মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪

সোনার দাম আবারও কমেছে

প্রতীকী ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১৬:৫৮

এক দিনের ব‌্যবধা‌নে সোনার দাম আবারও কমেছে। ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানো হয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম করা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৬১ টাকা। আগে যার দাম ছিলো এক লাখ ১৪ হাজার ১৯১ টাকা।

আজ বৃহস্প‌তিবার বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে, গত ৬, ৮ ও ১৮ এপ্রিল সোনার দা‌ম বা‌ড়ি‌য়ে‌ছিল বাজুস। এর ম‌ধ্যে ৬ এপ্রিল বে‌ড়ে‌ছিল ১৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল বে‌ড়ে‌ছিল দুই হাজার ৬৫ টাকা। পরে ২০ এপ্রিল ৮৪০ টাকা কমানোর একদিন পর ২১ এপ্রিল আবার ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়ায় বাজুস।

এর দুই দিন পর ২৩ এপ্রিল তিন হাজার ১৩৮ টাকা, ২৪ এপ্রিল ২০৯৯ টাকা ও ২৫ এপ্রিল ভালো মানের সোনা ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানোরর ঘোষণা দিল বাজুস। অর্থাৎ তিন দিনে ভ‌রি‌তে সোনার দাম ক‌মেছে পাঁচ হাজার ৮৬৮ টাকা।

সোনা ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ বিকেল ৩টা ৫০ মি‌নিট থেকে সোনর নতুন দাম কার্যকর করা হয়েছে।

সোনার দামে কেন এত উত্থান-পতন জানতে চাইলে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন নতুন পদ্ধতি বা পলিসি অনুসরণ করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করি। আর সেটি হচ্ছে- বিশ্ব স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল পলিসি। এতদিন আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করতাম। সেক্ষেত্রে বিশ্ববাজারে যখন সোনার দাম কমত, তখন আমরা কমাতাম। আর যখন বাড়ত, তখন বাড়াতাম।’

তিরি আরও বলেন, ‘এখন আমরা আমাদের সোনার সবচেয়ে বড় বাজার তাঁতীবাজারের বুলিয়ান মার্কেট ফলো করে দর নির্ধারণ করি। এই বাজারে সোনার দাম ঘন্টায় ঘণ্টায় ওঠানামা করে। সেটা অনুসরণ করে আমরা নতুন দর নির্ধারণ করি। সেক্ষেত্রে এমনও হতে পারে- দিনে দুই বারও গোল্ডের দাম বাড়ানো-কমানো হতে পারে।’


কবি অসীম সাহা আর নেই

কবি অসীম সাহা। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

খ্যাতিমান কবি অসীম সাহা আর নেই। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালেয় (বিএসএমএমইউ) শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কবি, ছড়াকার ও শিশুসাহিত্যিক মালেক মাহমুদ।

কবি অসীম সাহা পারকিনসন (হাতকাঁপা রোগ), কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।

১৯৪৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনা জেলায় তার মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন অসীম সাহা। তার পৈতৃক নিবাস মাদারীপুর। তার বাবা অখিল বন্ধু সাহা ছিলেন অধ্যাপক।

অসীম সাহা ১৯৬৫ সালে মাধ্যমিক পাস করেন এবং ১৯৬৭ সালে মাদারীপুর নাজিমুদ্দিন মহাবিদ্যালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬৯ সালে স্নাতক পাস করে তিনি ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৬৯ সালে অসহযোগ আন্দোলন এবং পরে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হলে তার স্নাতকোত্তর পরীক্ষা পিছিয়ে যায় এবং তিনি ১৯৭৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন অসীম সাহা। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।


দেশজুড়ে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সারা দেশে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি। আজ সকাল থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আকাশ মেঘলা দেখা যাচ্ছে।

এক বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে দেশের সর্বোচ্চ ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

এছাড়া, খুলনা বিভাগসহ পটুয়াখালী, ভোলা, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।

সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।


পশু কোরবানি বেড়েছে ৩.৭ শতাংশ, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

এ বছর ঈদুল আজহায় সারা দেশে মোট ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮টি গবাদি পশু কোরবানি হয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। কোরবানি হওয়া পশুর এই সংখ্যা গত বছরের চেয়ে ৩ লাখ ৬৭ হাজার ১০৬টি বা ৩.৭ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে এবং সবচেয়ে কম ময়মনসিংহে।

গত বছর সারাদেশে ১ কোটি ৪১ হাজার ৮১২টি গবাদি পশু কোরবানি হয়েছিল। তার আগের বছর ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এ বছর কোরবানির পশুর চাহিদা হিসাব করেছিল ১ কোটি ৭ লাখ। এর বিপরীতে কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৩০ লাখ। এই হিসেবে ধারণার চেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে এবার।

চাহিদার চেয়ে বেশি পশুর সরবরাহ থাকলেও এবার দাম গতবারের চেয়ে অনেকটা বেশি ছিল বলে হাটগুলোতে অভিযোগ করেন ক্রেতারা।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা নাজমুল হাসান গণমাধ্যমকে জানান, বরাবরের মতই সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে। সবচেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে।

