সোমবার, ২০ মে ২০২৪

ফেদেরাররা জানেন, কীভাবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হয়

'বিগ থ্রি'-র আধিপত্য তো রজার ফেদেরারের হাত ধরেই শুরু হয়েছে। ছবি : টুইটার
নিশাত আহমেদ
প্রকাশিত
নিশাত আহমেদ
প্রকাশিত : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ২৩:২৩

“দেখো, ঠিক এই শটটা মেরেই আমি উইম্বলডন জিতব!”

অনুশীলন করতে থাকা গ্রুপের সবচেয়ে ছোট্ট ছেলেটা খিলখিলিয়ে হেসে বলে উঠল। কথাটা দূর থেকেই শুনলেন ম্যাডালেন বেয়ারলকার। বাসেল ওল্ড বয়েজ ফুটবল ক্লাবের কো-অর্ডিনেটর ছেলেটার আত্মবিশ্বাস দেখে মনে মনে খুশি হলেন, একটা অজানা আতঙ্কও গ্রাস করল তাঁকে। ছেলেটা যে নিজের সামর্থ্য নিয়ে অনেক বেশিই আত্মবিশ্বাসী!

এতটাই যে, কখনও হেরে গেলে, বা বাজেভাবে পয়েন্ট হারালে ছেলেটা প্রায়ই মেজাজ হারায়। র‍্যাকেট ছুঁড়ে ফেলা, চিৎকার করা, ঝগড়াঝাঁটি, হাউমাউ করে কান্নাকাটি - এগুলো তো নিত্যদিনের অভ্যাস। আবেগ নিয়ন্ত্রণ? সেটা যেন জানেই না এই ছেলে। মেজাজী ছেলেকে সামলাতে বেয়ারলকার থেকে শুরু করে কোচ পিটার কার্টার - সবাইকে নিয়মিত বেগ পেতে হয়। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য যে শুধু জয়ই নয়, হারের সঙ্গেও পরিচিত হতে হয়, ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে সফল হওয়ার যে যাত্রাপথ, সে পথকে চিনে রাখতে হয় - সেটা কে বোঝাবে একে?

বেয়ারলকার-কার্টাররা কম চেষ্টা করেননি। কোর্টে যখনই ছেলেটা এমন কোনো কাণ্ড ঘটাত, কার্টার একপাশে টেনে নিয়ে যেতেন তাঁকে। বোঝাতেন, প্রকৃত চ্যাম্পিয়নদের এমন করতে নেই। নিজ লক্ষ্যে স্থির থাকতে হয় চ্যাম্পিয়নদের। আবেগ যেন মন-মননে বাসা না বাঁধে, পেশাদারত্বের বাতাবরণে সেটা নিশ্চিত করতে হয়। আবেগ যে বড্ড বেয়াড়া, প্রশ্রয় দিলে মানুষকে লক্ষ্যচ্যুত করবেই!

কার্টারদের সে চেষ্টায় লাভ হতো সামান্যই। কখনও কখনও সাহায্য করতে এগিয়ে আসতেন ছেলেটার বাবা রবার্ট ও মা লিনেট। রবার্ট আর দশজন সুইসের মতো বেশ ঠাণ্ডা মাথার মানুষ। রাগারাগি তাঁর ধাতেই নেই, সেই রবার্টও কখনও কখনও বিদ্রোহী ছেলের কার্যক্রম দেখলে বিরক্ত হতেন। একবার এক টুর্নামেন্টে বাজে খেলে ছেলেটা বাদ পড়ল। ক্ষোভে ফোঁস ফোঁস করতে থাকা ছেলেকে নিয়ে বাবা রবার্ট গাড়িতে করে ফিরছিলেন। পুরো রাস্তায় ছেলে এত বেশি চিৎকার-চেঁচামেচি করছিল, শেষমেশ গাড়ি থামিয়ে ঘাড় ধরে ছেলেকে বের করে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা বরফের চাঁইয়ের মধ্যে মাথাটা ঘষে দিলেন কিছুক্ষণ। অন্তত বরফের স্পর্শ পেয়ে যেন ছেলের ভেতরের আগুন একটু নেভে!

মা লিনেটও একদিন ছেলেকে ধরে-বেঁধে কাছে বসালেন। ভালোমন্দ দুটো কথা বলে যদি লাইনে আনা যায় আর কি! “দেখো বাবা, তুমি যখনই রেগে যাবে, এর অর্থ হলো তুমি তোমার প্রতিপক্ষকে বার্তা দিচ্ছ, সে তোমাকে হারানোর জন্য যা যা করছে - ঠিক করছে। তোমার আবেগের বহিঃপ্রকাশ তাকে জয়ের জন্য আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। তুমি কি সেটা চাও?”, সোজাসাপ্টাই বলেছিলেন লিনেট।

