বৃহস্পতিবার, ৬ জুন ২০২৪

ভোমরা দিয়ে এল ৮ ট্রাক পেঁয়াজ

ফাইল ছবি
আপডেটেড
৬ জুন, ২০২৩ ১৫:০৭
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ৬ জুন, ২০২৩ ০৯:১৫

সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ৮ ট্রাক পেঁয়াজ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় এ পেঁয়াজের ট্রাক প্রবেশ করে। এ ছাড়া মঙ্গলবার আরও ১০ ট্রাকের মতো পেঁয়াজ প্রবেশ করতে পারে বলে জানিয়েছে ভোমরা শুল্ক স্টেশনের কর্মকর্তারা। খবর বাসসের।

ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ খাঁন জানান, প্রতি টন পেঁয়াজ ২২০ মার্কিন ডলার থেকে ২৫০ মার্কিন ডলারে আমদানি করা হচ্ছে। দেশীয় পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে গত ১৫ মার্চ থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি নিষিদ্ধ করে সরকার। এ সুযোগে বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়। ফলে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় উঠে।

তিনি আরও বলেন, পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়াই অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কমানো সম্ভব হবে এবং সাধারণ মানুষ ন্যায্য মূল্যে পেঁয়াজ কিনতে পারবে।

ভোমরা শুল্ক স্টেশনের তথ্য কর্মকর্তা শান্ত হাওলাদার জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ৮ ট্রাক পেঁয়াজ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আরও ৮ থেকে ১০টি ট্রাক প্রবেশ করতে পারে।

বিষয়:

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বাজেট আজ

দেশের ৫৩তম বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা
আপডেটেড ৬ জুন, ২০২৪ ১১:১৭
সুলতান আহমেদ

মহল্লার মুদি দোকানদার জাহেদ মিয়া। দোকানে গেল কয়েকদিন ধরে খুব বেশি মালামাল নেই। আগ্রহ নিয়ে জানতে চাওয়া কেন? জাহিদ জানালেন, বৃহস্পতিবার বাজেট, তাই আগে থেকে কিছু কিনে রাখার সাহস পাচ্ছেন না তিনি। পাল্টা প্রশ্ন বাজেটের সময় কিনে রাখতে কি সমস্যা? ‘ভাই, বাজেট মানেই হইল কিছু জিনিসপত্রের দাম বাড়ব আবার কিছুর কমব, আমগো মতো ছোট দোহানদার কি কিন্না আবার বিপদে পড়ুম কে জানে?’ সরল উত্তর জাহিদের।

মিরপুরের একটি বাজারে কেনাকাটা করতে এসেছেন মধ্যবয়সী আসাদুল। পেশায় একজন চাকরিজীবী। বাজেট নিয়ে তার আগ্রহ কেমন জানতে চাইলে দুটি বিষয়ের কথা জানালেন। তিনি বলেন, ‘বাজেট নিয়ে আমার তেমন কোনো আগ্রহ নাই। তবে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই যাতে নতুন করে কোনো জিনিসের দাম না বাড়ে। আর ব্যক্তি-করের সীমা যেন একটু বাড়ায়।’ ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, গেল কয়েক বছরে নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বেড়েছে তাতে বাজার করতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। নতুন করে কোনো কিছুর দাম বাড়া মানেই হলো ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ মনে করেন আসাদুল।

সাধারণ মানুষের কাছে বাজেট মানেই কিছু পণ্যের দাম বাড়বে আর কিছু পণ্যের কমবে। তবে বাজেট যে সার্বিকভাবে রাষ্ট্রের পুরো বছরের আয়-ব্যয়ের খতিয়ান। যেখানে কোথা থেকে আয় আসবে আবার কোথায় তা ব্যয় হবে তা চূড়ান্ত করা হয়। সেই আয়-ব্যয়ের খতিয়ান কালো ব্রিফকেসে নিয়ে আজ বিকেলে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় সংসদে তার প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন। যেখানে উপস্থিত থাকবেন সংসদ নেতা ও সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। প্রথা অনুযায়ী স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী তার প্রস্তাবনা জাতির সামনে তুলে ধরবেন। সংসদ টিভি, বিটিভিসহ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের যেকোনো জায়গা থেকে তা সরাসরি দেখার সুযোগ পাবে সাধারণ মানুষ। বাজেট ঘিরে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ হবে, তা জানা যাবে তার পরেই।

অর্থমন্ত্রণালয়ের সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের মোট আকার হতে যাচ্ছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী জুলাই থেকে তার পরের জুন পর্যন্ত সরকার ব্যয় করতে চায় এই অর্থ। যা এর আগের অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে প্রায় ৮২ হাজার কোটি টাকা বেশি। ব্যয়ের বিশাল এই আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪শ কোটি টাকা। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় আসবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর থেকে। তাদের ওপর থাকছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা। এ ছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বহির্ভূত খাত থেকে কর আসবে আরও ১৫ হাজার কোটির পাশাপাশি কর ব্যতীত প্রাপ্তি ধরা হচ্ছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রণালয় ও সংসদ সচিবালয় ইতোমধ্যে বাজেট প্রস্তাবের সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এবারের বাজেট হতে যাচ্ছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১৬তম বাজেট। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল হাসান মাহমুদ আলীর জন্য প্রথম বাজেট। আর স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৩তম বাজেট এটি। সংসদ সচিবালয় সূত্র জানিয়েছে, বাজেট উত্থাপনের আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে তা অনুমোদিত হবে। দুপুর ১২টায় সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের অনুমতি পাওয়ার পরই তা জাতীয় সংসদে প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী।

প্রস্তাবিত বাজেটে মোট জিডিপির আকার হতে যাচ্ছে ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ দেশের কৃষক থেকে শহরের বড় অফিসার- সবার সম্মিলিত উৎপাদনের আর্থিক মূল্য হবে এটি। যেখানে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা এবার কিছুটা কমিয়ে এনেছেন অর্থমন্ত্রী। বড় প্রবৃদ্ধির চেয়ে মানুষকে স্বস্তি দেওয়াতেই বেশি নজর দিতে চেয়েছেন নতুন অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলী। তাই আগের বছরের চেয়ে খানিকটা কমিয়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

এবারের বাজেটে সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বড় আশার জায়গা কমে আসবে নিত্যপণ্যের দাম। অর্থমন্ত্রীও বুঝতে পেরেছেন সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে নিত্যপণ্যের দামে। তাই বর্তমানে প্রায় দশ শতাংশের ঘরে থাকা মূল্যস্ফীতি নামিয়ে আনতে চান ৬ দশমিক ৫ শতাংশে। যদিও কাজটা মোটেও সহজ হবে না, তা ঠিকই জানেন অর্থমন্ত্রী। মূল্যস্ফীতি কমাতে হলে খাদ্যপণ্যের দাম কমিয়ে আনার বিকল্প নেই বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সেজন্য আমদানি পর্যায়ে শুল্কছাড় দিয়ে পলিসি নির্ধারণ করার কথা বলেছেন অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর। দৈনিক বাংলাকে তিনি বলেছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই সম্ভব। তবে তার জন্য সরকারকে আরও বেশি এদিকে নজর দিতে হবে। ডলারের দাম এখন বাড়ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো এখন আমানতের সুদহার বাড়িয়েছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যা ভূমিকা রাখবে।

রাজস্ব আদায়ের আকাঙ্ক্ষা মিটবে কি?

