শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪

যক্ষ্মা নির্মূলে প্রধান বাধা রোগী শনাক্ত

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড
২৪ মার্চ, ২০২৩ ০০:০২
জাকিয়া আহমেদ
প্রকাশিত
জাকিয়া আহমেদ
প্রকাশিত : ২৪ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০

বিশ্বের যে ৮ থেকে ১০ দেশে যক্ষ্মার প্রকোপ বেশি, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। যক্ষ্মায় প্রতি ১২ মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। সে হিসাবে দিনে মৃত্যু হচ্ছে ১০০ জনের। অথচ যক্ষ্মার চিকিৎসা রয়েছে দেশে। সরকার বিনা মূল্যে যক্ষ্মার ওষুধ দিচ্ছে। তার পরও এত মৃত্যুর নেপথ্য কারণ হলো, যক্ষ্মা নিয়ে মানুষের অসচেতনতা এবং রোগী শনাক্ত না হওয়া।

গ্লোবাল টিবি রিপোর্ট ২০২০ অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট ২ লাখ ৯২ হাজার ৯৪২ জন যক্ষ্মারোগী শনাক্ত হয়েছে। প্রতি লাখে ২২১ জন নতুন যক্ষ্মারোগী শনাক্ত হয় এবং প্রতি লাখে ২৪ জন মৃত্যুবরণ করে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিবি-এল এবং এএসপি প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. মাহফুজার রহমান জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে যেখানে প্রতি ১ লাখ যক্ষ্মা রোগীর মধ্যে ৪৫ জনের মৃত্যু হতো, সেখানে ২০২১ সালে মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের।

তবে এ সত্ত্বেও বাংলাদেশ এখনো যক্ষ্মার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখানে প্রতি মিনিটে একজন যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছে। ২০২১ সালে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ৪২ হাজারের। অর্থাৎ প্রতি ১২ মিনিটে যক্ষ্মায় একজনের মৃত্যু হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ুবাহিত এই রোগটি সাধারণত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বেশি আক্রমণ করে। সেই সঙ্গে দারিদ্র্যপ্রবণ অঞ্চলে এর প্রকোপ বেশি।

তাদের বক্তব্য, দেশে যক্ষ্মা নির্মূলে এখনো কিছু সংকট আর চ্যালেঞ্জ রয়েছে। উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রে যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে। আবার দেশে এমন কিছু ‘হার্ড টু রিচ’ এলাকা রয়েছে, যেখানে এখনো স্বাস্থ্যসেবা ঠিকমতো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এসব কারণে রোগী শনাক্ত একটি কঠিন বিষয়। যার কারণে এখনো দেশ থেকে যক্ষ্মা নির্মূল করা সম্ভব হয়নি।

চিকিৎসকরা বলছেন, একজন যক্ষ্মারোগী থেকে কমপক্ষে ছয়জনে রোগটি ছড়াতে পারে। তাই কোথাও একজন যক্ষ্মারোগী পাওয়া গেলে তার সঙ্গে সম্পৃক্ত কমপক্ষে ছয়জনকেই পরীক্ষা করাতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম ‘দেশ থেকে টিবি নির্মূল করতে চাই’ মন্তব্য করে বলেন, কিন্তু দিনকে দিন এর জটিলতা বাড়ছে। বিশেষ করে হাড়, অন্ত্র, জরায়ু এবং অস্ত্রোপচারস্থলে যক্ষ্মার সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে বেশি, যা নির্ণয় করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই এটি নিয়ন্ত্রণ করতে অস্ত্রোপচারসংক্রান্ত যক্ষ্মা নির্ণয় ও প্রতিরোধে গুরুত্ব দিতে হবে।

চিকিৎসকরা বলছেন, এই কিছুদিন আগেও যক্ষ্মা কেবল বড়দের রোগ হিসেবে চিহ্নিত হতো। ধারণা করা হতো শিশুরা যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয় না। কিন্তু শিশুরাও যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছে এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা পরিবারের বড়দের কাছ থেকেই এতে সংক্রমিত হচ্ছে।

যক্ষ্মা নির্মূলে কিছু ক্ষেত্রে এগোলেও শতভাগ রোগী শনাক্ত করতে না পারায় বাংলাদেশ এখনো উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, পৃথিবীর যেসব দেশে ৭০ শতাংশ যক্ষ্মারোগী রয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। বাংলাদেশ যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে বেশ সফল হলেও কিছু ক্ষেত্রে এখনো কাজ করতে হবে।

যক্ষ্মা রোগের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, যক্ষ্মা একেবারে নির্মূল না করতে পারার পেছনে রোগী শনাক্ত না করতে পারা অন্যতম কারণ। কারণ, যক্ষ্মা হলে মানুষ তাকে প্রকাশ করতে চায় না। এর পেছনে রয়েছে কুসংস্কার এবং সামাজিক স্টিগমা।

একজন যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীর পরিবারকে সমাজে একঘরে করার উদাহরণও রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকে যক্ষ্মার লক্ষণ থাকলেও সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে রোগটি লুকিয়ে রাখে। এ কারণে রোগটি শতভাগ নির্মূল করা যাচ্ছে না।

