশেই উৎপাদন হয়, বাকিটা আমদানি করতে হয়।’তিনি বলেন, ‘আমদানি করা এসব ফলের উৎপাদন দেশে নেই বললেই চলে। এ কারণে এসব ফলের প্রায় সবটাই আমদানি করে চাহিদা পূরণ করা হয়। সবচেয়ে বেশি আমদানি হয়ে থাকে আপেল, কমলা, আঙুর ও মাল্টা।’

চাহিদা মেটাতে প্রতি বছর দেশে বিপুল পরিমাণ ফল আমদানি করতে হয়। এর জন্য ব্যয় হয় বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও বেশ চাপের মধ্যে পড়েছে। এই চাপ সামাল দিতে ব্যয় সংকোচনের জন্য নানা পদক্ষেপ নেয় সরকার। সেই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে আমদানি ব্যয় কমাতে নেয়া হয় বিভিন্ন পদক্ষেপ। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ যাতে আরও কমে না যায়, সে জন্য নেয়া হয় এসব পদক্ষেপ।

গত ২৪ মে অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসজাত পণ্যের পাশাপাশি সব ধরনের ফল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে অতিরিক্ত ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বা রেগুলেটরি ডিউটি (আরডি) আরোপ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তার আগে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্কহার ছিল মাত্র ৩ শতাংশ। এরপর সেটি দাঁড়ায় ২৩ শতাংশে। প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকেই তা কার্যকর করা হয়। ফল আমদানিতে কাস্টমস ডিউটি (সিডি) ২৫ শতাংশ, ভ্যাট ১৫ শতাংশ, অগ্রিম আয়কর ৫ শতাংশ এবং অ্যাডভান্স ট্রেড ভ্যাট ৪ শতাংশ নির্ধারিত ছিল। ওই ঘোষণার পর থেকে এর সঙ্গে বাড়তি ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক পরিশোধ করতে হয় আমদানিকারকদের।

এত সব বিধিনিষেধের পরও ধারাবাহিকভাবে ফল আমদানি বেড়েছে। জুলাই মাসে ফল আমদানি হয় ২৭ হাজার ৯৪৫ মেট্রিক টন। আগস্টে ৭ হাজার ৫৩৯ মেট্রিক টন বেড়ে ফল আমদানি হয় ৩৫ হাজার ৪৮৫ মেট্রিক টন। আগস্টের তুলনায় ১০ হাজার ৩০৬ মেট্রিক টন আমদানি বৃদ্ধি পায় সেপ্টেম্বরে। আমদানি হয় ৪৫ হাজার ৭৯১ মেট্রিক টন ফল। অক্টোবরে আমদানি দাঁড়ায় ৫৩ হাজার ৬৮১ মেট্রিক টনে, যা আগের মাসের তুলনায় ৭ হাজার ৮৯১ মেট্রিক টন বেশি। নভেম্বরে আমদানি হয়েছে ৮৯ হাজার ৪৮৪ মেট্রিক টন, যা আগের মাসের তুলনায় ৩৫ হাজার ৮০৩ মেট্রিক টন, যা প্রায় ৬৭ শতাংশ বেশি।

এই তথ্যে দেখা যাচ্ছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের চেয়ে সদ্য শেষ হওয়া নভেম্বর মাসে ২২০ শতাংশের বেশি ফল আমদানি হয়েছে। অর্থাৎ জুলাই মাসের চেয়ে নভেম্বরে ফল আমদানি বেড়েছে ৬১ হাজার ৫৩৪ টন। তবে গত বছরের তুলনায় এ সময় ফল আমদানি কমেছে ১৭ শতাংশের বেশি। গত বছর জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে ফল আমদানি হয় ৩ লাখ ৪ হাজার ৯১৭ দশমিক ২২ মেট্রিক টন।

বিপরীতে চলতি বছর আমদানি হয়েছে ২ লাখ ৫২ হাজার ৩৮৬ দশমিক ৯১ মেট্রিক টন, যা আগের বছরের তুলনায় ৫২ হাজার ৫৩০ দশমিক ৩১ মেট্রিক টন বা ১৭ দশমিক ২২ শতাংশ কম।

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক রাকিব হোসেন বলেন, ‘ডলারের দাম বেড়ে গেছে। অতিরিক্ত শুল্ক বসানো হয়েছে। আমদানি খরচ বেড়ে যাচ্ছে, ফলেও দাম বেশি পড়ছে।

বেশি দামে বিক্রি করতে গেলে মানুষ কিনছে না। তার ওপর ডলারসংকট থাকায় আমদানির এলসি খুলতেও সমস্যা হচ্ছে। তাহলে আমদানি কমবে না কেন? তাই ফল আমদানি কমেছে।’

আমদানির পরিসংখ্যান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সারা দেশে আমাদের সংগঠনের সদস্য রয়েছে। যে যার প্রয়োজন মতো আমদানি করে। কত আমদানি হচ্ছে সেটার হিসাব আমাদের কাছে নেই, রাখাও সম্ভব নয়। সদস্যরা বিভিন্নভাবে আমদানি ও বিক্রি করে থাকে।’

ফল আমদানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা বা কড়াকড়ি ছিল না বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক জিএম আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, ‘ফলের ওপর বা কমার্শিয়াল এলসির ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল না বা নেই। এক্সটার্নাল সাইডে অসুবিধার কারণে ডলারের যে ডিমান্ড, সাপ্লাইয়ে সমস্যার কারণেই একটু সমস্যা হতে পারে। তবে কেউ যদি ওপেন করে দেখে বিধিনিষেধ নেই, কারণ এটা হলো খাদ্যদ্রব্য।’

