বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪

এলিফ্যান্ট রোডের আগুনে অসুস্থ ফায়ার ফাইটার ঢামেকে ভর্তি

সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এলিফ্যান্ট রোডের একটি ভবনের পঞ্চম তলায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ছবি : সৈয়দ মাহামুদুর রহমান
আপডেটেড
২৭ মার্চ, ২০২৩ ২৩:৩২
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২৭ মার্চ, ২০২৩ ২৩:২৩

রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের শেলটেক কম্পিউটার মার্কেটের আগুন নেভাতে গিয়ে ধোঁয়ায় অসুস্থ পলাশী ফায়ার স্টেশনের এক কর্মীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ফায়ার ফাইটারের নাম সজীব (৩০)। তাকে ঢাকা মেডিকেলের ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সিতে দেয়া হচ্ছে।

পলাশী ফায়ার স্টেশনের লিডার মাহবুব জানান, এলিফ্যান্ট রোডের কম্পিউটার সিটির বহুতল ভবনে আগুন নেভাতে গিয়ে সজীব নামে এক ফাইটার ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যাল সংলগ্ন কম্পিউটার এক্সেসরিজ ও মেরাতমতকারী মার্কেটে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ৭টা ৩৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে একে একে আরও ১০টি ইউনিট অগ্নি নির্বাপনে যোগ দেয়। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টার পর রাত ৯টা ২৩ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

তবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।


ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা। আজ বুধবার একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব।

দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ টি এম রকিবুল হক এবং ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা কোয়াত্রাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স হ্যান্ডেল (সাবেক টুইটারে) এক পোস্টে জানানো হয়, সংক্ষিপ্ত সফরে আজ সন্ধ্যায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব। আশা করা হচ্ছে তিনি আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এ ছাড়া কোয়াত্রা পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশ সফরকালে কোয়াত্রা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেবেন। আশা করা হচ্ছে, ভারতের লোকসভা নির্বাচনের পর সরকারপ্রধান দিল্লি সফরে যাবেন।

এদিকে, আজ এক সংবাদ সম্মেলনে কোয়াত্রার সফরে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে নানা বিষয় আছে। স্বাভাবিকভাবে নানা বিষয় আলোচনা হবে। তিনি আসার পর আমরা বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব।’

ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিবের ঢাকায় আসার এক দিন আগে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া সীমান্তে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। কোয়াত্রার সফরে সীমান্ত হত্যার প্রসঙ্গটি তোলা হবে বলে সাংবাদিকদের জানান হাছান মাহমুদ।

প্রসঙ্গত, গত ২০ এপ্রিল ঢাকায় আসার কথা ছিল ভারতের পররাষ্ট্র-সচিব বিনয় কোয়াত্রার। তবে অনিবার্য কারণে তার পূর্বনির্ধারিত সেই সফর স্থগিত করা হয়।

বিষয়:

আগামীকাল জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৯ মে) ১৪৪৫ হিজরি সনের সন্ধ্যা ৬.৪৫ মিনিটে (বাদ মাগরিব) পবিত্র জিলকদ মাসের চাঁদ দেখার লক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করবেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এমপি।

বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র জিলকদ মাসের চাঁদ দেখা গেলে তা টেলিফোন নম্বর: ০২-২২৩৩৮১৭২৫, ০২-৪১০৫০৯১২, ০২-৪১০৫০৯১৬ ও ০২-৪১০৫০৯১৭ এবং ফ্যাক্স নম্বর: ০২-২২৩৩৮৩৩৯৭ ও ০২-৯৫৫৫৯৫১ অথবা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক অথবা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।


বিমানের হজ ফ্লাইট শুরু আগামীকাল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিশেষ প্রতিনিধি

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এ বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় জেদ্দার উদ্দেশে যাত্রা করবে। হজ ফ্লাইটের উদ্বোধন উপলক্ষে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি এবং ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এমপি উপস্থিত থাকবেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার চলতি বছরের হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন।

প্রথম হজ ফ্লাইট (বিজি-৩৩০১) ৪১৯ জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদি আরবের জেদ্দার উদ্দেশে সকাল ৭টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।

জানা গেছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে জেদ্দা ও মদিনায় ডেডিকেটেড ফ্লাইট পরিচালিত হবে। সে লক্ষ্যে জেদ্দা ও মদিনায় বিমানের পর্যাপ্ত জনবল নিয়োজিত করা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকায় হজ অফিসে বিমান বোর্ডিং এবং ইমিগ্রেশন কাউন্টারে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। ঢাকা হজ অফিসে বিমানের সেলস কাউন্টারে ব্যালটি হাজিদের টিকিট ইস্যু এবং নন-ব্যালটি হাজিদের টিকিট-সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের সুবিধা রাখা হয়েছে।


সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনের গতিসীমা নির্ধারণ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের কোন সড়কে, কত গতিতে কোন ধরনের যানবাহন চলবে, তা নির্ধারণ করে দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের এ বিভাগ থেকে ‘মোটরযানের গতিসীমা-সংক্রান্ত নির্দেশিকা, ২০২৪’ জারি করা হয়েছে।

রাজধানী ঢাকাসহ সিটি করপোরেশনভুক্ত এলাকায় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার গতিতে মোটরসাইকেল চালানো যাবে। মোটরসাইকেলের এমন সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা-২০২৪ অনুযায়ী আজ বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