এত আবেগ, এত বদরাগ - সব যে আসলে অদম্য জিগীষারই বহিঃপ্রকাশ - সেটা বুঝতে কারওর বাকি থাকার কথা না এতক্ষণে। কিন্তু ওই যে, অনিয়ন্ত্রিত আবেগ যে চ্যাম্পিয়নদের লাভের চেয়ে ক্ষতিই করেছে যুগ যুগ ধরে। খেয়ালি ম্যারাডোনা তা না হলে মেরেকেটে দুবার লিগ জেতেন না, ছিয়াশিতে একবার বিশ্বজয় করে চুরানব্বইয়ের বিশ্বকাপে ভক্তদের মনে অনন্ত আক্ষেপ জাগিয়ে থেমে যান না। লাগামহীন চিত্তচাঞ্চল্যর পায়ে বেড়ি পরালে হয়তো জন ম্যাকেনরোর ঘরেও সাতটার বেশি গ্র্যান্ড স্ল্যাম শোভা পায়।

বেয়ারলকার-কার্টাররা সে ভয়ই পেতেন - হয়তো ছেলেটা নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করতে পারবে না বদরাগের কারণে। এমনিতেই সুইজারল্যান্ডের ছেলেমেয়েরা টেনিস খেলাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে চায় না। বাসেল ওল্ড বয়েজ ক্লাবে যে দুই-একজন প্রতিভাবান শিশু-কিশোর টেনিসের জন্য এসেছে, প্রত্যেকেই কোনো না কোনো পর্যায়ে গিয়ে ঝরে পড়েছে। বেয়ারলকার চান না, এই ছেলেরও সেই নিয়তি হোক। এই ছেলে যে লাখে একটা!

জীবনের প্রথম জুনিয়র উইম্বলডন খেলতে গিয়ে শিরোপার নেশায় বিভোর ছেলেটা দুম করে হেরে বসল সেমিফাইনালে। ততদিনে এই ছেলেকে সুইসরা নিজেদের টেনিস-ভবিষ্যৎ হিসেবে ভাবা শুরু করেছে, ভাবা শুরু করেছে মার্টিনা হিঙ্গিস আর প্যাটি স্নাইডারদের যোগ্য উত্তরসূরি। হারের রেশ কাটতে না কাটতেই রেডিও সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য হাজিরা দিতে চলে যায় সেই ছেলে। উপস্থাপক মার্কো মোর্দাসিনি ব্যস্ত ছিলেন একটু, ছেলেটাকে বললেন, খানিক অপেক্ষা করতে। কাজ করতে করতেই মোর্দাসিনির কানে এলো, ছেলেটা পাশের ঘরে বসে কাঁদছে। সে কান্নায় ম্যাচ হারের যন্ত্রণা যতটা না ছিল, তার চেয়ে বেশি ছিল এত বড় একটা সুযোগ হারানোর বেদনা। এমন সুযোগ হারানোর দোষটা তো নিজেরই। এভাবে চলতে থাকলে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের সেই প্রতিশ্রুতি জীবনেও পূরণ করা যাবে না!

সমাধান একটাই, বদলাতে হবে নিজেকে। মানুষ হিসেবে, প্রতিযোগী হিসেবে।

সময় যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কতকিছুই তো বদলায়। ছেলেটাও শিখে যায় আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে। এতটাই যে, একটা সময় কোর্টে ছেলেটার খেলা, চলন-বলন দেখলে ধ্যানমগ্ন ঋষি ছাড়া কিছুই মনে হতো না। জঘন্য এক শট খেলে পয়েন্ট হারালো, বা বিখ্যাত ওয়ান হ্যান্ডেড ব্যাকহ্যান্ড শটটা ঠিক যুতসই হলো না - চুপচাপ বেসলাইনে চলে যেত, পরের পয়েন্টের জন্য লড়াই করতে।

যে আগে নিজেকেই সামলাতে পারত না, এক সময় পুরো খেলারই সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হয়ে উঠল। হয়ে উঠল অদ্বিতীয় শুভেচ্ছাদূত। বিশ্বব্রহ্মান্ডে এমন মানুষ খুঁজলে অনেক পাওয়া যাবে, যারা টেনিস খেলার নিয়ম-কানুন অতটা না জানলেও, ছেলেটাকে এক লহমায় চিনতে পারে। সংবাদ সম্মেলন থেকে শুরু করে সব জায়গায় ছেলেটার সঙ্গী হলো মুচকি একটা হাসি, যে হাসিতে মিশে নেই কোনো প্রতিহিংসা, দ্বেষ বা প্রতিপক্ষের প্রতি অসম্মান। টেনিসে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের মাপকাঠি ছেলেটা এত উঁচুতে নিয়ে গেল, যা অতিক্রম করার জন্য রাফায়েল নাদাল-নোভাক জোকোভিচদের অতিমানব হওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায়ও ছিল না।

ছেলেটার নাম রজার ফেদেরার।

বলা বাহুল্য, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফেদেরার শিখে গিয়েছিলেন প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেও। বাসেল ওল্ড বয়েজ ক্লাবের এক অনুশীলনে একদিন উইম্বলডন জেতার ঘোষণা দেওয়া সেই ফেদেরার অল ইংল্যান্ড ক্লাবে রাজত্ব করেছেন একবার নয়, আট-আটবার। সব মিলিয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন বিশবার। এর চেয়ে ভালোভাবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা কী আসলেও যেত? সত্যিকারের চ্যাম্পিয়নরাই তো এভাবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে জানেন!

