শনিবার, ১ জুন ২০২৪

ব্যবসায়ী নাসিরকে মারধর: পরীমনিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি

ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ২২:২০

বেকায়দায় পড়েছেন দেশীয় চলচ্চিত্রের বহুল চর্চিত অভিনেত্রী পরীমনি। ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে হত্যাচেষ্টা, মারধর, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে করা মামলায় নায়িকা পরীমনি ও জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন আদালত। ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম সাইফুল ইসলামের আদালত বৃহস্পতিবার সকালে এই আবেদন করেন বাদীক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম মোহাম্মদ সোহেল।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন সম্প্রতি ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমের বিরুদ্ধে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। তবে আরেক আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

২০২২ সালের ৬ জুলাই আদালতে মামলাটি করেন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন। মামলার এজাহারে বলা হয়, পরীমনি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহলসেবী। সুযোগ বুঝে তারা বিভিন্ন নামিদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরীমনি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে দ্বিতীয় তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন।

পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। বাদী ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত সোয়া ১টার দিকে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদী নাসির উদ্দিনকে ডাক দেন এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসার অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে পরীমনি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসির উদ্দিনকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনা মূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য বাদীকে চাপ দেন। বাদী এতে রাজি না হওয়ায় পরীমনি বাদীকে গালমন্দ করেন।

বাদী ও আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরীমনি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির উদ্দিন মাথা ও বুকে আঘাত পান। এ সময় পরীমনি ও তার সহযোগীরা নাসির উদ্দিনকে মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন ও ভাঙচুর করেছেন বলে এজাহারে বলা হয়।

বাদী মামলায় বলেন, পরীমনি ও তার সহযোগীরা তাকে (নাসির উদ্দিনকে) মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন ও বোট ক্লাবে ভাঙচুর করেছেন। এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরীমনি সাভার থানায় বাদী নাসির উদ্দিনসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে মামলা করেন।

এদিকে, ২০২১ সালের ৮ জুন সাভারের বিরুলিয়ায় ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে পরীমনি ব্যবসায়ী নাসিরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেছিলেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। মামলায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ তিন আসামির বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১৮ মে অভিযোগ গঠন করেন। পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত বলেন, মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। অন্যদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বিচার চলছে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এ। এ মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।


এমপি আনার হত্যা: ফের ৫ দিনের রিমান্ডে ৩ আসামি

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলায় গ্রেপ্তার তিন আসামির আবারও পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ শুক্রবার শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শান্ত ইসলাম মল্লিকের আদালত এই রিমান্ডের আদেশ দেন।

রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া ৩ আসামি হলেন— শিমুল ভুঁইয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভুঁইয়া ওরফে আমান উল্লাহ সাঈদ (৫৬), তানভীর ভুঁইয়া (৩০) ও শিলাস্তি রহমান (২২)।

প্রথম দফায় আট দিনের রিমান্ড শেষে এদিন দুপুরে তিন আসামিকে আদালতে হাজির করে আবারও ৮ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন ডিবি পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান।

শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত ২৪ মে এই তিন আসামির ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ১২ মে সন্ধ্যায় আনোয়ারুল আজীমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস শেরেবাংলা নগর থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন।

বিষয়:

এমপি আনার হত্যার তদন্তে মাঠে নামল ১৩ গোয়েন্দা

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

এমপি আনার হত্যার তদন্ত করতে গঠন করা হয়েছে একটি বিশেষ দল। পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি এই তদন্তকে ‘হাইপ্রোফাইল’ হিসেবে গুরুত্ব দিয়ে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (এসআইটি) বা ‘সিট’ গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে।

ভারতের গুরুত্বপূর্ণ সব মামলার তদন্ত করতেই সাধারণত স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা এসআইটি গঠন করা হয়। এটিকে ‘সিট’ বলেও দাবি করা হয়।

এমপি আনার হত্যা মামলা গ্রহণের ৯ দিনের মাথায় মামলার তদন্তকারী সংস্থা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট বা সিআইডির মধ্যে নতুন এই দল গঠন করে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে একজন আইজিকে। সঙ্গে রয়েছেন আরও ১২ জন অভিজ্ঞ গোয়েন্দা।