এবছর কোথায় কতো পশু কোরবানি হয়েছে

  • ঢাকা বিভাগ: ২৫ লাখ ২৯ হাজার ১৮২টি
  • চট্টগ্রাম বিভাগ: ২০ লাখ ৫৭ হাজার ৫২০টি
  • রাজশাহী বিভাগ: ২৪ লাখ ২৬ হাজার ১১১টি
  • খুলনা বিভাগ: ১০ লাখ ৮ হাজার ৮৫৫টি
  • বরিশাল বিভাগ: ৪ লাখ ২৮ হাজার ৪৩৮টি
  • সিলেট বিভাগ: ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৪২টি
  • রংপুর বিভাগ: ১১ লাখ ৭২ হাজার ৫৫৩টি
  • ময়মনসিংহ বিভাগ: ৩ লাখ ৯২ হাজার ৫১৭টি

মাঠ পর্যায়ের তথ্য থেকে মন্ত্রণালয়ের হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী, কোরবানি হওয়া গবাদি পশুর মধ্যে ৪৭ লাখ ৬৬ হাজার ৮৫৯টি গরু, ১ লাখ ১২ হাজার ৯১৮টি মহিষ, ৫০ লাখ ৫৬ হাজার ৭১৯টি ছাগল, ৪ লাখ ৭১ হাজার ১৪৯টি ভেড়া এবং ১ হাজার ২৭৩টি অন্যান্য পশু।


প্রধানমন্ত্রী দিল্লি যাচ্ছেন ২১ জুন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আগামী ২১ জুন (শুক্রবার) দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনের পর এটি হবে কোনো সরকারপ্রধানের ভারতে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর।

নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের আগে ১৫ দিনেরও কম সময়ে ভারতের রাজধানীতে এটি শেখ হাসিনার দ্বিতীয় সফর হতে চলেছে। গত ৯ জুন মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনিও ছিলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, এবারের সফরের মূল বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে আন্তঃসীমান্ত সংযোগ উদ্যোগ, তিস্তা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতীয় বিনিয়োগ, মোংলা বন্দরের ব্যবস্থাপনা এবং বিদ্যুৎ বাণিজ্য। এছাড়া একটি সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি আলোচনারও প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

গত এক দশকে শক্তিশালী আঞ্চলিক অংশীদারত্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দুই দেশের মধ্যে অসংখ্য আন্তঃসীমান্ত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২২ জুন অনুষ্ঠিতব্য হাসিনা-মোদি শীর্ষ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা অংশীদারত্ব বাড়ানোর বিষয়টিও উঠে আসতে পারে। ভারত প্রতিরক্ষা খাতে বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলারের ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও এখনও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট শুক্রবার (২১ জুন) দুপুর ২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে।

ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে অবতরণ করবে, যেখানে ভারতের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন।

ওইদিন সন্ধ্যায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গে তার বাসস্থান হোটেল তাজ প্যালেসের সভাকক্ষে বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা। পরের দিন শনিবার সকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এ সময় তাকে গার্ড অব অনারও দেওয়ার কথা রয়েছে।

এরপর তিনি রাজ ঘাটে গিয়ে ভারতীয় জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাবেন। পরে হায়দ্রাবাদ হাউসে মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং এরপর প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। এসময় উভয়েই সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষর করবেন।

পরবর্তীতে সংবাদ বিবৃতি দেবেন দুই প্রধানমন্ত্রী। এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেবেন তারা।

শনিবার বিকেলে সচিবালয়ে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন শেখ হাসিনা। সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন তিনি।

ওইদিন স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়ে রাত ৯টায় ঢাকায় অবতরণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাব গাম্ভীর্যে দেশব্যাপী ঈদুল আজহা উদযাপিত

ছবি: বাসস
আপডেটেড ১৮ জুন, ২০২৪ ০০:১১
বাসস

যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা, ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গতকাল সোমবার সারা দেশে মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদের জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি করেছেন।

এদিন ঈদের নামাজ শেষে মুসল্লিদের অনেকেই কবরস্থানে ছুটে যান। স্বজনদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে অশ্রুসজল চোখে এই আনন্দের দিনে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে আল্লাহর দরবারে আকুতি জানান।

ঈদুল-আজহা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীসহ বিশ্বের সকল মুসলমানদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

এবার হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রধান ঈদ জামাতে অংশ নেন। এই জামাতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেন। ভোর থেকেই প্রধান জামাতে নামাজ আদায় করার জন্য মুসল্লিদের ঢল নামে। সকাল সাড়ে ৭টার আগেই জাতীয় ঈদগাহ ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।

জাতীয় ঈদগাহে প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন। দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাসহ দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করা হয়। বিশেষ করে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের জন্য এই জামাতে মুসল্লীরা দোয়া করেন।

এদিকে দেশের সবচেয়ে বড় জামাত কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় হাজার হাজার মুসল্লি এতে নামাজ আদায় করেন। উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ঈদগাহ ময়দান কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার ১৯৭তম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল নয়টায়। ঈদ জামাতে লক্ষাধিক মুসল্লি অংশ নেন। জামাতে ইমামতি করেন জেলা মারকাজ মসজিদের খতিব মাওলানা হিফজুর রহমান খান। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মার শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

