রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
১১ কার্তিক ১৪৩২

রাজনীতির ছায়ায় বেপরোয়া কিশোর গ্যাং

আপডেটেড
৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ ১০:০১
নুরুজ্জামান লাবু
প্রকাশিত
নুরুজ্জামান লাবু
প্রকাশিত : ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ ১০:০১

২০২০ সালের মার্চের ঘটনা। রাজধানীর মহাখালীর আমতলীতে সালাম না দেয়ায় রহমত উল্লাহ নামে এক কিশোরকে ছুরিকাঘাতে খুন করে অনন্ত নামে আরেক কিশোর। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে একই ধরনের আরেকটি ঘটনা ঘটে রাজধানীর মুগদা এলাকায়। ব্যান্ডেজ নামে এক কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের সালাম না দেয়ায় হাসান নামে এক কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। গত বছরের অক্টোবরেও ঘটে একই ঘটনা। সালাম দেয়া না দেয়াকে কেন্দ্র করে রাজধানীর পল্লবীতে দুই কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে মারামারি হয়। এ সময় রাকিব নামে এক কিশোর ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়।

শুধু সালাম দেয়া না দেয়া-ই নয়, আধিপত্য বিস্তারসহ নানা রকম তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায়ই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। গত কয়েক বছরে কিশোর গ্যাংয়ের হাতেই খুন হয়েছে অন্তত দেড় শতাধিক কিশোর। একাধিকবার অভিযান চালিয়ে কিশোর অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

কর্মকর্তারা বলছেন, কিশোর অপরাধ দমন তাদের কাছে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন সময় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে কিশোর অপরাধীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতন করা হচ্ছে। তার পরও কিশোর অপরাধীদের দৌরাত্ম্য থামানো যাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, কিশোর অপরাধীদের অপতৎপরতা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারা দেশের কিশোর অপরাধীদের একটি তালিকা তৈরি করেছে। পুলিশের তথ্য বলছে, বর্তমানে সারা দেশে কিশোর অপরাধীদের ১৭৩টি দল সক্রিয় রয়েছে। এসব দলে ২ হাজার ২৯ জন কিশোর রয়েছে। কিশোর অপরাধের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সারা দেশে ৭৮০টি মামলা হয়েছে, এসব মামলায় আসামি ৮৯৬ জন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর অপরাধীরা। মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হলেও কিশোর অপরাধীদের গ্যাং কালচার বন্ধ করা যাচ্ছে না। প্রতিটি গ্যাংয়ের নেপথ্যেই স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের মদদ রয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এ কে এম হাফিজ আক্তার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘কয়েক দিন পর পরই কিশোর অপরাধের ঘটনার মোকাবিলা করতে হচ্ছে আমাদের। তুচ্ছ ঘটনায় একে অপরকে খুন করছে। শুধু আইন প্রয়োগ করে কিশোর অপরাধ দমন করা সম্ভব না। কিশোর অপরাধী এতটাই বেড়েছে যে ধরে ধরে সংশোধনাগারে পাঠালে সেখানেও জায়গা কুলাবে না। আমরা তালিকা তৈরি করে বিট পুলিশের মাধ্যমে নিয়মিত মনিটর করি। কিশোর অপরাধীদের কাউন্সেলিং করে সুপথে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিসহ নানাভাবে কিশোর অপরাধ দমনের জন্য কাজ করছি।’

সংশ্লিষ্টরা জানান, গ্যাং কালচার মূলত শুরু হয় ১৭৮৩ সালে আমেরিকায়, স্ট্রিট গ্যাংয়ের মাধ্যমে। এরপর তা লাতিন আমেরিকাসহ ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে বিভিন্ন সমযে সন্ত্রাসীদের পৃথক গ্যাং থাকলেও এক দশক ধরে এই কিশোরদের মধ্যেও গ্যাং কালচার শুরু হয়েছে। ২০১৭ সালে উত্তরায় আদনান কবির নামে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরকে তার সমবয়সীরা পিটিয়ে হত্যার পর কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

