মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ঝামেলামুক্ত সেবা নিশ্চিত করুন: প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে জাতীয় ভূমি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস
আপডেটেড
২৯ মার্চ, ২০২৩ ২০:৪০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২৯ মার্চ, ২০২৩ ২০:৪০

জমির মালিকানা-সংক্রান্ত সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যার অবসান এবং ঝামেলামুক্ত সেবা নিশ্চিত করতে ভূমি ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে দেশের প্রথম তিন দিনব্যাপী জাতীয় ভূমি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘ভূমির মালিকানা সুনির্দিষ্ট করার জন্য ভূমি বণ্টন ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজ করতে হবে এবং এর ফলে পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যার সমাধান হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমাজে এটা খুবই সাধারণ ঘটনা যে ভাই-বোন উভয়েই একে অপরকে পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে। যার ফলে হামলা, হত্যা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তিনি আরও বলেন, ‘যদি একটি সঠিক ভূমি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়, তাহলে সমস্যার সমাধান হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সব মানুষের জমির মালিকানা রক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আপনি দেশে এবং বিদেশে যেখানেই থাকুন না কেন- আপনার (দেশবাসী) সম্পত্তি আপনারই থাকবে। আমরা আপনার অধিকার সুরক্ষিত ও সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি।’

জমি-সংক্রান্ত পরিষেবা পাওয়ার সময় জনগণকে কিছুতেই ঝামেলার সম্মুখীন করা যাবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটি ডিজিটাল ল্যান্ড সিস্টেম তৈরি করছি বলে সমস্যাটি আর থাকবে না।’

একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সাতটি উদ্ভাবনী উদ্যোগেরও সূচনা করেন। এগুলো হলো- লক্ষ্মীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মৃতিস্তম্ভ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গুচ্ছগ্রাম কমপ্লেক্স, রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন ইন্টারকানেকশন, স্মার্ট ল্যান্ডম্যাপ, স্মার্ট ল্যান্ড রেকর্ডস, স্মার্ট ল্যান্ড পিডিয়া, স্মার্ট ল্যান্ড। সারা দেশে ৪০০ উপজেলায় সার্ভিস সেন্টার ও আধুনিক ভূমি অফিস।

তিনি বলেন, ‘আমাদের ভূমি মন্ত্রণালয়ের গৃহীত সাতটি উদ্যোগের প্রতিটি একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

প্রধানমন্ত্রী জনগণকে ঝামেলামুক্ত ও দ্রুত ভূমি-সংক্রান্ত সেবা দিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এবং আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার।

ভূমি সচিব মো. মুস্তাফিজুর রহমান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। রাজবাড়ি সদর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) নূরজাহান আখতার সাথী সহকারি কমিশনারদের পক্ষ থেকে তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী ২০১৩-১৪ সালে তথা-কথিত আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামাতের দেশব্যাপী সহিংসতার কথা দেশবাসীকে মনে করিয়ে দেন। তখন তারা রাস্তায় যানবাহনে পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল এবং ছয়টি ভূমি অফিসসহ ৭০টি সরকারি কার্যালয়ের ক্ষতি সাধন করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব অফিসে হামলার ফলে সারাদেশে ভূমি অফিসগুলোর জরাজীর্ণ অবস্থার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল। তাঁর সরকার আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত উন্নত উপজেলা ভূমি অফিস নির্মাণ করেছে।

তিনি আরো বলেন, ‘আজ আমি ৪০০টি উপজেলায় আধুনিক ভূমি অফিস উদ্বোধন করেছি। বিএনপি-জামাত চক্র জনগণের সম্পদ ধ্বংস করে আর আওয়ামী লীগ জনগণের কল্যাণে তৈরি করে। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য জনগণের সেবা করা, আমাদের লক্ষ্য দেশবাসীর শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা।’

প্রধানমন্ত্রী ‘ডেভেলপিং ট্রান্সপারেন্ট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টেবল পাবলিক ইন্সটিটিউশনস’ ক্যাটাগরিতে মর্যাদাপূর্ণ ‘ইউনাইটেড নেশনস পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ অর্জনের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় এবং ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) অ্যাওয়ার্ড ২০২২ অর্জনের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ’স ডিজিটাল ল্যান্ড (ডেভেলপমেন্ট) ট্যাক্স সিস্টেমকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান যাতে করে বাংলাদেশকে খাদ্য শস্যের জন্য কারো ওপর নির্ভর করতে না হয়।

তিনি আরো বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উন্নত দেশসহ গোটা বিশ্ব অর্থনৈতিক ও খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘তাই, আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমরা আর আমদানির ওপর নির্ভর করে থাকতে চাই না। আমরা আমাদের নিজস্ব চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত খাদ্য শস্য অন্য দেশে রপ্তানি করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।


আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থছাড় নিশ্চিত হয়েছে

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ইতিবাচক ফল
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঘোষিত ঋণের তৃতীয় কিস্তিতে সবুজ সংকেত পেয়েছে বাংলাদেশ। আগামী জুনে তৃতীয় কিস্তির এই অর্থ পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এই কিস্তিতে মোট ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের মধ্যে ৬৮ কোটি ডলার পাবে বাংলাদেশ। সোমবার আইএমএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রণালয়ের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তারা জানান, আইএমএফ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উইংয়ের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকে তৃতীয় কিস্তি নিশ্চিত করার জন্য চুক্তির বিভিন্ন দিক চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ বছরের জুন নাগাদ দেশের নিট বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ২০ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার শর্ত দিয়েছিল আইএমএফ, ঋণদাতাটি এটা কমিয়ে ১৭-১৮ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনতে পারে বলেও জানান তারা।