প্রতিবছরই বাজেটে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে ধরা হয় বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায়কে। এবারের বাজেটেও থাকছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা আদায়ের চ্যালেঞ্জ। যার মধ্যে শুধু রাজস্ব বোর্ডকে আদায় করতে হবে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর কর্মকর্তারা এ নিয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে না চাইলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন কাজটি মোটেই সহজ হবে না। কারণ চলতি অর্থবছর থেকে প্রায় ১শ কোটি টাকা বাড়তি আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে এটি। তারা বলছেন, এ জন্য রাজস্ব বোর্ডে সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই। তবে বিশেষজ্ঞরা অনেকেই আশাবাদী আইএমএফের ঋণের রাজস্বের শর্ত নিয়ে। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে রাজস্ব সংস্কারে। সেগুলো বাস্তবায়ন হলে রাজস্ব আদায় বাড়বে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ও বরেণ্য অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের মতে, রাজস্ব আদায় বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। তবে সে জন্য সাধারণ মানুষ আর যারা নিয়মিত কর দেন তাদের ওপর চাপ না বাড়াতে পরামর্শও দেন তিনি। ব্যবসায়ী নেতারাও বারবার দাবি তুলেছেন নতুন করদাতা সৃষ্টি ও করজাল বাড়ানোর জন্য।

বাজেট ঘাটতি পূরণ যেভাবে

প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়লেও থাকছে বড় অঙ্কের ঘাটতি। অর্থমন্ত্রীর এবারের বাজেটে অনুদানসহ ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬শ কোটি টাকায়। আর তা পূরণে অর্থমন্ত্রীকে ভরসা করতে হচ্ছে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণের ওপর। এবারের বাজেটে নতুন করে বিদেশি ঋণ নেওয়া হবে ৯০ হাজার ৭শ কোটি টাকা। পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরের ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫শ কোটি টাকা। এ ছাড়া ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে নেওয়া হবে আরও ২৩ হাজার ৪শ কোটি টাকা। যার মধ্যে জাতীয় সঞ্চয় প্রকল্পসমূহ থেকে নেওয়া হবে ১৫ হাজার ৪শ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বল্পমেয়াদি ও বেশি সুদের ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারকে আরও সাবধানী হতে হবে।


নতুন বাজেটে স্বস্তি-অস্বস্তি

আপডেটেড ৬ জুন, ২০২৪ ১১:০৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী বাজেটে (২০২৪-২৫) আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত পূরণে কর ছাড় কমানোর বিস্তর ছক থাকছে। রাজস্ব আয় বাড়াতে বাজেটে নিত্যব্যবহার্য পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট এবং আমদানি পর্যায়ে শুল্ক ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে, আবার কমানো হচ্ছে কিছু পণ্যের। এ কারণে সেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে ও কমতে পারে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দায়িত্বশীল সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

যেসব পণ্যসামগ্রীর দাম কমতে পারে

আসন্ন বাজেটে ২৮২টি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য প্রত্যাহার-হ্রাস, সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ও সংরক্ষণমূলক শুল্ক (আরডি) কমানো হচ্ছে। এতে ওইসব পণ্যের দাম কমতে পারে। এ তালিকায় আছে- গুঁড়োদুধ, চকোলেট, ল্যাপটপ, কার্পেট, রড, সুইস-সকেট, কিডনি ডায়ালাইসিসের উপকরণ, প্রি-পেইড মিটার, মোটরসাইকেল ইত্যাদি। সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্যাকেটজাত গুঁড়োদুধ আমদানিতে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এতে আমদানিকৃত গুঁড়োদুধের দাম কমতে পারে। চকোলেট আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হচ্ছে। এ কারণে সব বয়সিদের পছন্দের চকোলেটের দাম কমতে পারে। ল্যাপটপ আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হলেও ভ্যাট প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এতে ৩১ শতাংশের পরিবর্তে ২০ দশমিক ৫০ শুল্ক-কর দিতে হবে বিধায় ল্যাপটপের দাম কমতে পারে। কার্পেট তৈরির প্রধান কাঁচামাল পলিপ্রেপাইলিন ইয়ার্ন আমদানির শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে দেশে তৈরি কার্পেটের দাম কমতে পারে।

পাশাপাশি রড, বার ও এঙ্গেল তৈরির কাঁচামাল ম্যাঙ্গানিজ আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে লোহাজাতীয় পণ্যের দাম কমতে পারে। বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত সুইস-সকেটের দাম কমতে পারে। কারণ দেশে উৎপাদিত সুইস-সকেট, হোল্ডার উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামালের আমদানি শুল্ক কমানো হচ্ছে। ইলেকট্রিক মোটর উৎপাদনে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে ইলেকট্রিক মোটরের দাম কমতে পারে। এ ছাড়া দেশে তৈরি মোটরসাইকেলের সিকেডি ইঞ্জিনের পার্টস আমদানির শুল্ক কমানো হচ্ছে। এ কারণে দেশে তৈরি মোটরসাইকেলের দাম কমতে পারে। কিডনি ডায়ালাইসিসে ব্যবহৃত ফিল্টার ও সার্কিট আমদানির শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে এক শতাংশ করা হচ্ছে। এ কারণে ডায়ালাইসিস খরচ কমতে পারে।

যেসব গৃহস্থালি সামগ্রীর দাম বাড়তে পারে

বাসাবাড়িতে এখন এলইডি বাতির ব্যবহার হয়। কারণ এলইডি বাল্ব এবং অ্যানার্জি সেভিং বাল্ব উৎপাদনের উপকরণ আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে। ফলে বাড়তে পারে এলইডি বাতির দাম। পাশাপাশি টিউবলাইটের ওপর একই হারে ভ্যাট বাড়তে পারে।

মধ্যবিত্ত পরিবারও এখন এসি কেনার চেষ্টা করে; কিন্তু এবার তাতে হাত দেওয়া হচ্ছে। উৎপাদন পর্যায়ে এসির ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট বসতে পারে। ৩০ জুন পর্যন্ত এসি উৎপাদন ভ্যাটমুক্ত থাকবে। তাই এরপর এসির দাম বাড়তে পারে। রেফ্রিজারেটরের উৎপাদন পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট বেড়ে ১০ শতাংশ হতে পারে। এ ছাড়া আম, তেঁতুল, পেয়ারা, আনারসসহ বিভিন্ন ধরনের জুসের ওপর উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট বসানোর পরিকল্পনা করছে এনবিআর।

এখন নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারেও পানি শোধন যন্ত্র (ওয়াটার পিউরিফায়ার) ব্যবহার করা হয়। এসব যন্ত্র আমদানিতে ১ শতাংশ আমদানি শুল্ক আছে। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, এই শুল্ক ১০ শতাংশ করা হতে পারে। এতে ভোক্তা পর্যায়ে এই যন্ত্রের দাম বাড়বে।

নিরাপত্তার স্বার্থে এখন বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়। সিসি ক্যামেরা আমদানির ওপর বর্তমানের ১ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ শুল্ক বসতে পারে। আবার শহরে নিরাপত্তা সেবা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন কোম্পানি প্রহরী নিয়োগ দেয়। এ সেবা পেতেও খরচ বাড়াতে হবে। কারণ, নিরাপত্তা সেবার ওপর বর্তমানের ১০ শতাংশ থেকে ভ্যাট বেড়ে ১৫ শতাংশ হতে পারে।

লিফট আমদানিতেও শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হতে পারে।

প্রতিবারের মতো আগামী বাজেটেও সিগারেট উৎপাদন পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য স্তর বাড়ানো হচ্ছে। তাই সব ধরনের সিগারেটের দাম বাড়বে। দেশে কাজুবাদাম চাষকে সুরক্ষা দেওয়ার অংশ হিসেবে খোসা ছাড়ানো কাজুবাদাম আমদানিতে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে কাজুবাদামের দাম বাড়তে পারে। লোডশেডিং মোকাবিলায় বাসাবাড়ি বা শিল্পে জেনারেটরের ব্যবহার বাড়ছে। সেখানেও নজর দিয়েছে এনবিআর। জেনারেটর সংযোজন ও উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণ বা যন্ত্রাংশ আমদানিতে এক শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। তাই দেশের বাজারে জেনারেটরের দাম বাড়তে পারে।

মুঠোফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচ বাড়তে পারে

উচ্চবিত্ত থেকে শুরু মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত সবার কাছেই এখন মোবাইল অতি প্রয়োজনীয় যন্ত্র। কথা বলার পাশাপাশি ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ- এসব জীবনযাত্রার অনুষঙ্গ হয়ে গেছে। আগামী বাজেটে মুঠোফোনে কথা বলা এবং ইন্টারনেট সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হতে পারে। বর্তমানে টকটাইম ও ইন্টারনেট সেবার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা আছে। এটি আরও ৫ শতাংশ বাড়ানো হতে পারে। এই প্রস্তাব পাস হলে মুঠোফোনে কথা বলা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচ বাড়বে।

ব্যাগেজ রুলে বড় পরিবর্তন: আসন্ন বাজেটে ব্যাগেজ রুলে বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। যেমন- ২৪ ক্যারেট স্বর্ণালঙ্কার আনা যাবে না। ২২ ক্যারেট বা তার নিচের ক্যারেটের স্বর্ণালঙ্কার ১০০ গ্রাম আনা যাবে। ১২ বছরের কম বয়সিরা ব্যাগেজ সুবিধায় স্বর্ণালঙ্কার, স্বর্ণবার, মদ-সিগারেট আনতে পারবে না। অন্যদিকে যাত্রীর সঙ্গে আনা হয়নি এমন ব্যাগেজ (ইউ-ব্যাগেজ) শুল্কছাড় সুবিধা পাবে না। এ ধরনের ব্যাগেজে আনীত পণ্যভেদে শুল্ককর পরিশোধ করতে হবে।

উত্তরাধিকার সম্পদ হস্তান্তরে কর নেই

উত্তরাধিকার, উইল, অসিয়ত এবং অবাতিলযোগ্য কোনো ট্রাস্টমূলে সম্পদ অর্জন করলে তা করমুক্ত থাকবে। এর মানে হলো উত্তরাধিকার সূত্রে কোনো জমি, ফ্ল্যাটসহ সম্পদ পেলে তাতে কর দিতে হবে না। এ ছাড়া এতিমখানা, অনাথ আশ্রম ও ধর্মীয় উপাসনালয়কে গাড়ির অগ্রিম কর পরিশোধ করতে হবে না- এমন ঘোষণা আসছে বাজেটে।

করমুক্ত আয়সীমা বাড়ছে না

আগামী অর্থবছরে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ছে না। এখনকার মতো বার্ষিক করমুক্ত সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকাই থাকছে। তবে করহার পুনর্বিন্যাস হচ্ছে। এখন ৫, ১০, ১৫, ২০ ও ২৫ শতাংশ করহারের সঙ্গে ৩০ শতাংশের আরেকটি স্তর আসছে। বছরে আয় সাড়ে ৩৮ লাখ টাকার বেশি হলে করদাতাকে বাকি অর্থের ওপর ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।

১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করা যাবে

আগামী জুলাই মাস থেকে এক বছরের জন্য কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। নগদ টাকার ওপর ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে যে কেউ এই সুযোগ নিতে পারবেন। একইভাবে জমি, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট কিনেও নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে টাকা সাদা করা যাবে।

দুই বছর আগে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ শেষ হয়। সে সময় খুব একটা সাড়া মেলেনি। এরপর বিদেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া হয় এক বছরের জন্য; কিন্তু কেউ-ই সেই সুযোগ নেননি। প্রায় সব সরকারের আমলেই কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়। এই পর্যন্ত ৪৭ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে।

সংসদ সদস্যদের গাড়িতে শুল্ক বসতে পারে

সংসদ সদস্যদের আমদানি করা গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসতে পারে। সংসদ সদস্যরা কোনো শুল্ক-কর ছাড়াই গাড়ি আমদানি করতে পারেন। ৩৬ বছর ধরে এই সুবিধা পেয়ে আসছেন তারা। ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারায়। তবে নীতিনির্ধারকদের দিক থেকে সংসদ সদস্যের গাড়ির ওপর শুল্ক না বসানোর চাপ আছে। শেষপর্যন্ত এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে। বর্তমানে গাড়ির ইঞ্জিনের সিসিভেদে ৪৫ শতাংশ থেকে ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত সম্পূরক শুল্ক দিতে হয়।

উদ্যোক্তাদের জন্য ভালো-মন্দ খবর

ব্যবসায়ীদের জন্য ভালো খবর যেমন আছে, তেমনি আছে খারাপ খবরও। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন প্রতিষ্ঠানের করহার আড়াই শতাংশ কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হতে পারে। শর্ত হলো ৫ লাখ টাকার একক লেনদেন এবং বার্ষিক লেনদেন ৩৬ লাখ টাকার বেশি হলে তা ব্যাংকের মাধ্যমে হতে হবে। তবে সমবায় সমিতির করহার ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হতে পারে।

ব্যবসায়ীরা কিছু পণ্য আমদানিতে শুল্ক সুবিধা পান। সেই সুবিধা সীমিত করা হচ্ছে। খাদ্যপণ্য, কৃষি উপকরণ, ওষুধসহ অত্যাবশ্যকীয় ও জীবন রক্ষাকারী পণ্যসহ ৩২৯টি পণ্য আমদানি করতে আমদানিকারককে কোনো আমদানি শুল্ক ও সম্পূরক শুল্ক দিতে হয় না। আগামী বাজেটে ওই তালিকার অন্তত ১০-১৫ শতাংশ পণ্যের ওপর ১ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। সেই হিসাবে অর্ধশতাধিক পণ্যের ওপর এই শুল্ক বসতে পারে। প্রাথমিক তালিকায় আছে, গম, ভুট্টা, শর্সের বীজ, তুলার বীজ, বিভিন্ন শাকসবজির বীজ, বিটুমিন, কয়লা, জিপসাম, ভিটামিন, পেনিসিলিন, ইনসুলিন, বিভিন্ন ধরনের দরকারি রাসায়নিক, প্লাস্টিক কয়েল, পেপার বোর্ড, বিভিন্ন স্টিলজাতীয় পণ্য, শিল্পের কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ ইত্যাদি। এ ছাড়া বর্তমানে ২৭টি তথ্যপ্রযুক্তি সেবা খাতে বিনিয়োগ করলে কর অবকাশ সুবিধা পাওয়া যায়। আগামী বাজেটে এই কর অবকাশ সুবিধাপ্রাপ্ত খাতের সংখ্যা ১৯-এ নামিয়ে আনা হচ্ছে।

২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত ১৩ ধরনের বড় অবকাঠামো খাতে ১০ বছর পর্যন্ত কর অবকাশ সুবিধা আছে। এসব বড় অবকাঠামোর ক্ষেত্রে কর অবকাশ সুবিধা উঠিয়ে দেওয়া হতে পারে। যেসব খাতে কর অবকাশ সুবিধা উঠতে পারে সেগুলো হলো গভীর সমুদ্রবন্দর বা নদীবন্দর; এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে; রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল; ফ্লাইওভার, টোল রোড ও ব্রিজ; গ্যাস পাইপলাইন; আইসিটি পার্ক; হাইটেক পার্ক; অনুমোদিত পানি শোধনাগার; পানি সরবরাহ বা পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা; এলএনজি টার্মিনাল ও সঞ্চালন লাইন; মনোরেল ও সাবওয়েসহ রেলপথ; নবায়নযোগ্য জ্বালানি।

এ ছাড়া হাইটেক পার্ক ও অর্থনৈতিক অঞ্চলের শিল্পকারখানার মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ১ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসতে পারে। এই দুটি অঞ্চলের শিল্পমালিকরা আর শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুযোগ পাবেন না। এ ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসতে পারে।

এদিকে শেয়ারবাজার থেকে ক্যাপিটাল গেইনের ওপর কর কমানোর চিন্তা করা হচ্ছে। বার্ষিক ৫০ লাখ টাকার বেশি ক্যাপিটাল গেইন হলে কর বসতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ওপরই কর বসবে। এ ছাড়া কোম্পানি পরিচালকদের শেয়ারবাজার থেকে আয়ের ওপর উৎসে কর কাটার বিধান আসতে পারে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করা হয়। সেই মুনাফার ওপর এখন ১০ শতাংশ উৎসে কর কেটে রাখা হয়। এটি বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হতে পারে।

