ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাখমুত দখল চেষ্টার মধ্যে নতুন করে দেশটির বিভিন্ন শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। হামলায় শহরগুলোর আবাসিক ভবনসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকা। খবর বিবিসির।
ওডেসার গভর্নর ম্যাকসিম মার্শেঙ্কো বলেছেন, বন্দর শহরটিতে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, আবাসিক এলাকা এবং বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ দিকে খারখিভে অন্তত ১৫টি ক্ষেপাণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা (রিজিওনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন চিফ) ওলেগ সিনেগুবভ।
দেশটির ভিনিসিয়া, রিভনে, ডিনিপ্রো এবং পোল্টাভায়ও হামলা চালানো হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের এক বছর পূর্তি হলো গত মাসে। বছর পূর্তিতে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মহল থেকে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানানো হলেও আপাতত কোনো সুখবর মিলছে না। সম্প্রতি বাখমুত শহরের পূবাঞ্চল দখল করা হয়েছে বলে দাবি করে রুশ বাহিনী। তবে ইউক্রেনীয় বাহিনী বলছে, তারা রুশ বাহিনীকে বাখমুত থেকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে।
এ দিকে মার্কিন গোয়েন্দাদের তথ্য বলছে, আপাতত এ যুদ্ধ থামার কোনো সম্ভাবনা নেই। রুশ প্রেসিডেন্ট কৌশলগত কারণেই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করছেন।
মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক এভ্রিল হেইনস গত বুধবার বলেছেন, এ বছর নতুন করে বড় কোনো হামলার সামর্থ্য ছিল না রাশিয়ার। তবে পুতিন নিজের সুবিধামতো সময় খুঁজছেন। সময় যতক্ষণ নিজের পক্ষে না যায়, ততক্ষণ এ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্টোনহেঞ্জ দাঁড়িয়ে আছে উইল্টারশায়ারের এক ঘেসোভূমিতে। যখন মেসোপটেমীয়রা চাকা আবিষ্কার করল, তখনো নাকি পাথরগুলো ওখানেই ছিল। যখন মিসরীয়রা পিরামিড বানাল, তখনো ওগুলো ঠায় দাঁড়িয়েছিল, ভারতীয়রা যখন সংখ্যা আবিষ্কারের পরে শূন্য আবিষ্কার করল, ইংল্যান্ডের বুকে তখনো ওগুলো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল। তারপর কত কী তৈরি হলো, কলোসিয়াম হলো, তাজমহল হলো, পিসার মিনার তৈরি হলো, তারও কয়েক হাজার বছর আগে অশোক বিশাল এক স্তম্ভ পুঁতলেন, তখনো ওই আলগা পাথরগুলো দাঁড়িয়েছিল। এরপর সিয়ার্স টাওয়ার হলো, টুইন টাওয়ার হলো, বুর্জখলিফা হলো, তবুও পাথরগুলো দাঁড়িয়ে রইল। সময়ের পালাবদল, বৈরী আবহাওয়ায় ওগুলো মলিন হলো বটে, কিন্তু নুয়ে পড়ল না। কী এমন ক্যারিশমা, হাজার হাজার বছর ধরে বিশাল সব পাথর দুই পায়ে মাথায় স্বগোত্রীয় বোঝা নিয়েও ঠায় দাঁড়িয়ে রইল। কারা ওদের ওভাবে দাঁড় করিয়েছিল, কীভাবেই বা করিয়েছিল? তবে কি ওগুলো মানুষের তৈরি নয়। ভিনগ্রহী এলিয়েনরা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে ওগুলো ওভাবে দাঁড় করিয়েছিল? নাকি কোনো জাদুকর?
২.
