বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
১৮ আষাঢ় ১৪৩২

নাটকে এখন বাজেট নয়, সংকট ভালো গল্পের

আপডেটেড
২০ এপ্রিল, ২০২৪ ১৯:৪২
সৈয়দ ইকবাল
প্রকাশিত
সৈয়দ ইকবাল
প্রকাশিত : ২০ এপ্রিল, ২০২৪ ১৯:৩৪

প্রতি বছর ঈদ উৎসবে দেশের বিভিন্ন টিভি ও ইউটিউব চ্যানেলসহ প্রায় তিন শ থেকে চার শ নাটক নির্মিত হয়ে থাকে। কখনও কখনও এই সংখ্যা কমবেশি হয়ে থাকে। এখনকার সময়ে টিভি চ্যানেল থেকে ইউটিউবেই নাটক নির্মাণের সংখ্যা বেশি। এর মধ্যে কিছু ইউটিউব চ্যানেলের নাটক টিভিতে প্রচার হওয়ার পর সেগুলো আবার ইউটিউবেও প্রচার হচ্ছে। আবার বেশ কিছু ইউটিউব চ্যানেল আছে যারা শুধু নিজস্ব ইউটিউবের জন্যই নাটক নির্মাণ করে থাকে। অন্যদিকে বর্তমানে প্রায় সব টিভি চ্যানেলের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল থাকায় তাদের নিজেদের নির্মিত নাটক টিভিতে প্রচারের পর আবার সেগুলো নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে। ফলে এখন একটি নাটক বানানোর লগ্নিকৃত টাকা দুই মাধ্যম থেকেই প্রযোজক বা লগ্নিকারক ফেরত পাচ্ছেন। যার কারণে নাটকের বাজেট এখন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। একটা সময় বলা হতো বাজেট নেই, নাটকে বাজেট কম- এটা এখনকার সময়ে নাটকের বাজেটের দিকে তাকালে বলা যাবে না।

বিশেষ করে ইউটিউবের আধিপত্য হওয়ার পর থেকেই গত কয়েক বছর ধরে একেকটি নাটক অনেক টাকায় বানানো হচ্ছে। একটা সময় নাটকের বাজেট নিয়ে নানান ধরনের কথা শোনা যেত। পরিচালক-অভিনয়শিল্পী থেকে শুরু করে নাটকের কলাকুশলীরা সব সময় বলত- নাটকের বাজেট কমে গেছে, এত কম বাজেটে নাটক বানানো সম্ভব নয় ইত্যাদি ইত্যাদি। ইউটিউবের কল্যাণে এখন নাটকের সেই বাজেট কয়েকগুণ বেড়েছে। অথচ ইউটিউবের আগে নাটকের বাজেট অনেক কমে গিয়েছিল। ২০১৬-২০১৭ সালেও নাটক এখনকার মতো এত বাজেটে নির্মিত হতো না। ২০১৮ সাল থেকে আস্তে আস্তে নাটকের বাজেট বাড়তে থাকে। নরমালি এখন একটি নাটক বানাতে চার-পাঁচ-ছয় লাখ টাকা নির্মাতারা হরহামেশাই পাচ্ছেন। এর থেকেও কম বাজেটে ছোট কিছু কনটেন্ট তৈরি হচ্ছে। ওইদিকের হিসেবে না গিয়ে যেগুলো আমাদের মেইনস্ট্রিমের নাটক বলে চিহ্নিত তা নিয়েই কথা হচ্ছে।

আর্টিস্ট ভেদে এখন একেকটি নাটকের বাজেট দশ-বারো-পনেরো লাখ পর্যন্ত পাচ্ছেন নির্মাতারা। এবার ঈদে তো আঠারো-বিশ লাখ এমনকি পঁচিশ লাখে নাটক নির্মাণের খবর পাওয়া গেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- এই যে এত এত বাজেট পাচ্ছেন নির্মাতারা, নাটকের গল্পে কতটা ভেরিয়েশন পাচ্ছেন দর্শক? সেই একই অভিনয়শিল্পীদের একই প্রেম কাহিনি, কমেডি গল্প, চিল্লাচিল্লি কিংবা প্রেম হওয়ার শুরুতে ঝগড়া, তারপর প্রেম, পরিবার মানে না- টাইপের গল্প অথবা প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, প্রেমিক চাকরি পায় না, পরিবার মানে না ইত্যাদি ইত্যাদি গল্প। অনেকটা নতুন বোতলে পুরোনো মদের মতো গল্প। আর এখন যোগ হয়েছে নাটকে গানের ব্যবহারসহ ঢাকার বাইরে শুটিং- দামি ক্যামেরা এবং বিজ্ঞাপনের মতো ইউনিট-ক্রু নিয়ে মুভ করা। বাজেট বাড়ছে, খরচ করতে সমস্যা নেই। কিন্তু যেই গল্পের জন্য নাটক- সেই গল্পের জন্য কতটা খরচ করে নাটক নির্মিত হচ্ছে? মানে ভালো গল্পের এবং ‘খরচওয়ালা’ গল্পের পেছনে কি সেই বাজেটটা যাচ্ছে?

