রোববার, ১৯ মে ২০২৪

রাজনীতির ছায়ায় বেপরোয়া কিশোর গ্যাং

আপডেটেড
৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ ১০:০১
নুরুজ্জামান লাবু
প্রকাশিত
নুরুজ্জামান লাবু
প্রকাশিত : ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ ১০:০১

২০২০ সালের মার্চের ঘটনা। রাজধানীর মহাখালীর আমতলীতে সালাম না দেয়ায় রহমত উল্লাহ নামে এক কিশোরকে ছুরিকাঘাতে খুন করে অনন্ত নামে আরেক কিশোর। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে একই ধরনের আরেকটি ঘটনা ঘটে রাজধানীর মুগদা এলাকায়। ব্যান্ডেজ নামে এক কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের সালাম না দেয়ায় হাসান নামে এক কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। গত বছরের অক্টোবরেও ঘটে একই ঘটনা। সালাম দেয়া না দেয়াকে কেন্দ্র করে রাজধানীর পল্লবীতে দুই কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে মারামারি হয়। এ সময় রাকিব নামে এক কিশোর ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়।

শুধু সালাম দেয়া না দেয়া-ই নয়, আধিপত্য বিস্তারসহ নানা রকম তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায়ই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। গত কয়েক বছরে কিশোর গ্যাংয়ের হাতেই খুন হয়েছে অন্তত দেড় শতাধিক কিশোর। একাধিকবার অভিযান চালিয়ে কিশোর অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

কর্মকর্তারা বলছেন, কিশোর অপরাধ দমন তাদের কাছে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন সময় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে কিশোর অপরাধীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতন করা হচ্ছে। তার পরও কিশোর অপরাধীদের দৌরাত্ম্য থামানো যাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, কিশোর অপরাধীদের অপতৎপরতা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারা দেশের কিশোর অপরাধীদের একটি তালিকা তৈরি করেছে। পুলিশের তথ্য বলছে, বর্তমানে সারা দেশে কিশোর অপরাধীদের ১৭৩টি দল সক্রিয় রয়েছে। এসব দলে ২ হাজার ২৯ জন কিশোর রয়েছে। কিশোর অপরাধের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সারা দেশে ৭৮০টি মামলা হয়েছে, এসব মামলায় আসামি ৮৯৬ জন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর অপরাধীরা। মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হলেও কিশোর অপরাধীদের গ্যাং কালচার বন্ধ করা যাচ্ছে না। প্রতিটি গ্যাংয়ের নেপথ্যেই স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের মদদ রয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এ কে এম হাফিজ আক্তার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘কয়েক দিন পর পরই কিশোর অপরাধের ঘটনার মোকাবিলা করতে হচ্ছে আমাদের। তুচ্ছ ঘটনায় একে অপরকে খুন করছে। শুধু আইন প্রয়োগ করে কিশোর অপরাধ দমন করা সম্ভব না। কিশোর অপরাধী এতটাই বেড়েছে যে ধরে ধরে সংশোধনাগারে পাঠালে সেখানেও জায়গা কুলাবে না। আমরা তালিকা তৈরি করে বিট পুলিশের মাধ্যমে নিয়মিত মনিটর করি। কিশোর অপরাধীদের কাউন্সেলিং করে সুপথে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিসহ নানাভাবে কিশোর অপরাধ দমনের জন্য কাজ করছি।’

সংশ্লিষ্টরা জানান, গ্যাং কালচার মূলত শুরু হয় ১৭৮৩ সালে আমেরিকায়, স্ট্রিট গ্যাংয়ের মাধ্যমে। এরপর তা লাতিন আমেরিকাসহ ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে বিভিন্ন সমযে সন্ত্রাসীদের পৃথক গ্যাং থাকলেও এক দশক ধরে এই কিশোরদের মধ্যেও গ্যাং কালচার শুরু হয়েছে। ২০১৭ সালে উত্তরায় আদনান কবির নামে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরকে তার সমবয়সীরা পিটিয়ে হত্যার পর কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

কিশোর অপরাধ নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে একশ্রেণির কিশোর তরুণদের গ্যাং কালচারে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। সহপাঠী, একই পাড়া-মহল্লায় বসবাসকারী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশায় নিয়োজিত বখাটে কিশোর তরুণরা ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একত্রিত হয়ে বাহারি ও চটকদার নাম দিয়ে এলাকাভিত্তিক গ্যাং তৈরি করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। ডিসকো বয়েজ, বিগ বস, নাইন স্টার, ব্ল্যাক রোজ, নাইন এমএম বয়েজ, ভাইপার ইত্যাদি নামে এলাকাভিত্তিক গ্যাংগুলোর কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। সারা দেশের ১৭৩টি কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীতেই ১২৩টি। এসব গ্যাং সদস্য ফেসবুক ও ইন্টারনেটে গ্রুপ তৈরি করে ইভটিজিং, ধর্ষণ, খুন, মাদক গ্রহণ, চাঁদাবাজি, ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে দখলবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এ ছাড়া কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুনের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। গ্যাং কালচারে জড়িয়ে পড়া এসব কিশোর অপরাধীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে না পারলে ভবিষ্যতে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে বলে শঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান, অ্যাডভেঞ্চার ও হিরোইজমের চিন্তাভাবনা থেকেই কিশোরদের মধ্যে গ্যাং কালচার শুরু হলেও তারা এখন ভয়ংকর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। মাদকের নেশায় জড়িয়ে পড়া থেকে শুরু করে তারা চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং, মাদক ব্যবসা, ঝুঁকিপূর্ণ বাইক ও কার রেসিং, হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, মারামারি ও এলাকাভিত্তিক আধিপত্যের ঘটনা ঘটাচ্ছে। এ ছাড়া সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব, বখাটেপনা, বুলিং, র‌্যাগিং ইত্যাদি নিয়েও কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে নিজেদের মারামারি ও হতাহতের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র বলছে, বর্তমানে ঢাকা মহানগরে ৬৬টি কিশোর গ্যাংয়ের ১ হাজার ৪২ জন সদস্য রয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরে ৫৭টি গ্যাংয়ে ৩১৬ জন সদস্য, খুলনা মহানগরে পাঁচটি গ্যাংয়ে ৩৫ জন, গাজীপুর মহানগরে পাঁচটি গ্যাংয়ে ৬৯ জন, ঢাকা বিভাগে ২৪টি গ্যাংয়ের ৩৪৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১০টি গ্যাংয়ে ১১৪ জন, খুলনা বিভাগে দুটি গ্যাংয়ে ১৩ জন, বরিশাল বিভাগে চারটি গ্যাংয়ে ৫৮ জন ছাড়া সিলেট ও রাজশাহী বিভাগে ১৮ জনের একটি তালিকা করা হয়েছে।

