প্রতি বছর ঈদ উৎসবে দেশের বিভিন্ন টিভি ও ইউটিউব চ্যানেলসহ প্রায় তিন শ থেকে চার শ নাটক নির্মিত হয়ে থাকে। কখনও কখনও এই সংখ্যা কমবেশি হয়ে থাকে। এখনকার সময়ে টিভি চ্যানেল থেকে ইউটিউবেই নাটক নির্মাণের সংখ্যা বেশি। এর মধ্যে কিছু ইউটিউব চ্যানেলের নাটক টিভিতে প্রচার হওয়ার পর সেগুলো আবার ইউটিউবেও প্রচার হচ্ছে। আবার বেশ কিছু ইউটিউব চ্যানেল আছে যারা শুধু নিজস্ব ইউটিউবের জন্যই নাটক নির্মাণ করে থাকে। অন্যদিকে বর্তমানে প্রায় সব টিভি চ্যানেলের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল থাকায় তাদের নিজেদের নির্মিত নাটক টিভিতে প্রচারের পর আবার সেগুলো নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে। ফলে এখন একটি নাটক বানানোর লগ্নিকৃত টাকা দুই মাধ্যম থেকেই প্রযোজক বা লগ্নিকারক ফেরত পাচ্ছেন। যার কারণে নাটকের বাজেট এখন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। একটা সময় বলা হতো বাজেট নেই, নাটকে বাজেট কম- এটা এখনকার সময়ে নাটকের বাজেটের দিকে তাকালে বলা যাবে না।
বিশেষ করে ইউটিউবের আধিপত্য হওয়ার পর থেকেই গত কয়েক বছর ধরে একেকটি নাটক অনেক টাকায় বানানো হচ্ছে। একটা সময় নাটকের বাজেট নিয়ে নানান ধরনের কথা শোনা যেত। পরিচালক-অভিনয়শিল্পী থেকে শুরু করে নাটকের কলাকুশলীরা সব সময় বলত- নাটকের বাজেট কমে গেছে, এত কম বাজেটে নাটক বানানো সম্ভব নয় ইত্যাদি ইত্যাদি। ইউটিউবের কল্যাণে এখন নাটকের সেই বাজেট কয়েকগুণ বেড়েছে। অথচ ইউটিউবের আগে নাটকের বাজেট অনেক কমে গিয়েছিল। ২০১৬-২০১৭ সালেও নাটক এখনকার মতো এত বাজেটে নির্মিত হতো না। ২০১৮ সাল থেকে আস্তে আস্তে নাটকের বাজেট বাড়তে থাকে। নরমালি এখন একটি নাটক বানাতে চার-পাঁচ-ছয় লাখ টাকা নির্মাতারা হরহামেশাই পাচ্ছেন। এর থেকেও কম বাজেটে ছোট কিছু কনটেন্ট তৈরি হচ্ছে। ওইদিকের হিসেবে না গিয়ে যেগুলো আমাদের মেইনস্ট্রিমের নাটক বলে চিহ্নিত তা নিয়েই কথা হচ্ছে।
আর্টিস্ট ভেদে এখন একেকটি নাটকের বাজেট দশ-বারো-পনেরো লাখ পর্যন্ত পাচ্ছেন নির্মাতারা। এবার ঈদে তো আঠারো-বিশ লাখ এমনকি পঁচিশ লাখে নাটক নির্মাণের খবর পাওয়া গেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- এই যে এত এত বাজেট পাচ্ছেন নির্মাতারা, নাটকের গল্পে কতটা ভেরিয়েশন পাচ্ছেন দর্শক? সেই একই অভিনয়শিল্পীদের একই প্রেম কাহিনি, কমেডি গল্প, চিল্লাচিল্লি কিংবা প্রেম হওয়ার শুরুতে ঝগড়া, তারপর প্রেম, পরিবার মানে না- টাইপের গল্প অথবা প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, প্রেমিক চাকরি পায় না, পরিবার মানে না ইত্যাদি ইত্যাদি গল্প। অনেকটা নতুন বোতলে পুরোনো মদের মতো গল্প। আর এখন যোগ হয়েছে নাটকে গানের ব্যবহারসহ ঢাকার বাইরে শুটিং- দামি ক্যামেরা এবং বিজ্ঞাপনের মতো ইউনিট-ক্রু নিয়ে মুভ করা। বাজেট বাড়ছে, খরচ করতে সমস্যা নেই। কিন্তু যেই গল্পের জন্য নাটক- সেই গল্পের জন্য কতটা খরচ করে নাটক নির্মিত হচ্ছে? মানে ভালো গল্পের এবং ‘খরচওয়ালা’ গল্পের পেছনে কি সেই বাজেটটা যাচ্ছে?
বিশিষ্ট সাংবাদিক, নাট্যকার ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা রেজানুর রহমান বলেন, ‘নাটকে ভালো গল্পের সংকট রয়েছে এটা যেমন সত্যি, তেমনি অনেকের কাছে ভালো গল্প থাকার পরও সে বাজেটের জন্য তা বানাতে পারছেন না- এটাও সত্যি। আসলে এখন কোনো লেভেল কোম্পানি (ইউটিউব), টিভি কিংবা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্রথমেই নির্মাতার কাছে জিজ্ঞাসা করেন- ‘যে গল্প নিয়ে কাজ করবেন সেটির ভিউ হবে নাকি’- এই কথায় নির্মাতা নতুন কোনো কনসেপ্ট নিয়ে কাজ করতে চান না। সেই একই ফরম্যাটে কাজ করতে হচ্ছে তাকে। এখন দেখা গেছে কেউ একজন একটি গল্প নিয়ে কাজ করায় সেটির ভিউ হয়েছে- সবাই সেটা বানাতে ছুটে। মানে হলো ভিউয়ের পেছনে দৌঁড়াচ্ছি। ভিউ-ই যখন এখন একমাত্র বাণিজ্য তখন তো গল্প ফ্যাক্ট না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্মাতাদের স্বাধীনতা দিতে হবে। নির্মাতারা স্বাধীনতা না পেলে কাজ করা মুশকিল। অমুকটার মতো, তমুককে নিয়ে জুটি করে নাটক বানানোর জন্য প্রেসার না দিয়ে তাকে স্বাধীনতা দিতে হবে। এখন গল্পসহ ‘পাঁচজন- পাঁচজন’ জুটিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলে দেয়া হচ্ছে নাটক বানানোর জন্য। সেই ‘পাঁচজন-পাঁচজন’ জুটির দশজন এতো ব্যস্ত যে, তাদেরকে মেনটেইন করতে গেলে নাটকের দিকে নজর দেয়া যাচ্ছে না। তারা ব্যস্ত থাকতেই পারেন। কিন্তু জুটি বেঁধে দিলেই বিপদ। নির্মাতাকে বলতে হবে- স্বাধীনভাবে গল্পে যে ধরনের আর্টিস্ট যায়, তাদেরকে নিয়েই বানান। তাহলে নতুন গল্প এবং নতুন আর্টিস্টও ইন্ডাস্ট্রিতে তৈরি হবে। বর্তমানে যারা কম্প্রমাইজ করে কাজ করছেন যা হওয়ার তাই হচ্ছে। ফলে মনে রাখার মতো নাটক হচ্ছে না। এখন আমাদের লাখ লাখ টাকা বাজেট যাচ্ছে, শত শত নাটকও হচ্ছে। কিন্তু অর্জনের জায়গাটা ফাঁকাই থেকে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে কেউ কথা বলছে না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশির ভাগ নাটকে লোকেশন (প্রয়োজন না হলেও), লাইট-ক্যামেরাসহ এগুলোতে অপ্রয়োজনীয় বাজেট ব্যবহার, মেইন আর্টিস্টদের বেশি রেম্যুনারেশন (আর্টিস্টরা নিজেরাই নিজেদের পারিশ্রমিক ঠিক করছেন), শুটিং ইউনিটে বিলাসবহুল খরচ করায় বেশির ভাগ নাটকের মূল বাজেট সেখানেই চলে যাচ্ছে। ফলে নাটকে এত এত বাজেট পাওয়ার পরও যেই ভিন্নধর্মী গল্পটির পেছনে বাজেটটা খরচ করার কথা- সেখানে কি খরচ হচ্ছে