আপাতত ১৩ জনের এই গোয়েন্দা দলই আনার হত্যা মামলার তদন্ত করবে বলে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি সূত্র থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

নতুন তদন্ত দলটি এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে। এদিকে আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত, নেপালে পালিয়ে থাকা সিয়ামের গতিবিধিও নজরবন্দি করা হয়েছে। সেখানে সিআইডি ছাড়াও কাজ করছে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ বা স্পেশাল টাস্কফোর্স। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, সেখানে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাও একইভাবে কাজ করছে।

তবে নেপালে গ্রেপ্তার হলে সিয়ামকে কীভাবে আনা হবে, সেই বিষয়ে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল-তিন দেশের কূটনীতিকদের মধ্যে এরই মধ্যে আলোচনা শেষ হয়েছে।

জানা গেছে, এমপি আনার হত্যার অন্যতম অভিযুক্ত সিয়াম মরদেহ গুম করে নেপালে আত্মগোপন করেছে। আর সিয়ামের বিষয়ে কলকাতায় গ্রেপ্তার হওয়া কসাই জিহাদও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে, ভিসা না পাওয়ায় এমপি আনারের মেয়ে ডরিন ও এমপির ব্যক্তিগত সহকারী এখনও কলকাতায় যেতে পারেননি। শনি ও রোববার দু-দিন বন্ধ থাকায় সোমবারের আগে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই।

এ ছাড়া গত ২৮ মে উদ্ধার হওয়া মাংসপিণ্ডের ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে এসে পৌঁছেছে বলে মনে করছে গোয়েন্দা সূত্রগুলো।

বিষয়:

‘বালিশের নিচে অস্ত্র রাখা’ সেই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে নানা অনিয়ম ও অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রুহুল হক। আজ বৃহস্পতিবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১-এ মামলাটি দায়ের করা হয়।

প্রায় দুই বছর আগে কামরুন নাহারের একটি অডিও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। অডিওর সেই বক্তব্যে একজনকে ধমক দিয়ে বলছিলেন যে, তিনি বালিশের নিচে পিস্তল রেখে ঘুমান।

দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়, রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ কামরুন নাহার প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৬ সালের ২০ এপ্রিল জারি করা প্রজ্ঞাপনের আদেশ ভঙ্গ করে অবৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৭২ জন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দেন। মন্ত্রণালয়ের এ আদেশ ভঙ্গ করে তিনি অসদাচরণ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

দুদকের অনুসন্ধানে রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় পাওয়া যায়, মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, কোনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যাডহক কমিটি কোনো শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ করতে পারবে না। তারপরও কামরুন নাহার ২০২২ সালের ১১ জানুয়ারি স্কুলের অভ্যন্তরীণ নোটিশ বোর্ডে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করেন এবং একক স্বাক্ষরে ৭২ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, এ প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত বেশ কয়েকজন শিক্ষক অবসর গ্রহণ করার কারণে নতুন করে এনটিআরসির মাধ্যমে শূন্যপদে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অস্থায়ীভাবে। স্কুল ফান্ড থেকে এদের যাবতীয় বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে। এই অস্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্তদের অব্যাহতি প্রদান বা পরবর্তীকালে এনটিআরসির মাধ্যমে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি কামরুন নাহার। যাদের নিয়োগ করা হয়েছে, তাদের কোনো ধরনের লিখিত কিংবা মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। শুধু অল্প কয়েকজনের ডেমোনেস্ট্রেশন ক্লাস নেওয়া হয়েছিল। স্কুলের শিক্ষকদের নিয়ে নামমাত্র একটি নিয়োগ কমিটি করা হয়। এই কমিটির মাধ্যমে শুধু প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ যাচাই করে অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এসব নিয়োগ দিয়েছেন।

এতে পরবর্তী সময়ে এসব শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন প্রদান নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। তিনি শিক্ষক নিয়োগে মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা উপেক্ষা করেছেন। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ একটি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও তিনি এনটিআরসির মাধ্যমে শূন্য পদে স্থায়ী নিয়োগ না দিয়ে, কোনো জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে, কোনো লিখিত পরীক্ষা না নিয়ে অভ্যন্তরীণ শিক্ষকদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে শুধু শিক্ষাগত সনদ যাচাই করা হয়। এতে প্রতিষ্ঠানাটিতে শিক্ষার মানের ক্ষতি হয়েছে।