প্রায় দশ হাজার বছর আগে স্টোনহেঞ্জ তৈরি হয়েছিল বলে মনে করেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। তবে এক দিনে তৈরি হয়নি এই বিশাল স্থাপত্যকর্ম। সেটা আসলে সম্ভবও নয়। একেকটা পিরামিড কিংবা হালের তাজমহল তৈরি করতেও যেখানে কয়েক দশক সময় লেগে যায়, সেখানে অতি প্রাচীন এই পাথুরে স্তম্ভ তৈরি করতেও নিশ্চয়ই অনেক সময় লেগেছিল। আর্কিওলজিস্টরাও সেটাই মনে করেন। তারা হিসাব কষে দেখেছেন, প্রায় দেড় হাজার বছর লেগেছিল এই পাথুরে স্তম্ভ তৈরি করতে। অর্থাৎ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষ এই একটা জিনিস তৈরির পেছনে শ্রম দিয়েছিল। তাজমহল বা পিরামিড তৈরির পেছনে যথেষ্ট কারণ ছিল, রাজা-বাদশাহরা গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়ার জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয়ার জন্য। কিন্তু স্টোনহেঞ্জে তো তেমন কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। তা হলে কীসের মোহে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই জিনিস তৈরি করে গেছে প্রাচীনকালের মানুষরা। এর উত্তরে অনেক অনেক তত্ত্ব দিয়েছে- অদ্ভুত আর বৈজ্ঞানিক দুই ধরনেরই। তা নিয়েই আলোচনা করা হবে এ লেখায়।
বিশাল সব পাথর
মোটামুটি ১০০ পাথর দিয়ে তৈরি হয়েছিল এই পাথর। সবচেয়ে বড়গুলোর ওজন প্রায় ৩০ টন। সবচেয়ে ছোটগুলোর ১৫। এত বিশাল সব পাথর কীভাবে স্থাপন করা হলো, কীভাবেই বা সেগুলো বয়ে আনা হলো, সেটা একটা বিস্ময়ই। কারণ চাকা নেই সেই যুগে, গাড়ি নেই, পাথর কাটার যন্ত্র নেই, তারপরও কীভাবে তৈরি হলো? এই স্টোনহেঞ্জ এখনো প্রহেলিকাই হয়ে আছে আর্কিওলজিস্টদের কাছে।
আগে মানুষ স্টোনহেঞ্জ দেখেই শুধু বিস্মিত হতো। কিন্তু এর বাইরেও যে আরও কিছু থাকতে পারে, তা ছিল ধারণার বাইরে। অষ্টাদশ শতকে এক ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ জন অব্রে স্টোনহেঞ্জে খননকাজ চালাতে গিয়েছিলেন দলবল নিয়ে। সে সময় তিনি স্টোনহেঞ্জকে ঘিরে থাকা একটা পরিখা খুঁজে পান। এখানে যে পরিখা থাকতে পারে, অব্রের আগের গবেষকরা সেটা বুঝতেই পারেননি। কারণ, পরিখাটা ভরাট করা ছিল। এই এক পরীক্ষাই স্টোনহেঞ্জের নির্মাণ ইতিহাস অনেকখানিই বদলে দেয়। এসব বড় বড় পরিখা তৈরির কাজে সবচেয়ে বড় কারণ পাথর বহন। মিসরের পিরামিডেও দেখেছিলাম, বড় বড় সব পিরামিডের চারপাশে পরিখা ছিল। চাকার গাড়ি তখন তৈরি হয়নি, তাই দূর থেকে পাথর টেনে আনা কষ্টকর। তারচেয়ে কষ্টকর নির্মাণস্থলে সেগুলো নড়ন-চড়ন করা। পরিখা থাকলে ভালো হয়। পরিখার পানিতে ভাসিয়ে পাথর স্থপনার একপাশ থেকে আরেক পাশে সহজেই সরিয়ে নেয়া যায়।
পানিতে পাথর কীভাবে ভাসে, তার জবাব আমরা পিরামিড চ্যাপ্টারেই দিয়েছি। এখানে সংক্ষেপে বলি, বিশাল বিশাল সব ভেলা তৈরি করে তার ওপর পাথর বসিয়ে দিলেই কাজ হয়ে যেত। সুতরাং অব্রের পরিখা আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসে।
কারসার