যক্ষ্মা রোগ নিয়ে সরকারের সঙ্গে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী সংস্থা ইউএসএআইডি। ইউএসএআইডির বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. সামিনা চৌধুরী। তিনি ১৮ বছর বয়সে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে সঠিক সময়ে শনাক্ত ও চিকিৎসা নিতে পেরেছিলেন তিনি। সে কথা জানিয়ে ড. সামিনা চৌধুরী বলেন, ‘আমার রোগটি সঠিক সময়ে শনাক্ত হয়েছিল বলে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছি। এ জন্য রোগটি শনাক্তে জোর দিতে হবে। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে এসেছে কিন্তু একে নির্মূল করতে হবে।’

দেশে যক্ষ্মা নিয়ে অনেক কাজ হলেও ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মূল করা অত্যন্ত কঠিন। কারণ মানুষ সচেতন যেমন নয়, তেমিন রোগীও ঠিকমতো শনাক্ত হচ্ছে না বলে দৈনিক বাংলাকে বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।

তিনি বলেন, ‘সব রোগীকে স্ক্রিনিং বা শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না দেশে। দেশের অনেক এলাকায় আমরা ঠিকমতো স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছাতে পারছি না। আর রোগী শনাক্ত না করতে পারার কারণে তাদের চিকিৎসাও সম্ভব হচ্ছে না।’

ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের কিছু সংকট রয়েছে, রয়েছে কিছু চ্যালেঞ্জ। অনেক উপজেলায় যন্ত্রপাতি নেই, যন্ত্রপাতি খারাপ রয়েছে, এমনও আছে। সেসব জায়গায় যন্ত্রপাতি পুনঃস্থাপন করার চেষ্টা করছি আমরা। এসব সীমাবদ্ধতা যদি আমরা কাটিয়ে উঠতে পারি, তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে যক্ষ্মা নির্মূল করা অসম্ভব হবে না।’


‘ঢাকেশ্বরী মন্দিরে আবার ক্লিনিক চালু হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে’

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বন্ধ হয়ে যাওয়া ঢাকেশ্বরী মন্দিরের বিনামূল্যের ক্লিনিকটি আবার চালু করা হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাঠিয়ে তা চালুর ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। শুক্রবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ আশ্বাস দেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে একটা জিনিস দেখে আমি আশ্চর্য হলাম, একসময় এখানে একটা ফ্রি ক্লিনিকের ব্যবস্থা ছিল। সেটা কিন্তু এখন হচ্ছে না। আমার মনে হয় এটা আবারও চালু করা উচিত।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি এখানে গরিব রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন, আমি স্পেশালিস্ট ডাক্তার পাঠানোর ব্যবস্থা করব।’

ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘আজকে আপনারা অনেকেই অনেক দূর থেকে কষ্ট করে এখানে এসেছেন- আপনাদের একাত্মতা ঘোষণা করার জন্য। কিছুদিন আগে আমার কাছে প্ল্যানিং মিনিস্ট্রির সিনিয়র সচিব সত্যজিত বাবু (সত্যজিত কর্মকার) আসছিলেন। আমাকে বললেন, স্যার আমি ঢাকেশ্বরী মন্দিরের জন্য কিছু করতে চাই।’

সচিব তখন মন্ত্রীকে বলেন, ‘স্যার আমি এটা কেবিনেটে নিয়ে যাব, আপনি আমাকে সাপোর্ট করবেন। তাহলে উনাদের জিনিসটা উনারা পেয়ে যাবেন। আমিও আপনাদের এই জিনিসটায় সাপোর্ট করব। আপনাদের যে কাজটা প্ল্যানিং মিনিস্ট্রিতে আটকে আছে, আমি সেটার জন্য কাজ করব।’ এ সময় মন্ত্রী জিনিসটি কী, সেটি তার বক্তব্যে খোলাসা করেননি। ‘এই বাংলাদেশ সেই বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশে যখন ঈদ হয়, তখন আমরা হিন্দুরা হসপিটালে, বিভিন্ন জায়গায় কাজ করি এবং যখন পূজা হয়, মুসলমান ভাইরা কাজ করেন। এরকম সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ ছাড়া আর কোথাও আছে বলে আমার জানা নাই’- যোগ করে বললেন মন্ত্রী।

সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান সেলিম, বাংলাদেশ পূজা উৎযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর উপস্থিত ছিলেন। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রমেন মণ্ডলের সঞ্চালনায় সংগঠনের সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন।


গাড়িতে চলাচলকারীদের ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাড়িতে চলাচল করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না এমন লোক পাওয়া দুষ্কর। গণপরিবহনের চেয়ে ব্যক্তিগত গাড়িতে চলাচল অনেক আরামদায়ক। আর এ কারণে একটু কষ্ট হলেও অনেকে নিজের জন্য গাড়ি কিনে নেন।

তবে এক গবেষণায় উঠে এসেছে ভয়ানক তথ্য। জানা গেছে, গাড়িতে যারা চলাচল করেন তারা মনের অজান্তে ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক শুষে নেন।