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদালের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গত রাতে জীবনের শেষ ম্যাচটা খেলতে নেমেছিলেন। শেষ ম্যাচে ফেদেরার জিতবেন, তাতে ভাগ্য বিধাতার সায় ছিল না হয়তো। কিংবা কে জানে, বিশ্বজয়ী অ্যাথলেটদের আখ্যানের শেষ পর্বে একটু অপ্রাপ্তির ছোঁয়া থাকবে, সেটাই হয়তো নিয়তি। যে কারণে উসাইন বোল্ট জীবনের শেষ রেসে দৌড়াতে নেমে হ্যামস্ট্রিংয়ের কাছে হেরে যান, আর্জেন্টিনা বা ফ্রান্সের হয়ে ম্যারাডোনা আর জিদানের শেষ ম্যাচটা মোড়ানো থাকে অপ্রাপ্তিতে। মোহাম্মদ আলীকেও রিং থেকে নেমে যেতে হয় অধোবদনে। রজার ফেদেরারই -বা সে ধারার ব্যতিক্রম হবেন কেন!

জ্যাক সক-ফ্রান্সিস তিয়াফোর জুটির বিপক্ষে নিজের শেষ ম্যাচটায় জয়ের মুখ দেখা হয়নি ফেদেরারের। তবে এমন দিনে ম্যাচের ফলাফল কি আসলেই কোনো অর্থ বহন করে? বেদনার চাদরে মোড়া লন্ডনের ওটু অ্যারেনায় দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী নাদাল আর জোকোভিচের বাঁধনহারা কান্নাই বুঝিয়েছে, গত দেড় দশকে একজন ফেদেরার না থাকলে তাঁদের মনে জয়ের নেশাটা হয়তো এভাবে জেগে উঠত না। হয়তো অবিশ্বাস্য সাফল্যে মোড়া ক্যারিয়ারও পেতেন না দুজন।

বিশ গ্র্যান্ড স্ল্যামের পাশাপাশি তাই রজার ফেদেরারের সবচেয়ে বড় অর্জন টেনিসকে রাফায়েল নাদাল আর নোভাক জোকোভিচের মতো দুজন হার-না-মানা মানসিকতার অ্যাথলেটকে শ্রেষ্ঠত্বের ওই রাস্তাটা দেখিয়ে দেওয়া, তাদের আজকের পর্যায়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করা। টেনিসকে আজকের এই পর্যায়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করা।

সকল প্রতিদ্বন্দ্বিতা, রেষারেষি ছাপিয়ে যেকোনো খেলার সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য তো ওখানেই!


ব্যক্তি আলোনসোর কারণেই এতটা সফল লেভারকুসেন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

বে অ্যারেনায় উড়ছে উৎসবের রং। বুন্দেসলিগার শিরোপা তো ৫ ম্যাচ হাতে রেখেই নিশ্চিত করে ফেলেছিল, কাল লিগের শেষ দিনে নিজেদের মাঠে অগসবুর্গের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে হাতে পেয়েছে ট্রফি। সেই ট্রফি হাতে নেওয়ার আগেই একটি ইতিহাস হয়ে গেছে লেভারকুসেন। অগসবুর্গকে হারানোর মধ্য দিয়ে প্রথম দল হিসেবে পুরো মৌসুম অপরাজিত থেকে বুন্দেসলিগা জয়ের রেকর্ড গড়েছে জাবি আলোনসোর দল।

অনেক আগে থেকেই লেভারকুসেনের স্প্যানিশ কোচের ওপর ঝরছে প্রশংসার বৃষ্টি। গতকাল যেন সেটা আরও কয়েক গুণ বেড়ে গেল। আরেকবার শিরোপা-উৎসব শেষে লেভারকুসেনের কোচ আলোনসোকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন দলটির ডিফেন্ডার জোনাথন টাহ্‌। কীভাবে আর আলোনসোর কোন গুণে লেভারকুসেন এমন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠল, এতটা সফলতা পেল সে রহস্যই কাল ভেদ করলেন টাহ্‌। ট্রফি হাতে উৎসব শেষে জার্মান এই ডিফেন্ডার বলেছেন, ‘এই দলের অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত। এতগুলো বছর পর এখানে কিছু জিততে পেরে আমি সত্যি খুব খুশি।’

