প্রতি বছর ঈদ উৎসবে দেশের বিভিন্ন টিভি ও ইউটিউব চ্যানেলসহ প্রায় তিন শ থেকে চার শ নাটক নির্মিত হয়ে থাকে। কখনও কখনও এই সংখ্যা কমবেশি হয়ে থাকে। এখনকার সময়ে টিভি চ্যানেল থেকে ইউটিউবেই নাটক নির্মাণের সংখ্যা বেশি। এর মধ্যে কিছু ইউটিউব চ্যানেলের নাটক টিভিতে প্রচার হওয়ার পর সেগুলো আবার ইউটিউবেও প্রচার হচ্ছে। আবার বেশ কিছু ইউটিউব চ্যানেল আছে যারা শুধু নিজস্ব ইউটিউবের জন্যই নাটক নির্মাণ করে থাকে। অন্যদিকে বর্তমানে প্রায় সব টিভি চ্যানেলের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল থাকায় তাদের নিজেদের নির্মিত নাটক টিভিতে প্রচারের পর আবার সেগুলো নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে। ফলে এখন একটি নাটক বানানোর লগ্নিকৃত টাকা দুই মাধ্যম থেকেই প্রযোজক বা লগ্নিকারক ফেরত পাচ্ছেন। যার কারণে নাটকের বাজেট এখন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। একটা সময় বলা হতো বাজেট নেই, নাটকে বাজেট কম- এটা এখনকার সময়ে নাটকের বাজেটের দিকে তাকালে বলা যাবে না।
বিশেষ করে ইউটিউবের আধিপত্য হওয়ার পর থেকেই গত কয়েক বছর ধরে একেকটি নাটক অনেক টাকায় বানানো হচ্ছে। একটা সময় নাটকের বাজেট নিয়ে নানান ধরনের কথা শোনা যেত। পরিচালক-অভিনয়শিল্পী থেকে শুরু করে নাটকের কলাকুশলীরা সব সময় বলত- নাটকের বাজেট কমে গেছে, এত কম বাজেটে নাটক বানানো সম্ভব নয় ইত্যাদি ইত্যাদি। ইউটিউবের কল্যাণে এখন নাটকের সেই বাজেট কয়েকগুণ বেড়েছে। অথচ ইউটিউবের আগে নাটকের বাজেট অনেক কমে গিয়েছিল। ২০১৬-২০১৭ সালেও নাটক এখনকার মতো এত বাজেটে নির্মিত হতো না। ২০১৮ সাল থেকে আস্তে আস্তে নাটকের বাজেট বাড়তে থাকে। নরমালি এখন একটি নাটক বানাতে চার-পাঁচ-ছয় লাখ টাকা নির্মাতারা হরহামেশাই পাচ্ছেন। এর থেকেও কম বাজেটে ছোট কিছু কনটেন্ট তৈরি হচ্ছে। ওইদিকের হিসেবে না গিয়ে যেগুলো আমাদের মেইনস্ট্রিমের নাটক বলে চিহ্নিত তা নিয়েই কথা হচ্ছে।
আর্টিস্ট ভেদে এখন একেকটি নাটকের বাজেট দশ-বারো-পনেরো লাখ পর্যন্ত পাচ্ছেন নির্মাতারা। এবার ঈদে তো আঠারো-বিশ লাখ এমনকি পঁচিশ লাখে নাটক নির্মাণের খবর পাওয়া গেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- এই যে এত এত বাজেট পাচ্ছেন নির্মাতারা, নাটকের গল্পে কতটা ভেরিয়েশন পাচ্ছেন দর্শক? সেই একই অভিনয়শিল্পীদের একই প্রেম কাহিনি, কমেডি গল্প, চিল্লাচিল্লি কিংবা প্রেম হওয়ার শুরুতে ঝগড়া, তারপর প্রেম, পরিবার মানে না- টাইপের গল্প অথবা প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, প্রেমিক চাকরি পায় না, পরিবার মানে না ইত্যাদি ইত্যাদি গল্প। অনেকটা নতুন বোতলে পুরোনো মদের মতো গল্প। আর এখন যোগ হয়েছে নাটকে গানের ব্যবহারসহ ঢাকার বাইরে শুটিং- দামি ক্যামেরা এবং বিজ্ঞাপনের মতো ইউনিট-ক্রু নিয়ে মুভ করা। বাজেট বাড়ছে, খরচ করতে সমস্যা নেই। কিন্তু যেই গল্পের জন্য নাটক- সেই গল্পের জন্য কতটা খরচ করে নাটক নির্মিত হচ্ছে? মানে ভালো গল্পের এবং ‘খরচওয়ালা’ গল্পের পেছনে কি সেই বাজেটটা যাচ্ছে?
বিশিষ্ট সাংবাদিক, নাট্যকার ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা রেজানুর রহমান বলেন, ‘নাটকে ভালো গল্পের সংকট রয়েছে এটা যেমন সত্যি, তেমনি অনেকের কাছে ভালো গল্প থাকার পরও সে বাজেটের জন্য তা বানাতে পারছেন না- এটাও সত্যি। আসলে এখন কোনো লেভেল কোম্পানি (ইউটিউব), টিভি কিংবা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্রথমেই নির্মাতার কাছে জিজ্ঞাসা করেন- ‘যে গল্প নিয়ে কাজ করবেন সেটির ভিউ হবে নাকি’- এই কথায় নির্মাতা নতুন কোনো কনসেপ্ট নিয়ে কাজ করতে চান না। সেই একই ফরম্যাটে কাজ করতে হচ্ছে তাকে। এখন দেখা গেছে কেউ একজন একটি গল্প নিয়ে কাজ করায় সেটির ভিউ হয়েছে- সবাই সেটা বানাতে ছুটে। মানে হলো ভিউয়ের পেছনে দৌঁড়াচ্ছি। ভিউ-ই যখন এখন একমাত্র বাণিজ্য তখন তো গল্প ফ্যাক্ট না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্মাতাদের স্বাধীনতা দিতে হবে। নির্মাতারা স্বাধীনতা না পেলে কাজ করা মুশকিল। অমুকটার মতো, তমুককে নিয়ে জুটি করে নাটক বানানোর জন্য প্রেসার না দিয়ে তাকে স্বাধীনতা দিতে হবে। এখন গল্পসহ ‘পাঁচজন- পাঁচজন’ জুটিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলে দেয়া হচ্ছে নাটক বানানোর জন্য। সেই ‘পাঁচজন-পাঁচজন’ জুটির দশজন এতো ব্যস্ত যে, তাদেরকে মেনটেইন করতে গেলে নাটকের দিকে নজর দেয়া যাচ্ছে না। তারা ব্যস্ত থাকতেই পারেন। কিন্তু জুটি বেঁধে দিলেই বিপদ। নির্মাতাকে বলতে হবে- স্বাধীনভাবে গল্পে যে ধরনের আর্টিস্ট যায়, তাদেরকে নিয়েই বানান। তাহলে নতুন গল্প এবং নতুন আর্টিস্টও ইন্ডাস্ট্রিতে তৈরি হবে। বর্তমানে যারা কম্প্রমাইজ করে কাজ করছেন যা হওয়ার তাই হচ্ছে। ফলে মনে রাখার মতো নাটক হচ্ছে না। এখন আমাদের লাখ লাখ টাকা বাজেট যাচ্ছে, শত শত নাটকও হচ্ছে। কিন্তু অর্জনের জায়গাটা ফাঁকাই থেকে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে কেউ কথা বলছে না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশির ভাগ নাটকে লোকেশন (প্রয়োজন না হলেও), লাইট-ক্যামেরাসহ এগুলোতে অপ্রয়োজনীয় বাজেট ব্যবহার, মেইন আর্টিস্টদের বেশি রেম্যুনারেশন (আর্টিস্টরা নিজেরাই নিজেদের পারিশ্রমিক ঠিক করছেন), শুটিং ইউনিটে বিলাসবহুল খরচ করায় বেশির ভাগ নাটকের মূল বাজেট সেখানেই চলে যাচ্ছে। ফলে নাটকে এত এত বাজেট পাওয়ার পরও যেই ভিন্নধর্মী গল্পটির পেছনে বাজেটটা খরচ করার