বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ সুরক্ষিত রাখার জন্য সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে শিশুরা। তারা বলেছে, বর্তমান সরকার সফলতার সঙ্গে অপুষ্টি কমিয়ে এবং টিকাদানের মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে শিশুদের সুরক্ষিত করে লাখ লাখ শিশুর মৃত্যু ঠেকিয়েছে। তবে এই অগ্রগতি বজায় রাখার জন্য সরকারের আরও বেশি বিনিয়োগ করা প্রয়োজন।
বুধবার ইউনিসেফ ও শিশু অধিকারবিষয়ক সংসদীয় ককাসের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২৩-২০২৪ এবং শিশু অধিকার’ শীর্ষক ব্রিফিংয়ে এই দাবি জানানো হয়।
খুলনা থেকে আসা ১৪ বছর বয়সী ‘শিশু সাংবাদিক’ মাইশা আঞ্জুম আরিফা বলে, ‘আমি অনেক শিশুর সঙ্গে কথা বলেছি, যাদের দিনে তিন বেলা খাবারের জন্য কাজ করতে হয়। তাদের বেশির ভাগই আর স্কুলে যায় না। এ ছাড়া অনেকে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও দিনের পর দিন কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে।’
সে জানায়, গত কয়েক দশক ধরে শিশুদের জন্য সরকারি অর্থায়নের কল্যাণে বাংলাদেশ সফলতার সঙ্গে অপুষ্টি কমিয়ে ও টিকাদানের মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে সুরক্ষিত করে লাখ লাখ শিশুর মৃত্যু ঠেকিয়েছে। তবে এই অগ্রগতি বজায় রাখার জন্য সরকারের আরও লক্ষ্যকেন্দ্রিক বিনিয়োগ প্রয়োজন।
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও শিশু অধিকারবিষয়ক সংসদীয় ককাসের চেয়ার শামসুল হক টুকু বলেন, ‘শিশুদের কথা শুনে এটা পরিষ্কার যে, জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের আরও অনেক কিছু করার আছে। আমি তাদের অধিকার সমুন্নত রাখতে ও তাদের মতামত তুলে ধরতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় আনুপাতিকভাবে কমেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, শিশুদের অধিকার পূরণে এবং তাদের সার্বিক উন্নয়নে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অগ্রগতি করেছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক খাতে বিনিয়োগ বজায় না থাকলে এই অগ্রগতি পিছিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
ইউনিসেফের বিশ্লেষণ তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতের প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ এ বছর জিডিপির শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশে নেমে গেছে, যা গত অর্থবছর ছিল শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ। সর্বজনীন স্বাস্থ্য কাভারেজ বা সবাইকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ২ শতাংশ বাড়ানোর দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রয়োজন হবে।
শিশুদের স্বার্থে অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য সরকার ও শিশু অধিকারবিষয়ক সংসদীয় ককাসের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেলডন ইয়েট তার বক্তব্য শেষ করেন। তিনি বলেন, সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। বাজেটে শিশুদের অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য ইউনিসেফ সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানায়।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, পাহাড় সুস্থ থাকলে পৃথিবী সুস্থ থাকবে, তাই পাহাড় পর্বতকে ভালো রাখতে বিশ্ববাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
আজ বুধবার নেপালের কাঠমান্ডুর চন্দ্রগিরি হিল রিসোর্টে অনুষ্ঠানরত ইন্টারন্যাশনাল এক্সপার্ট ডায়লগ অন মাউন্টেইন, পিপল অ্যান্ড ক্লাইমেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘হিন্দুকুশ হিমালয় পর্বতমালা জলবায়ু পরিবর্তনের গ্রাউন্ড জিরো। যদি বুঝতে চান যে, পৃথিবীতে কী ঘটতে চলেছে, দেখতে হবে আজ হিমালয়ে কী ঘটছে। এটি কেবল পাহাড় নয়, সুপেয় পানির উৎস। হিমালয়ের সমস্ত হিমবাহ গলে গেলে আমরা কী করব? সুপেয় পানি না থাকলে বাংলাদেশের মানুষ বাঁচবে কী করে? তাই পাহাড় রক্ষায় বৈশ্বিক নেতৃত্বকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে।’
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, কার্বণ নিঃসরণ বন্ধ না করলে, অভিযোজন ও প্রশমন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আমরা যা কিছু করার চেষ্টা করি, তা যথেষ্ট হবে না। অভিযোজন ও স্থিতিস্থাপকতার সীমা রয়েছে। বাংলাদেশ ও নেপালের মতো দেশ আগামীকাল নেটজিরো অর্জন করলেও বৈশ্বিক নির্গমনে কোনও পার্থক্য ঘটবে না, কারণ জি-২০ দেশগুলি বিশ্বব্যাপী নির্গমনের ৮১ শতাংশের জন্য দায়ি।