এর আগে গতমাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থছাড়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যাক্ত করে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ‘আইএমএফের দেওয়া দশটি শর্তের মধ্যে বাংলাদেশ নয়টি পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। তাই পরবর্তী কিস্তি পেতে কোন অসুবিধা হবেনা।’

উল্লেখ্য, আইএমএফের ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছেন।

এ ছাড়া, তার ক্লান্তিহীন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা ও সুদক্ষ নেতৃত্বে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় চলমান রয়েছে।

ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার জন্য মার্চ শেষে ১ হাজার ৯২৬ কোটি ডলার ও জুন শেষে ২ হাজার ১০ কোটি ডলার নিট রিজার্ভ সংরক্ষণের শর্ত ছিল আইএমএফের। অর্থবিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের নিট রিজার্ভের পরিমাণ প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। এ শর্ত পূরণ না হলেও তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার বিষয়ে কোন সংশয় নেই।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব আহরণের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৪০ কোটি টাকার বিপরীতে ১ লাখ ৬২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা আদায় করেছে সরকার। তবে অর্থবছর শেষে আগামী জুন পর্যন্ত ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা কর-রাজস্ব আহরণ করতে হবে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এবার আইএমএফ মোটাদাগে কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে- তার মধ্যে রয়েছে বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা, সুদহার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া, রাজস্ব আহরণ আরেকটু বাড়ানো ও সরকারের ভর্তুকি কমিয়ে আনা। সরকারও আইএমএফ এর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নীতি গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিচ্ছে।’

“জুনভিত্তিক নিট রিজার্ভের শর্ত ২০.১০ বিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে ১৭-১৮ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করে দিতে পারে আইএমএফ। তবে জুনের আগে এটি অর্জন করাও কঠিন হবে”- বলেন এই অর্থনীতিবিদ।

আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আইএমএফ কর্মকর্তারাদের বৈঠক:

ঋণের তৃতীয় এবং চতুর্থ কিস্তির জন্য ব্যাংকিং খাতের শর্ত সামঞ্জস্য করতে আজ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইএমএফের কর্মকর্তাদের বৈঠক করার কথা রয়েছে।

এ ছাড়া একইদিন অর্থপ্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান ও অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সঙ্গে সভা করে ঋণের তৃতীয় কিস্তি ও চতুর্থ কিস্তি ছাড় করার জন্য সংশোধিত শর্তগুলো (রিভাইজড টার্মস এন্ড কন্ডিশন) সংযুক্ত করে চূড়ান্ত করা সমঝোতা স্মারকে সম্মতি নেবে আইএমএফ।

এরপর আগামীকাল বুধবার প্রেস ব্রিফিং করে ঢাকা ছাড়বে আইএমএফের ডেভেলপমেন্ট ম্যাক্রো-ইকোনমিক্স ডিভিশনের প্রধান ক্রিস পাপাগেওর্জিউর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলটি।

ঋণকর্মসূচির পর্যালোচনা করতে গত ২৪ এপ্রিল ঢাকায় আসে এই প্রতিনিধি দল।

উল্লেখ্য, গত বছরের জানুয়ারিতে আইএমএফের সঙ্গে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাতটি কিস্তিতে এই ঋণ ছাড় করা হবে।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফ ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলারের প্রথম কিস্তি ছাড় করে। আর ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ছাড় করে।


ধান-চালের গুণগতমান নিয়ে আপস নয়: খাদ্যমন্ত্রী

মঙ্গলবার সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে নিজ অফিস কক্ষে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ছবি: সংগৃগীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ধান ও চালের গুণগতমানে কোনো আপস করা হবে না। হাওরের ৯৮ থেকে ৯৯ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। তা শুকিয়ে ঘরে তুলে রাখা হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে তাদের কোনো ক্ষতি হয়নি।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে নিজ অফিস কক্ষে বোরো সংগ্রহ অভিযান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সঠিক সময়ে বোরো সংগ্রহ করতে হবে। জুন মাসের মধ্যে ৭০ শতাংশ বোরো সংগ্রহ করা যাবে। হাওরকে প্রাধান্য দিয়ে সেখানে ধানের বরাদ্দ বেশি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কৃষক যাতে হয়রানি না হন, প্রতিটি ইউনিয়নে তিনজন করে কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা আছেন, যাদের ব্লক সুপারভাইজার বলা হতো, তাদের কাছে একটি করে ময়েশ্চার মিটার দেওয়া আছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘কোনো কৃষক যদি গোডাউনে ধান নিয়ে আসেন, যার আর্দ্রতা ১৫ বা ১৬ শতাংশ আছে, তাহলে সেই ধান শুকাতে কৃষককে হয়রানি হতে হবে। এজন্য কৃষি দপ্তরের কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তারা আর্দ্রতার যন্ত্র দিয়ে ধান পরীক্ষা করে আসবেন। আর গোডাউনে ধান দিতে এসে কোনো লেবার যাতে কৃষকদের হয়রানি না করেন, সেদিকে জেলাপ্রশাসক (ডিসি) এবং আমাদের কর্মকর্তাদের নজর রাখতে বলেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা লেবার সাপ্লাই দেন, সেই ল্যান্ডিং ঠিকাদারদের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। কোনো কৃষক যাতে কোনোভাবে অপমানিত না হয়, এজন্য আমরা সচেষ্ট থাকব। কেউ কৃষকদের হয়রানি করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিষয়:

প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সাক্ষাৎ

মঙ্গলবার সকালে গণভবনে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক অ্যামি পোপের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেছেন জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক অ্যামি পোপ। আজ মঙ্গলবার সকালে সাক্ষাৎকারটি অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং আজ গণমাধ্যমকে এ তথ্য দেন।

জাতিসংঘের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকা সফর করবেন সংস্থাটির বিভিন্ন প্রধানরা। আইওএম মহাপরিচালক অ্যামি পোপকে দিয়ে তা শুরু হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অ্যামি পোপ ৫ থেকে ৯ মে বাংলাদেশ সফরে থাকবেন।

গত রোববার ৫ মে ঢাকায় আসেন জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক অ্যামি পোপ।

এর আগে ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর আইওএম মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান অ্যামি। সংস্থাটির ৭৩ বছরের ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী মহাপরিচালক। । তিনি আইওএমে যোগ দেওয়ার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিবাসন বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ছিলেন। এমনকি একসময় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ডেপুটি হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিষয়ক উপদেষ্টাও ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার তৎকালীন মহাপরিচালক উইলিয়াম ল্যাসি সুইং বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।


‘উপজেলা নির্বাচন অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ’

মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে উপজেলা নির্বাচনের ভোট অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে। নির্বাচন যেন প্রভাবিত না হয় এই ব্যাপারে কমিশনের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন কমিশন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে সেটাই বড় কথা। কোনো দল এলো কি এলো না- সেটা বড় কথা নয়। জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে এ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে। নির্বাচন যাতে প্রভাবিত না হয় সে ব্যাপারে কমিশন চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ভোটে কেউ যাতে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সে ব্যাপারে ইসির অবস্থান স্পষ্ট। প্রমাণ পেলেই ব্যবস্থা। ভোটকেন্দ্রে অনুপ্রবেশকারীরা যাতে ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে রিটার্নিং অফিসারকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ইসি কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। উৎসাহ-উদ্দীপনা থেকে ভোটের মাঠে যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশনা রয়েছে কমিশনের। ভোটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথভাবে মোতায়েন করা সম্ভব হবে।

গণমাধ্যমের দ্বারাও শৃঙ্খলা ভঙ্গের চিত্র দেখা গেলে এসময় কমিশন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান সিইসি। আগামীকাল বুধবার প্রথম ধাপে ১৪০টি উপজেলায় ভোট হবে। প্রথম ধাপে পাঁচটি উপজেলার প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন বলে জানান সিইসি।

বিষয়:

উপজেলা নির্বাচন: প্রথম ধাপে ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

ফাইল ছবি
আপডেটেড ৭ মে, ২০২৪ ১২:০১
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রথম ধাপের ১৪০টি উপজেলার পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রথম ধাপে ৪১৮ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকালে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আগামীকাল ৮ মে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার নিমিত্তে (In Aid to the Civil Power) এর আওতায় ৬-১০ মে পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিজিবি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।

এমনকি প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট উপলক্ষে কাল ৮ মে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।

মোট চারটি ধাপে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পরবর্তীতে তিন ধাপের ভোট যথাক্রমে ২৩, ২৯ মে ও ৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। দেশে মোট উপজেলার সংখ্যা ৪৯৫টি।


আরও কয়েকদিন ঝড়-বৃষ্টির আভাস

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৭ মে, ২০২৪ ০০:২৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত কয়েক দিন ধরেই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টি হওয়ায় এপ্রিল মাসের অব্যাহত থাকা তীব্র দাবদাহ অনেকটাই কমেছে। ফলে জনজীবনে বেশ স্বস্তিদায়ক অবস্থা দেখা যাচ্ছে। গরমে হাপিত্যেশ অবস্থা থেকে মুক্তি মিলেছে। চলতি মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ঝড়-বৃষ্টির যে পূর্বাভাস ছিল তা অব্যাহত আছে।

রোববার রাতে রাজধানীতে শীতল ছোঁয়া নিয়ে এসেছে ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি। এই অবস্থা আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এর আগে দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলেমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোতে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

গতকাল সোমবার আবহাওয়া অধিদপ্তর তথ্যমতে, খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার কথা। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। আর আবহাওয়ার পূর্বাভাসে তাপপ্রবাহ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ তাপপ্রবাহ অধিকাংশ জায়গায় কমতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

এদিকে আজ মঙ্গলবার রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শিলাবৃষ্টিও হতে পারে কোথাও কোথাও। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আর আবহাওয়া অফিস আগামীকাল বুধবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত দেওয়া এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, এ সময়ের মধ্যে দেশের সব বিভাগে বজ্রঝড়, কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে। এ ছাড়া বিক্ষিপ্তভাবে হতে পারে শিলাবৃষ্টিও। এ ছাড়া রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক গণমাধ্যমকে জানান, সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ সময়ে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অধিকাংশ জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে।

