আগামী তিন দিনে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি কমে আসতে পারে এবং এ সময়ের শেষের দিকে তাপমাত্রা বাড়তে পারে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
বৃহস্পতিবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় হাতিয়ায় সর্বোচ্চ ৮৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ছাড়া সন্দ্বীপ, সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, রাঙামাটি, কক্সবাজার, কুতুবদিয়া, বান্দরবান, মাইজদীকোর্ট, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলাসহ দেশের অনেক স্থানে বৃষ্টিপাত হয়েছে।
গত বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা টাঙ্গাইলে ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বৃহস্পতিবার বান্দরবানে সর্বনিম্ন ২০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে, যা অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
চিকিৎসার জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যাওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যায় জড়িত মূলহোতাসহ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ।
আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানের পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই তথ্য জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আনোয়ারুল আজীমের হত্যাকাণ্ড আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ভারতীয় পুলিশ আমাদের জানিয়েছে। তবে, হত্যার কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। ঘটনার তদন্ত চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ঘটনার মূলহোতাসহ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। আমরা মিশনের মাধ্যমে সবকিছুর খোঁজ রাখছি। মিশন কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তদন্ত শেষে হত্যার মূল কারণ জানা যাবে।’
এর আগে, ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় গিয়ে উত্তরের বরানগরে বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলেন এমপি আনার। ১৩ মে তিনি কোনো একজনের সঙ্গে দেখা করতে বের হয়ে আর ফেরেননি।
সংসদ সদস্য এবং ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল আজিম আনারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে চিকিৎসার জন্য গিয়ে নিখোঁজের ছয়দিন পর কলকাতার একটি এলাকা থেকে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কর্মকর্তারা কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
কলকাতা পুলিশের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া একজন ক্যাবচালক জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ আগে নিখোঁজ হওয়া বাংলাদেশের ঝিনাইদহের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমকে হত্যা করা হয়েছে এবং মরদেহ দেহ খণ্ডবিখণ্ড করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১১ মে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার চিকিৎসার জন্য ভারতে যান।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা খচিত’ স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বিতরণ করা হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পরিচালক (জনসংযোগ) শরিফুল আলম আজ বুধবার এক বার্তায় বিষয়টি জানান।
বার্তায় বলা হয়, ‘আগামীকাল ২৩ মে, বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ১০৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার মাঝে বীর মুক্তিযোদ্ধা খচিত স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ করবেন। এ বিতরণ অনুষ্ঠানে সকল মাননীয় কমিশনার এবং সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।’
এর আগে, গত ৭ মে মঙ্গলবার বীর মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত স্মার্ট এনআইডি কার্ডটি (জাতীয় পরিচয়পত্র) তার কাছে হস্তান্তর করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে নতুন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, পরিচয়পত্র প্রদানকালে ইসির সচিব কমিশনের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। তিনি জানান, এখন থেকে পর্যায়ক্রমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত নতুন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে সরে গেলেও অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের জন্য তাদের শুল্কমুক্ত বাজার প্রবেশাধিকার সুবিধা অব্যাহত রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং-য়ের মধ্যে বৈঠকের পর আজ বুধবার এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বর্তমানে প্রায় ৪০০ কোটি ডলার, যা ১০ বছর আগেও ১০০ কোটি ডলারের কম ছিল। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য আরও গভীর ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে উভয় দেশ আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কৃষিজাত, প্রক্রিয়াজাত শিল্প, আইসিটি ও লজিস্টিক খাতে বিনিয়োগের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’