তিনি বলেন, ‘আমদানি যে হচ্ছে, তা আশপাশের ছোটখাটো দোকানে ফলের সমারোহ দেখলেই বোঝা যায়। আজকেও কমলা কিনলাম ২০০ টাকা কেজি। ভালো এবং অনেক বড় বড় কমলা। তার মানে যতটা চিন্তা করা হচ্ছে, অবস্থা ততটা খারাপ নয়। আমদানিতে খুব বেশি প্রভাব পড়েনি।’
অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও ফলের ক্রেতা কমেনি। মতিঝিলের খুচরা ফল বিক্রেতা সালমান ইসলাম বলেন, ‘ফলের সরবরাহও আছে, ক্রেতাও আছে। দাম বেশি। বিক্রি একটু কম। তাই বলে ক্রেতা নেই, এমন না।’

তিনি বলেন, ‘আগের বছর বাজারে যে পরিমাণ আমদানি হতো, তার চেয়ে কম হচ্ছে। এটা পাইকারি বাজারে গেলেই বোঝা যায়। আগে যেখানে ১০ ট্রাক মাল নামতে দেখা যেত, সেখানে ৭ ট্রাক দেখা যায়।’

আমদানিকারক সংগঠনের নেতা রাকিব হোসেন বলেন, ‘ফল খাওয়া বিলাসিতা নয়। এটা মানুষের শরীরের জন্য প্রয়োজন। এ জন্য মানুষ এটাকে আর বাড়তি খরচ মনে করে না। এ জন্য ফলের চাহিদা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘শুল্কারোপ ও ডলারের মূল্য বৃদ্ধিতে খরচ বেড়েছে ফল আমদানিতে, যার কারণে প্রতিটি ফলের দামই বেড়েছে। আগের বছরের তুলনায় বিক্রি কিছুটা কম, আমদানিও কম। তবে ক্রেতা এখনো আছে।’

আমদানি খরচ বৃদ্ধির প্রভাবে ফলের দাম বেড়েছে। খুচরা বাজারে ফল কেজিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত।

খুচরা বিক্রেতা ইলিয়াস হোসেন কিরণ বলেন, ‘ফুজি আপেল আগে বিক্রি করতাম ১৮০ টাকা কেজি, সেটা এখন ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা। মাল্টা ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, সেটা এখন ২৫০০ টাকা। কমলার কেজি ছিল ১২০ টাকা, বর্তমানে সেটা ২০০ টাকা কেজি। এখন মৌসুম শুরু হয়েছে। ভারতীয় কমলা আসতে শুরু করেছে। দাম হয়তো একটু কমতে পারে।’

ক্রেতা জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘ফলের দাম তো অনেক বেশি। আগের তুলনায় কম কিনি। পরিবারের সদস্যদের পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য না কিনে উপায় নেই।’


বাজারে চড়া মাছ-সবজির দাম, ক্রেতাদের ক্ষোভ

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১৭ মে, ২০২৪ ১৯:১০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাজারে এখনো চড়া মাছের দাম। অধিকাংশ মাছের দাম তেমন একটা কমেনি। আগের মতোই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। বিক্রেতাদের দাবি, গরমের কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম কিছুটা বেড়েছে। অন্যদিকে, বাজারে নিত্যপণ্যের দামের বিষয়ে বরাবরের মতোই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।

আজ শুক্রবার রাজধানীর একটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ মাছ। এর মধ্যে রুই ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা, কাতলা ৩২০ টাকা, কালবাউশ ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, পাবদা ৫৪০ টাকা ও ইলিশ মাছ ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজির বাজারও রয়েছে গত সপ্তাহের মতোই। বাজারে প্রতি পিস ফুলকপির দাম ৬০ টাকা, প্রতি পিস বাঁধা কপির দাম ৬০ টাকা ও প্রতি পিস লাউয়ের দাম ৪০ টাকা। এ ছাড়া, প্রতি কেজি গাজর ৭০ টাকা, পেঁপে ৮০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৫০ টাকা ও পটল ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এক কাঁচামাল ব্যবসায়ী বলেন, ‘সরবরাহ কমে যাওয়ার জিনিসপত্রের দাম একটু বাড়তি। গরম কমলে সামনে দাম কিছুটা কমতে পারে।’

সবজির এমন দামে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। একজন চাকরিজীবী বলেন, ‘আমাদের স্বল্প বেতনে প্রতিদিন মাছ বা মাংস খাওয়া যায় না। কিন্তু সবজির দামও যদি এমন বাড়তি যায়, তাহলে এটা খাওয়াও কমিয়ে দিতে হবে।’

বাজারে মুরগির মাংসের দামও আগের মতোই রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকায়, লেয়ার ৩৪০ টাকায় ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৯০ টাকায়। এছাড়া, প্রতি কেজি হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়।

বিষয়:

সোনার অলংকার কিনতে ক্রেতাকে ৬ শতাংশ হারে মজুরি দিতে হবে

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বাজারে সোনার দামে অস্থিরতার মধ্যেই নতুন সিদ্ধান্ত নিল বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। তারা এবার সোনার অলংকারে ন্যূনতম ৬ শতাংশ মজুরি নির্ধারণ করেছে। একই সঙ্গে সোনার অলংকার পরিবর্তনে ১০ শতাংশ এবং ক্রেতার কাছ থেকে অলংকার ক্রয়ের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ বাদ দেওয়ার নিয়ম করেছে বাজুস।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় বাজুস। এতে বলা হয়, সম্প্রতি জুয়েলার্স সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সোনার অলংকার বিক্রির সময় ক্রেতার কাছ থেকে ৬ শতাংশ হারে মজুরি নিতে পরামর্শ দিয়েছে সমিতি। এর পেছনে সমিতির ব্যাখ্যা হচ্ছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সোনার অলংকার বিক্রিতে ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। সোনার অলংকার বিক্রিতে ভারতে ১০, শ্রীলঙ্কায় ৮, চীনে ১৫, ইতালিতে ২০, হংকংয়ে ৩০, মালয়েশিয়ায় ৩৫, অস্ট্রেলিয়ায় ২০, যুক্তরাষ্ট্রে ৬ ও যুক্তরাজ্যে ১৪ শতাংশ মজুরি নেওয়া হয়।