শুধু পরিখা নয়, এরও আগে এখানে অন্য কিছু তৈরি হয়েছিল। ১৭২৩ সাল। ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ উইলিয়াম স্টাকলি স্টোনহেঞ্জের উত্তর দিকে একটা আয়তাকার ট্রাক আবিষ্কার করেন। তিন কলোমিটার লম্বা আর ৩৩০-৪৫০ ফুট চওড়া সেই ট্রাকটা। স্টাকলি অনুমান করেন, বর্তমান ব্রিটেন তখন রোমান সাম্রাজ্যের অংশ ছিল। তাই এই ট্রাকগুলো ছিল একটা রোমান রেসিং ট্রাক। ঘোড়া বা অন্য প্রাণীর রেসিং ট্রাক নয়, সেটা ছিল রথের মতো মানুষে টানা একটা গাড়ির ট্রাক। কিন্তু স্টাকলির হিসাবের সঙ্গে সময়ের হিসাব মেলে না। স্টাকলি যখন গবেষণা করেন, তখন কার্বন ডেটিং সিসটেম ছিল না। তেজস্ক্রিয় কার্বনের সাহায্যে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের হিসাব একদম দিনক্ষণ মিলিয়ে করা যায়। রোমানরা ব্রিটেনে এসেছিল খ্রিস্টপূর্ব ২০৮-২১১ সালের দিকে। আধুনিক হিসাব বলছে আয়তকার এই ট্রাক তৈরি হয়েছিল এর অন্তত এক হাজার বছর আগে। এই ট্রাক আর যা-ই হোক, সেটা রথ রেসিংয়ের জন্য তৈরি হয়নি।
তাহলে কী জন্য তৈরি হয়েছিল? এ প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি।
রোমান সভ্যতা চাকার ব্যবহার জানত। ঘোড়ার সাহায্যে টানা হতো রোমান রথ। সেই রথ চাকায় ভর দিয়ে চলত, সেটি নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না। যদি স্টাকলির অনুমান সত্যিই হতো, তাহলে স্টোনহেঞ্জ তৈরি নিয়ে এখনো এত রহস্য-বিস্ময় থাকত না। চাকার ব্যবহার যারা জানে, অনেক বড় বড় পাথর টানার জন্য অনেক বড় গাড়ি চাইলেই তৈরি করতে পারত তারা। কিন্তু স্টাকলির অনুমান যেহেতু ভুল, স্টোনহেঞ্জ নিয়ে ধোঁয়াশা তাই এখনো রয়েছে।
অব্রে হোল
সপ্তদশ শতাব্দীতে প্রত্নতত্ত্ববিদ জন অব্রে আবিষ্কার করেন বেশ কিছু গর্ত। একটি দুটি নয়, ৫৬টি গর্ত। গর্তগুলো একটা বৃত্তের মতো করে সাজানো হয়েছে। প্রতিটি গর্তের ব্যাস ৩ ফুটের মতো। এই গর্তগুলো ব্লুস্টোন আর কাঠের টুকরা দিয়ে ভর্তি করা হয়েছিল বলে মনে করতেন অব্রে। এগুলো এখন অব্রেহোল নামে পরিচিত। অব্রেহোলে ব্লুস্টোন আদৌ ব্যবহার করা হয়েছিল কি না তা নিশ্চিত নন এখনকার বিজ্ঞানীরা। স্টোনহেঞ্জের আশপাশে ব্লুস্টোনের কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। তবে ২৫০ কিলোমিটার দূরে প্রেসেলি পাহাড়ে ব্লুস্টোন পাওয়া যায়। ব্লুস্টোনের বিশেষত্ব হলো- এগুলো ভিজে অবস্থায় নীলাভ রং ধারণ করে। তাই এর এমন নাম। তবে অব্রেহোলগুলো আসলেই ব্লুস্টোন দিয়ে ভরাট করা ছিল কি না, এ বিষয়ে কেউ নিশ্চিত নন। বিজ্ঞানীরা বরং মনে করছেন, এগুলো সাধারণ পাথর দিয়েই ভরাট করা ছিল। এই অব্রেহোলগুলোর চারপাশেই ছিল সেই পরিখা। পরিখাটাকে একটা বৃত্ত হিসেবে ধরলে এর ব্যাস মোটামুটি ৩৬০ ফুট। গভীরতা ছিল ছয় ফুটের মতো। তবে বৃত্তের মতো হলেও একটানা বৃত্ত নয়। পরিখা ডিঙিয়ে ভেতরে যাওয়ার ঝক্কি তো অনেক। তাই দরকার প্রবেশ পথ। উত্তর-পূর্ব কোণে এবং দক্ষিণ দিকে দুটি জায়গায় পরীক্ষা দুটিকে বিচ্ছিন্ন করেছিল দুটি বাঁধ। আসলে এই জায়গা দুটি খোঁড়াই হয়নি। পরিখা আর এর ঢালু কিনারাকে বলা হয় হেঞ্জ। সুতরাং বুঝতেই পারছেন কেন এর নাম স্টোনহেঞ্জ।
এগুলো তৈরির পর বহুদিন স্টোনহেঞ্জে নতুন করে নির্মাণকাজ চলেনি। এর প্রায় দেড়-দুই শ বছর পর আবার কিছু কাজ শুরু হয়। প্রায় ৩০টি নতুন গর্ত তৈরি করা হয় পরিখার কাছাকাছি। এগুলোতে মৃতদেহ দাহ করা হতো। অর্থাৎ এ সময়টাতে স্টোনহেঞ্জ এলাকা সমাধিক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো। সে সময় স্টোনহেঞ্জের কেন্দ্রের দিকে কাঠ দিয়ে ছাউনির মতো কিছু একটা বানানো হয়। পরিখার প্রবেশপথেও বসানো হয় খাড়া কাঠের তক্তা। কিন্তু এগুলো কেন বসানো হয়েছিল, তার উত্তর মেলেনি।
চলবে...