কিশোর অপরাধ নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে একশ্রেণির কিশোর তরুণদের গ্যাং কালচারে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। সহপাঠী, একই পাড়া-মহল্লায় বসবাসকারী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশায় নিয়োজিত বখাটে কিশোর তরুণরা ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একত্রিত হয়ে বাহারি ও চটকদার নাম দিয়ে এলাকাভিত্তিক গ্যাং তৈরি করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। ডিসকো বয়েজ, বিগ বস, নাইন স্টার, ব্ল্যাক রোজ, নাইন এমএম বয়েজ, ভাইপার ইত্যাদি নামে এলাকাভিত্তিক গ্যাংগুলোর কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। সারা দেশের ১৭৩টি কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীতেই ১২৩টি। এসব গ্যাং সদস্য ফেসবুক ও ইন্টারনেটে গ্রুপ তৈরি করে ইভটিজিং, ধর্ষণ, খুন, মাদক গ্রহণ, চাঁদাবাজি, ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে দখলবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এ ছাড়া কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুনের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। গ্যাং কালচারে জড়িয়ে পড়া এসব কিশোর অপরাধীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে না পারলে ভবিষ্যতে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে বলে শঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান, অ্যাডভেঞ্চার ও হিরোইজমের চিন্তাভাবনা থেকেই কিশোরদের মধ্যে গ্যাং কালচার শুরু হলেও তারা এখন ভয়ংকর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। মাদকের নেশায় জড়িয়ে পড়া থেকে শুরু করে তারা চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং, মাদক ব্যবসা, ঝুঁকিপূর্ণ বাইক ও কার রেসিং, হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, মারামারি ও এলাকাভিত্তিক আধিপত্যের ঘটনা ঘটাচ্ছে। এ ছাড়া সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব, বখাটেপনা, বুলিং, র‌্যাগিং ইত্যাদি নিয়েও কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে নিজেদের মারামারি ও হতাহতের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র বলছে, বর্তমানে ঢাকা মহানগরে ৬৬টি কিশোর গ্যাংয়ের ১ হাজার ৪২ জন সদস্য রয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরে ৫৭টি গ্যাংয়ে ৩১৬ জন সদস্য, খুলনা মহানগরে পাঁচটি গ্যাংয়ে ৩৫ জন, গাজীপুর মহানগরে পাঁচটি গ্যাংয়ে ৬৯ জন, ঢাকা বিভাগে ২৪টি গ্যাংয়ের ৩৪৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১০টি গ্যাংয়ে ১১৪ জন, খুলনা বিভাগে দুটি গ্যাংয়ে ১৩ জন, বরিশাল বিভাগে চারটি গ্যাংয়ে ৫৮ জন ছাড়া সিলেট ও রাজশাহী বিভাগে ১৮ জনের একটি তালিকা করা হয়েছে।

পুলিশের সদর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, কিশোর গ্যাংয়ের নেতা ও সদস্যদের অপরাধ দমন ও গ্রেপ্তারের জন্য প্রতিটি মহানগর ও বিভাগে পৃথক তালিকা পাঠানো হয়েছে। রাজধানী ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের উৎপাত রয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরীতে কিশোর অপরাধের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০৩টি মামলাও হয়েছে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমরা কিশোর গ্যাং কালচার নির্মূলের জন্য কিশোরদের অভিভাবক ও স্কুলশিক্ষকদের সচেতন করার কার্যক্রম চালিয়ে আসছি। এ ছাড়া কিশোর-তরুণদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও খেলাধুলার সঙ্গে বেশি সম্পৃক্ত করার জন্য বলছি। এর ফলে কিশোর-তরুণরা অপরাধপ্রবণতা থেকে বের হয়ে আসবে। একই সঙ্গে যারা ইতিমধ্যে গ্যাং কালচারে ঢুকে অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

গাজীপুর মহানগরীর পুলিশ কমিশনার মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমি গাজীপুর মহানগরের কমিশনার হিসেবে যোগদান করার পর সব থানার ওসিসহ মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের স্পষ্টভাবে কিশোর গ্যাং বন্ধ করার নির্দেশনা দিয়েছি। বর্তমানে গাজীপুর মহানগরে কোনো কিশোর গ্যাং থাকার কথা নয়। তার পরও যদি কোনো গ্যাং থাকে তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

কিশোর গ্যাংয়ের নেপথ্যে রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়া

পুলিশ সদর দপ্তরের স্পেশাল ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট শাখা থেকে সারা দেশের কিশোর গ্যাংয়ের একটি তালিকা সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব ইউনিটের কাছে পাঠানো হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে পাঠানো তালিকাটি এই প্রতিবেদক সংগ্রহ করেছেন। ওই তালিকায় দেখা গেছে, প্রতিটি এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের নেপথ্যে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর বা রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তালিকায় মদদদাতা হিসেবে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২১ জন ওয়ার্ড কমিশনারের নাম উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া তিনজন এমপি, প্রয়াত এমপির ভাই, শ্যালক, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ওয়ার্ড ও মহানগর পর্যায়ের বিভিন্ন নেতাসহ আওয়ামী লীগের তিনজন উচ্চপর্যায়ের নেতার নামও রয়েছে।

প্রশ্রয়দাতা হিসেবে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে নাম থাকা ধানমন্ডি ও রায়েরবাজার এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বাবলা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘অনেক সময় কিশোর গ্যাংয়ের নেতা বা সদস্যরা অমুক ভাই-তমুক ভাইয়ের নাম ব্যবহার করে। কিন্তু আদৌ তার সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের লোকজনের সম্পর্ক আছে কি না, তা জানতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের লোকজন সব খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে। আমি ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে স্কুল-কলেজের শিক্ষক, মসজিদ-মাদ্রাসার ইমাম বা শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে এগুলো প্রতিরোধে নিয়মিত কাজ করি। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করে কিশোর অপরাধীদের সুপথে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার মুজিব সরোয়ার মাসুম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমি কিশোর গ্যাং পছন্দ করি না। এগুলো প্যাট্রোনাইজ করার প্রশ্নই আসে না। এগুলো দমনের দায়িত্ব পুলিশের। পুলিশ অনুসন্ধান করে আইনগত ব্যবস্থা নিক, আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে আমরা সহযোগিতা করব।’

