আমানউল্লাহ আমান
নিজ দলের আদর্শ ও আন্দোলনের কৌশল ঠিক রেখে সরকার হটাতে নিজেদের এক সুতায় গাঁথার চেষ্টা করছে সরকারবিরোধী ডান, বাম ও মধ্যপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো। সে ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন নেতারা। পাশাপাশি নিরপেক্ষ বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি থাকতে পারে অগ্রাধিকারের তালিকায়। সংশ্লিষ্ট দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দৈনিক বাংলাকে বলেন, আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একটা বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার ব্যাপারে কাজ করছি এবং দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পরিপ্রেক্ষিতে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
রূপরেখায় বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনের বিষয় আসবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আন্দোলনের রূপরেখায় বর্তমান সমস্যা ও সংকট তো থাকবেই। আমাদের মূল সমস্যা সরকারের পরিবর্তন, সেটার জন্যই আমাদের যুগপৎ আন্দোলন। একই ইস্যুতে নিজের নিজের জায়গা থেকে, নিজ নিজ দল থেকে একই সঙ্গে আন্দোলন করব।
এর আগে ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের উদ্যোগ নেয় বিএনপি। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত ১১টি বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয় বিএনপি। সংলাপে বিরতি দিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোও একই সুরে কথা বলছে। গত ৮ আগস্ট জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণ-অধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ে আত্মপ্রকাশ করে সাতদলীয় জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’। আত্মপ্রকাশের পর থেকে সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে চাইছে জোটবদ্ধ দলগুলো।
জোটের আন্দোলনের রূপরেখা সম্পর্কে জানতে চাইলে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী দৈনিক বাংলাকে বলেছেন, যুগপৎ আন্দোলনের ধারণা আমরাই প্রথম দিয়েছি। বিএনপির সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি আলোচনাধীন আছে।
সিপিবি-বাসদ ঐক্যের প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল ‘বাম গণতান্ত্রিক জোট’। সম্প্রতি জোটটির দুটি দল গণতন্ত্র মঞ্চে যোগ দিয়েছে।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স দৈনিক বাংলাকে বলেছেন, বাম গণতান্ত্রিক জোট আছে। জোটের রাজনীতি নিয়ে সক্রিয় অবস্থানে রাজপথে আছি। বাম এবং গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে সমবেত করার চেষ্টা করছি। আগামীতে যারা আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির বাইরে বিকল্প শক্তির উত্থান চায়, দুঃশাসনের অবসান চায় এবং ব্যবস্থা বদলের সংগ্রাম করতে চায়, একই ধারায় জোটবদ্ধ হয়ে আন্দোলন সংগ্রাম হবে। মূল সংগ্রাম জনগণের ঐক্য গড়ে তোলা।
সিপিবি ও বাম গণতান্ত্রিক জোট দ্বি-দলীয় ধারার বাইরে বিকল্প গড়ে তুলতে চায় দাবি করে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, যাদের (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি) বিরুদ্ধে লড়াই করে বিকল্প গড়ে তুলতে চাই, তাদের সঙ্গে আলোচনার কোনো প্রয়োজন নেই। বরং ওনাদের রাজনীতি বাদ দিয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গে যুগপৎ করবেন কি-না এটা প্রশ্ন হতে পারে।
সিপিবি-বাসদ সূত্রে জানা যায়, আগামী ২২ সেপ্টেম্বর গণতান্ত্রিক বাম জোটের সম্মিলিত সভা রয়েছে। ওই সভায় জোটের চলমান ঘোষণা ও কর্মসূচিকে আরও সংক্ষিপ্ত আকার দেয়ার প্রস্তাব উঠতে পারে। রাজপথে শক্তি বৃদ্ধিতে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের নেতৃত্বাধীন ৯ সংগঠনের সঙ্গে সূত্রবদ্ধ হওয়ার আলোচনা চলমান রয়েছে।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম দৈনিক বাংলাকে বলেছেন, বামজোট বর্তমান সরকারের অধীনেই রাজনৈতিক মীমাংসার পথ খুঁজছে বলে মনে হয়েছে। বামজোটের সঙ্গে একটা যুগপৎ কর্মসূচি করেছি। তারা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সংকল্পবদ্ধ নয়। জনগণ এই সরকারের পতন চায়। সেই ক্ষেত্রে বামজোটের সঙ্গে আগামী দিনে যুগপৎ আন্দোলন কতটা হতে পারবে সে বিষয়ে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সন্দিহান।