পুলিশের সদর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, কিশোর গ্যাংয়ের নেতা ও সদস্যদের অপরাধ দমন ও গ্রেপ্তারের জন্য প্রতিটি মহানগর ও বিভাগে পৃথক তালিকা পাঠানো হয়েছে। রাজধানী ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের উৎপাত রয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরীতে কিশোর অপরাধের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০৩টি মামলাও হয়েছে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমরা কিশোর গ্যাং কালচার নির্মূলের জন্য কিশোরদের অভিভাবক ও স্কুলশিক্ষকদের সচেতন করার কার্যক্রম চালিয়ে আসছি। এ ছাড়া কিশোর-তরুণদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও খেলাধুলার সঙ্গে বেশি সম্পৃক্ত করার জন্য বলছি। এর ফলে কিশোর-তরুণরা অপরাধপ্রবণতা থেকে বের হয়ে আসবে। একই সঙ্গে যারা ইতিমধ্যে গ্যাং কালচারে ঢুকে অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

গাজীপুর মহানগরীর পুলিশ কমিশনার মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমি গাজীপুর মহানগরের কমিশনার হিসেবে যোগদান করার পর সব থানার ওসিসহ মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের স্পষ্টভাবে কিশোর গ্যাং বন্ধ করার নির্দেশনা দিয়েছি। বর্তমানে গাজীপুর মহানগরে কোনো কিশোর গ্যাং থাকার কথা নয়। তার পরও যদি কোনো গ্যাং থাকে তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

কিশোর গ্যাংয়ের নেপথ্যে রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়া

পুলিশ সদর দপ্তরের স্পেশাল ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট শাখা থেকে সারা দেশের কিশোর গ্যাংয়ের একটি তালিকা সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব ইউনিটের কাছে পাঠানো হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে পাঠানো তালিকাটি এই প্রতিবেদক সংগ্রহ করেছেন। ওই তালিকায় দেখা গেছে, প্রতিটি এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের নেপথ্যে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর বা রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তালিকায় মদদদাতা হিসেবে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২১ জন ওয়ার্ড কমিশনারের নাম উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া তিনজন এমপি, প্রয়াত এমপির ভাই, শ্যালক, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ওয়ার্ড ও মহানগর পর্যায়ের বিভিন্ন নেতাসহ আওয়ামী লীগের তিনজন উচ্চপর্যায়ের নেতার নামও রয়েছে।

প্রশ্রয়দাতা হিসেবে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে নাম থাকা ধানমন্ডি ও রায়েরবাজার এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বাবলা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘অনেক সময় কিশোর গ্যাংয়ের নেতা বা সদস্যরা অমুক ভাই-তমুক ভাইয়ের নাম ব্যবহার করে। কিন্তু আদৌ তার সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের লোকজনের সম্পর্ক আছে কি না, তা জানতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের লোকজন সব খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে। আমি ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে স্কুল-কলেজের শিক্ষক, মসজিদ-মাদ্রাসার ইমাম বা শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে এগুলো প্রতিরোধে নিয়মিত কাজ করি। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করে কিশোর অপরাধীদের সুপথে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার মুজিব সরোয়ার মাসুম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমি কিশোর গ্যাং পছন্দ করি না। এগুলো প্যাট্রোনাইজ করার প্রশ্নই আসে না। এগুলো দমনের দায়িত্ব পুলিশের। পুলিশ অনুসন্ধান করে আইনগত ব্যবস্থা নিক, আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে আমরা সহযোগিতা করব।’

রাজধানীর কিশোর গ্যাংয়ের লিডার যারা

ঢাকা মহানগরীর কিশোর অপরাধীদের তালিকায় পল্লবী এলাকায় সুজন ও রাসেল নামে দুই তরুণ একটি গ্যাং পরিচালনা করেন। এ ছাড়া সুমন গ্যাং, বিপ্লব মৃধা গ্যাং, সাগর গ্রুপ, কামরুল ইসলাম জয় ও আরজু ওরফে বিহারি আরজু নামে দুই তরুণের একটি গ্যাং, সোহাগ গ্রুপ, রনি গ্রুপ ও সোহেল একটি গ্যাং পরিচালনা করেন।

মিরপুরের দারুসসালাম এলাকায় আরাফাত নামে এক তরুণ একটি কিশোর গ্যাং পরিচালনা করেন। তিনি ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক। একই এলাকায় অন্যান্য কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে নয়ন গ্রুপ অন্যতম।

মিরপুর এলাকায় ইমন নামে এক কিশোরের গ্যাং রয়েছে। তার আসল নাম নাজিমুর রহমান। এ ছাড়া সেলিম ও ফয়সাল নামে দুই কিশোর একটি গ্যাং পরিচালনা করে। তাদের দলে সদস্য রয়েছে ৯ জন। হৃদয় ও শাকিল নামে দুজনও পৃথক দুটি গ্যাং পরিচালনা করেন। মোহাম্মদপুরে লওঠেলা নামে একটি কিশোর গ্যাং রয়েছে। চাঁদ উদ্যানকেন্দ্রিক এই গ্যাংয়ের দলনেতা হলেন সাইদুল ইসলাম রকি। জিনজির নামে বাঁশবাড়ী এলাকায় আরেকটি গ্রুপ পরিচালনা করেন হৃদয় মিয়া ওরফে স্লো হৃদয়। মোহাম্মদপুরের রাজিয়া সুলতানা রোড এলাকায় পাটালী নামে আরেকটি কিশোর গ্যাং পরিচালনা করেন ফালান ওরফে হাফিজুর রহমান। এ ছাড়া গাংচিল নামে মোহাম্মদপুরের অন্য একটি গ্যাংয়ের লিডার হলেন লম্বু মোশাররফ ও মানিক।

ডেমরার দনিয়া এলাকায় একটা কিশোর গ্যাং পরিচালনা করেন কামরুল হাসান পলাশ। তার দলে ২০-২৫ জন সদস্য রয়েছে। ইয়াছিন ওরফে লিটনের দলে ১০-১২ জন সদস্য রয়েছে। বৃহত্তর ওয়ারী এলাকায় মুক্তার মিয়ার গ্রুপে ১০ জন, শেখদি নাসির গ্রুপে ৮-৯ জন, জুয়েলের গ্রুপে ১০-১২ জন, প্রকাশের গ্রুপে ৫ জন, আলামিন গ্রুপে ৪ জন, সাইদ গ্রুপে ৮-১০ জন, শান্ত গ্রুপে ১০-১২ জন, শহীদ ফারুক সড়ক এলাকায় ভাগিনা সুমন গ্রুপে ১৪-১৫ জন, বাঁশেরপুল এলাকায় চপলের ফকিং গ্রুপ, আরিফ ওরফে হুড আরিফের একটি গ্রুপ রয়েছে। সূত্রাপর এলাকায় হানি সিং নামে জয় একটি কিশোর গ্যাং পরিচালনা করেন। তার গ্রুপের সদস্য ৮-১০ জন। লালচান মোকিম লেন এলাকায় ফেরদৌস গ্রুপে ৫-৭ জন, গেন্ডারিয়ায় আরমান গ্রুপে ১২-১৫ জন, চালকনগর লেনের সোহাগ গ্রুপে ৮-১০ জন, বনগ্রাম এলাকায় নিশাত গ্রুপে ১৫-২০ জন সদস্য রয়েছে।