মন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে বাংলাদেশ প্রচুর ব্যয় করছে। উন্নত দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানিতে বছরে সাত ট্রিলিয়ন ডলার ভর্তুকি দিতে পারে, কিন্তু জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনাগুলিতে অর্থায়ন করে না। এই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বন্ধ করতে হবে। আমাদের এখন দ্রুত পদক্ষেপ দরকার, এটা পৃথিবীর সমস্যা। বিশ্ব নেতাদের সদিচ্ছা প্রকাশ করতে হবে।’
সাবের চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমূদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে গেলে বাংলাদেশে লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত হবে। লবণাক্ততার অনুপ্রবেশ আমাদের উৎপাদনশীলতাকে প্রভাবিত করছে। বাংলাদেশের উত্তরে হিমবাহ গলছে এবং দক্ষিণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। আমরা খরা, বন্যাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের সকল নেতিবাচক প্রভাব অনুভব করছি।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল, নেপাল সরকারের বন ও পরিবেশমন্ত্রী নওল কিশোর সাহ সুরির সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। ভুটানের মন্ত্রী, ইউএনএফসিসিসি সাবসিডিয়ারি বডির চেয়ারম্যান নেপালে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, কিরগিজস্তানের রাষ্ট্রপতির বিশেষ প্রতিনিধি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের প্রতিনিধিবৃন্দ বক্তব্য দেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নেপাল সরকারের মুখ্য সচিব ড. বৈকুণ্ঠ আরিয়াল।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার জন্য বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ বুধবার বিকেলে বঙ্গভবনে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের ‘শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা ২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতাদের উদ্দেশ্য রাষ্ট্রপ্রধান এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন , ‘মানুষকে আলোর পথ দেখাবেন। দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করুন। শুধু নিজে বা পরিবারকে নিয়ে ভালো থাকার চিন্তা না করে সকলকে নিয়ে ভালো থাকার চিন্তা করবেন।’
বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে মিশে আছে হাজার বছরের বৌদ্ধ ঐতিহ্য উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বিশ্বের সকল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদেরকে মৈত্রীময় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, ‘মহামতি বুদ্ধ স্থান-কাল-পাত্রের উর্ধ্বে উঠে পৃথিবীর সকল জীবের কল্যাণ ও সুখ কামনা করেছেন।’
বৌদ্ধ নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিময় বাংলাদেশ গড়তে আপনারা বুদ্ধের সুমহান শিক্ষা ও আদর্শকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিবেন।
‘সব ধর্মই মানুষের কল্যাণের কথা বলে। মানুষকে শান্তি ও সৌহার্দের শিক্ষা দেয়। প্রতিটি ধর্ম থেকে যা উৎকৃষ্ট তা গ্রহণ করতে হবে এবং নিকৃষ্ট পরিত্যাগ করতে হবে’-যোগ করে বললেন রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, ‘মানুষের কল্যাণের জনাই ধর্ম, অকল্যাণের জন্য নয়। মনে রাখতে হবে ধর্ম উপলব্ধির বিষয়, তর্কের নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ বিশ্বের বহুস্থানে মানবাধিকার ভূলুষ্ঠিত হচ্ছে এবং লোভ-লালসা, ঈর্ষা, প্রতিহিংসার ন্যায় কু-প্রবৃত্তি সমাজের শোষণ-বঞ্চনা বাড়াচ্ছে। দেশে দেশে যুদ্ধবিগ্রহ ও বিশ্ব অর্থনীতিকে ভারসাম্যহীন করে তুলেছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আর্থ-সামাজিক খাতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।’
কঠিন এ সময়ে, রাষ্ট্রপতি সকলকে একে অপরের পাশে দাঁড়াবার ও আহ্বান জানান।
বঙ্গভবনে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব বৌদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপনে রাষ্ট্রপতি ও তার স্ত্রী ডা. রেবেকা সুলতানা বৌদ্ধ নেতাদের শুভেচ্ছা জানান। বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারাও বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতিকে ফুলের তোড়া উপহার দেন। ঢাকাসহ সারা দেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে এ দিবসটি উদযাপন করেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বঙ্গভবনে আটশ’রও বেশি অতিথিসহ এক হাজারেরও বেশি ব্যক্তি যোগ দেন । ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ এবং বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে ‘ইউসেফ বাংলাদেশ’ কাজ করে যাচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কারিগরি শিক্ষা ও শোভন কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার জন্য ইউসেফ নামক কর্মজীবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন।