মামলার তদন্তকালে এ ঘটনার সঙ্গে অন্য কারও জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

বিষয়:

আনার হত্যার তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছে: হারুন

 ‘যেসব তথ্য সংগ্রহ করতে কলকাতা গিয়েছি, তা পেয়েছি’
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শেষে আজ বিকেলে কলকাতা থেকে দেশে ফিরে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, এমপি আনার হত্যার তদন্তে যেসব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে কলকাতা গিয়েছিলেন, তা শতভাগ পেয়েছেন।

এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হওয়া মাংসের টুকরাগুলো সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের বলে মনে করছেন এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা। বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতা থেকে ফিরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

হারুন অর রশীদ বলেন, আলামত উদ্ধার ও বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করায় আনার হত্যার তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্ট পেলেই তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

ডিবিপ্রধান বলেন, আনার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। আরেকজন অভিযুক্ত নেপালে। ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনা হবে। আমরা কাঠমান্ডুর সঙ্গে যোগাযোগ করছি।

তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হওয়া মাংসের টুকরাগুলো সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের বলে মনে করছি।

হারুন অর রশীদ বলেন, আনোয়ারুল আজিম আনারকে গত ১৩ মে কলকাতার মাটিতে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশে একটি মামলা রুজু হয়েছে, পাশাপাশি একই ঘটনায় কলকাতায়ও একটি হত্যা মামলা রুজু হয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের কাছে তিনজন গ্রেপ্তার রয়েছেন। এর মধ্যে মূল অভিযুক্ত আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া। হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছে বাংলাদেশের মাটিতে আর হত্যাটি সংঘটিত হয়েছে কলকাতায়। মামলাটি তদন্তের জন্য আমরা কলকাতায় গিয়েছিলাম। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা এবং ঘটনাস্থলের এভিডেন্সগুলো দেখতে সেখানে গিয়েছিলাম।

তিনি বলেন, মামলায় ভিকটিমের মরদেহ বা মরদেহের অংশবিশেষ না পাওয়া গেলে তদন্তকারী কর্মকর্তার (আইও) সুরতহাল, ভিসেরা ও মেডিকেল রিপোর্ট দিতে বেগ পেতে হয়। এগুলো না পাওয়া গেলে মামলাটি নিষ্পত্তি করাও অনেক কঠিন হয়ে যায়। আমরা সেখানে গিয়ে আমাদের হাতে গ্রেপ্তার আসামিদের দেওয়া তথ্য ক্রসচেক করেছি। এ ছাড়া কলকাতায় গ্রেপ্তার আসামির তথ্য যাচাই-বাছাই করেছি। মামলার অন্যতম আসামি কসাই জিহাদকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতা সিআইডিসহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত মেলানোর চেষ্টা করেছি।

হারুন বলেন, আমরা কলকাতা পুলিশকে অনুরোধ করেছিলাম সুয়ারেজ লাইন ও সেপটিক ট্যাঙ্ক দেখার জন্য। সেটা করা হয় এবং আমরা মনে করি সেখান থেকে ভিকটিমের মরদেহের কিছু টুকরা উদ্ধার করা হয়েছে। ভারতীয় পুলিশ ফরেনসিক ও ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) পরীক্ষা করে এ বিষয়ে জানাবে। আমরা প্রাথমিকভাবে মনে করি, স্বাভাবিক ফ্লাশের মাধ্যমে মাংসগুলো সেখানে যায়নি। তাই আমরা মনে করছি, মরদেহের খণ্ডাংশগুলো এমপি আনারের হতে পারে।

এদিকে কলকাতা ছাড়ার আগে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেন, যে উদ্দেশে এসেছিলাম আমরা কিন্তু একশ ভাগ সফলতা নিয়েই বাংলাদেশে ফিরছি।

এ সময় তিনি বলেন, আমরা সিআইডি পুলিশকে রিকোয়েস্ট করেছি, আসামিদের ব্যবহৃত কমোড, সেপটিক ট্যাঙ্ক চেক করতে। তা করা হয় এবং সেখান থেকেই মরদেহের অংশবিশেষ উদ্ধার হয়েছে।