বাজুস ২০২২ সালের আগস্টে প্রতি গ্রামে কমপক্ষে ৩০০ টাকা মজুরি নিতে সদস্যপ্রতিষ্ঠানকে পরামর্শ দেয়। তাতে প্রতি ভরিতে মজুরি দাঁড়ায় ৩ হাজার ৫০০ টাকা। তবে অধিকাংশ জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের ধরে রাখতে মজুরিতে ছাড় দিয়ে আসছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জুয়েলার্স সমিতির একজন সদস্য বলেন, ধরা যাক, বর্তমানে এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ টাকা। তাহলে ৬ হাজার টাকা মজুরি দিতে হবে। আর সোনা ও মজুরির ওপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হবে। নতুন করে মজুরি পুনর্নির্ধারণের ফলে ব্যবসায়ে নতুন করে অসুস্থ প্রতিযোগিতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সোনার অলংকার পরিবর্তন বা বিক্রির ক্ষেত্রে জুয়েলার্স সমিতির নিদের্শনা হলো, পুরোনো অলংকার বিক্রির ক্ষেত্রে এর ওজন থেকে ১৫ শতাংশ বাদ দিয়ে মূল্য নির্ধারণ করতে হবে, যা এত দিন ছিল ১৩ শতাংশ। এ ছাড়া সোনার অলংকার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অলংকারের ওজন থেকে ১০ শতাংশ বাদ দিয়ে মূল্য নির্ধারণ করা হবে। এত দিন এই হার ছিল ৯ শতাংশ।

কয়েক মাস ধরেই দেশের বাজারে সোনার দামে অস্থিরতা চলছে। সর্বশেষ গত রোববার সোনার দাম ভরিপ্রতি সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮৩২ টাকা বেড়েছে। তাতে হলমার্ক করা ২২ ক্যারেট মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ২৮২ টাকা।


মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনে রেকর্ড

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৬ মে, ২০২৪ ০০:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি বছরের মার্চে মোবাইল ব্যাংকিং বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (এমএফএস) মাধ্যমে রেকর্ড ১.৪৮ লাখ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, দেশে এমএফএস চালু হওয়ার পর থেকে এটিই সর্বোচ্চ মাসিক লেনদেন।

সংশ্লিষ্টদের মতে- মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার সম্প্রসারণ, রমজান ও ঈদের কেনাকাটার মৌসুমে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে টাকা পাঠানোর কারণে মোবাইলে ডিজিটাল লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছে।

আগের মাস ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে ১৮,১৯৫ কোটি টাকা বেশি বা ১৪ শতাংশ বেশি লেনদেন হয়েছে এই মাধ্যমে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, এর আগে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ২০২৩ সালের জুনে। সেই সময়ে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ১.৩২ লাখ কোটি টাকা। এ ছাড়া এমএফএসের মাধ্যমে সর্বপ্রথম ১ লাখ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে ২০২২ সালের এপ্রিলে, সে সময়ে লেনদেন হয়েছে ১.০৭ লাখ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে- দেশে বর্তমানে বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশ, মাই ক্যাশ, শিওর ক্যাশসহ বিভিন্ন নামে ১৩টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে।

খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শহর কিংবা গ্রামে– এক মুহূর্তে দেশের যেকোনো স্থানে টাকা পাঠানোর সুবিধার কারণে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। দিন দিন গ্রাহক সংখ্যা যেমন বাড়ছে, লেনদেনের পরিমাণও তেমনি বাড়ছে।

২০২৪ সালের মার্চ শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা ২২ কোটি ৪০ লাখের বেশি। এর মধ্যে শহরে গ্রাহক আছে ৯ কোটি ৭৭ লাখ। এ ছাড়া গ্রামে রয়েছে ১২ কোটি ৬২ লাখ। এসব অ্যাকাউন্টের মধ্যে পুরুষ ১৩ কোটি এবং নারী গ্রাহক ৯ কোটি।

এ বিষয়ে বিকাশের করপোরেট কমিউনিকেশনস অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, মার্চে ক্যাশ আউট, ক্যাশ ইন, মার্চেন্ট পেমেন্ট, স্যালারি ডিসবার্সমেন্ট পূর্বের সকল সময়ের তুলনায় বেশি হয়েছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে রোজা ও ঈদ। সাধারণত, আমাদের স্বজনরা অন্য সময় না পাঠালেও ঈদের সময়ে কিছু কিছু পরিমাণে খরচ মেটানোর জন্য টাকা পাঠিয়ে থাকেন।

তিনি বলেন, এই সময়ে অনেক গার্মেন্টস মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে স্যালারি পাঠিয়েছে। এ ছাড়া এই সময়ে কেনাকাটায় ব্যাপক লেনদেন হয়েছে।

সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিশেষ করে সরকারি সব ধরনের ভাতা, উপবৃত্তি ও প্রণোদনা বিতরণে মোবাইল আর্থিক সেবা খাত ব্যবহারের সিদ্ধান্ত এ খাতের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়িয়েছে, যোগ করেন তিনি।

নগদের একজন কর্মকর্তা বলেন, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসে নগদের সেবা দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। আমরা গ্রাহকদের চাহিদার আলোকে নতুন নতুন সেবা চালু করছি। এ ছাড়া মানুষজন এখন ব্যাংকে গিয়ে লাইনে না দাঁড়িয়ে সহজেই এমএফএসের মাধ্যমে তাদের প্রিয়জনদের টাকা পাঠিয়ে দিতে পারছেন। আমরা মনে করি, সামনের সময়ে এটি আরও জনপ্রিয় হবে।