আজ শাহবাগে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেসা মুজিব কনভেনশন হলে ইউসেফের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্পিকার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের উন্নয়ন, সুরক্ষা ও বিকাশের পাশাপাশি মানব সম্পদ উন্নয়নে কাজ করে চলেছেন। যুব সমাজকে কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানে উদ্বুদ্ধ করে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডকে কাজে লাগাতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হয়েছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও সমান সুযোগ প্রদান করতে হবে।’
তিনি বলেন, উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তরুণ প্রজন্ম নিজেদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্য নিয়ে ইউসেফ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। অস্বচ্ছল পরিবারের সুবিধা বঞ্চিত শিশুরা আজ কর্মসংস্থানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন- এটাই ইউসেফের সফলতা।
ইউসেফ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মো আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন নির্বাহী পরিচালক ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মূখ্যসচিব ড. মো. আব্দুল করিম; ইউসেফ বোর্ড অফ গভর্নরসের সাবেক চেয়ারম্যান পারভীন মাহমুদ; ইউসেফ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য জেবা রশীদ চৌধুরী; এফবিসিসিআই এর প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম; সম্মানিত অতিথি হিসেবে বাংলাদেশে কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকলস; এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি।
এসময় স্পিকার ইউসেফ এর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচী সম্প্রসারণে সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং ইউসেফের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধাননগরের নিউটাউন এলাকায় খুন হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের হত্যাকাণ্ড দুই রাষ্ট্রের (বাংলাদেশ-ভারত) বিষয় নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের একথা বলেন।
এমপি হত্যার ঘটনায় ভারতের পক্ষ থেকে কোনো দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সুতরাং এটি দুই রাষ্ট্রের বিষয় নয়।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত দুঃখজনক, মর্মান্তিক এবং অনভিপ্রেত। যেই ফ্ল্যাটে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছিল, কলকাতা পুলিশ সেখানে ঢুকেছে কিন্তু তারা কোনো মরদেহ পাননি। তবে হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এটি নিয়ে বর্তমানে তদন্ত চলছে। কেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে সেটি নিয়ে বিস্তারিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানাবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের মিশনের মাধ্যমে নিয়মিত খোঁজ রাখছি। মিশন কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও যোগাযোগ রাখছে। বিষয়টা তো তদন্তাধীন। তাই এর চেয়ে বেশি কিছু আমি বলতে পারছি না।’
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে র্যাবের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে জার্মানভিত্তিক সংবাদসংস্থা ডয়েচেভেলের প্রতিবেদন নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পুরোটা না দেখে আমি এটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে চাই না। প্রথম আমাকে পুরোটা দেখতে হবে। এরপর মন্তব্য করা যাবে।’
সরকার সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করায় নিষেধাজ্ঞা এসেছে বলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য দিয়েছেন সে প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘উনার (জেনারেল আজিজ) উপর যে আইনের মাধ্যমে বা যে কারণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে সেটি তো দুর্নীতির কারণে। এটি পার্সোনাল দায়, ইনস্টিটিউশনাল কোনো বিষয় নয়।’
