বুধবার, ২৯ মে ২০২৪

মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হার ৬৭.৭৮ শতাংশ

সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৬:৫০

গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মা‌সে মন্ত্রিসভায় নেয়া সিদ্ধান্তের ৬৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ বাস্তবায়ন হ‌য়ে‌ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ কথা জানানো হয়। সভায় ২০২২ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান, গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর প্রান্তিকে ছয়টি মন্ত্রিসভা বৈঠকে ৯০টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর ম‌ধ্যে ৬১টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ২৯টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়‌নের হার ৬৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, গত বছ‌রের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে দুটি নীতি বা কর্মকৌশল এবং ১১টি চুক্তি বা প্রটোকল অনুমোদিত হয়েছে। এ সময়ে সংসদে চার‌টি আইন পাস হয়েছে।


কর্মীরা ৩১ মে পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় যেতে পারবেন: মালয়েশিয়ান হাইকমিশনার

বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাশিম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাশিম। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশি শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে মালয়েশিয়া সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

হাইকমিশনার অবশ্য স্বীকার করেছেন, মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট থাকতে পারে, যা বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া উভয় সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

বুধবার ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিক্যাব) সদস্যদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। সূত্র: ইউএনবি

হাইকমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে কর্মীরা আগামী ৩১ মে পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় যেতে পারবেন। এটা আমাদের সরকার ঠিক করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এটি ঘোষণা করা হয়েছে।’

হাইকমিশনার বাংলাদেশী কর্মীদের কম খরচে বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও পর্যটন সুবিধা দেয়ার বিষয়ে তার দেশের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।

দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়েও কথা বলেন হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাশিম। তিনি বলেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী যে এটি হবে।’

ডিক্যাব সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। আলোচনা সভা আয়োজনের জন্য হাইকমিশনকে ধন্যবাদ জানান তিনি।


দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত

আপডেটেড ২৯ মে, ২০২৪ ১৯:৩৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আজ বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ১৯ মিনিটরে দিকে কম্পনটি অনুভূব হয়। জানা গেছে, এর উৎপত্তিস্থল ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৪।

ভূমিকম্পের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান।

গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ঢাকা, চট্রগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি- ভূমিকম্পটি ৫.৪ মাত্রার ছিল। এর উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৪৩৬ কি.মি দূরে মিয়ানমারে।


দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ভারী বর্ষণের কারণে প্রধান প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বেড়ে যাওয়ায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু অংশে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি)।

বুধবার (২৯ মে) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, সারিগোয়াইন নদীর তীরবর্তী এলাকায় অস্থায়ীভাবে বন্যা হতে পারে বলে এক বুলেটিনে জানিয়েছে এফএফডব্লিউসি।।

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত আশঙ্কাজনক হারে বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও বিদেশি আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তার কাছাকাছি উজান অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

যার ফলে উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি ধীরে ধীরে বাড়তে পারে এবং সময়ের ওপর নির্ভর করে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পানি দ্রুত বাড়তে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র ১১০টি নদীর পানির স্তর নির্ণয় স্টেশন পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৩টি নদ-নদীর পানি বেড়ে গিয়েছে।

একদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে যাচ্ছে অন্যদিকে যমুনা ও পদ্মা নদীর পানি কমছে।

আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পানির পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া যমুনা নদীর পানির স্তরও ধীর গতিতে বাড়তে পারে।


ডিএসসিসি ৬ লাখ ৭০ হাজার শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ খাওয়াবে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

৬ লাখ ৭০ হাজার শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার ১ হাজার ৮২৭টি কেন্দ্রের মাধ্যমে শিশুদের এই ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

আজ বুধবার ডিএসসিসির প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে ‘জাতীয় ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত কেন্দ্রীয় অ্যাডভোকেসি এবং সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশন সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।

করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবিরের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় ১ হাজার ৮২৭টি কেন্দ্রের মাধ্যমে এবার ভিটামিন ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ১৫০ জন সুপারভাইজারের তত্ত্বাবধানে ৩ হাজার ৬৫৪ জন স্বেচ্ছাসেবকের সহযোগিতায় সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।