বিশিষ্ট সাংবাদিক, নাট্যকার ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা রেজানুর রহমান বলেন, ‘নাটকে ভালো গল্পের সংকট রয়েছে এটা যেমন সত্যি, তেমনি অনেকের কাছে ভালো গল্প থাকার পরও সে বাজেটের জন্য তা বানাতে পারছেন না- এটাও সত্যি। আসলে এখন কোনো লেভেল কোম্পানি (ইউটিউব), টিভি কিংবা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্রথমেই নির্মাতার কাছে জিজ্ঞাসা করেন- ‘যে গল্প নিয়ে কাজ করবেন সেটির ভিউ হবে নাকি’- এই কথায় নির্মাতা নতুন কোনো কনসেপ্ট নিয়ে কাজ করতে চান না। সেই একই ফর‌ম্যাটে কাজ করতে হচ্ছে তাকে। এখন দেখা গেছে কেউ একজন একটি গল্প নিয়ে কাজ করায় সেটির ভিউ হয়েছে- সবাই সেটা বানাতে ছুটে। মানে হলো ভিউয়ের পেছনে দৌঁড়াচ্ছি। ভিউ-ই যখন এখন একমাত্র বাণিজ্য তখন তো গল্প ফ্যাক্ট না।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্মাতাদের স্বাধীনতা দিতে হবে। নির্মাতারা স্বাধীনতা না পেলে কাজ করা মুশকিল। অমুকটার মতো, তমুককে নিয়ে জুটি করে নাটক বানানোর জন্য প্রেসার না দিয়ে তাকে স্বাধীনতা দিতে হবে। এখন গল্পসহ ‘পাঁচজন- পাঁচজন’ জুটিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলে দেয়া হচ্ছে নাটক বানানোর জন্য। সেই ‘পাঁচজন-পাঁচজন’ জুটির দশজন এতো ব্যস্ত যে, তাদেরকে মেনটেইন করতে গেলে নাটকের দিকে নজর দেয়া যাচ্ছে না। তারা ব্যস্ত থাকতেই পারেন। কিন্তু জুটি বেঁধে দিলেই বিপদ। নির্মাতাকে বলতে হবে- স্বাধীনভাবে গল্পে যে ধরনের আর্টিস্ট যায়, তাদেরকে নিয়েই বানান। তাহলে নতুন গল্প এবং নতুন আর্টিস্টও ইন্ডাস্ট্রিতে তৈরি হবে। বর্তমানে যারা কম্প্রমাইজ করে কাজ করছেন যা হওয়ার তাই হচ্ছে। ফলে মনে রাখার মতো নাটক হচ্ছে না। এখন আমাদের লাখ লাখ টাকা বাজেট যাচ্ছে, শত শত নাটকও হচ্ছে। কিন্তু অর্জনের জায়গাটা ফাঁকাই থেকে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে কেউ কথা বলছে না।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশির ভাগ নাটকে লোকেশন (প্রয়োজন না হলেও), লাইট-ক্যামেরাসহ এগুলোতে অপ্রয়োজনীয় বাজেট ব্যবহার, মেইন আর্টিস্টদের বেশি রেম্যুনারেশন (আর্টিস্টরা নিজেরাই নিজেদের পারিশ্রমিক ঠিক করছেন), শুটিং ইউনিটে বিলাসবহুল খরচ করায় বেশির ভাগ নাটকের মূল বাজেট সেখানেই চলে যাচ্ছে। ফলে নাটকে এত এত বাজেট পাওয়ার পরও যেই ভিন্নধর্মী গল্পটির পেছনে বাজেটটা খরচ করার কথা- সেখানে কি খরচ হচ্ছে না। সেই একই গল্প, একই মেকিং এবং কমেডি টাইপ নাটকগুলোই নির্মিত হচ্ছে। এখন তো একটি নাটকের গল্পের সঙ্গে আরেকটি নাটকের নামেরও বেশ মিল পাওয়া যায়। যেমন- ‘তুই আমারই’, ‘তোর জন্য’, ‘আজকাল তুমি আমি’, ‘তোমাতে হারাই’, ‘তোমায় ভালোবেসে’- এবারের ঈদের এই নাটকগুলোর নাম প্রায় কাছাকাছি। এরকম ইউটিউবে খুঁজলে আরও অনেক নাটক পাওয়া যাবে যেগুলোর নাম প্রায় কাছাকাছি। আরও রয়েছে ইউটিউবে ‘কাটতি টাইপ’ নাটকের নাম। যা আসলে শিল্পমানের নাটকের নাম নয়। ফলে দর্শক আসলে একটি নাটক দেখে তার মনের মধ্যে সেটি ‘দাগ’ কাটাতে পারছেন না। আর এখনকার নাটকগুলোতে প্রায় একই অভিনয়শিল্পী (অমুকের সঙ্গে তমুক, তমুকের সঙ্গে অমুক- ধরাবান্দা জুটি) হওয়ায় দর্শক আরও বিভ্রান্ত হচ্ছেন যে সে আসলে কোন নাটকটা দেখেছেন। ফলে মনের মধ্যে অনুভূতি সৃষ্টি করা এবং খুব ভাবনায় ভাবানোর মতো নাটক এখন খুব একটা দেখা যায় না।

নাটকে বাজেট বাড়লেও গল্পের অভাব কিংবা শিল্পমান সম্পন্ন নাটক কম নির্মিত হওয়ার পেছনে কারণ কি? এই বিষয়ে কথা বলেন নির্মাতা রাকেশ বসু। তিনি বলেন, ‘বাংলা নাটকের এখন সব থেকে বড় সমস্যা হলো- গল্প সংকট। একটা সময় বাজেট নিয়ে সবাই কম-বেশি কথা বলতেন। কিন্তু এখন বাজেট সমস্যা থেকে গল্প সংকটটাই অনেক বড় ইস্যু একটা ভালো কাজের জন্য। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীরা যে ধরনের কাজ করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন এবং ভিউ কাউন্ট হয় সেই একই ধরনের গল্প নিয়েই কাজ করেন। সে ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা হলো ভিউ হওয়া একই গল্পের পুনরাবৃত্তি। ফলে অভিনয়শিল্পীরা জনপ্রিয়তার দিকে নজর দিতে গিয়ে ভালো গল্পের কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বারবার।’

আগে একটি নাটকের স্ক্রিপ্ট ফাইনাল হতো। টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠান প্রধানসহ ক্রিয়েটিভ টিম মিলে গল্পটি ফাইনাল হওয়ার পর কোন অভিনয়শিল্পী কোন চরিত্রে অভিনয় করবে সেটা ভেবেচিন্তে কাস্টিং ফাইনাল করা হতো। এরমধ্যে স্ক্রিপ্ট নিয়ে কয়েকদফায় রাইটার ও পরিচালকসহ মিটিং হতো। তারপর ফাইনালি নাটকটি নির্মাণে যাওয়া হতো। নাটক নির্মাণের পর তা দেখে প্রিভিউ কমিটির মতামত থাকত এবং সেখানে পাস হলেই তা ফাইনালি সম্প্রচারে যেত।

আর এখন অনেকটা ঝালমুড়ি বানানোর মতোই নাটক বানানো হয়। মানে অমুক-তমুকের ভিউ আছে- আগে তাদের ডেট ‘লক’ করা হোক। তারপর তারা যেই গল্প পছন্দ করবেন কিংবা অনেক সময় অভিনয়শিল্পীও গল্প দিচ্ছেন সেটা নিয়ে- ডে নাইটের কিছু সিক্যুয়েন্স বানিয়ে (শুটিংয়ের সুবিধার্থে) শুটিংয়ে চলে যাওয়া হচ্ছে। স্লো-মো শট, গানের কিছু শট, নায়ক-নায়িকার দেখাদেখি-চোখাচোখি আর বিয়ে দিবে না বাবা-মা, ছেলে বেকার, চাকরি হয় না, পরিবার মেয়েকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেয় আর চিল্লাচিল্লি ভরা কমেডি গল্প। বেশির ভাগ নাটকই এখন এভাবে নির্মিত হচ্ছে বলে জানা যায়। পাশাপাশি এখন সেট বানানোতেও ভালো খরচ করে নাটক নির্মাণের খবর পাওয়া গেছে।

ইউটিউবের সঠিক নিয়মনীতি না থাকা, নাটকে প্রিভিউ সিস্টেম না থাকায় এবং ‘ভিউই’ একমাত্র বাণিজ্য হওয়ায় দিনকে দিন মানহীন নাটক বানানোর প্রতিযোগিতা হচ্ছে এবং তা নিম্নমানের তলানিতে যাচ্ছে বলে অনেকে অভিমত দেন। এর পাশাপাশি একটা গুরুত্বপূর্ণ দিকের কথাও তারা উল্লেখ করেন তা হলো- একটা সময় যারা নাটক নির্মাণ ও ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তারা টেলিভিশন ও থিয়েটারে দীর্ঘদিন কাজের অভিজ্ঞতা ছিল। আর এখন শুধু ব্যবসার উদ্দেশ্যেই (বেশির ভাগ) ইউটিউব চ্যানেল করে নাটকের নামে ‘কনটেন্ট’ বানানো হয়।

অথচ গল্পনির্ভর, জীবনবোধের নাটক, সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষের গল্প, আমাদের চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কত কত গল্প। প্রতিদিন সংবাদের পাতায় কত গল্প প্রকাশ পায়, অথচ আমাদের দেশের নাটক নির্মাতারা এসব গল্প দেখেন না। কারণ এসব গল্পে ভিউ পাওয়া যায় না। তাই ইউটিউব মালিক তথা প্রযোজকরা ওই ধরনের গল্প নিয়ে কাজ করতে বা নির্মাণে আগ্রহ পান না।