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, এখন মানুষ তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আদালতে মামলা করে। ফলে মামলা জট ও দীর্ঘসূত্রিতা সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে সাংবাদিকরা সচেতনতা সৃষ্টি করলে এসব মামলা কমে যাবে।
আজ বুধবার লালমনিরহাটে এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আইন পেশাকে দেশের কল্যাণে কাজে লাগাতে হবে। আইন পেশা একটি মহান পেশা। দেশের কল্যাণে এ পেশাকে কাজে লাগাতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলা যেন নিষ্পত্তি হয় সে দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। মামলার জট কমাতে আইনজীবীদের ভূমিকা রয়েছে। এজন্য সাধারণ মানুষকে আইনি পরামর্শ দিয়ে বোঝাতে হবে।’
জেলা আইনজীবী সমিতির আয়োজনে ও সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ইকবাল কবীর। এর আগে তিনি আদালত চত্বরে বিচার প্রার্থীদের বিশ্রামের জন্য ন্যায়কুঞ্জ উদ্বোধন করেন। এরপর চত্বরে গাছের চারা রোপণ করেন।
এ সময় আপিল বিভাগের বিচারপতি সাইফুল ইসলামসহ অন্যান্য বিচার বিভাগীয় প্রধান ও লালমনিরহাট জেলা ও দায়রা জজ মিজানুর রহমান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ, পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আকমল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসা নিতে গিয়ে হত্যার শিকার হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের মরদেহ কোথায় আছে তা জানেন না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আজ বুধবার রাজধনীর ধানমন্ডিতে নিজ বাসায় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘মরদেহ এখন কোথায় আছে তা আমরা এখনো জানতে পারিনি। আমাদের কাছে যে সংবাদ আছে, তার ভিত্তিতে কাজ করছি।’
এমপি হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এমপি আনার হত্যার সঙ্গে বাংলাদেশি কেউ জড়িত। তার হত্যায় দু’দেশের সম্পর্কে কোনো ক্ষত সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে অনেক কিছুই আমরা এখন বলব না। তদন্ত শেষ হলে আপনাদের অনেক কিছুই জানাবো। কবে খুন হয়েছে, কীভাবে খুন হয়েছে, কী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে তদন্ত শেষ হলে সব আপনাদের জানাবো।’
এর আগে, আজ বুধবার সকালে ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় যে, কোলকাতার নিউটাউন এলাকা থেকে এমপি আনারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অনেক ধোঁয়াশা তৈরি হলেও বেলা গড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও তথ্য বেরিয়ে আসে।
কোলকাতা পুলিশের বরাতে বিবিসি বাংলা আটক এক ট্যাক্সি ক্যাব চালাকের বরাতে বলে, এক সপ্তাহ আগে নিখোঁজ হওয়া বাংলাদেশের ঝিনাইদহের এমপি আনোয়ারুল আজীমকে হত্যা করা হয়েছে এবং মরদেহ খণ্ডবিখণ্ড করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসার জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যাওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যায় জড়িত মূলহোতাসহ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ।
আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানের পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই তথ্য জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আনোয়ারুল আজীমের হত্যাকাণ্ড আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ভারতীয় পুলিশ আমাদের জানিয়েছে। তবে, হত্যার কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। ঘটনার তদন্ত চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ঘটনার মূলহোতাসহ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। আমরা মিশনের মাধ্যমে সবকিছুর খোঁজ রাখছি। মিশন কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তদন্ত শেষে হত্যার মূল কারণ জানা যাবে।’
এর আগে, ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় গিয়ে উত্তরের বরানগরে বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলেন এমপি আনার। ১৩ মে তিনি কোনো একজনের সঙ্গে দেখা করতে বের হয়ে আর ফেরেননি।
সংসদ সদস্য এবং ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল আজিম আনারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে চিকিৎসার জন্য গিয়ে নিখোঁজের ছয়দিন পর কলকাতার একটি এলাকা থেকে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কর্মকর্তারা কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