আগামী ১ জুন (শনিবার) ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ১ লাখ ১০ হাজার শিশুকে একটি করে নীল রঙের (১,০০,০০০ আইইউ) এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৫ লাখ ৬০ হাজার শিশুকে একটি করে লাল রঙের (২,০০,০০০ আইইউ) ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেদিন নির্ধারিত কেন্দ্রে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর জন্য নিয়ে যেতে পিতা-মাতা ও অভিভাবকদের অনুরোধ করেন।

সভায় জাতীয় পুষ্টি সেবার (এনএনএস) লাইন ডিরেক্টরের প্রতিনিধি, বিভিন্ন হাসপাতালের পরিচালকের প্রতিনিধি, করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা, গার্ল গাইডস, রোভার স্কাউট, রোটারি ক্লাব, আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রকল্প (ইউপিএইচসিএসডিপি), আবু মিয়া ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, মা ও শিশু উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও এনজিও হেলথ সার্ভিস ডেলিভারি প্রোগ্রাম (এনএইচএসডিপি) এবং ইউনিসেফের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।


প্রধানমন্ত্রীর ডিপিএস তুষার ও এপিএস হাফিজুরের নিয়োগ বাতিল

আপডেটেড ২৯ মে, ২০২৪ ১৮:৫২
বিশেষ প্রতিনিধি

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ডেপুটি প্রেস সচিব (ডিপিএস) হাসান জাহিদ তুষারের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখা থেকে বুধবার জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে এ নিয়োগ বাতিল করা হয়। ঢাকা থেকে প্রকাশিত দি ডেইলি স্টার পত্রিকার রিপোর্টার তুষারকে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ সরকারের মেয়াদকালের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ডেপুটি প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। সরকারের মেয়াদ শেষে ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করে। এরপর পুনরায় তিনি সরকারের চলতি মেয়াদকালের জন্য একই পদে নিয়োগ লাভ করেন। কিন্তু সরকারের মেয়াদ ছয় মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই চুক্তিপত্রের অনুচ্ছেদ-৮ অনুযায়ী তার নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। আগামী ১ জুন থেকে এই বাতিলের আদেশ কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালে বনানীর হাওয়া ভবন থেকে তারেক রহমান বিকল্প সরকার পরিচালনা করতেন। সেই ভবনে তুষারের যাতায়াত ছিল। তারেক রহমানের সঙ্গে এক বৈঠকে তুষারের উপস্থিতির একটি ছবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এদিকে অপর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। আগামী ১ জুন থেকে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের আদেশ কার্যকর হবে।


পানির দাম বাড়াল ঢাকা ওয়াসা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে পানির দাম ১০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা ওয়াসা।

আজ বুধবার ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘ওয়াসা আইন ১৯৯৬-এর ২২ ধারা অনুযায়ী মূল্যস্ফীতির সমন্বয়ের লক্ষ্যে পানির দাম বাড়ানো হয়েছে।’

আবাসিক গ্রাহকদের জন্য প্রতি ১ হাজার লিটার পানির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ টাকা ৭০ পয়সা, যা এখন আছে ১৫ টাকা ১৮ পয়সা।বাণিজ্যিক গ্রাহকদের জন্য একই পরিমাণ পানির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৬ টাকা ২০ পয়সা, যা বর্তমানে আছে ৪২ টাকা।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘এই সিদ্ধান্ত মিটারবিহীন হোল্ডিং, গভীর নলকূপ, নির্মাণাধীন ভবন, ন্যূনতম বিলসহ সব প্রকার (পানি ও পয়ঃ) অভিকরের ক্ষেত্রেও কার্যকর হবে।

এর আগে করোনাকালে ঢাকা ওয়াসা দুই বছরে দুবার আবাসিক ও বাণিজ্যিক পর্যায়ে পানির দাম বাড়িয়েছিল। এবার নিয়ে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৬ বছরে ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বাড়ল ১৬ বার।

সবশেষ ২০২১ সালের জুলাইয়ে ঢাকা ওয়াসা পানির দাম বাড়িয়েছিল। ২০২২ সালেও পানির দাম বাড়াতে চেয়েছিল ঢাকা ওয়াসা। কিন্তু তখন ওয়াসা কর্তৃক পানির দাম বাড়ানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট হয়। বিধি প্রণয়ন না করে ওয়াসার পানির মূল্যবৃদ্ধি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেন হাইকোর্ট। এরপর এত দিন পানির দাম বাড়ানোর বিষয়টি স্থগিত ছিল।