এদিকে ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন ও পলাতক আসামি সিয়ামের খোঁজে পশ্চিমবঙ্গ অপরাধ তদন্ত বিভিাগ (সিআইডি) ‘লুকআউট’ নোটিশ জারি করেছে।

পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি ধারণা করছে, শাহীন ও সিয়াম নেপালে পালিয়ে গিয়ে থাকতে পারেন। যে কারণে তাদের খোঁজে লুকআউট নোটিশ জারি করা হয়েছে। কলকাতা সিআইডির একটি টিম পলাতক দুজনের খোঁজে নেপালে যেতে পারে।

এদিকে, গত মঙ্গলবার সিআইডির ফরেনসিক টিম নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেন্সের ফ্ল্যাটের সেপটি ট্যাঙ্ক থেকে তিন থেকে চার কেজির মতো মাংসপিণ্ড-সদৃশ বস্তু, চুল ও হারের টুকরা উদ্ধার করেছে। সেগুলো নিহত এমপি আনারের দেহাংশ কি না, জানতে ফরেনসিক পরীক্ষা করবে সিআইডি। ফরেনসিক পরীক্ষায় এমপি আনারের দেহাংশ বলে প্রমাণিত হলে তার পরিবারের কোনো এক সদস্যের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হবে।

উদ্ধার হওয়া মাংসপিণ্ড-সদৃশ বস্তুগুলো এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের কি না, তার ডিএনএ টেস্টের জন্য কলকাতা যাবেন এমপির ছোট মেয়ে ও ঢাকায় হওয়া মামলার বাদী মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। গত বুধবার তিনি সাংবাদিকদেরে বলেন, উদ্ধারকৃত বস্তুগুলো ডিএনএ টেস্টে প্রমাণ হতে হবে। প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত আমার পরিবার মেনে নেবে না।

পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, মাংসপিণ্ড-সদৃশ বস্তু উদ্ধার হলেও মাথা বা অন্যান্য অংশ উদ্ধার হয়নি। সেগুলোও উদ্ধার করতে শাহীন ও সিয়ামকে আটক করতে হবে।

ডিবিপ্রধানের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল ২৬ মে কলকাতায় যায়। কলকাতা থেকে তারা যান নিউটাউন থানায়। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে তারা কৃষ্ণমাটি বাগজোলা খাল পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেন্স, সিআইডি ভবন, হাতিশাল খালসহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, সিআইডি এডিজি আর রাজাশেখরণের সঙ্গেও কথা বলেন হারুন অর রশীদ।


র‌্যাব কর্মকর্তা উত্তম কুমারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ র‌্যাব-২-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রমোট) উত্তম কুমার বিশ্বাসকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে মামলার প্রাথমিক অনুসন্ধানকালে দুদকের পক্ষে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক রুহুল হক। শুনানি শেষে বিচারক আবেদনটি মঞ্জুর করেন।

আবেদনে বলা হয়, উত্তম কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়, যা বর্তমানে চলমান। এরই মধ্যে তার ও স্ত্রীর নামে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।

অনুসন্ধানকালে বিভিন্ন ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া বেশ কিছু রেকর্ডপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তিনি দুদকের নোটিশ পাওয়ার পরপরই অসংখ্য হিসাব থেকে সব টাকা উত্তোলন করে হিসাব বন্ধ করেন, যা সন্দেহজনক বলে প্রতীয়মান হয়।

এ ছাড়াও তিনি অনুসন্ধানের শুরু থেকে তেমন কোনো সহযোগিতা করেননি, বরং বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত করার অপচেষ্টা এবং অহেতুক সময়ক্ষেপণ করছেন বলেও বিশ্লেষণে উঠে আসে।

অনুসন্ধানকালে গোপন সূত্রে জানা যায়, উত্তম কুমার সব হিসাব বন্ধ করে দেশত্যাগের পরিকল্পনা করছেন। তিনি বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এ জন্য তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা একান্ত প্রয়োজন বলে আবেদনে উল্লেখ করেন দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা।