গতিসীমা নির্দেশিকা মতে, মহাসড়কের গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার।

কিন্তু সব সড়কে অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণে কোনো ব্যবস্থা নেই। আর দেশের সড়কে মোটরসাইকেল সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি অবশ্য শুধু এক্সপ্রেসওয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা-২০২৪ এর নথিতে দেখা যায়, এক্সপ্রেসওয়েতে সর্বোচ্চ গতি ৮০ কিলোমিটার এবং সর্বনিম্ন গতি ৫০।

জাতীয় মহাসড়ক ক্যাটাগরি- এ সর্বোচ্চ গতি ৮০ কিলোমিটার, সর্বনিম্ন গতি ৫০। জাতীয় মহাসড়ক ক্যাটাগরি-বি সর্বোচ্চ গতি ৭০, সর্বনিম্ন ৪৫। জেলা সড়কে সর্বোচ্চ গতি ৬০ কিলোমিটার, সর্বনিম্ন ৪০। সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা সদরের মধ্য দিয়ে ব্যবহৃত জাতীয় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কের সর্বোচ্চ গতি ৪০ কিলোমিটার, সর্বনিম্ন ৩০।

জাতীয় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়ক ছাড়া সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও জেলা সদরের অভ্যন্তরীণ সড়কের সর্বোচ্চ গতি ৪০ কিলোমিটার, সর্বনিম্ন ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে।

উপজেলা মহাসড়কে সর্বোচ্চ গতি ৪০, সর্বনিম্ন ৩০। শহর এলাকায় প্রাইমারি আরবান সড়কে সর্বোচ্চ গতি ৪০, সর্বনিম্ন ৩০। শহর এলাকায় সংকীর্ণ/শেয়ার রোড ও অন্যান্য সড়কে সর্বোচ্চ গতি ৩০, সর্বনিম্ন ২০ এবং গ্রামীণ সড়কে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন গতি ৩০।

বিআরটিএর সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী সাংবাদিকদের জানান, ‘প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গতিসীমার বাস্তবায়ন নির্ধারণ করা হয়েছে। আমাদের সড়কের নকশা অনুযায়ী নির্ধারণ করা গতি ঠিক আছে।’

নির্দেশিকায় বলা হচ্ছে, নির্ধারণ করা গতিসীমা আবশ্যিকভাবে মেনে সড়ক-মহাসড়কে মোটরযান চালাতে হবে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, আবাসিক এলাকা এবং হাট-বাজার ইত্যাদি-সংলগ্ন সড়ক বা মহাসড়কে মোটরযানের সর্বোচ্চ গতিসীমা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা রাস্তা নির্মাণকারী বা উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত হবে; তবে তা কোনোক্রমেই জাতীয় মহাসড়কের ক্ষেত্রে ৪০ কিলোমিটার এবং আঞ্চলিক মহাসড়কের ক্ষেত্রে ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটারের বেশি হবে না।

জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিত মোটরযান, যেমন: অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ারসার্ভিস ইত্যাদির ক্ষেত্রে উক্ত গতিসীমা শিথিলযোগ্য হবে। সর্বোচ্চ গতিসীমার এই বাধ্যবাধকতা শুধু স্বাভাবিক অবস্থায় প্রযোজ্য হবে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, প্রখর রোদ, অতিরিক্ত বৃষ্টি, ঘনকুয়াশা ইত্যাদি প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণযোগ্য নিরাপদ গতিসীমা প্রযোজ্য হবে; দৃষ্টিসীমা বেশি মাত্রায় কমে গেলে বা একেবারেই দেখা না গেলে মোটরযান চালানো বন্ধ রাখতে হবে।

এক্সপ্রেসওয়ে, জাতীয় মহাসড়ক, আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং জেলা সড়কের উভয়দিকের প্রবেশমুখ ও নির্দিষ্ট দূরত্বে যানবাহনভিত্তিক নির্ধারিত গতিসীমা-সংক্রান্ত চিহ্ন রাস্তা নির্মাণকারী বা উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদর্শন করতে হবে।

পাহাড়ি এলাকা, আঁকাবাঁকা সড়ক, বাঁক, সেতু, রেল বা লেভেলক্রসিং, সড়ক সংযোগস্থল, বাজার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের সামনে চিহ্ন প্রদর্শিত গতিসীমা প্রযোজ্য হবে।

নির্দেশানায় বলা হয়েছে, মালবাহী মোটরযানসহ অন্যান্য স্বল্পগতির মোটরযান সর্বদা সড়কের বামপাশের লেন দিয়ে চলাচল করবে। শুধু ওভারটেক করার সময় ডান লেন ব্যবহার করতে পারবে, কখনো বাম লেন দিয়ে ওভারটেক করা যাবে না।

ওভারটেকিং নিষিদ্ধ না থাকলে রাস্তার ট্রাফিক সংকেত, সড়ক চিহ্ন দেখে এবং সামনে, পেছনে পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় জায়গা থাকলে নিরাপদ পরিস্থিতি বিবেচনায় ওভারটেক করা যাবে; এবং ওভারটেক করার সময় সামনে বিপরীত লেনে আগত গাড়ি এবং পেছনের গাড়ির অবস্থান ও দেখে ওভারটেকিংয়ের জন্য নিরাপদ দূরত্ব আছে কি না সে-সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।

বিষয়:

চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর: ব্যারিস্টার সুমন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সংসদ সদস্যদের বেতন ও সরকারি বরাদ্দের তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করায় হবিগঞ্জ-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে স্পিকারের কাছে নালিশ দেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু। তার পাল্টা জবাবে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর। তার মুখে সমালোচনা মানায় না। এমপিরা কত বরাদ্দ পান তা জনগণের জানার অধিকার আছে। আমি সেটা প্রকাশ করেছি মাত্র। এতে চুন্নু সাহেবের সমস্যা কোথায়?’

