“দেখো, ঠিক এই শটটা মেরেই আমি উইম্বলডন জিতব!”
অনুশীলন করতে থাকা গ্রুপের সবচেয়ে ছোট্ট ছেলেটা খিলখিলিয়ে হেসে বলে উঠল। কথাটা দূর থেকেই শুনলেন ম্যাডালেন বেয়ারলকার। বাসেল ওল্ড বয়েজ ফুটবল ক্লাবের কো-অর্ডিনেটর ছেলেটার আত্মবিশ্বাস দেখে মনে মনে খুশি হলেন, একটা অজানা আতঙ্কও গ্রাস করল তাঁকে। ছেলেটা যে নিজের সামর্থ্য নিয়ে অনেক বেশিই আত্মবিশ্বাসী!
এতটাই যে, কখনও হেরে গেলে, বা বাজেভাবে পয়েন্ট হারালে ছেলেটা প্রায়ই মেজাজ হারায়। র্যাকেট ছুঁড়ে ফেলা, চিৎকার করা, ঝগড়াঝাঁটি, হাউমাউ করে কান্নাকাটি - এগুলো তো নিত্যদিনের অভ্যাস। আবেগ নিয়ন্ত্রণ? সেটা যেন জানেই না এই ছেলে। মেজাজী ছেলেকে সামলাতে বেয়ারলকার থেকে শুরু করে কোচ পিটার কার্টার - সবাইকে নিয়মিত বেগ পেতে হয়। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য যে শুধু জয়ই নয়, হারের সঙ্গেও পরিচিত হতে হয়, ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে সফল হওয়ার যে যাত্রাপথ, সে পথকে চিনে রাখতে হয় - সেটা কে বোঝাবে একে?
বেয়ারলকার-কার্টাররা কম চেষ্টা করেননি। কোর্টে যখনই ছেলেটা এমন কোনো কাণ্ড ঘটাত, কার্টার একপাশে টেনে নিয়ে যেতেন তাঁকে। বোঝাতেন, প্রকৃত চ্যাম্পিয়নদের এমন করতে নেই। নিজ লক্ষ্যে স্থির থাকতে হয় চ্যাম্পিয়নদের। আবেগ যেন মন-মননে বাসা না বাঁধে, পেশাদারত্বের বাতাবরণে সেটা নিশ্চিত করতে হয়। আবেগ যে বড্ড বেয়াড়া, প্রশ্রয় দিলে মানুষকে লক্ষ্যচ্যুত করবেই!
কার্টারদের সে চেষ্টায় লাভ হতো সামান্যই। কখনও কখনও সাহায্য করতে এগিয়ে আসতেন ছেলেটার বাবা রবার্ট ও মা লিনেট। রবার্ট আর দশজন সুইসের মতো বেশ ঠাণ্ডা মাথার মানুষ। রাগারাগি তাঁর ধাতেই নেই, সেই রবার্টও কখনও কখনও বিদ্রোহী ছেলের কার্যক্রম দেখলে বিরক্ত হতেন। একবার এক টুর্নামেন্টে বাজে খেলে ছেলেটা বাদ পড়ল। ক্ষোভে ফোঁস ফোঁস করতে থাকা ছেলেকে নিয়ে বাবা রবার্ট গাড়িতে করে ফিরছিলেন। পুরো রাস্তায় ছেলে এত বেশি চিৎকার-চেঁচামেচি করছিল, শেষমেশ গাড়ি থামিয়ে ঘাড় ধরে ছেলেকে বের করে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা বরফের চাঁইয়ের মধ্যে মাথাটা ঘষে দিলেন কিছুক্ষণ। অন্তত বরফের স্পর্শ পেয়ে যেন ছেলের ভেতরের আগুন একটু নেভে!
মা লিনেটও একদিন ছেলেকে ধরে-বেঁধে কাছে বসালেন। ভালোমন্দ দুটো কথা বলে যদি লাইনে আনা যায় আর কি! “দেখো বাবা, তুমি যখনই রেগে যাবে, এর অর্থ হলো তুমি তোমার প্রতিপক্ষকে বার্তা দিচ্ছ, সে তোমাকে হারানোর জন্য যা যা করছে - ঠিক করছে। তোমার আবেগের বহিঃপ্রকাশ তাকে জয়ের জন্য আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। তুমি কি সেটা চাও?”, সোজাসাপ্টাই বলেছিলেন লিনেট।
এত আবেগ, এত বদরাগ - সব যে আসলে অদম্য জিগীষারই বহিঃপ্রকাশ - সেটা বুঝতে কারওর বাকি থাকার কথা না এতক্ষণে। কিন্তু ওই যে, অনিয়ন্ত্রিত আবেগ যে চ্যাম্পিয়নদের লাভের চেয়ে ক্ষতিই করেছে যুগ যুগ ধরে। খেয়ালি ম্যারাডোনা তা না হলে মেরেকেটে দুবার লিগ জেতেন না, ছিয়াশিতে একবার বিশ্বজয় করে চুরানব্বইয়ের বিশ্বকাপে ভক্তদের মনে অনন্ত আক্ষেপ জাগিয়ে থেমে যান না। লাগামহীন চিত্তচাঞ্চল্যর পায়ে বেড়ি পরালে হয়তো জন ম্যাকেনরোর ঘরেও সাতটার বেশি গ্র্যান্ড স্ল্যাম শোভা পায়।
বেয়ারলকার-কার্টাররা সে ভয়ই পেতেন - হয়তো ছেলেটা নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করতে পারবে না বদরাগের কারণে। এমনিতেই সুইজারল্যান্ডের ছেলেমেয়েরা টেনিস খেলাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে চায় না। বাসেল ওল্ড বয়েজ ক্লাবে যে দুই-একজন প্রতিভাবান শিশু-কিশোর টেনিসের জন্য এসেছে, প্রত্যেকেই কোনো না কোনো পর্যায়ে গিয়ে ঝরে পড়েছে। বেয়ারলকার চান না, এই ছেলেরও সেই নিয়তি হোক। এই ছেলে যে লাখে একটা!