রাজধানীর কিশোর গ্যাংয়ের লিডার যারা

ঢাকা মহানগরীর কিশোর অপরাধীদের তালিকায় পল্লবী এলাকায় সুজন ও রাসেল নামে দুই তরুণ একটি গ্যাং পরিচালনা করেন। এ ছাড়া সুমন গ্যাং, বিপ্লব মৃধা গ্যাং, সাগর গ্রুপ, কামরুল ইসলাম জয় ও আরজু ওরফে বিহারি আরজু নামে দুই তরুণের একটি গ্যাং, সোহাগ গ্রুপ, রনি গ্রুপ ও সোহেল একটি গ্যাং পরিচালনা করেন।

মিরপুরের দারুসসালাম এলাকায় আরাফাত নামে এক তরুণ একটি কিশোর গ্যাং পরিচালনা করেন। তিনি ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক। একই এলাকায় অন্যান্য কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে নয়ন গ্রুপ অন্যতম।

মিরপুর এলাকায় ইমন নামে এক কিশোরের গ্যাং রয়েছে। তার আসল নাম নাজিমুর রহমান। এ ছাড়া সেলিম ও ফয়সাল নামে দুই কিশোর একটি গ্যাং পরিচালনা করে। তাদের দলে সদস্য রয়েছে ৯ জন। হৃদয় ও শাকিল নামে দুজনও পৃথক দুটি গ্যাং পরিচালনা করেন। মোহাম্মদপুরে লওঠেলা নামে একটি কিশোর গ্যাং রয়েছে। চাঁদ উদ্যানকেন্দ্রিক এই গ্যাংয়ের দলনেতা হলেন সাইদুল ইসলাম রকি। জিনজির নামে বাঁশবাড়ী এলাকায় আরেকটি গ্রুপ পরিচালনা করেন হৃদয় মিয়া ওরফে স্লো হৃদয়। মোহাম্মদপুরের রাজিয়া সুলতানা রোড এলাকায় পাটালী নামে আরেকটি কিশোর গ্যাং পরিচালনা করেন ফালান ওরফে হাফিজুর রহমান। এ ছাড়া গাংচিল নামে মোহাম্মদপুরের অন্য একটি গ্যাংয়ের লিডার হলেন লম্বু মোশাররফ ও মানিক।

ডেমরার দনিয়া এলাকায় একটা কিশোর গ্যাং পরিচালনা করেন কামরুল হাসান পলাশ। তার দলে ২০-২৫ জন সদস্য রয়েছে। ইয়াছিন ওরফে লিটনের দলে ১০-১২ জন সদস্য রয়েছে। বৃহত্তর ওয়ারী এলাকায় মুক্তার মিয়ার গ্রুপে ১০ জন, শেখদি নাসির গ্রুপে ৮-৯ জন, জুয়েলের গ্রুপে ১০-১২ জন, প্রকাশের গ্রুপে ৫ জন, আলামিন গ্রুপে ৪ জন, সাইদ গ্রুপে ৮-১০ জন, শান্ত গ্রুপে ১০-১২ জন, শহীদ ফারুক সড়ক এলাকায় ভাগিনা সুমন গ্রুপে ১৪-১৫ জন, বাঁশেরপুল এলাকায় চপলের ফকিং গ্রুপ, আরিফ ওরফে হুড আরিফের একটি গ্রুপ রয়েছে। সূত্রাপর এলাকায় হানি সিং নামে জয় একটি কিশোর গ্যাং পরিচালনা করেন। তার গ্রুপের সদস্য ৮-১০ জন। লালচান মোকিম লেন এলাকায় ফেরদৌস গ্রুপে ৫-৭ জন, গেন্ডারিয়ায় আরমান গ্রুপে ১২-১৫ জন, চালকনগর লেনের সোহাগ গ্রুপে ৮-১০ জন, বনগ্রাম এলাকায় নিশাত গ্রুপে ১৫-২০ জন সদস্য রয়েছে।

ধানমন্ডি এলাকায় সক্রিয় রয়েছে তৌসিফ গ্রুপ, রায়েরবাজারে সৈকত গ্রুপ, অরভিল-আলভির ব্রাদারহুড গ্রুপ, কালা আরাফাতের সিটিএন গ্রুপ, ল্যাব সাকিব গ্রুপ সক্রিয়। লালবাগে জুম্মন গ্রুপ, প্রবাল গ্রুপ, বাবু ও জিহাদ গ্রুপ, জন গ্রুপ, আহাদ গ্রুপ, সাগর গ্রুপ ও সুমন গ্রুপ সক্রিয়। এ ছাড়া তুহিন ও রিয়াজ গ্রুপ, ইমন ও সাব্বির গ্রুপ, পাত্তি ও রাব্বি গ্রুপ সক্রিয়। প্রতিটি গ্রুপেই ১৫-২০ জন করে সদস্য রয়েছে।