প্রিলে প্রায় প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার মতো লেনদেন হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে ডিজিটাল কেনাকাটায় গ্রাহকদের বিভিন্ন অফার দেওয়া হয়েছিল, ফলে লেনদেনের পরিমাণ আরও বেড়েছে, যোগ করেন তিনি।

২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্যদিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের যাত্রা শুরু হয়।

এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সিংহভাগই বিকাশের দখলে। এরপরে রয়েছে নগদ।


১১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ

২০২৪-২০২৭ অর্থবছরের নীতিমালার খসড়া নীতিগত অনুমোদন
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রপ্তানি নীতিমালা ২০২৪-২৭-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। একই সঙ্গে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী আমদানি বা স্থানীয়ভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের সময়সীমা ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

আজ বুধবার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। করোনায় আক্রান্ত অর্থমন্ত্রী ভার্চুয়ালি বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠকে শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান জানান, টিসিবির মাধ্যমে জরুরি প্রয়োজনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী আমদানি বা স্থানীয়ভাবে ক্রয়ের ক্ষেত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৬-এর ৬৮(১) ধারার আওতায় এবং একই আইনের ৩২ ধারায় উল্লেখ করা ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণে পণ্যসামগ্রী সংগ্রহের মেয়াদ চলতি বছরের ২৬ মে শেষ হয়ে যাবে। এ জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এ মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।

রপ্তানি নীতি ২০২৪-২৭ বিষয়ে সচিব জানান, রপ্তানি নীতি ২০২৪-২৭ অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। এটি পরে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাঠানো হবে।

রপ্তানি নীতির প্রেক্ষাপট সম্পর্কে তিনি জানান, স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায় থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ, কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহায়তা দেওয়া, রপ্তানি খাতে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক কৌশল- এসব বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, রপ্তানিকারকদের উৎসাহিত করার জন্য আর্থিক প্রণোদনার বিকল্প পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ২০২৪-২০২৭ মেয়াদে ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রপ্তানি প্রক্রিয়ায় অনুসরণ করা বিভিন্ন ধাপ এখানে (রপ্তানি নীতি) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া খাতের সম্ভাবনাময় নতুন কিছু পণ্য ও সেবা যেমন- সবজি এবং হস্ত ও কারু পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিশেষ উন্নয়নমূলক খাতে স্পিনিং, ফেব্রিক্স, ম্যানুফ্যাকচারিং, ডাইং, প্রিন্টিং অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ওষুধশিল্প ও মেডিকেল ইকুইপমেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বর্ষ পণ্য হস্তশিল্পকে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সচিব বলেন, রপ্তানি নিষিদ্ধ পণ্য তালিকা এবং শর্তসাপেক্ষে রপ্তানি পণ্য তালিকা হালনাগাদ ও এইচএস কোডের হেডিংসহ উল্লেখ করা হয়েছে। রপ্তানি-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কমিটি ও রপ্তানি-সংক্রান্ত কারিগরি কমিটি গঠন ও কার্যপরিধি সন্নিবেশিত করা হয়েছে।

অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, রপ্তানি খাতের চাহিদা এবং বিশ্ববাণিজ্য পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সামঞ্জস্য নীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে প্রতি তিন বছর অন্তর রপ্তানি নীতি প্রণয়ন করা হয়। বিদ্যমান রপ্তানি নীতি ২০২১-২০২৪-এর মেয়াদ আগামী ৩০ জুন শেষ হবে। এই ধারাবাহিকতায় রপ্তানি নীতি ২০২৪-২৭ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে।


সাড়ে ৫ মাস পর হিলি দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হিলি প্রতিনিধি

অবশেষে দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ মাস পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে ভারতীয় একটি ট্রাকে ৩০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে পেঁয়াজবোঝাই ভারতীয় একটি ট্রাক হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আসে। হিলি স্থলবন্দরের মেসার্স আরএসবি ট্রেডার্স এসব পেঁয়াজ আমদানি করেছে।

পেঁয়াজ আমদানিকারক মেসার্স আরএসবি ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আহমেদ সরকার বলেন, ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা থাকায় দীর্ঘ সাড়ে ৫ মাস পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা গত ৪ মে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়; কিন্তু এরপরও ৪০ শতাংশ শুল্ক থাকায় পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে আমদানিকারকরা চিন্তিত ছিলেন। তবে নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে ১১ দিন পর মঙ্গলবার থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এসব পেঁয়াজ প্রতি মেট্রিক টন ৫৫০ ডলারে আমদানি করা হয়েছে। যদি আমদানি স্বাভাবিক থাকে তাহলে পেঁয়াজের দাম কোরবানি ঈদে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই।


দেশে প্রবাসী আয়ে সুবাতাস বইছে

মে মাসের ১০ দিনে রেমিট্যান্স এল ৮১ কোটি ডলার
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে প্রবাসী আয়ে সুতাবাস বইছে। চলতি মে মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহের ধারা ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এ মাসের প্রথম ১০ দিনে এসেছে ৮১ কোটি ৩৭ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। সে হিসাবে প্রতিদিন গড়ে এসেছে আট কোটি ১৩ লাখ ডলার, যা আগের তুলনায় বেশি বলে জানা গেছে।

আজ সোমবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলে প্রতি দিনে দেশে এসেছিল ৬ কোটি ৮১ লাখ ২ লাখ ডলার। আর আগের বছরের (২০২৩ সাল) মে মাসে প্রতিদিন প্রবাসী আয় এসেছিল ৫ কোটি ৬৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৬৬ ডলার।

চলতি বছরের শুরু থেকে রেমিট্যান্সের পালে উচ্চগতির হাওয়া লাগতে শুরু করেছে। গত জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৩০ লাখ ৬০ হাজার ডলার এসেছে।

গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রতি মাসের প্রথম ১০ দিনে ৭০ কোটি মার্কিন ডলারের আশেপাশে রেমিট্যান্স এসেছে। তবে এবার মে মাসের প্রথম ১০ দিনেই এসেছে সবচেয়ে বেশি।

আর বৈদেশিক আয় দেশে আনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো।

বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৭১ কোটি ৫১ লাখ ৩০ হাজার ডলার, রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৯ কোটি ৩৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার।

ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রথম ১০ দিনে একক ব্যাংক হিসাবে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে
ন্যাশনাল ব্যাংক।

ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২৭ কোটি ২৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার, ন্যাশনাল ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে আট কোটি ২৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

এ ছাড়া জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ছয় কোটি ৫২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে তিন কোটি ৮৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের তিন কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার এসেছে।


‘দক্ষ নারীকর্মীদের বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে’

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ নারীকর্মী তৈরির মাধ্যমে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয় আরও বেশি উদ্যোগী হবে।

প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর অফিস কক্ষে আজ সোমবার বিকেলে উইমেন্স ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতারা প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে তিনি এসব কথা জানান।

এ সময় সার্ক বিজনেস কাউন্সিল এবং ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মানতাশা আহমেদের নেতৃত্বে অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাৎকালে জাতীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের নারীদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। বিশেষ করে ফ্যাশন ও এসএমই সেক্টরে নারীকর্মীদের বিদেশে কর্মসংস্থান এবং জাতীয় বাজেটে নারীবান্ধব নীতিমালার প্রতিফলন ইত্যাদি বিষয়েও আলোচনা হয়। বিজ্ঞপ্তি


বিমায় ভর করে ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার

তালিকাভুক্ত ৫৮ বিমা কোম্পানির মধ্যে ৪৭টিরই দাম বেড়েছে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব চারটি কোম্পানির শেয়ার দাম ততটাই বেড়েছে। আরও ৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে ৫ শতাংশের ওপরে। এর মধ্যে ৮ শতাংশের বেশি দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান। এ চিত্র দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের। তালিকাভুক্ত ৫৮টি বিমা কোম্পানির মধ্যে ৪৭টিই দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার শেয়ারবাজারে বিমা কোম্পানিগুলোর শেয়ার দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এমন দাপট দেখানোর ফলে সার্বিক শেয়ারবাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ফলে টানা তিন কার্যদিবসের পতন কেটে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতি।

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়লেও বিমা খাত যতটা দাপট দেখিয়েছে আর কোনো খাত এতটা দাপট দেখাতে পারেনি। বিমা খাতের ৮১ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে। ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে পৌনে এক শতাংশ।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। তবে এ বাজারটিতেও দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে বিমা খাত। ফলে বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। মূল্যসূচক বাড়লেও সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৯৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৯টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১২টির দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই বেড়েছে। এর মধ্যে বিমা কোম্পানি রয়েছে ৪টি।

দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বিমা কোম্পানির এমন দাপটের ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৬৯৬ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিকে ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৯৮৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯১১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৭৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

এ লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৭ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেস্ট হোল্ডিংয়ের ৪৬ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩৮ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে নাভানা ফার্মা। এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-গোল্ডেন সন, ফরইস্ট নিটিং, ই-জেনারেশন, মালেক স্পিনিং, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, লাভেলো আইসক্রিম এবং কহিনুর কেমিক্যালস।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৯৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২৩২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০১টির এবং ৩৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা।


বাংলাদেশে কোরিয়ান বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়া আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। বিশেষত বস্ত্র ও পোশাক খাতে কোরিয়ান কোম্পানিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং বস্ত্র ও পাট খাতে বাংলাদেশে কোরিয়ান বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান তিনি। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক রোববার সচিবালয়ে সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত সচিব তসলিমা কানিজ নাহিদা, বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নুরুজ্জামান জেডিপিসির নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, ঢাকার দক্ষিণ কোরিয়ান দূতাবাসের কনসাল জেয়ং কি কিম উপস্থিত ছিলেন। সাক্ষাৎকারে উভয়পক্ষ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।

মন্ত্রী বস্ত্র খাতে বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণের সুযোগ প্রদান এবং উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কোরিয়ার আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রদানের অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে আমরা বস্ত্র ও পাট খাতে বাজারের বৈচিত্র্য বাড়ানো, পণ্য উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ইত্যাদিতে জোর দিচ্ছি। দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও বৃদ্ধির জন্য আমরা কোরিয়ান কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করছি। দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত তিনটি বিষয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং এ ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করেন। এগুলো হলো- প্রথমত কাঁচামাল আমদানি করতে প্রচুর ট্যারিফ দিতে হয়। তার মধ্যে ৫টি পণ্য বস্ত্র ও পোশাক খাতের সঙ্গে সম্পর্কিত। এগুলোর ট্যারিফ কমাতে তিনি মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন। দ্বিতীয়ত ভিসাজনিত সমস্যা। বাংলাদেশে যারা কাজ করছে তাদের খুব স্বল্প সময়ের জন্য ভিসা দেওয়া হয়। তিন মাস পরপর মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করতে হয়। এ সমস্যা উত্তরণে মন্ত্রীর সহযোগিতা দরকার। তৃতীয়ত কাস্টমস ক্লিয়ারিং এ দীর্ঘসূত্রতা এড়াতে রাষ্ট্রদূত মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এসব সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেন।


‘চামড়া ব্যবসায়ীদের ঋণ পেতে সুপারিশ করা হবে’