করোনার ভুয়া রিপোর্ট: সাহেদসহ ৫ জনের বিচার শুরু

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাস পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে দুই লাখ ৬৬ হাজার অর্থ আত্মসাতের মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদসহ পাঁচজনের বিচার শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহনা আলমগীর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন দীপায়ন বসু (৩২), অনিন্দ্য দত্ত (৩১), মাসুদ পারভেজ (৪০) ও মো. মিজানুর রহমান (৩৯)। এদের মধ্যে দীপায়ন ও অনিন্দ্য মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বাকিরা অভিযোগ গঠনের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, মেট্রোরেল প্রকল্পে কর্মরত ৭৬ শ্রমিকের করোনা পরীক্ষা করে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার মাধ্যমে দুই লাখ ৬৬ হাজার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি করা হয়। ২০২০ সালের ২০ জুলাই রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় এ মামলা করেন একশিড করপোরেশন লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম।

মামলাটি তদন্ত শেষে রাজধানীর উত্তরা-পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইয়াদুর রহমান ২০২১ সালের ৩০ মে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।


আনার হত্যা: শাহীনকে দেশে ফেরাতে ভারতের সাহায্য চেয়েছে বাংলাদেশ

কলকাতা থেকে বৃহস্পতিবার দেশে ফেরার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএমপি ডিবিপ্রধান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ আক্তারুজ্জামান শাহীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনতে ভারতের সাহায্য চেয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এই তথ্য জানিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার দেশে ফেরার আগে কলকাতায় সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন হারুন।

তিনি জানান, এমপি হত্যার অন্যতম আসামি ফাইজুল ওরফে সিয়াম নেপালে আত্মগোপন করেছে। তাকে শিগগিরই গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়া এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আছে। তাকে ধরতে ভারত সরকারের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।

নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে শুধু ইতিবাচক অগ্রগতিই হয়নি, খুব শিগগিরই এমপি আনারের দেহের অংশের সন্ধানও মিলবে বলে সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেন হারুন আর রশীদ।

এদিকে খুব শিগগিরই ফরেনসিক প্রতিবেদন পাওয়া যাবে বলে সিআইডি সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। এই প্রতিবেদন হাতে পেলে গোয়েন্দারা তদন্তের দ্বিতীয় ধাপ ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মাংসের নমুনা পাঠাবেন। আর এর জন্য যেকোনও সময় কলকাতা পৌঁছাচ্ছেন এমপি কন্যা।

তবে এমপি আনারের দেহ কিংবা খুনের কোনও আলামত গোয়েন্দারা পাননি। ঢাকার গোয়েন্দা প্রতিনিধি দলের সদস্যরা কলকাতায় যাবার পরই তদন্তে গতি আসে। তাদের নির্দেশনার ভিত্তিতেই ভাঙা হয় সঞ্জিভা গার্ডেন্সের যে ফ্ল্যাটে আনার খুন হয়েছেন সেই ফ্ল্যাটের প্যান এবং সেপটিক ট্যাংক। ২৮ মে সন্ধ্যায় সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হয় প্রায় সাড়ে চার কেজি মাংসপিণ্ড, মানুষের চুল এবং হাড়ের গুঁড়ো।

গোয়েন্দারা ধারণা করছেন উদ্ধার হওয়া ওই মাংস, চুল এবং হাড় খুন হওয়া এমপি আনোয়ারের হতে পারে। তবে সেটা চূড়ান্তভাবে বলা যাবে ফরেনসিক এবং ডিএনএ পরীক্ষার পর।

গত রোববার ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় রেমালের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেই আনার হত্যা মামলার তদন্ত করতে ঢাকার গোয়েন্দা প্রধানের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল কলকাতায় যান। মামলাটির তদন্তকারী সিআইডি নিউটাউন থানার পুলিশ এবং ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে গত চারদিন কাজ করেছে ঢাকার গোয়েন্দারা।

গেল ১২ মে পশ্চিমবঙ্গে যান ঝিনাইদহ-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। ১৩ তারিখ থেকে রহস্যজনক নিখোঁজ হলে ১৮ মে বরানগর থানায় তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ২২ তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে সিআইডি প্রধান সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন যে, এমপি আনার খুন হয়েছেন।

বিষয়:

র‌্যাবের নতুন মহাপরিচালক হারুন

ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

র‌্যাবের নতুন মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তরে অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ। আজ বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এ নিয়োগের খবর জানানো হয়েছে।