‘বিশ্বশান্তি নিশ্চিত করা এখন অতীতের চেয়ে কঠিন’

‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বুধবার বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৯ মে, ২০২৪ ১৮:৩৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বশান্তি নিশ্চিত করা এখন অতীতের চেয়ে কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২৪’ উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রসার ও অগ্রযাত্রার সঙ্গে বাড়ছে নতুন নতুন হুমকি। ফলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনগুলোর শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শান্তিরক্ষা মিশনগুলো উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমৃদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা এখন বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ও বিপজ্জনক অঞ্চলে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারে, সেজন্য তাদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, “নারীর অধিকার ও জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে আমাদের পদক্ষেপ ‘উইমেন স্পিচ অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাজেন্ডা’ তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। বাংলাদেশ অন্যতম বৃহৎ নারী শান্তিরক্ষী দেশ হিসেবেও পরিচিতি লাভ করছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ৩ হাজার ৩৮ জন নারী শান্তিরক্ষী অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে জাতিসংঘের শান্তি মিশন সম্পন্ন করেছেন।”

তিনি আরও বলেন, ‘এখন দাবি আসছে, আরও নারী শান্তিরক্ষী প্রেরণ করার। জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল নিজেই আমাকে বলেছেন, আমরা যেন আরও বেশি করে নারী শান্তিরক্ষী প্রেরণ করি।’


জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

সেন্ট জনসে মঙ্গলবার জাতিসংঘ আয়োজিত এক সম্মেলনে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলা ও ক্ষুদ্র দ্বীপ দেশগুলোর উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বার্বুডার রাজধানী সেন্ট জনসে স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘ আয়োজিত ক্ষুদ্র দ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের চতুর্থ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তি‌নি।

সেন্ট জনসের আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব অ্যান্টিগুয়ার প্রধান মিলনায়তনে সিডস প্ল্যানারিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ঐতিহ্যবাহী মুখপাত্র হিসেবে এবং ক্ষুদ্র দ্বীপ দেশগুলোর উন্নয়নে ধারাবাহিকভাবে উচ্চ কণ্ঠ বাংলাদেশের ভূমিকা উল্লেখ করতে গিয়ে এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘দুই মেয়াদে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সংগঠন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, সমুদ্রের অম্লতা বৃদ্ধি এবং চরম আবহাওয়ার চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় বিশেষ দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে উচ্চ কার্বন নিঃসরণকারী উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোকে জবাবদিহিমূলক প্রতিশ্রুতির আওতায় আনা একান্ত প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যে আজারবাইজানের বাকুতে আসন্ন বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ২৯-এ ২০২৫ সাল পরবর্তী সময়ে জলবায়ু অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং জলবায়ু ঝুঁকির অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধির দিকে জাতিসংঘ সদস্যদের মনোযোগী হওয়া জরুরি।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় রাষ্ট্রগুলোর দায়িত্ব সম্পর্কে আন্তর্জাতিক আদালতের (আইসিজে) কাছ থেকে পরামর্শমূলক মতামত চাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেতৃত্বের কথাও তুলে ধরেন।

আফ্রিকার স্বল্পোন্নত এবং ক্যারিবীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় সিডস দেশগুলোর ক্যাডেটদের জন্য বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে বৃত্তি প্রদানের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সামুদ্রিক খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং আন্তঃজাতি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

সম্মেলন শেষে দি অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বার্বুডা অ্যাজেন্ডা ফর সিডস (আবাস) প্রতিরোধে সক্ষম উন্নয়নের লক্ষ্যে নবায়ন করা ঘোষণাপত্রটি চূড়ান্ত হবে।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আবদুল মুহিত ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম সম্মেলনে যোগ দেন।


আজকের মধ্যে ৮০ শতাংশ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক হবে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৯ মে, ২০২৪ ০০:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে গত দুই দিনে দেশের অর্ধেকের বেশি গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক করতে কাজ করছে এবং আজ বুধবারের মধ্যে ৮০ শতাংশ সংযোগ স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল মঙ্গলবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীনে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় ৩ কোটি ৩ লাখ ৯ হাজার ৭০২ জন গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। এর মধ্যে ১ কোটি ৩১ লাখ ৩৬ হাজার ৭০২ জন গ্রাহকের সংযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। অর্থাৎ এখনো ১ কোটি ৭১ লাখ ৭৩ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন।