‘এনভায়রনমেন্ট সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’-তে প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১০১টি বৈদ্যুতিক, গ্যাস এবং হাইব্রিড গাড়ির ওপর গবেষণা চালানো হয়েছে। এতে গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন ৯৯ শতাংশ গাড়িতে টিসিআইপিপি নামের একটি উপাদান পাওয়া গেছে। যেটিকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ট্যাক্সকোলজি পোগ্রাম একটি সম্ভাব্য ক্যানসার সৃষ্টিকারী হিসেবে গবেষণা করছেন।

গবেষণায় আরও জানা গেছে, বেশির ভাগ গাড়িতে টিডিসিআইপিপি ও টিসিইপি নামের দুটি উপাদান পাওয়া গেছে। যেগুলোকে ক্যানসার সৃষ্টিকারী হিসেবে ধরা হয়। এ ছাড়া এই উপাদানগুলো স্নায়বিক এবং প্রজনন ক্ষেত্রেও ক্ষতিকারক হিসেবে ধরা হয় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

এই গবেষণা প্রতিবেদনের প্রধান গবেষক ও ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের টক্সিলোজি বিজ্ঞানী রেবেকা হোলেন বলেছেন, একজন চালক গাড়িতে যে পরিমাণ সময় ব্যয় করে সেটি বিবেচনা করে বলা যায় এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় হুমকির বিষয়।

তিনি আরও বলেছেন, বিশেষ করে শিশু এবং যেসব চালক লম্বা সময় ভ্রমণ করেন তাদের জন্য এটি বেশি চিন্তার। কারণ শিশুরা প্রাপ্ত বয়স্কদের চেয়ে বেশি শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়।

গবেষণায় আরও পাওয়া গেছে, গরমের সময় গাড়িতে এই উপাদান বেশি পাওয়া যায়। কারণ তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে গাড়ির যন্ত্রাংশ থেকে এই রাসায়নিক বেশি নিষ্কৃত হয়।

গবেষকরা জানিয়েছেন, ক্যানসার সৃষ্টিকারী এই উপাদানের মূল সূত্র হলো গাড়ির সিটের ফোম। গাড়ি উৎপাদকরা সিটের ফোমে রাসায়নিক এবং অন্যান্য উপাদান মেশান।

তারা আরও খুঁজে পেয়েছেন এসব উপাদানের কোনো উপকারিতাই নেই। যদিও গাড়ি উৎপাদকরা মূলত আগুনের বিষয়টি চিন্তা করে আসনের ফোমে এগুলো ব্যবহার করেন। কিন্তু এগুলো আগুন ছড়িয়ে পড়া বা না পড়ার ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখে না।


করোনার টিকা প্রত্যাহারের ঘোষণা অ্যাস্ট্রাজেনেকার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এর আগে আদালতের নথিতে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাটি প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছিল যে, তাদের তৈরি করোনা প্রতিরোধী টিকা বিপজ্জনক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। তবে সেটা খুবই বিরল বলে উল্লেখ করা হয়। দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাক্সজেভরিয়া করোনা প্রতিরোধী টিকার অনুমোদন দেওয়ার পর থেকেই তা বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ গ্রহণ করেছে। তবে সম্প্রতি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা এক ঘোষণায় জানিয়েছে যে, তাদের তৈরি করোনার সব টিকা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। সংস্থাটি স্বেচ্ছায় তাদের করোনা প্রতিরোধী টিকা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো দেশে আর এই টিকা ব্যবহার করা যাবে না। গত ৫ মার্চ টিকা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছিল এবং মঙ্গলবার থেকে তা কার্যকর হয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, বাণিজ্যিক কারণে তাদের তৈরি করোনা প্রতিরোধী টিকা বাজার থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। সংস্থাটি বলছে, এই টিকা আর তৈরি বা সরবরাহ করা হচ্ছে না।

গত কয়েক মাসে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর সামনে আসে। অনেকেরই রক্তজমাট বাঁধা এবং রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে টিটিএস বলা হয়।

গত ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টে দায়ের করা আদালতের নথিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা স্বীকার করেছে যে, তাদের তৈরি টিকা থেকে এ ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে যা খুবই বিরল। টিটিএসের কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত জমাট বেঁধে যায় এবং প্ল্যাটিলেট কমে যায়। যুক্তরাজ্যে এ ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে এখন পর্যন্ত ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ব্রিটিশ হাইকোর্টে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা হয়েছে।
কিন্তু অ্যাস্ট্রাজেনেকা জোর দিয়ে বলেছে যে, ভ্যাকসিন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে আদালতের মামলার কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বলছে, এটা কাকতালীয় ঘটনা।

এদিকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা বিশ্বব্যাপী তাদের তৈরি করোনা প্রতিরোধী টিকার অবদান নিয়ে যথেষ্ট গর্বিত। বিশ্বে করোনা মহামারি শেষ করার ক্ষেত্রে তাদের এই টিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সংস্থাটির দাবি, করোনার প্রথম বছরেই ৬৫ লাখ মানুষের জীবন রক্ষা করেছে তাদের তৈরি টিকা। এ ছাড়া বিশ্বব্যাপী তারা ৩০০ কোটি ডোজ সরবরাহ করেছে।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলছে, করোনা প্রতিরোধী একাধিক টিকা তৈরি হওয়ায় সর্বশেষ ভ্যাকসিনগুলো বেশ সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। ফলে ভ্যাক্সজেভরিয়ার চাহিদা কমে গেছে, যা আর তৈরি বা সরবরাহ করা হচ্ছে না। তাই তারা ইউরোপের মধ্যে এই টিকা বাজারজাতের অনুমোদন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


‘এস্ট্রোজেনেকা টিকার কোনো পার্শপ্রতিক্রিয়া আমরা পাই নাই’

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বুধবার সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করণে টিকাদান কর্মসূচিতে এক সেমিনারে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৮ মে, ২০২৪ ১৩:০৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে এখন পর্যন্ত করোনার এস্ট্রোজেনেকা টিকার কোনো পার্শপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন।

আজ বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করণে টিকাদান কর্মসূচিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আয়োজিত এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।

এস্ট্রোজেনেকার করোনা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে করোনার এস্ট্রোজেনেকা টিকার কোনো পার্শপ্রতিক্রিয়া আমরা পাই নাই। এটা জানার পর আমি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দিয়েছি। তারা সার্ভে করে আমাকে রিপোর্ট দেবে। আমি যতক্ষণ না জানবো এটার পার্শপ্রতিক্রিয়া কী, ততক্ষণ কিছুই বলতে পারবো না। তবে আমরা এই বিষয়ে সজাগ আছি।’

এস্ট্রোজেনেকা তাদের টিকা উঠিয়ে নিতে বলছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওরা বলছে, কিন্তু আমরা প্রমাণ না পেলে কিভাবে উঠিয়ে নেব।’

উল্লেখ্য, বিখ্যাত ওষুধ ও টিকা প্রস্তুতকারী কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা বৈশ্বিকভাবে নিজেদের সব করোনা টিকা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সম্প্রতি এ টিকার বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ ও বিতর্ক তৈরি হওয়ার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক এ কোম্পানি।

তাদের বিবৃতিতে জানানো হয়, বাজারে বর্তমানে করোনার মুখে খাওয়ার ওষুধও পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বৈশ্বিকভাবে টিকার আর সেই চাহিদাও নেই। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ডেঙ্গু বিষয় মন্ত্রী বলেন, ‘ডেঙ্গু শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। আমরা যদি ডেঙ্গুর উৎস বন্ধ করতে না পারি, তাহলে নিয়ন্ত্রণ হবে না। ডেঙ্গুর চিকিৎসার সক্ষমতা আমাদের আছে। ডেঙ্গু চিকিৎসায় আমাদের চিকিৎসকরা অত্যান্ত দক্ষ। আমার অনুরোধ, জ্বর হলেই যেন পরীক্ষা করে সবাই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করেন। দেরি করলেই ডেঙ্গুর জটিলতায় রোগী মারা যেতে পারে। আমি আশা করি এবার স্যালাইনের কোনো সংকট হবে না। আমি কোম্পানিগুলোকেও বলেছি স্যালাইনের দাম যেন না বাড়ে।’

এর আগে সেমিনারে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য অর্জন হয়েছে। বিশেষ করে মাতৃমৃত্যু, শিশু মৃত্যু এবং টিকাদান কার্যক্রমে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সব চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটা শিশুর জন্য টিকা প্রাপ্তিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। টিকা দানের সফলতায় প্রধানমন্ত্রীকে ভ্যাক্সিন হিরো উপাধি দেওয়া হয়েছে। সকলের সম্মিলিত কার্যক্রমে টিকা দান কর্মসূচি অনন্য সফলতার গল্প হয়ে উঠেছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং- এর সভাপতি সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ।


ডেঙ্গুতে আমি মাকে হারিয়েছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ডেঙ্গুর সংক্রমণ বৃদ্ধির আগেই তা প্রতিরোধে জনসচেতনতার ওপর গুরুত্ব দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গুতে আমি মাকে হারিয়েছি। তাই এটা নিয়ে আমার চিন্তা আছে। আমি কাজ করব যাতে আর কারও মা এতে মারা না যান।’

তিনি আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ২০২৪ সালের ডেঙ্গু প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সব রোগের ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে যাতে রোগটি কারও হওয়ার আগেই প্রতিরোধ করা যায়। যাতে মানুষের ডেঙ্গু না হয় সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। মশা নির্মূলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও সিটি কর্পোরেশন এবং যে ঘরে মানুষ থাকে সেখানকার সবাইকেই সচেতন থাকতে হবে।

ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা অনেক আলোচনা ইতোমধ্যে করেছি। আমি নির্দেশনা দিয়েছি যাতে ডেঙ্গু বৃদ্ধির সময়ে কোনোভাবেই স্যালাইন সংকট দেখা না দেয় এবং স্যালাইনের দামও যেন না বাড়ে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়লে হাসপাতালগুলো খালি রাখার ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দিয়েছি। যাতে করে যাদের প্রয়োজন তাদের ভর্তি করানো যায়। আর যাদের কম প্রয়োজন তাদেরও যেন হাসপাতালে ভর্তি না করিয়ে চিকিৎসা দেওয়া যায়।’