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চামড়া ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে সহজ শর্তে ঋণ পেতে সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। আগামী ৭ থেকে ৮ মাস যেন তারা ব্যবসা করতে পারে এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর চিঠি ইস্যু করা হবে।

মন্ত্রী আজ রোববার রাজধানীর মতিঝিলে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘চামড়া শিল্পখাতের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্স’-এর ৭ম সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সভায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানাসহ টাস্কফোর্সের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, যেহেতু কোরবানি সামনে, ব্যবসায়ীদের আর্থিক অবস্থাও খুব ভালো না। এ ক্ষেত্রে ক্যাপিটাল শর্টফল যাতে না হয় সে বিষয়ে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর চিঠি ইস্যু করব। যাতে আগামী ৭ থেকে ৮ মাসের জন্য অর্থ সহায়তা তারা পান। আর ব্যাংকের চলমান ঋণ থাকবে ব্যাংকের পলিসি অনুযায়ী।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, চামড়া শিল্প খাতের উন্নয়নে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে। আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে স্বল্পমেয়াদি ও চামড়া শিল্প খাতের সার্বিক উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে। বিসিক ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নীতিগত সহযোগিতাসহ এসব করণীয় বাস্তবায়নে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের চামড়া শিল্প খাতে সংরক্ষণ সুবিধা বাড়াতে হবে যাতে চামড়া নষ্ট না হয়। চামড়া ব্যবসায়ী/পাইকাররা যাতে পুঁজির সমস্যায় না পড়েন ও সহজশর্তে ঋণ পান, সে বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, কোরবানির চামড়া সঠিকভাবে ছাড়ানো,সংরক্ষণ ও মানসম্মত পরিবেশ নিশ্চিতকরণে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তিনি বলেন, কোরবানির ঈদে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আগের অবস্থা আর নেই। এ ক্ষেত্রে আমরা আগের চেয়ে অনেক উন্নতি করেছি।

সভায় অন্যান্য বছরের মতো এবারও আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানির চামড়ার মূল্য নির্ধারণ এবং চামড়া সঠিকভাবে ছাড়ানো, সংগ্রহ ও সংরক্ষণের নিমিত্ত বিজ্ঞাপন/টিভিসি আকারে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করা, স্থানীয়ভাবে চামড়া সংগ্রহ এবং পর্যাপ্ত লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণের জন্য কৌশলগত স্থানে অস্থায়ী সংরক্ষণাগার নির্মাণ, কোরবানির পশুর চামড়ার পাচার রোধ, চামড়া সংগ্রহ ও পরিবহন কার্যক্রমে কোনো প্রকার চাঁদাবাজি, বিশৃঙ্খলা বা বাধার সৃষ্টি না হয় এবং চামড়া নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াসহ গণমাধ্যমে যেন কোনো গুজব না ছড়ায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিইটিপির পরিশোধন ক্ষমতার মধ্যে সীমিত রাখার লক্ষ্যে কোরবানির পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে ঢাকার বাইরে থেকে যাতে কোরবানির পশুর চামড়া ঢাকার ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। চামড়া শিল্পনগরীতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে রেশনিং পদ্ধতিতে ইফ্লুয়েন্ট ডিসচার্জ করা, সারা দেশে পর্যাপ্ত লবণ সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ এতিমখানাগুলোতে বিনামূল্যে লবণ সরবরাহ করতে বিসিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সভায় বিটিএ-এর প্রতিনিধির অনুরোধে চামড়া ব্যবসায়ীদের স্বার্থে চামড়া ব্যবসায়ীকে ব্যাংক কর্তৃক সহজশর্তে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।

বিষয়:

অডিট কার্যক্রমকে আরও ফলপ্রসূ করতে হবে: অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অডিট কার্যক্রমকে আরও ফলপ্রসূ করে সরকারের আর্থিক সম্পদের দক্ষ ও ফলপ্রসূ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

আজ শনিবার বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) কার্যালয়ের ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং দেশব্যাপী তিনদিন (১২, ১৩ ও ১৪ মে) বিশেষ সেবা কার্যক্রম উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নেন্স গঠনের জন্য বাংলাদেশ অডিট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল অর্থনৈতিক বিষয় ও তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আন্তর্জাতিক মানের প্রচলিত কমপ্লায়েন্স ও ফিন্যান্সিয়াল অডিটের পাশাপাশি পারফরমেন্স অডিট, আইটি অডিট এবং পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক অডিট পরিচালনা করছে।

অর্থমন্ত্রী তার বক্তৃতায় গণতান্ত্রিক সমাজে সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য শক্তিশালী ও সুসংহত কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল কার্যালয়-এর গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি অডিট অ্যান্ড একাউন্টস ডিপার্টমেন্টের সকল কর্মচারীকে অধিকতর নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। তবেই জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় অর্থপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, ‘অডিট ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এনে, সময়ের সঙ্গে এর উৎকর্ষতা নিশ্চিত করে যথাযথ বাস্তবায়নের ওপর জোর দিতে হবে। নীরিক্ষক ও নীরিক্ষা অফিসের মধ্যে যোগাযোগের পুরনো ব্যবস্থা বদলে দিয়ে নতুন অনলাইন সিস্টেম চালু করায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত। সামগ্রিকভাবে অডিট কার্যক্রমকে আরও ফলপ্রসূ করে সরকারের আর্থিক সম্পদের দক্ষ ও ফলপ্রসূ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’

আলোচনা সভায় অর্থ সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী ভৌত, সামাজিক ও প্রযুক্তি অবকাঠামো বিনির্মাণের মাধ্যমে স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার এবং সর্বোপরি স্মার্ট অর্থনীতি গঠন। অর্থনৈতিক উন্নয়নের অভিযাত্রায় সরকারি সম্পদের সুষ্ঠু, কার্যকর ও মিতব্যয়ী ব্যবহার হচ্ছে কি না তার নিশ্চয়তা প্রদানে বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল কার্যালয় স্টেট অডিটর হিসাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।’