ইউটিউবে ভিউ হচ্ছে সস্তা-চটুল, কমেডি তথা সুরসুরি প্রেম মার্কা গল্পের। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। লাখ লাখ টাকা বাজেট দিয়ে যেসব ‘নাটক’ বানানো হচ্ছে তা আসলে কতটা সমাজে প্রভাব ফেলছে? কি শিখছেন তরুণ প্রজন্ম? অবশ্য তরুণ প্রজন্ম নাকি যা বানানো হচ্ছে- তাই দেখতে চায় বলে তাদের অভিমত। এত এত বাজেটের টাকা আদতে ‘শ্রাদ্ধ’ করাই হচ্ছে বলে প্রকৃত নাট্যপ্রেমী তথা সত্যিকারের সংস্কৃতপ্রেমীরা অভিমত দেন। তাদের মতে, বেশি বাজেট এলে বেশির ভাগ নাটককে ঝকঝকে তকতকে বানানো আর ‘ফুটেজ’ ছাড়া আর কিছুই না বলেও অনেকে অভিমত দেন। তাই ভালো বাজেট দিয়ে ভালো গল্প এবং ভিন্নধর্মী চরিত্রসহ জীবনবোধের নাটক বানানোর তাগিদ দেন তারা।

বর্তমানে নাটক নির্মাণের একটা চিত্র তুলে ধরলে এখনকার পরিস্থিতিটা আরও পরিষ্কার বোঝা যাবে। এখন নাটকের কয়েকজন মেইন নায়ক তারা তাদের নিজেদের প্রযোজনা হাউস থেকে নাটক বানিয়ে তা নিজেই বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল এবং টিভি চ্যানেলে তাদের চাহিদামতো সরবরাহ করছেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক নাট্য নির্মাতা বলেন, ‘এভাবে আসলে কাজ করে অভ্যস্ত না। এই ভিউ বাণিজ্য এসে একজন নির্মাতার হাত-পা বন্দি হয়ে গেছে। আমরা আসলে বিক্রি হয়ে গেছি। এখন তো চাহিদাসম্পন্ন নায়করা তাদের প্রযোজনা হাউস থেকে নাটক তৈরি করেন। তারা নিজেদের বানানো ডিরেক্টর টিম, প্রোডাকশন টিমসহ ডিওপি এবং কো-আর্টিস্ট- সবই তারা ঠিক করেন। ডিরেক্টরকে দিয়ে শুধু ডিরেকশন (আসলে নামে ডিরেকশন) দেওয়ান। কোথায় এডিটিং হবে, কোথায় মিউজিক হবে এবং কীভাবে কাজটা কোথায় কত টাকায় বিক্রি হবে- সবই তিনি (নায়করা) ঠিক করেন। এভাবে চললে তো আসলে নাটকের ‘মান’ বলে কিছু থাকবেই না। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।’

ভালো নাটক বানানোর কিছু ব্যতিক্রম চিত্রও রয়েছে। কিছু যে ভালো গল্পের নাটক নির্মিত হচ্ছে না তা বলা যাবে না। যারা সত্যিকারের ভালো গল্পের খোঁজ করেন এবং জীবনবোধের গল্পসহ ভিন্নরকম কিছু বা আইডলজির জায়গা থেকে কাজ করছেন তারা ঠিকই শত প্রতিকূলতায় কিছু নাটক বানাচ্ছেন। আমাদের দেশে ওটিটিতে ওয়েবসিরিজ ও ওয়েবফিল্মে ভিন্নধর্মী গল্পের কাজ হওয়ায় সেগুলো দর্শকদের কাছে সাড়া ফেলেছে। ফলে তার কিছুটা ছোঁয়া নাটকেও লেগেছে বলা যায়। এবারের ঈদে ভিন্নধর্মী গল্পের তেমনকিছু নাটক হচ্ছে- ‘স্মৃতিসারক’, ‘বিদায় বসন্তে মধ্যাহ্ন রোদে’, ‘নিখোঁজ’, ‘বোঝা’, ‘শেষমেষ’, ‘সম্ভবত প্রেম’, ‘কিছু কথা বাকি’, ‘দুনিয়া’, ‘অভাব’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘অভিশাপ’, ‘অভাব, ‘জাদুর শহর’, ‘গর্ভ’, ‘কলিজার টুকরা’, ‘স্বপ্নটা সামান্যই’সহ আরও কিছু নাটক।

এখন প্রায় একই মুখ ঘুরেফিরে সব নাটকেই দেখতে হচ্ছে বলে সব নাটক একইরকম লাগার কথা দর্শকরা অভিমত দিয়েছেন। এক সময় নাটকে নিশো, মেহজাবীন, অপূর্ব, তানজিন তিশাকে জুটি বেঁধে অভিনয় করতে দেখা যেত। এখনকার সময়ে অপূর্ব ও তানজিন তিশাকে নাটকে দেখা গেলেও নিশো-মেহজাবীনকে দেখা যায় না। নিশো চলচ্চিত্র ও ওটিটির কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় গত কয়েক ঈদ উৎসবে তাকে নাটকে দেখা যায়নি।

অন্যদিকে মেহজাবীনও বর্তমানে ওটিটির কাজের সঙ্গে সম্প্রতি সিনেমায় নাম লিখিয়েছেন। তারপরও নাটকে মেহজাবীনের কাজের আগ্রহ রয়েছে; কিন্তু ভালো গল্পের অভাবে কাজ করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি। ‘সাবা’ ও ‘প্রিয় মালতী’ শিরোনামের দুটি ছবিতে কাজ করতে যাচ্ছেন ভক্তদের মেহু। তার জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রিয় মালতী’ সিনেমা ঘোষণার অনুষ্ঠানে নাটকে অভিনয় কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি নাটকে একেবারেই কাজ করতে চাই না, বিষয়টা তেমন না। আমি আসলে ভালো গল্প পাই না। ভালো গল্প পেলে অভিনয় অবশ্যই করব। আমার কাছে যে স্ক্রিপ্টগুলো আসে সেগুলো পছন্দ হয় না। দর্শক আসলে ভিন্নতা চায়। আমি অনেক দিন পর সিনেমাওয়ালা ইউটিউব চ্যানেলের ‘অনন্যা’ করেছি। কারণ এটার গল্পটা ভিন্ন। এটার জন্য আমি সাড়াও পেয়েছি বেশ। তাই আমি এরকম ভিন্ন ভিন্ন গল্পের কাজ করতে চাই। তেমন স্ক্রিপ্ট পেলে কাজ করব।’

ঈদে রাফাত মজুমদার রিংকুর পরিচালনায় ‘রূপান্তর’ নাটকটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। ট্রান্সজেন্ডার এবং তৃতীয় লিঙ্গের ইস্যুতে নাটকটিকে শেষমেশ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা শ্রেণি ধর্মের বিষয়ের সঙ্গে তুলনা করে। ফলে কর্তৃপক্ষ নাটকটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়। ভিন্নধর্মী গল্প নিয়ে নাটক বানাতে গেলেও নানান সমস্যার কথা উল্লেখ করেন নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকু। তিনি বলেন, ‘আগের চেয়ে ভিন্ন ধরনের গল্পের নাটক বানানো হচ্ছে। তবে সেটা সংখ্যায় কম। এখন আলাদা টাইপের গল্পের নাটক বানাতে গেলেও নানান ধরনের জটিলতা তৈরি হচ্ছে। আমি নিজেও ‘রূপান্তর’ নিয়ে একপ্রকার জটিলতায় রয়েছি। তাই যারা ইউটিউবের মালিক এবং প্রযোজক তারা ভিন্ন টাইপের গল্পের নাটক বানাতে রিস্ক নেয় না। বাধ্য হয়েই গদবাঁধা গল্পের নাটক বানায়। নাচ-গান আর বিউটি লোকেশনসহ কাজগুলো হচ্ছে।’