বৈঠকে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য কানেক্টিভিটির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক অবকাঠামো কানেক্টিভিটি প্রোগ্রাম নিয়ে আলোচনা হয়। ওই প্রোগ্রামে বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্যরাও অংশীদার হতে আগ্রহী বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়।
সমৃদ্ধশালী ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া একসঙ্গে কাজ করবে। দুদেশই চায় শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল, সমৃদ্ধশালী, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ভয়-ভীতিহীন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল।
যৌথ বিবৃতিতে দুদেশের মধ্যে ইন্দো-প্যাসিফিক কেন্দ্রিক সহযোগিতা, বাণিজ্য বৃদ্ধি, দক্ষিণ এশিয়াতে কানেক্টিভিটি সম্প্রসারণ, সমুদ্র নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানব পাচার রোধসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া উভয় দেশই ভারত মহাসাগরের অংশ। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘দুই দেশই এক অঞ্চল ও সমুদ্রের অংশ। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রের অখণ্ডতা এবং এই অঞ্চলে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার, সমুদ্র ও আকাশপথে চলাচলে স্বাধীনতা, এবং শান্তিপূর্ণ বিবাদ মীমাংসার বিষয়ে দুই মন্ত্রী তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।’
গাজায় চলমান চরম অমানবিক পরিস্থিতি নিয়ে উভয়পক্ষ উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সেখানে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সমর্থন ব্যক্ত করেন।
আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রের হাতে প্রতি বছর অনেক মানুষ মারা যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দু’দেশ। অবৈধ ও অনিরাপদ মানব পাচার বন্ধের বিষয়ে নিরাপদ অভিবাসনের গুরুত্বকে উভয়পক্ষই স্বীকার করে নিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, অস্ট্রেলিয়া প্রস্তাব করেছে, তাদের কোস্টগার্ডের কমান্ডার এ বিষয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশ সফর করবেন।
ভারতে গিয়ে নিখোঁজ বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের মরদেহ কলকাতার অভিজাত এলাকা নিউটাউন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আজ বুধবার সকালে গণমাধ্যমকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের এক ডিআইজির উদ্বৃতি দিয়ে আমাদের পুলিশও বলেছে আনোয়ারুল আজিমের মরদেহ পাওয়া গেছে কলকাতায়। বিষয়টি নিয়ে এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত তথ্য নেই আমাদের কাছে। আমাদের আইজি ডিটেইলস খবর নিচ্ছে। সব নিশ্চিত হয়ে গণমাধ্যমকে জানাব আমি।’
আনোয়ারুল আজীমের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আব্দুর রউফ জানিয়েছেন, এমপি আনারকে হত্যা করা হয়েছে কি না সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে।
সীমান্ত এলাকা ঝিনাইদহ-৪ আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য (এমপি) ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন আনোয়ারুল আজীম আনার।
গত ১৯ মে আনোয়ারুল আজীমের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আব্দুর রউফ বলেছিলেন, ১১ মে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। কিন্তু এরপর ১৬ মে তার সঙ্গে শেষ কথা হয়েছে।
দেশের ছয়টি জেলার ওপর দিয়ে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের জন্য দেয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া, ময়মনসিংহ জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানিয়েছেন, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে বুধবার অথবা পরদিন বৃহস্পতিবার লঘুচাপ তৈরি হতে পারে। তিনি জানান, এ লঘুচাপ ঘনীভূত হলে ডিপ্রেশন তৈরি হবে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কিনা, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
লঘুচাপ থেকে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে এটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও পরে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলেও জানান তিনি।
দেশের সাত জেলায় শুরু হওয়া তাপপ্রবাহ আজ বুধবার আরও কয়েকটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। সারা দেশের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। আগামী দু–এক দিন উষ্ণতার এ দাপট চলতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদেরা বলেন, ‘আজকের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে। এটি আরও শক্তিশালী ও ঘনীভূত হতে পারে। তবে এটি নিম্নচাপ হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত করেনি আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ জন্য আরও দু–এক দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে তারা। তবে ঘূর্ণিঝড় বা নিম্নচাপ যা–ই হোক না কেন, ২৫ মে সারা দেশে বৃষ্টি শুরু হতে পারে। মাঝারি থেকে ভারী ওই বৃষ্টি দুই থেকে তিন দিন চলতে পারে।
এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তা আজকের মধ্যে লঘুচাপে পরিণত হয়ে আরও শক্তিশালী হতে পারে। সাধারণত সাগরে এ ধরনের পরিস্থিতি চলার সময় ভূখণ্ড থেকে মেঘমালা ওই লঘুচাপের কেন্দ্রের দিকে চলে যায়। ফলে দেশের ভূখণ্ডে মেঘ কমে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। আগামী দু–এক দিন তাপমাত্রা বেড়ে ২৫ মে থেকে আবারও বৃষ্টি বাড়তে পারে।’
আবহাওয়াবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, ২৫ থেকে ২৬ মের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য–উপাত্ত ও বাতাসের গতিমুখ অনুযায়ী এটি বাংলাদেশ বা ভারতের উপকূলের দিকে আসার আশঙ্কা বেশি। তবে প্রাথমিক অবস্থায় এ ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের গতিমুখের বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে বলা যায় না। এ জন্য এটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো চুয়াডাঙ্গায় ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ফেনী, কক্সবাজার ও যশোরে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর আশপাশের জেলাগুলোয় আজ তাপপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, সাধারণত জুনের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করে। ওই বায়ুর সঙ্গে আসা মেঘের কারণে সারা দেশে বৃষ্টি শুরু হয়। মৌসুমি বায়ুটি এখন পর্যন্ত আন্দামান সাগরের কাছাকাছি অবস্থান করছে। ১০ থেকে ১২ জুনের মধ্যে এর প্রভাবে বাংলাদেশে টানা বৃষ্টি শুরু হতে পারে।
বৈশ্বিক মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সূচকে এবার বাংলাদেশের অবস্থান ১২৮তম। ২০২২ সালে অবস্থান ছিল ১৩০তম। আর্টিকেল নাইনটিনের বৈশ্বিক মতপ্রকাশ রিপোর্ট বা গ্লোবাল এক্সপ্রেশন রিপোর্ট ২০২৪-এ বাংলাদেশের এ অবস্থান উঠে এসেছে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রিপোর্টটি উপস্থাপন করেছেন আর্টিকেল নাইনটিনের রিজিওনাল ডিরেক্টর শেখ মনজুর-ই-আলম।
সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকটজনক। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের মতো সংকটজনক অবস্থায় আছে ভারত ও আফগানিস্তান।
এবার বাংলাদেশের মতপ্রকাশ স্কোর ১২। ২০১৮-২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর আটকে আছে ১১ ও ১২-এর মধ্যে। দশ বছরে বাংলাদেশের স্কোর কমেছে ৮ পয়েন্ট, ২ যুগে কমেছে ৩২ পয়েন্ট। ২০০০ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৪৪।
২০১৭ সাল থেকে প্রতিবেদনটি নিয়মিত প্রকাশ করে আসছে আর্টিকেল নাইনটিন।
সবার স্বাধীনতা, মতপ্রকাশ, যোগাযোগ এবং অংশগ্রহণসহ ২৫টি সূচকের বিপরীতে মতপ্রকাশ বা এক্সপ্রেশন স্কোর নির্ধারণ করে সংস্থাটি। স্কোর অনুযায়ী ০-১৯ সংকটজনক, ২০-৩৯ অতিবাধাগ্রস্ত, ৪০-৫৯ বাধাগ্রস্ত, ৬০-৭৯ স্বল্প বাধাগ্রস্ত ও ৮০-১০০ মুক্ত। আর্টিকেল নাইনটিনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৪টি দেশ অতি বাধাগ্রস্ত, বাধাগ্রস্ত ২৫টি, স্বল্প বাধাগ্রস্ত ৩৫টি ও মতপ্রকাশের মুক্ত শ্রেণিতে রয়েছে ৩৮টি দেশ।
বাংলাদেশের অবস্থান প্রসঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়, ২৫টি সূচকের মধ্যে সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের স্কোর সম্পূর্ণ ঋণাত্মক। ২০০৯ সাল থেকে ৮টি সূচকেই ক্রমাগত খারাপ করে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেন্সরশিপে। ধর্ম পালন ও নারী-পুরুষের আলোচনার স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ইতিবাচক। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা সমাবেশ করার স্বাধীনতা ও একাডেমিক-সাংস্কৃতিক মতপ্রকাশের স্বাধীনতার স্কোরে।
অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণমাধ্যমে নাগরিক সমাজের জন্য ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। আইন করা হচ্ছে নিবর্তনমূলক, ব্যক্তির পরিচয়ভেদে ভালো আইনের অপপ্রয়োগ হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হোসেন, বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ তৈরি হচ্ছে। যা ঘনীভূত হয়ে ধাপে ধাপে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হলে এর নাম হবে ‘রেমাল’।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আর দুই-এক দিনের মধ্যেই ঘনীভূত হওয়ার কথা এই ঝড়ের, যা ২৬ মে সরাসরি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ঘূর্ণিঝড় কোথায় আঘাত হানতে পারে তা এখনই নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। নিম্নচাপ হওয়ার পর বলা যাবে কোনদিকে যাবে। আজকের মধ্যে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম ও আশপাশের এলাকায় একটি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে।