অনুষ্ঠানের সভাপতি নূরুল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে সকল দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে বিনয়, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে জনগণকে সেবাদান করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। গুণগত মানসম্পন্ন হিসাব ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রণয়নের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা তথা সুশানের পথ সুগম করার জন্য বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের কার্যালয় সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও তা বাস্তবায়নে সদা সচেষ্ট।’

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ১২ থেকে ১৪ মে তিন দিনব্যাপী বিশেষ সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। বিশেষ সেবা কার্যক্রমের আওতায় দৈনন্দিন রুটিন সেবা ছাড়াও অডিট অধিদপ্তরসমূহে অডিট বিষয়ক সেবা এবং দেশব্যাপী সকল হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে বেতন-ভাতা, পেনশন, জিপিএফ-সহ অন্যান্য বিশেষ সেবাদান করা হবে।

বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল মো. নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাংসদ হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার।


সিআইপি হচ্ছেন ১৮৪ ব্যবসায়ী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৮৪ ব্যবসায়ীকে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সিআইপি হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪০ জনকে সিআইপি (রপ্তানি) এবং ৪৪ ব্যবসায়ী নেতাকে সিআইপি (ট্রেড) সম্মানে ভূষিত করা হবে। ২০২২ সালে রপ্তানিতে অবদানের জন্য তারা এই সম্মাননা পাচ্ছেন। রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল বৃহস্পতিবার বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু দেশের খ্যাতনামা রপ্তানিকারকদের সিআইপি (রপ্তানি ও টেড) কার্ড দেন।

রপ্তানি খাতে অবদানের জন্য এক বছর মেয়াদে সিআইপি (রপ্তানি) নির্বাচন করা হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে নির্বাচিত সিআইপিরা পরবর্তী বছরের সিআইপি (রপ্তানি) ঘোষণার আগ পর্যন্ত সিআইপি (রপ্তানি) মর্যাদায় ভূষিত থাকবেন। সিআইপি (রপ্তানি) হিসেবে নির্বাচিত ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য প্রবেশ পাস ও গাড়ির স্টিকারপ্রাপ্তি, জাতীয় অনুষ্ঠান ও মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ, ব্যবসা সংক্রান্ত ভ্রমণে বিমান, রেলপথ, সড়ক ও জলপথে সরকারি যানবাহনে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার, ব্যবসায়িক কাজে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে লেটার অব ইন্ট্রোডাকশন প্রাপ্তি, নির্বাচিত সিআইপি তার স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে কেবিন প্রাপ্তির অগ্রাধিকার এবং বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহারের সুবিধা পেয়ে থাকেন। সরকারিভাবে প্রদত্ত সিআইপি কার্ডধারী বিদেশি ক্রেতার কাছে আস্থা ও সুনামের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরতে পারেন, যা তার ব্যবসায়িক সম্পর্ককে সুদৃঢ় করার পাশাপাশি দেশের সার্বিক রপ্তানি প্রসারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।

পণ্য বা সেবার খাতওয়ারি মনোনীত সিআইপিদের (রপ্তানি ও ট্রেড) মধ্যে কাঁচাপাট ২, পাটজাত পণ্য ৪, চামড়াজাত দ্রব্য ৬, হিমায়িত খাদ্য ৪, তৈরি পোশাকে (ওভেন) ১৮ জন মনোনীত হয়েছেন। এ ছাড়া কৃষিজাত দ্রব্য ৫, অ্যাগ্রোপ্রসেসিং ৫, হালকা প্রকৌশলী পণ্য ৪, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য ৩, হস্তশিল্পজাত পণ্য ৪, স্পেশালাইজড বা হোমটেক্সটাইল পণ্য ৪, তৈরি পোশাক (নিটওয়্যার) ৩৪, সিরামিক পণ্য ১, প্লাস্টিকজাত পণ্য ৪, টেক্সটাইল (ফেব্রিক্স) ৭, কম্পিউটার সফটওয়্যার ২, আসবাব ১, বিবিধ পণ্য ২৭ ও ইপিজেডভুক্ত সি ক্যাটাগরিতে ৫ জন সিআইপি হয়েছেন। একই সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে সিআইপি (ট্রেড ক্যাটাগরি) মনোনীত হয়েছেন ৪৪ জন। সিআইপি কার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান।


বিশ্বে রেমিট্যান্সপ্রাপ্তিতে বাংলাদেশ অষ্টম, অভিবাসী পাঠানোয় ষষ্ঠ

১১১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়ে শীর্ষে ভারত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

রেমিট্যান্সপ্রাপ্তির দিক থেকে ভারতের অবস্থান বিশ্বে প্রথম। তালিকায় বাংলাদেশ অষ্টম ও পাকিস্তান ষষ্ঠ। রেমিট্যান্স প্রবাহে দক্ষিণ এশিয়ার এই তিনটি দেশ আছে শীর্ষ দশে।

ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড মাইগ্রেশন রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। ২০২২ সালের তথ্যের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে রেমিট্যান্স পাওয়ার দিক থেকে শীর্ষ পাঁচ দেশ ছিল ভারত, মেক্সিকো, চীন, ফিলিপাইন ও ফ্রান্স। আলোচ্য বছরে ১১১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে ভারত। জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ১০০ বিলিয়ন ও ১১১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে ভারত।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১১১.২২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়ে বাকিদের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে ভারত। প্রথম দেশ হিসেবে ১০০ বিলিয়ন ও ১১১ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অর্জন করেছে দেশটি।