কথা- সেখানে কি খরচ হচ্ছে না। সেই একই গল্প, একই মেকিং এবং কমেডি টাইপ নাটকগুলোই নির্মিত হচ্ছে। এখন তো একটি নাটকের গল্পের সঙ্গে আরেকটি নাটকের নামেরও বেশ মিল পাওয়া যায়। যেমন- ‘তুই আমারই’, ‘তোর জন্য’, ‘আজকাল তুমি আমি’, ‘তোমাতে হারাই’, ‘তোমায় ভালোবেসে’- এবারের ঈদের এই নাটকগুলোর নাম প্রায় কাছাকাছি। এরকম ইউটিউবে খুঁজলে আরও অনেক নাটক পাওয়া যাবে যেগুলোর নাম প্রায় কাছাকাছি। আরও রয়েছে ইউটিউবে ‘কাটতি টাইপ’ নাটকের নাম। যা আসলে শিল্পমানের নাটকের নাম নয়। ফলে দর্শক আসলে একটি নাটক দেখে তার মনের মধ্যে সেটি ‘দাগ’ কাটাতে পারছেন না। আর এখনকার নাটকগুলোতে প্রায় একই অভিনয়শিল্পী (অমুকের সঙ্গে তমুক, তমুকের সঙ্গে অমুক- ধরাবান্দা জুটি) হওয়ায় দর্শক আরও বিভ্রান্ত হচ্ছেন যে সে আসলে কোন নাটকটা দেখেছেন। ফলে মনের মধ্যে অনুভূতি সৃষ্টি করা এবং খুব ভাবনায় ভাবানোর মতো নাটক এখন খুব একটা দেখা যায় না।
নাটকে বাজেট বাড়লেও গল্পের অভাব কিংবা শিল্পমান সম্পন্ন নাটক কম নির্মিত হওয়ার পেছনে কারণ কি? এই বিষয়ে কথা বলেন নির্মাতা রাকেশ বসু। তিনি বলেন, ‘বাংলা নাটকের এখন সব থেকে বড় সমস্যা হলো- গল্প সংকট। একটা সময় বাজেট নিয়ে সবাই কম-বেশি কথা বলতেন। কিন্তু এখন বাজেট সমস্যা থেকে গল্প সংকটটাই অনেক বড় ইস্যু একটা ভালো কাজের জন্য। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীরা যে ধরনের কাজ করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন এবং ভিউ কাউন্ট হয় সেই একই ধরনের গল্প নিয়েই কাজ করেন। সে ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা হলো ভিউ হওয়া একই গল্পের পুনরাবৃত্তি। ফলে অভিনয়শিল্পীরা জনপ্রিয়তার দিকে নজর দিতে গিয়ে ভালো গল্পের কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বারবার।’
আগে একটি নাটকের স্ক্রিপ্ট ফাইনাল হতো। টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠান প্রধানসহ ক্রিয়েটিভ টিম মিলে গল্পটি ফাইনাল হওয়ার পর কোন অভিনয়শিল্পী কোন চরিত্রে অভিনয় করবে সেটা ভেবেচিন্তে কাস্টিং ফাইনাল করা হতো। এরমধ্যে স্ক্রিপ্ট নিয়ে কয়েকদফায় রাইটার ও পরিচালকসহ মিটিং হতো। তারপর ফাইনালি নাটকটি নির্মাণে যাওয়া হতো। নাটক নির্মাণের পর তা দেখে প্রিভিউ কমিটির মতামত থাকত এবং সেখানে পাস হলেই তা ফাইনালি সম্প্রচারে যেত।
আর এখন অনেকটা ঝালমুড়ি বানানোর মতোই নাটক বানানো হয়। মানে অমুক-তমুকের ভিউ আছে- আগে তাদের ডেট ‘লক’ করা হোক। তারপর তারা যেই গল্প পছন্দ করবেন কিংবা অনেক সময় অভিনয়শিল্পীও গল্প দিচ্ছেন সেটা নিয়ে- ডে নাইটের কিছু সিক্যুয়েন্স বানিয়ে (শুটিংয়ের সুবিধার্থে) শুটিংয়ে চলে যাওয়া হচ্ছে। স্লো-মো শট, গানের কিছু শট, নায়ক-নায়িকার দেখাদেখি-চোখাচোখি আর বিয়ে দিবে না বাবা-মা, ছেলে বেকার, চাকরি হয় না, পরিবার মেয়েকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেয় আর চিল্লাচিল্লি ভরা কমেডি গল্প। বেশির ভাগ নাটকই এখন এভাবে নির্মিত হচ্ছে বলে জানা যায়। পাশাপাশি এখন সেট বানানোতেও ভালো খরচ করে নাটক নির্মাণের খবর পাওয়া গেছে।
ইউটিউবের সঠিক নিয়মনীতি না থাকা, নাটকে প্রিভিউ সিস্টেম না থাকায় এবং ‘ভিউই’ একমাত্র বাণিজ্য হওয়ায় দিনকে দিন মানহীন নাটক বানানোর প্রতিযোগিতা হচ্ছে এবং তা নিম্নমানের তলানিতে যাচ্ছে বলে অনেকে অভিমত দেন। এর পাশাপাশি একটা গুরুত্বপূর্ণ দিকের কথাও তারা উল্লেখ করেন তা হলো- একটা সময় যারা নাটক নির্মাণ ও ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তারা টেলিভিশন ও থিয়েটারে দীর্ঘদিন কাজের অভিজ্ঞতা ছিল। আর এখন শুধু ব্যবসার উদ্দেশ্যেই (বেশির ভাগ) ইউটিউব চ্যানেল করে নাটকের নামে ‘কনটেন্ট’ বানানো হয়।
অথচ গল্পনির্ভর, জীবনবোধের নাটক, সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষের গল্প, আমাদের চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কত কত গল্প। প্রতিদিন সংবাদের পাতায় কত গল্প প্রকাশ পায়, অথচ আমাদের দেশের নাটক নির্মাতারা এসব গল্প দেখেন না। কারণ এসব গল্পে ভিউ পাওয়া যায় না। তাই ইউটিউব মালিক তথা প্রযোজকরা ওই ধরনের গল্প নিয়ে কাজ করতে বা নির্মাণে আগ্রহ পান না।
ইউটিউবে ভিউ হচ্ছে সস্তা-চটুল, কমেডি তথা সুরসুরি প্রেম মার্কা গল্পের। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। লাখ লাখ টাকা বাজেট দিয়ে যেসব ‘নাটক’ বানানো হচ্ছে তা আসলে কতটা সমাজে প্রভাব ফেলছে? কি শিখছেন তরুণ প্রজন্ম? অবশ্য তরুণ প্রজন্ম নাকি যা বানানো হচ্ছে- তাই দেখতে চায় বলে তাদের অভিমত। এত এত বাজেটের টাকা আদতে ‘শ্রাদ্ধ’ করাই হচ্ছে বলে প্রকৃত নাট্যপ্রেমী তথা সত্যিকারের সংস্কৃতপ্রেমীরা অভিমত দেন। তাদের মতে, বেশি বাজেট এলে বেশির ভাগ নাটককে ঝকঝকে তকতকে বানানো আর ‘ফুটেজ’ ছাড়া আর কিছুই না বলেও অনেকে অভিমত দেন। তাই ভালো বাজেট দিয়ে ভালো গল্প এবং ভিন্নধর্মী চরিত্রসহ জীবনবোধের নাটক বানানোর তাগিদ দেন তারা।