জাতীয় সংসদে মুজিবুল হক চুন্নুর বক্তব্যের জবাবে আজ বুধবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার সুমন এসব মন্তব্য করেন। এর আগে গত ৭ মে সংসদ সদস্যরা বেতন ও সরকারি বরাদ্দ কত পান তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করায় সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে স্পিকারের কাছে অভিযোগ করেন মুজিবুল হক চুন্নু।

চুন্নুর সেই বক্তব্যের জবাবে সায়েদুল হক সুমন আরও বলেন, জাতীয় সংসদে চুন্নুর অবস্থান পরিষ্কার নয়। তিনি দাবি করেন বিরোধী দল; কিন্তু থাকেন সরকারি দলের ভেতরে। এখন এসেছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের মুখ বন্ধ করতে। সংসদ সদস্য হিসেবে বরাদ্দ পাওয়ার বিষয় আমি ফেসবুকে প্রকাশ করেই যাব।


‘বিএনপির নির্বাচন বর্জনের রাজনীতি আত্মহননমূলক’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিলনায়তনে বুধবার প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো বিএনপির উপজেলা নির্বাচনও বর্জনের সিদ্ধান্তকে আত্মহননমূলক রাজনীতি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ ড. হাছান মাহমুদ।

এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার পাঁচ দেশে সরকারি সফর শেষে মঙ্গলবার দেশে ফিরে আজ বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিলনায়তনে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা বিএনপির উপজেলা নির্বাচন বর্জন নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, যারা বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত তারা দেশের সংসদ, সিটি করপোরেশন, উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও অংশ নিতে পারেন না। বিএনপির নেতা-কর্মীদের কাছে আমার প্রশ্ন- কোনো নির্বাচনেই যদি অংশ নিতে পারেন, তবে আর কেন বিএনপির রাজনীতি করবেন।

উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন হলেও বিএনপি কেন ঢাকা শহরে লিফলেট বিতরণ করছে- এ প্রশ্নে ড. হাছান বলেন, এগুলো তাদের লোক দেখানো কর্মসূচি। কখন যে তারা উপজেলা নির্বাচন বর্জনের লিফলেট বিতরণ করতে দূতাবাসগুলোতে চলে যায়, সেটিই দেখার বিষয়, কারণ তারা তো কথায় কথায় বিদেশি দূতাবাসে ধরনা দেয়।

‘ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা ও গণহত্যার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যাপীঠগুলোতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্রের আইনরক্ষী বাহিনীর হামলা নিয়ে’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয়, ইউরোপজুড়ে ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে, হচ্ছে। আর আমরা দেখেছি, আমাদের এখানে হিরো আলমকে বা কোনো মেয়র পদপ্রার্থীকে কেউ ঘুষি মারলেও তারা বিবৃতি দেয়, আর তাদের ওখানে বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশ যেভাবে বলপ্রয়োগ করছে, হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, শিক্ষকরাও রেহাই পাচ্ছেন না- এ নিয়ে তারা কি বলবেন সেটিই আমার প্রশ্ন।’

পাঁচ দেশ সফর বৃত্তান্ত

প্রেস ব্রিফিংয়ে ২৪ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত পাঁচ দেশে সরকারি সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ২৪ থেকে ২৭ এপ্রিল থাইল্যান্ড সফরে অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি চুক্তি, জ্বালানি, পর্যটন ও শুল্ক সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং মুক্ত বণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরুর লেটার অব ইন্টেন্ট স্বাক্ষরের পর ২৮ থেকে ২৯ এপ্রিল অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় ‘হিউম্যানিটি এট দ্য ক্রসরোডস: অটোনোমাস উইপনস সিস্টেমস অ্যান্ড দ্য চ্যালেঞ্জ অব রেগুলেশন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেন মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

পাশাপাশি ভিয়েনায় অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার শ্যালেনবার্গের সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অস্ট্রিয়ার বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং দ্বৈত কর এড়ানোর প্রস্তাবিত চুক্তি দ্রুত স্বাক্ষর নিয়ে আলোচনা, ইন্টারন্যাশনাল এটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসির সঙ্গে সাক্ষাতে পারমাণবিক শক্তির অ-প্রসারণ এবং শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিয়ে আলোচনা এবং অস্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের নিজস্ব কার্যালয় উদ্বোধনের কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

৩০ এপ্রিল ও পহেলা মে যথাক্রমে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ও যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাসদ্বয় আয়োজিত স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান। পাশাপাশি লন্ডনের আয়োজনে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েল, হাউস অব কমন্সের নেতা পেনি মর্ডান্ট, মন্ত্রী লর্ড তারিক আহমেদ, পরিবেশবিষয়ক ছায়াসচিব স্টিভ রিড, বাংলাদেশবিষয়ক সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের চেয়ারম্যান রুশনারা আলী এমপি প্রমুখ উপস্থিত থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে অভিনন্দন জানান।