২০২২ সালে ৬১.১০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়ে এ তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মেক্সিকো। ২০২১ সালেও দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল দেশটি। রেমিট্যান্স গ্রহণে দীর্ঘদিন দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছিল চীন। কিন্তু ২০২১ সালে চীনকে পেছনে ঠেলে দিয়ে দুইয়ে উঠে আসে মেক্সিকো।

প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, ২০১০, ২০১৫ ও ২০২০ সালে যথাক্রমে ৫৩.৪৮ বিলিয়ন ডলার, ৬৮.৯১ বিলিয়ন ডলার ও ৮৩.১৫ বিলিয়ন ডলার পেয়ে রেমিট্যান্সপ্রাপ্তিতে প্রথম অবস্থানে ছিল ভারত। ২০২২ সালে রেমিট্যান্স গ্রহণে প্রথম ১০০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করে দেশটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়া থেকে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী কর্মী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করতে যায়। তাদের সুবাদে এ অঞ্চল বৈশ্বিক রেমিট্যান্সের উল্লেখযোগ্য অংশ পেয়ে থাকে।

দক্ষিণ এশিয়ার তিন দেশ- ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ রেমিট্যান্স প্রাপ্তিতে শীর্ষ দশ দেশের তালিকায় রয়েছে।

২০২২ সালে রেমিট্যান্সপ্রাপ্তিতে যথাক্রমে ষষ্ঠ ও অষ্টম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। এ বছর পাকিস্তান প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার ও বাংলাদেশ ২১.৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে। এর আগে ২০২০ সালেও বাংলাদেশ ২১.৭৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়ে এ তালিকায় একই অবস্থানে ছিল।

আইওএমের প্রতিবেদনে অনুযায়ী, ২০১০ সালে বাংলাদেশ ১০.৮৫ বিলিয়ন ডলার ও ২০১৫ সালে ১৫.৩০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছিল। সেই হিসাবে ১২ বছরে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ১০.৬৫ বিলিয়ন ডলার।

২০২২ সালে রেমিট্যান্স গ্রহণে তৃতীয় অবস্থানে থাকা চীন ৫১ বিলিয়ন ডলার, চতুর্থ অবস্থানে থাকা ফিলিপাইন ৩৮.০৫ বিলিয়ন ডলার এবং পঞ্চম অবস্থানে থাকা ফ্রান্স ৩০.০৪ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে।

এ ছাড়া ২০২২ সালে রেমিট্যান্স প্রবাহে ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা পাকিস্তান ২৯.৮৭ বিলিয়ন ডলার, সপ্তম অবস্থানে মিসর ২৮.৩৩ বিলিয়ন ডলার, অষ্টম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ ২১.৫ বিলিয়ন ডলার, নবম অবস্থানে থাকা নাইজেরিয়া ২০.১৩ বিলিয়ন ডলার এবং দশম অবস্থানে থাকা জার্মানি ১৯.২৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে।

অন্যদিকে ২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বছর দেশটি ৭৯.১৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে বিভিন্ন দেশে। রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সৌদি আরব (৩৯.৩৫ বিলিয়ন ডলার), তৃতীয় অবস্থানে সুইজারল্যান্ড (৩১.৯১ বিলিয়ন ডলার), চতুর্থ অবস্থানে জার্মানি (২৫.৬০ বিলিয়ন ডলার) ও পঞ্চম অবস্থানে আছে চীন (১৮.২৬ বিলিয়ন ডলার)।

রেমিট্যান্সপ্রাপ্তিতে অষ্টম অবস্থানে থাকলেও অভিবাসী পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ষষ্ঠ। অভিবাসী পাঠানোর ক্ষেত্রে শীর্ষ পাঁচ দেশ হচ্ছে ভারত, মেক্সিকো, রাশিয়া, চীন ও সিরিয়া।

আইওএমের প্রতিবেদনে বলা হয়, রেমিট্যান্স বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় বহু মানুষের লাইফলাইন হলেও এসব দেশ থেকে যাওয়া অভিবাসী কর্মীরা অনেক ঝুঁকির মধ্যে কাজ করেন, আর্থিক শোষণের শিকার হন, অভিবাসন খরচের কারণে অতিরিক্ত আর্থিক দেনায় ডুবে যান। এ ছাড়া কর্মক্ষেত্রে নিপীড়নের শিকার হওয়ার পাশাপাশি তারা ‘জেনোফোবিয়া’রও (বিদেশিদের প্রতি ঘৃণার মনোভাব) শিকার হন।

আইওএমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, উপসাগরীয় দেশগুলো অভিবাসী কর্মীদের বড় গন্তব্য। গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিলভুক্ত (জিসিসি) দেশগুলোর মোট জনসংখ্যার বড় একটি অংশই অভিবাসী।

অধিকাংশ অভিবাসীই- যাদের বড় একটি অংশ বাংলাদেশ, ভারত, মিসর, ইথিওপিয়া ও কেনিয়া থেকে যান-নির্মাণ, হসপিটালিটি, নিরাপত্তা, গৃহকর্ম ও রিটেইল খাতে কাজ করেন।

প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পাঠানোতেও বড় অবদান রাখছে এশিয়ার দেশগুলো। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পাঠানোর তালিকায় শীর্ষে আছে চীন, দ্বিতীয় অবস্থানে ভারত। ২০২১ সালে চীন ও ভারত থেকে যথাক্রমে ১০ লাখ ও ৫ লাখ ৮ হাজার শিক্ষার্থী বাইরের দেশে পড়তে গেছেন।

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের গন্তব্য হিসবে পছন্দের শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র (৮ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি)। এরপরই আছে যুক্তরাজ্য (প্রায় ৬ লাখ ১ হাজার), অস্ট্রেলিয়া (প্রায় ৩ লাখ ৭৮ হাজার), জার্মানি (৩ লাখ ৭৬ হজারের বেশি) ও কানাডা (প্রায় ৩ লাখ ১৮ হাজার)।


banner close