এম খুরশীদ হোসেনের স্থলাভিষিক্ত হবেন হারুন অর রশিদ। পৃথক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, বর্তমান মহাপরিচালক খুরশীদ হোসেন অবসর-উত্তর ছুটিতে যাবেন। যা আগামী ৫ জুন থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ২০২৫ সালের ৪ জুন।

এদিকে নতুন মহাপরিচালক নিয়োগের আদেশটি কার্যকর হবে ৫ জুন থেকে। ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের মোল্লাকান্দি গ্রামে। বর্তমানে তিনি পুলিশ সদর দপ্তরে অতিরিক্ত আইজিপি (হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট) পদে কর্মরত। এর আগে ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি ছিলেন তিনি।

হারুন অর রশিদ ১৯৯৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে এমএসসি করেন। ২০০৯ সালে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে এলএলবি এবং ২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ছোটবেলা থেকে অসম্ভব মেধাবী হারুন অর রশিদের বাবা আহম্মেদ আলী ছিলেন ব্যবসায়ী। সাত ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ষষ্ঠ। হারুন অর রশিদ ১৯৯৫ সালে ১৫তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি পুলিশের বিভিন্ন পদে চাকরি করেছেন।

বিষয়:

জেনারেল আজিজের দুর্নীতির বিষয়ে যা বললেন দুদক চেয়ারম্যান

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ বিবেচনায় নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।

আজ বুধবার আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে করা আবেদন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। একইসঙ্গে অভিযোগ আমলযোগ্য হলে সেটা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দিন রিগ্যান। আবেদন জমা দিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা আইন অনুযায়ী অনুসন্ধানের উদ্যোগ নিতেই দুদকে আবেদন করেছেন তিনি। আর দুদক ব্যবস্থা না নিলে হাইকোর্টে রিট দায়ের করবেন বলেও জানান অ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দিন রিগ্যান।’

গত ২০ মে দুর্নীতির অভিযোগ এনে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের সাবেক সেনাবাহিনী প্রধানকে ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১(সি) ধারার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র তাকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর ফলে আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র বলছে, নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে আজিজ আহমেদ সামরিক বাহিনীর ঠিকাদারি তার ভাইকে পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এবং অপরাধ করা সত্ত্বেও নিজের ভাইদের বাঁচাতে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন।

বিষয়:

‘এমপি আনার হত্যার ‘মূল কারণ’ এখনো অজানা’

ডিএমপির সদর দপ্তরে বুধবার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৯ মে, ২০২৪ ১৬:০৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের ‘মূল কারণ’ এখনও উদ্ধার করা যায়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।

আজ বুধবার ডিএমপির সদর দপ্তরে আয়োজিত ‘ডাটাবেজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস অব রোড ক্র্যাশ (ডিএআরসি) সফটওয়্যার’ প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সংসদ সদস্যকে কী কারণে হত্যা করা হয়েছে অর্থাৎ হত্যার মোটিভ কী— এটি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশ কিংবা ইন্ডিয়ান পুলিশ কেউই উদ্ধার করতে পারেনি। এ হত্যাকাণ্ডে যিনি ষড়যন্ত্রকারী, পরিকল্পনাকারী, তিনি এখন দেশের বাইরে রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। বিধায় এটি এখনও উদ্ধার করা যায়নি। তাকে গ্রেপ্তার করলেই কেবল এই হত্যার মোটিভ জানা যাবে।’

যেহেতু মূল অভিযুক্ত আমেরিকায় পলাতক এবং দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দিবিনিময় চুক্তিও নেই। এই ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ফেরাতে কী পদ্ধতি অবলম্বন করা হবে— এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে পুলিশের পক্ষ থেকে যে ধরনের প্রচেষ্টা করা দরকার, সেটির সর্বোত্তম চেষ্টা করা হবে। যেহেতু তিনি (আজীম) আমাদের সংসদ সদস্য ছিলেন। সুতরাং তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। যদিও তাদের সঙ্গে (আমেরিকা) আমাদের সেই ধরনের কনট্রাক্ট নেই। এ বিষয়ে অন্য যেকোনও মাধ্যম বা কূটনৈতিক চ্যানেলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।‘