না। সেই একই গল্প, একই মেকিং এবং কমেডি টাইপ নাটকগুলোই নির্মিত হচ্ছে। এখন তো একটি নাটকের গল্পের সঙ্গে আরেকটি নাটকের নামেরও বেশ মিল পাওয়া যায়। যেমন- ‘তুই আমারই’, ‘তোর জন্য’, ‘আজকাল তুমি আমি’, ‘তোমাতে হারাই’, ‘তোমায় ভালোবেসে’- এবারের ঈদের এই নাটকগুলোর নাম প্রায় কাছাকাছি। এরকম ইউটিউবে খুঁজলে আরও অনেক নাটক পাওয়া যাবে যেগুলোর নাম প্রায় কাছাকাছি। আরও রয়েছে ইউটিউবে ‘কাটতি টাইপ’ নাটকের নাম। যা আসলে শিল্পমানের নাটকের নাম নয়। ফলে দর্শক আসলে একটি নাটক দেখে তার মনের মধ্যে সেটি ‘দাগ’ কাটাতে পারছেন না। আর এখনকার নাটকগুলোতে প্রায় একই অভিনয়শিল্পী (অমুকের সঙ্গে তমুক, তমুকের সঙ্গে অমুক- ধরাবান্দা জুটি) হওয়ায় দর্শক আরও বিভ্রান্ত হচ্ছেন যে সে আসলে কোন নাটকটা দেখেছেন। ফলে মনের মধ্যে অনুভূতি সৃষ্টি করা এবং খুব ভাবনায় ভাবানোর মতো নাটক এখন খুব একটা দেখা যায় না।
নাটকে বাজেট বাড়লেও গল্পের অভাব কিংবা শিল্পমান সম্পন্ন নাটক কম নির্মিত হওয়ার পেছনে কারণ কি? এই বিষয়ে কথা বলেন নির্মাতা রাকেশ বসু। তিনি বলেন, ‘বাংলা নাটকের এখন সব থেকে বড় সমস্যা হলো- গল্প সংকট। একটা সময় বাজেট নিয়ে সবাই কম-বেশি কথা বলতেন। কিন্তু এখন বাজেট সমস্যা থেকে গল্প সংকটটাই অনেক বড় ইস্যু একটা ভালো কাজের জন্য। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীরা যে ধরনের কাজ করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন এবং ভিউ কাউন্ট হয় সেই একই ধরনের গল্প নিয়েই কাজ করেন। সে ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা হলো ভিউ হওয়া একই গল্পের পুনরাবৃত্তি। ফলে অভিনয়শিল্পীরা জনপ্রিয়তার দিকে নজর দিতে গিয়ে ভালো গল্পের কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বারবার।’
আগে একটি নাটকের স্ক্রিপ্ট ফাইনাল হতো। টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠান প্রধানসহ ক্রিয়েটিভ টিম মিলে গল্পটি ফাইনাল হওয়ার পর কোন অভিনয়শিল্পী কোন চরিত্রে অভিনয় করবে সেটা ভেবেচিন্তে কাস্টিং ফাইনাল করা হতো। এরমধ্যে স্ক্রিপ্ট নিয়ে কয়েকদফায় রাইটার ও পরিচালকসহ মিটিং হতো। তারপর ফাইনালি নাটকটি নির্মাণে যাওয়া হতো। নাটক নির্মাণের পর তা দেখে প্রিভিউ কমিটির মতামত থাকত এবং সেখানে পাস হলেই তা ফাইনালি সম্প্রচারে যেত।
আর এখন অনেকটা ঝালমুড়ি বানানোর মতোই নাটক বানানো হয়। মানে অমুক-তমুকের ভিউ আছে- আগে তাদের ডেট ‘লক’ করা হোক। তারপর তারা যেই গল্প পছন্দ করবেন কিংবা অনেক সময় অভিনয়শিল্পীও গল্প দিচ্ছেন সেটা নিয়ে- ডে নাইটের কিছু সিক্যুয়েন্স বানিয়ে (শুটিংয়ের সুবিধার্থে) শুটিংয়ে চলে যাওয়া হচ্ছে। স্লো-মো শট, গানের কিছু শট, নায়ক-নায়িকার দেখাদেখি-চোখাচোখি আর বিয়ে দিবে না বাবা-মা, ছেলে বেকার, চাকরি হয় না, পরিবার মেয়েকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেয় আর চিল্লাচিল্লি ভরা কমেডি গল্প। বেশির ভাগ নাটকই এখন এভাবে নির্মিত হচ্ছে বলে জানা যায়। পাশাপাশি এখন সেট বানানোতেও ভালো খরচ করে নাটক নির্মাণের খবর পাওয়া গেছে।
ইউটিউবের সঠিক নিয়মনীতি না থাকা, নাটকে প্রিভিউ সিস্টেম না থাকায় এবং ‘ভিউই’ একমাত্র বাণিজ্য হওয়ায় দিনকে দিন মানহীন নাটক বানানোর প্রতিযোগিতা হচ্ছে এবং তা নিম্নমানের তলানিতে যাচ্ছে বলে অনেকে অভিমত দেন। এর পাশাপাশি একটা গুরুত্বপূর্ণ দিকের কথাও তারা উল্লেখ করেন তা হলো- একটা সময় যারা নাটক নির্মাণ ও ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তারা টেলিভিশন ও থিয়েটারে দীর্ঘদিন কাজের অভিজ্ঞতা ছিল। আর এখন শুধু ব্যবসার উদ্দেশ্যেই (বেশির ভাগ) ইউটিউব চ্যানেল করে নাটকের নামে ‘কনটেন্ট’ বানানো হয়।
অথচ গল্পনির্ভর, জীবনবোধের নাটক, সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষের গল্প, আমাদের চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কত কত গল্প। প্রতিদিন সংবাদের পাতায় কত গল্প প্রকাশ পায়, অথচ আমাদের দেশের নাটক নির্মাতারা এসব গল্প দেখেন না। কারণ এসব গল্পে ভিউ পাওয়া যায় না। তাই ইউটিউব মালিক তথা প্রযোজকরা ওই ধরনের গল্প নিয়ে কাজ করতে বা নির্মাণে আগ্রহ পান না।
ইউটিউবে ভিউ হচ্ছে সস্তা-চটুল, কমেডি তথা সুরসুরি প্রেম মার্কা গল্পের। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। লাখ লাখ টাকা বাজেট দিয়ে যেসব ‘নাটক’ বানানো হচ্ছে তা আসলে কতটা সমাজে প্রভাব ফেলছে? কি শিখছেন তরুণ প্রজন্ম? অবশ্য তরুণ প্রজন্ম নাকি যা বানানো হচ্ছে- তাই দেখতে চায় বলে তাদের অভিমত। এত এত বাজেটের টাকা আদতে ‘শ্রাদ্ধ’ করাই হচ্ছে বলে প্রকৃত নাট্যপ্রেমী তথা সত্যিকারের সংস্কৃতপ্রেমীরা অভিমত দেন। তাদের মতে, বেশি বাজেট এলে বেশির ভাগ নাটককে ঝকঝকে তকতকে বানানো আর ‘ফুটেজ’ ছাড়া আর কিছুই না বলেও অনেকে অভিমত দেন। তাই ভালো বাজেট দিয়ে ভালো গল্প এবং ভিন্নধর্মী চরিত্রসহ জীবনবোধের নাটক বানানোর তাগিদ দেন তারা।
বর্তমানে নাটক নির্মাণের একটা চিত্র তুলে ধরলে এখনকার পরিস্থিতিটা আরও পরিষ্কার বোঝা যাবে। এখন নাটকের কয়েকজন মেইন নায়ক তারা তাদের নিজেদের প্রযোজনা হাউস থেকে নাটক বানিয়ে তা নিজেই বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল এবং টিভি চ্যানেলে তাদের চাহিদামতো সরবরাহ করছেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক নাট্য নির্মাতা বলেন, ‘এভাবে আসলে কাজ করে অভ্যস্ত না। এই ভিউ বাণিজ্য এসে একজন নির্মাতার হাত-পা বন্দি হয়ে গেছে। আমরা আসলে বিক্রি হয়ে গেছি। এখন তো চাহিদাসম্পন্ন নায়করা তাদের প্রযোজনা হাউস থেকে নাটক তৈরি করেন। তারা নিজেদের বানানো ডিরেক্টর টিম, প্রোডাকশন টিমসহ ডিওপি এবং কো-আর্টিস্ট- সবই তারা ঠিক করেন। ডিরেক্টরকে দিয়ে শুধু ডিরেকশন (আসলে নামে ডিরেকশন) দেওয়ান। কোথায় এডিটিং হবে, কোথায় মিউজিক হবে এবং কীভাবে কাজটা কোথায় কত টাকায় বিক্রি হবে- সবই তিনি (নায়করা) ঠিক করেন। এভাবে চললে তো আসলে নাটকের ‘মান’ বলে কিছু থাকবেই না। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।’