ফয়জুল হাকিম বলেন, সাম্রাজ্যবাদী মদদপুষ্ট এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের জন্য নিশ্চয়ই যুগপৎ আন্দোলন আগামী দিনে হতে পারে। বিএনপি এবং গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে কতগুলো মতপার্থক্য রয়েছে। কিন্তু সরকারের পতনের জন্য ও আধিপত্যবিরোধী বিষয়ে যদি তারা ঐকমত্য পোষণ করে তাহলে একটা যুগপৎ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বাম জোট সূত্রে জানা যায়, দেশের প্রবীণ রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য’র নেতৃত্বাধীন ঐক্য ন্যাপ, ১৪ দলীয় জোট ছাড়ার ঘোষণা দেয়া শরীফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাসদ বাম জোটের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছে। এই আলোচনায় মোস্তফা মহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামও যুক্ত ছিল বলে জানা যায়।
এ প্রসঙ্গে বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ দৈনিক বাংলাকে বলেছেন, গণতন্ত্র মঞ্চ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে, আমরাও করব। ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা শ্রেণি-পেশার মানুষের দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি। আন্দোলনের মাঠে যারা আছে তাদের সঙ্গে দেখা হবে। মাঠের আন্দোলনেই নির্ধারণ হবে যুগপৎ হবে- না ঐক্য হবে।
ক্ষমতাসীন জোটে থাকা দলগুলোর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ বা যুগপৎ আন্দোলনের কথা ভাবছেন না বলে দাবি করে বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, তারা সরকারের শরিক। তারা সরকারকেই ধারণ করে। এই মুহূর্তে তাদের সঙ্গে কোনো আন্দোলনের কথা ভাবছি না।
বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান দৈনিক বাংলাকে বলেছেন, সামনে দলের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের পর জোট গঠন বা যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
ক্ষমতাসীন জোট ও বিরোধী জোটের বাইরে অবস্থান করছে মোস্তফা মহসীন মন্টু ও সুব্রত চৌধুরীর গণফোরাম। দলটি সরকারবিরোধী আন্দোলনের বৃহত্তর ঐক্যের সঙ্গে থাকবে বলে জানিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়- এই দাবির ভিত্তিতে বিএনপিসহ বৃহত্তর ঐক্যের সঙ্গে থাকবে গণফোরাম।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন ড. কামাল হোসেন। দফায় দফায় দলীয় কোন্দলের মুখে পড়ে গণফোরাম। পৃথক দুই অংশের একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. কামাল হোসেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে আবারও আলোচনায় আসেন তিনি।
তার দলের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেছেন, গণফোরামের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে। দলকে সুসংগঠিত করার বিষয়ে ভাবছি। জোট বা যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে কোনো আলোচনা এখনো হয়নি। দল গুছিয়ে নিয়ে এ বিষয়ে অগ্রসর হবেন বলেও জানান তিনি।
সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা বাংলাদেশের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছিল যুক্তফ্রন্ট। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জোটটি ভেঙে যায়। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশ নেয় যুক্তফ্রন্ট। বর্তমানে দুজন সংসদ সদস্য রয়েছে দলটির।
চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পযবেক্ষণ করছেন জানিয়ে বিকল্প ধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান দৈনিক বাংলাকে বলেন, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক মাঠ অনেকটা উত্তপ্ত। এই উত্তপ্ত মাঠে উত্তাপ ছড়িয়ে কোনো লাভ আছে? সময়মতো সিদ্ধান্ত নেব। গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য দলীয়ভাবে যা করণীয়, তা করব। তবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে না যাওয়ার বিষয়েও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকার কাউকে প্রটেকশন দেয় না। অপরাধীকে আমরা অপরাধী হিসেবে দেখি। অপরাধ করলে তাকে শাস্তি পেতেই হবে।
আজ শুক্রবার সকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক আইজিপির সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও সাবেক সেনাবাহিনীপ্রধানের নিষেধাজ্ঞায় সরকার বিব্রত কি না? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তি যত প্রভাবশালী হোক অপরাধ করতে পারে, প্রশ্ন থেকে যায় সরকার অপরাধের শাস্তির ব্যাপারে সৎ সাহস দেখিয়েছে কি না। শেখ হাসিনা সরকারের সেই সৎ সাহস আছে। কেউ পার পাবে না। বিচার বিভাগ, দুদক স্বাধীন। সেখানে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে আমরা তাকে প্রটেক্ট করতে যাব না। সেখানে কোনো সাবেক আইজিপি বা কোনো সাবেক সেনাপ্রধান যে-ই থাকুক না কেন সরকারের কাউকে প্রটেকশন দেওয়ার বিষয়ে নেই।’