জীবনের প্রথম জুনিয়র উইম্বলডন খেলতে গিয়ে শিরোপার নেশায় বিভোর ছেলেটা দুম করে হেরে বসল সেমিফাইনালে। ততদিনে এই ছেলেকে সুইসরা নিজেদের টেনিস-ভবিষ্যৎ হিসেবে ভাবা শুরু করেছে, ভাবা শুরু করেছে মার্টিনা হিঙ্গিস আর প্যাটি স্নাইডারদের যোগ্য উত্তরসূরি। হারের রেশ কাটতে না কাটতেই রেডিও সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য হাজিরা দিতে চলে যায় সেই ছেলে। উপস্থাপক মার্কো মোর্দাসিনি ব্যস্ত ছিলেন একটু, ছেলেটাকে বললেন, খানিক অপেক্ষা করতে। কাজ করতে করতেই মোর্দাসিনির কানে এলো, ছেলেটা পাশের ঘরে বসে কাঁদছে। সে কান্নায় ম্যাচ হারের যন্ত্রণা যতটা না ছিল, তার চেয়ে বেশি ছিল এত বড় একটা সুযোগ হারানোর বেদনা। এমন সুযোগ হারানোর দোষটা তো নিজেরই। এভাবে চলতে থাকলে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের সেই প্রতিশ্রুতি জীবনেও পূরণ করা যাবে না!
সমাধান একটাই, বদলাতে হবে নিজেকে। মানুষ হিসেবে, প্রতিযোগী হিসেবে।
সময় যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কতকিছুই তো বদলায়। ছেলেটাও শিখে যায় আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে। এতটাই যে, একটা সময় কোর্টে ছেলেটার খেলা, চলন-বলন দেখলে ধ্যানমগ্ন ঋষি ছাড়া কিছুই মনে হতো না। জঘন্য এক শট খেলে পয়েন্ট হারালো, বা বিখ্যাত ওয়ান হ্যান্ডেড ব্যাকহ্যান্ড শটটা ঠিক যুতসই হলো না - চুপচাপ বেসলাইনে চলে যেত, পরের পয়েন্টের জন্য লড়াই করতে।
যে আগে নিজেকেই সামলাতে পারত না, এক সময় পুরো খেলারই সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হয়ে উঠল। হয়ে উঠল অদ্বিতীয় শুভেচ্ছাদূত। বিশ্বব্রহ্মান্ডে এমন মানুষ খুঁজলে অনেক পাওয়া যাবে, যারা টেনিস খেলার নিয়ম-কানুন অতটা না জানলেও, ছেলেটাকে এক লহমায় চিনতে পারে। সংবাদ সম্মেলন থেকে শুরু করে সব জায়গায় ছেলেটার সঙ্গী হলো মুচকি একটা হাসি, যে হাসিতে মিশে নেই কোনো প্রতিহিংসা, দ্বেষ বা প্রতিপক্ষের প্রতি অসম্মান। টেনিসে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের মাপকাঠি ছেলেটা এত উঁচুতে নিয়ে গেল, যা অতিক্রম করার জন্য রাফায়েল নাদাল-নোভাক জোকোভিচদের অতিমানব হওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায়ও ছিল না।
ছেলেটার নাম রজার ফেদেরার।
বলা বাহুল্য, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফেদেরার শিখে গিয়েছিলেন প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেও। বাসেল ওল্ড বয়েজ ক্লাবের এক অনুশীলনে একদিন উইম্বলডন জেতার ঘোষণা দেওয়া সেই ফেদেরার অল ইংল্যান্ড ক্লাবে রাজত্ব করেছেন একবার নয়, আট-আটবার। সব মিলিয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন বিশবার। এর চেয়ে ভালোভাবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা কী আসলেও যেত? সত্যিকারের চ্যাম্পিয়নরাই তো এভাবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে জানেন!
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদালের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গত রাতে জীবনের শেষ ম্যাচটা খেলতে নেমেছিলেন। শেষ ম্যাচে ফেদেরার জিতবেন, তাতে ভাগ্য বিধাতার সায় ছিল না হয়তো। কিংবা কে জানে, বিশ্বজয়ী অ্যাথলেটদের আখ্যানের শেষ পর্বে একটু অপ্রাপ্তির ছোঁয়া থাকবে, সেটাই হয়তো নিয়তি। যে কারণে উসাইন বোল্ট জীবনের শেষ রেসে দৌড়াতে নেমে হ্যামস্ট্রিংয়ের কাছে হেরে যান, আর্জেন্টিনা বা ফ্রান্সের হয়ে ম্যারাডোনা আর জিদানের শেষ ম্যাচটা মোড়ানো থাকে অপ্রাপ্তিতে। মোহাম্মদ আলীকেও রিং থেকে নেমে যেতে হয় অধোবদনে। রজার ফেদেরারই -বা সে ধারার ব্যতিক্রম হবেন কেন!
জ্যাক সক-ফ্রান্সিস তিয়াফোর জুটির বিপক্ষে নিজের শেষ ম্যাচটায় জয়ের মুখ দেখা হয়নি ফেদেরারের। তবে এমন দিনে ম্যাচের ফলাফল কি আসলেই কোনো অর্থ বহন করে? বেদনার চাদরে মোড়া লন্ডনের ওটু অ্যারেনায় দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী নাদাল আর জোকোভিচের বাঁধনহারা কান্নাই বুঝিয়েছে, গত দেড় দশকে একজন ফেদেরার না থাকলে তাঁদের মনে জয়ের নেশাটা হয়তো এভাবে জেগে উঠত না। হয়তো অবিশ্বাস্য সাফল্যে মোড়া ক্যারিয়ারও পেতেন না দুজন।
বিশ গ্র্যান্ড স্ল্যামের পাশাপাশি তাই রজার ফেদেরারের সবচেয়ে বড় অর্জন টেনিসকে রাফায়েল নাদাল আর নোভাক জোকোভিচের মতো দুজন হার-না-মানা মানসিকতার অ্যাথলেটকে শ্রেষ্ঠত্বের ওই রাস্তাটা দেখিয়ে দেওয়া, তাদের আজকের পর্যায়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করা। টেনিসকে আজকের এই পর্যায়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করা।
সকল প্রতিদ্বন্দ্বিতা, রেষারেষি ছাপিয়ে যেকোনো খেলার সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য তো ওখানেই!