বর্তমানে নাটক নির্মাণের একটা চিত্র তুলে ধরলে এখনকার পরিস্থিতিটা আরও পরিষ্কার বোঝা যাবে। এখন নাটকের কয়েকজন মেইন নায়ক তারা তাদের নিজেদের প্রযোজনা হাউস থেকে নাটক বানিয়ে তা নিজেই বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল এবং টিভি চ্যানেলে তাদের চাহিদামতো সরবরাহ করছেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক নাট্য নির্মাতা বলেন, ‘এভাবে আসলে কাজ করে অভ্যস্ত না। এই ভিউ বাণিজ্য এসে একজন নির্মাতার হাত-পা বন্দি হয়ে গেছে। আমরা আসলে বিক্রি হয়ে গেছি। এখন তো চাহিদাসম্পন্ন নায়করা তাদের প্রযোজনা হাউস থেকে নাটক তৈরি করেন। তারা নিজেদের বানানো ডিরেক্টর টিম, প্রোডাকশন টিমসহ ডিওপি এবং কো-আর্টিস্ট- সবই তারা ঠিক করেন। ডিরেক্টরকে দিয়ে শুধু ডিরেকশন (আসলে নামে ডিরেকশন) দেওয়ান। কোথায় এডিটিং হবে, কোথায় মিউজিক হবে এবং কীভাবে কাজটা কোথায় কত টাকায় বিক্রি হবে- সবই তিনি (নায়করা) ঠিক করেন। এভাবে চললে তো আসলে নাটকের ‘মান’ বলে কিছু থাকবেই না। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।’
ভালো নাটক বানানোর কিছু ব্যতিক্রম চিত্রও রয়েছে। কিছু যে ভালো গল্পের নাটক নির্মিত হচ্ছে না তা বলা যাবে না। যারা সত্যিকারের ভালো গল্পের খোঁজ করেন এবং জীবনবোধের গল্পসহ ভিন্নরকম কিছু বা আইডলজির জায়গা থেকে কাজ করছেন তারা ঠিকই শত প্রতিকূলতায় কিছু নাটক বানাচ্ছেন। আমাদের দেশে ওটিটিতে ওয়েবসিরিজ ও ওয়েবফিল্মে ভিন্নধর্মী গল্পের কাজ হওয়ায় সেগুলো দর্শকদের কাছে সাড়া ফেলেছে। ফলে তার কিছুটা ছোঁয়া নাটকেও লেগেছে বলা যায়। এবারের ঈদে ভিন্নধর্মী গল্পের তেমনকিছু নাটক হচ্ছে- ‘স্মৃতিসারক’, ‘বিদায় বসন্তে মধ্যাহ্ন রোদে’, ‘নিখোঁজ’, ‘বোঝা’, ‘শেষমেষ’, ‘সম্ভবত প্রেম’, ‘কিছু কথা বাকি’, ‘দুনিয়া’, ‘অভাব’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘অভিশাপ’, ‘অভাব, ‘জাদুর শহর’, ‘গর্ভ’, ‘কলিজার টুকরা’, ‘স্বপ্নটা সামান্যই’সহ আরও কিছু নাটক।
এখন প্রায় একই মুখ ঘুরেফিরে সব নাটকেই দেখতে হচ্ছে বলে সব নাটক একইরকম লাগার কথা দর্শকরা অভিমত দিয়েছেন। এক সময় নাটকে নিশো, মেহজাবীন, অপূর্ব, তানজিন তিশাকে জুটি বেঁধে অভিনয় করতে দেখা যেত। এখনকার সময়ে অপূর্ব ও তানজিন তিশাকে নাটকে দেখা গেলেও নিশো-মেহজাবীনকে দেখা যায় না। নিশো চলচ্চিত্র ও ওটিটির কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় গত কয়েক ঈদ উৎসবে তাকে নাটকে দেখা যায়নি।
অন্যদিকে মেহজাবীনও বর্তমানে ওটিটির কাজের সঙ্গে সম্প্রতি সিনেমায় নাম লিখিয়েছেন। তারপরও নাটকে মেহজাবীনের কাজের আগ্রহ রয়েছে; কিন্তু ভালো গল্পের অভাবে কাজ করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি। ‘সাবা’ ও ‘প্রিয় মালতী’ শিরোনামের দুটি ছবিতে কাজ করতে যাচ্ছেন ভক্তদের মেহু। তার জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রিয় মালতী’ সিনেমা ঘোষণার অনুষ্ঠানে নাটকে অভিনয় কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি নাটকে একেবারেই কাজ করতে চাই না, বিষয়টা তেমন না। আমি আসলে ভালো গল্প পাই না। ভালো গল্প পেলে অভিনয় অবশ্যই করব। আমার কাছে যে স্ক্রিপ্টগুলো আসে সেগুলো পছন্দ হয় না। দর্শক আসলে ভিন্নতা চায়। আমি অনেক দিন পর সিনেমাওয়ালা ইউটিউব চ্যানেলের ‘অনন্যা’ করেছি। কারণ এটার গল্পটা ভিন্ন। এটার জন্য আমি সাড়াও পেয়েছি বেশ। তাই আমি এরকম ভিন্ন ভিন্ন গল্পের কাজ করতে চাই। তেমন স্ক্রিপ্ট পেলে কাজ করব।’
ঈদে রাফাত মজুমদার রিংকুর পরিচালনায় ‘রূপান্তর’ নাটকটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। ট্রান্সজেন্ডার এবং তৃতীয় লিঙ্গের ইস্যুতে নাটকটিকে শেষমেশ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা শ্রেণি ধর্মের বিষয়ের সঙ্গে তুলনা করে। ফলে কর্তৃপক্ষ নাটকটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়। ভিন্নধর্মী গল্প নিয়ে নাটক বানাতে গেলেও নানান সমস্যার কথা উল্লেখ করেন নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকু। তিনি বলেন, ‘আগের চেয়ে ভিন্ন ধরনের গল্পের নাটক বানানো হচ্ছে। তবে সেটা সংখ্যায় কম। এখন আলাদা টাইপের গল্পের নাটক বানাতে গেলেও নানান ধরনের জটিলতা তৈরি হচ্ছে। আমি নিজেও ‘রূপান্তর’ নিয়ে একপ্রকার জটিলতায় রয়েছি। তাই যারা ইউটিউবের মালিক এবং প্রযোজক তারা ভিন্ন টাইপের গল্পের নাটক বানাতে রিস্ক নেয় না। বাধ্য হয়েই গদবাঁধা গল্পের নাটক বানায়। নাচ-গান আর বিউটি লোকেশনসহ কাজগুলো হচ্ছে।’
নাট্যপ্রেমী-বিনোদনপ্রেমী তথা সংস্কৃতিপ্রেমীদের প্রত্যাশা, নাটকের গল্পে সমাজের বাস্তবচিত্র থাকবে। কারণ ‘সমাজের দর্পণই হচ্ছে নাটক’। একটা সময় বিটিভিতে নাটক প্রচারের মাধ্যমে মধ্যবিত্তের ড্রয়িংরুমের সাজটা কেমন হবে- তা সেই নাটক থেকে শিখত মধ্যবিত্ত সমাজ। সময় বদলেছে, মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়েছে। সমাজের আমূল পরিবর্তনে নিজেদের ‘রুচির দুর্ভিক্ষ’ যেন নাটকের মাধ্যমে প্রচার হয়ে তা আবার সমাজে প্রভাব ফেলুক- তা কারোরই কাম্য নয়। কারণ আজকে পর্দায় যা দেখানো হবে তাই দেখবেন দর্শক। সংস্কৃতিকর্মী তথা ক্রিয়েটিভরাই প্রকৃত ‘দর্শক’ তৈরি করেন। সারা পৃথিবীতেই রুচিহীন-সস্তা কনটেন্টেরই ‘ভিউ’ বেশি, এটাই স্বাভাবিক। এরমধ্যেও নিজেদের দর্শক নিজস্ব গল্প দিয়ে নিজেদেরই তৈরি করতে হবে- এমনটাই মনে করেন প্রকৃত সংস্কৃতিপ্রেমীরা।
কাজ কিংবা কাজের বাইরে নানা বিষয়েই আলোচনায় থাকেন চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী। গত কয়দিন ধরে নেটদুনিয়া দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই নায়িকার বিয়ের সাজের বেশ কিছু ছবি, যা নিয়ে চলছে তর্ক-বিতর্কও। কেউ বলছেন, বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন এই চিত্রনায়িকা। আবার কারও কথায়, এটি বুবলীর আগের ছবি যা প্রকাশ্যে এসেছে এবার। নেটিজেনদের অনেকেই জানতে চেয়েছেন, বিয়ের সাজে বুবলীর পাশে থাকা ছেলেটি (বর) কে?