ভালো নাটক বানানোর কিছু ব্যতিক্রম চিত্রও রয়েছে। কিছু যে ভালো গল্পের নাটক নির্মিত হচ্ছে না তা বলা যাবে না। যারা সত্যিকারের ভালো গল্পের খোঁজ করেন এবং জীবনবোধের গল্পসহ ভিন্নরকম কিছু বা আইডলজির জায়গা থেকে কাজ করছেন তারা ঠিকই শত প্রতিকূলতায় কিছু নাটক বানাচ্ছেন। আমাদের দেশে ওটিটিতে ওয়েবসিরিজ ও ওয়েবফিল্মে ভিন্নধর্মী গল্পের কাজ হওয়ায় সেগুলো দর্শকদের কাছে সাড়া ফেলেছে। ফলে তার কিছুটা ছোঁয়া নাটকেও লেগেছে বলা যায়। এবারের ঈদে ভিন্নধর্মী গল্পের তেমনকিছু নাটক হচ্ছে- ‘স্মৃতিসারক’, ‘বিদায় বসন্তে মধ্যাহ্ন রোদে’, ‘নিখোঁজ’, ‘বোঝা’, ‘শেষমেষ’, ‘সম্ভবত প্রেম’, ‘কিছু কথা বাকি’, ‘দুনিয়া’, ‘অভাব’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘অভিশাপ’, ‘অভাব, ‘জাদুর শহর’, ‘গর্ভ’, ‘কলিজার টুকরা’, ‘স্বপ্নটা সামান্যই’সহ আরও কিছু নাটক।
এখন প্রায় একই মুখ ঘুরেফিরে সব নাটকেই দেখতে হচ্ছে বলে সব নাটক একইরকম লাগার কথা দর্শকরা অভিমত দিয়েছেন। এক সময় নাটকে নিশো, মেহজাবীন, অপূর্ব, তানজিন তিশাকে জুটি বেঁধে অভিনয় করতে দেখা যেত। এখনকার সময়ে অপূর্ব ও তানজিন তিশাকে নাটকে দেখা গেলেও নিশো-মেহজাবীনকে দেখা যায় না। নিশো চলচ্চিত্র ও ওটিটির কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় গত কয়েক ঈদ উৎসবে তাকে নাটকে দেখা যায়নি।
অন্যদিকে মেহজাবীনও বর্তমানে ওটিটির কাজের সঙ্গে সম্প্রতি সিনেমায় নাম লিখিয়েছেন। তারপরও নাটকে মেহজাবীনের কাজের আগ্রহ রয়েছে; কিন্তু ভালো গল্পের অভাবে কাজ করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি। ‘সাবা’ ও ‘প্রিয় মালতী’ শিরোনামের দুটি ছবিতে কাজ করতে যাচ্ছেন ভক্তদের মেহু। তার জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রিয় মালতী’ সিনেমা ঘোষণার অনুষ্ঠানে নাটকে অভিনয় কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি নাটকে একেবারেই কাজ করতে চাই না, বিষয়টা তেমন না। আমি আসলে ভালো গল্প পাই না। ভালো গল্প পেলে অভিনয় অবশ্যই করব। আমার কাছে যে স্ক্রিপ্টগুলো আসে সেগুলো পছন্দ হয় না। দর্শক আসলে ভিন্নতা চায়। আমি অনেক দিন পর সিনেমাওয়ালা ইউটিউব চ্যানেলের ‘অনন্যা’ করেছি। কারণ এটার গল্পটা ভিন্ন। এটার জন্য আমি সাড়াও পেয়েছি বেশ। তাই আমি এরকম ভিন্ন ভিন্ন গল্পের কাজ করতে চাই। তেমন স্ক্রিপ্ট পেলে কাজ করব।’
ঈদে রাফাত মজুমদার রিংকুর পরিচালনায় ‘রূপান্তর’ নাটকটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। ট্রান্সজেন্ডার এবং তৃতীয় লিঙ্গের ইস্যুতে নাটকটিকে শেষমেশ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা শ্রেণি ধর্মের বিষয়ের সঙ্গে তুলনা করে। ফলে কর্তৃপক্ষ নাটকটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়। ভিন্নধর্মী গল্প নিয়ে নাটক বানাতে গেলেও নানান সমস্যার কথা উল্লেখ করেন নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকু। তিনি বলেন, ‘আগের চেয়ে ভিন্ন ধরনের গল্পের নাটক বানানো হচ্ছে। তবে সেটা সংখ্যায় কম। এখন আলাদা টাইপের গল্পের নাটক বানাতে গেলেও নানান ধরনের জটিলতা তৈরি হচ্ছে। আমি নিজেও ‘রূপান্তর’ নিয়ে একপ্রকার জটিলতায় রয়েছি। তাই যারা ইউটিউবের মালিক এবং প্রযোজক তারা ভিন্ন টাইপের গল্পের নাটক বানাতে রিস্ক নেয় না। বাধ্য হয়েই গদবাঁধা গল্পের নাটক বানায়। নাচ-গান আর বিউটি লোকেশনসহ কাজগুলো হচ্ছে।’
নাট্যপ্রেমী-বিনোদনপ্রেমী তথা সংস্কৃতিপ্রেমীদের প্রত্যাশা, নাটকের গল্পে সমাজের বাস্তবচিত্র থাকবে। কারণ ‘সমাজের দর্পণই হচ্ছে নাটক’। একটা সময় বিটিভিতে নাটক প্রচারের মাধ্যমে মধ্যবিত্তের ড্রয়িংরুমের সাজটা কেমন হবে- তা সেই নাটক থেকে শিখত মধ্যবিত্ত সমাজ। সময় বদলেছে, মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়েছে। সমাজের আমূল পরিবর্তনে নিজেদের ‘রুচির দুর্ভিক্ষ’ যেন নাটকের মাধ্যমে প্রচার হয়ে তা আবার সমাজে প্রভাব ফেলুক- তা কারোরই কাম্য নয়। কারণ আজকে পর্দায় যা দেখানো হবে তাই দেখবেন দর্শক। সংস্কৃতিকর্মী তথা ক্রিয়েটিভরাই প্রকৃত ‘দর্শক’ তৈরি করেন। সারা পৃথিবীতেই রুচিহীন-সস্তা কনটেন্টেরই ‘ভিউ’ বেশি, এটাই স্বাভাবিক। এরমধ্যেও নিজেদের দর্শক নিজস্ব গল্প দিয়ে নিজেদেরই তৈরি করতে হবে- এমনটাই মনে করেন প্রকৃত সংস্কৃতিপ্রেমীরা।
কয়েক দিন আগেই শাহরুখ খান ও দীপিকা পাড়ুকোনের নামে রাজস্থানের ভরতপুরে প্রতারণার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়। এক নামী গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থার হয়ে এই দুই তারকা এমন এক গাড়ির প্রচার করেন, যাতে প্রযুক্তিগত একাধিক ত্রুটি রয়েছে বলে অভিযোগ। আপাতত ওই মামলায় আদালতে স্বস্তি পেলেন দুই তারকা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুসারে, স্থানীয় এক ব্যক্তি দুই অভিনেতার নাম উল্লেখ করে একটি এফআইআর করেছিলেন। ওই ব্যক্তির অভিযোগ, তার কেনা গাড়িতে বেশ কিছু সমস্যা ছিল। যে গাড়ির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর শাহরুখ ও দীপিকা। তাদের দেখেই নাকি ওই ব্র্যান্ডের গাড়ি কিনতে চেয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। চলতি মাসের শুরুতে দায়ের করা এফআইআর-এ ওই ব্যক্তি দুই অভিনেতা এবং আরও ছয় জনের বিরুদ্ধে ‘ক্রেতাদের বিভ্রান্ত করার’ অভিযোগ করেন।