মন্ত্রী বলেন, আমাদের ফগিং বিষয়ে কিছু ভুল ধারণা আছে। এ বিষয়ে আলোচনা করব। সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে ওপেনলি এ বিষয়ে আলোচনা হবে।


হিট স্ট্রোকে ১৫ দিনে ১৫ জনের মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

হিট স্ট্রোক সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তথ্য মতে, গত ১৫ দিনে হিট স্ট্রোকে সারা দেশে মোট ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল ১১টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে আরও তিনজন হিট স্ট্রোক করেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি নড়াইলের বাসিন্দা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে এখন পর্যন্ত ৩৪ জন হিট স্ট্রোক করেছেন। মারা যাওয়া ১৫ জনের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ ও দুজন নারী। তবে হিট স্ট্রোকে মারা যাওয়া মানুষের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২২ এপ্রিল থেকে, অর্থাৎ তাপদাহ বয়ে যাওয়ার ২০ দিন পর থেকে এই তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে।

অধিদপ্তরের তথ্য আরও বলছে, মৃতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাত জন মারা গেছেন মাগুরায়। এ ছাড়া মৃত্যুর খবর এসেছে চট্টগ্রাম, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, হবিগঞ্জ, রাজবাড়ী, ঝিনাইদহ, লালমনিরহাট, বান্দরবান এবং মাদারীপুর থেকে।

এই প্রথম স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হিট স্ট্রোক সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করল।


‘তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক গাইডলাইন সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে’

রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক জাতীয় গাইডলাইনের আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক গাইডলাইন খুবই সময়োপযোগী। এখানে বর্ণিত নির্দেশিকা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাপপ্রবাহ এইবারই শেষ নয়। আগামী বছরগুলোতেও এমন গরম আবার আসতে পারে। আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। তাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাইড লাইন সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। ইতোমধ্যে সকল সরকারি হাসপাতালে এই গাইডলাইন প্রেরণ করা হয়েছে এবং চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আজ রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক জাতীয় গাইডলাইনের আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে বাচ্চারা আর বয়োজ্যেষ্ঠরা। যারা একটু শারীরিকভাবে কম সামর্থ্যবান, যাদের ডায়বেটিক, হার্টডিজিস রয়েছে বা যারা বিভিন্ন অসুখে ভুগছেন- তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। এই বইয়ে নির্দেশিত গাইডলাইন লিফলেট আকারে স্কুল কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দিতে হবে।

নগর পরিকল্পনাবিদদের প্রতি আহবান জানিয়ে- স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা দেখি গ্রামের চেয়ে ঢাকা শহরে তাপমাত্রা অত্যধিক বেশি। এর কারণ, আমরা ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে ঢাকা শহরে গাছপালা সব কেটে ফেলেছি। জলবায়ু পরিবর্তনের উপর হয়তো আমরা খুব প্রভাব ফেলতে পারিনা। কিন্তু, নগর পরিকল্পনা করার সময় যদি এসব বিষয় আমরা মাথায় রাখি, তাহলে এ থেকে অনেকাংশে পরিত্রাণ সম্ভব।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেনটেটিভ এমা ব্রিগহাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


দেশে উদ্ভাবন হলো ‘ডায়াবেটিক চাল’

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সাধারণত ডায়াবেটিস রোগীদের ডাক্তাররা ভাত কম খাওয়ার কথা বলে থাকেন। ফলে রোগীরা ভাত থেকে সব সময় কয়েক হাত দূরেই থাকেন। তবে দেশে নতুন জাতের ‘ডায়াবেটিক চাল’ উদ্ভাবন হয়েছে। যার কারণে এখন থেকে ডায়াবেটিস রোগীরা চাইলেই এই চালের ভাত খেতে পারবেন।

উচ্চ ফলনশীল দুটি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। যার মধ্যে ব্রি-১০৫ জাতের ধানের চাল বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী বলে দাবি করেছেন ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ও পুষ্টিবিদরা। আর এ জন্যই এটিকে বলা হচ্ছে ‘ডায়াবেটিক চাল’।

জাতীয় বীজ বোর্ডও এ দুটি ধানকে অনুমোদন দিয়েছে। ফলে এখন দুটি জাতই মাঠপর্যায়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে জানা গেছে।

ফেনীর উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজীর চরচান্দিয়া এলাকার ৮০ বিঘা জমিতে চাষ করা হয়েছে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী এসব ধান। ৩০ জনেরও বেশি কৃষক এই ধান চাষ করে অধিক ফলনও পেয়েছেন। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডক্টর বিশ্বজিৎ কর্মকার গণমাধ্যমকে বলেন, এ ধানটি কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বা জিআই সম্পন্ন হওয়ার কারণেই এটিকে ‘ডায়াবেটিক চাল’ বলা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত ছাঁটাই করা চাল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের দেশে মাড় ফেলে ভাত খাওয়ার কারণে এমনি পুষ্টি কম পাওয়া যায়। এ অবস্থায় ব্রি-১০৫ বেশ আগ্রহ তৈরি করেছে, কারণ এটিতে পুষ্টিমান যেমন আছে তেমনি জিআই অনেক কম।’