এ ছাড়া ভবিষ্যৎ তহবিল (প্রভিডেন্ট ফান্ড), আনুতোষিক তহবিল (গ্র্যাচুইটি ফান্ড) কোথাও বিনিয়োগ করলে যে মুনাফা আসে, তার ওপর ১৫ শতাংশ হারে উৎস কেটে রাখা হয়। এই করহার ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা হতে পারে। পুনর্বিন্যাস হতে পারে ঠিকাদারি বিলের ওপর উৎসে করহার।

সাধারণত বিয়ে, বিবাহবার্ষিকী, জন্মদিন, গায়েহলুদ, সুন্নতে খতনাসহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সভা, সেমিনার, পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করতে কমিউনিটি সেন্টার ও মিলনায়তন ভাড়া করা হয়। এখন থেকে বার্ষিক আয়কর রিটার্ন জমার রসিদ ছাড়া মিলনায়তন ভাড়া করা যাবে না। বর্তমানে ৪৩ ধরনের সেবা পেতে রিটার্ন জমার কপি লাগে। এই তালিকায় মিলনায়তন ভাড়া, হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নিবন্ধন ও নবায়নে রিটার্ন জমার এই বাধ্যবাধকতা যুক্ত হতে পারে।


বাজেট ঘোষণায় আওয়ামী লীগের যত রেকর্ড

দেশের ৫৩টি বাজেটের ২৫টিই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের দেওয়া
আপডেটেড ৬ জুন, ২০২৪ ১১:১২
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাধীন বাংলাদেশে সর্বাধিক বাজেট দিয়ে সবার উপরে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দেশের ৫৩টি বাজেটের ২৫টিই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের দেওয়া।

আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেট পেশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদের প্রথম বাজেট। এর মধ্য দিয়ে বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের ১৬তম বাজেট এবং আওয়ামী লীগ সরকারের ২৫তম বাজেট পেশ করা হয়। আর অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট এটি।

আওয়ামী লীগের ২৫টি বাজেটের মধ্যে বর্তমান সরকারের টানা চার মেয়াদের ১৬টিসহ ২১টিই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের বাজেট। দেশের ইতিহাসে এর আগে কোনো সরকার টানা ১৬টি বাজেট উপস্থাপন করতে পারেনি।

১৯৭২ সালের ৩০ জুন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃতাধীন সরকার স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেট পেশ করে। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ উপস্থাপিত সেই বাজেট ছিল ৭৮৬ কোটি টাকার।

স্বাধীন বাংলাদেশের যত বাজেট

তাজউদ্দীন আহমদের সময়কাল: স্বাধীনতার পর প্রথম বাজেট দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা তাজউদ্দীন আহমদ। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের সেই বাজেট ছিল ৭৮৬ কোটি টাকার। এর পর ১৯৭৩-৭৪ অর্থ বছরের বাজেট ছিল ৯৯৫ কোটি টাকা, ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে ১০৮৪ দশমিক ৩৭ কোটি টাকা। ১৯৭৫-৭৬ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন ড. আজিজুর রহমান। সেটি ছিল ১৫৪৯ দশমিক ১৯ কোটি টাকার।

জিয়াউর রহমানের আমল: ১৯৭৬-৭৭ অর্থবছরের জন্য ১৯৮৯ দশমিক ৮৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। ১৯৭৭-৭৮ অর্থবছরের জন্য ২১৮৪ কোটি টাকা এবং ১৯৭৮-৭৯ অর্থবছরে ২৪৯৯ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন তিনি। এর পরের বছর ১৯৭৯-৮০ অর্থবছরের জন্য ড. মীর্জা নরুল হুদা ৩৩১৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমল: ১৯৮০-৮১ অর্থবছরের জন্য সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ৪১০৮ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন। ১৯৮১-৮২ অর্থবছরের জন্য ৪৬৭৭ কোটি টাকার পর পর দুটি বাজেট ঘোষণা করেন তিনি। এর পর সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯৮২-৮৩ অর্থবছরের জন্য ৪৭৩৮ কোটি টাকা ও ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরের জন্য ৫৮৯৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন। অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান বাজেট ঘোষণা করেন চারটি। ১৯৮৪-৮৫ অর্থবছরের জন্য ৬ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা। ১৯৮৫-৮৬ অর্থবছরের জন্য ৭ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। ১৯৮৬-৮৭ অর্থবছরের জন্য ৮ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা। ১৯৮৭-৮৮ অর্থবছরের জন্য ৮ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া ১৯৮৮-৮৯ অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব) মুনিম ১০ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন। অর্থমন্ত্রী ড. ওয়াহিদুল হক ১৯৮৯-৯০ অর্থবছরের জন্য ১২ হাজার ৭০৩ কোটি টাকার বাজেট দেন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে ফের মেজর জেনারেল (অব.) মুনিম ১৯৯০-৯১ অর্থবছরের জন্য ১২ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা বাজেট ঘোষণা করেন।

বিএনপির শাসনামল (১৯৯১-৯৬): বিএনপি সরকারের আমলে টানা ৫টি বাজেট ঘোষণা করেন সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান। ১৯৯১-৯২ অর্থবছরে ১৫ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা, ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে ১৭ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা, ১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে ১৯ হাজার ৫০ কোটি টাকা, ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে ২০ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা এবং ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরের জন্য ২৩ হাজার ১৭০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন সাইফুর রহমান।

আওয়ামী লীগের শাসনামল (১৯৯৬-২০০১): অর্থমন্ত্রী এসএএমএস কিবরিয়া টানা ৬টি বাজেট ঘোষণা করেন। ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে ২৪ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা, ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা, ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে ২৯ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা, ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছরে ৩৪ হাজার ২৫২ কোটি টাকা, ২০০০-০১ অর্থবছরে ৩৮ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা এবং ২০০১-০২ অর্থবছরের জন্য ৪২ হাজার ৩০৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন তিনি।

বিএনপির শাসনামল (২০০১-০৬): বিএনপির দ্বিতীয় মেয়াদে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান টানা ৫টি বাজেট ঘোষণা করেন। ২০০২-০৩ অর্থবছরের জন্য ৪৪ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা, ২০০৩-০৪ অর্থবছরের জন্য ৫১ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা, ২০০৪-০৫ অর্থবছরের জন্য ৫৭ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা, ২০০৫-০৬ অর্থবছরের জন্য ৬১ হাজার ৫৮ কোটি টাকা এবং ২০০৬-০৭ অর্থবছরের জন্য ৬৯ হাজার ৭৪০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন তিনি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বাজেট: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে দুটি বাজেট ঘোষণা করেন এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। ২০০৭-০৮ অর্থবছরের জন্য ৮৭ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা এবং ২০০৮-০৯ অর্থবছরের জন্য ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের শাসনামল: লাখো কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় বাজেটের আকার। বাংলাদেশে প্রথম বাজেটের আকার এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় ও চতুর্থ মেয়াদের বাজেট ঘোষণা করেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রথম এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন তিনি। টানা ১০টি বাজেট দেন সাবেক এই অর্থমন্ত্রী।

২০১০-১১ অর্থবছরে এক লাখ ৩২ হাজার ১৭০ কোটি টাকা, ২০১১-১২ অর্থবছরের জন্য ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা, ২০১২-১৩ অর্থবছরের জন্য ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ২৭০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার শেষ বাজেট ঘোষণা করেন ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার।