পাল্টা শাহরুখ এবং দীপিকা দু’জনেই তাদের আইনি পরামর্শদাতাদের মাধ্যমে রাজস্থান হাইকোর্টে এফআইআর বাতিলের আবেদন করেছিলেন। যুক্তি দিয়ে বুঝিয়েছিলেন যে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে তাদের ভূমিকা কতটা ‘সীমিত’। তার করা মামলায় তদন্ত চালু হয়। তবে আপাতত দুই তারকার বিরুদ্ধে মামলায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত।
শাহরুখ খানের আইনজীবী কপিল সিব্বলকে প্রথম থেকেই বলতে শোনা গিয়েছে, এই মামলার সঙ্গে অভিনেতার সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। এবং এই ‘ত্রুটির’ জন্য তাকে দায়ী করাও যাবে না। বিজ্ঞাপন করা মানেই যে সব দায় তাদের এমনটা নয় বলেও দাবি শাহরুখের আইনজীবীর। অন্য দিকে, দীপিকা পাড়ুকোনের পক্ষের আইনজীবী মাধব মিত্রও দাবি করেন, প্রোডাক্টের মান নিয়ন্ত্রণে তারও কোনও ভূমিকা নেই। বলিউড তারকাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর-এ উল্লেখ করা হয়েছিল গাড়ির ক্রুটির কারণে তিনি বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
তিনি আরও দাবি করেন, শাহরুখ এবং দীপিকার বিজ্ঞাপন গ্রাহকদের নানা ভাবে বিভ্রান্ত করেছে। তবে সূত্রের খবর অনুসারে, প্রায় তিন বছর ধরে গাড়িটি ব্যবহার করছেন ওই ব্যক্তি। এবং অভিযোগ দায়ের করার আগেই নাকি তিনি ৬৭ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি সময় ধরে গাড়িটি চালিয়েছেন। তাই শাহরুখ ও দীপিকার আইনজীবীদের পাল্টা যুক্তি, গাড়িটি নিয়ে যদি তার কোনও অভিযোগ থাকে, তা হলে তার আরও আগে আদালতে যাওয়া উচিত ছিল।
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান ওপার বাংলাতেও বেশ জনপ্রিয়। দুই বাংলাতেই সমান দক্ষতায় অভিনয় করে যাচ্ছেন। ফলে দুই দেশেই তিনি সমানসংখ্যক ভক্ত-অনুরাগীর ভালোবাসা কুড়িয়েছেন। দেশে অসংখ্য সফল সিনেমায় অভিনয়ের পর, টালিউডেও তিনি একের পর এক ছবিতে দাপটের সঙ্গে কাজ করছেন।
বলা যায়, এদেশ-ওদেশ করেই কাটে অভিনেত্রীর অধিকাংশ সময়। অনেক ক্ষেত্রে ঢাকার চেয়ে কলকাতাতেই বেশি সময় কাটান, ফলে এটা যে তার একরকম সেকেন্ড হোম হয়ে গেছে- এবার সরাসরি এমনটাই প্রকাশ করলেন জয়া।
গত ৭ সেপ্টেম্বর ফের কলকাতায় উড়াল দিয়েছিলেন জয়া আহসান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদন অনুসারে, সেখানে এডভেন্ট এক্টর স্টুডিও প্রাইভেট লিমিটেড গ্লোবাল ইনফ্লুয়েঞ্জার এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী। অনুষ্ঠানে গিয়ে আপ্লুত হয়ে জানালেন, এখানে যোগ দিয়ে তিনি খুবই খুশি। এরপরই দুর্গাপূজা উপলক্ষে সবাইকে শারদীয়ার শুভেচ্ছা জানান, ভাগ করে নেন পূজার পরিকল্পনাও।
জয়া বলেন, ‘পূজার সময় কলকাতা আমি খুব মিস করি। এমনিতেও কলকাতা এখন আমার সেকেন্ড হোম। তাই পূজার সময় আমি এখানেই কাটাতে বেশি ভালোবাসি। এবারেও এখানে থাকব আমি।’
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইনফ্লুয়েন্সারদের প্রশংসা করে জয়া বলেন, ‘কোনো ছবি মুক্তির পর সেটির জনপ্রিয়তা গড়ে তুলতে ইনফ্লুয়েন্সাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। কনটেন্ট ক্রিয়েটররা যে ভিডিও তৈরি করেন, তা শেষ পর্যন্ত ছবিরই উপকারে আসে।’
বলা দরকার, ‘ডিয়ার মা’, ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’র মতো একের পর এক সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন জয়া। আগামী বছর শুরু হতে চলেছে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘অর্ধাঙ্গিনী ২’ এর কাজ। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে ভীষণ ব্যস্ত সময় পার করছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
মাত্র ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে নানান স্বাদের ছবি উপহার দিয়েছেন আলিয়া ভাট। কখনো অভিনয়ে মুগ্ধ করেছেন, কখনো আবার সাহসী চরিত্রে চমকে দিয়েছেন। প্রযোজক হিসেবেও নতুন ভ্রমণ শুরু করেছেন এই বলিউড অভিনেত্রী। ক্যারিয়ারের এ পর্যায়ে এসে নিজেকে বদলে ফেলতে চাইছেন এই তারকা। এমন এক চলচ্চিত্র জগৎ নির্মাণ করতে চান, যেখানে একদিন তার আদরের মেয়ে রাহাও আনন্দ খুঁজে পাবে।
এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে আলিয়া স্বীকার করেছেন, এখনো তার ঝুলিতে এমন কোনো ছবি নেই যা ছোট্ট রাহা উপভোগ করতে পারবে। হয়তো এ ভাবনা থেকে, মা হওয়ার পরই তিনি কমেডি ঘরানার ছবির প্রতি বেশি আকৃষ্ট হচ্ছেন। আগে এ ধারার ছবিতে কাজ করেননি। তার ভাষ্যে, ‘মানুষকে এমন কিছু করতে হবে, যা নিজেকেই অনুপ্রাণিত করে। আর সে কারণেই নতুন কিছু চেষ্টা করার তাগিদ পাচ্ছি।’
ধারণা করা হচ্ছে, শিগগিরই আলিয়াকে কমেডি ছবিতে দেখা যাবে। তবে শুধু ঘরানা নয়, গল্পকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন তিনি। আলিয়ার ভাষায়, ‘আমি এমন এক গল্প খুঁজছি, যা আমাকে ভেতর থেকে নাড়া দেবে। সেটা হিন্দি হোক বা ইংরেজি—ভাষা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়, আসল হলো গল্প।’