এদিকে দেশজুড়ে আগামী ছয়-সাত দিন বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টির প্রবণতা থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রেকর্ড একটানা তাপপ্রবাহের পর রোববার রাতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টির দেখা মেলে। প্রচণ্ড গরমে জনজীবনে কিছুটা ‘স্বস্তি’ আসে তাতে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন সোমবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা ছিল বেশি। আগামী ছয়-সাত দিনও সারা দেশে বিচ্ছিন্ন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা অব্যাহত থাকবে।’

সোমবার বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ফেনীতে সর্বোচ্চ ১০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান তিনি। ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

অবশেষে চুয়াডাঙ্গায় স্বস্তির বৃষ্টি

টানা তাপপ্রবাহের পর চুয়াডাঙ্গায় শুরু হয়েছে স্বস্তির বৃষ্টি। সোমবার দুপুর ৩টা ৩৫ মিনিট থেকে শুরু হয় বৃষ্টিপাত। সঙ্গে ছিল শিলা ও বজ্রপাত। বয়ে গেছে ঝোড়ো হাওয়া। এর আগে চুয়াডাঙ্গার আকাশে মেঘের লুকোচুরি ছিল। দুপুর ৩টা থেকে মেঘের আনাগোনা বেড়ে যায়। এরপর ঝরতে থাকে বৃষ্টিধারা। গত এপ্রিল মাসজুড়ে এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে অতি তীব্র আকারের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। গত এক মাসের মধ্যে মাত্র ৪ দিন স্বাভাবিক তাপমাত্রা বিরাজ করছিল এ জেলায়। টানা এ খরতাপের মধ্যে বৃষ্টির অপেক্ষায় দিন গুনছিল মানুষ। অবশেষে সেই বহুল কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা মেলায় জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে।

চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পূর্বাভাস পাওয়া যায়। কোথাও কোথাও বৃষ্টি ও ঝড়ের খবর পাওয়া গেলেও সোমবার দুপুরের পর থেকে চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়। সন্ধ্যা ৬টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৪ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ১২ মে পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টিতে জনমনে স্বস্তি

টানা তীব্র দাবদাহের পরে অবশেষে পটুয়াখালীতে নামল স্বস্তির বৃষ্টি। বৃষ্টিতে জনজীবনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। সোমবার (৫ মে) বিকাল ৫টার পর থেকে পটুয়াখালীতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। সঙ্গে ছিল হালকা দমকা হাওয়া। পরে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে মাঝারি আকারে বৃষ্টি শুরু হয়। আকাশ মেঘলা থাকায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।

গত এপ্রিল মাসজুড়ে এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পটুয়াখালীর ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। টানা খরতাপের মধ্যে বৃষ্টির অপেক্ষায় দিন গুনছিল মানুষ। অবশেষে সেই বহুল কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা মেলায় জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে।

দীর্ঘদিন তীব্র তাপপ্রবাহের পর খুলনায়ও দেখা মিলল স্বস্তির বৃষ্টি। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। ঝোড়ো হাওয়া ও বজ্রপাতের সঙ্গে কিছু কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত এপ্রিল মাসজুড়ে এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহে খুলনার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। টানা এ খরতাপের মধ্যে বৃষ্টির অপেক্ষায় দিন গুনছিল মানুষ। স্বস্তির বৃষ্টি দেখে অনেকেই উচ্ছ্বাসে ভিজতে নেমে যান।

অন্যদিকে টানা কয়েক দিনের তীব্র থেকে অতি তীব্র দাবদাহের পর গোপালগঞ্জে দমকা হাওয়ার সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। তবে বৃষ্টিতে বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। সোমবার (৬ মে) বিকাল থেকে আকাশ মেঘে ঢেকে যায়। বিদ্যুৎ চমকানোর সঙ্গে শোনা যায় মেঘের গর্জন, হয় বজ্রপাতও। সন্ধ্যায় শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। সন্ধ্যার পর বাড়তে থাকে বৃষ্টি। জনমনে আসে স্বস্তি। বৃষ্টি আর শীতল হাওয়ায় গরম থেকে মুক্তি পেয়েছে মানুষ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজতে দেখা যায় অনেককেই। এদিকে জেলায় এখনো যেসব চাষিরা বোরো ধান কেটে ঘরে তুলতে পারেননি, তারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র গরমের পর বরগুনায় হঠাৎ স্বস্তির বৃষ্টি নেমেছে। সোমবার বিকাল ৫টার পর থেকে বরগুনার বিভিন্ন জায়গায় স্বস্তির বৃষ্টির সঙ্গে বইছে দমকা হাওয়া। হঠাৎ বৃষ্টিতে জনজীবনে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে।

বিকাল ৪টা থেকে আকাশে গুমট ভাব। কালো মেঘে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে বরগুনার বিভিন্ন জায়গা। আধাঘণ্টা পরই বিভিন্ন জায়গায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। কৃষকরা জানান, এ বৃষ্টি আমাদের কাছে ঈদের খুশির মতো। বৃষ্টির কারণে ডাল, তেল ও বোরো ফসলের সজীবতা ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এ জন্য বৃষ্টি হওয়ায় একটু স্বস্তি পেয়েছেন তারা।


চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত নেই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক  