এরপর ৩ থেকে ৫ মে পশ্চিম আফ্রিকার গাম্বিয়ার রাজধানী বানজুলে ১৫তম ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে দেশের প্রতিনিধিত্বের কথা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ব্রিফিংয়ে সম্মেলনের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ১০ জন মন্ত্রী ও সংস্থাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরেন তিনি।

ব্রিটিশ মিনিস্টার অব স্টেট অ্যান-মেরি ট্রেভেলিয়ানের বৈঠক

আজ দুপুরে বাংলাদেশ সফররত যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক মিনিস্টার অব স্টেট অ্যান-মেরি ট্রেভেলিয়ান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাতে মিলিত হন। বৈঠক বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, অ্যান-মেরি ট্রেভেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন, মেট্রোরেলেও ভ্রমণের আগ্রহ ব্যক্ত করেন। যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের কথা তুলে ধরে মিনিস্টার অব স্টেট ট্রেভেলিয়ান দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কে সন্তোষ ব্যক্ত করে এর আরও সম্প্রসারণে জোর দেন। বৈঠকে পূর্ব সম্মতির ভিত্তিতে যুক্তরাজ্য থেকে এয়ারবাস কেনা, অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনসহ দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।


খালপাড়ে বৃক্ষরোপণে ঢাকার সবুজায়ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পৌঁছবে: মেয়র তাপস

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

খালপাড়ে বৃক্ষরোপণ ঢাকার সবুজায়ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

আজ বুধবার নগরীর মুগদা এলাকায় শাপলা ব্রিজ সংলগ্ন ‘মান্ডা খাল পুনরুদ্ধার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি’ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

মেয়র তাপস বলেন, ‘প্রকল্পভুক্ত শ্যামপুর, জিরানি, মান্ডা ও কালুনগর খালের উভয় পাড়ে (উভয় পাড় মিলে মোট ৩৯.৬ কি.মি. দৈর্ঘ্য) ব্যাপক বৃক্ষরোপণের যে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে- তার মাধ্যমে ঢাকার সবুজায়ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ঢাকা শহরের জন্য যে সবুজায়ন বা বনায়নের প্রয়োজন সেই মানদণ্ড পর্যন্ত আমরা পূরণ করতে পারিনি। এই মান্ডা খালের পাড় দিয়ে আমাদের প্রকল্পের আওতায় আমরা প্রায় ৩৫ হাজার গাছ রোপণ করব- যার মাধ্যমে এ এলাকায় একটি সুন্দর ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি হবে এবং আমাদের শহরের জন্য সবুজায়ন ও বনায়নের যে কার্যক্রম- সেটা আরও ত্বরান্বিত হবে।’

‘এই খালগুলোর (প্রকল্পভুক্ত শ্যামপুর, জিরানি, মান্ডা, খালুনগর খাল) ও আদি বুড়িগঙ্গার পাড় ঘেঁষে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ আমরা সবুজায়নের সেই আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত হতে পারব’- যোগ করে বলেন মেয়র তাপস।

তিনি আরও বলেন, ‘খালগুলো নিয়ে যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে- তার মধ্যে মান্ডা খাল সবচেয়ে বড় (৮.৭ কিলোমিটার)। এরপরে শ্যামপুর (৪.৭৮ কিলোমিটার), জিরানি (৩.৯ কিলোমিটার) ও কালুনগর (২.৪ কিলোমিটার) খাল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে মান্ডা খাল পুনরুদ্ধার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টির কাজ শুরু হচ্ছে।’

ব্যারিস্টার তাপস বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকাবাসী একটি দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ্য করবে এবং আগামী বছরের জুনে একটি আমূল পরিবর্তন আসবে। সেভাবেই আমাদের সব পরামর্শক, ঠিকাদার ও কর্মকর্তারা কাজ করছেন। আমরা আশাবাদী, আগামী এক বছরের মধ্যে (খালগুলোর) দৃশ্যমান ও নান্দনিক পরিবর্তন আমরা নিয়ে আসতে পারব।’

৮৯৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে শ্যামপুর, জিরানি, মান্ডা ও কালুনগর খাল পুনরুদ্ধার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টির প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে ৮.৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মান্ডা খাল পুনরুদ্ধার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টিতে ব্যয় হবে ৩৯৭ কোটি টাকা। মান্ডা খাল পুনরুদ্ধার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টির আওতায় ভূমি উন্নয়ন, খালের বর্জ্য ও পলি অপসারণ, বাই-সাইকেল লেন ও অ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণ, ৩টি এম্পিথিয়েটার নির্মাণ, ব্যায়াম করার শেড-ফোয়ারা-ওয়াকওয়ে-ঘাট নির্মাণ, ৩২টি পথচারী পারাপার সেতু ও ৬টি গাড়ি চলাচল সেতু নির্মাণ, বসার বেঞ্চ নির্মাণ, বাচ্চাদের খেলার জায়গা-ফুডকোর্ট ও কফিশপ নির্মাণ, আর. সি. সি. রিটেনিং ওয়াল ও ঢাল সুরক্ষা নির্মাণ, দৃষ্টিনন্দন সুরক্ষা বেষ্টনী ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ ইত্যাদি অনুষঙ্গ রয়েছে। পরে মেয়র পোস্তগোলা জাতীয় মহাশ্মশান উন্নয়ন কাজের শুভ উদ্বোধন করেন।