ধানমন্ডি এলাকায় সক্রিয় রয়েছে তৌসিফ গ্রুপ, রায়েরবাজারে সৈকত গ্রুপ, অরভিল-আলভির ব্রাদারহুড গ্রুপ, কালা আরাফাতের সিটিএন গ্রুপ, ল্যাব সাকিব গ্রুপ সক্রিয়। লালবাগে জুম্মন গ্রুপ, প্রবাল গ্রুপ, বাবু ও জিহাদ গ্রুপ, জন গ্রুপ, আহাদ গ্রুপ, সাগর গ্রুপ ও সুমন গ্রুপ সক্রিয়। এ ছাড়া তুহিন ও রিয়াজ গ্রুপ, ইমন ও সাব্বির গ্রুপ, পাত্তি ও রাব্বি গ্রুপ সক্রিয়। প্রতিটি গ্রুপেই ১৫-২০ জন করে সদস্য রয়েছে।

কামরাঙ্গীরচর এলাকায় ইয়াছিন, শুভ, ফয়সাল, ইব্রাহীম ও ফাহিম নামে পাঁচ তরুণ পৃথক গ্রুপ পরিচালনা করেন। পূর্বাচল এলাকায় সাদ্দাম হোসেন ওরফে কানা সাদ্দাম, খিলক্ষেতে কায়েস, আরিফ, তৌকির আহমেদ, অলিউল ইসলাম, ডিসকো আলামিন, মেহেদী হাসান, সুমন ও রফিকুল ইসলাম পৃথক গ্রুপ পরিচালনা করেন।

দক্ষিণখানে শান্ত গ্রুপ, ইয়ং স্টার গ্রুপ, ডিজে গ্রুপ ও রাসেল গ্রুপ সক্রিয়। উত্তরা এলাকায় ডিসকো সেতু ডিসকো বয়েজ নামে একটি গ্রুপ পরিচালনা করেন। এ ছাড়া নাইন স্টার গ্রুপ, নাইন এমএম গ্রুপ, বিগবস গ্রুপ, পাওয়ার গ্রুপ, জামালী ধ্রুবর গ্রুপ সক্রিয়। সবুজবাগ এলাকায় রয়েছে তকবির ওরফে হাতকাটা তকবির ও রনি বাহিনী। রাজারবাগ, কালীবাড়ি ও কুসুমবাগ এলাকায় তাদের পদচারণা বেশি। রনি ওরফে গুজা রনি ও দাতভাঙ্গা মামুনের বাহিনী সক্রিয় কাচারীপাড়া, নয়াবাগ, নন্দীপাড়া, মাদারটেক ও দক্ষিণগাঁও এলাকায়। বেলাল ও নয়ন গ্রুপ সক্রিয় মদিনাবাগ, উত্তর মুগদা, দক্ষিণ মুগদা, মান্ডা ও মানিকনগর এলাকায়।

বিষয়:

‘সরকার টেকসই নগরায়ণে বদ্ধপরিকর’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বর্তমান সরকার নাগরিক সুবিধাসম্পন্ন টেকসই নগরায়ণে বদ্ধপরিকর। অপরিকল্পিত নগরায়ণ যেমন দীর্ঘমেয়াদে কোনো সুবিধা বয়ে আনে না, তেমনি পরিবেশের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

তাজুল ইসলাম শনিবার সকালে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে নগর গবেষণা কেন্দ্রের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘নগরায়ণে বাংলাদেশ ও নগর পরিবেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমার গ্রাম, আমার শহর উদ্যোগ স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অনন্য সাধারণ ভূমিকা পালন করবে। এই উদ্যোগে গ্রাম ও সমাজের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের জন্য যেমন অবকাঠামোগত নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে, তেমনি গ্রামের স্বকীয়তা ও পরিবেশগত ভারসাম্য যাতে বজায় থাকে সেদিকেও গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য গ্রামের মানুষের নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করতে হবে। যথাযথ সুষম অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছাড়া অভ্যন্তরীণ মাইগ্রেশন ঠেকানো সম্ভব নয়।

ঢাকায় নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধিতে বহুমুখী প্রয়াস ও সম্মিলিত উদ্যোগ চলমান রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেলের বাস্তবায়ন ছাড়াও সাবওয়ে ও ঢাকা শহরের চারপাশে রিং রোড করার জন্যও পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কোভিড পরিস্থিতি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, ফিলিস্তিন সংকট পুরো বিশ্বকেই সংকটজনক পরিস্থিতিতে ঠেলে দিয়েছে। স্রোতের প্রতিকূলতায়ও বাংলাদেশের যে অগ্রগতি সেটা অব্যাহত রাখতে সব পেশাজীবী, শ্রমজীবী, ছাত্র, সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সম্মিলিত প্রয়াস একান্তই অপরিহার্য।

ইমেরিটাস অধ্যাপক নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের অধ্যাপক ড. ইসরাত ইসলাম, বিআইপি সভাপতি ড. আদিল মুহাম্মদ ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার স্থপতি ইকবাল হাবিব।


মেডিকেল ছাড়া সব ভিসায় ৩ দিন ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতে চলছে জাতীয় লোকসভা নির্বাচন। তারই ধারাবাহিকতায় আগামীকাল সোমবার বনগাঁ আসনে লোকসভা নির্বাচন হবে। ফলে তিন দিন বেনাপোল-পেট্রাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ট্যুরিস্ট, স্টুডেন্ট ও বিজনেস ভিসায় ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারতের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। তবে মেডিকেল ভিসার ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে না।

গতকাল শনিবার সকালে ভারতীয় ইমিগ্রেশনের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বেনাপোল ইমিগ্রেশরে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আযহারুল ইসলাম।

জানা গেছে, গতকাল শনিবার সকাল থেকে আগামীকাল সোমবার ভোট গ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শুধুমাত্র মেডিকেল ও ভারতীয় ভোটার পাসপোর্টধারীরা বেনাপোল-পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন ব্যবহার করতে পারবেন। অন্যান্য ক্যাটাগরি ভিসাপ্রাপ্তদের যেমন- ট্যুরিস্ট, স্টুডেন্ট ও বিজনেস এ সময় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে এ পথে স্বাভাবিক হবে সব ধরনের যাত্রী যাতায়াত।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা নির্বাচন অফিসার স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সব ধরনের আন্তর্জাতিক রুট সিল করা প্রয়োজন। এজন্য ১৭ মে সন্ধ্যা থেকে ২০ মে ভোটগ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত যাত্রী ও যানবাহন যাতায়াত সীমিত করা হয়েছে।

বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি আযহারুল ইসলাম জানান, ওপারে নির্বাচনে তিনদিন ট্যুরিস্ট, স্টুডেন্ট ও বিজনেস ভিসায় ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ভারতীয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন। তবে জরুরি মেডিক্যাল ও ভারতীয় ভোটার পাসপোর্টধারীরা যাতায়াতে বাধা নেই জানান।

এদিকে হঠাৎ করে পাসপোর্টযাত্রী যাতায়াতে ভারতীয় নির্বাচন কমিশনার নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় বিপাকে পড়েছে শত শত বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রীরা। দুই পারে কয়েক শ যাত্রী আটকা পড়ে আছে। তারা সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন হোটেলে আশ্রয় নিয়েছে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর তারা দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করবে বলে জানা গেছে।

বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার শাফায়াত হোসেন বলেন, ‘ভারতে লোকসভা নির্বাচনের কারণে পেট্রাপোল বন্দর তিন দিন বন্ধ থাকবে বলে পেট্রাপোল কাস্টমস থেকে একটি নির্দেশনা পেয়েছি।’


‘কংগ্রেসম্যানদের সই জালকারী বিএনপি একটা জালিয়াত রাজনৈতিক দল'

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৮ মে, ২০২৪ ২১:১৯
 কূটনৈতিক প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কংগ্রেসম্যানদের সই জালকারী, জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টা হাজিরকারী বিএনপি একটা জালিয়াত রাজনৈতিক দল।

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়িতে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, 'আপনাদের মনে আছে, বিএনপি গত বছর ২৮ অক্টোবর জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টাকে হাজির করেছিল। সে বিএনপি কার্যালয়ে শুধু ইংরেজি বলছিল, পুলিশ যখন ধরে নিয়ে গেল তখন দেখি গড়গড়িয়ে বাংলা বলে।‘

তারা আগে বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যানদের সই জাল করেছিল বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, শুধু তাই নয়, তারা সে সময় বলেছিল ভারতের অমিত শাহ ফোন করেছিল। কিন্তু অমিত শাহ’র অফিস থেকে বলা হলো তিনি কাউকে ফোন করেননি, যে আওয়াজ প্রচার করা হয়েছিল সেটা অমিত শাহ’র নয়। এসব জালিয়াতিই তাদের কাজ।

ড. হাছান বলেন, দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি দেখে বিএনপি ও তাদের দোসরদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। মাঝেমধ্যে দেখি জিএম কাদেরেরও মাথা খারাপ হয়ে যায়। নির্বাচনের আগে আমরা দেখেছি বিএনপি প্রতিদিন বিভিন্ন এম্বেসিতে ঘুরে বেড়াত আর দেন দরবার করত, নির্বাচনটা যাতে বন্ধ করা যায়। এসবে কোনো লাভ হয় নাই। নির্বাচন হয়েছে, ৪২ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছে। যদি নির্বাচনের দিন কুয়াশা এবং প্রচন্ড ঠান্ডা না থাকত তাহলে আরো বেশি মানুষ ভোট দিত।

আর বিএনপি যদি নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে মানুষের উপর হামলা, ট্রেনের মধ্যে শিশুসন্তানসহ পুরো পরিবারকে জ্বালিয়ে হত্যা না করত তাহলে ভোটের হার ৬০ শতাংশের বেশি হত, বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

অন্যান্য দেশের পরিসংখ্যান উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, গত দু’তিন বছরে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অনেক দেশে নির্বাচন হয়েছে, সেখানে অনেক দেশে ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়েছে। যদিও বা সেখানে নির্বাচনে বর্জন ও প্রতিহতের কোনো হুমকি ছিলনা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে অত্যন্ত চমৎকার নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন যদি চমৎকার না হত তাহলে পৃথিবীর ৮০টা দেশের সরকার কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতেন না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট চিঠি লিখে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, আমরা বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। সর্বশেষ দুদিন আগে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীও আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, এসব কারণে বিএনপির মাথা খারাপ। সম্ভবত সেজন্য বিএনপি নেতা ড. মঈন খান ইদানিং জ্যোতিষীর মতো কথা বলছেন। বয়সে সিনিয়র বিএনপি নেতা ড. মঈন খানের প্রতি সম্মান রেখে বলছি, তিনি রাজনীতির বাইরে এখন জ্যোতিষীর দায়িত্বও পালন করা শুরু করেছেন।

ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন দেশ পরিচালনা করছিলেন তখন মঈন খানের বাবা আবদুল মোমেন খান খাদ্য সচিব ছিলেন। খাদ্যবাহী জাহাজ ভারত মহাসাগর থেকে ফেরত যাবার পেছনে তার বাবার কারসাজি ছিল, যাতে দেশে খাদ্য সঙ্কট তৈরী হয়।

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, খাদ্য সঙ্কট তৈরী করে বঙ্গবন্ধুকে অজনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে আবদুল মোমেন খানের ভুমিকা ছিল। সেটির পুরস্কার স্বরূপ জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করার পর আবদুল মোমেন খানকে মন্ত্রীর মর্যাদায় খাদ্য উপদেষ্টা বানিয়েছিলেন। ৭৯ সালের নির্বাচনের পর আবদুল মোমেন খান সংসদে খাদ্য মন্ত্রী হিসেবে বক্তব্যে বলেছিল খাদ্যের জন্য দরকার হলে দেশ বিক্রি করে দিব। ওনারই সন্তান জনাব মঈন খান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে, বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাতে হলে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিকল্প একমাত্র শেখ হাসিনাই, এই দেশে আর কোন বিকল্প নেই। তিনি জাতিকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ডিজিটাল বাংলাদেশের। এবং সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটেছে। ২০১৮ সালে আমাদের স্লোগান ছিল- আমার গ্রাম আমার শহর। আজকে গ্রামগুলো শহরের মত হয়ে গেছে, গ্রাম আর শহরের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।

তিনি বলেন, এবার আমরা স্লোগান দিয়েছি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নেন্স এবং স্মার্ট পিপল। এই চারটি অনুসঙ্গকে আমরা সাথে নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ রচনা করতে চাই। ইনশাল্লাহ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এই অভিযাত্রায়ও বিজয়ী হব। কিন্তু আমাদের অভিযাত্রাকে আটকে দিতে চায় বিএনপি এবং তাদের দোসররা। সেই কারণেই নানা ষড়যন্ত্র।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, শফিক আদনান প্রমুখ।

চট্টগ্রামে এতিমখানায় সুষম খাবার বিতরণ

এ দিন অনুষ্ঠান শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ চট্টগ্রাম নগরীর কদম মোবারক এতিমখানায় যান। সেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ উপ কমিটির উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে সুষম খাবার বিতরণ করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহজাদা মহিউদ্দিন প্রমুখ।


সৌদিতে এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

হজ করতে গিয়ে সৌদি আরবে এক বাংলাদেশি হজযাত্রী মারা গেছেন। গত ১৫ মে মো. আসাদুজ্জামান নামে এ হজযাত্রী মদিনায় মারা যান। এটিই চলতি হজ মৌসুমে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু। গতকাল শনিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের প্রতিদিনের বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বুলেটিনে জানানো হয়, সৌদি আরবের মদিনায় একজন বাংলাদেশি হজযাত্রী মারা গেছেন। গত ১৫ মে মো. আসাদুজ্জামান নামের এ হজযাত্রী মারা যান। এবারের হজ মৌসুমে এটিই প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু। তার পাসপোর্ট নম্বর এ-১৩৫৬১০৩৪।

এতে আরও বলা হয়, শুক্রবার (১৭ মে) পর্যন্ত পবিত্র হজ করতে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী। মোট ৬৮টি ফ্লাইটে তারা সৌদিতে পৌঁছান। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২৩ হাজার ৩৬৪ জন। এখন পর্যন্ত ৮১ হাজার ১টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