দ্বিতীয় পর্ব আগামীকাল
ফ্রান্সে আল্পস পর্বতে তুষারধসে চার পর্বতারোহী নিহত হয়েছেন। রোববার মোঁ ব্লঁ পর্বতের দক্ষিণ-পশ্চিমে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় আরও ৯ জন আহত হন। খবর রয়টার্সের।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় রোববার দুপুরে আরমানসেট হিমবাহে এই তুষারধস ঘটে।
হাউট-সাভোয়ের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র ইমানুয়েল কোকান্ড বলেছেন, স্কিইং করতে গিয়ে ওই ১৩ জন দুর্ঘটনার শিকার হন। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
কোকান্ড বলেন, সাড়ে তিন হাজার মিটার উঁচু থেকে এ ধ্বসের ঘটনা ঘটেছে। তবে কারণ এখনো জানা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
হিমবাহটির কাছে লেস কন্টামাইন্স-মন্টজোইয়ের গ্রাম এবং স্কি রিসোর্ট রয়েছে।
এ দুর্ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। তিনি জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাস্থলে এখনো উদ্ধারকাজ চলছে।
ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে একের পর এক মর্মান্তিক নৌকাডুবির ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ নৌকাডুবিতে নিখোঁজ হয়েছেন ৩৪ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী। তারা সবাই সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছানোর চেষ্টা করছিলেন।
নৌকাটি বৃহস্পতিবার তিউনিসিয়ার বন্দর শহর এসফ্যাক্সের কাছ থেকে যাত্রা করেছিল বলে জানিয়েছেন ফাওজি এল মাসমোওদি নামে শহরটির এক আদালত মুখপাত্র। সর্বশেষ এই নিখোঁজের ঘটনাসহ মোট নিখোঁজের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৭ জনে।
বৃহস্পতিবার ইতালিয়ান কোস্ট গার্ড জানিয়েছিল, দক্ষিণ ইতালি থেকে দুটি অভিযানে তারা ৭৫০ জনের মতো শরণার্থী উদ্ধার করেছে। যার কয়েক ঘণ্টা আগেই তিউনিসিয়া থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি আসার পথে ৩৩ জন নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
হুসেম জেবাবলি নামে তিউনিসিয়ার এক জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের কোস্ট গার্ড গত দুই দিনে ইতালি যাচ্ছে এমন ৫৬টি নৌকা থামিয়ে দিয়েছে এবং ৩ হাজারেরও বেশি লোককে আটক করেছে। যাদের বেশিরভাগই সাব-সাহারা অঞ্চলের বাসিন্দা।
জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, এ বছরে তিউনিসিয়া থেকে যাত্রা করে অন্তত ১২ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী ইতালি পৌঁছেছে। অথচ ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ১৩ শ।
উন্নত জীবনের আশায় দারিদ্র্য ও সংঘাতকবলিত আফ্রিকা থেকে ইউরোপে পাড়ি দেয়া একটি নিয়মিত ঘটনা। সাম্প্রতিক সময়ে যাত্রা শুরুর জন্য তিউনিসিয়ার এসফ্যাক্স উপকূল তাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আগে লিবিয়া ছিল অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রধান পথ।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আলেস বিলিয়াৎস্কিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে বেলারুশের আদালত। চোরাচালান এবং জনসাধারণের শৃঙ্খলা লঙ্ঘনকারী কাজে অর্থায়নের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে ৬০ বছর বয়সী এই মানবাধিকার কর্মীকে। খবর বিবিসির।
বিলিয়াৎস্কির সঙ্গে তার দুই সহযোগী ভ্যালেন্টিন স্তেফানোভিচ এবং ভ্লাদিমির ল্যাবকোভিচকেও আদালতে তোলা হয়। স্তেফানোভিচকে নয় বছরের এবং ল্যাবকোভিচকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
তিনজনের সাজার বিষয়টি জানিয়েছে ভিয়াসনা মানবাধিকার গ্রুপ। ১৯৯৬ সালে গ্রুপটি প্রতিষ্ঠা করেন বিলিয়াৎস্কি।
২০২২ সালে শান্তিতে নোবেল জয়ী তিনজনের মধ্যে একজন বিলিয়াৎস্কি। ২০২০ সালে বহুল বিতর্কিত নির্বাচনের প্রতিবাদে নামায় ২০২১ সালে তিনি গ্রেপ্তার হন। রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে অর্থায়নের দায়ে বেলারুশে অর্থ চোরাচালানে অভিযুক্ত করা হয় তাকে। সেসময় অন্য বিক্ষোভকারীদেরও পুলিশি বর্বরতার মুখোমুখি হতে হয় এবং বেলারুশিয়ান নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সমালোচকদেরও গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়।
বিলিয়াৎস্কির সমর্থকরা বলছেন, ‘লুকাশেঙ্কোর কর্তৃত্ববাদী শাসন তাকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে।’ বিষয়টিকে ‘ভয়ঙ্কর’ বলে মন্তব্য করেছেন বেলারুশের নির্বাসিত বিরোধীদলীয় নেতা স্বেতলানা তিখানভস্কায়া। তিনি বলেছেন, ‘এই লজ্জাজনক অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং তাদের মুক্ত করতে আমাদের অবশ্যই প্রয়োজনীয় সবকিছু করতে হবে।’
পুরস্কার দেয়ার সময় নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির প্রধান বেরিট রেইস অ্যান্ডারসন বলেছিলেন, ‘বেলারুশের সরকার বছরের পর বছর ধরে বিলিয়াৎস্কিকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করে আসছে। তাকে হয়রানি করা হয়েছে, গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়েছে এবং তাকে চাকরি থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে।’
এর আগে করফাঁকির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ২০১১ সালে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল বিলিয়াৎস্কিকে। যদিও অভিযোগের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছিলেন।