ভারতের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম টেস্টের প্রথম দিন দাপট দেখিয়েছে বৃষ্টি ও ইংল্যান্ডের বোলাররা। বৃষ্টির কারণে প্রথম দিন খেলা হয়েছে ৬৪ ওভার। আর ইংল্যান্ড বোলারদের তোপে প্রথম দিন শেষে ৬ উইকেটে ২০৪ রান করেছে ভারত। ব্যাট হাতে ভারতের হয়ে লড়াই করে ৫২ রানে অপরাজিত আছেন করুন নায়ার।
ওভালে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৩৮ রানে ২ উইকেট হারায় ভারত। দুই ওপেনার যশ্বসী জয়সওয়াল ২ ও লোকেশ রাহুল ১৪ রানে আউট হন। তৃতীয় উইকেটে ৪৫ রানে জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন সাই সুদর্শন ও অধিনায়ক শুভমান গিল।
সুদর্শন ৩৮ ও গিল ২১ রানে আউট হন। ২১ রানের ইনিংস খেলার পথে ওয়েস্ট ইন্ডিজের গ্যারি সোবার্স ও স্বদেশি সুনীল গাভাস্কারের রেকর্ড ভাঙেন গিল।
দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় সফরকারী অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি রান করে সোবার্সের ৫৯ বছরের রেকর্ড ভাঙেন গিল। ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের সিরিজে ৭২২ রান করেছিলেন সোবার্স।
এছাড়া ভারতের অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি রানে গাভাস্কারের ৪৬ বছরের রেকর্ড ভাঙেন গিল। ১৯৭৮-৭৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬ টেস্টের ৯ ইনিংসে ৭৩২ রান করেছিলেন গাভাস্কার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি সিরিজে ইতোমধ্যে ৭৪৩ রান করে ফেলেছেন গিল।
দলীয় ১০১ রানের মধ্যে সুদর্শন ও গিল ফেরার পর ভারতের রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন নায়ার। রবীন্দ্র জাদেজা ৯ ও উইকেটরক্ষক ধ্রুব জুরেল ১৯ রানে থামলে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি করেন নায়ার।
সপ্তম উইকেটে ওয়াশিংটন সুন্দরকে নিয়ে ৫১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করেন নায়ার। ৭টি চারে নায়ার ৫২ এবং সুন্দর ২ চারে ১৯ রানে অপরাজিত আছেন।
তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা জেলা প্রশাসক (ডিসি) আন্তঃউপজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কেরানীগঞ্জ উপজেলা। সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেলে মোহাম্মদপুর শারীরিক শিক্ষা কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত ফাইনালে তারা ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে ধামরাই উপজেলাকে।
বিজয়ী দলের হয়ে হিমেল ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে ম্যান অব দি ম্যাচ ও টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত হন। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ।
এর আগে কেরানীগঞ্জ উপজেলা হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে দুই রাউন্ডের সেমিফাইনালে সাভার উপজেলাকে ৩-২ গোলে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে।আর দ্বিতীয় সেমিফাইনালে কেরানীগঞ্জের আটি ভাওয়াল মাঠে দোহার উপজেলাকে ৪-০ গোলে পরাজিত করেছিল ধামরাই উপজেলা ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া, ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামনুন আহমেদ অনীক, ঢাকা জেলা ক্রীড়া অফিসার সুমন কুমার মিত্র, কেরানীগঞ্জ উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা নুরুন নাহার , ধামরাই উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ইসলাম আল হাজিবসহ অনেকে
এবারের ডিসি কাপ ফুটবলে কেরানীগঞ্জ উপজেলার ধারাবাহিক আধিপত্য বিস্তার করে। ফাইনালে জয় ছিনিয়ে নিয়ে শিরোপা জয়ের মাধ্যমে তারা প্রমাণ করেছে ক্রীড়াক্ষেত্রে কেরানীগঞ্জ এখন অন্যতম শক্তিশালী একটি নাম।
গতরাতে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৭৪ রানে হারে বাংলাদেশ।
প্রথম ম্যাচ ৭ উইকেটে এবং দ্বিতীয় ম্যাচ ৮ রানে জিতে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে আগেই পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ।
শেষ ম্যাচ জিতে প্রথমবারের মত পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন ছিল টাইগারদের। কিন্তু শেষ ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতায় হারতে হয় বাংলাদেশকে। ফলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে লিটন দাসের দল।
সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ শেষে লিটন বলেন, ‘উইকেট ব্যাট করার জন্য ভালো ছিল। কিন্তু এ ম্যাচে আমরা ভাল ব্যাট করতে পারিনি।’
তৃতীয় ম্যাচে ব্যাটাররা খারাপ করলেও সিরিজে বাংলাদেশ ভাল ক্রিকেট খেলেছে বলে জানান লিটন, ‘এই সিরিজে ছেলেরা সত্যিই ভাল ক্রিকেট খেলেছে। এ কারণেই আমরা সিরিজ জিতেছি।’
সিরিজের শেষ ম্যাচে পাঁচটি পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের কথা মাথায় রেখে দলের সবাইকে এই সিরিজে অন্তত একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই শেষ ম্যাচে পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট।
এশিয়া কাপের জন্য সেরা দল বাছাই করতে খেলোয়াড়দের পরখ করার চেষ্টা করেছিল বাংলাদেশ। লিটন বলেন, ‘আমরা সঠিক পথেই এগোচ্ছি। আমরা নতুন খেলোয়াড়দের কয়েকটি সুযোগ দিয়েছি। আমার মনে হয় এটি ইতিবাচক (সিরিজ) জয়।’