নাট্যপ্রেমী-বিনোদনপ্রেমী তথা সংস্কৃতিপ্রেমীদের প্রত্যাশা, নাটকের গল্পে সমাজের বাস্তবচিত্র থাকবে। কারণ ‘সমাজের দর্পণই হচ্ছে নাটক’। একটা সময় বিটিভিতে নাটক প্রচারের মাধ্যমে মধ্যবিত্তের ড্রয়িংরুমের সাজটা কেমন হবে- তা সেই নাটক থেকে শিখত মধ্যবিত্ত সমাজ। সময় বদলেছে, মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়েছে। সমাজের আমূল পরিবর্তনে নিজেদের ‘রুচির দুর্ভিক্ষ’ যেন নাটকের মাধ্যমে প্রচার হয়ে তা আবার সমাজে প্রভাব ফেলুক- তা কারোরই কাম্য নয়। কারণ আজকে পর্দায় যা দেখানো হবে তাই দেখবেন দর্শক। সংস্কৃতিকর্মী তথা ক্রিয়েটিভরাই প্রকৃত ‘দর্শক’ তৈরি করেন। সারা পৃথিবীতেই রুচিহীন-সস্তা কনটেন্টেরই ‘ভিউ’ বেশি, এটাই স্বাভাবিক। এরমধ্যেও নিজেদের দর্শক নিজস্ব গল্প দিয়ে নিজেদেরই তৈরি করতে হবে- এমনটাই মনে করেন প্রকৃত সংস্কৃতিপ্রেমীরা।


আবারও সিনেমায় ফিরছেন শাবনূর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিনোদন প্রতিবেদক

নব্বই দশকের অন্যতম জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনূর। সময়ের পরিক্রমায় অস্ট্রেলিয়ায় থিতু হয়েছেন অনেক আগেই। এর মধ্যে কয়েকবারই সিনেমায় ফেরার কথা জানিয়েছিলেন নায়িকা। এরপর তিনি সত্যি ফিরেছিলেন লাইট-ক্যামেরার সামনে। গেল বছরের এপ্রিলে ‘রঙ্গনা’ সিনেমা দিয়ে দীর্ঘ অনেক বছর পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান শাবনূর। মে মাসে অর্ধেকের বেশি সিনেমাটির দৃশ্যধারণ শেষ করে আবার সিডনিতে ফিরে যান নায়িকা। এরপর কেটে যায় ১৪ মাসেরও বেশি সময়।

চলতি বছরের ৮ আগস্ট থেকে সিনেমার বাকি অংশের শুটিং হওয়ার কথা থাকলেও দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে দেশেই ফিরতে পারেননি শাবনূর। এরপর ‘রঙ্গনা’র দ্বিতীয় ধাপের শুটিং শুরু করার কথা থাকলেও পরে জানা যায়, সম্মানীর কারণে শাবনূরের নতুন শিডিউল পাচ্ছেন না এই নির্মাতা। মাঝপথে থেমে গেছে ‘রঙ্গনা’র কাজ। এর আগে শাবনূর জানিয়েছিলেন, নির্মাতা তার সঙ্গে নাকি কথা দিয়ে কথা রাখেননি। সব মিলিয়ে এমনও রটনা রটে, সিনেমা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তবে শাবনূর তার ভক্তদের আশ্বস্ত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, তিনি সিনেমাটিতে কাজ করছেন। এরপর আরো কয়েক মাস কেটে গেলেও তার শুটিংয়ে ফেরার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে এই সিনেমার নির্মাতা আরাফাত বলেন, ‘কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন, ‘রঙ্গনা’র শুটিং আর হচ্ছে না। এটা পুরোপুরি অবাস্তব কথা। শিগগিরই শাবনূর আপা দেশে আসবেন, তারপর শুরু হবে শুটিং। শাবনূর আপার সঙ্গে প্রতিনিয়ত কথা হচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী নভেম্বরে সিনেমার শুটিং করার পরিকল্পনা আছে।’


নিলয়-হিমির অনন্য রেকর্ড

‘বড় ছেলে’কে পেছনে ফেলে সর্বাধিক ভিউ শশুরবাড়িতে ঈদ’ (নাটক)।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিনোদন ডেস্ক

বর্তমান সময়ে নাটকের জনপ্রিয় জুটি নিলয় আলমগীর ও জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। জুটি বেঁধে এরই মধ্যে তারা দেড় শতাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন। গত ঈদেও একাধিক নাটক মুক্তি পেয়েছে তাদের। এর মধ্যে ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে এসেছে কয়েকটি নাটক।

এবার নতুন আরও এক ইতিহাস গড়লেন এ জুটি। তাদের অভিনীত নাটক ‘শশুরবাড়িতে ঈদ’ ভিউয়ের দৌড়ে আগেই পেছনে ফেলেছিল বাংলা নাটকের সর্বাধিক ভিউয়ের নাটক ‘বড় ছেলে’কে। এবার আরও একটি অর্জন জমা হয়েছে এ জুটির ঝুলিতে। মাত্র ১৪ মাসে নাটকটি ইউটিউবের সর্বাধিক ভিউয়ের খাতায় নাম লেখায়। যা দ্রুততম সময়ে অধিক ভিউ। এখন পর্যন্ত নাটকটি দেখেছেন ৬ কোটির অধিক দর্শক। এটি বাংলা নাটকের ইতিহাসে অনন্য এক রেকর্ড।

গত বছরের এপ্রিল মাসে ইউটিউবে মুক্তি পায় নাটকটি। গত আট বছর ধরেই শীর্ষ এই স্থানটি ধরে রেখেছিল ‘বড় ছেলে’ নাটক। ভিউয়ের দিক থেকে এখন এটির অবস্থান দ্বিতীয় স্থানে। এর ভিউ ৫ কোটি ৪৮ লাখ পেরিয়েছে।

‘শ্বশুরবাড়িতে ঈদ’ নাটকের গল্প আবর্তিত হয়েছে শ্বশুরবাড়িতে ঈদ করার ঘটনাকে ঘিরে। বিয়ের পর দূরে থাকলেও এবার শ্বশুরবাড়িতে ঈদ করতে এসে ভিন্ন এক পরিস্থিতির মুখে পড়েন জামাই।


নতুন গানে কণ্ঠ দিলেন সাবিনা ইয়াসমিন

ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিনোদন প্রতিবেদক

চলতি বছর ফের গানে নিয়মিত হলেন কিংবদন্তি শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। স্টেজ শোর পাশাপাশি নতুন গানেও কণ্ঠ দিচ্ছেন তিনি।