কলকাতা পুলিশের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া একজন ক্যাবচালক জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ আগে নিখোঁজ হওয়া বাংলাদেশের ঝিনাইদহের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমকে হত্যা করা হয়েছে এবং মরদেহ দেহ খণ্ডবিখণ্ড করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১১ মে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার চিকিৎসার জন্য ভারতে যান।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা খচিত’ স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বিতরণ করা হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পরিচালক (জনসংযোগ) শরিফুল আলম আজ বুধবার এক বার্তায় বিষয়টি জানান।
বার্তায় বলা হয়, ‘আগামীকাল ২৩ মে, বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ১০৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার মাঝে বীর মুক্তিযোদ্ধা খচিত স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ করবেন। এ বিতরণ অনুষ্ঠানে সকল মাননীয় কমিশনার এবং সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।’
এর আগে, গত ৭ মে মঙ্গলবার বীর মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত স্মার্ট এনআইডি কার্ডটি (জাতীয় পরিচয়পত্র) তার কাছে হস্তান্তর করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে নতুন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, পরিচয়পত্র প্রদানকালে ইসির সচিব কমিশনের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। তিনি জানান, এখন থেকে পর্যায়ক্রমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত নতুন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে সরে গেলেও অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের জন্য তাদের শুল্কমুক্ত বাজার প্রবেশাধিকার সুবিধা অব্যাহত রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং-য়ের মধ্যে বৈঠকের পর আজ বুধবার এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বর্তমানে প্রায় ৪০০ কোটি ডলার, যা ১০ বছর আগেও ১০০ কোটি ডলারের কম ছিল। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য আরও গভীর ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে উভয় দেশ আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কৃষিজাত, প্রক্রিয়াজাত শিল্প, আইসিটি ও লজিস্টিক খাতে বিনিয়োগের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’
বৈঠকে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য কানেক্টিভিটির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক অবকাঠামো কানেক্টিভিটি প্রোগ্রাম নিয়ে আলোচনা হয়। ওই প্রোগ্রামে বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্যরাও অংশীদার হতে আগ্রহী বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়।
সমৃদ্ধশালী ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া একসঙ্গে কাজ করবে। দুদেশই চায় শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল, সমৃদ্ধশালী, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ভয়-ভীতিহীন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল।
যৌথ বিবৃতিতে দুদেশের মধ্যে ইন্দো-প্যাসিফিক কেন্দ্রিক সহযোগিতা, বাণিজ্য বৃদ্ধি, দক্ষিণ এশিয়াতে কানেক্টিভিটি সম্প্রসারণ, সমুদ্র নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানব পাচার রোধসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া উভয় দেশই ভারত মহাসাগরের অংশ। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘দুই দেশই এক অঞ্চল ও সমুদ্রের অংশ। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রের অখণ্ডতা এবং এই অঞ্চলে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার, সমুদ্র ও আকাশপথে চলাচলে স্বাধীনতা, এবং শান্তিপূর্ণ বিবাদ মীমাংসার বিষয়ে দুই মন্ত্রী তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।’
গাজায় চলমান চরম অমানবিক পরিস্থিতি নিয়ে উভয়পক্ষ উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সেখানে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সমর্থন ব্যক্ত করেন।
আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রের হাতে প্রতি বছর অনেক মানুষ মারা যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দু’দেশ। অবৈধ ও অনিরাপদ মানব পাচার বন্ধের বিষয়ে নিরাপদ অভিবাসনের গুরুত্বকে উভয়পক্ষই স্বীকার করে নিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, অস্ট্রেলিয়া প্রস্তাব করেছে, তাদের কোস্টগার্ডের কমান্ডার এ বিষয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশ সফর করবেন।