অন্যদিকে, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) মোট ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৫৪ গ্রাহকের মধ্যে এখনো ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬২৮ গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। অর্থাৎ দেশের মোট ১ কোটি ৭৩ লাখ ১৭ হাজার ৬২৮ জন গ্রাহক গতকাল বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন।

সরেজমিনে আরইবি এবং ওজোপাডিকোর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য অনুযায়ী, ৩৩ কেভির ৩১১টি ফিডার, ৩৩/১১ কেভির ৪৫১ উপকেন্দ্র, ১১ কেভির ৩৮৫১ ফিডার, ১২৬৬টি বৈদ্যুতিক খুঁটি, ১১২২টি ট্রান্সফরমার এখনো ক্ষতিগ্রস্ত আছে। বিদ্যুতের তার ছেঁড়া আছে ১ হাজার ৬৯৩ জায়গায় এবং মিটার ক্ষতিগ্রস্ত আছে ২৮ হাজার ৪৬৬টি। আজকের মধ্যে ৮০ শতাংশ গ্রাহকের সংযোগ স্বাভাবিক হবে এবং বাকি গ্রাহকদের সার্ভিস ড্রপ ও মিটার বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করা হবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

বিষয়:

দেশের ইতিহাসে যত প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ঘন ঘন বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের শিকার হয়ে থাকে বাংলাদেশ। দেশের উপকূল স্পর্শ করে বিস্তৃত বঙ্গোপসাগরের উত্তরাংশ অনেকটা ফানেল-আকৃতির। ফলে স্থলভাগের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে রূপ নেয় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়গুলো। আর এই বিভীষিকার নির্মম শিকারে পরিণত হয় হাজার হাজার মানুষ। এই দুর্যোগপ্রবণতার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কয়েক শতাব্দীর ইতিহাস। সম্প্রতি আঘাত করা ঘূর্ণিঝড় রেমাল ছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বিধ্বংসী ১১টি ঘূর্ণিঝড়ের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তুলে ধরা হলো:

বাকেরগঞ্জ সাইক্লোন, ১৮৭৬

১৮৭৬ সালের ২৭ অক্টোবর বঙ্গোপসাগরের গভীরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপ ২৯ অক্টোবর নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। অতঃপর ৩০ অক্টোবর আরও প্রবল হয়ে তা উত্তর বঙ্গোপসাগরের দিকে অগ্রসর হয়। ঘূর্ণিঝড়ের আশপাশে সে সময় বাতাসের গতি উঠেছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২২০ কিলোমিটার।

ওই ঘূর্ণিঝড় থেকে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে পানির উচ্চতা ছিল ১২ দশমিক ২ মিটার। আর এই মাত্রা অব্যাহত রেখেই ৩১ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়ে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ওপর। পাশাপাশি আঘাত হানে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিসহ ব্রিটিশ ভারতের উপকূল বরাবর, যেটি বর্তমানে বরিশালে মেঘনা নদীর মোহনার কাছাকাছি একটি স্থান।

ঘূর্ণিঝড়টির আঘাতে সেবার হতাহতের সংখ্যা হয়েছিল প্রায় ২ লাখ, যাদের অর্ধেকই মারা গিয়েছিল জলোচ্ছ্বাসে। এ ছাড়াও ঘরবাড়িসহ সম্পদের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে ১ নভেম্বর থামে ঘূর্ণিঝড়। কিন্তু এরপর আরও অনেক মানুষ মারা যায় ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী দুর্ভিক্ষ ও মহামারিতে।

চট্টগ্রাম সাইক্লোন, ১৮৯৭

কুতুবদিয়া দ্বীপের কাছাকাছি এলাকায় এই ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়ে ১৮৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর। ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস মিলে ওই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে হতাহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৪ হাজারে। ঝড়-পরবর্তী সময়ে কলেরা মহামারিতে আরও ১৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।

খুলনার ঘূর্ণিঝড়, ১৯৬১

১৯৬১ সালের ৯ মে সংঘটিত হওয়া এই ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল বাগেরহাট ও খুলনার বেশকিছু অঞ্চল। ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬১ কিলোমিটার, আর জলোচ্ছ্বাসে ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল ২ দশমিক ৪৪ থেকে ৩ দশমিক ০৫ মিটারে।