কামরাঙ্গীরচর এলাকায় ইয়াছিন, শুভ, ফয়সাল, ইব্রাহীম ও ফাহিম নামে পাঁচ তরুণ পৃথক গ্রুপ পরিচালনা করেন। পূর্বাচল এলাকায় সাদ্দাম হোসেন ওরফে কানা সাদ্দাম, খিলক্ষেতে কায়েস, আরিফ, তৌকির আহমেদ, অলিউল ইসলাম, ডিসকো আলামিন, মেহেদী হাসান, সুমন ও রফিকুল ইসলাম পৃথক গ্রুপ পরিচালনা করেন।

দক্ষিণখানে শান্ত গ্রুপ, ইয়ং স্টার গ্রুপ, ডিজে গ্রুপ ও রাসেল গ্রুপ সক্রিয়। উত্তরা এলাকায় ডিসকো সেতু ডিসকো বয়েজ নামে একটি গ্রুপ পরিচালনা করেন। এ ছাড়া নাইন স্টার গ্রুপ, নাইন এমএম গ্রুপ, বিগবস গ্রুপ, পাওয়ার গ্রুপ, জামালী ধ্রুবর গ্রুপ সক্রিয়। সবুজবাগ এলাকায় রয়েছে তকবির ওরফে হাতকাটা তকবির ও রনি বাহিনী। রাজারবাগ, কালীবাড়ি ও কুসুমবাগ এলাকায় তাদের পদচারণা বেশি। রনি ওরফে গুজা রনি ও দাতভাঙ্গা মামুনের বাহিনী সক্রিয় কাচারীপাড়া, নয়াবাগ, নন্দীপাড়া, মাদারটেক ও দক্ষিণগাঁও এলাকায়। বেলাল ও নয়ন গ্রুপ সক্রিয় মদিনাবাগ, উত্তর মুগদা, দক্ষিণ মুগদা, মান্ডা ও মানিকনগর এলাকায়।

বিষয়:

গুম প্রতিরোধে প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার: আসিফ নজরুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও।
গতকাল শনিবার রাজধানীর গুলশানের হোটেল আমারিতে অনুষ্ঠিত ‘ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ: জোরপূর্বক গুম মোকাবিলায় বিচার বিভাগের ভূমিকা’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কর্মশালাটি গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির উদ্যোগে এবং ঢাকাস্থ জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
বিচারকদের উদ্দেশে আসিফ নজরুল বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিচার লিখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাদের শিল্পকর্মই তাদের বিচার। তাদের এই প্রস্তাবটি মনে রাখা উচিত।
তিনি বলেন, গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি গুমের বিচার নিশ্চিতের মূল চাবিকাঠি।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। তিনি জানান, কমিশন ইতোমধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গুম সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির জনসংযোগ কর্মকর্তা কে এম খালিদ বিন জামান জানান, কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রেখেছেন, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকারবিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান। ওয়ার্কিং সেশন পরিচালনা করেন কমিশনের সদস্য মো. সাজ্জাদ হোসেন।
কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন কমিশনের সদস্য ড. নাবিলা ইদ্রিস। এই পর্বে গুম-সংক্রান্ত মামলায় প্রমাণ সংগ্রহ, সাক্ষ্যগ্রহণ, মানবাধিকার মানদণ্ডের প্রয়োগ ও বিচার প্রক্রিয়ার জবাবদিহি নিশ্চিতের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
আলোচনায় গুম প্রতিরোধে একটি স্থায়ী গুম প্রতিরোধ কমিশন গঠন, গুম প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন, বিচার বিভাগের আওতায় স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা প্রতিষ্ঠা, গুম সংক্রান্ত মামলার জটিলতা নিরসনে মনিটরিং সেল গঠন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, বিচারকদের জন্য বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ আয়োজন, ভিক্টিমদের সাইকোলজিক্যাল ও লিগ্যাল সহযোগিতা নিশ্চিতকরণ, ভিকটিমদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনসহ অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন, অনলাইন জিডি সহজীকরণ, চিহ্নিত মামলাগুলো অগ্রাধিকারভিত্তিতে নিষ্পন্ন করা, বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছে ভিক্টিমদের সহজে পৌঁছানোর ব্যবস্থা গ্রহণ, ম্যাজিস্ট্রেটদের মিথ্যা মামলা নিরসন সংক্রান্ত ক্ষমতা প্রদান এবং বিচার বিভাগ ও কমিশনের মধ্যে তথ্য বিনিময়ের কাঠামো উন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ উঠে আসে।
দেশের বিভিন্ন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে কর্মরত বিচারকসহ প্রায় ৯০ জন প্রশিক্ষণার্থী এতে অংশগ্রহণ করেন।