অন্যদিকে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন আবহাওয়া মডেলের বরাত দিয়ে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমাল ২৬ মে সকাল ৬টার পর থেকে রাত ১২টার মধ্যে বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলা থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার মধ্যবর্তী উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের অগ্রবর্তী অংশ উপকূলীয় এলাকায় প্রবেশ করা শুরু করতে পারে সকাল ৬টার পর থেকে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করার সম্ভব্য সময় ২৬ মে দুপুর ১২টার পর থেকে বিকেল ৬টার মধ্যে। ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের পেছন দিকের অর্ধেক অংশ পুরোপুরি স্থল ভাগে প্রবেশ করতে রাত ১২টা পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টি যদি জোয়ারের সময় উপকূলে আঘাত হানা শুরু করে তবে বরিশাল ও চট্রগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে। বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর উপকূলে আঘাতের সময় ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার; যা দমকা হাওয়াসহ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
বেসরকারি আবহাওয়া সংস্থা ‘বাংলাদেশ আবহাওয়া অবজারভেশন টিম’ (বিডাব্লিউওটি) জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হচ্ছে যা চলতি মে মাসের ২৫ থেকে ২৬ তারিখের মধ্যে প্রবল বেগে আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশ। এটি দেশের সুন্দরবনে আঘাত হানার শঙ্কা রয়েছে।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মৌসুমি বায়ু বিষুব রেখা অতিক্রম করে উত্তর ভারতীয় মহাসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে দক্ষিণ ভারত, শ্রীলঙ্কা ও এর আশপাশের অঞ্চলে একটি ঘূর্ণাবর্ত বেশ কয়েক দিন ধরেই অবস্থান করছে, এটি ধীরে ধীরে দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণ-মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। যা আজ সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হতে পারে।
এটি শুরুতে শক্তি বৃদ্ধি করে উত্তর-পূর্বদিকে অগ্রসর হলেও পরবর্তীতে উত্তর-পশ্চিমমুখী হয়ে তার গতিপথ বজায় রাখতে পারে বলেও সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির ভারতের পূর্ব উপকূলের উড়িষ্যা রাজ্য থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সুন্দরবনে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি ‘ক্যাটাগরি-২’ সাইক্লোনে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম এবং এর গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ৯৫ থেকে ১৪৫ কিলোমিটার বেগে।
সবশেষ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় মিগযাউম, যা পরে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করে। সে ঝড়ের তেমন কোনো প্রভাব বাংলাদেশে পড়েনি। ২০২০ সালের মে মাসেই ২০ তারিখে দেশের উপকূলে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। বেশ বিধ্বংসী ছিল ঘূর্ণিঝড়টি। তবে সুন্দরবনের কারণে সে যাত্রায় রক্ষা পেয়েছিল দেশের উপকূল। এর আগে ২০০৯ সালে এই মে মাসেই ২৫ তারিখে সুন্দরবনে আঘাত হেনেছিল প্রলয়ংকরী আইলা।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং অধীন সব অধিদপ্তর ও সংস্থার অংশগ্রহণে ইনোভেশন শোকেসিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার বিজয়নগরে অবস্থিত শ্রম ভবনের সভাকক্ষে এই শোকেসিং হয়।
শোকেসিংয়ে ইনোভেশন টিমের এক্সপার্টরা প্রদর্শিত উদ্ভাবনী উদ্যোগগুলোর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যসমূহ উপস্থাপন করেন। বিশেষ করে ডিজিটাইজেশন, ইনোভেশন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রস্তাবিত উদ্যোগসমূহের অবদান, নাগরিকদেরকে সেবা প্রদানে সময় ও খরচ হ্রাস ইত্যাদি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার শ্রমিকের কল্যাণে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এই শোকেসিংয়ে প্রদর্শিত উদ্যোগসমূহের মাধ্যমে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সেবাসমূহের অভিনব ও সৃজনশীল দিক উন্মোচিত হবে। জনগণকে প্রদেয় সেবায় গতি সঞ্চারিত হবে। বিদ্যমান কার্যক্রমসমূহ চালু রাখার পাশাপাশি ইনোভেশন ও স্মার্ট প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে শ্রমিকের কল্যাণে জনবান্ধব ও কার্যকর নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বুদ্ধিদীপ্ত, উদ্ভাবনী ও প্রযুক্তিশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশে স্মার্ট শ্রমিক এবং শ্রমব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রতিনিধি, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন অধিদপ্তর ও সংস্থা প্রধানসহ মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অবৈধ নিয়োগের কারণে আবারও বন্ধ করা হয়েছে বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে শ্রমিক নিয়োগ। আজ মঙ্গলবার মালদ্বীপের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফাতিমাথ রিফাথ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, অবৈধ নিয়োগের কারণে বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফাতিমাথ রিফাথ স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, মালদ্বীপের কিছু কোম্পানি জাল কাগজপত্র দাখিল করে শ্রমিক নিয়োগ করে দেখে এক মাস আগে বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করা হয়েছিল। সে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