ঈদের নামাজ শেষে সারা দেশে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য পশু কোরবানি দেয়। পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে আত্মত্যাগের মহিমায় বলীয়ান হয়ে সম্প্রতির হাত বাড়িয়ে দেন দেশ ও দশের উদ্দেশে। কোরবানির গোস্ত গরীব দুঃখীদের মাঝে তারা বিতরণের মধ্য দিয়ে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করেন।

সকালে রাষ্ট্রপতি সকলের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। ঈদুল আজহা উপলক্ষে বঙ্গভবনের ক্রিডেনশিয়াল হলে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা। রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্য এবং বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি মন্ত্রিসভার সদস্য, সিনিয়র রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিচারক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, কবি, লেখক, শিক্ষক এবং বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ঈদুল আজহা উপলক্ষে দলীয় নেতাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। সোমবার সকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন শেখ হাসিনা। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের শীর্ষ নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

এরপর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ ও ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

প্রতিবছরের মতো এবারও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৭টা থেকে পর্যায়ক্রমে জামাতগুলো অনুষ্ঠিত হয়। শেষ জামাত হয় বেলা পৌনে ১১টায়।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো যথাযোগ্য গুরুত্ব সহকারে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে। ঈদ উদযাপন উপলক্ষে দেশের সকল হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস, মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনসমূহে যথাযথভাবে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করেছে।

কোরবানির পশুর রক্ত বা বর্জ্য দ্বারা যাতে পরিবেশ দুর্গন্ধময় না হয় সে- বিষয়ে সকল প্রকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। প্রতিশ্রুত ছয় ঘণ্টার ভেতর শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করেছে ডিএনসিসি। পাশাপাশি মিরপুরের গোলারটেক মাঠকে ঢাকা উত্তরের ঈদগাহ ময়দান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

বিষয়:

পশু কোরবানি দিতে গিয়ে আহত ১৫০ জন ঢামেকে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৭ জুন, ২০২৪ ১৮:৫৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

এবারের ঈদুল আজহায় ঢাকাসহ আশপাশের জেলার পাড়া-মহল্লাতে কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটাকাটি করতে গিয়ে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৫০ জন। এর মধ্যে নুরুল ইসলাম (৬৯) নামে গুরুতর আহত একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতদের মধ্যে বেশির ভাগ মৌসুমি কসাই। কেউ কেউ গরু কোরবানির সময় সহযোগিতা এবং মাংস কাটাকাটি করতে গিয়ে আহত হয়েছেন। আজ সোমবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত আহত ১৫০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নির্ঝর বিশ্বাস জানান, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গা থেকে রোগী এসেছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগের হাত ও পায়ে কাটাছেঁড়া। কোরবানির গরু জবাই ও মাংস কাটতে গিয়ে তারা আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

এরমধ্যে নুরুল ইসলাম (৬৯) নামে একজনের অবস্থা গুরুতর, তাকে ভর্তি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জরুরি বিভাগের নার্সিং অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত আলী বলেন, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ১৫০ জনের মতো হাসপাতালে এসেছেন। জরুরি বিভাগে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঈদের সময় হাসপাতালের অনেকে ছুটিতে থাকলেও চিকিৎসা সেবায় কোনো ব্যাঘাত ঘটছে না।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী ইনচার্জ মো. মাসুদ জানান, সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে ১৫০ জন কোরবানির গরু জবাই ও গোস্ত কাটতে গিয়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতদের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। আহতদের মধ্যে এপর্যন্ত মৌসুমি কসাইয়ের সংখ্যাই বেশি।


প্রধানমন্ত্রীর গণভবনে দলীয় নেতাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় 

ছবি: বাসস
আপডেটেড ১৭ জুন, ২০২৪ ১৪:০৮
বাসস

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ঈদুল আজহা উপলক্ষে দলীয় নেতাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। তিনি আজ সোমবার সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের শীর্ষ নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

এরপর ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ ও ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী তার বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গেও ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। গণভবনে অতিথিদের সেমাই, মিষ্টি, মৌসুমি ফল দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।


ফিলিস্তিনসহ সুবিধা বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৭ জুন, ২০২৪ ১৪:০৭
বাসস

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তিদেরকে ফিলিস্তিনসহ দেশের দারিদ্র পীড়িত ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি দেশের বিত্তবান ও সচ্ছল ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কেউ যাতে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয় সে লক্ষ্যে সমাজের দারিদ্র পীড়িত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পাশে দাঁড়ান।’

আজ সোমবার বঙ্গভবনের ক্রিডেনশিয়াল হলে ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেওয়া এক শুভেচ্ছা ভাষণে রাষ্ট্র প্রধান দেশবাসিকে ধনী-গরীব নির্বিশেষে সবাইকে একসঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনের গাজাসহ বিশ্বের অনেক স্থানে মানুষ অনাহারে, অর্ধাহারে, বিনা চিকিৎসায় ও স্বজনহারা বেদনায় চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তাদের কথাও আমাদের ভাবতে হবে।’

সম্প্রতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘অনেকেরই ইচ্ছা থাকলেও কোরবানি করতে পারছে না। ঘূর্ণিঝড়ে সহায়-সম্বল হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।’

তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে এবং ঈদের খুশিতে তারাও যাতে শরিক হতে পারে সে চেষ্টা চালাতে ও নির্দেশনা দেন তিনি। মুসলমানদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি দেশ-বিদেশে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ঈদুল আজহা মানুষের মধ্যে আত্মদান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা সঞ্চারিত করে এবং সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়।

তিনি বলেন, ‘হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে সবার মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দেই। পশু কোরবানির সঙ্গে সঙ্গে যাতে আমরা অন্তরের কলুষতা, হিংসা, বিদ্বেষ পরিহার করতে পারি- মহান আল্লাহর দরবারে এ প্রার্থনা করছি।’

মশা-মাছি ও বিভিন্ন রোগের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে কোরবানির পর বাড়ির আশেপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার ও তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি কোরবানির বর্জ্য সময়মতো সরিয়ে নিতে সিটি কর্পোরেশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।

এরআগে রাষ্ট্রপতি ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ঈদুল আজহা উপলক্ষে বঙ্গভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্যরা এবং বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি মন্ত্রিসভার সদস্য, সিনিয়র রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিচারক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, কবি, লেখক, শিক্ষক এবং বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

এর আগে রাষ্ট্রপতি হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে প্রধান জামাতে যোগ দিয়ে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন। এসময় রাষ্ট্রপতির পরিবারের সসদ্য ও কর্মকর্তারা তার সঙ্গে ছিলেন। রাষ্ট্রপতি সেখানে পৌঁছালে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা তাকে স্বাগত জানান।

এসময় মন্ত্রিসভার সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, আইনপ্রণেতা, জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা ঈদের নামাজ আদায় করেন।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন ঈদের নামাজ পরিচালনা করেন। দেশের শান্তি ও অগ্রগতি এবং জনগণ তথা মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে এসময় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

নামাজ শেষে ঈদগাহের মুসল্লিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি। এসময় রাষ্ট্রপতির একাধিক সচিবও নামাজে অংশ নেন।


ত্যাগের মহিমায় রাজধানীতে চলছে পশু কোরবানি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পবিত্র ঈদুল আজহায় ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে ঢাকায় চলছে পশু কোরবানি। আল্লাহর অনুগ্রহ তথা সন্তুষ্ট লাভের আশায় উদযাপিত হচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম এ ধর্মীয় উৎসব। আজ সোমবার পবিত্র ঈদুল আজহায় রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি করছেন।

ঈদের নামাজ আদায় শেষে সকাল থেকে রাজধানীতে বিভিন্ন এলাকায় পশু কোরবানি দিচ্ছেন নগরবাসী। ত্যাগের মহিমায় যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পশু কোরবানি করছেন শহরের মানুষ। কেউ কোরবানি দিচ্ছেন রাস্তায় থাকা নির্ধারিত স্থানে আবার কেউবা কোরবানি দিচ্ছেন বাসা বাড়ির গাড়ির গ্যারেজের স্থানে। এই সময়ে কোরবানির কসাইরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। চামড়া ছাড়িয়ে মাংস কাটার কাজ করছেন তারা।

এদিকে কোরবানির পর সৃষ্ট বর্জ্য অপসারণ রাস্তায় কাজ করা শুরু করে দিয়েছে দুই সিটি কর্পোরেশন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রাজধানীর থেকে কোরবানি বর্জ্য অপসারণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ৬ ঘণ্টায় এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ২৪ ঘণ্টায় কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করবে বলে জানা গেছে।

এদিকে আজ সকাল থেকে কোরবানি শুরু হয়ে সারাদিনই তা চলার পাশাপাশি আগামী দুই দিনও কোরবানি দিবেন মুসল্লিরা।


জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৭ জুন, ২০২৪ ০৮:৪৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জাতীয় ঈদগাহে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার ঈদুল আজহার দিন সকাল ৮টায় রাজধানীর হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত শুরু হয়। এতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ও বয়সের মুসল্লিরা। ঈদের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও জনগণের কল্যাণ কামনা করা হয়। ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন।

দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে শুরু হয় খুতবা। নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতের পর রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

এর আগে সকাল থেকে জাতীয় ঈদগাহ প্রাঙ্গণে আসতে শুরু করেন মুসল্লিরা। বিপুল সংখ্যক মুসল্লির উপস্থিতিতে পুরো ঈদগাহ ময়দান পরিপূর্ণ হয়ে যায়। ঈদগাহ সংলগ্ন কদম ফোয়ারার সামনের সড়ক, হাইকোর্টের মূল ফটকের সামনের সড়কের একাংশেও মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেছেন।

নামাজ শেষে মুসল্লিরা পরস্পর কোলাকুলি ও কুশল বিনিময় করেন।

এবার সিটি কর্পোরেশন থেকে জানানো হয়, জাতীয় ঈদগাহের ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাত আদায় ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছিল নারীদের জন্যও নামাজের আলাদা ব্যবস্থা।

এদিকে ঈদের প্রধান এ জামাতকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ জোরদার ছিল। জাতীয় ঈদগাহ মাঠ ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও ছিল তৎপর। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কদম ফোয়ারা, দক্ষিণে দোয়েল চত্বর ও সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেট হয়ে শিক্ষা ভবন, উত্তরে মৎস্য ভবন ও বার কাউন্সিলের সামনে চেক করে আর্চওয়ে দিয়ে ঢুকেছেন পুরুষ ও নারীরা।

