মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪

গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে সহায়তা করতেই নতুন ভিসা নীতি: মার্কিন দূত

আপডেটেড
২৫ মে, ২০২৩ ১৮:৩২
কূটনৈতিক প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
কূটনৈতিক প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২৫ মে, ২০২৩ ১৮:১২

বাংলাদেশিদের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ঘোষিত ভিসা নীতি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতি মার্কিন সমর্থনের একটি প্রয়াস বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।

বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানান মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

বৈঠকটি পূর্বনির্ধারিত এবং নিয়মিত বৈঠকের অংশ জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন ভিসা নীতি বাংলাদেশের জনগণ, সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী— বাংলাদেশের সবার জন্য যাতে করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়।’

পিটার হাস বলেন, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি। যারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি তাদের জন্য প্রযোজ্য।

বৈঠকে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয় বলেও উল্লেখ করেন পিটার হাস।

গত বুধবার বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। এই ভিসা নীতির আওতায় বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন-প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িতদের ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করবে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিংকেন বলেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায় তাদের সবাইকে সমর্থন দিতে তিনি এই নীতি ঘোষণা করেছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের অঙ্গীকারে সহায়ক হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের গণতান্ত্রিক-প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখতে সব পর্যায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের দ্ব্যর্থহীন অঙ্গীকারের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণাকে দেখতে চায় বাংলাদেশ।

এদিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতারা। দুপুরে রাজধানীর গুলশানে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় পিটার হাসের সঙ্গে তিন দলের নেতাদের প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বৈঠক হয়।


আজও দেশের ১৭ অঞ্চলে বজ্রবৃষ্টিসহ ঝড়ের আভাস

সোমবার কুয়াকাটা থেকে তোলা। ছবি: মাহামুদুর রহমান
আপডেটেড ২৮ মে, ২০২৪ ০০:০১
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব থাকতে পারে আজও। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রেমালের কারণে গতকাল সোমবারের মতো আজও সারা দেশে ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে দেশের ১৭ অঞ্চলের ওপর দিয়ে এই ঝড় বয়ে যেতে পারে। এসময় ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বজ্রবৃষ্টিসহ ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

গতকাল সোমবার আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেটের ওপর দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব/পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এতে আরও বলা হয়, উপরিউক্ত এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এর আগে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা দেশের ওপর দিয়ে পূর্ব বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে গতকাল সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজসহ আগামী দুই দিন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম করে।

এটি দুর্বল হয়ে বর্তমানে যশোর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় স্থল গভীর নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-পূর্বদিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমেই বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এর ফলে রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।


এমপি আনার হত্যা: কসাই জিহাদকে নিয়ে কলকাতার সেই ফ্ল্যাটে ডিবির তদন্ত দল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ঘটনা তদন্তে কসাই জিহাদকে সঙ্গে নিয়ে ভারতের কলকাতার সঞ্জিবা গার্ডেনের আলোচিত সেই ফ্ল্যাটে গেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি দল।

সোমবার (২৭ মে) দুপুরে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিল কলকাতা পুলিশও।

সঞ্জিবা গার্ডেনস থেকে বেরিয়ে সোজা বাগজোলা খালে যান ডিবিপ্রধান হারুন ও অন্য তদন্তকারীরা। খালটিতে যেখানে এমপি আনারের মরদেহের টুকরো ফেলা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, বৃষ্টির মধ্যেই সেই স্থানটি পরিদর্শন করে তদন্তকারী দল। সেখানে উপস্থিত ভারতীয় সিআইডির কর্মকর্তাকে ডিবিপ্রধান জিজ্ঞেস করেন, এখানে বাঁশের ঝাড় কোথায়। সিআইডির কর্মকর্তা বাঁশঝাড় দেখিয়ে দিলে ডিবিপ্রধান নিজে সেই স্থানটি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন।

এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, আমাদের একজন সংসদ সদস্যকে কলকাতায় হত্যা করা হয়েছে। তার ধারাবাহিকতায় আমরা বাংলাদেশে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। কলকাতা পুলিশও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আপনারা জানেন, এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা হয়েছিল বাংলাদেশ এবং নিষ্পত্তি হয়েছে কলকাতায়। তাই আমরা নিউটাউন থানায় এসে এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে বেশ কিছু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যে রুমে তাকে হত্যা করা হয়েছিল, সেটিও পরিদর্শন করা হয়েছে।

এর আগে রোববার সকালে ডিবিপ্রধানের নেতৃত্বে কলকাতা যান ডিবির তিন সদস্যের একটি দল।

কলকাতা যাওয়ার আগে হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশের তদন্ত দল কলকাতায় প্রথমে ঘটনাস্থলে যাবে। এরপর ভারতে গ্রেপ্তার জিহাদ হাওলাদারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

পুলিশ জানিয়েছে, জিহাদ হাওলাদার (২৪) একজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। তার বাড়ি খুলনা জেলার দিঘলিয়া থানায়। তার বাবার নাম জয়নাল হাওলাদার। তবে জিহাদ বসবাস করত ভারতের মুম্বাই শহরে। সেখানে সে একটি মাংসের দোকানে কসাইয়ের কাজ করত।

গত ২৩ মে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, এমপি আনারকে হত্যার পর খুনিরা তার দেহের মাংস হাড় থেকে আলাদা করে ফেলে। এরপর মাংসে হলুদের গুঁড়া ও মসলা মিশিয়ে ফ্রিজে রাখা হয়। পরে মাংস হিসেবে বাজারের ব্যাগে ভরে তা ট্রলিতে বাইরে নেওয়া হয়।

এখন পর্যন্ত সংসদ সদস্য আনার হত্যার ঘটনায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। গ্রেপ্তার আসামিরা হলো- আমানুল্লাহ ওরফের শিমুল ভূঁইয়া, শিলাস্তি রহমান ও ফয়সাল আলী ওরফে সাজি।

গ্রেপ্তার তিন আসামির আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ২৪ মে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথির আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।


অনলাইনে যৌন নির্যাতনের শিকার ৩০ কোটি শিশু: গবেষণা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে ৩০ কোটির বেশি শিশু অনলাইন যৌন শোষণ ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। গুরুতর এই সমস্যার বিষয়ে অনুমান করা প্রথম বৈশ্বিক পরিসংখ্যান সোমবার প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানেই উঠে এসেছে অনলাইনে শিশু নির্যাতনের এই ভয়াবহ চিত্র।

ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গের গবেষকরা দেখেছেন, গত ১২ মাসে বিশ্বের প্রতি আটজনের একজন শিশু যৌন ছবি বা ভিডিও সম্মতিবিহীন গ্রহণ, শেয়ার ও এক্সপোজারের শিকার হয়েছে। সংখ্যার দিক থেকে এর সংখ্যা প্রায় ৩০ কোটি ২০ লাখ।

গবেষণাটি পরিচালনা করেছে ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গের চাইল্ডলাইট গ্লোবাল চাইল্ড সেফটি ইনস্টিটিউট। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাপ্তবয়স্ক ও অন্যান্য যুবকদের মাধ্যমে অবাঞ্ছিত সেক্সটিং (যৌন-বিষয়ক চ্যাটিং) এবং যৌন ক্রিয়াকলাপের অনুরোধের ক্ষেত্রেও একই সংখ্যক ঘটনা ঘটেছে।

এসব অপরাধের মধ্যে তথাকথিত সেক্সটর্শন (অপরাধীরা ছবি গোপন রাখার জন্য ভিকটিমদের কাছ থেকে টাকা দাবি করে) থেকে শুরু করে ডিপফেক ভিডিও ও ছবি তৈরির জন্য এআই প্রযুক্তির অপব্যবহারের মতো বিষয়গুলোও রয়েছে।

গবেষণা বলছে, সমস্যাটি বিশ্বব্যাপী। কিন্তু এতে যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে বিশেষভাবে উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। সেখানে প্রতি নয়জন পুরুষের একজন কোনো না কোনো সময়ে শিশুদের বিরুদ্ধে অনলাইন অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন।