ইতালি উপকূলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী নৌকাডুবির ঘটনায় ১২ শিশুসহ অন্তত ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। খবর বিবিসির।
গত রোববার ইতালির ক্যালাব্রিয়া অঞ্চলের সমুদ্র উপকূলীয় শহর ক্রোতনে ভেড়ার সময় বৈরী আবহাওয়ার কারণে পাথরে ধাক্কা লেগে নৌকাটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়।
এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তারা বলছেন, নৌকাটিতে অন্তত দেড় শ মানুষ ছিলেন। তবে প্রকৃতপক্ষে মোট কত জন লোক ওই নৌকাটিতে ছিলেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এদিকে অভিবাসী পাচারের দায়ে বেঁচে থাকাদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইতালির কাস্টমস পুলিশ। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেছেন, ৩০ জনের মতো লোক এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
সংবাদ সংস্থা আনসা জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে মাত্র কয়েক মাস বয়সী এক শিশুও রয়েছে। মরদেহগুলো সমুদ্র সৈকত এবং উপকূলীয় একটি রিসোর্টের কাছে ভেসে আসে।
ইতালির কোস্টগার্ড জানিয়েছে, ৮০ জনকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ নৌকাডুবির পর নিজেই কোনোভাবে উপকূলে এসে পৌঁছাতে সক্ষম হন।
উদ্ধারকারীরা এএফপিকে বলেছেন, নৌকাটি দুই শ’র বেশি মানুষ বহন করছিল।
বেশ কিছু দিন আগে তুরস্ক থেকে ছেড়ে আসা ওই নৌকাটিতে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, সোমালিয়া ও ইরানের যাত্রী ছিলেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সমুদ্রপথে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টাকারী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য ইতালি অন্যতম প্রধান প্রবেশপথ। কেন্দ্রীয় ভূমধ্যসাগরীয় রুটটি বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক পথ হিসেবে পরিচিত।
ইতালির ক্যালাব্রিয়া অঞ্চলের পূর্ব উপকূলে একদল অভিবাসনপ্রত্যাশীকে বহনকারী জাহাজ ডুবে গেছে। এতে অন্তত ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এএনএসএসহ দেশটির একাধিক সংবাদ সংস্থার বরাতে রোববার এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
এএনএসএ জানায়, জাহাজ ডুবে যাওয়ার পর ক্রোটোন প্রদেশের সমুদ্রতীরের রিসোর্ট স্টেকাতো ডি কুট্রোর তীরে অন্তত ২৭টি মরদেহ ভেসে আসে। এ পর্যন্ত ৩৩ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ইতালির ন্যাশনাল ফায়ার ফাইটার্স বিভাগ জানায়, এ ঘটনায় ৪০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। জাহাজটি উপকূলে ভিড়েছে।
সংবাদ সংস্থা অ্যাডনক্রোনোস জানায়, জাহাজাটিতে অন্তত ১০০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন। ইরান, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের ওই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী জাহাজটি বৈরী সামুদ্রিক আবহাওয়ায় পাথরে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়।
ইতালির একাধিক সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
সমুদ্রপথে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টাকারী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য ইতালি অন্যতম প্রধান প্রবেশপথ। কেন্দ্রীয় ভূমধ্যসাগরীয় রুটটি বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক পথ হিসেবে পরিচিত।
চীনের ‘শান্তি প্রস্তাব’ নিয়ে আলোচনা করতে দেশটির প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করতে চান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর পূর্তির দিনে এক বক্তব্যে জেলেনস্কি এ কথা জানান। খবর বিবিসির।
জেলেনস্কি বলেন, ‘প্রস্তাবটি এ ইঙ্গিত দেয় যে, চীন শান্তি অনুসন্ধান করছে।’
সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, ‘চীন রাশিয়াকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করার কথা ভাবছে।’ তবে চীন এই দাবিকে পুরোপুরি অস্বীকার করেছে।
গত শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়, চীন সরকার মস্কোতে ড্রোন এবং আর্টিলারি শেল পাঠানোর কথা ভাবছে।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি সত্যিই বিশ্বাস করতে চাই যে, চীন রাশিয়ার কাছে অস্ত্র সরবরাহ করবে না।’
চীনের পরিকল্পনায় শান্তি আলোচনা এবং জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান জানানোর কথা বলা হয়েছে। তবে ১২ দফা প্রস্তাবটির কোথাও সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি যে, রাশিয়াকে ইউক্রেন থেকে তার সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে।
এদিকে চীনের শান্তি প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া। মস্কোতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিবিসি বলছে, চীনা কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের জন্য জেলেনস্কির আহ্বানে প্রকাশ্যে সাড়া দেয়নি।
চীনের শান্তি চুক্তির পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত শুক্রবার এবিসি নিউজকে বলেন, ‘পুতিন যেখানে সাধুবাদ জানিয়েছেন, তাহলে এটি কীভাবে ভালো হতে পারে?’