ঈদ জামাত ঘিরে চারপাশের প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়। পুরো এলাকায় বসানো হয় গোপন অত্যাধুনিক মুভি ও সিসি ক্যামেরা। যা কন্ট্রোল রুম থেকে মনিটরিং করা হয়েছে। পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও র‌্যাবসহ অন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সম্মিলিতভাবে এবারের জাতীয় ঈদগাহ মাঠের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।

এছাড়া মাঠের আশপাশের রাস্তায় এবং প্রতিটি উঁচু ভবনের ছাদে বসানো হয় ওয়াচ টাওয়ার। যেখান থেকে শক্তিশালী বাইনোকুলার দিয়ে পুরো এলাকার ওপর নজর রাখা হয়। এছাড়া ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায়ও বসানো হয় অত্যাধুনিক গোপন মুভি ক্যামেরা। মাঠের বাইরেও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য।


বায়তুল মোকাররমে ঈদুল আজহার প্রথম ও দ্বিতীয় জামাত সম্পন্ন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৭ জুন, ২০২৪ ০৮:৩৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদুল আজহার প্রথম ও দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার ঈদুল আজহায় সকাল ৭টায় প্রথম জামাত এবং সকাল ৮টায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। দুই জামাতেই কয়েক হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণে ও যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করা হয়। প্রথম জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ইহসানুল হক এবং মোকাব্বির হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের সাবেক মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান।

অন্যদিকে দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মাওলানা মুহীউদ্দিন কাসেম ও মোকাব্বির ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আবদুল হাদী।

নামাজের আগে ইমামরা উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে নসিহত করে বয়ান করেন। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উপায়, কোরবানির শিক্ষা, কোরবানির সঠিক পদ্ধতি, কোরবানিকৃত পশুর চামড়ার অর্থ গরিব দুঃখিদের প্রদান, সামর্থ্য অনুযায়ী দান সদকা করাসহ ইসলাম এবং ইসলামী শরীয়তের নানান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বয়ান করেন।কোরবানির আগেই সবার নিয়তকে পরিশুদ্ধ করে নিতে হবে। তাহলে আল্লাহ কোরবানিকৃত পশুর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে কোরবানি দাতার জন্য সাওয়াব লিখে দিবেন বলেও ইমামরা তাদের বয়ানে উল্লেখ করেন।

নামাজ শেষে মোনাজাতে স্থান পেয়েছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আহত, নিহত ও বাস্তুচ্যুত হওয়া ফিলিস্তিনিরাও। তাদের জন্য আল্লাহর কাছে বিশেষ দোয়া প্রার্থনা করা হয়েছে। এছাড়া সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এসময় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের কথা স্মরণ করে দোয়া করা হয়।

প্রসঙ্গত, বায়তুল মোকাররমে মোট ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ইসলামী ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায়, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ ঈদের জামাত হবে বেলা পৌনে ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে। ৯টার তৃতীয় জামাতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির মাওলানা আবু সালেহ পাটোয়ারী। মোকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. জসিম উদ্দিন। সকাল ১০টায় চতুর্থ জামাতে ইমামতি করবেন মিরপুরের মহতামিম জামেয়া আরাবিয়ার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান। মোকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম রুহুল আমিন। আর সর্বশেষ জামাতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। মোকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো, আক্তার মিয়া। তবে বাকি ৩টি জামাতের কোনোটিতে একজন ইমাম অনুপস্থিত থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন হাইকোর্ট মাজার মসজিদের ইমাম মাওলানা আশরাফুল ইসলাম।


পশু কোরবানির পর ঘর ও আশপাশ পরিষ্কার করার নিয়ম

ফাইল ছবিটি সংগৃহীত
আপডেটেড ১৭ জুন, ২০২৪ ০১:২৭
ইউএনবি

সারা দেশে পবিত্র ঈদুল আজহায় বিপুলসংখ্যক পশু কোরবানি হয়। স্বভাবতই এখানে গুরুত্ববহ হয়ে ওঠে কুরবানি-পরবর্তী শহর পরিষ্কারের বিষয়টি। পশু জবাইয়ের পর সঠিকভাবে তার বর্জ্য নিষ্কাশন না হওয়ার দরুণ শহরবাসীকেই পোহাতে হয় হাজারও ভোগান্তি। বিগত বছরগুলোতে মশাবাহিত রোগের উপদ্রব বাড়াতে পরিবেশজনিত এই জটিলতা আশঙ্কাজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া ধর্মীয় দিক থেকেও পরিবেশ আবর্জনামুক্ত রাখা প্রত্যেক কোরবানি পালনকারীর ঈমানি দায়িত্ব। তাই চলুন, পশু কোরবানির পর বাসা ও তার চারপাশ বর্জ্যমুক্ত রাখার কয়েকটি উপায় জেনে নেওয়া যাক। এই প্রতিবেদনে ঈদুল আজহায় পশু কোরবানির পর বর্জ্য অপসারণের ১০টি উপায় নিয়ে বলা হয়েছে।