গত ৯ মে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট ৪১৫ জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এর মাধ্যমেই চলতি বছরের হজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। যা শেষ হবে ১০ জুন। এ বছর সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। গত ৯ মে থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয়। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।


বাজারে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ ও লাইটিং পণ্যের অর্ধেকই নকল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঢাবি প্রতিনিধি

বাংলাদেশে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ ও লাইটিং পণ্যের সম্মিলিত বাজারের আকার ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকার। এসব পণ্যের বাজারে গত দুই দশক ধরে অব্যাহতভাবে বেড়েই চললেও এই বাজারের অর্ধেক দখল করে আছে নন ব্যান্ডেড অর্থাৎ নিম্নমানের নকল ও অনুমোদনবিহীন পণ্য।

ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ এবং লাইটিং পণ্য'-এর ওপর 'মার্কেটিং ওয়াচ বাংলাদেশ'র (এমডব্লিউবি) করা একটি গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমডব্লিউবির গবেষণার তথ্য ও উপাত্ত তুলে ধরা হয়।

মার্কেটিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও এমডব্লিউবির সহ-প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান, সহ-প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল হোসাইন সংবাদ সম্মেলনে গবেষণার ফলাফল এবং দিক-নিদেশর্না তুলে ধরেন।

এসময় সেখানে মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এবিএম শহীদুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. রাজিয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন।

এমডব্লিউবি-র তথ্যমতে, এই গবেষণায় কোয়ালিটেটিভ এবং কেয়ান্টিটেটিভ দুই পদ্ধতি'ই অনুসরণ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই গবেষণার জন্য সারা দেশের ২০১৬ জন ব্যবহারকারি, ১০৩ জন খুচরা বিক্রেতা, ৯৯ জন ইলেক্ট্রিশিয়ানকে নমুনা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৫ জন বৈদ্যুতিক পণ্য বিশেষজ্ঞের সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই গবেষণার আওতাধীন পণ্যগুলো ছিল- সুইচ, সকেট, হোল্ডার, মাল্টি-প্লাগ, সার্কিট ব্রেকার, মিটার এবং বিভিন্ন হালকা পণ্য যেমন এলইডি লাক্স, এলইডি টিউব, এলইডি প্যানেল, ব্র্যাকেট এলইডি, জিএলএস, এনার্জি এফিশিয়েন্সি বাল্ব, ইমার্জেন্সি লাইটিং অপশনস।

প্রতিবেদন অনুসারে, এটি একটি বড় এবং অপার সম্ভাবনাময় শিল্প। বর্তমানে দেশজুড়ে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার খুচরা বিক্রেতা এবং ২ হাজার ৫০০ উদ্যোক্তাসহ মোট ৫ লাখেরও বেশি মানুষ এই শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত। দুই ক্যাটাগরির পণ্যের সম্মিলিত বাজার আকার সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ পণ্যের বাজার তিন হাজার ৩৭৫ কোটি এবং লাইটিং পণ্যের বাজার ২ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা।

গবেষণা বলছে, পণ্যের গড় প্রবৃদ্ধির হার যথাক্রমে ১২ শতাংশ এবং ১৫ শতাংশ। যদি আগামী দিনগুলোতে এই প্রবৃদ্ধির হার অব্যাহত থাকে তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এই খাতটি একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বড় খাত হিসাবে আবির্ভূত হবে।

গবেষণায় উঠে এসেছে, মোট বাজারের প্রায় অর্ধেক নন ব্যান্ডেড অর্থাৎ নিম্নমানের নকল ও অনুমোদনবিহীন পণ্য দখল করে আছে। তবে দেশিয় কোম্পানিগুলো বাজারে ব্যাপকভাবে আধিপত্য বিস্তার করছে। যেহেতু দেশিয় কোম্পানিগুলোর প্রবৃদ্ধির হার অনেক বেশি, তাই আগামী দিনগুলোতে দেশিয় কোম্পানিগুলো বাজারে আরও বেশি আধিপত্য বিস্তার করবে বলে আশা এমডব্লিউবির।

গবেষণার ফল অনুযায়ী, দেশিয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে সুপারস্টার গ্রুপ উভয় প্রকার পণ্যের ক্ষেত্রে বাজারে শীর্ষস্থান দখল করে আছে।

গবেষণায় দেখা যায়, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ ব্যান্ডেড পণ্যের মার্কেট শেয়ারে সুপার স্টার ২৯ শতাংশ, ওয়ালটন ১৭ শতাংশ, ক্লিক ১৭ শতাংশ, এনার্জি প্যাক ৯ শতাংশ, ওসাকা ৪ শতাংশ এবং ব্লিঙ্ক, এমইপি ও লাক্সারি প্রত্যেকে ৩ শতাংশ করে বাজার দখল করে আছে। অন্যদিকে ব্রান্ডেড লাইটিং পণ্যের মার্কেট শেয়ারে সুপার স্টার ২৫.৫৯ শতাংশ, ক্লিক ১৩ শতাংশ, ওয়ালটন ১২ শতাংশ, ট্রান্সটেক ১০ শতাংশ, এনার্জি প্যাক ৮ শতাংশ এবং ফিলিপস ৭ শতাংশ বাজার দখল করে আছে।

ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ এবং লাইটিং পণ্যে গুরুতর কী কী সমস্যা দেখা যায় সেসবও জানতে চাওয়া হয়েছে গবেষণায় অংশ নেওয়াদের কাছ থেকে।

সেই তথ্য অনুসারে, ২৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বলছে, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সমস্যা লুজ কানেকশন। দ্বিতীয় মেজর সমস্যা হলো, ইলেক্ট্রিক্যাল শর্ট সার্কিট। ২০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী এই পক্ষে মত দিয়েছেন। বাকি সমসস্যগুলো হলো, ওয়ারেন্টি কার্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরপরই পণ্য ড্যামেজ হয়ে যাওয়া, ওভারহিটিং ইত্যাদি।

লাইটিং পণ্যের ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা হলো- সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লাইটের উজ্জ্বলতা কমে যাওয়া, লাইটের ক্ষণস্থায়ী জীবন, মিটমিট করা, অধিক বিদ্যুৎ গ্রহণ করা এবং ওভারহিটিং প্রভৃতি।

এমডব্লিউবি বলছে, এই শিল্পের অগ্রগতির পেছনে মূলত গত ২৫ বছরে ব্যাপক বিদ্যুতায়ন, অব্যাহত জিডিপি প্রবৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান আয়, দ্রুত ও পরিকল্পিত নগরায়ণ, গ্রামীণ উন্নয়ন এবং সরকারের গৃহীত সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ামক হিসাবে কাজ করেছে।

এই শিল্পের কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেটিও তুলে ধরা হয়েছে গবেষণায়। গ্রে মার্কেটের আধিপত্য, অসম প্রতিযোগিতা, ব্যবহারকারীদের ব্র্যান্ডের পণ্য নিয়ে সচেতনতার অভাবসহ আরও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়।


মাগুরায় রেলপথ শিগগিরই চালু হবে: রেলমন্ত্রী

মাগুরা রামনগর ঠাকুর বাড়ি এলাকায় শনিবার নবনির্মিত মাগুরা রেলপথ স্টেশনে রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মাগুরায় রেলপথ শিগগিরই চালু হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম। আজ শনিবার মধুখালি হতে কামারখালি হয়ে মাগুরা শহর পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে মাগুরা রামনগর ঠাকুর বাড়ি এলাকায় নবনির্মিত মাগুরা রেলপথ স্টেশনে তিনি এ কথা বলেন।