আলিয়া বর্তমানে ‘লাভ অ্যান্ড ওয়ার’–এর শুটিং নিয়ে ব্যস্ত। সঞ্জয় লীলা বানসালি পরিচালিত ছবিটিতে তার সহশিল্পী রণবীর কাপুর ও ভিকি কৌশল। স্বামী রণবীরের সঙ্গে এটি তাঁর দ্বিতীয় ছবি। ব্রহ্মাস্ত্র ছবিতে এর আগে দুজনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল। ছবিটির বড় অংশের শুটিং ইতোমধ্যেই মুম্বাইতে শেষ হয়েছে, আর চূড়ান্ত দৃশ্য ধারণের জন্য শিগগিরই তাকে বিদেশে উড়াল দিতে হবে।
অভিনয়, প্রযোজনা, প্রচার—কাজের শত ব্যস্ততা সত্ত্বেও মায়ের দায়িত্বে এতটুকু অবহেলা করেননি আলিয়া। মেয়ে রাহার সঙ্গে সময় কাটাতে প্রায়ই রাত জেগে শুটিং করেছেন। কখনো রণবীর দিনে কাজ করেছেন আর তিনি থেকেছেন রাহার কাছে। আবার কখনো এর উল্টো। আলিয়ার মতে, ‘কাজ আর পরিবারের মধ্যে স্বাস্থ্যকর সমতা বজায় রাখা আমার কাছে সবচেয়ে জরুরি। এর সঙ্গে কোনো সমঝোতা করা যায় না।’
২০২১ সালে ‘ইন্টারনাল সানশাইন প্রোডাকশন প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা গড়ে তোলেন আলিয়া। সেই ব্যানারের প্রথম ছবি ‘ডার্লিংস’ মুক্তি পায় নেটফ্লিক্সে। এখানে শুধু প্রযোজক নন, অভিনেত্রী হিসেবেও আছেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বিজয় ভার্মা ও শেফালি শাহ। প্রযোজক হিসেবে নতুন গল্পের আনন্দে ভাসতে চান আলিয়া। ‘আমি সব সময় এমন গল্প পর্দায় আনতে চাই, যা কালজয়ী ও বাস্তবধর্মী। আমার হাতে বেশ কিছু ভিন্ন স্বাদের কাহিনী আছে, সেগুলো দর্শকের সামনে আনতে আমি ভীষণ রোমাঞ্চিত,’ বললেন আলিয়া।
সব মিলিয়ে অভিনয় ও প্রযোজনা দুই পথেই নতুনভাবে যাত্রা শুরু করেছেন আলিয়া ভাট। নিজের জীবনের নতুন অভিজ্ঞতা, বিশেষ করে মা হওয়ার পর তাকে যেন আরও পরিণত করেছে। এবার তিনি সত্যিই প্রস্তুত এক নতুন আলিয়াকে দেখানোর জন্য।
গত দুই বছর ধরে ফিলিস্তিনের নীরিহ মানুষকে নির্বিচার নৃশংসভাবে হত্যা করছে ইসরাইল। এখন পর্যন্ত ইসরাইলের ৬৪ হাজারের বেশি নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের ওপর নির্বিচারে হত্যা ইসরাইলিদের বর্বরতা থামাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিশ্ব শিল্পী সমাজ।
হলিউডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ১২০০ শিল্পী ঘোষণা দিয়েছেন—ইসরাইলের সঙ্গে কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক বা চলচ্চিত্র-সম্পর্কিত কাজে আর অংশ নেবেন না তারা।
যৌথ বিবৃতিতে শিল্পীরা জানান, ইসরাইলি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সিনেমায় অভিনয় করবেন না তারা। শুধু তাই নয়, দেশটিতে আয়োজিত কোনো চলচ্চিত্র উৎসবেও অংশগ্রহণ করবেন না। এর ফলে জেরুজালেম ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, হাইফা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, ডোকাভিভ, তেলআবিব ইন্টারন্যাশনাল ডকুমেন্টারি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এবং টিএলভি ফেস্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ আসরে থাকবে না তাদের সিনেমা বা উপস্থিতি।
‘ফিল্ম ওয়ার্কার্স ফর প্যালেস্টাইন’-এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে—‘এমন এক সংকটময় মুহূর্তে, যখন বিশ্বের বহু সরকার গণহত্যাকে সমর্থন দিয়ে চলেছে, তখন এই ভয়াবহতাকে রুখে দিতে আমাদের সবকিছু করতে হবে। ইসরাইলি সিনেমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান, পরিবেশক বা বিক্রয় এজেন্ট—কেউই কখনো ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকারের পক্ষে দাঁড়ায়নি।’
অভিনেত্রী হান্না আইনবাইন্ডার বলেন, ‘দুই বছর ধরে গাজায় যা ঘটছে, তা বিবেককে নাড়িয়ে দেয়। একজন ইহুদি আমেরিকান নাগরিক হিসেবে আমি মনে করি, গণহত্যা বন্ধ করতে আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করা উচিত।
এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, যখন নেতারা ব্যর্থ হচ্ছেন, তখন শিল্পীদেরই এগিয়ে আসতে হবে। ইসরাইলের সঙ্গে কাজ বন্ধ করতে হবে।’
হান্না আইনবাইন্ডারসহ এ তালিকায় আরো রয়েছেন এমা স্টোন, অলিভিয়া কোলম্যান, আয়ো এডিবেরি, লিলি গ্ল্যাডস্টোন, মার্ক রাফেলো, হান্না আইনবাইন্ডার, পিটার সারসগার্ড, আইমি লু উড, পাপা এসিডু, গ্যয়েল গার্সিয়া বার্নাল, রিজ আহমেদ, মেলিসা বারেরা, সিনথিয়া নিক্সন, টিল্ডা সুইনটন, জেভিয়ার বারডেম, জো অ্যালউইন, জশ ও’কনর প্রমুখ। এ ছাড়া নির্মাতাদের তালিকায় রয়েছেন ইয়র্গোস ল্যান্থিমোস, আভা ডুভার্নে, অ্যাডাম ম্যাককে, বুটস রিলে, এমা সেলিগম্যান, জোশুয়া ওপেনহাইমার, মাইক লেই প্রমুখ।
মাদককাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গত বছরের ১৭ অক্টোবর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হন অরিন্দম রায় দীপ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্রে সামনে আসে দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী- সাফা, টয়া, তিশা এবং সুনিধির নাম। বিষয়টি নিয়ে সেই সময় সরব ছিলেন তানজিন তিশা ও টয়া। ওই ঘটনার প্রায় এক বছর পর মুখ খুললেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী সাফা কবির।
সম্প্রতি একটি টেলিভিশনের পডকাস্টে অংশ নেন সাফা। সেখানে স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার খবরটি প্রকাশ করা হয়। রোববার একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি করার কথা ছিল। কিন্তু এমন খবরের কারণে তারা সেটা বাতিল করে। আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করি যে, এটা শুধু একটা নিউজ। এর সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু তাদের কাছে এটা কীভাবে প্রমাণ করব?’
অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘আমার কাছে প্রমাণ করার কিছু নেই, বোঝানো ছাড়া। আমার সিনিয়র শিল্পীরা আমার সঙ্গে কাজ বাতিল করে দিচ্ছিলেন। বিতর্ক এড়াতে আমার সঙ্গে কেউ কাজ করতে চাইছিলেন না। আমিও বুঝতে পারছিলাম সোশ্যাল মিডিয়ায় এটা নিয়ে ঝড় চলছে।’
না জেনে সামাজিকমাধ্যমে কোনো তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া যেমন উচিত নয়, তেমনি প্রমাণ ছাড়া কাউকে অপরাধী ধরে নেওয়াও অন্যায় বলে মনে করেন সাফা।
তিনি বলেন, ‘আমরা হুজুগে অনেক কিছু করে ফেলি। কিন্তু চিন্তা করি না এ ধরনের কর্মকাণ্ড মানুষের জীবন বা সমাজে কী প্রভাব ফেলবে। আমাদের পরিবার আছে, ওয়ার্ক লাইফ আছে, এগুলো কি কেউ চিন্তা করে? এমনিতেই মিডিয়াকে মানুষ ভালো চোখে দেখে না। এই ধরনের খবরের কারণে মা-বাবার মনে ধারণা জন্মাল, তাঁদের সন্তানরা এখানে সুরক্ষিত না, তাঁদের এখানে কাজ করতে দেওয়া যাবে না। আমার মনে হয়, যেকোনো কিছু করার আগে দুবার ভাবা দরকার।’
ওই সময় শোবিজের কয়েকজন বন্ধুকে পাশে পেয়েছিলেন বলে জানান সাফা। মানসিকভাবে তারা সাহস জুগিয়েছেন। তাদের জন্যই এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সাফা আরও বলেন, ‘তৌসিফ মাহবুব তখন বলেছিল, আমি সাফার সঙ্গে কাজ করব। এ ছাড়া জোভান অনেক সহযোগিতা করেছে, সিয়ামও সে সময় মানসিকভাবে পাশে ছিল। আমার এ বন্ধুরা অনেক সুন্দর। এখানে এত ভালো বন্ধু আমি পেয়েছি। অনেকেই বলেন মিডিয়ার মানুষ বন্ধু হয় না! আমি এর সঙ্গে কানেক্ট করতে পারি না।’
নতুন একটি ধারাবাহিক নাটক নিয়ে দর্শকের সামনে এলেন টিভি নাটকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আনিকা কবির শখ। গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে দীপ্ত টিভিতে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় ও রাত ৯টা ৩০ মিনিটে প্রচারিত হচ্ছে তার অভিনীত ধারাবাহিক নাটক ‘রূপনগর’।
এটি পরিচালনা করেছেন কায়সার আহমেদ। নাটকটির চিত্রনাট্য লিখছেন লিটু সাখাওয়াত।
এই নাটক নিয়ে শখ বলেন, ‘ক্যারিয়ারে সব সময়ই আমি প্রধান চরিত্রে কাজ করেছি। সাইড কাস্টিং করিনি। তবে এবারই প্রথম নারীকেন্দ্রিক ধারাবাহিক গল্পে কাজ করলাম। আমাকে ঘিরেই এটির গল্প।
নির্মাতা কায়সার আহমেদ ‘বকুলপুর’-এর ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তার পর এবার এক ঝাঁক জনপ্রিয় শিল্পীদের নিয়ে ‘রূপনগর’ নির্মাণ করেছেন।
নাটকটির গল্প, পাশাপাশি দুটি ইউনিয়নের দুই চেয়ারম্যানের এক এলাকা ‘রূপনগর’-কে ঘিরে। বলা হয়, এখানে সবাই নিজের রূপ আড়াল করে নানা রং-তামাশার ঢালে।
দুই চেয়ারম্যান একসময় পরস্পরের খুব ভালো বন্ধু থাকলেও এখন তাদের মাঝে চরম শত্রুতা।
এ ধারাবাহিকে আরো আছেন শ্যামল মওলা, আ খ ম হাসান, দিলারা জামান, নাজনীন হাসান চুমকি, ইমতু রাতিশ, শাফিউল রাজ, সানজিদা, সাফানা নমনী, সুব্রত, মাহমুদুল ইসলাম মিঠু, এমিলা হকসহ অনেকে।
ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের নন্দিত ও প্রভাবশালী চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভীন পপি। যার অভিনয়ে মুগ্ধ ছিলেন সব বয়সি ও শ্রেণির দর্শক। কিন্তু হঠাৎ করেই অভিনয় থেকে দূরে সরে যান তিনি। ব্যক্তিগত কারণে এই নায়িকা মিডিয়া থেকে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এ অভিনেত্রীকে কোনো অনুষ্ঠানেও দেখা যাচ্ছিল না। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শুরুতে স্বামী-সন্তান নিয়ে প্রকাশ্যে আসেন তিনি।
ঢাকাই সিনেমার একসময়ের নন্দিত চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভিন পপি দীর্ঘদিন ধরেই রূপালি পর্দা থেকে দূরে রয়েছেন।
পারিবারিক জমি নিয়ে বিরোধে থানায় জিডি হলে প্রকাশ্যে আসে তার বিয়ে ও সন্তানের খবর। বর্তমানে সংসার ও সন্তান নিয়ে ব্যস্ত সময় আছেন তিনি। আজ চিত্রনায়িকার জন্মদিন।
জন্মদিন প্রসঙ্গে পপি বলেন, ‘যখন সিনেমায় নিয়মিত কাজ করেছি, তখন জন্মদিন ছিল উৎসবের মতো। দিনভর মানুষ আসত, ভক্তরা ফোন দিতেন, কেউ কেউ বাসায় কেক-ফুল পাঠাতেন। কখনও শুটিং সেটেই জন্মদিন উদযাপন করেছি। পপি ফ্যান ক্লাবগুলোও দেশজুড়ে নানা আয়োজন করত। আজকের জন্মদিন ঘরোয়াভাবেই কাটবে। কিছু এতিমখানায় কোরআন খতম ও খাবারের আয়োজন করা হয়েছে।’
জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আসা পপি বলেন, ‘পরিবারের জন্য দায়িত্ব পালন করতে হয়, তবে নিজের ভিত্তি শক্ত না করে সবার জন্য সবকিছু বিলিয়ে দেওয়া উচিত নয়। কারণ পরে যেন কেউ আঙুল তুলে কথা না বলতে পারে। একসময় ভেবেছিলাম সবাই আমার। পরে দেখলাম কেউই আর আমার নেই। সেই কঠিন সময়ে আমার ইন্ডাস্ট্রির মানুষ আর স্বামী আদনান পাশে ছিল। তার সমর্থনেই পথচলা সহজ হয়েছে।’
এদিকে, পপি অভিনীত ‘কাঠগড়ায় শরৎচন্দ্র’ সিনেমার কাজ আবার শুরু হবে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে তিনি অভিনয়ে ফিরবেন কিনা, তা এখনও নিশ্চিত নন।
অভিনেত্রীর ভাষ্যে, ‘এখন কিছু বলা সম্ভব নয়। আপাতত অভিনয় করছি না, সংসার নিয়েই ব্যস্ত আছি।’ খুব শিগগিরই মুক্তি পেতে যাচ্ছে পপি অভিনীত সিনেমা ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন’।
২০১৯ সালে এফডিসিতে ছবিটির শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সাদেক সিদ্দিকী পরিচালিত এ সিনেমা ২০২১ সালে সেন্সর ছাড়পত্র পায়। সমাজের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের গল্পনির্ভর এ ছবিতে পপিকে দেখা যাবে একজন পুলিশ কর্মকর্তার চরিত্রে। তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন আমিন খান।
পপির সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ছিল ‘দ্য ডিরেক্টর’ (২০১৯)। ২০২০ সালের অক্টোবরে তিনি ‘ধোঁয়া’ নামের আরেকটি ছবিতে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। তবে কাজ আর শুরু হয়নি। দীর্ঘ আড়ালের পর ২০২২ সালে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভিডিওবার্তার মাধ্যমে ভক্তদের সামনে আসেন পপি। তখন তিনি শুধু বলেছিলেন, ‘ভাগ্য থাকলে আবার ফিরব।’