একটি উপযুক্ত স্থান নির্বাচন

শহর বা গ্রাম নির্বিশেষে একটি নির্দিষ্ট এলাকার লোকজন আলাদাভাবে কোরবানি না দিয়ে কয়েকজন একসঙ্গে হয়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানি করা উত্তম। মূলত বসতবাড়ি থেকে যথাসম্ভব দূরে এমন একটি স্থান নির্বাচন করা উচিৎ, যেখান থেকে সহজেই পশুর বর্জ্য নিষ্কাশন করা যায়। এতে করে সিটি করপোরেশন কর্মীরা দ্রুত সময়ে বর্জ্য অপসারণের কাজ করতে পারবে। এ সময় খেয়াল রাখা উচিৎ, স্থানটি যেন চলাচলের রাস্তার উপরে না হয়। সাধারণত খোলামেলা পরিবেশে পশুর জীবাণু বেশি ছড়াতে পারে না। যারা সবার সঙ্গে একত্রিত হয়ে নির্দিষ্ট স্থানটিতে কোরবানি দিতে পারছেন না, তারা তাদের পশুর বর্জ্যগুলো নিজ দায়িত্বে কাছাকাছি ডাস্টবিনে ফেলে আসবেন।

পশুর রক্ত পরিষ্কার

পশু জবাইয়ের পর প্রথম কাজ হচ্ছে পশুর রক্ত সরিয়ে ফেলা। এর জন্য রক্ত সম্পূর্ণ ঝরে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অতঃপর পর্যাপ্ত পানি দিয়ে রক্ত ধুয়ে ফেলতে হবে। রক্ত অপসারণের জন্য কাছাকাছি কোনো ড্রেন ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন রক্তের সঙ্গে কোনো কঠিন বর্জ্য ড্রেনের মুখ বন্ধ করে না দেয়। তরল রক্ত দ্রুত সরিয়ে ফেলার পর রক্তের দাগ ও দুর্গন্ধ দূর করার জন্য জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে।

বর্জ্য খোলা স্থানে না রাখা

পশুর রক্তসহ অন্যান্য কঠিন ও তরল বর্জ্য উন্মুক্ত স্থানে রাখা ঠিক নয়। কেননা এতে রক্ত আর নাড়ি-ভুঁড়ি বাতাসের সংস্পর্শে এসে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুর্গন্ধ ছড়ায়। এগুলো গর্ত করে ভেতরে রেখে মাটিচাপা দিতে হবে, অথবা সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িতে রেখে আসতে হবে। গাড়ি আসার আগ পর্যন্ত কোনো পলিব্যাগে ভরে কাছাকাছি কোনো ডাস্টবিনে যেয়ে ফেলে আসা যেতে পারে।

গর্ত করা

পশুর দেহের উচ্ছিষ্ট ও বর্জ্য নিষ্কাশনের উত্তম পন্থা হলো মাটিতে গর্ত করে পুঁতে ফেলা। অন্যথায় যেখানে-সেখানে ফেলে রাখলে তাতে পচন ধরে মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়াবে। এই পরিবেশ দূষণ পরবর্তীতে নানান রোগের কারণ হতে পারে। তাই কোরবানির আগেই নিকটবর্তী কোনো মাঠ বা পরিত্যক্ত জায়গায় ৩ থেকে ৪ ফুট গর্ত তৈরি করে রাখা উচিৎ। জবাই পর্ব শেষে পশুর শরীরের যাবতীয় উচ্ছিষ্ট এক করে সেই গর্তে ফেলে তার ওপর ব্লিচিং পাউডার, চুন, বা ফাম-৩০ নামক জীবাণুনাশক ছড়াতে হবে।

সবশেষে খড়কুটা ও কাঁটা জাতীয় কিছু ডালপালা দিয়ে আবৃত করে শক্ত করে মাটিচাপা দিতে হবে। এটি এক দিক থেকে বর্জ্য অপসারণের জন্য কার্যকর, অন্যদিকে জৈব সার হিসেবে শস্যক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য উপযোগী। মাটিচাপার দেয়ার পর তার ওপর কিছু মোটা তুষ ছিটিয়ে দিলে পরে কুকুর বা বিড়াল মাটি গর্ত করে ময়লা তুলতে পারবে না।

চামড়ার ব্যবস্থাপনা

কোরবানির পর যত দ্রুত সম্ভব পশুর চামড়া বিক্রি বা দান করে দিতে হবে। ক্রেতা হিসেবে এতিমখানা, মাদ্রাসা বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান চামড়াগুলো অবশ্যই কোথাও ম্তুব করে ফেলে রাখবেন না। কারণ এগুলো কিছুক্ষণের মধ্যেই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ নষ্ট করে ফেলে।

ডাস্টবিনের যথাযথ ব্যবহার

পশু কোরবানির যাবতীয় কাজ শেষে উচ্ছিষ্ট ও ময়লা খুব দ্রুত সিটি করপোরেশনের বর্জ্যের গাড়িতে পৌছানো উচিৎ। ময়লা গাড়িতে ওঠানোর পরপরই পানি ও জীবাণুনাশক দিয়ে জবাই করার স্থান পরিষ্কারের কাজে লেগে যেতে হবে। গাড়ি আসতে দেরি হলে জমাকৃত আবর্জনা একটি বড় ব্যাগে ভরে ব্যাগের মুখ ভালোভাবে বন্ধ করতে হবে। অতঃপর ব্যাগটি রেখে দিতে হবে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে, যেখান থেকে বর্জ্যের গাড়ি ময়লা নিয়ে যায়। পশুর যাবতীয় কঠিন বা তরল বর্জ্য কোনো ভাবেই পয়ঃনিষ্কাশন নালায় ফেলা যাবে না।