ছবিগুলো নিয়ে ইতোমধ্যেই কথা বলেছেন এর কোরিওগ্রাফার গৌতম সাহা। বুবলীর সঙ্গে ফটোশুটে কাজ করে সন্তুষ্ট উল্লেখ করে গৌতম সাহা বলেন, ‘বুবলীকে নিয়ে তিনটি শুট করেছি। ওয়েডিং, হলুদ ও মেহেদী। সে খুব আন্তরিকতার সঙ্গে সময় দেয়। সময়মতো কাজে চলে আসে। ওর সঙ্গে কাজ করে খুব ভালো লেগেছে।’ তিনি আরও জানান, বুবলীর সঙ্গে থাকা ছেলে মডেলের নাম ওয়াসিফ খান।
ছবিগুলো নিয়ে এবার মুখ খুললেন নায়িকা নিজেই। বুবলী জানান, এমন একটা আলোচনা সৃষ্টি হতে পারে সেটা তারা আগেই অনুমান করেছিলেন। সেদিক থেকে তাদের ফটোশুটটা সাকসেসফুল হয়েছে বলেই মনে করছেন বুবলী। চিত্রনায়িকার কথায়, ‘সবসময় কিছু ভিন্নতা না আনলে সেটা নিয়ে আলোচনা হয় না। আমরা ফটোশুটের সময় জানতাম, এটা নিয়ে আলোচনা হবে। কেউ পজেটিভলি নেবে, কেউ বিষয়টা ভিন্নভাবে দেখবে। সেদিক থেকে আমরা সাকসেস, কারণ সবাই এটা নিয়ে কথা বলছে।’
বর্তমানে বুবলী ব্যস্ত রয়েছেন পিনিক নামের নতুন একটি ছবির। এই ছবিতে তার বিপরীতে রয়েছেন চিত্রনায়ক আদর আজাদ। ছবিটি পরিচালনা করছেন জাহিদ জুয়েল। এর আগেও আদর আজাদের বিপরীতে একাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন বুবলী। এদিকে জাজ মাল্টিমিডিয়ার ফেসবুক পেজে এই ছবির ফার্স্টলুক প্রকাশ হয়েছে। সেখানে অবশ্য বুবলীর উপস্থিতি নেই। এদিকে অ্যাকশন ঘরানার এই ছবিতে বুবলীকে পাওয়া যাবে ভিন্নরূপে। তিনি বলেন, ‘পিনিক’-এর গল্প অসাধারণ। আমার চরিত্রটিও চ্যালেঞ্জিং। অভিনয়ের অনেক জায়গা আছে। আমার বিশ্বাস খুব ভালো একটি কাজ হতে চলেছে। এর আগেও আদর ও আমার জুটি মানুষ গ্রহণ করেছে। এবার বেশ আলাদা রূপে আসছি আমরা। আশা করছি ভালো লাগবে দর্শকদের।
বাংলাদেশের এক সময়ের আলোচিত কণ্ঠশিল্পী ও সঞ্চালক রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা এখন পুরোদস্তুর সিনেমার অভিনেত্রী। বিশেষ করে টালিউডের খ্যাতিমান নির্মাতা সৃজিত মুখার্জির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর থেকেই সেখানকার ওয়েব সিরিজ এবং সিনেমায় অভিনয় করে সুনাম অর্জন করেন। তার সেই সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে ঢাকাই সিনেমায়ও। বলা চলে, বর্তমানে দুই ইন্ডাস্ট্রিতে চুটিয়ে কাজ করছেন তিনি। তবে ওয়েব দুনিয়া ও সিনেমায় কাজ করলেও নাটক থেকে পুরোপুরি দূরে সরে রয়েছেন মিথিলা। কয়েক বছর আগেও টিভি খুললেই দেখা মিলত তার।
সম্প্রতি গণমাধ্যমের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সমসাময়িক কাজ ও ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন অভিনেত্রী। জানালেন, কেন দীর্ঘদিন ধরেই পর্দায় অনুপস্থিত তিনি। মিথিলা বলেন, এটা সত্যি অনেকদিন ধরেই কাজ করা হচ্ছে না। এর বিশেষ কোনো কারণ নেই। মাত্র কয়েক মাস হলো আমাদের দেশ একটা বড় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেল। এসব কারণে সব সেক্টরেই কাজের গতি কমেছে। এখন সব কিছুই স্বাভাবিক হচ্ছে। হাতে অনেক কাজের প্রস্তাব আছে। এদিকে গত বছরে আমার একটি ওয়েব সিরিজ মুক্তি পায় ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নামে। এটির দ্বিতীয় কিস্তিও নির্মিত হবে। কিন্তু চলতি বছরে কোনো কাজেই আর যুক্ত হব না। চাকরি সূত্রে আমাকে ডিসেম্বরের পুরোটা সময় দেশের বাইরে থাকতে হচ্ছে।
কলকাতায় দুটি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় মিথিলার। সম্প্রতি বেশ ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে পর্দায় হাজির হচ্ছেন অভিনেত্রী। চ্যালেঞ্জিং এসব চরিত্রে কাজ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা সত্যি আমার শেষ কিছু কাজের প্রত্যেকটি চরিত্রে মনস্তাত্তিক দ্বন্দ্ব ফুটে ওঠে পর্দায়। অন্য শিল্পীদের মতো আমিও চাই নানামাত্রিক চরিত্রে নিজেকে উপস্থাপন করতে। তাই চ্যালেঞ্জিং চরিত্রগুলো বেছে নেওয়া। এমন চরিত্র এখন করতে চাই, যেগুলো আমাকে নতুন কিছু করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে।’
নতুন বছরে নিজের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে মিথিলা বলেন, ‘নতুন বছরে বেশকিছু কাজ হবে। নতুন পরিকল্পনা যোগ হবে। তাই প্রত্যাশা অনেক। এ ছাড়া আমি একজন পেশাদার উন্নয়নকর্মী। দীর্ঘদিন ধরেই বাচ্চাদের উন্নয়ন নিয়ে ব্র্যাকের সঙ্গে কাজ করছি। সেই কাজটি বরাবরই নিষ্ঠার সঙ্গে করছি, ভবিষ্যতেও সেটাই করতে চাই। এদিকে অভিনয়ের ক্ষেত্রেও নতুন কিছু করার চেষ্টা থাকবে।’
ভারতীয় সংগীতশিল্পী দিলজিত দোসঞ্জের অনুষ্ঠান মানেই উন্মত্ত ভক্ত-অনুরাগীদের উত্তেজনা। আর তার অনুষ্ঠানে দোসর হয়েছিলেন বলিউড ও হলিউডের অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন। হঠাৎ করেই বেঙ্গালুরুতে দিলজিতের অনুষ্ঠানে পৌঁছে গিয়েছিলেন নায়িকা। মা হওয়ার পর এই প্রথম প্রকাশ্যে দেখা গেল দীপিকাকে। তবে তার জন্য তাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দীপিকা পাড়ুকোন বেঙ্গালুরুর একটি রাস্তা থেকে হেঁটেই পৌঁছে যান অনুষ্ঠানে। সঙ্গে ছিলেন দীপিকার কয়েকজন বন্ধুবান্ধব।
বেঙ্গালুরুর শোর মাধ্যমেই মা হওয়ার পর প্রথম প্রকাশ্য়ে আসেন দীপিকা । তবে এতদিন একমাত্র মেয়ে দুয়ার মুখ দেখাননি কাউতে। আর এবার বিমানবন্দরে দেখা মিলল দীপিকা ও তার কন্যার দুয়ার। বেঙ্গালুরু থেকে ফিরে মুম্বই বিমানবন্দরে পা রাখতেই পাপারাজ্জিরা ঘিরে ধরল রণবীর ঘরনিকে। দিলজিতের শো সেরেই মুম্বইয়ে ফিরলেন দীপিকা। ভারতের আনন্দবাজার প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, বেঙ্গালুরুর ট্রাফিক সম্পর্কে প্রায় সবাই অবহিত। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যায় সেই ট্রাফিক সিগন্যালে। সেই একই সমস্যায় পড়েছিলেন বলিউড অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন। ট্রাফিক সিগন্যাল ছাড়ার অপেক্ষা করতে গেলে হয়তো দিলজিতের সঙ্গে আর দেখাই হতো না। এ কারণে তড়িঘড়ি গাড়ি থেকে নেমে পড়েন অভিনেত্রী। বন্ধুদের সঙ্গে হই হই করতে করতে দিলজিতের অনুষ্ঠানে যান দীপিকা। তবে অভিনেত্রীকে এ দিন দেখা যায় ভিন্ন অবতারে। সেই টান টান মেদহীন চেহারার বদলে এখন তিনি খানিক পৃথুলা। কিন্তু ভাটা পড়েনি তার সৌন্দর্যে। পরনে ঢিলেঢালা ডেনিম প্যান্ট আর ঢিলেঢালা টিশার্ট। খোলা চুল। গহনা বলতে কানে দুল আর হাতে ঘড়ি। অনুষ্ঠানে দীপিকাকে কখনো দর্শকাসন থেকে নাচতে দেখা যায়। আবার কখনো দেখা যায় মঞ্চের পেছন থেকে দিলজিতের গান শুনছেন তিনি। এমনকি মঞ্চেও পৌঁছে যান অভিনেত্রী। সঙ্গে নিজের প্রসাধনী সংস্থার প্রচারও সেরে নেন দীপিকা। দিলজিৎ নিজেই বলেন, তিনি নাকি দীপিকার ব্র্যান্ডের সাবানই একমাত্র ব্যবহার করে থাকেন। দীপিকা সম্পর্কে দিলজিৎ আরও বলেন, কত ভালো ভালো কাজ করেছেন। বড়পর্দায় ওকে আমরা দেখেছি। কখনো ভাবিনি, এত কাছ থেকে ওকে দেখব। কী মিষ্টি মানুষ! নিজের যোগ্যতায় বলিউডে জায়গা তৈরি করেছেন। ওকে অনেক ভালোবাসা। আমার অনুষ্ঠানে আসার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
দুই বাংলার চলচ্চিত্রের আলোচিত অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে নিয়ে ‘তরী’ সিনেমার ঘোষণা দিয়েছিলেন নির্মাতা রাশিদ পলাশ। ছবিটিরও প্রথম লটের শুটিংও শুরু হয়েছিল। কিন্ত ছাত্র আন্দোলনে অচলাবস্থা সৃষ্টির কারণে সিনেমার শুটিং স্থগিত রাখা হয়। মাঝে ঋতুপর্ণাকে বাদ দেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন নির্মাতা। অবশেষে তাই হলো। ‘তরী’ সিনেমা থেকে ঋতুপর্ণাকে বাদ দিয়ে নেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের আরেক অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রকে।