টরন্টো নয়, কমান্ডার সোহায়েল কেরানীগঞ্জ কারাগারে আটক: কারা কর্তৃপক্ষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোহাম্মদ সোহায়েলকে কানাডার টরন্টোতে দেখা গেছে– সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এমন তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জেল কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটি স্পষ্ট করেছে, তিনি বর্তমানে কেরানীগঞ্জ কারাগারে আটক আছেন।

শনিবার বেলা ১২টার দিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কারা কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, কমান্ডার সোহায়েল সংক্রান্ত এক‌টি প্রপাগন্ডা ছা‌ড়া‌নো হচ্ছে। যা সত‌্য নয়। তি‌নি বর্তমা‌নে কেরানীগঞ্জ কারাগা‌রে আটক আছেন।

জনগণকে বিভ্রান্তিকর তথ্য বা গুজবে বিশ্বাস না করতে আহ্বান জানিয়ে জেল কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো এসব পোস্টের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো সম্পর্ক নেই।

এর আগে শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট ভাইরাল হয়, যেখানে দাবি করা হয়—রিয়ার অ্যাডমিরাল সোহাইলকে এক সামরিক কর্মকর্তা টরন্টোর স্কারবরো এলাকায় দেখেছেন।


ডাব চুরি করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে প্রাণ গেল এক ব্যক্তির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি 

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় ডাব চুরি করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তির নাম আসলাম হোসেন (৪৫)। তিনি উপজেলার কোলা ইউনিয়নের পারিচা গ্রামের মোলায়েম এর ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার ভোররাতে বদলগাছী উপজেলার আক্কেলপুর মধ্যে পাড়া (মণ্ডল পাড়া) গ্রামে মুসা নামে এক ব্যক্তির পুকুরপাড়ে ডাব গাছে উঠেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, ডাব চুরি করার সময় তিনি গাছ থেকে নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

পরে সকালে স্থানীয়রা গাছের নিচে ডাব সহ লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে বদলগাছী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।

বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ডাব গাছে ওঠার সময় পা ফসকে পড়ে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।


মেট্রো লাইনের বেয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারী নিহত, চলাচল বন্ধ

আপডেটেড ২৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১৫:৫২
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রো লাইনের বেয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে এক পথচারী যুবকনিহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে পুলিশ প্রাথমিকভাবে নিহত যুবকের নামপরিচয় জানাতে পারেনি।

রোববার (২৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ওই পথচারী মারা যায় বলে জানান তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন।

তিনি বলেন, ফার্মগেট মেট্রো স্টেশনের নিচে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সামনের ফুটপাত দিয়ে এক পথচারী হেঁটে যাচ্ছিলেন। এমন সময় উপর থেকে বেয়ারিং প্যাড তার মাথার উপরে পড়লে তিনি স্পট ডেড হন।

এ বিষয়ে তেজগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা বেয়ারিং প্যাড পড়ে যাওয়ার বিষয়টি স্টেশন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। বর্তমানে মেট্রো চলাচল বন্ধ রয়েছে।

মরদেহ উদ্ধার করে এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও ‍জানান তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেয়ারিং পড়ে একজন মারা যাওয়ার পাশাপাশি ফুটপাতে একটি চায়ের দোকানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার ফার্মগেট ও বিজয় সরণির একটি অংশে মেট্রো লাইনের ভায়াডাক্টের চারটি স্প্রিং থেকে একটি স্প্রিং সরে যায়।

উল্লেখ্য, বেয়ারিং প্যাড বিশেষ ধরনের রাবার দিয়ে তৈরি উপাদান, যা পিয়ার ও ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে বসানো হয়।


নারায়ণগঞ্জে কারখানায় বিস্ফোরণে ৬ শ্রমিক দগ্ধ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি 

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বিসিক শিল্পাঞ্চলের একটি গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ৬ জন দগ্ধ হয়েছেন। রোববার সকালের এ ঘটনায় দগ্ধদের রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

দগ্ধরা হলেন- কারখানাটির শ্রমিক আলআমিন (৩০), আজিজুল্লা (৩২), সেলিম (৩৫), জালাল মোল্লা (৪০), নাজমুল হুদা (৩৫) এবং সিকিউরিটি গার্ড সুপারভাইজার নুর মোহাম্মদ (৩৫)।

জানা যায়, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কারখানাটির নিচ তলায় কাজ করছিলেন ওই শ্রমিকেরা। এক পর্যায়ে গ্যাস লাইন থেকে বিকট একটি বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ছয় শ্রমিক দগ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসেন।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, সবার অবস্থাই গুরুতর। দগ্ধদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।


জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা উপদেষ্টা পরিষদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি, সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অভিযান পরিচালনা এবং সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠকে বসেছে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।

রোববার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক শুরু হয়েছে।

বৈঠকে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা হলেন ফারুক-ই-আজমসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই বৈঠকের আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে–

১. দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতিকারীদের কর্মকাণ্ড রোধে ব্যবস্থা নেওয়া।