যারা ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে পশু জবাই দিয়ে থাকেন তাদের ভবনের জন্য একটি নির্দিষ্ট ডাস্টবিনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। পশুর কান, মাথার খুলি, হাড়, লেজ, ও পায়ের অবশিষ্টাংশ মোটা প্লাস্টিকের ব্যাগে জড়িয়ে নিতে হবে। অতঃপর এ সবকিছু একসঙ্গে করে রাখতে হবে সেই ডাস্টবিনে। বিষয়টি কোরবানির সময় ব্যবহৃত হোগলা, পাটি, কাপড় বা কাঠের গুঁড়ি এবং ন্যাকড়ার জন্যও প্রযোজ্য।

মাংস বাড়িতে নেওয়ার সময় সতর্কতা

মাংস প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার পর বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় মাংস ভর্তি বালতিতে কোনো রকম ফুটো থাকা চলবে না। কোরবানির স্থান থেকে বাড়ি দূরে হলে রাস্তা দিয়ে বয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে মাংসের রক্ত চুয়ে পড়ছে কিনা। প্রায় সময় দেখা যায়, সিঁড়ি বা লিফ্ট দিয়ে কাঁচা মাংস তোলার সময় সিঁড়ি বা লিফ্টে রক্তের দাগ লেগে আছে। শুধু তাই নয়, ঈদের ৩ দিন পর্যন্ত সিঁড়িঘর ও লিফট থেকে দুর্গন্ধ যায় না। তাই মাংস বহনকারি বালতিগুলো নিয়ে বাড়ি যাওয়ার সময় সাবধান থাকা জরুরি।

লিফটের দুর্গন্ধের তীব্রতা কমানোর জন্য কুরবানির দিন লিফটের দরজা রাতের বেলা কিছুক্ষণ খোলা রাখা যায়। এতে বদ্ধ জায়গায় আটকে না থেকে দুর্গন্ধ বাইরে বেরিয়ে আসবে, আর কিছুটা হলেও দুর্গন্ধ কমবে।

ঘরের ভেতরকার পরিচ্ছন্নতা

মাংস ঘরে আনার আগেই ঘরের মেঝেতে প্লাস্টিকের বড় শীট বা পাটি বিছিয়ে রাখতে হবে। মাংস আনার পর তা কাটা, ওজন, ও বন্টনের জন্য এই পাটি ব্যবহার করতে হবে। কাজ শেষে পাটি উঠিয়ে পুরো মেঝে প্রথমে পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর হাল্কা গরম পানিতে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে তা দিয়ে মেঝে মুছতে হবে।

মাংস কাটার সরঞ্জামাদি পরিষ্কার করা

মাংস রান্নার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলে এবার মাংস কাটার ছোট-বড় ছুড়ি ও বটি পরিষ্কার করার পালা। এগুলো নোংরা অবস্থায় রেখে দিলে অচিরেই নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে পরের ঈদুল আজহায় এগুলো ব্যবহারের সময় পড়তে হবে বিড়ম্বনায়। তাই এগুলোও ভিম বার দিয়ে মেজে ও হাল্কা গরম পানিতে ধুয়ে গুছিয়ে তুলে রাখতে হবে।

দুর্গন্ধ দূরীকরণে জীবাণুনাশক ব্যবহার

কোরবানির পরবর্তী টানা কয়েকদিন ধরে যে বিষয়টি সবচেয়ে বিড়ম্বনার উদ্রেক করে তা হচ্ছে দুর্গন্ধ। বাড়ির ভেতরে-বাইরে এবং আঙ্গিনায় সর্বত্রে কাঁচা মাংসের গন্ধ ছড়িয়ে এক অসহনীয় পরিবেশের সৃষ্টি করে রাখে। এই দুর্গন্ধ পুরোপুরি দূর করা না গেলেও অনেকটা কমিয়ে আনা যায়। এর জন্য কোরবানির স্থানে পানি ঢেলে দেয়ার পর ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিতে হবে। এতে রক্তের দাগ ও গন্ধ অনেকটাই কমে আসে।

বাড়ির ভেতরে এয়ার ফ্রেশনার দেয়া যেতে পারে। তবে এতে কাজ না হলে দারুচিনি, চিনি ও মাখনের মিশ্রণ ব্যবহার করা যায়। এগুলো একসঙ্গে ব্লেন্ড করার পর গরম করলে যে সুগন্ধি ছড়ায়, তাতে মাংসের দুর্গন্ধের তীব্রতা হাল্কা হয়ে আসে।

লেবু, লবঙ্গ, ও কমলার খোসা এই দুর্গন্ধ দূর করার ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর। পানির সঙ্গে এই খাদ্যসামগ্রী ফুটানোর সময় হালকা এক সুগন্ধি তৈরি হয়, যা ঘরে অনেকক্ষণ যাবৎ থাকে। বেকিং সোডা ও সাদা ভিনেগারও ঘর থেকে কাঁচা মাংসের গন্ধ দূরীকরণে বেশ উপযোগী। তবে এগুলো ব্যবহারের সময় অবশ্যই এক্সস্ট ফ্যান ছাড়তে ভুলে যাওয়া চলবে না।