আবরার হত্যাকাণ্ডে যাদের দণ্ড হয়েছে তাদের সবাই ছাত্রলীগের উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার তাদের প্রটেকশন দিতে যায়নি। বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে যাদের ফাঁসি হয়েছিল তাদের সরকার প্রটেকশন দিতে যায়নি। ব্যক্তি অপরাধ করতে পারে। কথা হচ্ছে সরকার প্রটেকশন দিচ্ছে কি না। শেখ হাসিনা সরকার এখানে জিরো টলারেন্স। অপরাধ করলে শাস্তি তাকে পেতেই হবে।
এসময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক আব্দুস সোবহান গোলাপ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি ও নির্মল চ্যার্টাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি দেশের জনগণকে ভয় পায় বলেই ভোটে অংশগ্রহণ করে না বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘তারা বুঝতে পেরেছে ভোটে আসলে তাদের সম্মান থাকবে না। কাজেই তারা এখন ভোট বর্জন শুধু না, দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডেও জড়িত।’
আজ মঙ্গলবার সকালে জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার ধনতলা ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সমগ্র পৃথিবী আজ যুদ্ধের মধ্যে জড়িয়ে গিয়েছে। এ রকম একটি অর্থনৈতিক বিরাজমান পরিস্থিতিতে কোথায় তারা (বিএনপি) দেশের জন্য কথা বলবে। কিন্তু না, তারা দেশকে কীভাবে নিচে নামানো যায় সেই প্রক্রিয়াগুলোর সঙ্গে জড়িত। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা দেখেছি বিএনপি তাদের জন্মলগ্ন থেকেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থা, দেশকে তলিয়ে দেওয়ার রাজনীতি করেছে। কেননা, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিশ্বাস করে না, মুক্তিযুদ্ধকে মানে না। আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াক, তারা সেটা চায় না। এ জন্য তাদের অর্থমন্ত্রী বলেছিল যে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার দরকার নাই। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে সাহায্য পাওয়া যায় না। বিএনপি একটি সাহায্যনির্ভর রাজনৈতিক দল।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন জাল ভোট দেওয়ার প্রচলন আর নেই। প্রচারণায় দেখা গেছে, ভোটে মানুষের আগ্রহ আছে। এখন কাজের মৌসুম এবং প্রচণ্ড গরম। বৃষ্টি হচ্ছে। প্রচারণা ভালো হয়েছে, ভোটকেন্দ্রে সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে। ভোটকেন্দ্র দখল করা, ভোটের যে কারচুপি, অনৈতিক কাজকর্ম ভোটের মধ্যে ছিল, তা ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। ভোটাররা যাকে ভালো মনে করবে তাকে নির্বাচন করবে। আমার ভোট আমি দেবো যাকে খুশি তাকে দেবো- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন সেটি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপর ভিসা নীতি নয় বরং যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্ট প্রয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ধানমন্ডিতে অবস্থিত আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেটা বলেছে, বাংলাদেশের মিশনকে জেনারেল আজিজের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। জেনারেল আজিজের বিষয়ে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেটা ভিসা নীতির প্রয়োগ নয়, এটি যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস আইনের প্রয়োগ। এটা নিয়ে আমি আর কিছু বলব না। এটা নিয়ে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও কথা বলেছেন। আমরা এতটুকুই জানি, এটুকুই বললাম।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপিসহ সমমনাদের অবিরাম মিথ্যাচার, টিআইবির অপপ্রচার ও নামিদামি বুদ্ধিজীবীদের মিথ্যাচারে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। বিএনপিসহ সমমনাদের অবিরাম মিথ্যাচার মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। টিআইবির অপপ্রচার আছে। আরও কিছু নামিদামি বুদ্ধিজীবী আছেন, তারাও মিথ্যাচার, অপপ্রচার করে মানুষের আগ্রহ নষ্ট করেছেন ভোটের ব্যাপারে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভারতের পশ্চিম বঙ্গে এবং আমাদের বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয় এটা বলা যাবে না। এখানে কিছু সংঘাত, প্রাণহানি ঘটে। যদিও আমাদের ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ক্যাজুয়ালটি নেই।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভোটাররা কেন্দ্রে আসেননি এটা যদি বলেন, এটা তো স্থানীয় নির্বাচন, ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে ছিল ৪২ শতাংশ। বিএনপি নেতাদের বলব, ১৫ ফেব্রুয়ারির যে নির্বাচন তাতে বিবিসি বলেছিল ৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। নির্বাচন কমিশন ২১ শতাংশ। আপনাদের জাতীয় নির্বাচনে ২১ শতাংশও যদি ধরি তাহলে ৩০ শতাংশ এটা কম কিসের?