গুণী নির্মাতা মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘কুলি’ সিনেমাতে ওমর সানীর বিপরীতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ঢাকাই সিনেমায় অভিষেক হয় পপির। অভিষেক সিনেমাতেই তিনি সারা বাংলাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। সিনেমাতে তার অনবদ্য অভিনয় এবং তার গ্ল্যামারাস উপস্থিতি তাকে প্রথম সিনেমাতেই নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। যে কারণে এর পরের পথচলাটা যেন পপির জন্য কিছুটা হলেও সহজ হয়ে যায়।
এরপর পপিকে একে একে দেখা যায় ‘দরদি সন্তান’, ‘চারিদিকে শত্রু’, ‘অন্যায় আবদার’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘জোর’, ‘মনের মিলন’, ‘মানুষ মানুষের জন্য’, ‘প্রাণের প্রিয়তমা’, ‘পাহারাদার’, ‘অবুঝ মনের ভালোবাসা’, ‘কারাগার’, ‘লাল বাদশা’, ‘দু’জন দু’জনার’, ‘মা যখন বিচারক’, ‘বিদ্রোহ চারিদিকে’, ‘মা যখন বিচারক’, ‘অনেক দিনের আশা’, ‘ভালোবাসার ঘর’, ‘জীবন মানেই যুদ্ধ’, ‘আমার ঘর আমার বেহেস্ত’, ‘বিদ্রোহী সন্তান’, ‘নারীরাও প্রতিবাদী’, ‘রানী কুঠির বাকি ইতিহাস’, ‘শ্রেষ্ঠ সন্তান’, ‘জগৎ সংসার’, ‘মেঘের কোলে রোদ’, ‘কী যাদু করিলা’, ‘বস্তির রানী সুরিয়া’-সহ অনেক দর্শকপ্রিয় ছবিতে।
২০০৩ সালে কালাম কায়সার পরিচালিত ‘কারাগার’ সিনেমায় প্রথম শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। পরবর্তী সময়ে নারগিস আক্তারের ‘মেঘের কোলে রোদ’ এবং সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান ডায়মন্ড পরিচালিত ‘গঙ্গাযাত্রা’ সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।
৯৮তম অস্কার আসরের জন্য বাংলাদেশের সিনেমা আহ্বান করা হয়েছে। নির্বাচিত সিনেমাটি বেস্ট ইন্টারন্যাশনাল ফিচার ফিল্ম বিভাগে প্রতিযোগিতা করবে। সিনেমা জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টা।
সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অস্কার বাংলাদেশ কমিটিতে জমা দিতে আগ্রহী পরিচালক-প্রযোজকের ছবিটি অবশ্যই বাংলা ভাষায় নির্মিত বাংলাদেশি চলচ্চিত্র হতে হবে। ১ অক্টোবর ২০২৪-এর পর এবং ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর আগে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে ধারাবাহিকভাবে ৭ (সাত) দিন বাণিজ্যিকভাবে প্রদর্শিত ইংরেজি সাব টাইটেলসহ যে কোনও পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বাছাই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। চলচ্চিত্রটির উল্লেখযোগ্য অংশ বাংলাদেশি পরিচালকের নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সিনেমাটি নির্মিত হতে হবে।
চলচ্চিত্রটি একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস (এএমপিএএস)-এর সমস্ত প্রযুক্তিগত এবং যোগ্যতার মানদণ্ড অনুযায়ী হতে হবে। এমনটাই জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ (বিএফএফএস)।
জমা দেওয়ার নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আগ্রহী প্রযোজক/স্বত্বাধিকারী একটি পূরণকৃত আবেদন ফর্ম (সমন্বয়কারী, অস্কার বাংলাদেশ কমিটি, বিএফএফএস থেকে পাওয়া যাবে), প্রকাশের তারিখ এবং প্রদর্শনী চালানোর প্রমাণ (সর্বনিম্ন ৭ দিন), দুটি ডিভিডি/ ব্লু-রে স্ক্রিনার বা একটি নিরাপদ ডিজিটাল লিঙ্ক, প্রেস কিট, গল্প সংক্ষেপ এবং চলচ্চিত্রের মূল ক্রেডিটসহ চলচ্চিত্র জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
এই বাছাই প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার জন্য আগ্রহী চলচ্চিত্র প্রযোজকদের উদ্দেশে বলা হয়, জমা দিতে হবে বিএফএফএস কার্যালয়ে: প্ল্যানার্স টাওয়ার, ৩য় তলা, ১৩/এ সোনারগাঁও (বীর উত্তম চিত্তরঞ্জন দত্ত) রোড, বাংলামোটর, ঢাকা ১০০০।
অ্যাকাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের আয়োজনে ২০২৬ সালের ১৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে ৯৮তম অস্কারের অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান। যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ক্যালিফোর্নিয়ার ডলবি থিয়েটারে ২৪টি শাখায় দেওয়া হবে পুরস্কার।
বলিউড অভিনেতা টাইগার শ্রফ ও বর্ষীয়ান অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের সিনেমা ‘বাগী ৪’ গত শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে। সাজিদ নাদিয়াওয়ালার প্রযোজনা এবং এ হর্ষ পরিচালিত এ সিনেমাটি ফ্র্যাঞ্চাইজির সবচেয়ে অ্যাকশন সিনেমা হতে চলেছে, এমনটি আগেই বলা হয়েছিল। সিনেমায় টাইগার শ্রফকে দেখা গেছে অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের বিরুদ্ধে এক মিশনে।
সম্প্রতি ‘বাগী ৪’ সিনেমা মুক্তি সামনে রেখে পিঙ্কভিলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেন তিনি এ সিনেমায় কাজ করতে রাজি হয়েছিলেন সে বিষয়ে জানিয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত। তিনি বলেন, টাইগার শ্রফের মতো তরুণের সঙ্গে কাজ করে তার নিজেকেও নতুন অভিনেতার মতো মনে হয়েছে।
অভিনেতা বলেন, ‘বাগী ৪’ সিনেমায় আমার চরিত্রটি খুবই শক্তিশালী ও নৃশংস। কিন্তু সিনেমার শেষে দর্শকদের মনে তার প্রতি এক ধরনের অনুভূতি তৈরি হবে।
সঞ্জয় দত্ত বলেন, যখন আমি প্রথম চিত্রনাট্য শুনেছিলাম, তখন আমার ‘বাস্তব’ সিনেমার কথা মনে পড়ে যায়। এমন অনুভূতি আমার অনেক দিন হয়নি।
তিনি বলেন, এ চরিত্রের জন্য তিনি অনেক বেশি পরিশ্রম করেছেন। এ চরিত্রের জন্য আমি নিজেকে নতুন করে তৈরি করেছি। শরীরচর্চা থেকে শুরু করে কঠোর প্রশিক্ষণ নিয়েছি এবং অনেক পরিশ্রম করেছি।
দুই বছর আগে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান চিত্রনায়িকা পরীমনির নানা শামসুল হক গাজী, যিনি ছিলেন পরীর শক্তি, একই সঙ্গে অনুপ্রেরণা। তিনি পরীমনির সঙ্গে ঢাকাতেই থাকতেন। প্রতিদিন পরীর ঘরে ফেরার অপেক্ষায় থাকতেন নানা।
এবার তার জন্য ঘরে অপেক্ষায় থাকে দুই সন্তান। সম্প্রতি ‘রঙিলা কিতাব’-এ অসাধারণ অভিনয়ের জন্য জনপ্রিয় ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ডস জিতেছেন পরীমনি। সেই অ্যাওয়ার্ডস নিয়ে বাসায় ফেরার সময় ঘরের দরজা খুলে দেয় তার দুই সন্তান।
বিষয়টি তাকে আবেগপ্রবণ করেছে। ফেসবুক পোস্ট দিয়ে ভক্তদের সঙ্গে এই অনুভূতি ভাগ করে নিয়েছেন অভিনেত্রী।
পরীমনি লিখেছেন, ‘এখন আমার ঘরের দরজা খুলে দেওয়ার মানুষ তারা। নানাভাই মারা যাওয়ার পর আর কেউ আমার ঘরে ফেরার জন্য এভাবে অপেক্ষা করেনি। রাতে যখন আমি অ্যাওয়ার্ড নিয়ে বাসায় ফিরলাম তখন দরজা খুলেই তারা দুজন এক ঝাঁপে আমার কোলে উঠে বসল। কী লাগে জীবনে আর!’
সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া জানিয়ে অভিনেত্রী আরো লিখেন, ‘শুকরিয়া খোদা। আমি শুধু আল্লাহর কাছে এখন এই দোয়া করি যেন এই সুখে কারো নজর না লাগে। আহা! কী সুন্দর পরিপূর্ণ জীবন আমার। রূপকথার মতো সুন্দর। আলহামদুলিল্লাহ।’
একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেত্রী দিলারা জামান। একজন গুণী অভিনয়শিল্পী হিসেবে কাজ করছেন ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে। মঞ্চ-টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করে পেয়েছেন বিপুল ভালোবাসা। এখনো অভিনয় করে যাচ্ছেন।
তবে এ গুণী অভিনেত্রী সম্প্রতি তার ভক্তদের সতর্ক করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার নামে ফেক আইডি খোলা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে আইনি সহায়তাও নিচ্ছেন এ বর্ষীয়ান অভিনেত্রী।
দিলারা জামান সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় নন।
তবে তার নামে বেশ কিছু আইডি ও পেজের দেখা মেলে। এবার এসব আইডি সম্পর্কে স্পষ্ট বার্তা দিলেন এ অভিনেত্রী। জানালেন, তিনি ফেসবুক ব্যবহার করেন না। এ বিষয়ে জামান বলেন, ‘আমার কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই।
কে বা কারা আমার নামে অ্যাকাউন্ট খুলেছে, আমি জানি না। বিষয়টি নিয়ে আমি ভীষণ বিরক্ত ও ইনসিকিউর ফিল করছি।’ একটি জাতীয় দৈনিকের মাধ্যমে তিনি নিজের ভক্ত ও দর্শকদের উদ্দেশে বার্তা দেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার সব শুভাকাঙ্ক্ষী ও দর্শকদের বলতে চাই, ফেসবুকে আমার নামে যেসব পেজ বা আইডি রয়েছে, সবগুলোই আমার অনুমতি ছাড়া খোলা হয়েছে। এসব ভুয়া আইডি থেকে প্রকাশিত কোনো পোস্ট বা বার্তায় বিভ্রান্ত হবেন না বা প্রলুব্ধ হবেন না।’
আইনের আশ্রয় নিয়েছেন জানিয়ে দিলারা জামান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি ইতোমধ্যে সাইবার ক্রাইম ইউনিটে জানিয়েছি।’
১৯৬৬ সালে ‘ত্রিধরা’ নাটক দিয়ে অভিনয় জীবনের শুরু করেন দিলারা জামান। পর্দায় তাকে মায়ের চরিত্রেই বেশি দেখা যায়। বেশিরভাগ অভিনয়শিল্পী তাকে মা বলেই ডাকেন। তিনি ১৯৪৩ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তার পরিবার যশোর জেলায় চলে আসেন। ঢাকার বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ইডেন মহিলা কলেজে পড়াশোনা করেন।
‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিকের ৫ নম্বর সিজন চলছে। ভক্তদের মুখে মুখে কাজল আরেফিন অমি পরিচালিত এ সিরিজটি। নাটকটির শুরু থেকেই সিজন ১, ২, ৩ এবং ৪ দিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচিত হন নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি ও তার টিম। ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ সিজনগুলোর ব্যাপক সাফল্যের পর এবার ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এর ফাইভ সিজন প্রচার হচ্ছে।
এই সিরিজে কাবিলা, শুভ, জাকির, শিমুল, পাশা, আরেফিন, হাবু ভাই নামের চরিত্রগুলোর মতো নেহাল চরিত্রটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ সর্বদা তুঙ্গে। যেই নেহাল চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তৌসিফ মাহবুব। এত দিন ব্যক্তিগত কিছু কারণে এ সিরিজ থেকে দূরে ছিলেন। তবে এ সিজনে ফিরছেন তিনি নেহাল হয়েই, যেটা তিনি নিজেই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
বললেন, ‘দর্শক সর্বদা চান নেহাল চরিত্রটি ফিরে আসুক। তাই ফের এ চরিত্রটির মাধ্যমে ব্যাচেলর পয়েন্টে দর্শক আমাকে দেখতে পাবেন।’ এর আগে নির্মাতা অমি বলেছিলেন, বাস্তব জীবনের মতোই হয়তো ভবিষ্যতে কোনো একসময় দেখা যাবে তাদের আবার একসঙ্গে। তাই সেই অপেক্ষার পালা মনে হয় শেষ হলো তৌসিফের ফেরার মাধ্যমে।
বলিউডের একটা অলিখিত নিয়ম আছে, ‘ভাইজানের সঙ্গে পাঙ্গা মানে যমের সঙ্গে পাঞ্জা’। আর তাই কেউ সে রাস্তার ধার দিয়েও হাঁটেন না। বিবেক ওবেরয় থেকে শুরু করে বেশ কয়েকজন তারকার ক্যারিয়ারে নাকি কাঁটা হয়েছেন সালমান খান। এমনকী অরিজিৎ সিং-এর গানও ছবি থেকে বাদ দেওয়ানোর অভিযোগ উঠেছিল ভাইজানের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি বিগ বসের মঞ্চে নিজের ট্রেডমার্ক নো-ননসেন্স হোস্টিং স্টাইলে এই অভিযোগ নিয়ে কড়া জবাব দিলেন অভিনেতা। তিনি বলিউডে অনেকের ক্যারিয়ার ধ্বংস করেছেন বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগের কথা নিজেই উল্লেখ করেন, একইসঙ্গে এই দাবিটি সরাসরি উড়িয়ে দিয়েছেন। একইসঙ্গে স্পষ্ট বলেছেন, যদি তাকে কখনো কারোর ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে হয়, তবে তিনি একমাত্র নিজের ক্যারিয়ার ধ্বংস করতেই সফল হবেন।
রবিবার বিগ বস উইকেন্ড কা ভারে হাজির হয়েছিলেন শেহনাজ গিল। এদিন প্রাক্তন বিগ বস প্রতিযোগিকে স্বাগত জানান সালমান। শেহনাজ তার ভাই শেহবাজকে বিগ বস হাউসের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়ার অনুরোধ জানান।
শেহনাজ বলেন, ‘স্যার, আপনি এতজনের ক্যারিয়ার গড়ে দিয়েছেন…।’ এসময় জবাবে সালমান বিনয়ের সঙ্গে বলেন, ‘আমি কখনো কারো ক্যারিয়ার তৈরি করিনি। ক্যারিয়ার একমাত্র সর্বশক্তিমানই তৈরি করতে পারেন।’
এরপর ভাইজান বলেন, ‘মানুষ আমার ওপর লাঞ্ছনাও লাগিয়েছে, যে আমি অনেকের ক্যারিয়ার ধ্বংস করেছি। কিন্তু সত্যি বলতে, সেটা আমার হাতেও নেই। আজকাল, এটি বলা একটি প্রবণতা হয়ে উঠেছে, যে আমি নাকি ক্যারিয়ার খাই। বলুন তো, আমি কার ক্যারিয়ার খেয়েছি? এবং যদি আমি কখনও সেটা করি তা হবে আমার নিজের ক্যারিয়ার। আমি যদি আত্মতুষ্টিতে থাকি এবং জিনিসগুলো আমার হাত থেকে পিছলে যেতে দিই…কিন্তু আমি সবকিছু আমার মুঠোয় ধরে রাখতে কঠোর পরিশ্রম করি।’
এদিকে এক সাক্ষাৎকারে ‘দাবাং’ পরিচালক অভিনব কাশ্যপ বলেন, ‘সালমান খান বলিউডের স্টার সিস্টেমের জনক। তিনি এমন একটি চলচ্চিত্র পরিবার থেকে এসেছেন যা ৫০ বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছে। তিনি এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যান। তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ মানুষ। তারাই পুরো প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। আপনি যদি তাদের সাথে একমত না হন তবে তারা আপনার পিছনে আসবে।’ এর আগে গায়ক অরিজিৎ সিং ও অভিনেতা বিবেক ওবেরয়ের ক্যারিয়ার ধ্বংস করার অভিযোগও ওঠেছে সালমান খানের বিরুদ্ধে। প্রসঙ্গত, বিগ বস ১৯ শো এখন সম্প্রচারিত হচ্ছে জিও হটস্টার এবং কালার্স চ্যানেলে।
সালমানকে আগামীতে দেখা যাবে ‘ব্যাটল অব গালওয়ান’ ছবিতে। ভারত ও চীনের মধ্যে ২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকায় হওয়া সংঘর্ষের উপর ভিত্তি করে তৈরি ছবিটি। এছাড়াও সালমানের হাতে রয়েছে ‘কিক ২’-এর কাজ।