আওয়ামী লীগ সরকারের পঞ্চম মেয়াদের প্রথম বাজেট দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট দেন। এর পর ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য দ্বিতীয়বারের মতো ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা বাজেট দেন। ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য তৃতীয়বারের মতো ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এরপর ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য চতু্র্থবারের মতো ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট দেন তিনি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য পঞ্চমবারের মতো ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজ বৃহস্পতিবার বর্তমান সরকারের নতুন মেয়াদের প্রথম বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার হবে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।


ধর্মমন্ত্রীর খোয়া যাওয়া মোবাইল মালয়েশিয়া থেকে উদ্ধার

ধরা পড়ল আন্তঃজেলা মোবাইল চোরচক্রের ৯ সদস্য
বাঁ দিকে ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান এবং ডানে ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের প্রেস ব্রিফিং। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের খোয়া যাওয়া আইফোন মোবাইল হ্যান্ডসেটটি মালয়েশিয়া থেকে উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ। গত ৩০ এপ্রিল ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্স মডেলের মোবাইল হ্যান্ডসেটটি খোয়া যায়। পরে মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন জামালপুর জেলার ইসলামপুর থানায় হারানো মূলে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তথ্য-প্রযুক্তিগত সহায়তায় ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মোবাইল হ্যান্ডসেটটি উদ্ধার করা হয়৷ তবে এ উদ্ধার অভিযানে বের হয়ে আসতে শুরু করে হ্যান্ডসেট আইফোন চুরি চক্রের হোতাসহ চক্রের সদস্যদের তথ্য৷

চুরি যাওয়া এ মোবাইল হ্যান্ডসেটটি চুরির অভিযোগে আন্তঃজেলা মোবাইল চোর চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ।

তদন্তে ও গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে ৮০টি চুরি চক্রের সন্ধান পায় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এসব চক্রের নিয়ন্ত্রণকারী হোতা জাকির হোসেন। তার নেতৃত্বেই ঢাকাসহ সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এসব চোরচক্রের সদস্যরা।

কখনও ছোঁ মেরে বা কখনো পকেট মার করে দামি আইফোন হ্যান্ডসেট নিমিষেই নিয়ে যায় চক্রের সদস্যরা। শুধু মাত্র চলতি বছরের গত ৬ মাসে এসব চক্রের সদস্যরা আইফোনসহ দাবি অন্তত ১০ হাজার মোবাইল হ্যান্ডসেট চুরি করেছে বলে জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগ। চুরি বা ছিনতাই করা এসব মোবাইল হ্যানসেটের অধিকাংশ চলে যায় চট্টগ্রামের রিয়াজ উদ্দিন মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে। সেখান থেকে একাধিক হাত বদল হয়ে এসব আইফোন চলে যায় বিদেশে।

বুধবার (৫ জুন) দুপুরে গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, আমরা প্রায়ই অভিযোগ পাচ্ছি যে, ঢাকা ও আশপাশ এলাকায় দামি মোবাইল হ্যানসেট ও আইফোন ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে চোর চক্রের সদস্যরা। অনেক ভিআইপিরও মোবাইল ছিনতাই হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রায় এমন অভিযোগ আসে। এরকম অনেক অভিযোগ আমরাও পাই।

আমাদের কাছে এমন একটা অভিযোগ আসে ধর্মমন্ত্রী তার নিজ জেলা জামালপুরে সাবেক প্রতিমন্ত্রী রাশেদ মোশাররফের স্ত্রীর জানাজায় গিয়েছিলেন। সেখানে জানাজা থাকা অবস্থায় তার পকেট থেকে তার ব্যবহৃত আইফোনটি খোয়া যায়। এরপর তিনি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। তিনি থানায় একটি জিডি করেন। সেই জিডির পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে নামে আমাদের ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ। বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম ইনচার্জ এডিসি আশরাফউল্লাহর নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার মোবাইল হ্যান্ডসেট চোরদের কাছ থেকে কমমূল্যে মোবাইল হ্যান্ডসেট ক্রয় করে তা অবৈধ পথে ভারত, দুবাই, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করে আসছিল গ্রেপ্তার চোরচক্রের ৯ সদস্য। তাদের গ্রেপ্তার অভিযানে তাদের কাছ থেকে ৬৩টি চোরাই মোবাইল হ্যান্ডসেট উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- চোর চক্রের সর্দার মো. জাকির হোসেন (৪০), সদস্য মাসুম শরীফ (৪১), জিয়াউল মোল্লা জিয়া (৪৮), রাজিব খাঁন মুন্না (২২), আল আমিন মিয়া (২০), আনোয়ার হোসেন সোহেল (২৭), বিল্লাল হোসেন (৩৭), খোকন আলী (৩৬) ও মো. রাসেল(৩৮)।

ধর্মমন্ত্রীর খোয়া যাওয়া সেই দামি মোবাইল হ্যান্ডসেটটি মালয়েশিয়া থেকে উদ্ধার করা হয়। সেটা মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে যোগ করেন হারুন অর রশীদ।

প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে হারুন বলেন, পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা সমাবেশ, সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠান, হাট-বাজার, মসজিদ (নামাজের সময়), জানাজা নামাজ অথবা লোক-সমাগম হয় এমন স্থানে উপস্থিত হয়ে দামি মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবহারকারীদের টার্গেট করে। তাদের পকেট থেকে মোবাইল হ্যান্ডসেট চুরি করে। চোরেরা তাদের চোরাইকৃত মোবাইল হ্যান্ডসেটগুলো চক্রের সর্দার জাকির হোসেন (৪০) ও অন্যতম সহযোগী রাসেল, খোকন, বিল্লাল হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের কাছে বিক্রি করে। সর্দার জাকির হোসেন তার ক্রয়কৃত চোরাই মোবাইল হ্যান্ডসেটগুলো কুরিয়ারযোগে চট্টগ্রামের রিয়াজ উদ্দিন বাজারের মোবাইল ব্যবসায়ী নজরুল ও কামরুজ্জমান হীরুদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। পরে তারা অজ্ঞাতনামা আসামিদের সহযোগিতায় আইফোনসহ দামি মোবাইল হ্যান্ডসেটগুলো ভারত, দুবাই, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে দেয়।

অপর গ্রেপ্তার খোকন আলী ও বিল্লাল হোসেন মোবাইল সার্ভিসিংয়ের আড়ালে চোরাই মোবাইল ক্রয় করে। তারা লক খুলে এবং মূল আইএমইআই পরিবর্তন করে অধিক মূল্যে পূনরায় লোকাল মার্কেটে বিক্রি করে দেয়। গ্রেপ্তার জাকির হোসেনসহ সবার নামে রয়েছে একাধিক মামলা।

ডিএমপি’র এ অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, বিভিন্ন উপায়ে ফোনগুলো ভারত, দুবাই, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে দিয়ে বাজারজাত করে। বিদেশে পাঠানোর আগে তারা বিভিন্ন মোবাইল টেকনিশিয়ানদের সহায়তায় ফোন লক খোলার চেষ্টা করে এবং প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মূল ব্যবহারকারীর কাছ থেকে আই ক্লাউডের পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করে। যেসব ফোনের পাসওয়ার্ড এবং আই ক্লাউড পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করতে পারে সে ফোনগুলো তারা উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে এবং বিদেশে পাঠিয়ে দেয়। যে ফোনগুলোর লক এবং আই ক্লাউড পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করতে পারে না সেগুলো তুলনামূলক কম দামে বিক্রি করে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়।