হামবুর্গ থেকে টাহ্‌ লেভারকুসেনে নাম লিখিয়েছেন ২০১৫ সালে। গত মৌসুমের মাঝ থেকে খেলছেন আলোনসোর অধীনে। গত মৌসুমে একের পর এক ম্যাচ হেরে লেভারকুসেন যখন খাদের কিনারে, আলোনসোকে আপতকালীন কোচ করে এনেছিল দলটি। এরপর গত মৌসুমে দলকে ষষ্ঠ স্থানে রেখে লিগ শেষ করেছিলেন। আর এবার কী রূপকথা রচনা করেছেন, সেটা সবারই জানা।

নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বুন্দেসলিগা জেতা লেভারকুসেনের সামনে এখন আরও দুটি শিরোপার হাতছানি-জার্মান কাপ ও ইউরোপা লিগ। এই দুটি শিরোপা জিততে পারলে পুরো মৌসুম অপরাজিত থাকার নতুন আরেক কীর্তিও গড়বে লেভারকুসেন। আলোনসোর হাত ধরে এমন সাফল্য কীভাবে এসেছে, সেটা জানাতে গিয়ে টাহ্‌ বলেছেন, ‘জাবি আলোনসো অসাধারণ একজন কোচ। সেটা ট্যাকটিক্যালি এবং ব্যক্তি দুই দিক দিয়েই। এ কারণেই আমরা এতটা সফল।’ আলোনসোর প্রশংসা করতে গিয়ে নিজেদের কথাও বললেন টাহ্‌, ‘ভালো খেলোয়াড় ভালো কোচ তৈরি করে। আমার অসাধারণ একটি স্কোয়াড আছে। আমাদের এখানকার প্রতিদিনের আবহই খুব ভালো। এমন সব খেলোয়াড়ের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি কৃতজ্ঞ।’


ব্রাজিলের হৃৎপিণ্ড থিয়াগো সিলভা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

বয়সটা ৩৫-এর কোটা পেরিয়েছে বছর তিনেক আগেই। অথচ এখনো প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগকে থমকে দেন বছর বিশের তরুণের ক্ষীপ্রতায়। সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হয়েও ক্যারিয়ারে এখনো লালকার্ড দেখেননি। রিও ডি জেনিরো থেকে শুরু হওয়া যাত্রাটা মিলান, প্যারিস ঘুরে এখন থেমেছে লন্ডনে। সার্জিও রামোস কিংবা ভ্যান ডাইকের মতো খ্যাতি তার নেই, লড়াইটা তিনি করেন নিজের সাথেই। চেষ্টাটা থাকে নিজেকে ছাড়িয়ে যাবার। তিনি থিয়াগো সিলভা, ব্রাজিল রক্ষণের কাণ্ডারি।

জোগো বোনিতোর দেশ ব্রাজিল। যুগে যুগে বিশ্ব ফুটবলকে ব্রাজিল উপহার দিয়েছে পেলে, গ্যারিঞ্চা, রোনালদো, রোনালদিনহো, নেইমারদের মতো ফুটবলশিল্পীদের; কিন্তু সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার? লুইস পেরেইরা, আদাইর, লুসিওতে এসে থমকে যেতে হয়। মাথা চুলকে আর কোনো বৈশ্বিক তারকার নাম মনে পড়ে না। লুসিওর রেখে যাওয়া মশালটাই এক দশক ধরে বহন করে চলেছেন থিয়াগো সিলভা। জাতীয় দলে প্রথমবার আসার পর থেকে আজও রক্ষণভাগকে আগলে রেখেছেন নিবিড় যত্নে।

ছোটবেলায় অন্য দশটা ব্রাজিলিয়ান বালকের মতোই রিও ডি জেনিরোর অলিগলিতেই ফুটবল খেলতে খেলতেই বেড়ে ওঠা থিয়াগো সিলভার। কিন্তু ছোটবেলায় কোনো ক্লাবই তাকে নিতে চায়নি। স্থানীয় ক্লাব মাদুরেইরা, ওদারিয়া কিংবা বোতাফোগো সব খানেই ট্রায়াল দিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। এমনকি বোতোফোগোতে কোচরা তাকে দেখতেই চাননি। অবশেষে স্থানীয় ফুটবল টুর্নামেন্টে ভালো খেলার সুবাদে নজরে আসেন এক ফুটবল স্কাউটের। তিনিই তাকে সুযোগ করে দেন নিচের সারির ক্লাব ফুটেবলের হয়ে খেলার।

ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল মিডফিল্ডার হয়ে। ফুটবলের হয়ে সিনিয়র পর্যায়ে খেলতে খেলতেই নজরে আসেন ইউরোপের। তাকে দলে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে পোর্তো আর এফসি রোমা। তবে ব্রাজিল আর পর্তুগালের সংস্কৃতি, ভাষা একই হওয়ায় তরুণ ব্রাজিলিয়ানদের জন্য ভরসার পাত্র পর্তুগিজ ক্লাবগুলো। থিয়াগো সিলভাও সুযোগ লুফে নিতে দেরি করেননি, রোমার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে ২০০৪ সালে পাড়ি জমান পোর্তোতে। এরপর রাশিয়া, ব্রাজিল, ইতালি ফ্রান্স ঘুরে পাড়ি জমান লন্ডনে। ২০২২-২৩ মৌসুমে পিএসজি থেকে এক বছরের জন্য যান চেলসিতে; কিন্তু সেখানেই কাটিয়ে দেন চার বছর। এবার দেশ ব্রাজিলে ফিরছেন আবারও।

পুরো নাম: থিয়াগো এমিলিয়ানো দা সিলভা

জন্ম: ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৮৪।

জন্মস্থান: দি জানেইরু, ব্রাজিল।

রাশি: কন্যা রাশি।

প্রিয় খেলা: ফুটবল।

প্রিয় খাবার: পর্তুগিজ খাবার।

প্রিয় পানীয়: ফ্রুট জুস।

প্রিয় রং: কালো, সাদা।

প্রিয় ফুটবলার: রবার্তো কার্লোস।

প্রিয় ফুটবল দল: ব্রাজিল, ফ্লুমিনেন্স।

প্রিয় সতীর্থ: নেইমার জুনিয়র, ডেভিড লুইস, দানি আলভেজ।

প্রিয় গাড়ি: বিএম ডব্লিউ

প্রিয় স্টেডিয়াম: মারাকানা স্টেডিয়াম, ব্রাজিল।

প্রিয় শখ: গান শোনা, ওয়ার্ক আউট।

প্রিয় জুতার ব্র্যান্ড: নাইকি।

বিষয়:

জার্মান ফুটবলসম্রাট বেকেনবাওয়ার  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

জার্মান ভদ্রলোক প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন মিডফিল্ডার হিসেবে। কোয়ার্টার আর সেমিফাইনালে ১টি করে গোলও করেন। পুরো টুর্নামেন্টে ৪ গোল করে ব্রোঞ্জ বল জেতেন। তবে এরপরেও ফাইনালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যায়। ফাইনালে হেরে গেলেও সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কারটা জিতে নেন তিনি।

১৯৭০ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হন ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের। এই বিশ্বকাপে বেকেনবাওয়ার খেলেন ডিফেন্ডার হিসেবে। ৪৯ মিনিটেই ২ গোলে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। ৬৮ মিনিটে গোল করে বেকেনবাওয়ারই ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন জার্মানিকে। শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলে জেতেন জার্মানি; কিন্তু সেমিতে আবারও ইতালির কাছে হেরে যায়।

পরপর দুই বিশ্বকাপে ব্যর্থতা তাকে পোড়ানোরই কথা। তবে তিনি হাল ছাড়লেন না। ৭৪ বিশ্বকাপে ডিফেন্ডার হিসেবে খেলেন এবং জার্মানি বিশ্বকাপ জেতে। সেই টুর্নামেন্টে সিলভার বল জেতেন বেকেনবাওয়ার। ‘একবার না পারিলে দেখ শতবার’– তাকে শতবারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি, তিনবারের প্রচেষ্টাতেই সফল হয়েছিলেন।

এই পর্যন্ত বিশ্বকাপের ইতিহাসে মাত্র দুজন খেলোয়াড় তিনবার করে বিশ্বকাপের অলস্টার দলে সুযোগ পেয়েছেন। ১৯৬৬, ১৯৭০ আর ১৯৭৪ বিশ্বকাপের অল স্টার দলে সুযোগ পাওয়ায় তিনি সেই দুজন খেলোয়াড়ের একজন। এত গেল তার খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারের কথা। কোচ হিসেবেও শুরুতে সর্বোচ্চ সফলতার খুব কাছে গিয়েও মিস করেছেন। ১৯৮৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে ডিয়েগো ম্যারাডোনার বীরত্বের কাছে হার মেনে তার দল রানার্স আপ হয়েছিল। ৪ বছর পর আবার প্রতিপক্ষ সেই একই ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনা। এবার জিতে নিলেন সেই কাঙ্ক্ষিত শিরোপা।

বিশ্বকাপের ইতিহাসে মাত্র দুজন মানুষ ‘খেলোয়াড় এবং কোচ’ দুই হিসেবেই বিশ্বকাপ জিতেছেন। ইনি সেই দু’জন মানুষের একজন। ক্লাব ক্যারিয়ারের কথা বাদ দিই কীভাবে? বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে জার্মান ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর বুন্দেসলিগার শিরোপা জিতেছেন চার বার। ইউরোপিয়ান কাপ (বর্তমানে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ) জিতেছেন পরপর তিনবার (১৯৭৩-৭৬)। খেলোয়াড় হিসেবে ব্যালন ডি অর জিতেছেন ২ বার ( ১৯৭২,১৯৭৬)। এত কিছু জানার পর আপনার মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন আসার কথা মানুষটা কে?