তিনি আরও বলেন, যা ভোট পড়েছে সেটাকে খুব বেশি ভালো বলা যাবে না। বলব মোটামুটি ভালো হয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতি টার্ন আউট নিয়ে আমার মনে হয় বেশি কথার বলার প্রয়োজন নেই।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জনসমক্ষে আনার আগে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র-ঘোষিত ভিসানীতির অধীনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। অন্য আইনের (অ্যাক্ট) অধীনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার অভিযোগে আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় সোমবার (বাংলাদেশ সময় সোমবার মধ্যরাতের পর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে অযোগ্য ঘোষণার কথা জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার কারণে আজিজ আহমেদকে ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট, ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে পররাষ্ট্র দপ্তর। এর ফলে আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য হবেন।’
আগামী ২৩ মে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে জোট শরিকদের নিয়ে বসবেন তিনি। আজ সোমবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
বৈঠকে শরিক দলগুলোর এজেন্ডায় কী থাকবে– জানতে চাইলে হাসানুল হক ইনু বলেন, দীর্ঘদিন পর, নতুন সরকার গঠনের পর প্রথম বৈঠক হচ্ছে ১৪ দলের। এতে জোট নেত্রী ১৪ দল সম্পর্কে কী বলেন, কী প্রস্তাব দেন সেটা আগে আমরা শুনব। তারপর দলগতভাবে এ নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে কয়েকটি সমাবেশ হয় ১৪ দলের ব্যানারে। আর ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে গত ৪ ডিসেম্বর জোট নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার। নির্বাচনের আগে আসন ভাগাভাগি নিয়ে গত ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
ক্রেতারা যাতে প্লট বা ফ্ল্যাট ক্রয় করতে গিয়ে কোনো ধরণের হয়রানির শিকার না হয়, সে ব্যাপারে রিহ্যাব কর্তৃপক্ষকে সচেষ্ট থাকার নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
আজ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সাথে রিয়েল এস্টেট এন্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)-এর সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, “আবাসন খাতের উন্নয়ন ও বিকাশে রিহ্যাবের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি আরো বলেন, “ক্রেতারা যাতে প্লট বা ফ্ল্যাট কিনে কোনো ধরণের হয়রানির শিকার না হয়।”
সাহাবুদ্দিন বলেন, আবাসন মানুষের অন্যতম মৌলিক চাহিদা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে কেউ যেন গৃহহীন না থাকে, সে লক্ষ্যে আশ্রয়নসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বাসসকে জানান, সাক্ষাতকালে প্রতিনিধিদল রিহ্যাবের সার্বিক কার্যক্রম ও তাদের বিভিন্ন কর্মসূচি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন।
এ সময় প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের আবাসন খাতে রিহ্যাবের অবদানের কথা তুলে ধরেন।
বৈঠককালে তারা এ খাতে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যার উত্তরণে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
প্রতিনিধি দল আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় রিহ্যাব ফেয়ার ২০২৪-এ রাষ্ট্রপতিকে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানান। সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত তিন চাকার গাড়ি চলাচলের অনুমতি দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে দেশের ২২টি মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ সোমবার দুপুরে গুলিস্তান বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ওলামা লীগের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্মূল্যের বাজারে মেহেনতি মানুষের দুঃখ দুর্দশা বিবেচনা করে বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্রব্যমূল্যের কথা চিন্তা করে সিটি এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ওলামা লীগে চাঁদাবাজের স্থান নেই। ধর্মের নামে ধর্ম ব্যবসা চলবে না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করতে হলে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতার আদর্শ মেনে চলতে হবে। শেখ হাসিনার সৎ রাজনীতিকে অনুসরণ করতে হবে। ফ্রি স্টাইলে যা খুশি বলিবেন, এই রকম লোকের আমাদের দরকার নেই।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা আমাদের পবিত্র ধর্ম ইসলামের জন্য ও এর বিকাশে যে অবদান রেখেছেন, যে সব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন বাংলাদেশে অন্য কোন শাসক কিছুই করেননি সে তুলনায়।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে শেখ হাসিনা উপমহাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। তার নেতৃত্ব, দায়িত্বশীলতা, গুণ, ধৈর্য তাকে আজকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। আমাদের সবারই বিকল্প আছে কিন্তু বাংলাদেশে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নাই।’