এক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে বন্দিবিনিময় চুক্তিকে কাজে লাগানো হবে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, এই ঘটনাটি বাংলাদেশের আইনে বিচার হতে পারে এবং ইন্ডিয়াতেও ঘটনা ঘটেছে ইন্ডিয়াতেও বিচার হতে পারে। সুতরাং এটি আমাদের পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হতে পারে।’

বিষয়:

বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হলেন সৌদি এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় দুই কেজি সোনাসহ সৌদি এয়ারলাইন্সের এক নারী কেবিন ক্রুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।

এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এনএসআই, কাস্টমস ও এপিবিএনের যৌথ দলের অভিযানে সোনাগুলো উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ওই কেবিন ক্রুর নাম রোকেয়া খাতুন।

জিয়াউল হক জানান, সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে এসভি–৮০৪ ফ্লাইট গতকাল রাত ১০টার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কাস্টমসের গ্রিন চ্যানেলে ওই ফ্লাইটের কেবিন ক্রু রোকেয়া খাতুনকে তল্লাশি করে। তল্লাশির সময় কেবিন ক্রু রোকেয়া খাতুনের কাছ থেকে ১১টি সোনার বার, ৮টি সোনার চুড়ি ও ১টি সোনার চেইন উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা এসব সোনার সম্মিলিত ওজন ১ কেজি ৯৭৯ গ্রাম।

রোকেয়া খাতুনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করে তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।


তদন্তাধীন মামলায় গণমাধ্যমে বিবৃতি বন্ধে আইনি নোটিশ

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

হাইকোর্টের রায়ের আলোকে এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মামলাসহ তদন্তাধীন মামলায় গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়া বন্ধ চেয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে বিবাদী করা হয়েছে।

জনস্বার্থে আজ বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির তাদের এ নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বলা হয়েছে, ‘ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে গিয়ে নিখোঁজ হন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী তিনি নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আজ অবধি তার মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ হিসেবে পরিণত হয়েছে। ইলেকট্রনিক, প্রেস ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রিয়েল টাইম আপডেট প্রচার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত পরিচালনা করছে। সময়ে সময়ে কর্তৃপক্ষ ঘটনার হালনাগাদ তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করছে। সাংবাদিকরা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নানান ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন করছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনা নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে কর্তৃপক্ষ উত্তর প্রদান করছে। ছোটোখাটো অনেক বিষয় উঠে আসছে। লাইভ সম্প্রচার হচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম পছন্দ অনুযায়ী হেডলাইন করছে। ফ্রিল্যান্সাররা খণ্ডাংশ উল্লেখ করে ইউটিউব, ফেসবুক, টিকটকসহ জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রচার করছেন। এ বিষয়ে হরেক-রকম বিভ্রান্তিও তৈরি হচ্ছে।’

হাইকোর্ট বলেছেন, ‘বিভিন্ন আলোচিত অপরাধের তদন্ত চলাকালীন পুলিশ- র‌্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করার আগেই বিভিন্নভাবে গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন করা হয়, যা অনেক সময় মানবাধিকারের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অমর্যাদাকর ও অঅনুমোদনযোগ্য এবং বিভিন্ন মামলার তদন্ত সম্পর্কে অতি উৎসাহ নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে ব্রিফিং করা হয়ে থাকে।’

হাইকোর্ট আরও বলেছেন, ‘আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত আদালতে একজন অভিযুক্ত বিচার প্রক্রিয়া শেষে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত না হচ্ছেন ততক্ষণ পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে বলা যাবে না যে তিনি প্রকৃত অপরাধী বা তার দ্বারাই অপরাধটি সংঘটিত হয়েছে। গ্রেপ্তার কোনো ব্যক্তিকে গণমাধ্যমে এমনভাবে উপস্থাপন করা সংগত নয় যে, তার মর্যাদা ও সম্মানহানি হয় এবং তদন্ত চলাকালে অর্থাৎ পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের আগে গণমাধ্যমে গ্রেপ্তার কোনো ব্যক্তি বা মামলার তদন্ত কার্যক্রম সম্পর্কে এমন কোনো বক্তব্য উপস্থাপন সমীচীন নয়, যা তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে বিতর্ক বা প্রশ্ন সৃষ্টি করতে পারে।’