রেলমন্ত্রী বলেন, ‘মধুখালি হতে কামারখালি হয়ে মাগুরা শহর পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে মাগুরার অংশে আমরা জমি অধিগ্রহণ শেষ করেছি। এ এলাকায় রেলপথ বাস্তবায়িত একটি স্বপ্নে দ্বার উন্মোচন হবে। মাগুরার মানুষ রেলপথে বিভিন্ন স্থানে সহজেই যেতে পারবেন। আমরা এ রেলপথকে সম্প্রসারিত করতে চাই।’

জিল্লুল হাকিম বলেন, ‘মাগুরা হয়ে এ রেলপথ যাবে ঝিনাইদহ অংশের কালিগঞ্জ সীমান্তে। ইতোমধ্যে মাগুরার অংশে রেলপথ ব্রিজের প্রায় ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে স্থানীয়ভাবে যে সমস্যাগুলো রয়েছে তা অল্প দিনের মধ্যে শেষ হবে।’

রেলমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী রেলওয়েকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। আর এ লক্ষ্যেই উন্নত দেশের মতো পরিকল্পনা করে রেল খাতে উন্নয়নের চিন্তা করা হচ্ছে। রেললাইন শুধু মাগুরা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে না, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পর্যন্ত সংযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রকল্প পরিচালক কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ২০২৫ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে তারা আশা করছেন। ২০১৮ সালে চার বছর মেয়াদী এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০২২ সালের ২ আগস্ট বাংলাদেশ রেলওয়ের মধুখালি হতে কামারখালি হয়ে মাগুরা শহর পর্যন্ত নতুন রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের আওতাধীন মাগুরা রেলপথের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।

উল্লেখ্য, মধুখালী থেকে মাগুরা পর্যন্ত রেল লাইন নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করা হয় ২০২১ সালে। এরই মধ্যে ফরিদপুর অংশের প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার আশা করা যাচ্ছে।

এ সময় মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. বীরেন শিকদার, মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ, পুলিশ সুপার মো. মশিউদৌলা রেজা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পংকজ কুমার কুন্ডু, নবাগত সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রানা আমীর ওসমান ও নবাগত শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান শরীউল্লাহ হোসেন মিয়া রাজনসহ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


চার জেলায় বজ্রাঘাতে ঝরল ৮ প্রাণ

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১৮ মে, ২০২৪ ২০:২৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

বজ্রাঘাতে দেশের চার জেলায় আটজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রাঘাতে নরসিংদীতে চারজন, টাঙ্গাইলে দুজন, গাজীপুর ও ময়মনসিংহে দুজনের মৃত্যু হয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত।

নরসিংদী

নরসিংদীতে জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রাঘাতে মা-ছেলেসহ একইস্থানে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। এ ছাড়া একই সময় শহরের হাজীপুরে বজ্রাঘাতে মারা গেছেন আরও একজন। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সদর উপজেলার চরাঞ্চলের আলোকবালী ও হাজীপুরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের কামাল মিয়ার স্ত্রী শরিফা বেগম (৩৫), তার ছেলে ইমন মিয়া (১০), ধানকাটা শ্রমিক রায়পুরার বাঘাইকান্দি এলাকার হাতেম আলীর ছেলে কাইয়ুম মিয়া (২০) ও হাজীপুরের মোসলেহ উদ্দিন (৫৫)।

নরসিংদী সদর থানার ওসি তানভীর আহমেদ বলেন, পৃথক ঘটনায় বজ্রাঘাতে চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ধান কাটার সময় বজ্রাঘা‌তে দুই খালাতো ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। আজ সকালে উপজেলার বীরবাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা সদরের মৃত আয়নাল হকের ছেলে আমির হোসেন (৫২) ও মৃত নূর হোসেনের ছেলে আফজাল হোসেন (৫৫)।

স্থানীয়রা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার আউলিয়াবাদ বাজারে ঘর ভাড়া নিয়ে আমির ও আফজালসহ ক‌য়েকজন শ্রমিক আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটার কাজ করতেন। শনিবার ভোরে বীরবাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ী গ্রামের হযরত আলীর ধান ক্ষেতে ছয়জন শ্রমিক ধান কাটতে যান। পরে বৃষ্টি ও বজ্রাঘাতে তা‌দের মৃত‌্যু হয়।

বীরবাসিন্দা ইউনিয়ন প‌রিষদের চেয়ারম্যান ছোহরাব আলী জানান, সকালে কয়েকজন শ্রমিক স্থানীয় হযরত আলীর ক্ষেতের ধান কাটতে যান। এ সময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হয়। প‌রে বজ্রাঘা‌তে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়।

গাজীপুর

গাজীপুরের শ্রীপুরে বজ্রপাতে ফাতেমা আক্তার (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের গলদাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ফাতেমা আক্তার উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের গলদাপাড়া গ্রামের মো. নূর হোসেনের স্ত্রী।

নিহতের ছেলে জহিরুল ইসলাম জানান, তার মা ফাতেমা আক্তার সকালে নানা বাড়িতে ধান শুকানোর কাজ করছিলেন। ঝড়-বৃষ্টি আসছে দেখে উঠান থেকে তিনি ধান উঠাতে যান। এ সময় বজ্রপাত হলে তার মাকে মাটিতে পরে থাকতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শ্রীপুর থানার এসআই মো. তানসেন চৌধুরী বজ্রাঘাতে এক নারীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বৃষ্টির মধ্যে উঠান থেকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রাঘাতে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। আজ সকালে উপজেলার রাওনা ইউনিয়নের ধোপাঘাট গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নিহত গৃহবধূ হাছিনা (৩৮) ওই এলাকার গ্রাম পুলিশ কাঞ্চন মিয়ার স্ত্রী।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সানিব মিয়া জানান, সকালে বৃষ্টি শুরু হলে হাছিনা গরু আনতে উঠানে যাওয়ার সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহত হয়। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গফরগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান খান বলেন, বজ্রাঘাতে নিহত গৃহবধূর লাশ হস্তান্তরের আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।


সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ঐক্য ও শক্তির প্রতীক: ধর্মমন্ত্রী

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এটি আমাদের ঐক্য ও শক্তির প্রতীক।

আজ শনিবার বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে পুরোহিত ও সেবাইতদের বিভাগীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।

ধর্মমন্ত্রী বলেন, ‘আবহমানকাল থেকেই বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির পীঠস্থান। বিভিন্ন ধর্ম-গ্রোত্রের মানুষ এখানে মিলেমিশে বসবাস করে। উৎসব-পার্বনে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল চেতনার অন্যতম হলো অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। স্বাধীনতার এই অম্লান চেতনাকে সামনে রেখেই বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমরা হাটি-হাটি, পা-পা করে আজ সম্মানজনক একটি জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছি। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হতে মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন শুধু স্বপ্ন দেখে না- স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে।’