এদিকে নতুন ধানের বৈশিষ্ট্যের কথা জানিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক নতুন উদ্ভাবিত ব্রি-১০৫ ধানের চাল ‘ডায়াবেটিক চাল’ হিসেবে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে আশাও প্রকাশ করেছেন।

কর্মকর্তারা জানান, তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে এ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলার পর এই ধানকে অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড।


‘কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে সচল করতে হবে’

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ‘জাতীয় স্বাস্থ্য ও কল্যাণ দিবস ২০২৪’ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তৃণমূল মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে চাইলে কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে সচল করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ‘জাতীয় স্বাস্থ্য ও কল্যাণ দিবস ২০২৪’ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যদি সচল থাকে, তাহলে স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে অবশ্যই পারবে। মন্ত্রী হওয়ার পরে আমি যে কয়েকটা জায়গায় গিয়েছি, প্রত্যেক জায়গায় দেখেছি, সেখানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অবদান সবচেয়ে বেশি দরকার। আমরা যদি তৃণমূল জনগণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে চাই, তাহলে কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে সচল করতে হবে। তাহলেই আমরা এ দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে উন্নত করতে পারব।’

স্বাস্থ্যসেবায় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসছে এবং তা মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবাকে প্রান্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছি।’ চিকিৎসকদের সেবার মান বৃদ্ধির জন্য তাদের ব্যক্তিগত সুযোগ–সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান সচিব।

ওই সময় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের রিহ্যাবিলিটাইজেশন অব কমউনিটি হেলথ কেয়ার ইনিশিয়েটিভ, বাংলাদেশের (আরসিএইচসিআইবি) প্রকল্প পরিচালক ও সাবেক সচিব মাখদুমা নার্গিস বলেন, ‘চিকিৎসকেরা সমাজেরই অংশ। দেশে অবকাঠামোগত দিক থেকে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। মনোজাগতিক উন্নয়নের দিকে তাকালে আমরা কিছুটা হতাশ হব। সমাজের দুর্নীতি ও অন্যান্য যেসব ব্যাধি আমাদেরকে আক্রান্ত করছে, এসব আমাদের সামনের যাত্রাকে পেছনে টেনে রাখছে। এগুলোতে যদি আমরা উন্নয়ন করতে না পারি, তাহলে অবকাঠামোগত উন্নয়ন দিয়ে খুব বেশি দূর এগোতে পারব না।’

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার পটভূমি, বঙ্গবন্ধুর দর্শন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাফল্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। আরও বক্তব্য দেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি জামাল উদ্দিন চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ নুরুল হক ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্যসহায়তা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন চিকিৎসক আলমগীর খান, আরাফাতুর রহমান ও এস এম হাসান মাহমুদ।


বাংলাদেশি চিকিৎসা বেশ অভিজ্ঞ ও দক্ষ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ মে, ২০২৪ ১৬:২৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনায় চিকিৎসা সেবায় বাংলাদেশি চিকিৎসা বেশ অভিজ্ঞ ও দক্ষ বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

আজ বুধবার রাজধানীর ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরো সায়েন্সে অনুষ্ঠিত ১২তম আন্তর্জাতিক এবং ২য় এসিএনএস-বিএসএনএস হাইব্রিড কনফারেন্স ও ক্যাডাভেরিক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি, আমাদের চিকিৎসকদের মেধা ও দক্ষতা বিশ্বের যে কোনো দেশের চিকিৎসকদের চেয়ে কম না৷ আমরা যে জোড়া মাথার যমজ শিশু রোকেয়া-রাবেয়ার অপারেশন করলাম, যদিও সেখানে হাঙ্গেরির চিকিৎসকরা ছিল, কিন্তু সেই অপারেশনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে আমাদের দেশের নিউরো সার্জনরা।’

‘প্রথম যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজে বাচ্চা দুটির এন্ড্রোভাস্কুলার সেপারেশন হয়, সেই রাতের ৩টা-৪টা বাজে আমি নিজের চোখে দেখেছি আমাদের এনেস্থেটিক এবং নিউরো সার্জনদের ইচ্ছা, দক্ষতা এবং সামর্থ্য। যা আমাকে বিস্মিত করেছে।’

তিনি বলেন, আমাদের তো কোনো কিছুর অভাব নেই৷ আমাদের মেধা আছে। সেই মেধা দিয়ে তোমরা সর্বোচ্চ সেবা দাও, তোমাদের সুরক্ষা আমি দেব৷ ডাক্তার হিসেবে তোমাদের প্রতি এটাই আমার প্রতিশ্রুতি।

তরুণ চিকিৎসকদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আমরা এমন এক জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, যেখানে দেশের মানুষ চিকিৎসক সমাজকে সম্মান করে। আমরা যদি সকাল আটটা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে সার্ভিস দেই। রোগীদের সেবা দেই। মানুষ সম্মান করবে।