জাতীয় সংসদে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, আপাতত সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত নেই সরকারের। তবে আগামীতে চাকরিতে বয়সসীমা বাড়াব কি-বাড়াব না, বাড়ালে ভালো হবে কি না, এটি আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আরও আলাপ-আলোচনা করা হবে। সোমবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে পৃথক দুটি সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে মন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সম্পূরক প্রশ্নে চাঁদপুর-৫ আসনের রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম ও সংরক্ষিত আসনের এমপি ফরিদা ইয়াসমিন চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে কি না তা জানতে চান।

রফিকুল ইসলাম তার প্রশ্নে বলেন, সরকারি চাকরিতে যোগদানের যে বয়সসীমা রয়েছে তা অনেক আগে নির্ধারণ করা হয়েছিল। ইতোমধ্যে আমাদের দেশের মানুষের আয়ুষ্কাল ৬২ বছর থেকে ৭২ বছরে এসে পৌঁছেছে। এখন এটা অত্যন্ত যৌক্তিক হবে সরকারি চাকরিতে যোগদানের বর্তমান বয়সসীমা শিথিল করে অন্তত ৩৫ বছরের কাছে নিয়ে যান। এটা হলে কর্মসংস্থানের অভাবে আমাদের হতাশাগ্রস্ত তরুণ ও যুব সমাজ প্রতিযোগিতায় এসে সরকারি চাকরিতে ঢুকতে পারবে। আমি সরকারকে অনুরোধ করব বয়সসীমা শিথিল করার সময় এসেছে। সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টির সময় হয়েছে। আমাদের ‘না’ একটা মনোভাব রয়েছে-এটা থেকে বেরিয়ে ‘হ্যাঁ’-তে চলে আসতে হবে।

জবাবে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, গত ১৫ বছরে সরকার অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চাকরির বয়স ছিল ২৭ বছর, সেখান থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছরে উন্নীত করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য সেটা ৩২ বছর করা হয়েছে। চাকরি থেকে অবসরের বয়স ৫৭ বছর থেকে বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়েছে। আমরা সবসময় যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জনবল কাঠামো ও নিয়োগ প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করে থাকি। যুগের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে আমরা পরিবর্তনও করে থাকি।

চাকরিতে প্রবেশ ও বেরিয়ে যাওয়ার (অবসর) বয়সটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরি ঘিরে এখন বেশ আকর্ষণ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যন্ত মেধাবীরা ক্যাডার সার্ভিসে যোগদান করছেন। সরকারি চাকরির পরিবেশ থেকে শুরু করে বেতন কাঠামো নতুন প্রজন্মের কাছে বড় আকর্ষণ তৈরি করেছে। সরকারের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ততা একটি সম্মানের বিষয়। আবার চাকরির নিরাপত্তা থেকে শুরু করে বেতন কাঠামো অত্যন্ত সুন্দর এবং কাজের পরিবেশও সুন্দর হয়েছে।

বয়স বাড়ানো প্রশ্নে তিনি বলেন, এটি নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। আমরা সবসময় বলে আসছি, ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েট যারা তাদের রিক্রুট করতে চাই। এটা সরকারের একটা পলিসি। আমরা বিসিএস-এর মাধ্যমে দেখে থাকি ২২/২৩ বছর বয়স থেকেই তারা বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে থাকেন। তারা ৬/৭ বছর সময় পেয়ে থাকেন। এ জন্য তারা যোগদানের যথেষ্ট সময় পাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টি সংসদে জানিয়েছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা সবসময় যুগের প্রয়োজনে নতুন যেটা করলে ভালো হবে সেটা চিন্তা-ভাবনা করে থাকি। তবে আমি মনে করি, এটা নীতিগত সিদ্ধান্ত। আমরা চাকরির বয়স আগামীতে বাড়াব কি বাড়াব না, বাড়ালে ভালো হবে কি না?- এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। এটা নিয়ে ভবিষ্যতে আরও আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারব।

সংরক্ষিত আসনের ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, চাকরির বয়স ৩৫ বছর করার জন্য শিক্ষামন্ত্রী একটি আধাসরকারি পত্র (ডিও লেটার) দিয়েছেন। সরকারের এটা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কি না?

জবাবে মন্ত্রী বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের একটি পত্র আমরা এরই মধ্যে পেয়েছি। আগেই বলেছি এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরও আলাপ-আলোচনা করব। তবে আপাতত চাকরির প্রবেশের বয়স বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমাদের সিদ্ধান্ত নেই। এটা নিয়ে আরও আলোচনা-পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে দেখব।


সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় রয়েছে

শিগগিরই সুদহার বাজারভিত্তিক করা হবে
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। কৃষি খাতের উৎপাদন বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘শিল্প খাতের উৎপাদন এখন ধারাবাহিকভাবে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগও আছে সঠিক পথে। অর্থনীতিতে এখন একমাত্র সমস্যা মূল্যস্ফীতি। তবে রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে না পারাটাও একটি ইস্যু।’

রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে রোববার ফার্স্ট ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন। ‘পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে উন্নয়নের পথ অনুসন্ধান’ শীর্ষক এ সম্মেলন যৌথভাবে আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ ও বণিক বার্তা। দুদিনব্যাপী এ সম্মেলনের প্রথম দিনের দ্বিতীয় প্লেনারিতে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। দুপুরে ‘ফিসক্যাল অ্যান্ড মনিটরি পলিসি ইন দ্য ইভলভিং ইকোনমিক অর্ডার’ শীর্ষক এ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও ফজলে কবির, সাবেক অর্থ সচিব ড. মোহাম্মদ তারেক ও মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘সরকারের বিনিয়োগ তেমন একটা কমেনি। সামাজিক খাতের বিনিয়োগ বিশেষ করে সুরক্ষা নীতিগুলোর পরিধি বেড়েছে। সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষকে সুরক্ষা দিতেই এটি করা হয়েছে। এ মুহূর্তে দেশের রাজস্ব ঘাটতি অত বেশি নয়। জিডিপির তুলনায় আমাদের রাজস্ব ঘাটতি এখনো দক্ষিণ এশিয়ার সর্বনিম্নদের একটি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন করেছে। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারকে কোনো ধরনের ঋণ দেওয়া হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে রেফারেন্স রেট অনুসারে ব্যাংকের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে। শিগগিরই এটি আরও বেশি বাজারভিত্তিক করা হবে। বর্তমান সুদহার নির্ধারণের পদ্ধতিটি একটি অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা। পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিলে সুদহার নির্ধারণে ব্যাংকের স্বাধীনতা থাকবে। চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে ব্যাংকগুলো এটি নির্ধারণ করতে পারবে।’

বি‌নিময় হারের বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘এক্ষেত্রে কিছুটা প্রতিকূলতা আছে। অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে আমরা ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছি। পরবর্তী সময়ে এটিও বাজারভি‌ত্তিক করে দেওয়া হবে। মুদ্রানী‌তি প্রণয়ন কমিটিতে আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তারা থাকলেও এখন আমরা বাইরের বিশেষজ্ঞদেরও অন্তর্ভুক্ত করেছি।’

তিনি বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণের স্বার্থে আমাদের আমদানির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হয়েছে। নিরুৎসাহিত করা হয়েছে কম গুরুত্বপূর্ণ ও বিলাসপণ্য আমদানিতে। পাঁচ মাস ধরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। এ সময়ে প্রতি মাসে গড়ে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। চার মাস ধরে সরকারের চলতি হিসাব ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। তবে পুরো বছরের চিত্রটি এমন ছিল না। দেশের ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট এখনো নেতিবাচক।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও রিজার্ভ ক্ষয়- এ দুটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে বলে জানান গভর্নর। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আমরা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। এক্ষেত্রে শুধু চাহিদা কমাচ্ছি না, বরং জোগান বাড়ানোর লক্ষ্যেও কাজ করছি। কৃষি ও এসএমইতে ঋণের জোগান বাড়ানো হয়েছে। রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রেও বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘আমাদের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে হবে। আমরা দেখছি, আদায়কৃত রাজস্বের মধ্যে প্রত্যক্ষ কর এক-তৃতীয়াংশ। বাকি দুই-তৃতীয়াংশই পরোক্ষ কর। এর অর্থ হলো- ধনীদের তুলনায় গরিবদের বেশি কর দিতে হচ্ছে।’

ভর্তু‌কির বিপরীতে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে বাজারে অর্থের সরবরাহ বাড়ার বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘বিশেষ বন্ড থেকে ১ লাখ কোটি টাকা তৈরি হয়েছে বলে একজন আলোচক উল্লেখ করেছেন। কিন্তু টাকা তৈরির বিষয়টি এতটা দ্রুততার সঙ্গে হয় না। বন্ডের মাধ্যমে অর্থের সরবরাহ বাড়ার জন্য কয়েক বছর সময় লাগে।’

সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আমদানি নিয়ন্ত্রণের ফলে এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় কমে গেছে। ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাত যাতে ঋণ পায় সেটি বাংলাদেশ ব্যাংককে দেখতে হবে। মূল্যস্ফীতি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে সবকিছুতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে প্রবৃদ্ধি যাতে কমে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতির মধ্যে সমন্বয় সাধন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন সাবেক গভর্নর ফজলে কবির। এ বিষয়ে তিনি বলেন, কভিডের সময় যেসব প্রণোদনা দেওয়া হয়েছিল, সেক্ষেত্রে মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতির কার্যকর সমন্বয় করা হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। এরপর গুরুত্ব দিতে হবে প্রবৃদ্ধিকে। মূল্যস্ফীতির হারকে সাড়ে ৯ থেকে ৭ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে হবে। এটি দরিদ্রদের ওপর ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলছে। এজন্য আরো বেশকিছু সময় সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বহাল রাখতে হবে। তবে শুধু মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। এ জন্য আরও বেশকিছু ফ্যাক্টর রয়েছে। সেগুলোকেও কাজে লাগাতে হবে।’

প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ তারেক বলেন, ‘শক্তিশালী বেসরকারি খাত ও ব্যবসায়িক গ্রুপ ব্যতীত কোনো দেশই উন্নত হতে পারবে না। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রবৃদ্ধির জন্য তাদের আমাদের প্রয়োজন। তবে এক্ষেত্রে একটি সমস্যা আছে। সেটি হচ্ছে যদি এসব ব্যক্তি নীতিনির্ধারক হয়ে যান তাহলে সবকিছুই নিচের দিকে যাবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি গ্রুপ সবকিছুকেই প্রভাবিত করছে, এমনকি রাজনীতিবিদদেরও। ফলে নীতিনির্ধারকরা যদি নীতি প্রণয়নের বিষয়টি নিজেদের হাতে না নিতে পারেন তাহলে আমি মনে করি আমাদের পক্ষে বিদ্যমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না। স্থানীয় ও বৈশ্বিকভাবে টাকার মূল্যমান বজায় রাখা, আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা ও ব্যাংক খাতের সুশাসন নিশ্চিত করা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল কাজের মধ্যে পড়ে। প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক এটি ভালোভাবে করতে পারছে কিনা? প্রবৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে। কোনো সন্দেহ নেই যে এটি প্রয়োজন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যে সবসময়ই কি এটি প্রয়োজনীয়? প্রবৃদ্ধি যদি বাংলাদেশের বর্তমান মূল্যস্ফীতিকে প্রভাবিত করে তাহলেও কি এটি প্রয়োজনীয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণা বিভাগ এ বিষয়টি বিশ্লেষণ করতে পারে।’