চাইল্ডলাইটের প্রধান নির্বাহী পল স্ট্যানফিল্ড বলেন, শিশু নির্যাতনের বিষয়বস্তু এতটাই প্রচলিত যে, ওয়াচডগ বা পুলিশিং সংস্থাগুলোর কাছে গড়ে প্রতি সেকেন্ডে একটি অভিযোগ রিপোর্ট হচ্ছে।

তিনি বলেন, এটি একটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য মহামারি, যা অনেক দিন ধরে লুকিয়ে রয়েছে। এটি প্রতিটি দেশেই ঘটে এবং তা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর জন্য একটি বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন।


‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে অংশীদার হিসেবে থাকুন’

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে মার্কিন ব্যবসায়ীদের অংশীদার হিসেবে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ সোমবার গণভবনে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রায় অংশীদার হিসেবে থাকুন।

তিনি বলেন, আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে একটি ‘স্মার্ট নেশন’ হয়ে ওঠার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করি। এখানে আমাদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা বাড়াতে এবং রপ্তানিভিত্তিক সম্প্রসারণে আপনাদের সমর্থন প্রয়োজন। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে ‘স্বল্পোন্নত’ থেকে ‘উন্নয়নশীল’ দেশে পরিণত হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রবৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী ‘আর্থসামাজিক উন্নয়নের এক রোল মডেল’ হিসেবে স্বীকৃত। এটি সম্ভব হয়েছে সুশাসন, আইনের শাসন ও স্থিতিশীলতার কারণে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগ, নারীর ক্ষমতায়ন এবং আইসিটির কারণে যা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর রূপান্তর ঘটিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের জন্য প্রধান অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগী। উভয় দেশের অনেক ক্ষেত্রেই নিবিড় সম্পৃক্ততা রয়েছে, বিশেষ করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে। তিনি বলেন, আমাদের যৌথ লক্ষ্য হলো জনগণের জন্য পারস্পরিক সুবিধা ও সমৃদ্ধি অর্জন করা। এটি আমাদের ক্রমবর্ধমান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এবং জনগণের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া প্রকাশ পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে আমাদের রপ্তানির বৃহত্তম একক দেশীয় গন্তব্য, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের বৃহত্তম উৎস এবং জ্ঞান ও প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। আগামীদিনে এ অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং পারস্পরিক সুবিধার জন্য একটি মসৃণ ও অনুমানযোগ্য সরবরাহ শৃঙ্খল তৈরির মাধ্যমে আমাদের উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদার হয়ে উঠবে। এ সময় নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, হালকা ও ভারী যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক সার, আইসিটি, সামুদ্রিক সম্পদ এবং চিকিৎসা সরঞ্জামসহ সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলোতে মার্কিন ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ করার আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল আমাদের দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মার্কিন ব্যবসায়ী নেতাদের বাংলাদেশে ব্যবসার সুযোগ অন্বেষণ এবং বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) এবং ২৮টি হাই-টেক পার্ক প্রতিষ্ঠা করছে। এর মধ্যে কয়েকটি চালু রয়েছে।

সম্ভাবনাময় আইটি সেক্টরের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইটি সেক্টরে এক মিলিয়নেরও বেশি ফ্রিল্যান্সিং আইটি পেশাদার রয়েছেন। বাংলাদেশ আইটি খাতে বিনিয়োগের জন্য সঠিক গন্তব্য। শ্রমিকের সহজলভ্যতা এবং বিনিয়োগ পরিবেশের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এখানে প্রতিযোগিতামূলক মজুরিতে তরুণ, দক্ষ ও প্রাণবন্ত কর্মশক্তি পাওয়ার একটি বিশাল সুবিধা রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এ অঞ্চলের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগনীতির মর্যাদা রয়েছে। এ ছাড়া নিশ্চিত থাকুন, আমরা বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নতিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি। বাংলাদেশ ১৭০ মিলিয়ন মানুষের বাজার এবং অবস্থান (ভৌগোলিক) দেশটিকে তিন বিলিয়ন মানুষের বাজারের কেন্দ্রস্থলে রেখেছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে এর ক্রমবর্ধমান কানেকটিভিটি বাংলাদেশকে এ অঞ্চল এবং এর বাইরে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের জন্য একটি আদর্শ জায়গা করে তুলেছে। এখন শুধু আঞ্চলিক নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গেও অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নত করাও আমাদের লক্ষ্য।