আজ রোববার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত শোভযাত্রার প্রাক্কালে তিনি এসব কথা বলেন।
যুবলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যুবলীগের নেতা-কর্মীদের দায়িত্ব রয়েছে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা, দেশের উন্নয়নের যে ধারা, উন্নয়নের সুফল শুধু জনগণের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিলেই হবে না, এই অপশক্তিরা আর কোন দিন যেন এদেশের জনগণের অধিকার ক্ষুণ্ন করতে না পারে সে দিকে যুবলীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীরা দৃষ্টি রাখবেন। দরকার হলে বুকের রক্ত দিয়ে জনগণের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন।
শেখ হাসিনার দেশে প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, যেখানে সামরিক জান্তারা রাতের পর রাত মুক্তিযোদ্ধা সেনাবাহিনীর অফিসারদের হত্যা করেছে, ফাঁসি দিয়েছে সেই প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার এই আগমন ছিল অত্যন্ত সাহসী ও আত্মত্যাগী। সেই আগমনের বার্তা এদেশের লাখ লাখ নিপীড়িত, শোষিত মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল, এদেশের জনগণ আস্তা ফিরে পেয়েছিল, স্বপ্ন দেখেছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্বপ্নের বাংলাদেশ পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার।
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিককালে যুক্ত হয়েছে পর-নির্ভর রাজনীতি। আজকে তারা বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভর করে। কিন্তু জনগণের ওপর নির্ভর করে না। তারা নির্ভর করে মিস্টার ল্যু’দের ওপর। যে তাদের হাত ধরে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। সেই স্বপ্ন আজকে ব্যর্থ হয়েছে, ধূলিসাৎ হয়েছে। কারণ, শেখ হাসিনার সঙ্গে এদেশের আপামর জনগণ রয়েছে।
সরকারের ধারাবাহিকতা এবং স্থায়িত্বতায় দেশে এতো উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা একটা কথা কেউ বলি না, আজকের বাংলাদেশের এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধ কেন হয়েছে? সরকারের ধারাবাহিকতায় এবং স্থায়িত্বতার কারণে। এর কারণেই বাংলাদেশের এত উন্নয়ন ও অর্জন সম্ভব হয়েছে। এই কারণে বিশ্বের বিস্ময়ে রূপান্তরিত হতে পেরেছে বাংলাদেশ।’
দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অতি আপনজন এই দেশের জনগণ। হতাশা কবলিত বাংলাদেশে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
জনগণকে সুন্দর ও উন্নত জীবন দিতে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘প্রতিবার নির্বাচনের সময় চক্রান্ত হয়, সেটা মোকাবিলা করে আমরা বেরিয়ে আসি। আমাদের তা ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে যে অধিকারগুলো আদায় করেছিল, সেটা আমরা সমুন্নত করতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি আজ তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে তাকে গণভবনে শুভেচ্ছা জানাতে আসা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন।
’৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে দীর্ঘ প্রবাস জীবন কাটাতে বাধ্য হওয়া শেখ হাসিনা একরকম জোর করেই দেশে ফিরে আসেন। এর আগে তার অনুপস্থিতিতেই তাকে সর্বস্মতিক্রমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এ দিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকার কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। ঝড়-ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ সেই দিনে বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে লাখ লাখ জনতা তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানায়।
তিনি যখন দেশে ফেরেন তখন যুদ্ধাপরাধী এবং জাতির পিতার হত্যাকারীরা ক্ষমতায় ছিল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার পাশে ছিল বাংলাদেশের জনগণ। তিনি জানতেন তাকেও তার বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের ভাগ্যবরণ করতে হতে পারে। কিন্তু দেশবাসী ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি ছিল তার আস্থা।
শেখ হাসিনা বলেন ‘আমি আমার বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলব, আমার সব শক্তি-সাহস মা-বাবার কাছ থেকে পেয়েছি।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় এত বড় সংগঠন চালানোর অভিজ্ঞতা আমার ছিল না। সেই আওয়ামী লীগ এখন দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী, বৃহত্তম এবং জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য সংগঠনে পরিণত হয়েছে। পঞ্চম মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছে।
আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ উল্লেখ করে টানা চারবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের যদি রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা না থাকে, দেশপ্রেম না থাকে, সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় না থাকে, তাহলে সেটা এগোতে পারে না। সামনে আরও বদলাতে হবে। কারণ, আমার বাবার একটাই স্বপ্ন ছিল দেশটাকে গড়ার। আমাদের পরিকল্পনা সেটাই আছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ’৭৫-এর পর যারা ক্ষমতায় ছিল তারা নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করেছিল। দেশের কোনো উন্নতি করতে পারেনি। তারা বরং শত শত সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে এবং ক্ষমতায় থাকার জন্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অমানবিক নির্যাতন ও হত্যা করেছে। এ সময় প্রতিরাতে কারফিউ বলবৎ রাখার জিয়াউর রহমানের কারফিউ গণতন্ত্রের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের অগণিত নেতা-কর্মীর গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ও আত্মাহুতির কথাও তিনি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী তার উন্নয়নের মূলমন্ত্র তুলে ধরে বলেন, কী পেলাম, না পেলাম সেই চিন্তা করেনি। ভবিষ্যৎ কী সেই চিন্তাও করি না। চিন্তা করি দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ যেন আরও সুন্দরভাবে গড়ে তুলে দিয়ে যাব। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
দলীয় নেতাদের আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, এটাই মনে রাখবেন একটা দল করি শুধু নেতা হওয়ার জন্য নয়, মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম, কী দিতে পারলাম, কী দিয়ে গেলাম। এটাই রাজনৈতিক মানুষের জীবনের বড় কথা। এ কথা মাথায় রাখতে পারলে দেশের মানুষের জন্য অনেক কিছুই করা যেতে পারে।
সংগঠনকে শক্তিশালী করার তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আর যেন যুদ্ধাপরাধী, খুনিরা বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে।
‘দেশের মানুষ রক্ত দিয়ে যে অধিকার পেয়েছিল, তা তারা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা হয়েছিল এবং বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার ও জয় বাংলা স্লোগান-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু জয়বাংলা স্লোগান আবার ফিরে এসেছে এবং জাতির পিতা ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিলে যেমন স্থান করে নিয়েছে, তেমনি অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভভাষা দিবসের স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
এর আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা তাদের দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে গণভবনে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন,বাংলাদেশের গত ৪৪ বছরে সবচেয়ে সাহসী রাজনীতিকের নাম শেখ হাসিনা, সবচেয়ে বিচক্ষণ নেতার নাম শেখ হাসিনা, সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসকের নাম শেখ হাসিনা, সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতার নাম শেখ হাসিনা, সবচেয়ে সফল কূটনীতিকের নাম শেখ হাসিনা।
আজ শুক্রবার (১৭মে) বিকেলে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর থেকে যে পরিবর্তন হয়েছে সেই পরিবর্তনের রূপান্তরের রূপকার শেখ হাসিনা। আজকে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন দৃশ্যমান তা শেখ হাসিনার ম্যাজিক।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে মুক্তিযুদ্ধের হারিয়ে যাওয়া মূল্যবোধের প্রত্যাবর্তন বলেও মন্তব্য করেন তিনি ।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।
এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন শহীদ আলতাফ মাহমুদের কন্যা শাওন মাহমুদ, শহীদ বুদ্ধিজীবী ডাক্তার আলিমের কন্যা ডাক্তার নুজহাত, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বেনজির আহমেদ, দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান প্রমুখ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে এসেছেন বলেই বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশে এখন রোল মডেল। তিনি এসেছেন বলেই যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদ আয়োজিত সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ আলাউদ্দিন সভার সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সরদার মাহামুদ হাসান রুবেল।
পদ্মা সেতুর শুরুর কথা তুলে ধরে বক্তারা বলেন, বিশ্বব্যাংক আমাদের চোর অপবাদ দিয়ে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করা থেকে সরে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সবাইকে— শেখ রেহানা, জয়, ববি, সবার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়েছিল। সেদিন শেখ হাসিনা না থাকলে পদ্মা সেতু করার সাহস হতো না।