আগামী মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের ১০ নম্বর জার্সি পড়ে মাঠে নামবেন ফরাশি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। ক্লাবের হয়ে আগের মৌসুমে অভিষেক হওয়া এমবাপ্পে প্রথম বছর পড়েছিলেন ৯ নম্বর জার্সি। ক্লাব সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
অভিজ্ঞ ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার লুকা মড্রিচ রিয়াল ছেড়ে এসি মিলানে যোগ দেয়ায় ১০ নম্বর জার্সিটি ফাঁকা হয়ে যায়। সান্তিয়াগোর বার্নাব্যুর সাথে ১৩ বছরের সম্পর্ক শেষ করে মৌসুমের পরে মড্রিচ ইতালিয়ান ক্লাবে যোগ দিয়েছেন।
ফ্রান্স জাতীয় দলের ১০ নম্বর জার্সিটি এমবাপ্পে ব্যবহার করেন। সূত্রটি জানিয়েছে রিয়ালে এই নম্বরের জার্সিটি যখন ফাঁকা হবে তখনই সেটা পড়ার লক্ষ্যস্থির করেছিলেন এমবাপ্পে। তবে মড্রিচ যদি আরো এক বছর তার চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করতেন তবে এমবাপ্পে আগামী মৌসুমেও ৯ নম্বর পড়েই মাঠেই নামতেন।
গত গ্রীষ্মে পিএসজি থেকে বহুল আকাঙ্খিত রিয়ালে যোগ দেবার পর পুরো মৌসুম জুড়েই এমবাপ্পে ব্যক্তিগত দক্ষতা দিয়ে রিয়ালকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
২৬ বছর বয়সী এমবাপ্পে লা লিগায় সর্বোচ্চ ৩১ গোল করেছেন। এছাড়া সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে অভিষেকে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর ৩৩ গোলের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছেন এই ফরাশি স্ট্রাইকার।
এর মধ্যে চারটি গোল এসেছে ফাইনালে, আটালান্টার বিপক্ষে উয়েফা সুপার কাপে ২-০ গোলের জয় ও পাচুয়ার বিপক্ষে ফিফা ইন্টাকন্টিনেন্টাল কাপে ৩-০ গোলের জয়ে দুটি গোল করেছেন এমবাপ্পে। এছাড়া কোপা ডেল রে ও স্প্যানিশ সুপারকোপায় বার্সেলোনার বিপক্ষে ফাইনালে হারের ম্যাচ দুটিতেও এমবাপ্পে গোল পেয়েছেন।
যদিও বড় কোন শিরোপা ছাড়া রিয়ালের মৌসুম শেষ করার কারনে এমবাপ্পেকে এখনো সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে। লা লিগায় বার্সেলোনার পরে থেকে দ্বিতীয় স্থান পায় রিয়াল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে আর্সেনালের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ক্লাব বিশ্বকাপে এমবাপ্পে নিজেকে প্রমানের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু গ্যাস্ট্রিকের গুরুতর সমস্যার কারনে গ্রুপ পর্বে তাকে হাসপাতালে কাটাতে হয়েছে।
যদিও তিনি পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে নক আউট পর্বে ফিরে আসেন। কিন্তু সেমিফাইনালে এমবাপ্পের সাবেক ক্লাব পিএসজির কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে রিয়ালকে বিদায় নিতে হয়।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রথমবারের মত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয়টিতে খেলতে নামছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস ও নাগরিক টিভি।
ব্যাটিং-বোলিং ও ফিল্ডিং তিন বিভাগে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করে ৭ উইকেটের জয় দিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলে এক ম্যাচ বাকী থাকতে সিরিজ জয় নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের।
আগামীকালের ম্যাচ জিততে পারলে প্রথবারের মত পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়বে বাংলাদেশ। সম্প্রতি শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের নজির গড়ে টাইগাররা।
গত মে মাসে পাকিস্তানের মাটিতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে প্রথম ম্যাচেই পাকিস্তানকে হারিয়ে সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছে টাইগাররা।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিং তোপে ১৯.৩ ওভারে মাত্র ১১০ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথমবার পাকিস্তানকে অলআউট করল বাংলাদেশ। তাসকিন ২২ রানে ৩টি ও মুস্তাফিজ ৬ রানে ২ উইকেট নেন। জবাবে ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের হাফ-সেঞ্চুরিতে ২৭ বল বাকী থাকতে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
মিরপুরের উইকেটে পাকিস্তানের ব্যাটাররা যেখানে সমস্যায় পড়েছে সেখানে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাট করেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে সফরকারী বোলারদের সামনে দাপটের সাথে ব্যাট করেছেন ওপেনার পারভেজ। ৩৯ বলে ৫৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২৩ ম্যাচের লড়াইয়ে বাংলাদেশকে চতুর্থ জয় এনে দেন পারভেজ।
পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের তিন জয়ই এসেছে মিরপুরের ভেন্যুতে। তাই মিরপুরেই সিরিজ দ্বিতীয় ম্যাচ হওয়ায় জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ম্যাচেও একই পরিকল্পনায় খেলার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস, ‘আমরা অবশ্যই উইকেট সম্পর্কে জানি কারণ মিরপুরে আমরা অনেক ক্রিকেট খেলেছি। ব্যাট করার জন্য এই উইকেট সহজ নয়। তবে আমরা যেভাবে ব্যাট করেছি, সেটি দুর্দান্ত ছিল।’
আগামীকালের ম্যাচের জন্য বাংলাদেশের একাদশে পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম। কারণ জয় পাওয়া একাদশ নিয়েই খেলতে নামার লক্ষ্য থাকবে স্বাগতিকদের।