বাইডেন বলেন, ‘চীনের পরিকল্পনায় আমি এমন কিছুই দেখিনি যাতে মনে হয় যে, এমন কিছু আছে, যা রাশিয়া ছাড়া অন্য কারো জন্য উপকার বয়ে আনবে।’
গত বুধবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই। তারপরই চীনের পক্ষ থেকে ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধের জন্য ১২ দফা শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাব করা হয়।
গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া। এক বছর পূর্তিতে এসে এই যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদেও (ইউএনজিএ) নতুন একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে।
কী আছে ১২ দফা প্রস্তাবে
শান্তি প্রস্তাবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে চীন। দেশটি বলেছে, তারা চায় না রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাক। রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশটি মনে করে, আলোচনা ও মধ্যস্থতাই এই সংকট সমাধানের দৃশ্যত একমাত্র উপায়।
আল-জাজিরা জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধের বর্ষপূর্তির দিনে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১২ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাব দেয়। এতে যুদ্ধবিরতি ও শান্তি আলোচনার আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার অবসান, পারমাণবিক স্থাপনার নিরাপত্তা, বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে মানবিক করিডোর গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এ ছাড়া এতে শস্য রপ্তানি নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সংঘাত ও যুদ্ধে কারও লাভ নেই। উত্তেজনার আগুনে ঘি না ঢেলে সব পক্ষেরই যুক্তিসঙ্গত ও সংযত আচরণ করা উচিত। এই সংকট যেন আরও মারাত্মক অবস্থায় না যায় কিংবা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায় সেদিকে সবার নজর দেয়া উচিত।
যুক্তরাষ্ট্র চীনের এই পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালাইভান সিএনএন নেটওয়ার্কে বলেন, ‘রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর হামলা বন্ধ করে সেনা প্রত্যাহার করলে আগামীকালই যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে। অর্থাৎ ১২ দফা পরিকল্পনার বদলে চীন শুধু একটি বিষয় উল্লেখ করলেই পারত।’
সালাইভানের মতে, সব দেশের সার্বভৌমত্ব মেনে নেয়ার কথা বলাই যথেষ্ট। তিনি মনে করিয়ে দেন যে, ইউক্রেন, ন্যাটো বা যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর হামলা চালাচ্ছে না।
এদিকে চীন এখন পর্যন্ত তার মিত্র রাশিয়াকে ইউক্রেনে আক্রমণের জন্য নিন্দা জানায়নি, কিংবা প্রতিবেশী দেশে মস্কোর আক্রমণকে ‘আগ্রাসন’ অ্যাখ্যাও দেয়নি। তারা এমনকি রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞারও কড়া সমালোচনা করে আসছে। চীনের এমন অবস্থানকে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘চীনের খুব বেশি বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। কারণ তারা রাশিয়ার অবৈধ আগ্রাসনকে নিন্দা পর্যন্ত জানায়নি।’
গত বছরের গ্রীষ্মে ইতালিতে প্রচণ্ড গরমে জরুরি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। দেশজুড়ে ব্যাপক খরার পর দেশটি এ বছরও আবার খরার মুখোমুখি হতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে শুষ্ক শীতকালীন আবহাওয়া ও আল্পস পর্বতে তুষারপাত স্বাভাবিকের তুলনায় অর্ধেকেরও কম হওয়ায় এবার তীব্র খরায় পড়তে যাচ্ছে দেশটি। মঙ্গলবার রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন বৈজ্ঞানিক ও পরিবেশবাদী গোষ্ঠীগুলো।
ইতালির বিখ্যাত শহর ভেনিসে বন্যা প্রাথমিক উদ্বেগের বিষয় হলেও এখানে জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক নিচে নেমে গেছে, ফলে শহরটির বিখ্যাত কিছু খাল দিয়ে গন্ডোলা, ওয়াটার ট্যাক্সি ও অ্যাম্বুলেন্সের চলাচল অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভেনিসের সমস্যাগুলোর জন্য বেশ কয়েকটি বিষয়কে দোষারোপ করা হচ্ছে; এগুলো হলো বৃষ্টির অভাব, বায়ুমণ্ডলীয় উচ্চচাপ, পূর্ণিমা ও সমুদ্র স্রোত। গত সোমবার পরিবেশবাদী গোষ্ঠী লেগামবিয়ান্তে জানিয়েছে, ইতালির নদী ও হ্রদগুলো পানির অভাবে ভুগছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলে এমন সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।
আল্পস পর্বত থেকে নেমে আড্রিয়াটিক সাগরে যাওয়া ইতালির দীর্ঘতম নদী পো-তে বছরের এই সময়ে সাধারণত যে পরিমাণ পানি থাকে এখন তার চেয়ে ৬১ শতাংশ কম আছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা।