আজ সোমবার (৩০ জুন) ‘প্রাণের বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি দেশের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন। গানটির কথা লিখেছেন ও সুর করেছেন আরিফ হোসেন বাবু। এটির সংগীত পরিচালনা করেছেন রোহান রাজ। এ গান প্রসঙ্গে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘গানটির কথাগুলো খুব সুন্দর। প্রচলিত মডার্ন সুরে দেশের এ গান। শুনতে বেশ ভালো লাগে। রোহান যেমন ভালো গায়, তেমনই এ গানে ভালো সংগীতও করেছে। আশা করছি, শ্রোতাদেরও ভালো লাগবে।’ গীতিকার-সুরকার আরিফ হোসেন বাবু বলেন, ‘গান নিয়ে সাবিনা আপার পাশে দাঁড়ানোও একটা সৌভাগ্যের বিষয়। আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এমন একজন কিংবদন্তির কণ্ঠে আমার একটি গান থাকা এটি অনেক বড় আনন্দের বলতে পারি।’ সংগীত পরিচালক রোহান রাজ বলেন, ‘গান নিয়ে ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখেছি। যাদের গান শুনে বড় হয়েছি তাদের সঙ্গে কাজ করতে পারা আমার জন্য ভীষণ আনন্দের। তার মধ্যে সাবিনা আপা আমাদের লিজেন্ড। তিনি আমার সংগীতে গেয়েছেন, এটিই আমার জন্য বড় পাওয়া।’ সাবিনা ইয়াসমিনের সর্বশেষ প্রকাশিত গান ‘আমার পতাকা লাল-সবুজে আঁকা’। তার সঙ্গে গানটিতে দ্বৈত কণ্ঠ দিয়েছেন বাংলা গানের যুবরাজ আসিফ আকবর। এটি লিখেছেন মনিরুজ্জামান মনির। সুর-সংগীত পরিচালনা করেছেন মনোয়ার হোসাইন টুটুল।


ঋতুপর্ণা- চঞ্চল চৌধুরী এবার একসঙ্গে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিনোদন প্রতিবেদক

দুই বাংলার তিন জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী—ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় ও চঞ্চল চৌধুরী—প্রথমবারের মতো একসঙ্গে বড় পর্দায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন। পরিচালক অমিতাভ ভট্টাচার্য পরিচালিত নতুন ছবি ‘ত্রিধারা’-তে দেখা যাবে এই তিনজনকে।

ছবির প্রযোজনায় রয়েছেন অমিত মুখোপাধ্যায়। প্রাথমিক কথাবার্তা চললেও দর্শকদের প্রত্যাশা, এই ছবি মুক্তি পেলে দুই বাংলার অভিনয়প্রেমীরা এক ফ্রেমে তিন কিংবদন্তিকে দেখতে পাবেন।

‘ত্রিধারা’ নাম থেকেই স্পষ্ট, এটি তিনটি ভিন্ন জীবনের গল্প নিয়ে নির্মিত হতে যাচ্ছে। প্রেম, অতীত এবং জীবনের বাস্তবতা—এই ত্রিমুখী রসায়নের জটিলতায় গাঁথা হবে সিনেমার কাহিনি।

চরিত্রদের জীবনে ২৫ বছর আগেকার প্রেম হঠাৎ ফিরে এলে কীভাবে তা বর্তমানকে এলোমেলো করে দেয়, কীভাবে মানুষ নিজের ভাঙা জীবনকে গুছিয়ে নিতে চেষ্টা করে—এই টানাপড়েনকে কেন্দ্র করেই নির্মিত হবে ‘ত্রিধারা’।

যদিও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু ঘোষণা হয়নি, প্রাথমিক পর্যায়ে কলাকুশলীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রী কেউই এ নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেননি।

এদিকে, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় বর্তমানে ব্যস্ত আছেন ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত পরিচালিত ছবি ‘গৃহপ্রবেশ’ নিয়ে। ছবিতে আরও রয়েছেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, জিতু কমল, সোহিনী সেনগুপ্ত ও রুদ্রনীল ঘোষ।


সাদামাটা ফারিণ যেভাবে জাহান হয়ে উঠলেন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিনোদন প্রতিবেদক

ছোটপর্দায় শুদ্ধ অভিনয়ের জন্য তাসনিয়া ফারিণ অনেক আগেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। কখনও গল্পের আবেগঘন কেন্দ্রবিন্দু, কখনও বা কাঁধে চেপে থাকা সম্পর্কের ভার—সবই তিনি বহন করেছেন সুনিপুণ দক্ষতায়। সিনেমার পর্দা তো ভিন্ন মেজাজের! আবার যদি হয় বাণিজ্যিক সিনেমা? সেটি যেন এক অন্য মহাকাব্য; যেখানে আবেগের পাশাপাশি লাগে অ্যাকশন, গ্ল্যামার আর সঠিক ‘স্ক্রিন প্রেজেন্স’। ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ইনসাফ’ যেন সেই পরীক্ষাতেই ফারিণের সাহসী অংশগ্রহণ।

মুনীর চৌধুরীর বিখ্যাত উক্তি ‘মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়, কারণে-অকারণে বদলায়’। মানুষের এই বদলে যাওয়াটা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় হয়। কখনও তা নান্দনিক, কখনও তা জরাজীর্ণ। তবে মানুষ সময়ের সঙ্গে বদলে যেতে থাকে। সেটি নানাভাবে নানামাত্রায়। এই বদলে যাওয়া কখনও প্রশংসিত, কখনও বা তিরস্কৃত। নাটক ও ওটিটি কনটেন্টের অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণও বদলে গেলেন। তার এই বদলে যাওয়া প্রশংসিত হলেও ঢের অবাক হয়েছেন দর্শকরা।

যে ফারিণকে এতকাল যারা দেখেছেন কলেজ-ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া প্রেমিকার চরিত্রে, পাশের বাসার মিষ্টি মেয়ের চরিত্রে কিংবা ঝগড়াটে প্রেমিকা হিসেবে। সেই ফারিণ সিনেমায় এসে হয়ে উঠলেন অ্যাকশন গার্ল! শাড়ি পরে ভারতের দক্ষিণী নায়িকাদের মতো তুমুল মারপিট করলেন। পুলিশের পোশাকে তার ক্যারিশমা দেখলেন সবাই। শুধুই কী তাই, ফারিণ আইটেম গানেও নাচলেন। নাচালেন দর্শকদেরও। কীভাবে ফারিণ এতটা বদলালেন? প্রশ্ন থেকেই যায়। কারণ, কয়েক বছর আগেও নাটকের অভিনেত্রীরা সিনেমায় এসে এমন চরিত্র করবেন তা যেন কল্পনারও বাইরে ছিল। যারাও এসেছেন তারাও আর্টফিল্ম টাইপের সিনেমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছেন। নাচগান আর অ্যাকশনে ভরপুর সিনেমায় তাদের ভাবাও যায়নি। অথচ ফারিণ সেটি করে দেখালেন। কোমল ফারিণ হয়ে উঠলেন মারকাটারি জাহান খান। ইনসাফ ফারিণের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক সিনেমা। নাটক-ওটিটি কিংবা ভিন্ন ধারার গল্পের সিনেমার পর ‘ইনসাফ’-এ ফারিণ নিজেকে যে রূপে উপস্থাপন করেছেন, তা সাহসী, শারীরিক ও মানসিকভাবে চ্যালেঞ্জিং—একজন ‘অ্যাকশন হিরোইন’। এই রূপান্তরের পেছনে লুকিয়ে আছে তার পরিশ্রম, প্রস্তুতি এবং আত্মনিবেদন। ফারিণের মতে, পুরো প্রজেক্টে তার আত্মবিশ্বাস এসেছিল মূলত স্ক্রিপ্ট পড়ে, নির্মাতা ও সহ-অভিনেতাদের প্রতি বিশ্বাস থেকে। জাহান চরিত্রটি শুধু মানসিক গভীরতা নয়, চাইছিল শারীরিক প্রস্তুতিও। এখানেই ফারিণের রূপান্তর সবচেয়ে দৃশ্যমান। ট্রেনিং, স্টান্ট রিহার্সাল, দিনের পর দিন কঠিন শুটিং— সব কিছু মিলিয়ে ফারিণ যেন নিজেকেই নতুন করে চিনেছেন। যারা ছবিটি দেখেছেন, তারা জানেন— এই অভিনেত্রী শুধু সংলাপে নয়, শরীরী অভিব্যক্তি, লড়াইয়ের দৃশ্য–এমনকি গানেও দারুণ স্বাচ্ছন্দ্য দেখিয়েছেন। বিশেষ করে ‘আকাশেতে লক্ষ তারা’ গানে তার পারফরম্যান্স, যা এখন সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত।