মানুষটা হচ্ছেন ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার, জার্মানির ইতিহাসের অবিসংবাদিত সেরা ফুটবলার। ১৯৪৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জন্ম নেওয়া বেকেনবাওয়ারকে নেতৃত্বের গুণাবলির জন্য তাকে কাইজার বা সম্রাট নামেও ডাকা হতো। তাকে আধুনিক সুইপারের উদ্ভাবক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যেকোনো একাদশ করতে চাইলে পেলে কিংবা ম্যারাডোনার বিকল্প হয়তো পাবেন, হয়তো কোয়ালিটিতে তাদের সমতুল্য হবে না কিন্তু একেবারে ফেলেও দিতে পারবেন না। কিন্তু একাদশে বেকেনবাওয়ারের বিকল্প খুঁজে পাবেন না সেটা বলে দেওয়া যায়। ২০১৩ সালে ওয়ার্ল্ড সকারের নির্বাচিত সর্বকালের সেরা একাদশে পেলে ম্যারাডোনার চেয়েও বেশি ভোট পেয়ে ছিলেন বেকেনবাওয়ার। এমনি এমনি তো আর তিনি সম্রাট নন!


ধোনির অবসরের ইঙ্গিত দিলেন কোহলি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

ভারতীয় ক্রিকেটে মহেন্দ্র সিং ধোনি নামটি জ্বলজ্বল করবে আজীবন। ধোনির নেতৃত্বেই শেষবার বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছে ভারত। ভারতের জার্সিতে বহু ম্যাচের জয়ের নায়ক তিনি। যেমন ব্যাট হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তেমনি দলনেতা হিসেবেও পথ চিনিয়েছেন গোটা দলকে। চনমনে ধোনি উইকেটের পেছন থেকেও ভয় দেখিয়েছেন প্রতিপক্ষকে; গড়েছেন অনেক রেকর্ডও।

ইতোমধ্যেই জাতীয় দলকে বিদায় জানিয়েছেন তিনি। ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন ভারতীয় এই কিংবদন্তি। তারপর থেকে শুধু আইপিএল টুর্নামেন্টেই ধোনিকে দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু সেটাও আর কতদিন? বয়সটা যে তেতাল্লিশ ছুঁইছুঁই, ১৯৯৯ সালে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট দিয়ে শুরু এখন ২০২৪ সাল। ২৫ বছরের লম্বা ক্যারিয়ার।

তাই প্রতিবছরই আইপিএল আসে, আর প্রতিবারই প্রশ্ন ওঠে! এবারই কি শেষ? গত কয়েক আসরে এমন প্রশ্ন অসংখ্যবার শুনেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। প্রতিবারই তার জবাব ছিল, না। চলতি আসরে অবশ্য চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক হিসেবে খেলছেন না তিনি। তাই পোস্ট ম্যাচ প্রেজেন্টেশনে বা সংবাদ সম্মেলনেও আসা হয় না তার।

আইপিএল এখন শেষের দিকে। গতকাল বাঁচা-মরার লড়াইয়ে চেন্নাইয়ের মুখোমুখি হয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ধোনির সঙ্গে এটাই কি শেষ ম্যাচ? বিরাট কোহলির মনেও উঁকি দিচ্ছে সেই প্রশ্ন। ইঙ্গিত দিলেন এবারের আসর শেষেই হয়তো অবসর নিতে পারেন ধোনি।

কোহলি বলেন, ‘ভারতের যেকোনো স্টেডিয়ামে তাকে খেলতে দেখাটা বড় বিষয়। আমি আর তিনি হয়তো শেষবারের জন্য একসঙ্গে খেলছি। এটা একটা বিশেষ ব্যাপার। আমাদের দুর্দান্ত কিছু স্মৃতি রয়েছে। জাতীয় দলের হয়ে বেশ কিছু দারুণ পার্টনারশিপ রয়েছে। আমাদের একসঙ্গে দেখতে পাওয়াটা সমর্থকদের কাছে বড় বিষয়। মানুষ বলে কেন তিনি ২০ ওভার, ৫০ ওভার পর্যন্ত খেলা টেনে নিয়ে যান। কিন্তু তিনি ভারতের হয়ে কয়টা ম্যাচ ফিনিশ করেছেন!’