ঝড়ে ১১ হাজার ৪৬৮ জন নিহতের অধিকাংশই ছিল চর আলেকজান্ডারের অধিবাসী। জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়া গবাদি পশুর সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার। অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে বিশেষ করে নোয়াখালী ও হরিনারায়ণপুরের মধ্যকার রেলপথটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

চট্টগ্রামের ঘূর্ণিঝড়, ১৯৬৩

১৯৬৩ সালের ২৮ থেকে ২৯ মের মধ্যে সংঘটিত এই ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২০৩ কিলোমিটার। জলোচ্ছ্বাসে পানির উচ্চতা ৪ দশমিক ৩ থেকে ৫ দশমিক ২ মিটারে পৌঁছেছিল।

এই দুর্যোগ বিধ্বস্ত করে দেয় সন্দ্বীপ, কুতুবদিয়া, হাতিয়া ও মহেশখালী দ্বীপসহ, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজারের বিভিন্ন অঞ্চলকে।
এতে মারা যায় ১১ হাজার ৫২০ জন মানুষ ও ৩২ হাজার ৬১৭ গবাদি পশু। এ ছাড়া ধ্বংস হয় ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৩৩২টি ঘরবাড়ি, ৪ হাজার ৭৮৭টি নৌকা এবং খেতের ফসল।

বরিশালের ঘূর্ণিঝড়, ১৯৬৫

বাকেরগঞ্জ ও বরিশালের এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টি সংঘটিত হয় ১৯৬৫ সালের ১১ থেকে ১২ মের মধ্যে। বাতাসের গতির সর্বোচ্চ মাত্রা ছিল ঘণ্টায় ১৬২ কিলোমিটার আর জলোচ্ছ্বাস অগ্রসর হয়েছিল ৩ দশমিক ৭ মিটার উচ্চতার ঢেউ নিয়ে। এই তাণ্ডবলীলায় মারা যায় ১৯ হাজার ২৭৯ জন মানুষ।

ভোলার সাইক্লোন, ১৯৭০

বিংশ শতকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়টি হয়েছিল ১৯৭০ সালের ৭ থেকে ১৩ নভেম্বর। ১০ নভেম্বর এটি ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার গতিবেগ অর্জন করে পরের দিন বিকেলে পূর্ব পাকিস্তানের উপকূলে প্রবেশ করে।

বন্দরে ঘূর্ণিঝড়টির প্রবেশস্থলে ঝোড়ো বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ২২২ কিলোমিটার। জলোচ্ছ্বাসের ঢেউ ১০ দশমিক ৬ মিটার উচ্চতায় উঠেছিল।
ভোলা সাইক্লোনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় চট্টগ্রাম, বরগুনা, খেপুপাড়া ও পটুয়াখালী। এ ছাড়া তলিয়ে যায় চর বোরহানউদ্দিনের উত্তরে চর তজুমদ্দিন এবং মাইজদীর দক্ষিণে হরিণঘাটা।

সরকারি হিসাব মতে, সাইক্লোনে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৫ লাখ। এ ছাড়া ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল প্রায় ২০ হাজার মাছ ধরার নৌকা, ৪ লাখেরও বেশি ঘরবাড়ি এবং ৩ হাজার ৫০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে আরও ছিল ১০ লাখেরও বেশি গবাদি পশু ও ফসলাদি।

চট্টগ্রামের ঘূর্ণিঝড়, ১৯৮৫

কক্সবাজার, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামে সংঘটিত এই ঘূর্ণিঝড়ের স্থায়ীত্বকাল ছিল ১৯৮৫ সালের ২৪ ও ২৫ মে। ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল উপকূলবর্তী অঞ্চল সন্দ্বীপ, হাতিয়া ও উড়িরচর।

চট্টগ্রাম অতিক্রমের সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫৪ কিলোমিটার। এই দমকা হাওয়া সন্দ্বীপে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার ও কক্সবাজারে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারে নেমে যায়।

জলোচ্ছ্বাসে পানির উচ্চতা ৩ থেকে ৪ দশমিক ৬ মিটারে পৌঁছে গিয়েছিল। এই দুর্যোগে হতাহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১১ হাজার ৬৯ জন মানুষ এবং ১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩টি গবাদি পশু। সেইসঙ্গে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ৯৪ হাজার ৩৭৯টি ঘরবাড়ি এবং ৭৪ কিলোমিটার রাস্তা ও বাঁধ।