এই দিনে বুঝি—জীবনে সত্যিকারের সৌভাগ্য কী: অপূর্ব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিনোদন প্রতিবেদক

দুই দশকেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ার জিয়াউল ফারুক অপূর্বের। মডেলিং দিয়ে শুরু, এরপর নাম লেখান অভিনয়ে। নান্দনিক অভিনয় ও চরিত্রের ভিন্নতায় আজ তিনি টেলিভিশন নাটকের বরপুত্র, অনেকে তাকে রাজপুত্রও বলে থাকেন। রোমান্টিক অবয়বের জন্য ভক্তরা তাকে ‘রোমান্স কিং’ বলেও আখ্যা দেন।

গতকাল শুক্রবার জনপ্রিয় এ তারকার জন্মদিন। দেখতে দেখতে জীবনের অনেকগুলো বসন্ত পার করে দিলেন। ঘড়ির কাঁটা বারোটা বাজার আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহকর্মী, ভক্ত অনুরাগীদের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন এ সুপারস্টার।

মজার বিষয় হলো, আজ বাবা-ছেলে দুজনেরই জন্মদিন।

নিজের জন্মতারিখেই পৃথিবীতে আসেন অপূর্বর একমাত্র ছেলে জায়ান ফারুক আয়াশ। বাবা-ছেলে দুজনেই সবার ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন। নিজের জন্মদিন নিয়ে কখনও কোন আয়োজন না করলেও আয়াশকে ঘিরে প্রতিবারই বাসায় ঘরোয়াভাবে আনন্দ আয়োজন রাখা হয়। তবে এবার দেশের বাইরে থাকায় ছেলেকে নিয়ে কোনো আয়োজন নেই বাবা অপূর্বের।

জিয়াউল ফারুক অপূর্ব বলেন, ‘আজকের দিনটা শুধুই একটা তারিখ নয়, বরং জীবনের সবচেয়ে অলৌকিক উপহার স্মরণ করার দিন। আজ আমার জন্মদিন। কিন্তু এই দিনটা আরও বিশেষ হয়ে ওঠে, কারণ আজ আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দ, আমার ছেলে আয়াশেরও জন্মদিন। একই দিনে আমরা দুজন, বাবা ও ছেলে—জীবনের এই অনন্য বন্ধনটুকু ভাগ করে নেওয়া যেন এক অদ্ভুত আশীর্বাদ, জীবনের সবচেয়ে সেরা উপহার।’

সবার ভালোবাসায় সিক্ত হওয়া নাটকের এই ‘বড় ছেলে’ আরো বলেন, ‘সকাল থেকেই চারপাশটা ভরে উঠেছে অফুরন্ত ভালোবাসায়। বন্ধু-বান্ধবের শুভেচ্ছা, পরিবারের আলিঙ্গন, শুভাকাঙ্ক্ষীদের দোয়া, আর আপনাদের—আমার কাছের কিংবা দূরের ভক্তদের অকুণ্ঠ ভালোবাসা। প্রতিটি বার্তা, প্রতিটি ফোন, প্রতিটি মিষ্টি শব্দ আমার মন ছুঁয়ে গেছে।

এই দিনে বুঝি—জীবনে সত্যিকারের সৌভাগ্য কী! আমার আয়াশকে সঙ্গে নিয়ে এই দিনটা উদযাপন করতে পারা, এবং আপনাদের সবার শুভকামনায় সিক্ত হওয়া—এ যেন জীবনের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত।’

কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সবশেষে তিনি বলেন, ‘আমাদের পাশে থাকার জন্য, এই আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার জন্য, এবং আবারও মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য যে আমরা কতটা ভাগ্যবান—সবার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা। আমার এবং আয়াশের পক্ষ থেকে, অসংখ্য ভালোবাসা, হৃদয়ের গভীর থেকে আরও একবার—ধন্যবাদ।’

এর আগে অপূর্ব বলেছিলেন, এই বিষয়টা খুবই বিরল মনে হয় আমার কাছে যে, বাবা-ছেলের জন্মদিন একই তারিখে। আমি সত্যি ভীষণ ভাগ্যবান বাবাদের একজন। নিজেকে পৃথিবীর সেরা ভাগ্যবান বাবা বলে মনে হয়। আয়াশ আমার জন্মদিনের সেরা উপহার। আমি কখনোই আমার জন্মদিন ঘটা করে পালন করি না তবে এ দিনটা আয়াশকে ঘিরেই কাটিয়ে দেই সবসময়। সেই আয়োজনের আনন্দে নিজের জন্মদিনের কথা ভুলেই যাই।

উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। আগামী সপ্তাহে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।


চার দিনেই ১০০ কোটির ক্লাবে আমিরের সিনেমা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিনোদন ডেস্ক

প্রি-বুকিংয়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী সাড়া না পেলেও মুক্তির পর বদলে গেছে দৃশ্যপট। দর্শকের ভালোবাসা আর প্রশংসায় ভাসছে আমির খানের নতুন ছবি ‘সিতারে জমিন পার’। বক্স অফিসে ঝড় তুলেছে ছবিটি। চার দিনেই নাম লিখিয়েছে ১০০ কোটি রুপি আয়ের ক্লাবে।

ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ৮০ কোটি রুপির বাজেটে নির্মিত এই সিনেমাটি মুক্তির মাত্র চার দিনেই আয় করেছে ১০০ কোটি রুপি। এখন পর্যন্ত মোট আয় দাঁড়িয়েছে ১১০ কোটিতে। ব্যবসায়িক সাফল্যের পাশাপাশি সমালোচকদের কাছেও মিলছে প্রশংসা।

ছবির এই অর্জনে খুশি চলচ্চিত্রপ্রেমীরা। উচ্ছ্বসিত বর্ষীয়ান লেখক-চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতার। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ‘কে বলে ভালো ছবির দিন শেষ? ‘সিতারে জমিন পার’ তার প্রমাণ। আমির খান ও তার পুরো দলকে অভিনন্দন।’

বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের নিয়ে নির্মিত মানবিক এই ছবিতে আমির খানকে দেখা গেছে একজন বাস্কেটবল কোচের চরিত্রে। আর এস প্রসন্ন পরিচালিত সিনেমাটিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন জেনেলিয়া দেশমুখ। এতে অভিনয় করেছেন ১০ জন বিশেষভাবে সক্ষম শিল্পী। তাদের সবার অভিনয় দর্শক হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলেছে।