তারা বলেন, একাত্তর ও পঁচাত্তরের ঘাতকরা সবাই শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। কিন্তু মহান আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে আছেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয় শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা হয়েছে। যারা বলে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে, তারা পাকিস্তানে যাক। বাংলাদেশ কখনো শ্রীলঙ্কা হবে না।
সংগঠনের নেতারা আরও বলেন, ছিটমহল সমস্যার সমাধান, তিস্তা পানি সমস্যার সমাধান, গৃহহীনদের বাড়ি দেওয়া, মেট্রোরেল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন এসবই শেখ হাসিনার দেশে প্রত্যাবর্তনের কারণে সম্ভব হয়েছে।
শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ১৯৮১ সালে জিয়া সরকার স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিদের দিয়ে ‘শেখ হাসিনা আগমন প্রতিরোধ কমিটি’ পর্যন্ত করিয়েছিল। আওয়ামী লীগেরও অনেকেই শেখ হাসিনার প্রত্যার্বতন হোক তা চাননি।
বঙ্গবন্ধু কন্যার দেশে ফেরার বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ডা. এস এ মালেকের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে ও দলের সভাপতি বানাতে ওই সময় ডা. মালেক অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেও তা স্বীকার করে তার বক্তব্যে বলেছেন।
সরদার মাহামুদ হাসান রুবেল বলেন, ‘আমরা রাজনীতি শিখেছি ডা. মালেকের কাছ থেকে, যিনি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনেন। শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি সব সময় উৎসাহিত করেছেন।’
রুবেল বলেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরা ঠেকাতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এরপরও তাকে আটকানো যায়নি। তিনি এসেছেন।
ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘একটা সময় ছিল ঈদ ছাড়া জামা-কাপড় কেনা হতো না। অনেক দরিদ্র বন্ধুদের দেখেছি ঈদের সময় স্কুলড্রেস বানিয়ে পরতো, পরে সেটিই পরে স্কুলে যেত। সেই দিন বাংলাদেশে আর নেই। দেশের এই উন্নয়ন ও পরিবতর্ন সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার দেশে ফেরার মধ্য দিয়ে।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ড. আব্দুল ওয়াদুদ, ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি বিনয় ভূষন তালুকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম ওয়াহিদুজ্জামান মিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল আমিন রঞ্জন, মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক মাসুদুর রহমান, সংগঠনের আইনবিষয়ক সম্পাদক নিতীশ সরকার, নুর ইসলাম, হাবিবুর রহমান খোকন, দৃষ্টি প্রামানিক, মো. জামিল হোসেন, অহিদুর রহমান, আপেল মাহমুদ, এস এম শামীম আহমেদ, সাংবাদিক মাজেদুল হক তানভীর প্রমুখ।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল একটা জাগরণ বলে মন্তব্য করেছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি। তিনি বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের পরাজয়কে মেনে নিতে পারেনি, তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, তারাই বাংলাদেশকে আবার উল্টো পথে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। ১৭মে শুধু জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন হয়নি, হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যাবর্তন, হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যাবর্তন।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে 'তিনি ফিরে এসেছিলেন বলেই...' শীর্ষক সেমিনারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জাহাঙ্গীর কবির নানক আরও বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার পথ রুদ্ধ করার জন্য তাকে ৯ বার কারারুদ্ধ করা হয়েছিল, ১৪ বার হত্যা চেষ্টা করা হয়েছিল। তবুও থামাতে পারেনি।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস। ড. বিশ্বাস তার প্রবন্ধে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও শত বাধা সত্ত্বেও বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার বিশ্লেষণ তুলে ধরেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, শেখ হাসিনা যখন দেশে ফিরেছিলেন তখন গোটা দেশ ছিল এক রুদ্ধ কারাগার। তিনি দেশে ফিরেই যেন দেশের ভার গ্রহণ করেছিলেন। শেখ হাসিনা দেশে ফেরার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ প্রাণশক্তি ফিরে পেয়েছিল।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায়ের সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া, অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম পরিচালক, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু গবেষক এবং দৈনিক বাংলা ও নিউজবাংলা২৪ এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ আফিজুর রহমান, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী, সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে গবেষণামূলক প্রবন্ধ উপস্থাপন ও আলোচনা সভার অংশ হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে এ সেমিনারের আয়োজন করে।