গেল জুলাইয়ে ইতালি পো নদীর অববাহিকা অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল। এই অববাহিকা অঞ্চলে ইতালির কৃষিপণ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ উৎপাদিত হয়। ওই সময় ইতালি ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক খরার মুখোমুখি হয়েছিল।
চলতি বছর উত্তর ইতালির গারদা হ্রদের পানির স্তর রেকর্ড নিচে নেমে গেছে। এতে হ্রদটির মধ্যবর্তী ছোট দ্বীপ সান বিয়াজোতে হেটেই পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে। গত ১৫ দিন ধরে পশ্চিম ইউরোপের আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করছে বায়ুমণ্ডলীয় একটি উচ্চচাপ। এর কারণে মৃদু তাপমাত্রা দেখা যাচ্ছে, যা সাধারণত বসন্তের শেষ দিকে দেখা যায়। তবে সর্বশেষ আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আগামী দিনগুলোতে আল্পসে তুষারপাত ও সংলগ্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পের এক সপ্তাহের বেশি সময় (২০০ ঘণ্টা) পরও ধ্বংসস্তূপ থেকে মানুষদের জীবিত উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার তুরস্কের বিধ্বস্ত ভবনের নিচ থেকে অন্তত ৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
জীবিত উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে ১৭ ও ২১ বছর বয়সী দুই ভাইও রয়েছে। তাদের কাহরামানমারাস প্রদেশের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক থেকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়া আন্তাকিয়া থেকে সিরিয়ান এক নারী ও এক পুরুষকেও উদ্ধার করা হয়েছে। একজন উদ্ধারকারী বলেছেন, এরকম আরও কিছু মানুষ বেঁচে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষ বলছে, উদ্ধার পর্ব শেষ করার সময় ঘনিয়ে আসছে। এখন বেঁচে থাকাদের খাদ্য, আশ্রয় (বাসস্থান) এবং শিশুদের শিক্ষা ব্যবস্থার সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে।
ইউরোপে নিযুক্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক হ্যান্স হেনরি পি. ক্লুজ বলেছেন, অনেক কিছুরই সংকট দেখা দিচ্ছে। সময় যতো গড়াচ্ছে বেঁচে থাকাদের জন্য সংকট ততো বাড়ছে।
ক্লুজ আরও বলেছেন, ভূমিকম্প কবলিত দেশ দুটিতে (তুরস্ক ও সিরিয়া) অন্তত দুই কোটি ৬০ লাখ মানুষের এখন মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। তীব্র শীতের কারণে দেশ দুটিতে রোগ ব্যধির প্রকোপ বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, ভূমিকম্পে আহত যাদের হাসপাতালে আনা হয়েছিল, তাদের অনেকেই শারীরিকভাবে সুস্থ হলেও, মানসিক ট্রমার মধ্যে আছেন। মানসিক ধকলই এখন উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য বলছে, তুরস্ক ও সিরিয়ায় গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তুরস্কে এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার ৪১৮ এবং সিরিয়ায় পাঁচ হাজার ৮০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, দেশ দুটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪ হাজার ১৭৯ জনে। খবর সিএনএনের।
তুরস্কের জরুরি সমন্বয় কেন্দ্র (এসএকেওএম) জানিয়েছে, রোববার পর্যন্ত দেশটিতে অন্তত ২৯ হাজার ৬০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে সিরিয়ার পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমকে এ পর্যন্ত চার হাজার ৫৭৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, তুরস্ক ও সিরিয়ার ধ্বংসস্তূপে উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
জাতিসংঘ বলছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ায় গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে অন্তত ৫৩ লাখ মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। তুরস্ক ও সিরিয়ার প্রায় ৯ লাখ মানুষের জরুরি গরম খাবারের সহায়তা প্রয়োজন।
গৃহযুদ্ধের কারণে সিরিয়া আগে থেকেই সংকটে ছিল, এর মধ্যে নতুন সংকট ডেকে এনেছে গত সপ্তাহের ভূমিকম্প। ভয়াবহ এ দুর্যোগটির পর তুরস্কে বিভিন্ন দেশ থেকে সহায়তা পাঠানো হলেও নিষেধাজ্ঞার কারণে সিরিয়ায় সহায়তা পাঠাতে জটিলতা সৃষ্টি হয়।
ভূমিকম্পে তুরস্কে অন্তত ছয় হাজার বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এতে ভবনগুলোর নির্মাণকাজ নিয়ম মেনে করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ধসে যাওয়া ভবনগুলোর ঠিকাদারদের শাস্তির আওতায় আনারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তুরস্কে ভূমিকম্প-কবলিত এলাকাগুলোর ভবন নির্মাণে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করা এবং তাদের শাস্তির আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির বিচার মন্ত্রণালয়।