ভারতের বর্তমান এ তারকা বলেন, ‘সম্ভবত তিনিই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি কী করতে চলেছেন, সেটা জানেন। সেখান থেকেই তিনি ম্যাচ ফিনিশ করতেন। আমার কাছে এটা মাসল মেমরি। তিনি জানেন, তিনি যদি ম্যাচ ৫০ ওভার পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পারেন, তাহলে ম্যাচ বের করে ফেলবেন।’

কোহলি আরও বলেন, ‘আমার মানসিকতা আবার একটু আলাদা। আমি ভাবতাম, চলো ৪৯তম ওভারে (ওয়ানডেতে), ১৯তম ওভারে (টি২০-তে) ম্যাচ ফিনিশ করে ফেলি। তিনি যদি আমার সঙ্গে ব্যাট করেন তাহলে তার চিন্তাভাবনা আলাদা হবে। তিনি শেষ ওভারে ম্যাচ নিয়ে যাবেন- যেখানে প্রতিপক্ষ দল কাঁপতে থাকবে ভয়ে।’


মাঝমাঠের হৃৎপিণ্ড পল পগবা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

২০১৮ সালে ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়ের পেছনে বড় অবদান ছিল দলটির মিডফিল্ডার পল পগবার। ফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে হারানোর সে ম্যাচে গোলও করেছিলেন তিনি। নিজের পায়ের কারুকার্য দিয়ে মন জয় করে নেন ফুটবলপ্রেমীদের। ফ্রান্সে যত অভিবাসী ফুটবলার খেলেছেন তিনিও তাদের মধ্যেই একজন।

১৯৯৩ সালে পগবার জন্ম ফ্রান্সের লানি-সুর-মার্ন অঞ্চলে। তবে পগবার বাবা-মা গিনির অধিবাসী। বড় দুই ভাই ম্যাথিয়াস পগবা আর ফ্লোরেন্তিন পগবার জন্মের পর পুরো পরিবার সহ ফ্রান্সে পাড়ি জমায় এই গিনিয়ান পরিবার। ছোট বেলা থেকেই ফ্রান্সের মাটিতে ফুটবল খেলে বেড়ে উঠেছেন। নজর কাড়েন বড় বড় ক্লাবগুলোর।

১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে, পগবার ফুটবলে আনুষ্ঠানিক হাতেখরি ফরাসি ফুটবল ক্লাব রোয়াসি-অঁ-ব্রিয়ের যুব দলের হয়ে। এরপর সেখান থেকে পাড়ি জমান তর্সি, ল্য আভ্র এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের যুব দলের হয়ে। সেখান নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়ে জায়গা করে নেন ইউনাইটেডের মুল দলে। সেখান পাড়ি জমান জুভেন্তাসে। পড়বার ক্যারিয়ারের ভালো সময়টা কাটে এখানেই। ২০১৬ সালে ১০৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে আবার সেই ওল্ড ট্রাফোর্ডে ফিরেন এই প্রতিভাবান মিডফিল্ডার। কিন্তু এরপর আর তেমন কিছুই করতে পারেনি।

ফ্রান্স অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে দুর্দান্ত খেলতে থাকেন পগবা। দলটির হয়ে বিশ্বকাপও জেতেন তিনি। সেটার পুরস্কার হিসেবেই ২০১৩ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সেই অভিষেক হয় ফ্রান্স জাতীয় দলে। তবে পগবা হুট করেই জাতীয় দলে ডাক পায়নি; জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিল নির্দিষ্ট পক্রিয়া অনুরসরন করেই। পগবা ফ্রান্স অনূর্ধ্ব-১৬, ফ্রান্স অনূর্ধ্ব-১৭, ফ্রান্স অনূর্ধ্ব-১৮, ফ্রান্স অনূর্ধ্ব-১৯ এবং ফ্রান্স অনূর্ধ্ব-২০ সহ প্রায় সব অনূর্ধ্ব দলেই খেলেছেন।

ইতোমধ্যেই ফ্রান্সের মুল দলের হয়েই খেলেছেন দুইটি বিশ্বকাপ। ফ্রান্সের হয়ে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ জেতার পর জাতীয় দলের হয়েও এই বয়সেই খেলে ফেলেছেন ৬০টি ম্যাচ, করেছেন ১০টি গোল। জিতেছেন সবচেয়ে আরাধ্য ট্রফি বিশ্বকাপও। এরই মধ্যে ফ্রান্সের মাঝমাঠের হৃৎপিণ্ড হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

পুরো নাম: পল লাবিল পগবা

জন্ম: ১৫ মার্চ ১৯৯৩ সাল।

জন্মস্থান: লানি-সুর-মার্ন, ফ্রান্স।

রাশি: মীন রাশি।

প্রিয় খেলা: ফুটবল, বাস্কেটবল।

প্রিয় খাবার: ফরাসি খাবার।

প্রিয় পানীয়: জুস।

প্রিয় রং: সাদা।

প্রিয় ফুটবলা: ডেভিড বেকহ্যাম।

প্রিয় সতীর্থ: কিলিয়ান এমবাপ্পে।

প্রিয় স্টেডিয়াম: স্তাদ দ্য ফ্রান্স, ফ্রান্স।

প্রিয় ফুটবলার: কিলিয়ান এমবাপ্পে।

প্রিয় ফুটবল দল: ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ফ্রান্স ফুটবল দল।