বাংলাদেশ সাইক্লোন, ১৯৮৮

১৯৮৮ সালের ২১ নভেম্বর মালাক্কা প্রণালির মধ্যে নিম্নচাপ থেকে উদ্ভূত হয় এই ঘূর্ণিঝড়। ২৯ নভেম্বর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাছে আছড়ে পড়ার সময় ঘণ্টায় ২০১ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়ে সর্বোচ্চ তীব্রতায় পৌঁছে।

স্থলভাগের ওপর দিয়ে জলোচ্ছ্বাসের দানবীয় আগ্রাসনে পানির উচ্চতা ছিল ২ মিটার। এই তীব্রতার শিকার হয় বাগেরহাট, বরগুনা, ভোলা, যশোর, খুলনা, পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা এবং সুন্দরবনের একাংশ।

এর ফলে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫ হাজার ৭০৮ জন, যাদের অধিকাংশের মৃত্যু ঘটে খুলনা জেলায়। এদের অনেকেরই মৃত্যু হয় বিদ্যুতের খুঁটি বসতবাড়ির ওপর ধসে পড়ার কারণে বা সরাসরি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে।

শক্তিশালী এই ঝড়ের দাপটে প্রায় ২ লাখ টন ফসল নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। সারা দেশে ৫০ হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়; সেই সঙ্গে গৃহহীন হয়ে পড়ে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ।

রাজধানী ঢাকায় ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বাতাসের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং যান চলাচলে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়। একইসঙ্গে শহরজুড়ে বন্যা দেখা দেয়। দেশজুড়ে ভয়ানক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে অবশেষে ৩০ নভেম্বর দুর্বল হয়ে পড়ে ৮৮-এর সাইক্লোন।

বাংলাদেশ সাইক্লোন, ১৯৯১

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে সবচেয়ে ভয়াল সাইক্লোনের আবির্ভাব ঘটেছিল ১৯৯১ সালের ২৪ এপ্রিল। বঙ্গোপসাগরের গভীরে বৃহৎ এলাকা নিয়ে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড়টি ২৯ এপ্রিল বাংলাদেশের উপকূলে প্রবেশ করে। চট্টগ্রাম জেলার স্থলভাগের ওপর ঘূর্ণি বাতাসের গতি ওঠে ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটারে।
ঘূর্ণিঝড়টি থেকে ৬ দশমিক ১ মিটার উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস সমগ্র উপকূল রেখাকে প্লাবিত করে ফেলে। এ ঘটনায় নিহত হয় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৬৬ জন।

শুধু বাঁশখালীতেই নিহতের সংখ্যা ছিল ৪০ হাজার এবং কুতুবদিয়া উপজেলায় ২০ হাজারেরও বেশি। কিছু ছোট ছোট দ্বীপ একদম জনমানবশূন্য হয়ে পড়েছিল।

গোটা উপজেলার ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছিল এবং সমস্ত গবাদি পশু মারা গিয়েছিল। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায় এবং গৃহহীন হয়ে পড়ে ১ কোটি মানুষ। গ্রামের পর গ্রাম লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে অবশেষে ৩০ এপ্রিল ঝড়ের অবসান ঘটে।

বিপর্যয়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের সমন্বয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে অপারেশন সি এঞ্জেল পরিচালনা করা হয়। এটি বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক ত্রাণ প্রকল্পগুলোর মধ্যে একটি।

ঘূর্ণিঝড় সিডর, ২০০৭

২১ শতকের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টির নাম ‘সিডর’। যার মেয়াদকাল ছিল ২০০৭ সালের ১১ নভেম্বর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত। উত্তর ভারত মহাসাগরের ঘূর্ণিঝড়ের নাম প্রণয়নের বিধি জারির পর এটি ছিল চতুর্থ নামযুক্ত ঝড়।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঝড় খুব কম সময়ে ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার গতিবেগে পৌঁছে দানবীয় আকার ধারণ করে। ৫ মিটারের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়ে পটুয়াখালী, বরগুনা ও ঝালকাঠি জেলার পুরো শহর। ক্ষতিগ্রস্ত হয় সুন্দরবনের প্রায় এক-চতুর্থাংশ।

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির তথ্যানুসারে, সিডরে প্রাণহানির সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়ায়। আর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তৎকালীন ১৯ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা।