কাশ্মীর ইস্যুতে ছবিটিকে বয়কটের ডাক এলেও এর গল্প, অভিনয় ও নির্মাণের মুন্সিয়ানার স্রোতে ভেসে গেছে সব নেতিবাচকতা। দর্শক ছবিটি দেখে মুগ্ধতা প্রকাশ করছেন। ভালো রিভিউ দিচ্ছেন। সেসব রিভিউ দর্শক বাড়াচ্ছে সিনেমাটির।


অবশেষে ফিরছেন জায়েদ খান

আপডেটেড ২৬ জুন, ২০২৫ ২২:০২
বিনোদন ডেস্ক

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত মুখ জায়েদ খান। জুলাই বিপ্লবের আগে থেকেই স্টেজ শোয়ের কারণে তিনি অবস্থান করছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর এখন পর্যন্ত আর তিনি দেশে ফিরেননি। অনুমান করা যাচ্ছে, সহসা তিনি দেশে ফিরবেনও না।

নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বাংলা ভাষাভাষীদের গণমাধ্যম ‘ঠিকানা’য় ‘ফ্রাইডে নাইট উইথ জায়েদ খান’ নামের বিশেষ শোয়ের মাধ্যমে প্রথমবার হোস্ট হিসেবে অভিষেক হতে যাচ্ছে তার। প্রথম পর্বটি প্রচার হতে যাচ্ছে ৪ জুলাই, শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়।

তবে ‘ফ্রাইডে নাইট উইথ জায়েদ খান’ প্রথম পর্বে কে বা কারা থাকছেন সে বিষয়টি আগাম প্রকাশে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন জায়েদ খান। তিনি বললেন, ‘সেটা না হয় চমক হিসেবেই তোলা থাক।’

জায়েদ খান বলেন, ‘এটা আমার জন্য এক নতুন যাত্রা। আমি এমন একটি অনুষ্ঠান উপহার দিতে চাই, যেখানে আমাদের গল্পগুলো উঠে আসবে-বাস্তব, অনুপ্রেরণাদায়ক এবং চেতনাকে নাড়া দেওয়ার মতো।’

‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ ছবিতে টিক্কা খানের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন জায়েদ খান। কয়েক সেকেন্ডে পর্দায় দেখা গিয়েছিল তাকে। তার জন্য বরাদ্দ ছিল একবাক্যের একটি সংলাপ। এতেই বাজিমাত করেছেন তিনি।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন এই ঢালিউড তারকা। পরিকল্পনা করছেন জায়েদ খান হলিউডে সিনেমা করার বিষয়েও।


তিনবার সংসার ভাঙার পরও বিয়েতেই আস্থা শ্রাবন্তীর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিনোদন ডেস্ক

ওপার বাংলার নায়িকা শ্রাবন্তী চ্যাটার্জির ব্যক্তিগত জীবন তথা বিয়ে-ডিভোর্স নিয়ে চর্চা যেন একটু বেশিই। তিনবার ভেঙেছে এই নায়িকার সংসার। কিন্তু ভালোবাসায় ভরসা রাখেন অভিনেত্রী। সম্পর্কের প্রতি তার বিশ্বাস এখনো অটুট। শুধু তাই নয়, বিয়েতে এখনো বিশ্বাস রাখেন নায়িকা! সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমনটিই বললেন শ্রাবন্তী।

নায়িকা বলেন, ‘আমি এখনও বিয়েতে বিশ্বাস করি। কারণ আমি আমার বাবা-মাকেও দেখেছি। আমি মনে করি যারা বিয়ে করছেন, তারা ভালো থাকুন। তাদের যেন একে অপরের প্রতি স্বচ্ছতটা বজায় থাকে। কেন বিয়ে করবে না? এটা তো আমরা বহু বছর ধরে দেখে আসছি।’

কিন্তু নায়িকার কোনো দাম্পত্য সম্পর্কই স্থায়িত্ব লাভ করেনি। কোথায় ভুলটা ছিল- এমন প্রশ্নে শ্রাবন্তীর জবাব, ‘আমার যেটা ভুল ছিল, আমি জীবনে ভুল মানুষ বেছে নিয়েছিলাম, যেটা হয়তো আমার আরও ভালো করে বুঝে নিয়ে করা উচিত ছিল। আসলে আমি তো খুব ইমোশোনাল একজন মানুষ। সেখানে আমার মনে হয়, আবেগে না ভেসে, আরও বাস্তবতা দিয়ে জীবনটাকে দেখা উচিত ছিল। আমি বলব নিজের ভালো থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি নিজের সম্মানটা যেখানে বজায় থাকবে সেখানে এগিয়ে যাওয়া উচিত।’

নায়িকা আরও বলেন, ‘একটাই জীবন, তাই লোকে কী বলছে না বলছে, সেটা দেখে এগিয়ে যাওয়া উচিত নয়। নিজের মন যেটা বলছে, যেটা করলে আপনার ধারণা আপনার ভালো হবে, সেটাই করা উচিত।’

বয়স ১৮ হওয়ার আগেই পরিচালক রাজীব কুমার বিশ্বাসকে বিয়ে করেন শ্রাবন্তী। এই বিয়ে সূত্রেই ছেলে ঝিনুক ওরফে অভিমন্যুকে জন্ম দেন তিনি। তারপর অবশ্য ২০১৬ সালে রাজীবের সঙ্গে বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন অভিনেত্রী। এরপর শ্রাবন্তী ফের প্রেমে পড়েন, ফের বিয়ের পিঁড়িতে বসেন কৃষাণ ব্রিজের সঙ্গে। তবে দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে সেই বিয়ের মেয়াদ ছিল মাত্র ১ বছর। তারপর ফের তৃতীয় বার রোশন সিংকে বিয়ে করেন শ্রাবন্তী। এক গুরুদুয়ারাতে গিয়ে প্রায় চুপিচুপিই দুজনে বেঁধেছিলেন গাঁটছড়া। কিন্তু দেখা যায় যে, বছর ঘোরার আগেই, দুজনের সমস্যা শুরু। ছাদ আলাদা হয় রোশন ও শ্রাবন্তীর। তারপর চলতি বছরের এপ্রিল মাসে দুজনে আইনিভাবে আলাদা হয়েছেন।


সংগীতশিল্পী কনার বিবাহবিচ্ছেদের পর ন্যান্সির 'শিয়াল রাণী' মন্তব্যে বিতর্ক

আপডেটেড ২৬ জুন, ২০২৫ ১৬:০৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী দিলশাদ নাহার কনার বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণার পর সহশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সির একটি বিতর্কিত পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

গত বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় কনা তার ফেসবুক পেজে বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়ে লিখেন, "জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে—সবই আল্লাহর ইচ্ছায় ঘটে।" ঠিক এক ঘণ্টা পর রাত ১২টার দিকে ন্যান্সি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, "জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে-বিচ্ছেদ, এর সবই আল্লাহর ইচ্ছায় হয়—বাণীতে শেয়াল রাণী।"

ন্যান্সির এই 'শেয়াল রাণী' উক্তিটি সরাসরি কনাকে উদ্দেশ্য করে বলে ধারণা করছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারকারীরা। বিশেষ করে কনার পোস্টের ভাষাকে হুবহু উদ্ধৃত করে এই মন্তব্য করায় বিতর্ক আরও ঘনীভূত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে গত বছরের একটি ঘটনাও সামনে আসছে। ২০২৩ সালের ১৪ জুলাই ন্যান্সি একটি শেয়ালের ছবি পোস্ট করেছিলেন, যা সে সময় কনাকে ইঙ্গিত করে করা হয়েছে বলে অনেকে মনে করেছিলেন। ওই সময় কনার 'দুষ্টু কোকিল' গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।

যদিও দুই শিল্পীই কখনও প্রকাশ্যে একে অপর সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি, তবুও ন্যান্সির এই সাম্প্রতিক পোস্টকে অনেকেই কনার প্রতি পরোক্ষ আক্রমণ হিসেবে দেখছেন।

উল্লেখ্য, কনা ২০০০ সালে এবং ন্যান্সি ২০০৬ সালে সংগীতজগতে প্রবেশ করেন। ন্যান্সির এই মন্তব্যের পর দুই শিল্পীর মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছে।


বাদ পড়লেন ফারিণ, কে হচ্ছেন দেবের নায়িকা?