অর্থ বিভাগের সাবেক সচিব ও সাবেক মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী প্যানেল আলোচনায় বলেন, ‘সরকারের ব্যয়ের ক্ষেত্রে বরাদ্দগত কিছু বড় ইস্যু রয়েছে। আমাদের পরিচালন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে রাজস্ব আয়ের উদ্বৃত্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এর মানে হচ্ছে আমাদের রাজস্ব উদ্বৃত্ত না থাকলে উন্নয়ন ব্যয়ের শতভাগই ঋণের মাধ্যমে করতে হবে। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি থাকা সত্ত্বেও সার ও বিদ্যুতের ভর্তুকির বিপরীতে ২০ হাজার কোটি টাকার ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করা হয়েছে। এতে সরকারের তহবিল থেকে নগদ অর্থ না গেলেও আর্থিক ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে এর মাধ্যমে বাজারে ১ লাখ কোটি টাকারও বেশি অর্থের সরবরাহ বাড়বে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় থাকা সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়লেও ভাতার পরিমাণ বাড়েনি। অন্যদিকে সরকারের পরিচালন ব্যয়ে সামাজিক অবকাঠামোর অবদান কমছে। ভৌত অবকাঠামোতে আমাদের বিনিয়োগের প্রবণতা বেশি। আমি বলছি না যে এক্ষেত্রে বিনিয়োগ করার প্রয়োজন নেই। তবে আমাদের অবকাঠামোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রশাসন ও টিডিএম অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহমান খান, বাজেট ও ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব সিরাজুন নূর চৌধুরী, ঋণ ব্যবস্থাপনা অধিশাখার অতিরিক্ত সচিব হাসান খালেদ ফয়সাল, সামষ্টিক অর্থনীতি-১ শাখার উপসচিব ড. মো. রাশেদুর রহমান সরদার, সামষ্টিক অর্থনীতি-৩ শাখার উপসচিব তৌহিদ ইলাহী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের পিএফএম রিফর্মস লিডারশিপ, কো-অর্ডিনেশন অ্যান্ড মনিটরিং স্কিমের প্রোগ্রাম এক্সিকিউটিভ অ্যান্ড কো-অর্ডিনেটর (উপসচিব) মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান, বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. শেখ মনিরুজ্জামান, এনসিসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুন নেওয়াজ সেলিম, সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ইসলামী ব্যাংকের এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এমডি সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এমডি আবুল কাশেম মো. শিরিন, ঢাকা ব্যাংকের এমডি এমরানুল হক, ওয়ান ব্যাংকের এমডি মো. মনজুর মফিজ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের এমডি জাফর আলম, মধুমতি ব্যাংকের এমডি মো. সফিউল আজম, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের এমডি হাবিবুর রহমান, সিটিজেনস ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ মাসুম, ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবেক এমডি ফারুক মঈনউদ্দীন, ব্যাংক এশিয়ার সাবেক এমডি মো. আরফান আলী ও এনসিসি ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদ, প্রাইম ব্যাংকের ডিএমডি নাজিম এ চৌধুরী, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ডিএমডি সাব্বির আহমেদ, লংকাবাংলা ক্যাপিটাল মার্কেটস অপারেশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চৌধুরী, লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) খন্দকার সাফাত রেজাসহ আর্থিক খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।


গাছ কাটা-লাগানো বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল  

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

গাছ লাগানো ও কাটার ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা তৈরি না করা এবং দাবদাহ ও তাপপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিয়ে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ।

অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, কুষ্টিয়া জেলা এলাকায় সামাজিক বনায়নের আওতায় কয়েক হাজার গাছ কাটা এবং দাবদাহ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনার আর্জি পেশ করে রিটটি আনা হয়। গাছ লাগানো ও গাছ কাটা নিয়ে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা প্রণয়নের দাবিতে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ায় আমরা রিটটি দায়ের করা হয়।

এই আইনজীবী বলেন, কুষ্টিয়ায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের আওতায় ১০ বছর আগে কয়েক হাজার গাছ লাগানো হয়। সেই গাছগুলোর মধ্যে গত বছর ১০ হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়। সম্প্রতি আরও ৩ হাজার গাছ কেটে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমাদের নজরে আসে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে গাছ লাগানো ও গাছ কাটা নিয়ে কোনোরূপ নীতিমালা নেই। এ বিষয়ে ফিনল্যান্ডের উদাহরণ টেনে আইনজীবী বলেন, সেখানে একটি গাছ কাটা হলে তিনটি গাছ লাগানোর নিয়ম রয়েছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজিসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে রেসপনডেন্ট (বিবাদী) করা হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বিষয়:

‘সুন্দরবনের আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসায় সন্তুষ্ট প্রধানমন্ত্রী’

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর নিজ কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

প্রতিকূলতার মাঝেও সুন্দরবনের আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে পারায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভবিষ্যতে যাতে আর এ ধরণের পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেদিকেও তিনি খেয়াল রাখতে বলেছেন।

আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী তার নিজ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এসব কথা জানান। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

সচিব বলেন, সুন্দরবনের আগুন লাগার বিষয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ বিষয়টি আরও কয়েক দিন পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বনের আগুন নেভানোর পর সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা করা যায় না। এ জন্য এখনও কয়েক দিন গভীর পর্যবেক্ষণে রাখা লাগবে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে অবহিত হওয়ার পর কার্যক্রমের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সুন্দরবনের আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৫৫জন কর্মী কাজ করেছেন। দেড় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী কাজ করেছেন। দেড় থেকে দুই কিলোমিটার দূর থেকে পাওয়ার পাম্পের মাধ্যমে পানি এনে ব্যবহার করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, গভীর জঙ্গলে রাতে কাজ করা যায়নি। দিনে কাজ করতে হয়েছে। ঝুঁকিও ছিল। সব মিলিয়ে বড় একটি চ্যালেঞ্জিং কজি তারা সম্পন্ন করেছেন, এজন্য তারা (ফায়ার সার্ভিস) ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।


লোডশেডিং শূন্যে নেমে এসেছে: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৬ মে, ২০২৪ ২২:২০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে লোডশেডিংয়ের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। আজ সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমি মনে করি, আগের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছি। আজ দেখবেন জিরো লোডশেডিং। ধীরে ধীরে (লোডশেডিং) কমে আসছে।’

তিনি বলেন, ‘সারা বাংলাদেশের কিছু কিছু অঞ্চলে আমাদের কিছুটা লোডশেডিং করতে হয়েছে। বিশেষ করে, গ্রামাঞ্চলের অনেক জায়গায়। গত একমাস ধরে এটা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের বেশ কিছু তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ আছে। সেটা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তেল ও আর্থিক স্বল্পতা ছিল। যারা তেল আনার কথা, যেসব প্রাইভেট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, তারা আনতে পারছিল না। যে কারণে প্রথম দিকে দেড় হাজার মেগাওয়াটের মতো লোডশেডিং ছিল। সেটা কমে এসেছে। পরে ৫০০ থেকে শূন্যে নেমে এসেছে। আশা করছি, ভবিষ্যতে এটা ভালোর দিকে যাবে। আমরা চেষ্টা করছি, নিজেদের দিক থেকে তেল সরবরাহ করার। এখন সেটার ব্যবস্থা চলছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন ভালো পরিস্থিতিতে আছি। এ বিষয়গুলো পার্লামেন্টে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন- যত দ্রুত সম্ভব গ্রামাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে হবে। আমরা সেটার ব্যবস্থা করে একটা ভালো অবস্থায় আছি।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা মনে হয় না, কোথাও লোডশেডিং করে আরেক জায়গায় দেওয়ার ব্যবস্থা আর করতে হবে।


লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে শপথবাক্য পাঠ করালেন প্রধানমন্ত্রী

সোমবার লালমনিরহাট জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক শ্যামলকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সোমবার লালমনিরহাট জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক শ্যামলকে শপথবাক্য পাঠ করান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিমের পরিচালনায় এ শপথ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন জানিয়েছেন, শপথ অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী জনগণের চাহিদার কথা মাথায় রেখে তাদের প্রত্যাশা পূরণে জনপ্রতিনিধিদের কাজ করার আহ্বান জানান। এ সময় পরিপূর্ণ দায়িত্ব পালনে স্থানীয় পর্যায়ে সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে আবু বকর সিদ্দিক শ্যামল বিজয়ী হন।


গাছ কাটা-লাগানো বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

গাছ লাগানো ও কাটার ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা তৈরি না করা এবং দাবদাহ ও তাপপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ সোমবার এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিয়ে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ।

অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ বলেন, ‘কুষ্টিয়া জেলা এলাকায় সামাজিক বনায়নের আওতায় কয়েক হাজার গাছ কাটা এবং তাপপ্রবাহ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনার আর্জি পেশ করে রিটটি আনা হয়। গাছ লাগানো ও গাছ কাটা নিয়ে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা প্রণয়নের দাবিতে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়ায় আমরা রিটটি দায়ের করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘কুষ্টিয়ায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের আওতায় ১০ বছর আগে কয়েক হাজার গাছ লাগানো হয়। সেই গাছগুলোর মধ্যে গত বছর ১০ হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়। সম্প্রতি আরও ৩ হাজার গাছ কেটে ফেলার উদ্যোগ নেয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমাদের নজরে আসে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে গাছ লাগানো ও গাছ কাটা নিয়ে কোনরূপ নীতিমালা নেই।’ এ বিষয়ে ফিনল্যান্ডের উদাহরণ টেনে আইনজীবী বলেন, সেখানে একটি গাছ কাটা হলে তিনটি গাছ লাগানোর নিয়ম রয়েছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান বন সংরক্ষন কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজিসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে রেসপনডেন্ট (বিবাদী) করা হয়েছে।

বিষয়:

banner close