২. জুলাই হত্যাকাণ্ডের শহীদদের মামলার রেকর্ড, তদন্ত ও অগ্রগতি বিষয়ক আলোচনা এবং দেশে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী উসকানিমূলক সাইবার প্রচারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

৩. নারী ও শিশুনির্যাতন এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনগত ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা।

৪. মাদকের অপব্যবহার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্পর্কিত আলোচনা।
৫. শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিন পরবর্তী সন্ত্রাসী কার্যক্রমের প্রতিরোধ, নির্মূল ও নিয়ন্ত্রণ এবং নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনগুলোর অপতৎপরতা রোধে ব্যবস্থা নেওয়া।

৬. গারমেন্টস বা শিল্পকারখানার শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ নিশ্চিত করা।

৭. গারমেন্টস কারখানা, ওষুধ শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির তৎপরতা বিষয়ে আলোচনা।

৮. অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চালানোর বিষয়ে আলোচনা।

৯. সীমান্ত ও পার্বত্যাঞ্চলের পরিস্থিতি বিষয়ক আলোচনা।

১০. রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ক আলোচনা।

১১. মা ইলিশ সংরক্ষণ বিষয়ে আলোচনা।


বোয়ালখালীতে বিরল দৃশ্য; মগভর্তি পানি খেল বিষধর গোখরো

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বোয়ালখালী(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বোয়ালখালীতে মগ ভর্তি পানি পান করছে এক বিষধর খৈয়া গোখরো সাপ— এমন বিরল দৃশ্য দেখা গেছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার কালায়ারহাট বাদামতল এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।

‘স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ’-এর সদস্য অয়ন মল্লিক জানান, স্থানীয় এক ওঝা সাপটি দিয়ে মানুষকে প্রতারণা করছিল। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে সাপটি উদ্ধার করেন।

অয়ন বলেন, “সাপটি অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। পরে আমি মগ ভর্তি পানি দিলে সেটি ধীরে ধীরে পান করতে থাকে।”

তিনি আরও জানান, ওঝা সাপটির বিষদাঁত ভেঙে ফেলে এবং ভেনম গ্ল্যান্ড (বিষ থলি) কেটে দিয়েছে। বর্তমানে সাপটি পর্যবেক্ষণে আছে। সুস্থ হলে সেটি বনে অবমুক্ত করা হবে।

উল্লেখ্য ,খৈয়া গোখরো সাপ সাধারণত চট্টগ্রাম অঞ্চলে খুব একটা দেখা যায় না।


মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে টেকনাফে নারী আহত, সীমান্তে আতঙ্ক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে কক্সবাজারের টেকনাফে ছেনুয়ারা বেগম (৩৫) নামে এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। শনিবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার কিছু আগে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন লম্বাবিল গ্রামের বাঘঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত ছেনুয়ারা বেগম স্থানীয় বাসিন্দা আক্তার হোসেনের স্ত্রী। পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ছেনুয়ারার স্বামী আক্তার হোসেন বলেন, “বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ আমার স্ত্রীর পায়ে গুলি লাগে। এখন সে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।”

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন। তিনি বলেন, “মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে নারী আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সীমান্ত এলাকায় জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

এ ঘটনার সময় স্থানীয় একটি দোকানের ছাউনিতেও গুলি বিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয়দের ভাষ্য, কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের ওপারে মংডু জেলার ঢেকুবনিয়া এলাকায় নিয়মিত গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা সংগঠনগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে।

স্থানীয় শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, “সম্প্রতি ওপারে সংঘর্ষ বেড়েছে। আমরা সীমান্তের লোকজন আতঙ্কে আছি। প্রশাসন ও বিজিবির আরও কঠোর নজরদারি দরকার।”

বিজিবির একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, সীমান্তের ওপারে সংঘর্ষ ও গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটছে এবং এ ঘটনায় বাংলাদেশের এক নারী আহত হয়েছেন। সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সার্বক্ষণিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।