গত ১৫ বছরে বেশ কয়েকটি মেগা-অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে পদ্মা নদীর ওপর সেতু, ঢাকায় মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকায় একটি আধুনিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বিদ্যুৎকেন্দ্র ইত্যাদি। আইনি ও আর্থিক অবকাঠামোও উন্নত করা হচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এগুলো আমাদের অভ্যন্তরীণ এবং আঞ্চলিক সংযোগ বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির একটি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫তম হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এ প্রবৃদ্ধি একটি প্রাণবন্ত বেসরকারি খাতের কারণে, যেখানে মার্কিন ব্যবসাগুলোর একটি উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।

সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর তার ব্যক্তিগত উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বহুগুণ বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার বিষয়ে খুবই আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ ক্ষেত্রে তারা কিছু জটিলতার কথা উল্লেখ করে সেগুলো সমাধানের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান স্টিভেন কোবোস, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট অতুল কেশপ।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দীন। সঞ্চালনায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।


আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের কর্মসূচি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আগামী ২৯ মে বুধবার আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হবে।

২৯ মে সকালে শান্তিরক্ষীদের স্মরণে ‘শান্তিরক্ষী দৌড়-২০২৪’ এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে। এদিন সকাল ১১ টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শহীদ শান্তিরক্ষীদের নিকটআত্মীয় ও আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর বিশেষ উপস্থাপনার আয়োজন করা হবে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরার লক্ষ্যে বিশেষ জার্নাল ও জাতীয় দৈনিকসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে বিশেষ টক-শো প্রচারিত হবে।

শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের কার্যক্রমের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে ইতোমধ্যে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ ও আহত শান্তিরক্ষীদের সম্মানে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যগণ, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনারগণ, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, তিন বাহিনী প্রধানগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), পুলিশের মহাপরিদর্শক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থাকবেন।


রাস্তা থেকে দেড় শতাধিক গাছ সরাল ফায়ার সার্ভিস

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সারা দেশে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় রেমালের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। ঝড় শুরু হওয়ার পর থেকে দুইজনকে নিহত এবং চারজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সংস্থাটি। এখন পর্যন্ত ১৫৫টি গাছ অপসারণ করেছে তারা। এ ছাড়া ঝড়ে আক্রান্ত ১৬৩ জনকে বিভিন্ন ফায়ার স্টেশনে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার (২৭ মে) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

আহত-নিহত উদ্ধার:

চট্টগ্রামের চন্দননগরে দেয়াল ধসে নিহত এক জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম সাইফুল ইসলাম হৃদয়। বয়স আনুমানিক ২৬ বছর। বরিশাল বিভাগের বাউফলে গাছচাপায় নিহত আরেকজনকে উদ্ধার করা হয়। তার নাম মো. আব্দুল করিম খান। বয়স আনুমানিক ৬৫ বছর। এ ছাড়া আহত ২ জনকে উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে ঝড়-বৃষ্টির কারণে উল্টে যাওয়া গাড়িতে চাপা পড়া দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের একজন পুরুষ যার বয়স আনুমানিক ৫৫ বছর। অপরজন মহিলা তার বয়স আনুমানিক ৩৩ বছর। আহতদের নাম জানা যায়নি।

রাস্তায় পড়ে যাওয়া গাছ অপসারণ:

চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯টি গাছ রাস্তা থেকে এবং ২টি গাছ বাসা বাড়ি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। বরিশাল বিভাগে ৫৫টি গাছ রাস্তা থেকে এবং ১০টি গাছ বাসা বাড়ি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে রাস্তা থেকে ১৮টি গাছ অপসারণ করা হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে ১০টি গাছ অপসারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া খুলনা বিভাগে আরও ৪১টি গাছ রাস্তা থেকে অপসারণ করা হয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিস কর্তৃক মোট গাছ অপসারণ করা হয়েছে ১৫৫টি।