পুরোহিত ও সেবাইতদের উদ্দেশে ধর্মমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ ও জাতির উন্নয়নে আপনাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সমাজে বিদ্যমান সামাজিক ব্যাধি ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ, মাদকাসক্তি, দুর্নীতি, ভেজাল প্রভৃতি প্রতিরোধেও আপনারা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। এ ছাড়া, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য যেন কোনভাবেই বিনষ্ট না হয়- সেদিকে খেয়াল রাখবেন।’

ধর্মমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশের উন্নয়নে আমাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে- রুপকল্প-২০৪১। এ ছাড়া, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে আমরা এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দায়বদ্ধতা রয়েছে। আগামীদিনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কল্যাণে আরও বেশি কাজ করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।’

স্থানীয় সরকারের পরিচালক খোন্দকার আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে ধর্ম সচিব মু.আ. হামিদ জমাদ্দার, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পাল, উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) গৌতম বাড়ৈ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজওয়ান আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কুমার দাস ও দোলা গুহসহ অন্যান্য ট্রাস্টি বক্তব্য দেন।

উল্লেখ্য, ধর্মীয় ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরোহিত ও সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রকল্পের অধীনে পুরোহিত ও সেবাইতদের নেতৃত্বদানের সক্ষমতা বৃদ্ধি, তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি সংহত করতে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া, আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল পুরোহিত ও সেবাইতকে ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে।


‘নারী স্পিকারদের সম্মেলন বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর অনবদ্য প্লাটফর্ম’

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় শুক্রবার ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের সদর দপ্তরে ‘প্রিপারেটরি কমিটি ফর দ্য ফিফটিন্থ সামিট অফ উইমেন স্পীকার্স অফ পার্লামেন্ট’ সম্মেলনে বক্তব্য দেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, পার্লামেন্টে নারী স্পিকারদের সম্মেলন লিঙ্গ সমতা আনয়ন, লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা দূরীকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারী নেতৃত্বকে সমর্থন করার সুযোগ করে দেয়। এই সম্মেলন বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের এক অনবদ্য প্লাটফর্ম।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের সদর দপ্তরে ‘প্রিপারেটরি কমিটি ফর দ্য ফিফটিন্থ সামিট অফ উইমেন স্পীকার্স অফ পার্লামেন্ট’ শীর্ষক সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময়ে তিনি এসব কথা বলেন।

আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।

স্পিকার বলেন, ‘এই সম্মেলন বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের এক অনবদ্য প্লাটফর্ম। স্পিকাররা একটি অভিন্ন প্লাটফর্মের ধারণা এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সমাধান খুঁজে বের করতে পারেন। বিগত সম্মেলন গুলোতে লিঙ্গ সমতা, নারী নেতৃত্ব এবং নারীর ক্ষমতায়নের ওপর প্রশংসনীয় কাজ হয়েছে।’

১৫তম নারী স্পিকারদের সম্মেলনে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নারীদের সার্বিক উন্নয়নে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ড. টুলিয়া অ্যকশন এবং সেক্রেটারি জেনারেল মার্টিন চুংগংসহ বিভিন্ন দেশের স্পিকারসহ এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব এম. এ কামাল বিল্লাহ ও যুগ্মসচিব মো.এনামুল হক।

বিষয়:

জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন: রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন সে দিকে সরকারের পাশাপাশি নাগরিক সমাজকেও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অষ্টম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে রাষ্ট্রপতি একথা বলেন। রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘নাগরিকদের প্রতি যে কোনো ধরনের বৈষম্য আইনের শাসনের পরিপন্থী। কাজেই কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন।’

দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রেখে উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে এবং সর্বস্তরে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ঘাতক-দালালদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ হয়ে বেড়ে উঠতে পারে সে লক্ষ্যে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার কথাও বলেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘এই লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তির ইস্পাত কঠিন ঐক্যের বিকল্প নেই। ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশ ও জনগণের স্বার্থে সবাইকে কাজ করতে হবে।’

তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল মাধ্যমকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করুন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ুন, বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও আদর্শ সম্পর্কে জানুন। মননে, বোধে, জীবনাচরণে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে বুকে লালন করে বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরুন। মুক্তিযুদ্ধের ২১ বছর পর ১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে শুরু হয়ে এই আন্দোলনের প্রাজ্ঞ নেতৃবৃন্দ প্রায় ৩৩ বছর ধরে নানা চড়াই-উতরাই, ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে এই সংগঠনকে আজকের জায়গায় নিয়ে এসেছেন। কেবল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারই নয়, মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এই মহাসংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস পৌঁছে দিয়ে তাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে দীক্ষিত করার ক্ষেত্রেও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সহনশীল ও মানবিক সমাজ এবং রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আগামী দিনগুলোতেও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও ঘাতক-দালাল চক্র মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাসহ আমাদের সাফল্যকে ম্লান করে দিতে অবিরাম অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

যুদ্ধাপরাধী বা মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ সম্পন্ন হলেও ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কাজ কখনও শেষ হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ভূমিকা অতীতের মতো ভবিষ্যতে উজ্জ্বলভাবে কার্যকর থাকবে।’

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার আজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও প্রশংসা অর্জন করেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আর্থ-সামাজিক ও তথ্য-প্রযুক্তির নানা সূচকে বিশ্বের দরবারে উজ্জ্বল দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সাফল্যের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে যাত্রা শুরু করেছি আমরা। এই অগ্রযাত্রার পথে সরকারের সামনে সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ ছিল মৌলবাদ ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ। প্রধানমন্ত্রীর সাহসী নেতৃত্ব এবং জঙ্গীবাদের প্রতি তার সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কারণেই জঙ্গীবাদ দমনে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশ আজ রোল মডেল।’

তিনি ধর্মীয় ও ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করার আহ্বান জানান।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অষ্টম জাতীয় সম্মেলন-২০২৪ এর সভাপতি বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলিম, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান এসোসিয়েশনের সভাপতি মানবাধিকার নেতা নির্মল রোজারিও, আদিবাসী মুক্তি মোর্চার সভাপতি অধ্যাপক যোগেন্দ্রনাথ সরেন, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, ন্যায় অধিকার তৃতীয় লিঙ্গ উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান সমাজকর্মী আনোয়ারা ইসলাম রাণী এবং অষ্টম জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক কাজী মুকুল বক্তব্য রাখেন।


পুরান ঢাকায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের আগুন নিয়ন্ত্রণে

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৮ মে, ২০২৪ ১২:১০
জবি প্রতিনিধি

রাজধানীর পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারের কাছে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সকাল ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিটের চেষ্টায় ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এর আগে আজ শনিবার সকাল ১০ টা ৪০ মিনিটের দিকে ব্যাংকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার লিমা খানম জানান, সাত তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে আগুনের সূত্রপাত। খবর পেয়ে সূত্রাপুর ও সিদ্দিকবাজার থেকে চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।

প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে জানা যায়নি বলেও জানান তিনি।


দুই বিভাগে ৮০ কিলোমিটার বেগে বজ্রবৃষ্টির আভাস

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ শনিবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেনের দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানান।