সিরিজে টিকে থাকতে হলে দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই পাকিস্তানের। দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া পাকিস্তান। দলের প্রধান কোচ মাইক হেসন বলেন, ‘আমরা শুরুটা ভালভাবে করেছিলাম। ফখর জামানের চার-পাঁচটি চমৎকার শটে, আমরা উইকেট সম্পর্কে ভুল ধারণা পেয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কিছু বাজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যখন হঠাৎ করে বল ঢুকে যেতে লাগল ও বল লাফাতে লাগল তখন আমরা সঠিকভাবে নিজেদের মূল্যায়ন করতে পারিনি। ঐ সময় ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলা চ্যালেঞ্জিং ছিল।’
বাংলাদেশ দল : লিটস দাস (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, মোহাম্মদ নাইম, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি অনিক, শামিম হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, মাহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
পাকিস্তান দল : সালমান আলী আগা (অধিনায়ক), আবরার আহমেদ, আহমেদ দানিয়াল, ফাহিম আশরাফ, ফখর জামান, হাসান নাওয়াজ, হুসেন তালাত, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ আব্বাস আফ্রিদি, মোহাম্মদ হারিস (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ নাওয়াজ, সাহিবজাদা ফারহান (উইকেটরক্ষক), সাইম আইয়ুব, সালমান মির্জা এবং সুফিয়ান মুকিম।
সহজ জয় দিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
আজ তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তানকে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই নিয়ে চতুর্থবার পাকিস্তানকে হারাল টাইগাররা।
এর আগে ২০১৫ সালে দ্বিপাক্ষীক সিরিজে ৭ উইকেটে এবং ২০১৬ সালে এশিয়া কাপে মিরপুরের ভেন্যুতে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।
এছাড়াও ২০২৩ সালে হাংজুতে ১৯তম এশিয়ান গেমসে পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারের লজ্জা দিয়েছিল বাংলাদেশ।
এ ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ বোলারদের তোপে ১১০ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম পাকিস্তানকে অলআউট করে টাইগাররা। জবাবে ২৭ বল বাকী রেখে জয়ের স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়ে লিটন দাসের দল।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। টি-টোয়েন্টিতে টানা নয় ম্যাচ পর টস জিতলেন লিটন।
লিটনকে বোলিংয়ের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করেন বাংলাদেশের বোলাররা। পাওয়ার প্লেতে ৪১ রানের বিনিময়ে পাকিস্তানের ৪ উইকেট শিকার করেন টাইগারদের তিন পেসার ও এক স্পিনার।
ইনিংসের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে স্পিনার মাহেদির বলে শর্ট ফাইন লেগে পাকিস্তান ওপেনার ফখর জামানের সহজ ক্যাচ ফেলেন পেসার তাসকিন আহমেদ।
ক্যাচ ফেললেও দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে নিয়ে উইকেট তুলে নেন তাসকিন। ৬ রান করা সাইম আইয়ুবকে শিকার করেন তিনি। পরের ওভারে উইকেটের দেখা পান স্পিনার মাহেদি হাসান। ডিপ মিড উইকেটে শামীম হোসেনকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন মোহাম্মদ হারিস। ৪ রান করেন তিনি।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারে প্রথম আক্রমণে এসে পাকিস্তানের তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটান পেসার তানজিম হাসান। স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক লিটনকে ক্যাচ দেন ৯ বলে ৩ রান করা পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আঘা।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারেও বাংলাদেশকে উইকেট শিকারের আনন্দে মাতান কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। রানের খাতা খোলার আগেই ডিপ থার্ডম্যানে রিশাদ হোসেনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন হাসান নাওয়াজ।
বাংলাদেশের দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে মহাবিপদে পড়ে পাকিস্তান। অষ্টম ওভারে নিজেদের ভুলে চাপ আরও বাড়ে পাকিস্তানের। ফখরের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে ৩ রানে রান আউটের ফাঁদে পড়েন মোহাম্মদ নাওয়াজ। ৪৬ রানে ৫ উইকেট পতনের পর বড় জুটির চেষ্টা করেন ফখর ও খুশদিল শাহ।
জুটিতে সর্বোচ্চ ২৪ রান তুলে বিচ্ছিন্ন হন ফখর ও খুশদিল। এবার লিটনের দক্ষতায় খুশদিলের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হন ফখর। দু’বার জীবন পেয়ে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৩৪ বলে ৪৪ রান করেন ফখর।
৭০ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে ১শর নীচে গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু সেটি হতে দেননি খুশদিল শাহ ও আব্বাস আফ্রিদি। সপ্তম উইকেটে ২৯ বলে ৩৩ রান যোগ করেন দলের রান তিন অংকে নেন তারা। এরমধ্যে রিশাদ ও তানজিমের দুই ওভারে ৪টি ছক্কায় ২৭ রান যোগ করেন খুশদিল ও আফ্রিদি।
১৭তম ওভারে দলীয় ১০৩ রানে খুশদিলকে থামিয়ে জুটি ভাঙ্গেন মুস্তাফিজ। ১টি করে চার-ছক্কায় ২৩ বলে ১৭ রান করেন খুশদিল।
সপ্তম ব্যাটার হিসেবে খুশদিল ফেরার পর ৭ রানে শেষ ৩ উইকেট হারিয়ে ৩ বল বাকী থাকতে ১১০ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটিই সর্বনিম্ন রান পাকিস্তানের।
তাসকিনের করা শেষ ওভারের প্রথম তিন বলে ৩ উইকেট হারায় পাকিস্তান। এরমধ্যে একটি রান আউট ছিল।
তাসকিন ২২ রানে ৩টি, মুস্তাফিজ ৬ রানে ২টি এবং মাহেদি-তানজিম ১টি করে উইকেট নেন।