আশ্রয় প্রদান:

বরিশালের গলাচিপা ফায়ার স্টেশনে মোট ১২০ জনকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে, এখনো সেখানে ৬৩ জন অবস্থান করছেন। এ ছাড়া একই বিভাগের বরগুনার পাথরঘাটা ফায়ার স্টেশনে ১৭ জন, ভোলা ফায়ার স্টেশনে ২০ জন এবং ইন্দুরকানি ফায়ার স্টেশনে ৬ জনকেসহ বিভিন্ন ফায়ার স্টেশনে মোট ১৬৩ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

বিষয়:

‘ঘূর্ণিঝড় রেমালে ১৯ জেলায় সাড়ে ৩৭ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত’

সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মুহিববুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৭ মে, ২০২৪ ১৮:৪৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ১৯ জেলার ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মুহিববুর রহমান।

আজ সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আমরা গত ৪-৫ দিন কাজ করে যাচ্ছি। অনেক প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। তারপরও আমরা ১০ জনকে হারিয়েছি। আমরা সফলভাবে ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দুর্যোগ মন্ত্রণালয় গত কয়েকদিন ধরে প্রস্তুতি গ্রহণ করে। যার ফলে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড় দেশের উপকূলে আঘাত হানে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় পানি ঢুকে গেছে। মানুষের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়েছে। বেশ কিছু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় বেশ কিছু জায়গায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। আজ সকাল থেকে আমরা ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করছি।’

‘প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও চট্টগ্রামে মোট ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট ১৯টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, জেলাগুলো হলো- খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, ফেনী, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর এবং যশোর। এছাড়া ১০৭টি উপজেলা এবং ৯১৪ ইউনিয়ন ও পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে ৩৫ হাজার ৪৮৩ বাড়ি এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২ ঘরবাড়ি।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকায় মোট ৯ হাজার ৪২৪ আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ৮ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।’

বিষয়:

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৭ মে, ২০২৪ ১৪:৫৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এলাকাগুলো পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে জনপ্রতিনিধিসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দলের সংশ্লিষ্ট সাংগঠনিক ইউনিটগুলো ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে যাবে। পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের যাওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।’

এ সময় ঘূর্ণিঝড়ে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের প্রতি শোক এবং তাদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানান ওবায়দুল কাদের।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্যোগে মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে সহযোগিতার নামে ফটোসেশন করে বিএনপি। বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল হলেও তারা মানবিক কোনো কর্মসূচিতে মাঠে থাকে না। বিভিন্ন সময় সহায়তার নামে ফটোসেশনে ব্যস্ত থাকে। আমাদের অভিজ্ঞতা ও বাংলাদেশের যে বাস্তবতা জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা এসব দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবিলায়... বিএনপির কথা যদি আমি বলি, একটি বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে দায়িত্ব পালনে তারা বার বার ব্যর্থ হয়েছে। তারা সাহায্যের নামে ফটোশেসন করে।’

বিএনপি কোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ায় না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের কাজই হচ্ছে ফটোসেশন করা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রোজার মাসেও আমরা সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করেছি আর তারা ইফতার পার্টি করেছে। বিএনপির সঙ্গে আমাদের নীতিগতভাবেই অনেক পার্থক্য আছে।’


বিমান বাহিনীর নতুন প্রধান হাসান মাহমুদ খাঁন

এয়ার ভাইস মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৭ মে, ২০২৪ ১৪:০৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান পদে নিয়োগ পেয়েছেন এয়ার ভাইস মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন। তিনি আগামী ১১ জুন থেকে নতুন দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।

বিমানবাহিনী বর্তমান প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নানের স্থলাভিষিক্ত হবেন তিনি।