নতুন বাংলাদেশের জন্য শারীরিক-মানসিক সুস্থতার কথা ভাবতে হবে: শারমীন এস মুরশিদ

ন্যাশনাল নিউট্রিশন ও ওয়েলনেস সামিটবিষয়ক কনফারেন্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গতকাল বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সুস্থ ভ্রুণের জন্ম দিতে নিউট্রিশন এবং মেন্টাল হেলথকে এগিয়ে নিতে তরুণ সমাজকে দায়িত্বশীল হওয়ার তাগিদ দিয়ে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, নতুন বাংলাদেশের জন্য অবশ্যই শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার কথা ভাবতে হবে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অডিটরিয়ামে আয়োজিত ন্যাশনাল নিউট্রিশন ও ওয়েলনেস সামিট বিষয়ক দুই দিনব্যাপী কনফারেন্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, আগামীর বাংলাদেশ, নতুন বাংলাদেশের কথা ভাবতে হলে অবশ্যই ভাবতে হবে আমাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার কথা। একটি সুস্থ ভ্রুণের জন্ম দিতে নিউট্রিশন এবং মেন্টাল হেলথকে এগিয়ে নিতে তরুণ সমাজকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ইসলাম আমাদের যে প্রথম শিক্ষা দেয় সেটা হলো- সবাইকে নিয়ে চলা, সবাইকে সম্মান করা এবং সবাইকে গ্রহণ করা। সব ধর্মের মানুষকে নিয়েই আমার বাংলাদেশ। তোমরা যারা আজ তরুণ প্রজন্ম, তোমাদের মধ্যে বোধোদয়ের উন্নতি ঘটাতে হবে, তোমাদের সামাজিক কাজের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। তাহলে তোমরা সমাজে সবাইকে নিয়ে চলতে পারবে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। বাংলাদেশে শতকরা ৫০ ভাগের ঊর্ধ্বে তরুণ সমাজ। তোমাদের হাতেই এ দেশের ভবিষ্যৎ।’

‘তোমরা যারা সামাজিক সংগঠন করো তোমাদেরকে নতুন করে ভাবতে হবে, ভেঙে যাওয়া দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজ, সেই সমাজে একটা নতুন করে বাঁচার আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা, একটা সুস্থ, সুন্দর দেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা। সেই যে স্বপ্ন আমাদের ৫৪ বছর আগে মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে আমরা যে স্বপ্ন দেখেছি। হারিয়ে যাওয়া সেই স্বপ্ন বার বার আশাহত হওয়া জনগণ, আশাহত তরুণ এবং চব্বিশে ফেটে পড়া সেই রাগ ছিল তরুণদের ন্যায্য অধিকার, যা তারা বড়দেরকে আঙ্গুল দিয়ে শিখিয়ে দিয়ে গেছে’, যোগ করেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান খান এবং সেরাক বাংলাদেশ সংগঠনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এস এম সৈকত বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে যুব সংগঠনের নিরাপদ এলায়েন্সের ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিন সাদাব লিয়ান, সাধারণ সম্পাদক মাসুম মুহাম্মদসহ, আনকোরা, মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, হার্টওয়াইজ, নিউট্রিশন, নিউট্রিফিকেশন ও নিরাপদ অ্যালায়েন্সের সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


বিমানবন্দরের অগ্নিকাণ্ড, তদন্তে আসছে ৪ দেশের বিশেষজ্ঞ টিম

আপডেটেড ২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১৫:১২
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের জন্য ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও তুরস্কের বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তদন্ত করে কারণ ও দায় নির্ধারণে সহায়তা করবেন।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) বেলা পৌনে ১২টায় হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজ ও ই-গেট পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। ফায়ার সার্ভিস ফেল করেনি। তারা সময়মতো ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভাতে কাজ করেছে। এয়ারপোর্ট অথরিটির চারটি ইউনিট চার মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। ফায়ার ব্রিগেডের ইউনিটগুলোও ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে আসে। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে কারণ ওই জায়গায় খাদ্যপণ্য বেশি ছিল, কেমিক্যাল নয়।

তিনি আরো বলেন, বিমানবন্দরে ইলেকট্রনিক গেট স্থাপন দ্রুত চালুর বিষয়ে আলোচনা চলছে। এছাড়া রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের পাসপোর্ট সংক্রান্ত ভোগান্তি কমাতে সরকার পদক্ষেপ নেবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

বিমানবন্দরের ফায়ার ইউনিটের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, যে ফায়ার ইউনিট বিমান পরিচালনার জন্য থাকে, সেটি কার্গো ভিলেজেও কাজ করতে পারে—এতে কোনো সমস্যা নেই। যেমন আমরা বাসায় যে পোশাক পরি, তা প্রয়োজনে পরে আত্মীয়ের বাড়িতেও যাওয়া যায়।

এ সময় বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।


আমেরিকা থেকে প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে গম আমদানি শুরু 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) আলোকে বাংলাদেশ সরকার প্রথমবারের মতো সরকার টু সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি কার্যক্রম শুরু করছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, এই চুক্তির আওতায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করা হবে, যার প্রথম চালান হিসেবে ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গমবাহী জাহাজ আজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহিঃনোঙরে পৌঁছেছে।

জাহাজে রাখা গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গমের নমুনা পরীক্ষা শেষে দ্রুত খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গমের মধ্যে ৩৪ হাজার ১৭০ মেট্রিক টন চট্টগ্রামে এবং অবশিষ্ট ২২ হাজার ৭৮৯ মেট্রিক টন গম মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে।


জাতিসংঘকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে : ড. ইউনূস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শান্তি ও বহুপাক্ষিকতার যৌথ আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য জাতিসংঘকে ক্রমাগত বিকশিত হতে হবে এবং সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, ‘যদি জাতিসংঘ আমাদের সবার শান্তি ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই পরিবর্তিত বিশ্ব বাস্তবতার সঙ্গে অভিযোজিত হতে হবে। আমরা জাতিসংঘ সংস্কারের পক্ষে— যাতে এটি আরও গতিশীল, সমন্বিত এবং পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সবার প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হয়।’