ঘূর্ণিঝড় আইলা, ২০০৯

২০০৯ সালে উত্তর ভারত মহাসাগরে জন্ম নেওয়া দ্বিতীয় ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে আইলা। ঘূর্ণিঝড়টি জন্ম নেয় ২১ মে ভারতের কলকাতা থেকে ৯৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে। ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানে ২৫ মে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশ ও ভারতের দক্ষিণ-পূর্বাংশে। এর ব্যাস ছিল প্রায় ৩০০ কিলোমিটার, যা ঘূর্ণিঝড় সিডরের থেকে ৫০ কিলোমিটার বেশি। সিডরের মতোই আইলা প্রায় ১০ ঘণ্টা সময় নিয়ে উপকূল অতিক্রম করে, তবে পরে বাতাসের বেগ ৮০-১০০ কিলোমিটার হয়ে যাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি, সিডর থেকে তুলনামূলক কম হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে আঘাত হানা এই ১০টি ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী ১৮৭৬, ১৯৭০ ও ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়গুলো। শতাব্দীজুড়ে ভয়াল তাণ্ডবে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চট্টগ্রাম ও বরিশালের বিভিন্ন অঞ্চল।

বছর ঘুরে প্রতিবারই এপ্রিল, মে, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে কোনো না কোনো ঘূর্ণিঝড়ের ধ্বংসলীলা চলেছে। একবিংশ শতকে হতাহতের পরিমাণ অনেকটা কমলেও কমানো সম্ভব হয়নি সম্পদ ও অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি।

সূত্র: ইউএনবি


আজ আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৯ মে, ২০২৪ ০৪:৪২
নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ বুধবার। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় এ বছর দিবসটি পালন করা হবে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী বিশ্বের সব দেশের শান্তিরক্ষীদের অসামান্য অবদানকে এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হবে।

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উদ্‌যাপনে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সকালে শান্তিরক্ষীদের স্মরণের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে, যেখানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে ‘শান্তিরক্ষী দৌড়-২০২৪’ উদ্বোধন করবেন।

দিনটি উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শহীদ শান্তিরক্ষীদের আত্মীয় ও আহত শান্তিরক্ষীদের সংবর্ধনা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর বিশেষ উপস্থাপনার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দীর্ঘ চার দশকের শান্তিরক্ষার ইতিহাসে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের ৪৩টি দেশ ও স্থানে, ৬৩টি জাতিসংঘ মিশন সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে।

বর্তমানে ১৩ দেশে বাংলাদেশের ৬ হাজার ৯২ জন শান্তিরক্ষী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ও কার্যক্রমে নিয়োজিত আছেন। যার মধ্যে রয়েছে ৪৯৩ জন নারী শান্তিরক্ষী। শুরু থেকে এ পর্যন্ত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ১৬৮ জন শান্তিরক্ষী শহীদ হয়েছেন। এই বছর তিনজন আহত শান্তিরক্ষীকে সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।

দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরার লক্ষ্যে বিশেষ জার্নাল ও জাতীয় দৈনিকগুলোয় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে বিশেষ টক-শো প্রচারিত হয়। এ ছাড়া শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের কার্যক্রমের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হবে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনার, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, তিন বাহিনী প্রধান, সংসদ সদস্য, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), পুলিশের মহাপরিদর্শক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।


উপজেলা নির্বাচন: তৃতীয় ধাপে ভোট গ্রহণ আজ

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ২২ উপজেলার ভোট স্থগিত
ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৯ মে, ২০২৪ ০৪:৪২
নিজস্ব প্রতিবেদক

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের আনুষ্ঠানিক প্রচার গত সোমবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। এই ধাপে ১০৯ উপজেলায় গতকাল বুধবার ভোট গ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবের কারণে মোট ২২ উপজেলার ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফলে এখন ৮৭টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হবে।

এরই মধ্যে রিটার্নিং অফিসগুলোতে ব্যালট বাক্সসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম নিতে ভিড় করছে প্রিসাইডিং অফিসাররা। কঠোর নিরপত্তায় নির্বাচনী সরঞ্জাম কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হবে। ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে।

এর আগে গত সোমবার ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে ১৯টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। পরে গতকাল মঙ্গলবার আরও তিনটি উপজেলায় ভোট স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ২২টি উপজেলার ভোট স্থগিত হলো।