ক্ষতিগ্রস্ত প্রদেশগুলোর কর্মকর্তাদের ‘ভূমিকম্প অপরাধ তদন্ত ইউনিট’ নামে আলাদা কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নীতিমালা না মেনে ভবনগুলো নির্মাণের কারণেই এত ধসের ঘটনা ঘটেছে। গত সপ্তাহের ভূমিকম্পে ধসে যাওয়া ভবনগুলোর মধ্যে নতুন নির্মিত অনেক বাড়িও রয়েছে। বাড়িগুলো নির্মাণের সময় অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
এ ঘটনায় গত শনিবার তুরস্কের ১০ প্রদেশ থেকে শতাধিক ঠিকাদারকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এছাড়া আরও অনেক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
তুরস্কে এর আগে ১৯৯৯ সালেও ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। এরপর দেশটিতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। গত সপ্তাহের ভূমিম্পের পর থেকে অভিযোগ উঠেছে, দেশটিতে অনেক ভবন নির্মাণেই ওই নীতিমালা মানা হয়নি। দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে অনেকেই নীতিমালা না মেনে ভবন নির্মাণ করেছেন।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ২৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। রোববার পর্যন্ত তুরস্কে ২৪ হাজার ৬১৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং সিরিয়ায় প্রাণহানি হয়েছে সাড়ে চার হাজারের বেশি। খবর আল-জাজিরার।
জাতিসংঘ বলছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ায় গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে অন্তত ৫৩ লাখ মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। তুরস্ক ও সিরিয়ার প্রায় ৯ লাখ মানুষের জরুরি গরম খাবারের সহায়তা প্রয়োজন।
গৃহযুদ্ধের কারণে সিরিয়া আগে থেকেই সংকটে ছিল, এর মধ্যে নতুন সংকট ডেকে এনেছে গত সপ্তাহের ভূমিকম্প। ভয়াবহ এ দুর্যোগটির পর তুরস্কে বিভিন্ন দেশ থেকে সহায়তা পাঠানো হলেও নিষেধাজ্ঞার কারণে সিরিয়ায় সহায়তা পাঠাতে জটিলতা সৃষ্টি হয়।
আল-জাজিরা বলছে, সিরিয়ার সরকার দুর্যোগ-কবলিত এলাকায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর অনুমোদন দিয়েছে। এ ছাড়া তুরস্কের সরকারও সিরিয়ায় প্রবেশের জন্য নতুন দুটি রুট খুলে দিতে কাজ শুরু করেছে।
এদিকে তুরস্কের সরকার দেশটিতে উদ্ধার কাজ চালানোর পাশাপাশি ভূমিকম্প অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কার্যক্রম শুরু করেছে বলে জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি। গত শনিবার তুরস্কের ১০টি প্রদেশ থেকে শতাধিক ঠিকাদারকে আটক করা হয়েছে।
তুরস্কে ভূমিকম্পে হাজারও ভবন ধসের ঘটনায় ওই ভবনগুলো নির্মাণে জড়িত ঠিকাদারদের ধরতে শুরু করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে ১০টি প্রদেশের শতাধিক ঠিকাদারকে আটক করা হয়েছে। গত শনিবার তাদের আটক করা হয়। তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।
গত ৬ জানুয়ারির ওই ভূমিকম্পে অন্তত ছয় হাজার ভবন ধসে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে পুরো এলাকা। ভবনগুলোর নির্মাণকাজ নিয়ম মেনে করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমিকম্প-কবলিত এলাকাগুলোর ভবন নির্মাণে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করা এবং তাদের শাস্তির আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে তুরস্কের বিচার মন্ত্রণালয়।
ক্ষতিগ্রস্ত প্রদেশগুলোর কর্মকর্তাদের ‘ভূমিকম্প অপরাধ তদন্ত ইউনিট’ নামে আলাদা কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
তুরস্কে এর আগে ১৯৯৯ সালেও ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। এরপর দেশটিতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। গত সপ্তাহের ভূমিম্পের পর থেকে অভিযোগ উঠেছে, দেশটিতে অনেক ভবন নির্মাণেই ওই নীতিমালা মানা হয়নি। দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে অনেকেই নীতিমালা না মেনে ভবন নির্মাণ করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নীতিমালা না মেনে ভবনগুলো নির্মাণের কারণেই এত ধসের ঘটনা ঘটেছে। গত সপ্তাহের ভূমিকম্পে ধসে যাওয়া ভবনগুলোর মধ্যে নতুন নির্মিত অনেক বাড়িও রয়েছে। বাড়িগুলো নির্মাণের সময় অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
তুরস্কের সারায়কিন্ত শহরের ১৪ তলাবিশিষ্ট বিলাসবহুল একটি ভবনের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, এটি নির্মাণে প্রয়োজনের চেয়ে কম জনবল ব্যবহার করা হয়েছিল। ৯০ অ্যাপার্টমেন্টের ওই ভবনটিও ভূমিকম্পে ধসে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ভূমিকম্প অপরাধীদের’ শাস্তির আওতায় আনার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ঠিকাদারদের আটক করা হচ্ছে।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মোট মৃতের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে তুরস্কেই মৃতের সংখ্যা ২৪ হাজারের বেশি।