আজ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হওয়া পবিত্র ঈদুল আজহা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বছর ঘুরে মুসলমানদের দুয়ারে আত্মত্যাগ ও খুশির বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। বিশ্ব মুসলিমের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের একটি ঈদুল আজহা। আজ সোমবার (১৭ জুন) যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সারা দেশে মুসলিম সম্প্রদায় পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।

মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদের জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ অনুযায়ী পশু কোরবানি করবেন। নামাজ শেষে মুসল্লিদের অনেকেই যাবেন কবরস্থানে। চিরবিদায় নেওয়া তাদের স্বজনদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে অশ্রুসজল চোখে এই আনন্দের দিনে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে আল্লাহর দরবারে আকুতি জানাবেন।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য এবং তারই রাহে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের ঐতিহাসিক ঘটনার স্মরণে পালিত হয়ে আসছে পবিত্র ঈদুল আজহা। হযরত ইবরাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীকী নিদর্শন হিসেবে কোরবানি প্রচলিত হয়েছে। যাকে কেন্দ্র করে ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হওয়া ঈদুল আজহার এই উৎসব। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বছর পূর্বে হযরত ইবরাহিম (আ.) তার প্রাণপ্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইলকে (আ.)-কে কোরবানি করার ঘটনার স্মরণে কোরবানি প্রচলিত হয়। পুত্র কোরবানির পরীক্ষায় হযরত ইবরাহিম (আ.) উত্তীর্ণ হয়েছিলেন এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে খলিলুল্লাহ উপাধি পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি যতদিন জীবিত ছিলেন, ততদিন প্রতি বছরই পশু কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহপাকের আনুগত্যের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও আদিষ্ট হয়ে প্রতি বছরই পশু কোরবানি করেছেন এবং তার উম্মতের জন্য এ আদর্শ ও প্রথা অনুসরণের কঠোর নির্দেশ দিয়ে গেছেন। যাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব তাদের জন্য কোরবানি করা বাধ্যতামূলক। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যাদের ওপর ওয়াজিব তারা কোরবানি না করলে যেন ঈদগাহে গমন না করে। তিনি আরও বলেছেন, কোরবানির দিন কোন ব্যক্তির কোরবানির পশুর রক্ত ঝরানোর মতো আল্লাহপাকের কাছে অধিক প্রিয় ও পছন্দনীয় কাজ আর কিছু নেই। কোরবানিকে আল্লাহ এবাদত হিসেবে নির্দেশ করেছেন। পশু কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর নির্দেশের প্রতি একনিষ্ঠ আনুগত্য প্রদর্শন করে তাঁর সন্তুষ্টি লাভ করাটাই উদ্দেশ্য। এ উদ্দেশ্য যথাযথভাবে অর্জিত হলে কোরবানি করা সার্থক হয়ে থাকে। আল্লাহপাক সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন ‘আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না তাদের (পশুর) গোশত ও রক্ত বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া।’ কোরবানির জন্য হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর ত্যাগ ও আত্মসমর্পণের আদর্শ। তিনি পুত্র ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি করতে উদ্যত হলে আল্লাহপাক তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে হজরত ইসমাইল (আ.) এর পরিবর্তে হজরত জিবরাইল (আ.) এর মাধ্যমে দুম্বা উপস্থিত করেন এবং দুম্বা জবাই হয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে যে নজির হজরত ইবরাহিম (আ.) রেখে গেছেন, মানব ইতিহাসে তা নজিরবিহীন। ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ মিল্লাতে ইবরাহিমের জন্য এক মহান আদর্শ, এ গৌরবের স্তম্ভ। এ উৎসবে ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক ও ঐতিহাসিক তাৎপর্য যেমন রয়েছে, তেমনি পারিবারিক, সামাজিক ও মানবিক নানা কল্যাণকর দিকও রয়েছে। সৌভ্রাতৃত্ব, ঐক্য সংহতি, বন্ধুত্ব, সম্প্রীতি ও সহমর্মিতা সহানুভূতি প্রকাশের এক দুর্লভ সুযোগ এনে দেয় এই ঈদ। কোরবানি অর্থ ত্যাগ এবং ত্যাগের মহিমার মধ্য দিয়ে সামর্থ্যবানরা পশু কোরবানি করেন। এই কোরবানির একটি অংশ দরিদ্রদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। ধনী দরিদ্র সকলেই যাতে সমভাবে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে, সেজন্য ইসলামে সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে। কোরবানির গোশতের ভাগ বাটোয়ারা করার ক্ষেত্রে ইসলামের বিধান মানতে হবে।

এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গতকাল রোববার থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে সংবাদপত্রগুলো বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে। রেডিও, বিটিভি এবং বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ৩ দিন এবং কোন কোন চ্যানেল ৫/৭ দিন বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে।

অন্যদিকে সরকারি ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। ঈদের দিনে কারাগার, বিভিন্ন হাসপাতাল, এতিমখানা, ভবঘুরে কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে উন্নতমানের খাদ্য পরিবেশিত হবে।


banner close