ভুল চিকিৎসার অজুহাতে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর আক্রমণকে ন্যক্কারজনক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ভুল চিকিৎসার অজুহাতে চিকিৎসকদের উপর যে আক্রমণ হয় তা ন্যক্কারজনক, খুবই বাজে। ভুল চিকিৎসার নাম করে চিকিৎসকদের মারধর, বিশেষ করে মেয়ে চিকিৎসকদের উপর আক্রমণ মেনে নেওয়া যায় না৷ ভুল চিকিৎসা বলার অধিকার কারও নাই, আমারও নাই। বাংলাদেশে একমাত্র ভুল চিকিৎসা বলার অধিকার রাখে বিএমডিসি (বাংলাদেশ মেডিকেল ডেন্টাল কাউন্সিল)।

বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জন্স প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসাইনের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন এর মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী, নিনস্ এর যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম প্রমুখ।


ওষুধের দাম বাড়ানো ঠেকাতে ব্যবস্থার নির্দেশ হাইকোর্টের

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সব ধরনের ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি রোধকল্পে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে অব্যাহতভাবে ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি রোধকল্পে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না-তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন উচ্চ আদালত। এ ছাড়া বিদেশ থেকে আমদানিকৃত অনুমোদনহীন ওষুধ বিক্রি বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

‘দুই সপ্তাহে ওষুধের দাম বেড়েছে ৭ থেকে ১৪০ শতাংশ’ শিরোনামে গনমধ্যামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে এ রিট আবেদন করা হয়। কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এ রিট দায়ের করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই মাসে দেশের বিভিন্ন কোম্পানি তাদের উৎপাদিত ওষুধের দাম লাগামহীনভাবে বাড়িয়েছে। অন্তত ৫০ ধরনের ওষুধের দাম ২০ থেকে সর্বোচ্চ ১৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। চলতি মার্চের প্রথম সপ্তাহেও দাম বাড়ানো হয়েছে বেশ কয়েকটি ওষুধের। সবচেয়ে বেশি বাড়ানো হয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট, ডায়াবেটিসের রোগীদের ইনসুলিন ও ইনজেকশনের দাম।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা, হাঁপানিসহ বিভিন্ন ওষুধ এবং ভিটামিনের দামও বেড়েছে। বাদ যায়নি জ্বর-সর্দির ট্যাবলেট-ক্যাপসুল, বিভিন্ন অসুখের সিরাপও। বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি এবং বিক্রি থেকে আয়ের হিসেব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দাম বাড়ানোর হার অস্বাভাবিক। এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির অজুহাত হিসেবে কোম্পানিগুলো ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ও আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করছে।


ডেঙ্গুতে চলতি বছর মারা যেতে পারে ৪০ হাজার মানুষ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিশ্বে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুয়ায়ী, ২০০০ সালে প্রায় ২০ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে মারা যায়। চলতি বছর বিশ্বে ৪০ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে ২০০০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে ৩০ শতাংশ।

একটি স্ত্রী এডিস মশা যদি ফ্ল্যাভিভাইরাস প্যাথোজেন বহন করে এবং এ অবস্থায় কাউকে কামড় দেয় তাহলে ভুক্তভোগী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সংক্রমণ লক্ষণ ছাড়াই চলে গেলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু ক্ষেত্রে ব্রেকবোন ফিভার দেখা যায়, যা গুরুতরভাবে জয়েন্টে ব্যথা, রক্তক্ষরণ এমনকি মাঝেমধ্যে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটায়। ডেঙ্গুর আফটার-ইফেক্টও যন্ত্রণাদায়ক। ইউনাইটেড স্টেটস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন মনে করে, সারা বিশ্বে প্রতি বছর ১০ কোটি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়।

সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত অঞ্চল হলো লাতিন আমেরিকা। ২০০০ থেকে ২০০৫ সালে সেখানে বছরে গড়ে পাঁচ লাখ মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। কিন্তু ২০২৩ সালে অঞ্চলটিতে ৪৬ লাখ মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। এদিকে ২০২৪ সালে এরই মধ্যে সেখানে প্রায় ৬০ লাখ কেস শনাক্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্রাজিলের মানুষ।

একদিকে যেমন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তেমনি অঞ্চল ছাপিয়ে তা ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের সর্বত্র। এডিস মশা তাপমাত্রার ছোট পরিবর্তনের জন্য সংবেদনশীল এবং বিশ্ব উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পরিসর প্রসারিত হচ্ছে। অ্যানেফিলিস মশা ম্যালেরিয়া ছড়ায়, যা এখন সারা বিশ্বেই পাওয়া যায়; কিন্তু এডিস এখনো সব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েনি; কিন্তু জলবায়ুর বর্তমান প্রবণতা অনুযায়ী, এডিস মশা দক্ষিণ ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এতে আরও ২০০ কোটি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