সবার উদ্দেশে হারুন অর রশীদ বলেন, মোবাইল ফোন হারিয়ে গেলে কিংবা চুরির পর ফিরে পেতে ভুক্তভোগী প্রথমে থানায় ডিজি করেন। তবে এ ক্ষেত্রে জিডি না করে সরাসরি চুরির মামলা করা উচিত। তাছাড়া অনুমোদিত বিক্রয়কেন্দ্র ছাড়া অন্য কোনো স্থান বা ব্যক্তির কাছ থেকে মোবাইল হ্যান্ডসেট ক্রয় না করা। পুরাতন মোবাইল হ্যান্ডসেট ক্রয় না করা। চিকিৎসা করার টাকা নেই তাই রাস্তায় দাঁড়িয়ে মোবাইল বিক্রি করতে চাওয়া ব্যক্তির কাছ থেকে হ্যান্ডসেট ক্রয় না করা। মোবাইলের পূর্ণাঙ্গ তথ্য সম্বলিত রশিদ ছাড়া মোবাইল হ্যান্ডসেট ক্রয় না করা। পাঞ্জাবির পকেটে মোবাইল হ্যান্ডসেট না রাখা। মোবাইল হ্যান্ডসেট চুরি হলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে হারানোর জিডি না করে চুরির মামলা করা। ফোন লকে স্ট্রং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা।


ভারতের লোকসভায় বিজয়ী এনডিএ জোটকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিনন্দন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজয়ী এনডিএ জোটকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের নির্বাচনে এনডিএ জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় আমরা তাদের অভিনন্দন জানাই। আমরা ইন্ডিয়া জোটকেও অভিনন্দন জানাই, তারা ভালো ফলাফল করেছে। সেই সঙ্গে ভারতের জনগণকেও অভিনন্দন। তারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখেছে, এ জন্য তাদের অভিনন্দন জানাই।’

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. মো. নজরুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ভারতের নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে আন্তরিকতাপূর্ণ, হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল, আশা করি আগামীতেও তা অব্যাহত থাকবে।’

মন্ত্রী হাছান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ। ভারতের সরকার, জনগণ যেভাবে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, ভারতের সেনাবাহিনী যেভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রক্ত ঝরিয়েছে, এর সঙ্গে অন্য কোনো সম্পর্কের তুলনা হয় না। আর আমাদের বিদেশ নীতি হচ্ছে, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’। ফলে এক দেশের সঙ্গে সম্পর্ক অন্য দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলে না।

দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলোতে আলোচনা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, গত ফেব্রুয়ারিতে আমার ভারত সফরে কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আরও কিছু বিষয়ে আলোচনার জন্য ভারতের নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করা প্রয়োজন ছিল। শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরে সেসব বিষয়ে আলোচনা হবে।

তিস্তা চুক্তির সম্ভাব্যতা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ভারতের আগের সরকারই তো আবার নতুন করে সরকার গঠন হতে যাচ্ছে। সুতরাং কোনো বিষয়ে নীতিগত পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা খুবই কম। পানির ন্যায্য হিস্যা অনুযায়ী তিস্তা চুক্তির বিষয়ে দুই দেশের যথেষ্ট আন্তরিকতা রয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৃক্ষরোপণ

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন উপলক্ষে আজ দুপুরে নিজ মন্ত্রণালয়ের উদ্যানে ফলদ ও ফুলের গাছ রোপণ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পরিবেশবিদ ড. হাছান মাহমুদ।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রথম ও টানা এক দশক পরিবেশবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী হাছান মাহমুদ দিবসটি উপলক্ষে একটি পলাশ ফুল ও বেল গাছ নিজ হাতে রোপণ করেন। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সামুদ্রিক বিষয়ক ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম, অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. মো. নজরুল ইসলাম, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সমন্বয়ক আফ্রিকা উইংয়ের মহাপরিচালক এ এফ এম জাহিদুল ইসলামসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাক্ষাৎ

বুধবার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত নেতারা। এ সময় মন্ত্রী নতুন কমিটিকে শুভেচ্ছা জানান। হৃদ্যতাপূর্ণ মতবিনিময়ে সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ডিপজল ড. হাছান মাহমুদকে এর অব্যবহিত পূর্বে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী থাকাকালে চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন, দেশি শিল্পীদের পৃষ্ঠপোষকতাদানের জন্য বিদেশি শিল্পী ও মডেলদের নিয়ে চিত্রনির্মাণে বিশেষ করারোপ প্রবর্তনের কথা স্মরণ করে শিল্পী সমাজের কৃতজ্ঞতা জানান।

আইএফআরসি প্রেসিডেন্ট ও ইউনিসেফ প্রতিনিধির সাক্ষাৎ

এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকা সফররত দি ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট কেট ফোর্বস ও বাংলাদেশে ইউনিসেফ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট। বুধবার মন্ত্রণালয়ে যথাক্রমে সকালে ও অপরাহ্নে দুই বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যা এবং সংশ্লিষ্ট জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে কার্যক্রম ও নতুন উদ্যোগের ওপর আলোকপাত করেন তারা।


চার দিনের সফরে পাবনায় যাবেন রাষ্ট্রপতি 

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আগামী ৯ জুন চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নিজ জেলা পাবনায় যাবেন। পাবনার জেলা প্রশাসক মু. আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রাষ্ট্রপতির প্রটোকল অফিসার মো. মামুনুল হক স্বাক্ষরিত সফরসূচি থেকে জানা গেছে, ৯ জুন দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে ঢাকা থেকে রাষ্ট্রপতি হেলিকপ্টার যোগে পাবনায় পৌঁছবেন। সেখান থেকে সার্কিট হাউসে পৌঁছে গার্ড অব অনার শেষে বিশ্রাম নেবেন এবং রাতযাপন করবেন।

পরদিন ১০ জুন বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে পাবনার সরকারি চাকরিজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। ১১ জুন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবেন।

রাষ্ট্রপতি ১২ জুন দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে পাবনা থেকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। এদিকে রাষ্ট্রপতির পাবনা সফরকে কেন্দ্র করে বরাবরের মতোই জেলাজুড়ে চলছে আনন্দ উৎসব। রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানিয়ে পাবনা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যানার-ফেস্টুন টাঙাচ্ছেন নেতাকর্মীরা।

দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত বছর প্রথম পাবনায় সফরে গেলে তাকে ১৬ মে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে স্মরণকালের বৃহত্তম নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে রাষ্ট্রপতি আরও দুবার নিজ জেলা সফরে যান। শেষবার তিনি বহুল কাঙ্ক্ষিত পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী বলেন, রাষ্ট্রপতির পাবনা সফরকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বস্তরের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।

পাবনার জেলা প্রশাসক মুহা. আসাদুজ্জামান বলেন, রাষ্ট্রপতির পাবনা সফরকে ঘিরে ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। তার চতুর্থবারের মতো নিজ জেলা পাবনা সফর যাতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় সেজন্য প্রশাসন তৎপর রয়েছে।


ক্ষতিপূরণ পাবেন মালয়েশিয়া যেতে না পারা শ্রমিকরা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ভিসা পাওয়ার পরও মালয়েশিয়া যেতে না পেরে শ্রমিকরা যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী। সেইসঙ্গে এ ঘটনার জন্য দায়ীদের ছাড় দেওয়া হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

আজ বুধবার ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাশিমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের যে এগ্রিমেন্ট ছিল, তাতে (মালয়েশিয়ায় প্রবেশের) শেষ তারিখ ছিল ৩১ মে। সেটা ফুলফিল করতে গিয়ে মালয়েশিয়ান সরকারও চেষ্টা করেছে, আমরাও চেষ্টা করেছি। আমাদের প্রায় ১৭ হাজার মানুষের ভিসা ইস্যু হয়েছে। হাইকমিশনের মাধ্যমে আমরা আপিল করেছি, অন্ততপক্ষে যে ১৭ হাজার মানুষ ভিসা পেয়েছে, তাদের মালয়েশিয়ায় প্রবেশ ও কাজের সুযোগ দেওয়ার জন্য। আমরা আশা করছি, আমাদের অনুরোধ তারা রক্ষা করার চেষ্টা করবে।’

আগামী সাত দিনের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দেবে বলেও জানান তিনি।

মালয়েশিয়ার হাইকমিশন আজও বলেছেন, তারা সময়সীমা বাড়াবে না- এ ব্যাপারে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বলেছে। আমরা অনুরোধ করেছি। কারণ আমাদের গরিব যারা মালয়েশিয়ায় চাকরির জন্য অর্থ ব্যয় করেছে, তারা যাতে যেতে পারেন।

‘আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে একটি ছয় সদস্যের তদন্ত দল গঠন করেছি। কমিটি বের করবে তারা কোন কারণে যেতে পারেনি, কী সমস্যা ছিল, কাদের কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। কমিটির মাধ্যমে যাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট আসবে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব’- বললেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমরা আপিল করেছি যাদের ভিসা আছে তাদের মালয়েশিয়া যাওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য। তদন্ত চলছে, কাদের দ্বারা এ সমস্যা হচ্ছে আমরা খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। সাত দিনের ভেতর রিপোর্ট দেওয়া হবে। যাদের বিএমটিএ আছে কিংবা ইভিসা আছে তাদের পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তালিকায় নাম এলে সবাই ক্ষতিপূরণ পাবে। এ ছাড়াও বায়রা যে পাঁচ তালিকা বলেছে তা বায়রার কোন তথ্যের ভিত্তিতে পাঁচ হাজার বলছে সেটি নিয়ে তারা বিস্তারিত বলবে। মন্ত্রণালয়ের হিসাবে সেটি ১৭ হাজার।’


‘প্রবৃদ্ধি অর্জনে মেরিটাইম শিক্ষা ও সুনীল অর্থনীতির সম্পর্ক রয়েছে’

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের মেরিটাইম শিক্ষাব্যবস্থা ও সুনীল অর্থনীতি’ শীর্ষক সেমিনারে বুধবার বক্তব্য দেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ৫ জুন, ২০২৪ ১৯:৫৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে মেরিটাইম শিক্ষা ও সুনীল অর্থনীতির নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।

আজ বুধবার রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশনে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘বাংলাদেশের মেরিটাইম শিক্ষাব্যবস্থা ও সুনীল অর্থনীতি’ শীর্ষক সেমিনারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সমুদ্রে বাংলাদেশের অধিকার, আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা, সমুদ্র আইন, সমুদ্রে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল, রাজনৈতিক সমুদ্রসীমা, সমুদ্রের গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা লাভের জন্য মেরিটাইম শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেরিন অ্যাকাডেমির থেকে প্রশিক্ষিত ক্যাডেটরা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমুদ্রগামী জাহাজ ও জাহাজ সংশ্লিষ্ট চাকরিতে নিয়োজিত থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভূমিকা রাখছেন। নাবিকগণ সমুদ্রগামী জাহাজে চাকরির পাশাপাশি জাহাজ নির্মাণ ও মেরামত, বন্দর ব্যবস্থাপনা, বন্দর পরিচালনা ও প্রশিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশায় সম্পৃক্ত হয়ে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশি সীফেয়ারারদের চাহিদার প্রেক্ষিতে ২০২১ সালে পাবনা, বরিশাল, সিলেট এবং রংপুরে চারটি মেরিন অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হয়। দেশের প্রতিটি বিভাগে মেরিন অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। মেরিটাইম সেক্টরের বিপুল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে নাবিকদের (রেটিং) প্রশিক্ষণের জন্য দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, রাজশাহী ও মেহেরপুর জেলায় নতুন চারটি ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মেরিনারদের উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার বিচক্ষণতায় চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মেরিন অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি) প্রতিষ্ঠা করেন ও বিএসসির জন্য ১৯টি জাহাজ সংগ্রহ করেন। দেশের নৌপরিবহন ও মেরিটাইম খাতে বিদেশি নাবিকের স্থলে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত আন্তর্জাতিক মানের দেশি নাবিক তৈরির লক্ষ্যে জাতির পিতা তার প্রতিষ্ঠিত মেরিন অ্যাকাডেমির মানোন্নয়নের জন্য ব্রিটিশ কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশ মেরিন অ্যাকাডেমির উন্নয়ন পরিকল্পনা, ১৯৭৩ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করেন।

তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশনায় এ অ্যাকাডেমির ৪৮তম ব্যাচ থেকে নারী ক্যাডেট ভর্তি করা হচ্ছে এবং প্রশিক্ষিত নারী ক্যাডেটগণ সুনামের সঙ্গে বিভিন্ন সমুদ্রগামী জাহাজে কর্মরত রয়েছেন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার পরিচালনার সময়ে মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা জয় করেন। এর ফলে ২শ’ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল ও চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৪৫ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে সব ধরনের প্রাণিজ-অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব দেলোয়ারা বেগম। বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান ড. এ কে এম মতিউর রহমান অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।


নরেন্দ্র মোদিকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ছবি
আপডেটেড ৫ জুন, ২০২৪ ১৯:৩৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট-এনডিএর বিজয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বুধবার মোদিকে পাঠানো চিঠিতে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৮তম লোকসভা নির্বাচনে এনডিএর নিরঙ্কুশ বিজয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আমি আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’

‘বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের নেতা হিসেবে আপনি ভারতের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা বহন করেন। আপনার দৃঢ়প্রত্যয়ী বিজয় নেতৃত্ব, প্রতিশ্রুতি এবং দেশের প্রতি আস্থা ও আত্মবিশ্বাস বাড়ায়,’ যোগ করে শেখ হাসিনা।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সব ক্ষেত্রেই অব্যাহত থাকবে। কারণ, আপনি টানা তৃতীয় মেয়াদে পুনর্নবীকরণ ম্যান্ডেট নিয়ে যাত্রা শুরু করবেন। আমি আপনাকে আশ্বস্ত করি, ভারতের বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশ দুদেশের জনগণের উন্নতির পাশাপাশি একটি সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ অঞ্চলের জন্য কাজ করে যাবে।’

আগামী দিনে মোদির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য উন্মুখ বলেও জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।

এবারের নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে জয়ী হয়েছে ২৪০টি আসনে। তাতে অবশ্য সরকার গঠনে সমস্যা হবে না দলটির। কারণ, বিজেপির নেতৃত্বধীন ন্যাশানাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ভুক্ত দলগুলো সম্মিলিতভাবে জয়ী হয়েছে মোট ৫৩টি আসনে। ফলে দল এবং জোটের মোট ২৯৩ জন এমপি নিয়ে অনায়াসেই সরকার গঠন করতে পারবে বিজেপি।

তবে ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিজেপির যে ফলাফল ছিল, তার তুলনায় এবারের ফলাফল খানিকটা হতাশাজনক। কারণ, ২০১৪ সালে লোকসভার ২৮২টি আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। ২০১৯ সালের নির্বাচনে দলটির ফলাফল ছিল আরও ভালো। সেবার ৩০৩টি আসনে নির্বাচিত হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। অর্থাৎ, গত দু’বার চাইলে একাই সরকার গঠন করতে পারত বিজেপি, জোটের সমর্থনের প্রয়োজন পড়ত না।

কিন্তু এবার জোটের সদস্যদের সমর্থন ব্যতীত সরকার গঠন করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না দলটির পক্ষে। এনডিএ জোটের কোনো দল যদি এবার জোট ত্যাগ করে, তাহলে বড় সমস্যায় পড়বে বিজেপি।


একদিনের জন্য আপিল বিভাগের এজলাসের ছবি তোলার সুযোগ

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

একদিনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এজলাসের ছবি তোলার সুযোগ দিচ্ছেন প্রধান বিচারপতি।

আগামী ১০ জুন আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষের ছবি ওঠানো, ভিডিও ধারণ, এমনকি সরাসরি সম্প্রচার করার সুযোগ করে দিচ্ছেন প্রধান বিচারপতি। কারণ, ওইদিন বিভিন্ন সংস্কারসহ আধুনিকীকরণ করা এজলাস কক্ষে নতুন করে বিচারকাজ শুরু হবে।

এই উপলক্ষ্যে ১০ জুন বিকেল ৪টায় একটি বিশেষ অধিবেশনের আয়োজন করা হয়েছে। ওইদিন সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষ বেঞ্চ বিশেষ অধিবেশনে অংশগ্রহণ করবেন।