ভোটাররা ধান কাটতে থাকায় কেন্দ্রে আসেননি: সিইসি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ হয়েছে দাবি করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ভোটাররা ধান কাটতে থাকায় ভোটকেন্দ্রে আসেননি। ভোটার বেশি এলে নির্বাচন আরও ভালো হতো।

আজ বুধবার প্রথম ধাপের নির্বাচন শেষে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচনে ভোট পড়ার হার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ হতে পারে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘সকালে বৃষ্টি এবং ধান কাটার মৌসুম বিধায় ভোট পড়ার হার কম হতে পারে। ভোটাররা ধান কাটতে থাকায় ভোটকেন্দ্রে আসেননি, এটা জানতে পেরেছি। এ ছাড়া কিছু কিছু জায়গায় ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। ভোটার বেশি এলে আরও বেশি ভালো হতো। কিন্তু আমরা গণনা করি কে বেশি ভোট পেয়েছেন। আমার বিষয় হচ্ছে ভোট হয়েছে কি না, ভোটাররা আসতে পেরেছেন কি না, ভোট দিতে পেরেছেন কি না, কোথাও কোনো অনিয়ম হলো কি না। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি।’

সিইসি বলেন, ‘১৩৯ উপজেলায় আজকে প্রথম ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে যে তথ্য পেয়েছি- নির্বাচন ভালোভাবে, অবাধ, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কিছু কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। কিছু সংঘর্ষে কিছু আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কয়েকটি কেন্দ্রে সীমিত অনিয়ম হয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়েছি। দুটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে।’

প্রশাসন, পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট সতর্ক ছিল উল্লেখ করে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘তারা দায়িত্ব পালনে যথেষ্ট তৎপর ছিলেন। পেশাদারত্বের সঙ্গে তারা দায়িত্ব পালন করেছেন। সে কারণে পরিস্থিতি যথেষ্ট ভালো ছিল।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, ৩৪টি ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন ২৫ জন। আটক হয়েছেন ৩৭ জন। ভোটকেন্দ্রের বাইরে এসব ঘটনা ঘটেছে।’


‘দেশের তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করতে দরপত্র কিনেছে ৭ কোম্পানি’

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ফাইল ছবি
আপডেটেড ৮ মে, ২০২৪ ১৮:১০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কাজে অংশ নিতে এ পর্যন্ত সাতটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি দরপত্র কিনেছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে দরপত্র সংক্রান্ত এক সেমিনারের প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে গত মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। বাংলাদেশের সমুদ্রে কাজ করার জন্য অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আজকের সেমিনারেও ১৫টির বেশি আন্তর্জাতিক কোম্পানি অংশ নিয়েছে। এবারের দরপত্রে দেশের স্বার্থের পাশাপাশি বিনিয়োগকারী কোম্পানির স্বার্থও দেখা হয়েছে। ফলে এবারের দরপত্র নিয়ে বেশ আশাবাদী।’

সেমিনারের প্রথম সেশন শেষে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, আগের দরপত্রের তুলনায় নতুন দরপত্রে অনেক পার্থক্য রয়েছে। এবার অনেক সুবিধা বেড়েছে। এবার দুই পক্ষের জন্যই বিষয়টি লাভজনক করা হচ্ছে।

জ্বালানি উপদেষ্টা আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়া অনেক শান্তিপূর্ণ একটি এলাকা। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যারা দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা করে, তারা এই বিষয়টি বিবেচনা করবে। তুলনামূলক এই এলাকায় বিনিয়োগ করা কম ঝুঁকিপূর্ণ। বাংলাদেশের সমুদ্রের আশপাশেই গ্যাসের অনেক বড় বাজার আছে। সার্বিক দিক বিবেচনায় মনে হচ্ছে, অনেকেই দরপত্রের প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে। শেভরন করপোরেশন দেশে চার বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এটাই প্রমাণ করে বাংলাদেশ কতটা সম্ভাবনাময়।


ঘরে বসেই হয়রানি ছাড়া হজের সব কাজ করা যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

‘আশকোনায় হজ কার্যক্রম-২০২৪’ এবং হজযাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ডিজিটাল হওয়ায় হয়রানি ছাড়াই ঘরে বসে হজের সব কাজ করা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বুধবার ঢাকার আশকোনায় হজ কার্যক্রম-২০২৪ এবং হজযাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আজকে স্বাধীন দেশ। আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার আজীবন সংগ্রামের মধ্য দিয়েই কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আর এই স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন বলেই আজকে আমরা স্বাধীনভাবে দেশের মানুষ হজ করার সুযোগটা পাচ্ছে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাঙালি জাতি এক সময় দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত ছিল। এক সময় চিন্তাই করতে পারত না বা সেই সঙ্গতিও অর্জন করতে পারেনি। স্বাধীনতার অর্জনের ফলেই আজকে সেটা সম্ভব হয়েছে।’

হজযাত্রীদের অভিজ্ঞতার রেশ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার একজন বোন হজ করতে যাচ্ছেন। তিনি বললেন—এখন কত সহজভাবে ঘরে বসে হজের সব কাজ সম্পন্ন করতে পারছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব ২০০৮ এর নির্বাচনী ইশতেহারে সেই ঘোষণাটা দিয়েছিলাম। আজকে তার সত্যিকার বাস্তবায়ন হয়েছে। আর বাস্তবায়ন হয়েছে বলেই আজকে এই সুযোগটা সকলে পেয়েছেন। প্রথমবার যখন সরকারে এসেছিলাম, তখন মোবাইল ফোন যাতে সকলের হাতে পৌঁছায় সে ব্যবস্থাটাও করে দিয়েছিলাম।’

মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেট প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ করবার জন্য স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করা, ব্রডব্যান্ড সমস্ত জায়গায় পৌঁছে দেওয়া, ওয়াই-ফাই কানেকশন দেওয়া, এসব করার ফলে কিন্তু আজকে এই সহজ পদ্ধতিতে আপনারা হজ করতে যেতে পারেন এবং কাজগুলো ঘরে বসে করতে পারেন কোনো রকম হয়রানি হতে হয় না। তা ছাড়া সরাসরি যাতে রেজিস্ট্রেশন করা যায়, সেই ব্যবস্থাটাও আমরা করে দিয়েছি এবং যারা নিজেরা কম্পিউটার ব্যবহার করবেন না প্রত্যেকটা এলাকায় আমরা তো ডিজিটাল সেন্টার তৈরি করে দিয়েছি। এই ডিজিটাল সেন্টারে বসে কিন্তু রেজিস্ট্রেশন করা যেতে পারে। করতে পারেন। সে ব্যবস্থাটাও আমরা করে দিয়েছি।’

সৌদি বাদশা ও প্রাইম মিনিস্টার এবং হজ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা বাংলাদেশের হজের ব্যাপারে অনেক উদার এবং অনেক সহযোগিতা আমাদের করে যাচ্ছেন, সে জন্য আমি তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি ১৯৮৪ সালে প্রথম যখন ওমরাহ করতে যাই এবং এর পরে ১৯৮৫ সালে প্রথম যখন হজ করি তখন হজের যে অব্যবস্থাপনা এবং এরপর যতবার আমি এসেছি, সৌদি বাদশার অতিথি হিসেবেই আমি এসেছি সেই ৮৫ সাল থেকে। সব সময় হজ ক্যাম্পগুলো ঘুরে বেড়াতাম। কোথাও কী সমস্যা আছে; আমি ফিরে এসে চিঠি দিতাম। এখানে আমাদের যিনি অ্যাম্বাসেডর আছেন, তার সঙ্গে কথা বলতাম। যদিও তখন আমি এমপিও না, মন্ত্রীও না কিছুই না—একজন নাগরিক হিসেবে। আমার কথায় তারা গুরুত্ব দিয়েছেন এবং আস্তে আস্তে আমরা এই হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও উন্নত করতে পেরেছি। সেটা করতে পেরেছি বলেই আজকে সকলে আপনারা ভালোভাবে হজ করতে পারছেন বা হজ করতে যেতে পারছেন এবং আরও সহজ হচ্ছে।’

আশকোনা হজ ক্যাম্পের উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখান থেকে আমরা একটা আন্ডারপাস করে দিচ্ছি। এই হজ ক্যাম্প এবং বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের সঙ্গে বিমানবন্দরের যোগাযোগটা আন্ডারপাস দিয়েই হবে। খুব সহজে আপনারা পৌঁছে যেতে পারবেন। মালপত্রও নিয়ে যাওয়া যাবে, সে ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। পায়ে হেঁটে যাওয়ার দরকার হবে না, তার জন্য আমরা বিশেষ ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। এখানে সোজা স্কেলেটর থাকবে, গলফ কার্টের মতো ব্যাটারিচালিত গাড়ি থাকবে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমাদের কোনো বিমান ছিল না। আমি আসার পর নিজস্ব বিমানও ক্রয় করেছি। আগে দুই-তিনটা ঝরঝরে ছিল, খুবই খারাপ অবস্থা কিন্তু এখন আমি একেবারে আধুনিক বিমান কিনে দিয়েছি। কারণ সৌদির বিমান আমাদের হজযাত্রীদের নেন, পাশাপাশি আমরা আমাদের নিজস্ব বিমানে পাঠাতে পারি, আগে তো ভাড়া করে আনতে হতো! এখন আর খুব বেশি লাগে না। আমরা নিজেদের বিমানেই করতে পারি। সে ব্যবস্থাটাও আমরা করতে পেরেছি।’

হজযাত্রীদের বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা দেখছেন যে প্যালেস্টাইনে কী হচ্ছে। যেভাবে সেখানে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। ওখানে নারী-পুরুষ, ছোট শিশুদেরও রেহাই দেওয়া হচ্ছে না। যেখানেই আমি কথা বলছি, আমার কণ্ঠ সোচ্চার—আমি প্রতিটি জায়গায় এর প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। প্যালেস্টাইন আরব ভূখণ্ডে, তাদের জায়গা তারা পাবে। এটা তাদের অধিকার। এই অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারে না। কাজেই সেই অধিকার তাদের দিতে হবে। আজকে যদি আমাদের সকল মুসলিম কান্ট্রিগুলো (দেশ) এক হয়ে একযোগে কাজ করতে পারতো, তাহলে আরও আমরা এ ব্যাপারে অনেক অগ্রগামী হতে পারতাম। ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আমি একাই একমাত্র বোন। আমি বলছি, আমি একমাত্র বোন আছি, কাজেই আমার এটাই কথা সকলে এক হোন এবং এই ধরনের অন্যায়-অবিচার যেন আমাদের ওপর না হয় সেদিকে যাওয়ার জন্য সকলে সোচ্চার থাকবেন।’


ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ৮০ কি.মি. বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকাসহ দেশের আরও ১২টি অঞ্চলের ওপর দিয়ে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ বুধবার সকালে নদীবন্দরের সতর্কবার্তায় সংস্থাটি এমন তথ্য জানায়।

সতর্ক বার্তায় বলা হয়, বরিশাল, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার বেগে দমকা ও ঝড়োহাওয়া সহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে দুই নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ঢাকা, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা ও ঝড়োহাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকায় এক নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।


রবীন্দ্রনাথের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী আজ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৮ মে, ২০২৪ ০০:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাঙালির আত্মিক মুক্তি ও সার্বিক স্বনির্ভরতার প্রতীক, বাংলাভাষা ও সাহিত্যের উৎকর্ষের নায়ক, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখের এই দিনে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঘর আলো করে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।

তার লেখা ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। এ দেশের মুক্তিযুদ্ধে তার কবিতা ও গান ছিল সীমাহীন প্রেরণা উৎস্য।

বিশ্বকবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রবীন্দ্রনাথ ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। কবির গান-কবিতা এই অঞ্চলের মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তির ক্ষেত্রে প্রভূত সাহস জোগায়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধেই শুধু নয়, আমাদের প্রতিটি সংগ্রামে চিরকালই কবির রচনাসমূহ প্রাণের সঞ্চার করে।

নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ নোবেল বিজয়ী এই বাঙালি কবিকে স্মরণ করবে তার অগণিত ভক্ত। শুধু দুই বাংলার বাঙালিই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাংলা ভাষাভাষীরা কবির জন্মবার্ষিকীর দিবসটি পালন করবে হৃদয় উৎসারিত আবেগ ও পরম শ্রদ্ধায়।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে বিশ্বকবির স্মৃতিবিজড়িত নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার পতিসরে, কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ি, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর এবং খুলনার দক্ষিণডিহি ও পিঠাভোগে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন করা হবে। এ উপলক্ষে রবীন্দ্রমেলা, রবীন্দ্রবিষয়ক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

কবিগুরুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বেলা ১১টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্বকবির ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করবেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে ছায়ানটের রবীন্দ্র-উৎসব ২৫ ও ২৬ বৈশাখ (৮ ও ৯ মে) ছায়ানট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন অনুষ্ঠান আরম্ভ হবে সন্ধ্যা ৭টায়।

দুই দিনব্যাপী এই উৎসবে পরিবেশিত হবে একক ও সম্মেলক গান, নৃত্য, পাঠ-আবৃত্তি। অনুষ্ঠানে ছায়ানটের শিল্পী ছাড়াও আমন্ত্রিত শিল্পী ও দল অংশ নেবে। ছায়ানট মিলনায়তনে আয়োজিত এই উৎসব সবার জন্য উন্মুক্ত।


বাংলা ও বাঙালির বাতিঘর

আপডেটেড ৮ মে, ২০২৪ ০০:৪৬
 সৈয়দ আফজাল হোসেন

বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিস্ময়কর প্রতিভার জাদুকরী স্পর্শে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য পূর্ণতা পেয়েছে এবং সমৃদ্ধ ও আলোকিত এবং বিকশিত হয়েছে। সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে তিনি বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতিকে বিশ্বপরিমণ্ডলে মর্যাদার সঙ্গে তুলে ধরেছেন।

তার মূল পরিচয় কবি হলেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মূলত বাংলা সাহিত্যের প্রাণস্পন্দন। সাহিত্যের সকল শাখায় রয়েছে তার সফল বিচরণ। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, গল্পকার, নাট্যকার, চিত্রকর এবং সংগীত ও সুরস্রষ্টা। তিনিই বাংলা সাহিত্যে ছোটগল্পের প্রবর্তক।

বাংলা ভাষার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বোদ্ধারা ‘গুরুদেব’, ‘কবিগুরু’ ও ‘বিশ্বকবি’ অভিধায় অভিহিত করে থাকেন। কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার ‘সঞ্চিতা’ কাব্যগ্রন্থ উৎসর্গকালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ‘বিশ্বকবিসম্রাট’ বলে সম্বোধন করেছেন।

রবীন্দ্র সাহিত্যের অন্যতম প্রধান উপকরণ হচ্ছে জীবন ও জীবনবোধ, প্রকৃতি ও সৌন্দর্য, মনুষ্যত্ব ও মানবমুক্তি, প্রেম-ভালোবাসা এবং একেশ্বরবাদের বন্দনা করা। পাশাপাশি সমাজের নানা অসমতা, হীনতা-দৈন্যতা ও দুর্দশার কথাও তিনি তার সুতীক্ষ্ণ লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছেন। গভীর অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে তিনি এসবের মধ্যে থেকে সত্যকে আবিষ্কার করে পাঠকের মনোজগতে প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছেন। আর নিজে হয়ে উঠেছেন কবি-সাহিত্যিক থেকে দার্শনিক।

গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। সমগ্র এশিয়া মহাদেশের মধ্যে তিনিই প্রথম এই পুরস্কার প্রাপ্তির গৌরব অর্জন করেন। পরবর্তীতে ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত করে। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি ‘নাইটহুড’ বর্জন করেন। নাইটহুড প্রত্যাখ্যানপত্রে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমার এই প্রতিবাদ আমার আতঙ্কিত দেশবাসীর মৌনযন্ত্রণার অভিব্যক্তি।’ এর মাধ্যমেই তার দেশপ্রেম ও মানবপ্রেমের পরিচয় পাওয়া যায়।

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় রবীন্দ্রনাথের গান-কবিতা বাঙালির মনে সাহস ও শক্তি জোগায় এবং প্রাণের সঞ্চার করে। তার লেখা ‘আমার সোনার বাংলা’ বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। অর্থাৎ বাঙালির চিন্তায়, মননে, কল্পনায়, চেতনায় ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছেন তিনি।

প্রকৃতিপ্রেমী রবীন্দ্রনাথের উপলব্ধির গভীরতায় ও ভাষার সহজাত ভঙিমায় শিল্পিত রূপ পেয়েছে বাংলার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

রাবীন্দ্রনাথ তার দার্শনিক উপলব্ধির দ্বারা প্রায় শতবছর আগে সমাজের যে চিত্র তুলে ধরেছেন তা আজও বিদ্যমান। তিনি লিখেছেন, ‘ডিমোক্রাসি আজ যেখানে সেখানে যত টুকরো অ্যারিস্টোক্রেসির পুজো বসিয়েছে - খুদে খুদে অ্যারিস্টক্রাটে পৃথিবী ছেয়ে গেল, কেউ পলিটিক্সে, কেউ সাহিত্যে, কেউ সমাজে। তাদের কারো গাম্ভীর্য নেই, কেননা তাদের নিজের পরে বিশ্বাস নেই।’

রবীন্দ্রনাথের ধর্মদর্শন মানবিকতার জয়গানে মুখর। ধর্মের নামে হানাহানি-মারামারি কবিমনকে ব্যথিত করত। ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে তার অবস্থান ছিল স্পষ্ট। তাই ধর্মান্ধতা সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘ধর্মের বেশে মোহ এসে যারে ধরে/ অন্ধ সে জন, মারে আর শুধু মরে’।

ন্যায়-অন্যায় বোধ সম্পর্কে তিনি মানুষকে সচেতন করা এবং তাদের নৈতিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে তার বিখ্যাত দুটি লাইন প্রণিধানযোগ্য: ‘অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে যেন তৃণসম দহে।’ পাশাপাশি মানুষের সীমাহীন চাহিদার কথা এভাবে বর্ণনা করেছেন: ‘এ জগতে, হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি- রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।’

‘শেষের কবিতা’ উপন্যাসে শিলং পাহাড়ের রোমান্টিক পরিবেশে অমিত-লাবণ্যের প্রেমকে অনবদ্যভাবে ফুটিয়ে তোলেন। ভালোবাসার শব্দটির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘ভালোবাসার ট্র্যাজেডি ঘটে সেখানেই যেখানে পরস্পরকে স্বতন্ত্র যেনে মানুষ সন্তুষ্ট থাকতে পারেনি- নিজের ইচ্ছেকে অন্যের ইচ্ছে করবার জন্যে যেখানে জুলুম- যেখানে মনে করি আপন মনের মতো করে বদলিয়ে অন্যকে সৃষ্টি করবো।’

জমিদারের সন্তান হয়েও জমিদারির দম্ভ, অহমিকা তাকে স্পর্শ করেনি। এক মহান প্রজাদরদি জমিদার ছিলেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। মানুষের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে তিনি গভীরভাবে ভাবতেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পত্র-প্রবন্ধ সংকলন ‘রাশিয়ার চিঠি’ বইয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এবারে রাশিয়া ঘুরে এসে সেই সৌন্দর্যের ছবি আমার মন থেকে মুছে গেছে। কেবলই ভাবছি আমাদের দেশ-জোড়া চাষীদের দুঃখের কথা। আমার যৌবনের আরম্ভকাল থেকেই বাংলাদেশের পল্লীগ্রামের সঙ্গে আমার নিকট-পরিচয় হয়েছে। তখন চাষীদের সঙ্গে আমার প্রত্যহ ছিল দেখাশোনা- ওদের সব নালিশ উঠেছে আমার কানে। আমি জানি, ওদের মতো নিঃসহায় জীব অল্পই আছে, ওরা সমাজের যে তলায় তলিয়ে সেখানে জ্ঞানের আলো অল্পই পৌঁছায়, প্রাণের হাওয়া বয় না বললেই হয়।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘চাষীকে আত্মশক্তিতে দৃঢ় করে তুলতে হবে, এই ছিল আমার অভিপ্রায়। এ সম্বন্ধে দুটো কথা সর্বদাই আমার মনে আন্দোলিত হয়েছে- জমির স্বত্ব ন্যায়ত জমিদারের নয়, সে চাষীর; দ্বিতীয়ত, সমবায়নীতি-অনুসারে চাষের ক্ষেত্র একত্র করে চাষ না করতে পারলে কৃষির উন্নতি হতেই পারে না। মান্ধাতার আমলের হাল লাঙল নিয়ে আলবাঁধা টুকরো জমিতে ফসল ফলানো আর ফুটো কলসিতে জল আনা একই কথা।’

পরিশেষে বলতে হয়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চিরকাল বাংলা ও বাঙালির বাতিঘর হয়ে থাকবেন।


banner close