ভারতে গিয়ে নিখোঁজ বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের মরদেহ কলকাতার অভিজাত এলাকা নিউটাউন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আজ বুধবার সকালে গণমাধ্যমকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের এক ডিআইজির উদ্বৃতি দিয়ে আমাদের পুলিশও বলেছে আনোয়ারুল আজিমের মরদেহ পাওয়া গেছে কলকাতায়। বিষয়টি নিয়ে এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত তথ্য নেই আমাদের কাছে। আমাদের আইজি ডিটেইলস খবর নিচ্ছে। সব নিশ্চিত হয়ে গণমাধ্যমকে জানাব আমি।’
আনোয়ারুল আজীমের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আব্দুর রউফ জানিয়েছেন, এমপি আনারকে হত্যা করা হয়েছে কি না সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে।
সীমান্ত এলাকা ঝিনাইদহ-৪ আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য (এমপি) ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন আনোয়ারুল আজীম আনার।
গত ১৯ মে আনোয়ারুল আজীমের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আব্দুর রউফ বলেছিলেন, ১১ মে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। কিন্তু এরপর ১৬ মে তার সঙ্গে শেষ কথা হয়েছে।
দেশের ছয়টি জেলার ওপর দিয়ে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের জন্য দেয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া, ময়মনসিংহ জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানিয়েছেন, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে বুধবার অথবা পরদিন বৃহস্পতিবার লঘুচাপ তৈরি হতে পারে। তিনি জানান, এ লঘুচাপ ঘনীভূত হলে ডিপ্রেশন তৈরি হবে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কিনা, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
লঘুচাপ থেকে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে এটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও পরে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলেও জানান তিনি।
দেশের সাত জেলায় শুরু হওয়া তাপপ্রবাহ আজ বুধবার আরও কয়েকটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। সারা দেশের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। আগামী দু–এক দিন উষ্ণতার এ দাপট চলতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদেরা বলেন, ‘আজকের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে। এটি আরও শক্তিশালী ও ঘনীভূত হতে পারে। তবে এটি নিম্নচাপ হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত করেনি আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ জন্য আরও দু–এক দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে তারা। তবে ঘূর্ণিঝড় বা নিম্নচাপ যা–ই হোক না কেন, ২৫ মে সারা দেশে বৃষ্টি শুরু হতে পারে। মাঝারি থেকে ভারী ওই বৃষ্টি দুই থেকে তিন দিন চলতে পারে।
এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তা আজকের মধ্যে লঘুচাপে পরিণত হয়ে আরও শক্তিশালী হতে পারে। সাধারণত সাগরে এ ধরনের পরিস্থিতি চলার সময় ভূখণ্ড থেকে মেঘমালা ওই লঘুচাপের কেন্দ্রের দিকে চলে যায়। ফলে দেশের ভূখণ্ডে মেঘ কমে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। আগামী দু–এক দিন তাপমাত্রা বেড়ে ২৫ মে থেকে আবারও বৃষ্টি বাড়তে পারে।’
আবহাওয়াবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, ২৫ থেকে ২৬ মের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য–উপাত্ত ও বাতাসের গতিমুখ অনুযায়ী এটি বাংলাদেশ বা ভারতের উপকূলের দিকে আসার আশঙ্কা বেশি। তবে প্রাথমিক অবস্থায় এ ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের গতিমুখের বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে বলা যায় না। এ জন্য এটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো চুয়াডাঙ্গায় ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ফেনী, কক্সবাজার ও যশোরে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর আশপাশের জেলাগুলোয় আজ তাপপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, সাধারণত জুনের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করে। ওই বায়ুর সঙ্গে আসা মেঘের কারণে সারা দেশে বৃষ্টি শুরু হয়। মৌসুমি বায়ুটি এখন পর্যন্ত আন্দামান সাগরের কাছাকাছি অবস্থান করছে। ১০ থেকে ১২ জুনের মধ্যে এর প্রভাবে বাংলাদেশে টানা বৃষ্টি শুরু হতে পারে।