নগরায়ণ এই মশার বংশবিস্তার বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে। একটি ডেঙ্গু মশা তার দুই সপ্তাহের জীবনে একাধিক ব্যক্তিকে কামড়াতে পারে। কিছু স্থানে এই রোগ আগে ছিল না কিন্তু এখন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এই প্রবণতা এখন বাংলাদেশ ও ভারতে দেখা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্যালিফোর্নিয়া, দক্ষিণ ইউরোপ, আফ্রিকায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।

ডেঙ্গু জ্বরের জন্য বিশ্বকে অবশ্যই প্রস্তুতি নিতে হবে। যদিও ধনী উত্তর গোলার্ধ ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, তবে এতে বিশ্বের দরিদ্র অংশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সিঙ্গাপুর দীর্ঘদিন ধরেই ভালো কাজ করেছে। দেশটি স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে নিয়মিত মনিটরিং করছে। তা ছাড়া কোথাও পানি জমেছে কি না তার খোঁজ করা, লার্ভা সংগ্রহ এবং দায়ীদের জরিমানার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। মশার কেন্দ্রস্থলগুলোতে নিয়মিত ওষুধ ছেটানো হয়।

২০১৬ সাল থেকে সিঙ্গাপুর আরেকটি উচ্চ প্রযুক্তির ডেঙ্গু প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে। প্রতি সপ্তাহে এটি ওলবাচিয়া ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রামিত ৫০ লাখ মশা ছেড়ে দেয়, যা ডেঙ্গু সৃষ্টিকারী ভাইরাস ছড়াতে বাধা দেয়। এতে বছরে দেশটির প্রায় ৩৫ লাখ ডলার খরচ হয়। এখনো ডেঙ্গুর কোনো ভ্যাকসিন বাজারে আসেনি, তবে এ ক্ষেত্রে চেষ্টা চলছে।


জোড়া মাথা আলাদা করা রাবেয়া-রোকেয়া সুস্থ আছে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) জোড়া মাথা আলাদায় অস্ত্রোপচার শেষে শিশু রাবেয়া ও রোকেয়া সুস্থ আছে। সম্প্রতি তাদের অস্ত্রোপচার-পরবর্তী পর্যবেক্ষণে সিএমএইচে আসেন হাঙ্গেরির চিকিৎসক দল এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। এই চিকিৎসক দল চলমান চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। গতকাল রোববার সিএমএইচে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। এ ছাড়াও ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিরল মাথা জোড়া লাগানো জমজ শিশু রাবেয়া ও রোকেয়ার অস্ত্রোপচার-পরবর্তী ফলোআপের জন্য বিদেশি চিকিৎসক দল ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী আসেন। বক্তারা বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় জোড়া মাথার শিশুদের বলা হয় ক্রেনিয়োপগাস টুইন্স। মাথা জোড়া লাগানো জমজ শিশু চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং বিকলতা। ২৫ লাখ জীবিত জমজ শিশুর মধ্যে মাত্র একটি জোড়া মাথার শিশু জন্ম নেয়। প্রায় ৪০ শতাংশ জোড়া মাথার শিশু মৃত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে এবং আরও এক-তৃতীয়াংশ শিশু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যুবরণ করে। আনুমানিক শতকরা ২৫ ভাগ শিশু জোড়া মাথা নিয়ে বেঁচে থাকে, যাদের শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে আলাদা করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এর সাফল্যের হারও খুব বেশি নয়।

পাবনার চাটমোহর উপজেলার রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা বেগম দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় বিরল দুই মাথা জোড়া লাগানো জমজ সন্তান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই বিরল অস্ত্রোপচারটি প্রথমবারের মতো গত ১ আগস্ট ৩৩ ঘণ্টাব্যাপী ঢাকার সিএমএইচে সম্পন্ন হয়, যা বিশ্বে ১৭তম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অস্ত্রোপচারের সবচেয়ে জটিল অংশ ‘জমজ মস্তিষ্ক’ আলাদাকরণের কাজটি সম্পন্নের জন্য ২০১৯ সালের ২২ জুলাই রাবেয়া ও রোকেয়াকে সিএমএইচে আনা হয়। ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি এবং ১৩ মার্চ দুই ঘণ্টা ৩০ মিনিটব্যাপী দুটি অস্ত্রোপচার সফলভাবে হয়।

এ অস্ত্রোপচার দুটির মাধ্যমে তাদের মাথায় বিদ্যমান ক্ষতস্থান নতুন কোষ দ্বারা পূর্ণ করা হয়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষদিকে রাবেয়ার মাথার বাম দিকের চামড়ার ক্ষত শুরু হয় এবং পরে বৃদ্ধি পেয়ে চামড়ার নিচে লাগানো কৃত্রিম মাথার খুলি দৃশ্যমান হয়।

এই জটিলতা সমাধানে বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ২০২২ সালের ৭ মার্চ ক্রেনিয়োপ্লাসটি সার্জারির মাধ্যমে সিএমএইচে সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন। বর্তমানে রোকেয়া ও রাবেয়া দুজনই সুস্থ আছে। ওই অস্ত্রপচারে দেশি ও বিদেশিসহ শতাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অংশ নেন।


banner close