প্রধান উপদেষ্টা ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন। এ বছর জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার ৮০তম বার্ষিকী পালন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এই তাৎপর্যপূর্ণ দিনে আমরা অঙ্গীকার করছি যে, জাতিসংঘ সনদে কল্পিত শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল বিশ্ব গড়ে তুলতে বাংলাদেশ তার দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে।’

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ, জাতিসংঘ সব অংশীদার এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে ‘জাতিসংঘ দিবস’-এর শুভেচ্ছা জানান।

তিনি বলেন, ‘এ দিনটি হলো ভয় ও অভাবমুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলার অঙ্গীকার নতুন করে স্মরণ করার একটি সুযোগ। একই সঙ্গে জাতিসংঘ যে বহুপাক্ষিক সহযোগিতা ও ঐকমত্যের চেতনা বহন করে, তা পুনরুজ্জীবিত করারও সময়।’

গত আট দশকে জাতিসংঘ তার কার্যক্রমের পরিধি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে এবং বিশ্বজুড়ে সম্পৃক্ততা আরও গভীর করেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা, মানবাধিকার সুরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়ন ও মানবকল্যাণে এক অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ পাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ একটি সক্রিয়, দায়িত্বশীল ও অবদানশীল সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

তিনি বলেন, ‘শান্তির সংস্কৃতির পতাকা হাতে নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে অংশ নিয়েছে এবং নীল হেলমেটধারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম শীর্ষ অবদানকারী দেশ হিসেবে অবস্থান করছে।’

‘আমাদের অনেক সাহসী শান্তিরক্ষী বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন,’ যোগ করেন অধ্যাপক ইউনুস।

তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন, বাণিজ্য কিংবা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রেই হোক—বাংলাদেশসহ বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলো নিয়মভিত্তিক বহুপাক্ষিক ব্যবস্থায় বিকশিত হয়।

‘তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, একতরফা সিদ্ধান্ত ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে বৈষম্যমূলক আচরণের ফলে বিশ্বে উত্তেজনা বেড়ে চলেছে,’ তিনি মন্তব্য করেন।

সাম্প্রতিক সংঘাতসমূহ বিশ্বকে গভীর অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের স্বীকার করতে হবে যে বহুপক্ষীয় কূটনীতি এখন কঠিন পরীক্ষার মুখে। চরম জাতীয়তাবাদ ও মানবিক কষ্টের প্রতি উদাসীনতা মানবজাতির দীর্ঘ সংগ্রামে অর্জিত অগ্রগতিকে ধ্বংস করছে।’

তিনি বলেন, ‘আজ বিশ্বের মানুষ গাজার এক ভয়াবহ গণহত্যার সরাসরি সম্প্রচার প্রত্যক্ষ করছে।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব অঞ্চলেও আমরা রোহিঙ্গাদের অধিকারবঞ্চনা ও নির্যাতনের সাক্ষী। এটি সাংস্কৃতিক পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতির ফল। এ বিষয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নতুন মনোযোগ কামনা করেছি।’


ইউক্রেনের আরও ১০টি এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিলো রাশিয়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক ঘোষণায় জানানো হয়েছে, গত এক সপ্তাহে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক, খারকিভ এবং জাপোরিজঝিয়া অঞ্চলের মোট ১০টি নতুন বসতির দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৭ থেকে ২৪ অক্টোবরের মধ্যে এই এলাকাগুলো রুশ নিয়ন্ত্রণে আসে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, একই সময়সীমায় ইউক্রেনীয় সেনাদের ২২টি অস্ত্রাগার ও সামরিক সরঞ্জামাগার ধ্বংস করা হয়েছে। রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেনীয় বাহিনী একাধিকবার বিমান হামলার চেষ্টা করলেও প্রতিবারই তা ব্যর্থ হয়েছে।

রুশ পক্ষের হিসাব অনুযায়ী, ১৭ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত ইউক্রেন হারিয়েছে একটি এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমান, চারটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ১৮টি গাইডেড বোমা, ১৫টি হিমার্স রকেট এবং ১,৪৪১টি ড্রোন।

রাশিয়ার এই দাবির বিষয়ে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

উল্লেখ্য, ন্যাটো জোটে যোগদানের ইচ্ছা এবং ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া ইস্যু ঘিরে কয়েক বছর ধরে উত্তেজনা চলার পর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া।

গত তিন বছরে রুশ সেনারা ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিজঝিয়া ও খেরসন প্রদেশের অংশবিশেষ দখল করেছে, যা ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের প্রায় এক-দশমাংশ। দখলকৃত এলাকা পুনরুদ্ধারে ইউক্রেনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকায় যুদ্ধ থামার কোনো ইঙ্গিত এখনো দেখা যাচ্ছে না।


banner close