রোববার (২৬ মে) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আইএসপিআর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিমান বাহিনীর এয়ার ভাইস মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁনকে প্রতিরক্ষা-বাহিনীসমূহের প্রধানদের (নিয়োগ, বেতন, ভাতা এবং অন্যান্য সুবিধা) আইন, ২০১৮ অনুসারে ১১ জুন ২০২৪ তারিখ (অপরাহ্ণ) এয়ার মার্শাল পদবিতে পদোন্নতি প্রদানপূর্বক উক্ত তারিখ (অপরাহ্ণ) থেকে তিন বছরের জন্য বিমান বাহিনী প্রধান হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।

বর্তমানে বিমান বাহিনী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এয়ার মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান। ১১ জুন তিনি অবসরে যাবেন।

এয়ার ভাইস মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন ২০ জুন ১৯৬৬ তারিখে ঢাকার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৫ জুন ১৯৮৬ তারিখে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জিডি(পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন। তিনি একজন ফাইটার পাইলট এবং ‘এ’ ক্যাটাগরির কোয়ালিফাইড ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর। একজন পেশাদার সুদক্ষ বৈমানিক হিসেবে তিনি এসএফ২৫ সি, পিটি-৬, ফুগা, সিএম-১৭০, টি-৩৭, এফটি-৬, এটাক-৫, এফটি-৭বি, এফ-৭এমবি, মিগ-২৯ইউবি, মিগ-২৯বি, এফ/এ-১৮ডি, এফটি-৭বিজি, এফ-৭বিজি, এফটিসি-২০০০, এল-৩৯জেডএ, কে-৮ডব্লিউ এবং বেল-২০৬ বিমান উড্ডয়ন করেছেন। তিনি মিগ-২৯ ফাইটার স্কোয়াড্রনের অগ্রগামী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

নটরডেমিয়ান এই কর্মকর্তা সামরিক বাহিনীর দীর্ঘ চাকরি জীবনে দেশে ও বিদেশে পেশাগত বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ মিরপুর এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটি পাকিস্তান থেকে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন।

তিনি ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টরস কোর্স, জুনিয়র কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কোর্স, ফিজিওলজিক্যাল ইনডক্ট্রিনেশন কোর্স, জাঙ্গাল সার্ভাইভাল কোর্স, ওয়াটারম্যান শিপ কোর্স, ফ্লাইট সেফটি কোর্স এবং ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কোর্স, তুর্কি থেকে পিআইসি অ্যান্ড হাই জি টেস্ট, রাশিয়া থেকে মিগ-২৯ ট্রেনিং, চীন থেকে স্টাফ কোর্স, মালয়েশিয়া থেকে মিগ-২৯ সিমুলেটর ট্রেনিং এবং পাকিস্তান থেকে ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড ওয়্যার কোর্স সম্পন্ন করেছেন।

বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি বিমান বাহিনীর বিভিন্ন কমান্ড, স্টাফ ও প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ৮ স্কোয়াড্রন, ট্রেনিং উইং, বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুর ফ্লাইং উইংয়ের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হক, বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজার ও বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু এর এয়ার অধিনায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, বিমান সদরের বিমান পরিচালন পরিদপ্তর, গোয়েন্দা পরিদপ্তর ও পরিকল্পনা পরিদপ্তরের পরিচালক, প্রধান পরিদর্শক, বিমান বাহিনী একাডেমির ডেপুটি কমান্ড্যান্ট এবং চিফ ইন্সট্রাক্টর, ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ মিরপুর এর ডেপুটি কমান্ড্যান্ট হিসেবে অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (পরিকল্পনা) ও সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (পরিচালন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। পেশাগত জীবনে কর্মদক্ষতা ও অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ‘বিমান বাহিনী পদক’, ‘গৌরবোজ্জ্বল উড্ডয়ন পদক’ ‘অসামান্য সেবা পদক’ এবং তিন বার বিমান বাহিনী প্রধানের প্রশংসাপত্র লাভ করেন।

এয়ার ভাইস মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন পেশাগত কারণে চীন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, জাপান, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ইতালি, অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতসহ বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন।

এয়ার ভাইস মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন এবং সালেহা খান বিবাহিত জীবনে এক কন্যা এবং এক পুত্র সন্তানের জনক-জননী। তিনি একজন জ্ঞানপিপাসু পাঠক এবং দক্ষ গলফার।


দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ খুলনার কয়রা থেকে উত্তরদিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। নিম্নচাপটি বর্তমানে যশোর ও তার আশপাশ এলাকায় অবস্থান করছে।

আজ সোমবার সকালে আবহাওয়ার ১৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘স্থল গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ বৃষ্টিপাত বাড়িয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হবে।’

বন্দরে সতর্কতামূলক সংকেত নিয়ে বলা হয়, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ বন্দর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

বিষয়:

ছেঁড়া বৈদ্যুতিক তার দেখলে দ্রুত বিদ্যুৎ অফিসকে জানানোর পরামর্শ

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘূর্ণিঝড় বা অন্য কোনো কারণে বিচ্ছিন্ন বৈদ্যুতিক লাইন যাতে কেউ স্পর্শ না করে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা এবং ছেঁড়া বৈদ্যুতিক তার দেখলে দ্রুত নিকটবর্তী বিদ্যুৎ অফিসকে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি প্রতিটি জেলায় কন্ট্রোলরুম খুলেছে বলেও জানানো হয়েছে।

এ ছাড়াও বিদ্যুৎ সংক্রান্ত যে কোনো প্রয়োজনে ১৬৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সেন্ট্রাল কন্ট্রোলরুমের নম্বর ০১৭৯২-৬২৩৪৬৭, ০২-৮৯০০৫৭৫, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বরিশাল অঞ্চলের ০১৭১৩-৮৫০২১৮, খুলনা অঞ্চলের ০১৭১৩-৮৫০২১১, পটুয়াখালী অঞ্চলের ০১৭১৩-৮৫০২১৯-এ নম্বরগুলো সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে।

বিষয়:

ঘূর্ণিঝড় রেমাল: ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল ছাড়বে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বঙ্গোবসাগরের গভীর নিম্নচাপ থেকে সৃষ্টি হওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উত্তর দিকে ধীরগতিতে অগ্রসর হয়ে মোংলার দক্ষিণপশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম অব্যাহত রেখেছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে পরবর্তী ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

গতকাল রোববার রাতে আবহাওয়া অফিসের ১৫ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক।

বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল সামান্য উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি ২৬মে রাত ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০০ কিলোমিটার পশ্চিম, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০৫ কিলোমিটার পশ্চিম, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১১৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিম এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।

রেমালের প্রভাবে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

অন্যদিকে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরগুলোকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারী (১৮৯ মিমি/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।


ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ২ জন নিহত: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

শক্তিশালি ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে এখন পর্যন্ত দুইজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৯টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের অগ্রভাগ অতিক্রম করেছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করবে। কেন্দ্রটি অতিক্রম করার পর ঘূর্ণিঝড়ের শেষ ভাগটি ৩ থেকে ৫ ঘণ্টা পর বাংলাদেশ অতিক্রম করবে।

‘সব উপকূল এলাকায় বর্তমানে বাতাস বয়ে যাচ্ছে। উপকূলীয় এলাকাগুলো ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার অনেক জায়গায় বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ভেতরে ঢুকেছে। এই মুহূর্তে উপকূলীয় এলাকার মানুষজন বিপদের মধ্যে আছেন। লাখ লাখ মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষজন যেন সঠিকভাবে খাবার পায় সে বিষয়গুলো আমরা মনিটরিং করছি’- বললেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, ‘জোয়ার ভাটার সম্ভাবনা আছে। আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। আমাদের আতঙ্ক কাটেনি, সামনে আতঙ্ক বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা আছে। ঘূর্ণিঝড় অতিক্রম করার পরও সারা দেশে প্রবল বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এটাও একটি দুর্যোগের মধ্যে পড়ে। এর ফলে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। এসব দুর্যোগকে লক্ষ্য করে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ডসহ আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করছি।‌ দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে মানুষের প্রয়োজনে ইতোমধ্যে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।’

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে নিহতের খবর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জেনেছি এখন পর্যন্ত দুইজন মারা গেছে। এর মধ্যে একজন মারা গেছে আমার পটুয়াখালি এলাকায়।


banner close