খবরটি নিশ্চিত করে গতকাল রোববার পরিচালক রাশিদ পলাশ জানান, আগেরদিন শনিবার কলকাতায় শ্রীলেখা মিত্রের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। ঋতুপর্ণার স্থানে শ্রীলেখাকে যুক্ত করা হয়েছে। ফলে চরিত্রটির পরিধি আরও বাড়বে । সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জানুয়ারি মাসের শুরুতে শ্রীলেখাকে নিয়ে শুটিং শুরু করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি। নির্মাতা জানান, চিত্রনাট্যে ঋতুপর্ণার চরিত্রের যে পরিধি ছিল সেটি আরও বাড়ছে শ্রীলেখাকে ভেবে। কিন্তু এক লটের শুটিং হয়েও ঋতুপর্ণাকে কেন বাতিল করা হলো? এমন প্রশ্নের জবাব সরাসরি না দিলেও এটুকু জানান, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এ বদল করেছেন তিনি।
তবে ধারণা করা হচ্ছে ‘তরী’ থেকে ঋতুপর্ণার বাদ পড়ার মূল কারণে রয়েছেন নায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ। ফেরদৌস-ঋতুপর্ণার বন্ধুত্বের খবর দুই বাংলার সবারই জানা। পর্দার জুটি হিসেবেও তাদের ওঠা-বসা বেশ সমৃদ্ধ। কিন্ত নির্মাতা চাননি, ফেরদৌসের সূত্র ধরে ছবিটির শুটিং ও মুক্তিতে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হোক। নির্মাতা বলেন, ‘আমরা ছবিটির প্রথম ধাপের শুটিং শেষ করেছি। সেপ্টেম্বরে ঢাকায় এসে শুটিংয়ে যোগ দেওয়ার কথাও ছিল ঋতুপর্ণার। জুলাইর প্রথম সপ্তাহ থেকে দ্বিতীয় ও শেষ লটের প্রস্তুতিও নিচ্ছিলাম। এরই মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিডিউল ভেস্তে যায়। এখন নতুন করে শুটিংয়ে পরিকল্পনার কথা ভাবছি।’ এরই মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকায় ছবির প্রথম ধাপের শুটিং সম্পন্ন হয়েছে। আগামী মাসেই সিলেটে দ্বিতীয় ধাপের শুটিংয়ে যুক্ত হবেন শ্রীলেখা। আহাদুর রহমানের গল্পে ‘তরী’ সিনেমার চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন গোলাম রাব্বানী। ছবিতে আরও অভিনয় করছেন তুষার খান, সুমন আনোয়ার, রেহনুমা। ২০২৫ সালে ছবিটি মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে নির্মাতার।
কঠিন সময় পার করছেন বলিউড সুপারস্টার সালমান খান। বাবা সিদ্দিকীর মৃত্যুর পর একের পর এক প্রাণনাশের হুমকি। কখনো ফোনে, কখনো চিঠিতে, আবার কখনো সরাসরি শুটিং ফ্লোরে ঢুকে হুমকি। লরেন্স বিষ্ণোই দলের নিশানায় অভিনেতা। সালমানের চারপাশে এখন ২৪ ঘণ্টাই কড়া নিরাপত্তা। সব মিলিয়ে এক ধরনের আতঙ্কেই দিন কাটছে বলিউড ভাইজানের।
এসবের মাঝেই হঠাৎ করে বাবা সিদ্দিকীর ছেলের সঙ্গে মুম্বাই ছাড়লেন ভাইজান। শুক্রবার মুম্বাই বিমানবন্দরে দেখা যায় সালমানকে। সঙ্গে বাবা সিদ্দিকীর ছেলে জিশান সিদ্দিকী। ছিলেন সালমানের দেহরক্ষী শেরাও। তা কোথায় গেলেন অভিনেতা? বিমানবন্দরে পাপারাজ্জিরা সালমানের ছবি তুললেও তিনি কোথায় যাচ্ছেন, তা ফাঁস করেননি। হঠাৎ শহর ছাড়ার কারণে এই সপ্তাহান্তে ‘বিগ বস’-এর ‘উইকেন্ড কা ওয়ার’-এও থাকবেন না সালমান। তার পরিবর্তে সঞ্চালনা করবেন কোরিওগ্রাফার ফারাহ খান।
উল্লেখ্য, প্রথমে বন্ধু বাবা সিদ্দিকীর হত্যা। এরপর একের পর এক খুনের হুমকি। কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা মামলায় নাম জড়ানোর পর থেকেই লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নেতৃত্বাধীন বিষ্ণোই গ্যাংয়ের নিশানায় সালমান খান। আতঙ্ক বাড়ে বাবা সিদ্দিকীর হত্যাকাণ্ডের পর থেকে। দশেরার দিন বাবা সিদ্দিকীকে হত্যা করা হয়।
এর আগে পূর্ব বান্দ্রায় বাজি ফাটাচ্ছিলেন এনসিপি (অজিত) নেতা। সেই সময় তার ওপরে দুষ্কৃতদের হামলা হয়। আচমকাই সেখানে হাজির হয় তিন দুষ্কৃতকারী। তারা লাগাতার গুলি চালাতে থাকে। গুলি দেহ ভেদ করে সিদ্দিকীর শরীর। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন বাবা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় মৃত্যু হয় সিদ্দিকীর। এ ঘটনায় একাধিক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বন্ধুর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে হাসপাতালেও ছুটে গিয়েছিলেন সালমান খান।
শোনা যাচ্ছে অত্যন্ত ভেঙে পড়েছেন তিনি। কিন্তু হুমকির শেষ নেই। এর আগে হুমকি বার্তায় পাঁচ কোটি টাকার দাবি করা হয়েছিল। সেই ঘটনার অভিযুক্ত হিসেবে জামশেদপুরের এক সবজি বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যেই আবার কিছু দিন আগে সালমান খান ও বাবা সিদ্দিকীর ছেলে তথা মুম্বাইয়ের বান্দ্রা-পূর্ব আসনের বিধায়ক জিশান সিদ্দিকীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে নয়ডা থেকে ২০ বছরের এক যুবককে পাকড়াও করা হয়েছে। কিন্তু তার পরও হুমকির পালা অব্যাহত।
বাংলাদেশি জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান কলকাতাতেও বেশ জনপ্রিয়। দুই বাংলাতেই রয়েছে তার কাজের ভক্ত। নানা ঘটনা ও কাজের বিষয়ে সব সময়ই জয়া দুই বাংলার মিডিয়ায় সংবাদ হয়ে থাকেন।
এবার ঘটল ভিন্ন এক ঘটনা। সম্প্রতি ভারতের মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত হয় ফিল্মফেয়ার ওটিটি অ্যাওয়ার্ডসের পঞ্চম আসর। আয়োজনে মোট ৩৯টি পুরস্কার পান তারকারা। বলিউড ও টালিউডের তারকাদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে ছিলেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী জয়া আহসান। ‘ফিল্মফেয়ার ওটিটি অ্যাওয়ার্ড-২০২৪’-এ তিনি পেয়েছেন বিশেষ পুরস্কারও।
ফিল্মফেয়ারের এবারের আসরে উপস্থিত ছিলেন কারিনা কাপুর, অভিষেক বচ্চন, বিজয় ভার্মা, মনীষা কৈরালা, সোনাক্ষী সিনহাসহ অনেকেই। তাদের মধ্যে স্বমহিমায় ছিলেন জয়া। সঞ্চালকও মঞ্চে ডেকে নিয়েছিলেন তাকে। সম্বোধন করেছেন ‘ফাইন অ্যাকট্রেস অব বেঙ্গল’ বলে।
এদিন তিনি ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামদানি পরে ভারতের মঞ্চে উঠেছিলেন। জামদানিকে ব্যতিক্রম নকশায় গায়ে চড়িয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফিল্মফেয়ার ওটিটি অ্যাওয়ার্ড ২০২৪-এর কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেন এই তারকা। সেই ছবি ঘিরে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বলা সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি রীতিমতো কটাক্ষের শিকার হচ্ছেন।
এ নিয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন জয়া। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি দেখেছি অনেকে এটা নিয়ে কথা বলছেন। আমরা আমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার যদি ফিউশন করে খেতে পারি, যেমন- পিঠা বা মাছ তো আমরা ফিউশন করে খাই। তাহলে আমাদের দেশের কস্টিউম কেন ফিউশন করে পরতে পারব না? কেউ তো দাসখত দেয়নি, জামদানি এভাবে পরা যাবে না, ওভাবে পরা যাবে না।
জামদানি যদি স্কার্ট হয়, জ্যাকেট হয় তাহলে এভাবে পরলে সমস্যা কোথায়। আমরা যত ফিউশন করব তত বাইরের দেশের কাছে উপস্থাপন করতে পারব। এটার চাহিদা অনেক বেড়ে যাবে। এসব ভেবেই আমি জামদানির এই ফিউশন করেছি। দেখুন, কয়েক বছর আগেও জামদানির এতটা চাহিদা ছিল না। কিন্তু এখন জামদানির এত চাহিদা, মনে হয় এটা শুধু একটি শাড়ি নয়, এটা অলংকারের মতো। একটা মেয়ে চায়, তার ঘরে একটা সুন্দর দামি জামদানি থাকুক।’
অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘এটাই প্রথম নয়, আমি যতটুকু পারি জামদানি, মসলিন পরার চেষ্টা করি। এই লুকটারও একটা বিষয় ছিল। পুরানে যেসব মেয়ে যুদ্ধ করত, তাদের যে লুক সেই লুকেই আমি সেজেছিলাম এবং সেটা ইচ্ছে করেই। এমনকি পরিচালক সুজয় ঘোষও আমার লুকের প্রশংসা করেছিলেন।
চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে বাংলাদেশ ও ভারত সম্পর্ক নিয়ে। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, সুনামগঞ্জসহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছে হিন্দু নিপীড়নের ঘটনার খবর। ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশ পুলিশ। তারপর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। এমন অবস্থায় অশান্তির আঁচ লেগেছে দুই বাংলাতেও। এরইমধ্যে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের সিনেমা। এবার বাংলাদেশের বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার অনুষ্ঠান বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর মধ্যগ্রামের সুভাষ ময়দানে শুরু হবে ১৯ তম পরিবেশ সচেতনতার মেলা। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসার কথা ছিল রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার। আর সেই অনুষ্ঠানের এক পোস্টার নিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের ঝড়। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে অনুষ্ঠান করতে দিতে নারাজ মধ্যমগ্রামের নাগরিক সমাজের একাংশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তারা পৌরসভার কাছে আবেদন করেছেন যাতে বন্যাকে অনুষ্ঠান করতে দেওয়া না হয়। শুধু এখানেই শেষ নয়, মধ্যমগ্রাম নাগরিক সমাজ জানিয়েছে, যদি ওই শিল্পী অনুষ্ঠান করে তাহলে এবারে পরিবেশ মেলা তারা বয়কট করবে। ভাইরাল হওয়া পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘একজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে মধ্যমগ্রাম পুরসভার কাছে আবেদন জানাচ্ছি আগামী ২৮ডিসেম্বর মধ্যমগ্রাম পরিবেশ মেলায় বাংলাদেশের এই শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার গান পরিবেশনা অবিলম্বে বাতিল করা হোক। বাংলাদেশের কোন শিল্পীকে দয়া করে কোন অনুষ্ঠান করতে দেবেন না। আগে দেশ, তারপর সব। অনুগ্রহ করে বিষয়টি ভেবে দেখবেন।’
ফেসবুকে এই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ৮০ হাজারের বেশি হওয়ায় পোস্টটি ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। তারপরেই এ নিয়ে শুরু হয় চর্চা। বিষয়টি নিয়ে মধ্যমগ্রাম নাগরিকবৃন্দ ফেসবুক গ্রূপের অ্যাডমিন রূপক দে বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার চলছে, আমাদের দেশের জাতীয় পতাকাকে অবমাননা করছেন সেদেশের কট্টরপন্থিরা। এমন পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের কোনো শিল্পীরাই প্রতিবাদ করছেন না। আমাদের কাছে জাতীয়তাবোধ আগে। তাই আমরা বাংলাদেশের শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার সংগীতানুষ্ঠান নিয়ে আপত্তি জানিয়েছি।’ তবে এখনো শিল্পীর তালিকা চূড়ান্ত হয়নি জানিয়ে এই প্রসঙ্গে মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ বলেন, ‘যেকোনো দেশের শিল্পীকেই আমরা শ্রদ্ধা করি। আমরা শিল্পীদের নিয়ে বিভাজনের রেখা টানতে চাই না। এটা বাঙালি, বিশেষ করে সঙ্গীত অনুরাগীদের সংস্কৃতি নয়। যারা বিভাজনে বিশ্বাস করেন, তারা করতেই পারেন। তবে, এটা ঠিক নয়।’
বলিউডের আলোচিত অভিনেত্রী আলিয়া ভাট। ‘গাঙ্গুবাই কাঠিয়াবাড়ি’, ‘আরআরআর’ এবং ‘গলি বয়’-এর মতো হিট ছবি দিয়েছেন। পাশাপাশি তার দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য তিনি জাতীয় পুরস্কারও জিতেছেন। পুরোমাত্রার বাণিজ্যিক ছবিতে তাকে যেমন দেখা যায়, তেমনি করেছেন ভিন্ন ধারার ছবিও। ‘রকি অউর রানি কি প্রেমকাহিনি’ যেমন করেছেন, তেমনি আলিয়াকে পাওয়া গেছে ‘হাইওয়ে’ বা ‘রাজি’র মতো সিনেমায়। এ ছাড়া চরিত্রাভিনেত্রী হিসেবে বলিউডে তৈরি করেছেন বেশ শক্ত জায়গা। তবে এবার আলিয়া পর্দায় আসছেন ভিন্ন চরিত্র নিয়ে। পিংকভিলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভৌতিক সিনেমার নায়িকা হয়ে রুপালি পর্দায় হাজির হবেন আলিয়া। সিনেমাটিতে থাকবে কমিডিও। ইতোমধ্যেই সিনেমাটির নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে ‘চামুন্ডা’। ছবিটি প্রযোজনা করবেন ম্যাডককের দীনেশ বিজান।
ম্যাডকক বলিউডে হরর সিনেমার একটি ইউনিভার্স গড়তে চাইছে। ইতোমধ্যে শ্রদ্ধা কাপুরের ‘স্ত্রী’ ও ‘স্ত্রী ২’ এই ধারায় সফলতা পেয়েছে। পাশাপাশি কিয়ারা আদভানি ম্যাডককের সঙ্গে একটি মিথোলজিক্যাল সুপার ন্যাচারাল হরর থ্রিলার ‘দেবী’-তে যুক্ত হয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় দীনেশ বিজান আলিয়াকে নতুন সিনেমায় যুক্ত করলেন।
ইতোমধ্যে আলিয়া ও প্রযোজকের কয়েক দফা আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। তাকে বেশ কয়েকটি সুপার ন্যাচারাল হরর থ্রিলার চিত্রনাট্য দেওয়া হয়। সেখান থেকে তিনি ‘চামুন্ডা’কে বেছে নেন। সম্প্রতি এই আবেদনময়ী অভিনেত্রী যশরাজ ফিল্মসের ‘আলফা’ নামক একটি সিনেমার শুটিং শেষ করেছেন। বর্তমানে সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘লাভ অ্যান্ড ওয়ার’ সিনেমার শুটিংয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ছবিতে স্বামী রণবীর কাপুর ছাড়াও ভিকি কৌশলের সঙ্গে পর্দা শেয়ার করবেন এই তারকা অভিনেত্রী। এই ছবি শেষ করেই আগামী বছরের মাঝামাঝিতে ‘চামুন্ডা’র কাজ শুরু করবেন আলিয়া ভাট।
বলিউডে ইমতিয়াজ আলির ‘হাইওয়ে’ দিয়ে নিজের অভিনয় প্রতিভা প্রমাণ করেছিলেন আলিয়া ভাট। করণ জোহরের ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’ দিয়ে আত্মপ্রকাশের পর আলিয়ার জন্য এটি ছিল বিশাল সুযোগ। আলিয়া ভাট অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি জিগরা বক্স অফিসে তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’-এর পর ‘হাইওয়ে’ ছিল আলিয়া ভাটের দ্বিতীয় ছবি। ছবিতে রণদীপ হুডা মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তবে ইতিবাচক পর্যালোচনা এবং অভিনেতাদের অভিনয়ের জন্য প্রচুর প্রশংসা পাওয়া সত্ত্বেও ছবিটি বক্স অফিসে একটি মাঝারি সাফল্য হিসাবে প্রমাণিত হয়েছিল।
বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন। অনেকে তাকে বলিউড শাহেনশাহ এবং বিগ বি বলেও মন্তব্য করেন। এক কথায়, ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ এক ব্যক্তিত্ব তিনি। অমিতাভ বচ্চনের ক্যারিয়ারে একাধিকবার নানা ওঠা-পড়া এসেছে। তবু তারই মাঝে লড়াই চালিয়ে যেতে পিছপা হননি কখনও। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও ভীষণভাবে অ্যাক্টিভ অভিনেতা। সব সময়ই নানা চিন্তাশীল বিবৃতি দিতে দেখা যায় তাকে। যা অমিতাভ বচ্চনকে অন্য সব তারকার থেকে আলাদা করে বলা চলে। বচ্চন পরিবার ঘিরে অভিষেক-ঐশ্বরিয়ার ‘বিবাহ বিচ্ছেদের গুঞ্জন’-এর খবরে এ অভিনেতা ভীষণ বিব্রত অনেকদিন ধরেই। বিষয়টি নিয়ে কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসে হঠাৎ ক্ষমা চান বর্ষীয়ান এই তারকা। কেন ক্ষমা চাইলেন এ অভিনেতা? তিনি কোনো ‘বড়সড় ভুল’ করে ফেলেছেন কি না! বিষয়টা কী? এ নিয়ে অনেক নেটিজেনের মনে তুমুল আগ্রহের জন্ম নেয়।