১১১ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৭ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে অভিষিক্ত পেসার সালমান মির্জার বলে ওপেনার তানজিদ হাসান এবং তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে লিটন দাস আউট হন। দু’জনই ১ রান করে করেন।
এরপর পাকিস্তান বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহিদ হৃদয়। অষ্টম ওভারে দলের রান ৫০এ নেন তারা।
১২ ওভার শেষে ৮০ রান পেয়ে যায় বাংলাদেশ। দলের ঐ স্কোরেই ১৩তম ওভারে পেসার আব্বাস আফ্রিদির বলে বোল্ড হন হৃদয়। ২টি করে চার-ছক্কায় ৩৭ বলে ৩৬ রান করেন হৃদয়। পারভেজের সাথে ৬২ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন হৃদয়।
হৃদয় ফেরার পর চতুর্থ উইকেটে ১৮ বলে ৩২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন পারভেজ ও জাকের আলি। টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৫৬ রানে অপরাজিত থাকেন পারভেজ। ৩৯ বল খেলে ৩ চার ও ৫ ছক্কা মারেন পারভেজ। ৩টি বাউন্ডারিতে অনবদ্য ১৫ রান করেন জাকের। সালমান ২ উইকেট নেন।
আগামী ২২ জুলাই মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামবে দু’দল।
বাংলাদেশ ৫-০ শ্রীলঙ্কা শিরোপা ধরে রাখতে যত বেশি সম্ভব গোল চাই। সেই লক্ষ্য নিয়েই শনিবার (১৯ জুলাই) সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচ খেলতে নামে স্বাগতিক বাংলাদেশ। পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমার্ধে বাংলাদেশ করতে পারে মাত্র ২ গোল। দ্বিতীয়ার্ধে একের পর এক আক্রমণ গড়ে গোলসংখ্যা বাড়ানো গেছে আরও ৩টি। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ জিতেছে ৫-০ গোলে। জোড়া গোল করেছেন পূজা দাস।
প্রথম দেখায় এই শ্রীলঙ্কাকেই ৯-১ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। লঙ্কান মেয়েরা অনেকটাই সংগঠিত ও প্রতিরোধ গড়ার মতো ফুটবল খেলেছে। বিশেষ করে রক্ষণভাগে তারা বাংলাদেশকে আগের ম্যাচের মতো সহজে জায়গা দেয়নি। যতটুকু দিয়েছে, বাংলাদেশের মেয়েরা অনেক সুযোগ নষ্ট করেছেন বল বাইরে মেরে।
ম্যাচের ২৫তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নিখুঁত শটে গোল করেন কানন রানী বাহাদুর। ব্যবধান দ্বিগুণ হওয়ার সুযোগ আসে ৩৮ মিনিটে, তবে সুরমা জান্নাতের জোরালো শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। এই অর্ধের শেষ দিকে রাইট ব্যাক পূজা দাস দ্বিতীয় গোলটি করেন। বক্সের ওপর থেকে তার লক্ষ্যভেদ। তৃতীয় গোলটাও করেছেন পূজা। এটি প্রায় ২০ গজ দূর থেকে নেওয়া শটে। ৮৬ মিনিটে তৃষ্ণা রানী করেন চতুর্থ গোল। যোগ করা সময়ে অধিনায়ক আফঈদা খন্দকারের পেনাল্টি গোলে হয়েছে ৫-০। ম্যাচে বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলার একাদশে আনেন ৫টি পরিবর্তন। মূল একাদশে ছিলেন না আফঈদা, স্বপ্না রানী, উমেহলা ও মুনকি আক্তারের মতো নিয়মিত মুখ। পরিবর্তিত একাদশে প্রথমবারের মতো গোলপোস্টের নিচে সুযোগ পান ফেরদৌসী আক্তার। এছাড়া রুপা আক্তার, পূজা দাস, নাদিয়া আক্তার ও কানন রানীকেও একাদশে রাখা হয়। সুরমা জান্নাত অধিনায়কের বাহুবন্ধনী পরে নেতৃত্ব দেন প্রথমার্ধে।
প্রথমার্ধে মাত্র দুটি গোল আসায় দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই মাঠে নামানো হয় আফঈদা, স্বপ্না রানী, উমেহলা ও মুনকিকে। তবুও গোলসংখ্যা সেভাবে বাড়েনি।
আজ গ্রুপের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নেপাল। সেই ম্যাচে ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন হবে স্বাগতিকরা। তবে যদি হেরে যায়, তাহলে হেড টু হেড বা মুখোমুখি লড়াইয়ের হিসাব আসবে বিবেচনায়। সেখানেও সমতা থাকলে দেখা হবে গোল পার্থক্যের হিসাব। প্রতিদ্বন্দ্বী নেপাল গোল পার্থক্যে বেশ এগিয়ে। ভুটানকে ৮-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের গোলসংখ্যা নিয়ে গেছে ৩০-এ। ৪টি গোল খাওয়া দলটির গোল পার্থক্য +২৬।
আজকের শ্রীলঙ্কা ম্যাচের আগে বাংলাদেশ ছিল নেপালের চেয়ে ১১ গোল পিছিয়ে। সেই ব্যবধান কমাতেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছিল দল। বাংলাদেশের গোল পার্থক্য এখন +২০। অর্থাৎ ব্যবধানটা কমে এসেছে ৬-এ।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের পূর্বাচল পারমানেন্ট ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হলো ‘চৌধুরী জাফরুল্লাহ শরাফাত ট্রফি ২০২৫’ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত পর্ব। প্রতিযোগিতার ফাইনাল ম্যাচে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে CUB Underdogs ১-০ গোলে হারিয়েছে শক্তিশালী CUB Spurs FC-কে।
চূড়ান্ত ম্যাচে দুই শক্তিশালী দলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দর্শকদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি করে। পুরো আয়োজন জুড়ে ছিলো প্রাণবন্ত উৎসবের আমেজ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস চেয়ারম্যান জনাব চৌধুরী জাফরুল্লাহ শরাফাত। তিনি বিজয়ীদের হাতে ট্রফি ও পুরস্কার তুলে দেন এবং শিক্ষার্থীদেরকে পড়াশোনার পাশাপাশি সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধির পরামর্শ দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই টুর্নামেন্ট কেবল একটি খেলার আয়োজন নয়, বরং এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতৃত্ব, সহনশীলতা ও পারস্পরিক বন্ধন তৈরির একটি চমৎকার উদাহরণ হয়ে উঠেছে।