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ‘হাইকোর্টের রায়ের আলোকে গণমাধ্যমে তদন্তাধীন মামলার বিষয়ে বক্তব্য প্রচার বন্ধ না করলে উচ্চ আদালতে রিট করা হবে।’

বিষয়:

স্ত্রী-সন্তানসহ বেনজীরকে দুদকে তলব

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া তার স্ত্রী ও সন্তানদেরও দুদকে তলব করা হয়েছে।

আগামী ৬ জুন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক। আজ মঙ্গলবার দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা জমি যাতে হস্তান্তর না হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট জেলার সাব-রেজিস্ট্রার বরাবর আদালতের জব্দের আদেশ পাঠানো হয়েছে।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, সাবেক আইজিপি তার আয়কর ফাইলে অনেক সম্পদ দেখালেও এসব সম্পদের বৈধ উৎস দেখবে দুদক। ট্যাক্স ফাইলে উঠালেও সম্পদ উপার্জনের বৈধতা খতিয়ে দেখা হবে। বেনজীরের স্ত্রী এবং সন্তানদের আয়ের খাত হিসেবে দেখিয়েছেন মাছের ব্যবসা। এটাও খতিয়ে দেখা হবে।

দুদক সূত্র বলছে, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ দেশের বাইরে বেনজীর পরিবারের কোনো সম্পদ আছে কি না তা জানতে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট- বিএফআইইউতে চিঠি দিয়েছে দুদক। সংস্থাটি বলছে, অনুসন্ধান শুরু করার পর থেকে প্রতিনিয়তই গোয়েন্দা মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বেনজীর পরিবারের সম্পদের বিস্তর তথ্য পাচ্ছে দুদক।

এর আগে গত ২৬ মে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের ১১৩টি দলিলের সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ দেন আদালত। এ ছাড়া ঢাকায় ২ হাজার ৪২ স্কয়ার ফিটের দুটি এবং ২ হাজার ৫৩ স্কয়ার ফিটের দুটিসহ পৃথক চারটি ফ্ল্যাট, শতভাগ মালিকানাধীন ৮টি কোম্পানি এবং আংশিক মালিকানা ১৫টি কোম্পানিকে জব্দ করা হয়েছে। এরও আগে গত ২৩ মে বেনজীর আহমেদের ৮৩টি দলিলের সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ দেন আদালত।

সে দিন আদালত সূত্রে জানা যায়, গোপালগঞ্জে বেনজীরের ৮৩টি দলিলের সম্পত্তি জব্দের আবেদন করে দুদক। এ সময় দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। পরে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। গত ২৩ এপ্রিল বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী এবাদাত হোসেনের বেঞ্চ দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এ নির্দেশ দেন। পরে বেনজীরের সম্পদের খোঁজে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করে। সংস্থার উপপরিচালক হাফিজুল ইসলামকে প্রধান করে গঠিত টিমের অন্য সদস্যরা হলেন সহকারী পরিচালক নিয়ামুল হাসান গাজী ও জয়নাল আবেদীন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রকাশিত এক জাতীয় দৈনিকের দাবি, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এ আইজিপি।

জাতীয় ওই দৈনিকে ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে তার নানা অর্থ-সম্পদের বিবরণ তুলে ধরা হয়। বেনজীরের বিপুল সম্পদের মধ্যে রয়েছে গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নের সাভানা ইকো রিসোর্ট নামের এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র।

এ ছাড়াও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৬টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। ৫টি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে।

প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার কাছের এলাকায় বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার।

পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি।

অথচ গত ৩৪ বছর সাত মাসের দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদের বেতনভাতা বাবদ মোট আয় এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা। বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ৩৪ বছর ৭ মাস চাকরি করে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে অবসরে যান। অবসর গ্রহণের পর দেখা যায়, বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও কন্যাদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে, যা তার আয়ের তুলনায় অসম। বেনজীর আহমেদ তার পদের অপব্যবহার করে তার আয়ের তুলনায় প্রতিবেদনে উল্লিখিত সম্পত্তিগুলো অধিগ্রহণ করেছেন বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে চিঠিতে জানান ব্যারিস্টার সুমন।

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী, বড় মেয়ে এবং ছোট মেয়ের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ সংগ্রহের জন্য তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদককে অনুরোধ করেন তিনি।


banner close