আবারও অভিষেক-ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের জল্পনার অনেকটা বিরক্ত হয়ে এবার খানিকটা অন্যরকম পোস্ট দিলেন বলিউড শাহেনশাহ। যা দেখে অবাক তার ভক্ত-অনুরাগী ও নেটিজেনরা। অমিতাভের পোস্টে সবাই প্রশ্ন করতে শুরু করেছে এসব কী হচ্ছে? সোমবার দিবাগত রাতে হঠাৎই অমিতাভ বচ্চন একটি পোস্ট শেয়ার করেন। যেখানে তিনি একটি মাত্র শব্দ এবং একটি ইমোজি শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘চুপ।’ সঙ্গে রাগের ইমোজিও জুড়েছেন অভিনেতা। এই পোস্ট দেখে অনেকেরই মনে প্রশ্ন, তবে কি রেগে গিয়েছেন অভিনেতা? একজন লিখেছেন, ‘কী হয়েছে আপনার?’ কেউবা লিখেছেন, ‘এই একটি শব্দের খুব প্রয়োজন।’
প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন ধরেই বচ্চন পরিবার নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। অভিষেক বচ্চন এবং ঐশ্বর্যর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের গুজবও রটে গেছে। এরই মধ্যে একটি অনুষ্ঠানে নিজের নামের সঙ্গে থাকা ‘বচ্চন’ শব্দটি বাদ দিয়েছেন বলেও খবর প্রকাশ করে ভারতের প্রায় সব গণমাধ্যম। তবে কিছু ঘটনায় বারবার প্রশ্ন উঠেছে আদৌ কি তাদের দুজনের মধ্যে সবকিছু ঠিকঠাক রয়েছে? যদিও এই তারকা দম্পতি এই গুজবে কোনোরকম মুখ খোলেননি। এরই মাঝে অমিতাভ বচ্চনের এই পোস্টে চলছে নানা আলোচনা। অনেকে আবার এই টুইটকে তার ছেলে ও বউমার সম্পর্কের সঙ্গেও জুড়েছেন। তবে একটি টুইট করার পর এ বিষয়ে আর কিছুই জানাননি অভিনেতা।
অমিতাভ বচ্চন সম্প্রতি তার ব্লগে লিখেছেন, তিনি তাঁর পরিবার সম্পর্কে বেশি কথা বলতে পছন্দ করেন না। তবে একটা কথা তিনি উল্লেখ করেন, যা গুজব সেটা শুধুই গুজব। কোনো কিছু যাচাই ছাড়া বলার মধ্যে কোনো সত্যতা নেই।
বলিউডের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অন্যতম মেধাবী অভিনেত্রী কৃতি শ্যানন। স্বল্প সময়ের ক্যারিয়ারে বেশিরভাগ ছবিতেই রোমান্টিক ছবিতে দেখা গেছে তাকে। তবে সেই বৃত্ত ভেঙে রোমান্টিক খোলস থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে যাচ্ছেন এই অভিনেত্রী। যখনই সুযোগ পেয়েছেন ভিন্ন ধরনের চরিত্রে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। এই অভিনেত্রীর কথায়, এমন অনেক চরিত্র আছে, যা পর্দায় তুলে ধরার জন্য মরিয়া হয়ে আছি। অপেক্ষায় আছি, পর্দায় সুপার হিরো হয়ে ওঠার। সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এই ইচ্ছা প্রকাশের পাশাপাশি কৃতি এও বলেছেন, “বলিউডে ‘কৃষ’ ছাড়া মনে রাখার মতো সুপার হিরো সিনেমা আর তৈরি হয়নি বললেই চলে। এ রকম আরও কিছু সিনেমা নির্মিত হলে বিষয়টা মন্দ হয় না। সে ক্ষেত্রে আমার জন্য হয়তো সুযোগ তৈরি হবে সুপার উইম্যান হয়ে ওঠার।”
সুপার হিরো সিনেমার প্রতি নিজের দুর্বলতার কথা এভাবেই অকপটে স্বীকার করেছেন কৃতি। কিন্তু কবে স্বপ্নের সেই চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাবেন, তা শুধু সময়ই বলে দেবে। আপাতত অভিনয়ে নিজেকে ভাঙতে ব্যতিক্রমী বেশ কিছু চরিত্র বেছে নিয়েছেন এই অভিনেত্রী। এখন তিনি আলোচনায় আছেন তার ‘দো পাত্তি’ সিনেমা নিয়ে।
এদিকে কাজের বাইরেও ব্যক্তি কৃতির ব্যক্তিজীবন নিয়ে নানা গুঞ্জন ভেসে বেড়াচ্ছে বলিউডে। শোনা যাচ্ছে, কবির বাহিয়া নামে একজনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে এই অভিনেত্রীর। এই গুঞ্জনে রীতিমতো বিরক্তি প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমে কৃতি বলেছেন, ‘যখন কারও সম্পর্ক নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়, তখন সেই মানুষটির মনের অবস্থা কেমন হয়– তা রটনাকারীরা কখনও জানার চেষ্টা করেন না। যদি জানার চেষ্টা করতেন, তাহলে নিত্যদিন এত মিথ্যা গুজব-গুঞ্জন কানে আসত না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারকা জুটি নিয়ে মন্তব্য, জল্পনা-কল্পনার কথা দর্শক অনুরাগীরা বলতেই পারেন। কিন্তু একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়ে অহেতুক মিথ্যা খবর ছড়িয়ে দেওয়া সমর্থন করি না। কবির বাহিয়ার সঙ্গে আমার সত্যিকারের সম্পর্ক কী, কীভাবে পরিচয়, কোথায় সাক্ষাৎ– তা ঠিকভাবে না জেনেই প্রেম ও বিয়ের খবর রটিয়ে দেওয়া মেনে নিতে পারছি না। আশা করছি, এ প্রসঙ্গে কেউ কোনো প্রশ্ন করে আমাকে আর বিরক্ত করবেন না।’
সময়ের আলোচিত মডেল-অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী ও তাসনিয়া ফারিণ। নির্মাতাদের কাছে সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন অভিনেত্রীদের মধ্যেও তারা অন্যতম। বছরের বেশিরভাগ সময় শুটিং করে কাটাতে হয় তাদের। লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের ছেড়ে ফুরসত পেলে একসঙ্গে ঘুরতে বের হয়ে যান তারা।
আজ রোববার মেহজাবীন চৌধুরী ও তাসনিয়া ফারিণকে একসঙ্গে বেশ ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেল। এদিন রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ব্যতিক্রমী এক ইকর্মাস প্রতিষ্ঠান পাইকারী.কম.বিডির ব্যতিক্রমী আয়োজন ‘মেম্বারশিপ প্রোগ্রাম’-এ গ্র্যান্ড লঞ্চিং অনুষ্ঠিত হলো। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রিয় এই দুই অভিনেত্রী।
এই আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছিলেন বিনোদন জগতের তারকা ব্যক্তিত্বরা, তেমন আমন্ত্রিত হয়েছে উৎসুক ক্রেতাসাধারণ ও পাইকারি.কম.বিডি-র বর্তমান মেম্বাররাও। গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে এই প্রতিষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের এক ব্যতিক্রম উদ্যোগ মেম্বারশীপ প্রোগ্রামের শুভ সূচনা ঘোষণা করে।
মূলত বিনা লাভে পণ্য বিক্রি করা একটি প্রতিষ্ঠান। এই শ্লোগানকে সামনে রেখে পরিচালিত এই প্রতিষ্ঠান পাইকারি.কম.বিডির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাবির হোসেন। তার সূচনা বক্তব্যে বলেন, শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের মেম্বারশীপ ফি দিয়েই যে কেউ পাইকারি.কম.বিডি-র মেম্বার হয়ে যেতে পারবে। আর শুধুমাত্র মেম্বারই এক্সক্লুসিভলি পাবেন আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে বিনা লাভে বিক্রি হওয়া পণ্য কেনার সুযোগ। শুধুমাত্র এককালীন মেম্বারশীপ ফি প্রদান করেই একজন মেম্বার সারা বছর পাবেন বিনা লাভে বিক্রিত পণ্য কেনার সুবিধা।
এই উদ্যোগের প্রংশসা করে মেহজাবীন তার এক মন্তব্যে বলেন, অনলাইনে কেনাকাটাতো সবাইকে করতেই হয়। আপনারাও নিশ্চয়ই করেন। কিন্তু অনলাইনে বিনা লাভে কেউ পণ্য বিক্রি করছে, এটা সত্যিই ব্যতিক্রম! এরকম বিদেশে শুনেছি, আমাদের দেশে এমন উদ্যোগে নেওয়ায় পাইকারি.কম.বিডি-র প্রশংসা করতেই হয়।
অন্যদিকে তাসনিয়া ফারিণ বলেন, আমি এখন পর্যন্ত এমন কোনও প্রতিষ্ঠানের কথা শুনিনি যারা লাভ ছাড়া পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। পাইকারী.কম.বিডি গ্রাহকদের একটু স্বস্তি দেওয়ার জন্য বিনা লাভেই পণ্য বিক্রি করছে!