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিনোদন ডেস্ক

গেল বছর থেকেই দেবের ‘প্রজাপতি ২’ সিনেমা নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। চলতি বছরের শুরুর দিকে ছবিটি নিয়ে ফের চর্চা শুরু হয়। তবে তখনও পর্যন্ত ছবিটি নিয়ে কোনো আপডেট ছিল না। অবশেষে জানা গেল, জুলাই থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ছবিটির শুটিং। তবে শুরুর দিকে ‘প্রজাপতি ২’-তে দেবের নায়িকা হিসেবে তাসনিয়া ফারিণের নাম শোনা গেলেও এখন আর তিনি থাকছেন না। ভিসা জটিলতার কারণে বাদ পড়েছেন তিনি।

এবার ছবিটিতে দেবের নায়িকা হচ্ছেন ওপার বাংলার ছোট পর্দার অভিনেত্রী জ্যোতির্ময়ী কুণ্ডু। এমনটাই জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম। জানা গেছে, গত মঙ্গলবার এক বৈঠকে ছবিটি নিয়ে প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতার আলোচনা হয়েছে। অতনু-দেব-অভিজিৎ ঠিক করেছেন, কলকাতায় তারা প্রথম শুটিং শুরু করবেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দেশের বাইরে শুটিং করবেন। অতনু রায় চৌধুরী প্রযোজিত ‘প্রজাপতি ২’ ছবিটি পরিচালনা করবেন অভিজিৎ সেন।


মনে হয়েছিল আত্মহত্যা করি: আশা ভোসলে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত হয়েছে কিংবদন্তি গায়িকা আশা ভোঁসলের বায়োগ্রাফি, আশা ভোঁসলে: আ লাইফ ইন মিউজিক। বইটি লিখেছেন রম্যা শর্মা।

এই জীবনীতে আশা ভোঁসলের ব্যক্তিগত জীবনের কিছু চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে, যা পড়ে বা জেনে অবাক হবেন অনেকেই।

বইটিতে তার স্বামী গণপতরাও ভোঁসলের সঙ্গে বিয়ে নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যিনি আশার থেকে ২০ বছর বড় ছিলেন। এই সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত দুঃখ আর কষ্টে গিয়ে পৌঁছেছিল।

আশা ভোঁসলে লিখেছেন, ওদের পরিবার খুব রক্ষণশীল ছিল, তারা একটা গায়িকাকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নিতে পারেনি।

স্বামীকে নিয়ে আশা বলেন, আমার স্বামীর মেজাজ খুব খারাপ ছিল। হয়তো তিনি কষ্ট দিতে ভালোবাসতেন, হয়তো তিনি স্যাডিস্ট ছিলেন। কিন্তু বাইরের কেউ এসব জানতে পারত না। আমি তাকে সবসময় সম্মান দিয়েছি, কখনো প্রশ্ন করিনি। আমি শুধু নিজের কর্তব্য পালন করতাম।

তিনি আরও বলেন, একবার আমার মনে হয়েছিল আত্মহত্যা করি। আমি তখন অসুস্থ ছিলাম। আমি চার মাসের গর্ভবতী ছিলাম এবং হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম, যেখানে অবস্থা এত খারাপ ছিল যে মনে হয়েছিল আমি নরকে চলে এসেছি।

যোগ করে কিংবদন্তি এই গায়িকা বলেন, মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলাম, তখন পুরো এক বোতল ঘুমের ওষুধ খেয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু আমার গর্ভের সন্তানের প্রতি ভালোবাসা এতটাই শক্তিশালী ছিল যে আমি মারা যাইনি। আমি আবার জীবনে ফিরে এসেছিলাম।


বেফাঁস মন্তব্য, এবার সুর বদল করলেন কাজল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিনোদন ডেস্ক

কাজল তার নতুন হরর সিনেমা ‘মা’-এর প্রচারের সময় আলটপকা মন্তব্য করে বিপাকে পড়েছিলেন। অভিনেত্রী একটি সাক্ষাৎকারে হায়দরাবাদের রামোজি ফিল্ম সিটিতে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে এটিকে ‘ভুতুড়ে জায়গা’ বলে অভিহিত করেছিলেন। তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়, বলাই বাহুল্য তার এই কথা অনেকেরই ভালো লাগেনি। সমালোচনার পর কাজল তার এক্স অ্যাকাউন্টে নতুন একটি পোস্টে সুর বদল করেন।

কাজলের বক্তব্য

নতুন বিবৃতিতে কাজল বলেন, ‘আমার ছবি ‘মা’-এর প্রচারের সময় রামোজি ফিল্ম সিটি নিয়ে আমার আগের মন্তব্য প্রত্যাহার করতে চাই। আমি রামোজি ফিল্ম সিটিতে একাধিক প্রকল্পের শুটিং করেছি এবং বছরের পর বছর ধরে সেখানে অনেকবার থেকেছি। আমি বরবারই চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য এটিকে পেশাদার জায়গা বলে মনে করেছি। দেখেছি অনেক পর্যটক এখনে ঘুরতে আসেন। এটি একটি দুর্দান্ত পর্যটন গন্তব্য; পরিবার ও শিশুদের জন্য একেবারে নিরাপদ।’

যেভাবে বিতর্ক

গালাট্টা ইন্ডিয়ার সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে, কাজলকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে তিনি কখনো নেতিবাচক শক্তির অভিজ্ঞতা পেয়েছেন কি না।

তিনি বলেন, ‘আমার একাধিকবার এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। একে নেতিবাচক শক্তি বা যা-ই বলুন, কখনো কখনো, আপনি যখন কোনো জায়গায় যান, তখন আপনার মনে হয় যে কিছু ঠিক নেই। আমি এমন জায়গায় শুটিং করেছি, যেখানে আমি সারা রাত ঘুমাতে পারিনি, যেখানে আমার মনে হয়েছে যদি আমি এই জায়গা ছেড়ে যেতে পারি তবে ভালো হবে। এ রকম বেশ কয়েকটি জায়গা আছে। একটি প্রধান উদাহরণ হায়দরাবাদের রামোজি রাও স্টুডিও, যা বিশ্বের সবচেয়ে ভুতুড়ে জায়গাগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচিত হয়। যদিও আমি যথেষ্ট ভাগ্যবান যে কিছুই (ভূত) দেখিনি।’ ‘মা’ ২৭ জুন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। বিশাল ফুরিয়া পরিচালিত ছবির অন্যতম প্রযোজক কাজলের স্বামী অজয় দেবগন।


banner close