নতুন স্থগিত উপজেলাগুলো হলো নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী এবং চাঁদপুর জেলার কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা। খালিয়াজুরী উপজেলায় সড়ক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ইভিএমের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে সোমবার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে এই ধাপের প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী ভোট গ্রহণের ৩২ ঘণ্টা আগেই সব ধরনের প্রচার বন্ধ থাকে।

নির্বাচন উপলক্ষে ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিবসের পূর্ববর্তী মধ্যরাত অর্থাৎ ২৮ মে মধ্যরাত ১২টা থেকে ২৯ মে মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত ট্যাক্সি ক্যাব, পিকআপ, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। ৯১টি উপজেলায় তিন দিনের জন্য মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ক্ষেত্রে গত সোমবার মধ্যরাত থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে।

ভোটের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠে নামানো হয়েছে বিজিবি, পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নির্বাচনে কোনো অপরাধ হলে তা আমলে নিয়ে সংক্ষিপ্ত বিচার কাজ পরিচালনায় মাঠে রয়েছেন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ও আচরণবিধি প্রতিপালনে নিয়োজিত করা হয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে গঠিত বিভিন্ন টিমের বিষয়ে ইসির এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভিজিল্যান্স টিম ও অবজারভেশন টিম, মনিটরিং টিম ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠন এবং উক্ত টিমসমূহের কার্যক্রম নির্ধারিত তিন দিন পর পর বা ক্ষেত্রমতো তাৎক্ষণিক নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে অবহিত করতে হবে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা টিমসমূহ কর্তৃক নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে অবগত করানোর জন্য নির্দেশনা দেবেন। এ ছাড়া উপজেলা নির্বাচনের সামগ্রিক কার্যক্রম শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকল্পে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পাঁচ থানার ওসি প্রত্যাহারের নির্দেশ ইসির

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে পাঁচ থানার ওসি প্রত্যাহারের জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দিয়েছে ইসি। সোমবার ইসির উপসচিব মো. মিজানুর রহমান নির্দেশনাটি পাঠিয়েছেন।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার থানা, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানা, চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ থানা এবং আনোয়ারা থানার ওসিকে সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট থানার নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শককে (তদন্ত) ৩১ মে পর্যন্ত দায়িত্ব দেওয়ার জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এ ছাড়া, পটুয়াখালী জেলার দুমকী থানার ওসিকে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট থানার নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শককে (তদন্ত) দায়িত্ব দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে বিনীতভাবে অনুরোধও করা হয়েছে চিঠিতে।

৩০০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

সারা দেশে ৩০০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের ভোট গ্রহণ অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে পাঁচ দিন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিজিবি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিজিবি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।


রাত ২টা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নিজেই দুর্যোগ মনিটর করেছেন

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি কমানো ও উপকূলীয় এলাকার মানুষকে নিরাপদে রাখতে রাত ২টা পর্যন্ত দুর্যোগ মনিটর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ল্যান্ডফোনে নিজেই সংশ্লিষ্ট এলাকায় যোগাযোগ করে পরিস্থিতি মনিটর করেছেন, সবার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন।

প্রধানমন্ত্রী এবং একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আলোচনা হয়। পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালাম ও পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরেন।

ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত দুর্গতদের পাশে সরকারি কর্মকর্তাদের থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের গতানুগতিক
অবস্থার বাইরে এসে কাজ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

পরিকল্পনাসচিব জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণে রাত ২টা পর্যন্ত জেগে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রত্যেক জেলার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে ব্যবস্থাপনা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন। তা ছাড়া ল্যান্ডফোনকে গুরুত্ব দিতে বলেছেন।

কেননা রেমালে ল্যান্ডফোনের গুরুত্ব সামনে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন, যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার যথাযথ হিসাব বের করতে হবে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে যেসব ক্ষয়ক্ষতির চিত্র এসেছে তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তা ছাড়া দ্রুত দুর্গত এলাকায় খাবার পানির ব্যবস্থা করতে বলেছেন।

একনেক সভায় রোহিঙ্গাদের উন্নয়নসহ ১১ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৩৩৭ কোটি
৩৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৬ হাজার ৫৪১ কোটি ৫২ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে ৭ হাজার ৮৭৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৮৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।


banner close