বিজ্ঞাপনী সংস্থা হেডকোয়ার্টার বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এই ইভেন্টটি সঞ্চালনা করেন বর্তমান সময়ের আলোচিত অভিনেতা এফ এস নাঈম। তার সহযোগিতায় ছিলেন আরেক অভিনেত্রী সারা আলম। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন ব্যতিক্রমী উপস্থাপন ভঙ্গির জন্য খ্যাত আলোচিত গায়ক আলী হাসান।
সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না বলিউডের হিট অ্যান্ড ফিট অভিনেত্রী শিল্পা শেঠির। একের পর এক বিতর্ক পিছু করছে তার। প্রায়ই স্বামী রাজ কুন্দ্রার বিষয়ে শিরোনামে আসতে হয় অভিনেত্রীকে। কখনো আবার তদন্তকারী সংস্থার তলব। এরপর নাম জড়িয়েছিল বিটকয়েন জালিয়াতি মামলায়। যার কারণে বাড়িছাড়া হতে হয়েছে শিল্পাকে। এই অভিনেত্রীর নামে কেনা জুহুর সমুদ্রমুখী বিলাসবহুল বাংলো বাড়িটি এখন ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ইডির (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) নজরদারিতে। শুধু এই বাড়ি নয়, তাদের প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। এরপরও রেহাই মেলেনি অভিনেত্রীর। একাধিকবার সাক্ষাতের পরও রাজের পর্নোকাণ্ডের জেরে পুনরায় ইডি ডাক পাঠিয়েছে শিল্পাকে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, সম্প্রতি আরও একবার রাজ-শিল্পার বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। বেশ কিছুদিন ধরে মুম্বাই এবং উত্তরপ্রদেশের ১৫টি এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তদন্তকারীরা। সে কারণে বাদ যায়নি রাজকুন্দ্রাসহ সংশ্লিষ্ট মামলায় জড়িত বাকিদের বাসস্থানও।
প্রাপ্তবয়স্কদের অ্যাপ খোলার জন্য বছরখানেক আগেই হাজতবাস হয়েছিল রাজের। দুই মাস জেলে কাটানোর পর জামিন পেয়েছিলেন। সেই স্মৃতি অতীতের খাতায় ফেলে যখন স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছেন রাজ-শিল্পা, তখনই আবার দুয়ারে কড়া নাড়া শুরু করেছে ইডি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে আরও জানা গেছে, কয়েক মাস আগে মহারাষ্ট্র ও দিল্লি পুলিশের কাছে ভ্যারিয়েবল টেক প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি সংস্থার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে।
সেখানে অমিত ভরদ্বাজ, বিবেক ভরদ্বাজসহ আরও বেশ কয়েকজনের নাম উঠে আসে অভিযুক্ত হিসেবে। যারা বিটকয়েনে বিনিয়োগের নামে কয়েক হাজার কোটি টাকা তুলেছেন। যাদের কাছ থেকে তারা টাকা তোলেন, তাদের প্রতি মাসে বিটকয়েনে ১০ শতাংশ টাকা রিটার্ন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। ক্রিপ্টো সম্পত্তি গড়ে তোলার লোভে অনেকেই টাকা ঢালেন ওই সংস্থায়। কিন্তু ওই সংস্থা সবাইকে ঠকানোয় একাধিক মামলা দায়ের হয়।
এ মামলার তদন্তে নেমেই মূলত রাজের সঙ্গে ওই সংস্থার সংযোগ খুঁজে পায় ইডি। হাজার কোটির দুর্নীতি, ইডির মামলা, যাবতীয় আইনি জটের মাঝেই গত আগস্টে ৩ কোটি টাকার বিলাসবহুল গাড়ি কিনে আবার সংবাদ শিরোনামে আসেন রাজ ও শিল্পা। যার সুবাদে তাদের দিকে বেড়ে যায় ইডির নজরদারি।
শোবিজে ‘সুগার ড্যাডি’ নিয়ে কমবেশি আলোচনা সব সময়ই থাকে। অনেক অভিনেত্রী ও মডেলের সুগার ড্যাডি থাকা নিয়ে সমালোচনাও কম হয় না। এ নিয়ে কথাও বলেন মডেল-অভিনেত্রীরা। এবার কথা বললেন পশ্চিমবঙ্গের আলোচিত অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। ‘বরাবর নিজের কাজ নিজেই জোগাড় করে এসেছি। কোনো দিন তথাকথিত ‘সুগার ড্যাডি’ নেই। ভালোবাসার মানুষজনেরও বড়ই অভাব। সব মিলিয়ে নিজেই নিজের হর্তাকর্তা-বিধাতা। ফলে, যা-ই ঘটুক ঠিক চালিয়ে নেব’- আনন্দবাজারে লিখেছেন তিনি।
আরজি কর-কাণ্ডে সরকারের বিরোধিতা করায় তাকে দিয়ে কোনো কাজ করানো হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে আনন্দবাজারে এক নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘দু-দুটো বিজ্ঞাপনের কাজ হাতছাড়া হয়ে গেল। ক্লায়েন্ট যোগাযোগ করেছিলেন এজেন্সির সঙ্গে। এজেন্সির যিনি প্রতিনিধি, তিনি আমাকে পছন্দ করেন। চেয়েছিলেন, কাজটা আমিই করি। কিন্তু তারও তো কোথাও বাধা রয়েছে। বললেন, ‘দিদি, আরজি কর-কাণ্ডে তোমার বক্তব্য তোমার বিরুদ্ধে গেছে। তুমি সরকারের বিরোধিতা করেছ। তোমাকে দিয়ে কাজ না করানোর নির্দেশ এসেছে।’ দুটো কাজ থেকেই ভালো অঙ্কের পারিশ্রমিক পেতাম।’
কাজ বেহাত হলেও বিষয়টি নিয়ে তিনি বিচলিত নন বলে জানান শ্রীলেখা মিত্র। তার ভাষ্যে, ‘আমি আর এ ধরনের ঘটনায় বিচলিত হই না। কোনোকালেই মধু মাখিয়ে কথা বলতে পারি না। বাকিরা যতটা না মনের গভীর থেকে মৃতা চিকিৎসকের জন্য ন্যায়বিচার চেয়েছেন, আমার চাওয়া ছিল আরও গভীর।’
এই অভিনেত্রী বলেন, ‘ভয় না পাওয়ার আরও একটা কারণ, আমার মাথার ওপর কোনো দায় নেই। ঋণের বোঝা নেই। প্রচুর চাহিদা নেই। দামি গাড়ি, দামি বাড়ি, দামি পোশাকের বিলাসিতা নেই। ফলে, প্রচুর অর্থের প্রয়োজনও নেই। একইভাবে, যতটা সম্ভব সৎ থেকে কাজ করা যায় ততটাই সৎ আমি। একমাত্র দেয়ালে পিঠ ঠেকে না গেলে মিথ্যা কথা বলি না। বললেও এমন মিথ্যা বলি না, যা অপরের ক্ষতি করবে।’