আবহাওয়া অফিস জানায়, সিলেট এবং ময়মনসিংহ অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

সংস্থাটি আরও জানায়, টাঙ্গাইল, ঢাকা, বরিশাল এবং কুমিল্লা অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অফিস দেশের চার বিভাগে নতুন করে আরও দুই দিন (৪৮ ঘণ্টা) হিট অ্যালার্ট জারি করে। তবে কিছু কিছু জায়গায় শনিবার সকাল থেকে তাপ কিছুটা প্রশমিত হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিল সংস্থাটি। ঢাকা বিভাগের পশ্চিমাঞ্চলসহ রংপুর, রাজশাহী এবং খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় পরিবেশে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে।

শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলমান তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি দেশের কিছু কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে। এ সময়ে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

এ ছাড়া রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং বরিশাল ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।


কাঁচা মরিচের কেজি দেড় শ টাকা, গরম ডিম-সবজির বাজার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৮ মে, ২০২৪ ০০:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসরকারি চাকরিজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন। মাসিক আয় ৩৫ হাজার টাকা। জিনিসপত্রের অতিরিক্ত দামের চাপে মাসজুড়েই চিন্তিত থাকতে হয় তাকে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কৃষি মার্কেটে বাজার করতে এসে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখে চোখ কপালে উঠেছে।

কেননা সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম প্রতিকেজি ৮০-১০০ থেকে বেড়ে ১৫০-১৬০ টাকা হয়েছে। আলু, পেঁয়াজ, সবজির দামও চড়া।

তাপপ্রবাহের অজুহাতে বেড়েছে মুরগি ও ডিমের দামও। মাংসের দামও বাড়তি। বাজারের উত্তাপে জাহাঙ্গীরের মতো অনেকেই পুড়ছেন।

গতকাল ছুটির দিন রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে বাজারে ক্রেতার আনাগোনা বেশি হলেও দামে স্বস্তি নেই। প্রায় সব নিত্যপণ্য কিনতে গুনতে হচ্ছে বাড়তি দাম।

দাম বৃদ্ধির তালিকায় বড় লাফ কাঁচামরিচের। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় কেনা গেলেও এখন তা ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। বিক্রেতাদের অজুহাত, বৃষ্টির কারণে ফসলের ক্ষতি হওয়ায় দাম বেড়েছে। যদিও তা মানতে নারাজ ক্রেতারা।

৬০ টাকায় আলু আর ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। অন্যান্য সবজি গড়ে ৫০ টাকায় মিলছে। স্থান ও মানভেদে চিচিঙ্গা ৮০-১০০ টাকা, ঝিঙা ৬০-৭০ টাকা, কচুর লতি ৭০-৮০ টাকা, কচুর মুখী মানভেদে ৬০-৭০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, শসা ৫০-৬০ টাকা ও কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। ৫৫-৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে আলু। স্থানভেদে পাকা টমেটোর কেজি ৫০-৬০ টাকা। পেঁপে ৮০-৯০ টাকা, বেগুনও ১০০ টাকা ছুঁই ছুঁই। করলা ৫০-৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০-৫০ টাকা, বরবটি ১০০ থেকে ১২০ টাকা এবং মান ও জাতভেদে পটোল ৫০-৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, চাকরি বা কাজ করে যে বেতন পাওয়া যায় তা দিয়ে বাজার করা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। জাহাঙ্গীর বলেন, ‘দুই বছরের বেশি সময় ধরে একই স্কেলে বেতন পাচ্ছি। কিন্তু খরচের খাতা দিনকে দিন লম্বা হচ্ছে। ওষুধ থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। কোনো কোনো পণ্য তো তিনগুণ দামেও কিনতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মতো মধ্যবিত্তরা কম দামের সবজি সব সময় কিনে থাকি। কিন্তু এখন কম দামের সবজিও কিনতে পারছি না। কয়েক বছর আগেও বাজারে প্রতি কেজি আলু কেনা যেত ২০ থেকে ২৫ টাকায়। তা এখন তিন ডাবল দামে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। প্রতি কেজি পটোল কিনেছি মাত্র ৩০ টাকায়। তা এখন ৬০ টাকার নিচে কেনাই যাচ্ছে না। খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে বাড়তে এমন পরিস্থিতি হয়েছে যে, কম দামের সবজিও এখন আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজারদরের তালিকা অনুযায়ী, গত এক মাসে অধিকাংশ সবজির দাম ৪০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। কিছু কিছু সবজির দাম ১০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

ডিম কিনতেও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বাজারে। গত সপ্তাহে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম ১৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা কিনতে হচ্ছে ১৫০ টাকায়। দামের পরিবর্তন না হলেও প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি কিনতে হচ্ছে ২২০ টাকায়। সোনালি মুরগির কেজি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা।

সরকারি বিপণন কর্তৃপক্ষ টিসিবির তথ্য অনুযায়ী গত এক মাসে গড়ে ডিম ও মুরগির দাম বেড়েছে ২১ থেকে ২৯ শতাংশ পর্যন্ত। ডিমের ২৯ শতাংশ ও ব্রয়লারের কেজিতে ২১ শতাংশ দাম বেড়েছে।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী গত মাসের শুরুর দিকে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা বিক্রি হলেও কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। সোনালি মুরগি কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে ৪০০ থেকে ৪১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

লাল ডিম ২৯ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়ে প্রতি ডজন (লাল) মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।

মুরগি ব্যবসায়ী মোস্তফা বলেন, মাংসের দাম তেমন একটা কমেনি, আগের মতোই আছে। সেজন্য আগের তুলনায় এখন বিক্রি কম হচ্ছে।

শুধু ডিম, মুরগির দামই বেশি না। বাজারে সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। মাছের বাজারেও এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে। গত এক মাসের ব্যবধানে অধিকাংশ মাছের কেজিতে দাম অন্তত ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। রুই মাছ ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, শিং মাছ ৩৫০ থেকে ৮৫০, কই মাছ ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে ৬৫০, টেংরা ৮০০, পাবদা ৫০০ ও প্রতি কেজি বাইলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায়।

মূল্যবৃদ্ধিতে রয়েছে ব্যবসায়ীদের নানান অজুহাত। অন্যদিকে, লাগামহীন বাজারে নেই সরকারি কোনো সংস্থার তদারকি।

কাঁচামাল ব্যবসায়ী সোলাইমান মিয়া বলেন, সরবরাহ কমে যাওয়ার জিনিসপত্রের দাম একটু বাড়তি। গরম কমলে সামনে দাম কিছুটা কমতে পারে।

সবজির এমন দামে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। বেসরকারি চাকরিজীবী সাকিব মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের স্বল্প বেতনে প্রতিদিন মাছ বা মাংস খাওয়া যায় না। কিন্তু সবজির দামও যদি এমন বাড়তি যায়, তাহলে এটা খাওয়াও কমিয়ে দিতে হবে।’

এজাজ মাহমুদ নামের আরেকজন বলেন, ‘মাছ-মাংসের দাম না হয় বাড়তি মানা যায়, কিন্তু শাকসবজি যদি আমাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যেতে থাকে, তাহলে আমরা খাব কী?’


banner close