এই বিষয়ে আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সাংবাদিকদের আজ বুধবার বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির এজলাস কক্ষে পুনরায় বিচারিক কার্যক্রমের সূচনা উপলক্ষ্যে আগামী ১০ জুন সোমবার বিকেল ৪টায় একটি বিশেষ অধিবেশনের আয়োজন করা হয়েছে। অধিবেশনে সাংবাদিকরা প্রধান বিচারপতির এজলাস কক্ষে ক্যামেরাসহ প্রবেশ করবেন এবং খবর সংগ্রহ করবেন।’

কেবল ওই দিনের জন্যই ক্যামেরাসহ প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হলো বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি জানান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিগণের সমন্বয়ে গঠিত একটি আনুষ্ঠানিক বিশেষ অধিবেশনে অংশগ্রহণ করবেন।

উক্ত অধিবেশনে গণমাধ্যম প্রধানবিচারপতির এজলাস কক্ষে ক্যামেরাসহ প্রবেশ করবেন এবং খবর সংগ্রহ করবেন। কেবল ওই দিনের জন্যই ক্যামেরারসহ প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হল। এই বিষয়ে গণসংযোগ কর্মকর্তা আরও বিস্তারিত জানাবেন।

উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট সূত্র জানায়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগসহ সব আদালত কক্ষের ছবি ওঠানো, ভিডিও করা দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রথমবারের মতো এই সুযোগ পেতে যাচ্ছে গণমাধ্যম।


বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা-গবেষণার গুণগতমান নিশ্চিত করার আহ্বান

বঙ্গভবনে জাবির অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আলম ও রাবির উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের সঙ্গে বুধবার পৃথকভাবে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

যুগোপযোগী শিক্ষা কার্যক্রমসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা ও গবেষণার গুণগতমান নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বুধবার বঙ্গভবনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আলম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের সঙ্গে পৃথকভাবে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতি এই আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে জ্ঞান অর্জনের উন্মুক্ত ক্ষেত্র। শিক্ষার্থীরা যাতে সমসাময়িক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে জ্ঞান অর্জন করতে পারে এবং প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের নিজেদেরকে যোগ্য প্রমাণ করতে পারে শিক্ষা কার্যক্রমকে সেভাবে সাজাতে হবে।’

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘গবেষণার ক্ষেত্রে সংখ্যার চেয়ে গুণগতমানকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এই গবেষণার সুফল যাতে সকলের দ্বারে পৌঁছানো যায় সে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।’

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন গণমাধ্যমকে জানান, ‘আনুষ্ঠানিক শিক্ষাক্রমের পাশাপাশি অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য।’

বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যরা নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষা কার্যক্রম ও বিভিন্ন পরিকল্পনার বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তিন সদস্যের এক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।

এই সময় রাবির ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষা কার্যক্রমের পরিকল্পনার একটি কপি রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর করেন। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক ছাত্র। এই সময় উপাচার্য রাষ্ট্রপতিকে আগামী নভেম্বর অনুষ্ঠাতব্য রাবির কনভোকেশনে যোগদানের আমন্ত্রণ জানান।

তিনি শিক্ষা কার্যক্রম সাজানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অংশীজনেরও মতামতের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।


লক্ষ লক্ষ বৃক্ষ কেটে ফেলে দেয় জামায়াত-বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ গাছ লাগায় আর বিএনপি তা ধ্বংস করে। আমাদের বৃক্ষরোপণ এবং প্রকৃতি সংরক্ষণ ও উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট এবং তার পরবর্তী দুই বছর এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়নি। ২০১৩ সালে সরকার উৎখাতের আন্দোলনের নামে মানুষকে যেমন হত্যা করা হয় তেমনি বাস, ট্রাক, গাড়ি, রেল, লঞ্চ, সেগুলো আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় আর বৃক্ষ নিধন করা হয়। লক্ষ লক্ষ বৃক্ষ কেটে ফেলে দেয় জামায়াত-বিএনপি। আমরা যেখানে গাছ লাগিয়েছে সেগুলো তারা ধ্বংস করেছে। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্যের বিষয়।’

আজ বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা-২০২৪ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি পালনের জন্য ১৯৮৪ সালে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নেয় এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়। মূল দল আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনের প্রত্যেকটা সদস্য বৃক্ষরোপণ করবে। আমাদের নির্দেশ ছিল এবং সেই নির্দেশনা আমরা এখনও পালন করে যাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের মানুষকে রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। জলবায়ু পরিবর্তনের যে বিরূপ প্রভাব, তা থেকে দেশকে আমরা মুক্ত করতে চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। যে পদক্ষেপগুলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু নিয়েছিলেন। জাতির পিতা ১৯৭২ সালে পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে একটা সবুজ আচ্ছন্ন পরিবেশ তৈরির পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ১৯৭২ সালের ১৬ জুলাই তিনি সেখানে বৃক্ষরোপণ সপ্তাহ উদ্‌যাপন করেন। বৃক্ষরোপণের জন্য মানুষকে ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করেন। কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকতে যে ঝাউ বন সেটি জাতির পিতার উদ্যোগে রোপণ করা হয়। তা ছাড়া আমাদের দ্বীপ অঞ্চল, বিশেষ করে চরাঞ্চলগুলোতে ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ করা এবং সেখানে প্রত্যেক প্রজাতির পশুপাখি জোড়ায় জোড়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়। সেটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শুরু করে দিয়েছিলেন।


বিশ্ব পরিবেশ দিবস আজ

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ৫ জুন, ২০২৪ ০০:০৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে।

দিবসটি উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনের উদ্যোগে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘করবো ভূমি পুনরুদ্ধার, রুখবো মরুময়তা।’

এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন উপলক্ষে সরকারিভাবে নেওয়া কর্মসূচি সর্ম্পকে জানাতে গতকাল দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে নেওয়া কর্মসূচি সম্পর্কে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

সাবের হোসেন চৌধুরী জানান, বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে পরিবেশ মেলা ও বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করবেন। পলাশ ও বেলগাছের দুটি চারা রোপণের মাধ্যমে জাতীয় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন তিনি।

তিনি বলেন, শেরেবাংলা নগরের এই পরিবেশ মেলা চলবে ৫ থেকে ১১ জুন পর্যন্ত এবং বৃক্ষমেলা চলবে ৫ থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন মেলা চলবে সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।

মন্ত্রী বলেন, অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড কনজারভেশন ২০২৩ ও ২০২৪, বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০২২ ও ২০২৩ এবং সামাজিক বনায়নে উপকারভোগীদের মধ্যে লভ্যাংশের চেক বিতরণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও জাতীয়, বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বৃক্ষমেলার আয়োজন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৃক্ষের চারা বিতরণ এবং মোবাইল ফোন অপারেটরদের মাধ্যমে খুদে বার্তা পাঠানো হবে।

সাবের চৌধুরী বলেন, দেশের সব জেলা ও উপজেলায় এবং ঢাকা মহানগরীর একশটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন করা হচ্ছে।

মন্ত্রী জানান, পরিবেশ দিবস উপলক্ষে শিশু চিত্রাঙ্কন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিতর্ক ও স্লোগান প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হবে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৃক্ষের চারা বিতরণ করা হবে।

এ উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে পরিবেশ দিবসের তাৎপর্যভিত্তিক অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় সংবাদপত্রে ক্রোড়পত্র এবং পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে স্মরণিকা ও বুকলেট প্রকাশ করা হবে।

এ ছাড়াও রোপণ করা বৃক্ষের যত্ন বৃদ্ধির জন্য এবারের জাতীয় বৃক্ষমেলার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘বৃক্ষ দিয়ে সাজাই দেশ, সমৃদ্ধ করি বাংলাদেশ।’


banner close