গত মৌসুমে বাজে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতায় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের তলানিতে নেমে গিয়েছিল লেস্টার সিটি। শেষ পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমিত হয়ে লেস্টার নেমে যায় দ্বিতীয় স্তরের ফুটবল লিগ চ্যাম্পিয়নশিপে। দলের দুর্দশার কারণে গত ২৭ জুন কোচের দায়িত্ব ছাড়তে হয় রুদ ফন নিস্টলরয়কে।
নিস্টলরয়ের জায়গায় লেস্টারে নিয়োগ পেয়েছেন কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের সাবেক কোচ মার্তি সিফুয়ন্তেস। স্প্যানিশ এই কোচকে আগামী ৩ বছরের জন্য কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে হামজা চৌধুরীর ক্লাব লেস্টার। সিফুয়েন্তেসের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ লেস্টারকে আবার প্রিমিয়ার লিগে ফিরিয়ে আনা।
এ নিয়ে ৩ বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে হচ্ছে লেস্টারকে। এর আগে ২০২৪ সালে এনজো মারেসকার অধীনে দ্বিতীয় স্তরের (চ্যাম্পিয়নশিপ) শিরোপা জিতে প্রিমিয়ার লিগে ওঠে এসেছিল লেস্টার। যদিও সে জায়গা ধরে রাখতে পারেনি তারা। পরের মৌসুমেই আবার অবনমিত হয়ে গেছে দলটি।
বারবার কোচ বদলের ধারায় সিফুয়েন্তেসের চাকরি শেষ পর্যন্ত কতদিন টিকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তাকেসহ গত ২ বছরে ৬ জন স্থায়ী কোচ নিয়োগ দিয়েছে ক্লাবটি। এখন শঙ্কা দূর করে সিফুয়েন্তেস শেষ পর্যন্ত থিতু হতে পারেন কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।
লেস্টারের প্রত্যাশা স্প্যানিশ কোচ সিফুয়েন্তেস ক্লাবে ‘আধুনিক ও অগ্রসরমান ফুটবল দর্শন’ নিয়ে আসবেন। ক্লাবের চেয়ারম্যান আয়াওয়াত শ্রীভাদ্ধানাপ্রভা বলেছেন, ‘সিফুয়েন্তেস ক্লাবের জন্য দারুণভাবে উপযুক্ত একজন কোচ। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তাকে ক্লাবে আনা আমাদের ভবিষ্যতে সেই সাফল্য গড়তে সাহায্য করবে, যা আমরা সবাই চাই।’
লেস্টার সিটির খেলোয়াড় হলেও হামজা অবশ্য অনেকটা সময় ধারে খেলেই কাটিয়েছেন। চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি ধারের চুক্তিতে শেফিল্ডে যান তিনি। এরপর ক্লাবটির হয়ে সব মিলিয়ে ১৬ ম্যাচ খেলেছেন বাংলাদেশ মিডফিল্ডার। ২৯ জুন ধারের চুক্তির মেয়াদ শেষ করে আবারও লেস্টারের ফিরেছেন হামজা।
তবে আগামী মৌসুমে হামজা কী লেস্টারেই থাকবেন নাকি অন্য কোথাও যাবেন, তা নিশ্চিত নয়। গুঞ্জন আছে, হামজাকে দলে টানতে চায় চ্যাম্পিয়নস লিগে সুযোগ পাওয়া গ্রিসের ক্লাব অলিম্পিয়াকোস। এখন হামজা লেস্টারে থেকে প্রিমিয়ার লিগে ফেরার জন্য দলকে সাহায্য করবেন নাকি অলিম্পিয়াকোসে গিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলবেন, সেটাই দেখার অপেক্ষা।
বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক স্পোর্টস (ই-স্পোর্টস) এখন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ক্রীড়া’ হিসেবে স্বীকৃতি পেল। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অ্যাক্ট-২০১৮-এর ২(২) ও ৬ ধারা অনুযায়ী ই-স্পোর্টসকে এই স্বীকৃতি দেয়। এ ঘোষণায় উচ্ছ্বাস দেখা গেছে দেশের গেমার এবং ই-স্পোর্টস সংশ্লিষ্ট কমিউনিটিতে।
ই-স্পোর্টসকে স্বীকৃতি দিলেও এর পরিচালনা ও নীতিমালা নির্ধারণে গঠিত হয়েছে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি। এই কমিটি আগামী ২১ কর্মদিবসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে।
কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. সাইফুল ইসলামকে। সদস্য হিসেবে থাকছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির একজন অধ্যাপক, এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (ক্রীড়া), যিনি সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।
কমিটি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির গাইডলাইন অনুসরণ করে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করবে। সেইসঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের মতামতসহ সংশ্লিষ্ট আইন, বিধিমালা, নির্দেশনা ও সরকারি আদেশ পর্যালোচনা করবে। প্রয়োজনে তারা কোনও বিশেষজ্ঞ সদস্য কো-অপটও করতে পারবেন।
এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাওয়া প্রতিষ্ঠান গিগাবাইট বাংলাদেশ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কান্ট্রি ম্যানেজার খাজা মো. আনাস খান বলেন, ‘যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ই-স্পোর্টসকে ক্রীড়া হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে একটি নতুন ই-স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন গঠনের উদ্যোগ। এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের গেমিং কমিউনিটির জন্য এক বিশাল মাইলফলক, যা তরুণ ই-স্পোর্টস প্রতিভাদের জন্য খুলে দেবে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর মাধ্যমে তরুণ গেমাররা নিজেদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাবে এবং ই-স্পোর্টস একটি সম্মানজনক পেশা হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে। গিগাবাইটের পক্ষ থেকে ই-স্পোর্টস কমিউনিটিকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ই-স্পোর্টসকে ক্রীড়া হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলে এ খাতের সঙ্গে যুক্ত তরুণরা যেমন স্বীকৃতি পাবেন, তেমনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশগ্রহণ ও সরকারি সহায়তার পথও খুলে যাবে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষ হতেই হুট করেই অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর থেকেই জল্পনা চলছে, কে হবেন টাইগারদের পরবর্তী লাল বলের নেতা। এখন পর্যন্ত বিসিবি নতুন অধিনায়কের নাম ঘোষণা করেনি। এর মধ্যেই নিজের আগ্রহের কথা প্রকাশ করেছেন দলের অন্যতম অভিজ্ঞ ক্রিকেটার, বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘ক্রিকবাজকে’ দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাইজুল বলেন, ‘অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। দল যখন অধিনায়কের ওপর আস্থা রাখে, তখন ফলাফল ভালো হয়। যদি (নেতৃত্বের) সুযোগ আসে, আমি কেন না বলব? আমার অভিজ্ঞতা আছে, এমন কোনো দিক নেই যেটা আমার মধ্যে অনুপস্থিত।’
তবে নেতৃত্বের বিষয়ে প্রলুব্ধ নন জানিয়ে তিনি যোগ করেন, ‘আমি বলছি না যে অধিনায়কত্ব চাই, তবে যদি দায়িত্ব দেওয়া হয়, সেটা পালনে আমি প্রস্তুত।’
নেতৃত্ব কেমন হওয়া উচিত, সে বিষয়েও মত দিয়েছেন এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। বলেছেন, ‘টেস্ট অধিনায়কত্ব কোনো গ্ল্যামারাস কিছু নয়। একজন অধিনায়কের দৃষ্টিভঙ্গি থাকা দরকার, সে কেমন দল চায়, ২ বছর পর দলকে কোথায় দেখতে চায় এই লক্ষ্য ঠিক করাই আসল।’ তবে সিদ্ধান্তটি টিম ম্যানেজমেন্ট ও বোর্ড কর্মকর্তাদের হাতেই ছেড়ে দিয়েছেন তাইজুল।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বড় ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। একই দিনে দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে গ্লোবাল সুপার লিগে অভিষেক ম্যাচেই আলো ছড়ান সাকিব আল হাসান। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে দলের জয়ের পাশাপাশি ম্যাচসেরা হন এই টাইগার অলরাউন্ডার।
ম্যাচে ব্যাট হাতে ৩৭ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলেছেন সাকিব। বল হাতেও ছিলেন অনন্য। মাত্র ১৩ রান খরচায় ৪ উইকেট তুলেছেন তিনি। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে নিয়মিত খেললেও লম্বা সময় ধরে জাতীয় দলের বাইরে আছেন সাকিব। দেশের জার্সিতে অনেকেই তার শেষটা দেখে ফেলেছেন।
তবে বিসিবি পরিচালক ইফতেখার রহমান মিঠু জানিয়েছেন, সাকিবের জন্য জাতীয় দলের দরজা খোলা। শনিবার (১২ জুলাই) মিরপুরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মিঠু বলেন, ‘বাংলাদেশের গ্রেটেস্ট ক্রিকেটার হচ্ছেন সাকিব আল হাসান। এখানে কোনো সেকেন্ড চয়েস নেই। তার জন্য দরজা সবসময় খোলা। কিন্তু এটা নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর নির্ভর করছে।’
সাকিবের ফেরা নিয়ে মিঠু বলেন, ‘আগে কীভাবে চলেছে জানি না কিন্তু এখন বর্তমান সভাপতি পুরো দায়িত্ব ক্রিকেট অপারেশন, টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকদের ওপর দিয়েছেন। তাদেরও নজরে এসেছে। সেটা দেখা হবে। তারা অবশ্যই এই ব্যাপারটি দেখবে।’
অনূর্ধ্ব-১৮ এশিয়া কাপে এবারই প্রথম অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশ নারী হকি দল। প্রথম অংশগ্রহণেই ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে মেয়েরা। আজ চীনের দাজহুতে কাজাখস্তানকে ৬-২ গোলে হারিয়ে এই অর্জন নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। হ্যাটট্রিক করে ম্যাচসেরা হয়েছেন আইরিন আক্তার। মেয়েদের মতো পদক জয়ের সুযোগ ছিল ছেলেদের সামনেও। তবে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে মালয়েশিয়ার কাছে ৫-২ গোলে হেরেছে পুরুষ হকি দল। এর আগে হংকংকে হারিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করা দলটি সেমিফাইনালে জাপানের কাছে ৬-৪ গোলে হারে।
মহাদেশীয় এই প্রতিযোগিতায় মেয়েদের শুরুটা ভালো ছিল না। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে জাপানের কাছে ১১-০ গোলে হার। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে উজবেকিস্তানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় মেয়েরা। এরপর একই ব্যবধানে হংকংকে হারিয়ে জায়গা করে নেয় শেষ চারে। ফাইনালে ওঠার পথে প্রথমে চীনের কাছে ৯-০ গোলে হার, এরপর কাজাখস্তানের সঙ্গে ২-২ ড্র করে বাংলাদেশ। যে কারণে আজ তৃতীয় হওয়ার লড়াইয়ে নামতে হয়েছে তাদের।
শুক্রবার (১১ জুলাই) যে কাজাখস্তানের সঙ্গে ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল, আজ তাদের গুনে গুণে ৬ গোল দিয়েছেন মেয়েরা। ৯ মিনিটে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশকে ১২ মিনিটে সমতায় ফেরান আইরিন। ১৮ থেকে ২০ এই দুই মিনিটে আরও দুই গোল করে দলের স্কোরলাইন ৩-১ করে ফেলেন তিনি।
৩৫ মিনিটে বাংলাদেশকে চতুর্থ গোল উপহার দেন অধিনায়ক শারিকা রিমন। বাকি দুই গোলের একটি করেন কণা আক্তার, অপরটি রিয়াশা রিশি। ৫৯ মিনিটে কাজাখস্তান এক গোল শোধ করলেও সেটি শুধুই ব্যবধান কমিয়েছে। পুরো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের মেয়েরা গোল হজম করেছে ২৪টি। বিপরীতে গোল দিয়েছে ১৪টি। যার মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ গোল করেছেন আইরিন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ গোল করেন কণা আক্তার।
অনূর্ধ্ব-১৮ এশিয়া কাপে মেয়েদের বিভাগে ফাইনাল খেলবে জাপান ও চীন। আর ছেলেদের বিভাগের সোনার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে জাপান ও পাকিস্তান।