দ্বীপদেশটিতে অবৈধ অভিবাসীদের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলমান। সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ‘কুরাঙ্গি’ নামে একটি বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ৭০০ জনেরও বেশি অভিবাসীর বায়োমেট্রিক্স সংগ্রহ করা হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল মালদ্বীপ। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। নতুন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর প্রশাসন গত বছরের ডিসেম্বরে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল।
ডিসেম্বরে এক প্রেস কনফারেন্সে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইহুসান বলেছিলেন যে, বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য ১ লাখ ৩৯ হাজার ২২০ ওয়ার্ক পারমিট আগে থেকেই রয়েছে, তাদের মধ্যে ওয়ার্ক পারমিট ফি নিয়মিতভাবে দিয়ে বৈধ আছে মাত্র ৩৯ হাজার ৪ জন।
একটি স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৯০ হাজার ৬৪২ জন শ্রমিক মালদ্বীপে আগে থেকেই রয়েছে, মালদ্বীপের কর্মসংস্থান আইন অনুযায়ী একটি দেশ থেকে নির্ধারিত কোটা ১ লাখের চেয়েও কম।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন প্রকল্প ‘আশ্রয়ণ-২’-এর আওতায় পঞ্চম ধাপে আরও ২০ হাজার গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষ ঘর পাচ্ছে। আগামী জুন মাসেই তাদের ঘর বরাদ্দ দেওয়া হতে পারে।
এ ঘর বরাদ্দ দেওয়ার লক্ষ্যে যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে, তার ব্যয় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি (ডিপিএম) অনুসরণ করে সম্পন্ন করার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
আজ মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করছেন। এ পর্যন্ত প্রায় ২৪ হাজার ৫২০ জন গৃহহীন ও ভূমিহীনকে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পঞ্চম পর্যায়ের অবশিষ্ট অংশ আরও ২০ হাজার ভূমিহীনকে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ঘরগুলো এরই মধ্যে হয়ে গেছে। এখন ফরমাল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হবে। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে ক্রয় কাজ করার জন্য নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
কবে নাগাদ এই ঘরগুলো হস্তান্তর করা হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে সামারি দেওয়া হয়েছে, জুন মাস ধরেই আমাদের পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে। এখনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী সুবিধামতো সময় দেবেন।’
নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহাল প্রচন্ডের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। আজ মঙ্গলবার নেপালের কাঠমান্ডুতে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সরকারি দপ্তর সিংহ দরবারে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে দীর্ঘদিনের পারস্পরিক সুসম্পর্ক, জলবায়ু পরিবর্তনে দুই দেশের সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্র, বিদ্যুৎ বাণিজ্যসহ অন্যান্য সম্ভাবনা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে এই অঞ্চলে পরিবেশ ও জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও নেপালের যৌথ অঙ্গীকার তুলে ধরা হয়।
আলোচনা চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী দাহাল এবং মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী পরিবেশগত বিভিন্ন উদ্যোগে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র বিষয়ে আলোচনা করেন। তারা নবায়নযোগ্য শক্তি উন্নয়ন এবং জলবায়ু সহিষ্ণুতার কৌশলগুলোতে জ্ঞান বিনিময় এবং সর্বোত্তম অনুশীলনে পারস্পরিক আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক নেপালি শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহণ করছে উল্লেখ করে নেপালের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী দাহাল পরিবেশ সংরক্ষণ এবং টেকসই উন্নয়নে নেপালের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী পরিবেশগত সহিষ্ণুতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু ফোরামে সক্রিয় ভূমিকার উল্লেখ করেন। তিনি জোরদার দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা থেকে উভয় দেশের উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. রূপক সাপকোটা, প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ু ও পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. জনপ্রিয় কোমল ভুসাল, নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী, নেপালের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. গোবিন্দ প্রসাদ শর্মা এবং বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির ফার্স্ট সেক্রেটারি মো. হুমায়ুন কবিরসহ নেপাল সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।