প্রিয় গাড়ি: ব্রেন্টলি চেন্টাগায়া।

প্রিয় শখ: কার্টুন দেখা।

প্রিয় স্থান: প্যারিস।

প্রিয় জুতার ব্র্যান্ড: নাইকি।


মেসির চুক্তিপত্রের দাম ১১ কোটি টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

শৈশবেই মুগ্ধতা ছড়িয়েছিলেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি। ১৩ বছর বয়সী মেসির বাঁ-পায়ের জাদুতেই বুঁদ হয়ে পড়েছিল ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলো। বিস্ময় জাগানীয়া এ কিশোরের দিকে তখন নজর বড় বড় ক্লাবগুলোর স্কাউট এবং স্পোর্টিং ডিরেক্টরদের। সেই তালিকায় ছিলেন বার্সেলোনার তৎকালীন স্পোর্টিং ডিরেক্টর কার্লেস রেক্সাসও। সেদিনের কিশোর মেসির মধ্যেই তিনি দেখতে পেয়েছিলেন আজকের মেসিকে। এমন একটি প্রতিভাকে হারানোর দুঃসাহস তিনি করেননি। চুক্তির কাগজপত্র না থাকায় একটি ন্যাপকিন পেপারেই সারেন কাজ।

বার্সেলোনার সঙ্গে মেসির সেই চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার ন্যাপকিন পেপারটি তোলা হয়েছিল নিলামে। ঐতিহাসিক সেই ন্যাপকিন পেপারটি গড়েছে আরেক ইতিহাস; ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকায় বিক্রি হলো মেসির স্বাক্ষরিত সেই ন্যাপকিন।

একটি সাধারণ ন্যাপকিন পেপার। খাওয়ার পর হাত মুছে বিনা সঙ্কোচে ফেলে দেন অনেকেই। কিন্তু সেই ন্যাপকিনেই যদি থাকে লিওনেল মেসির স্বাক্ষর? তাও আবার একটি ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী বহন করছে যে পেপারটি, তার মূল্য যে আকাশছোঁয়া হবে, সেটা ছিল জানা কথা।

মাত্র ১৩ বছর বয়সে মেসির বাবা হোর্হে মেসির সঙ্গে একটি হোটেলে আলোচনায় বসেছিলেন বার্সেলোনার তৎকালীন স্পোর্টিং ডিরেক্টর কার্লেস রেক্সাস। তখনও মেসিকে সই করানোর বিষয়ে কাগজপত্র তৈরি হয়নি। কিন্তু আর্জেন্টাইন ক্ষুদে ফুটবলারের প্রতিভা বুঝতে একটুও অসুবিধা হয়নি রেক্সাসের। কোনো মতেই এমন ফুটবলারকে সই করানোর সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি রেক্সাস।

সেই হোটেলের একটি ন্যাপকিন পেপারেই মেসিকে দিয়ে প্রাথমিক স্বাক্ষর করিয়ে নেন। ন্যাপকিন পেপারটির লেখার বক্তব্য অনুযায়ী, ১৪ ডিসেম্বর ২০০০ সালে বার্সেলোনার হয়ে প্রথমবার কোনো চুক্তিতে সই করেছিলেন মেসি। সেখানে রেক্সাস ছাড়াও হোসে মিঙ্গুয়েলা এবং আর্জেন্টিনায় মেসির এজেন্ট হোরাসিও গ্যাগিওলি ছিলেন। রেক্সাস প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, মেসিকে নিজের তত্ত্বাবধানে যত্নে রাখবেন।

পরে এক সাক্ষাৎকারে রেক্সাস জানিয়েছিলেন, হাতের কাছে আর কিছু না পেয়েই ন্যাপকিন পেপারে স্বাক্ষর করিয়েছিলেন মেসিকে। মেসির বাবাকে রাজি করিয়েছিলেন এই বলে যে, তার নাম থাকলে বিশ্বাসযোগ্যতা থাকবে এই স্বাক্ষরের।

এত দিন সেই ন্যাপকিন অ্যান্ডোরার একটি ভল্টে লুকিয়ে রাখা ছিল। হোরাসিও গ্যাগিওলির তত্ত্বাবধানেই ছিল পেপারটি। এর মধ্যেই মেসি বার্সেলোনার ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ফুটবলার হয়ে ওঠেন। বেশ কয়েক বছর হলো সেই ক্লাব ছেড়েও দিয়েছেন।

এত দিনে সেই ন্যাপকিন পেপারকে ব্রিটিশ নিলাম হাউজ বোনহামসের মাধ্যমে নিলামে তুললেন গ্যাগিওলি। নিলামে এর ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছিল ৩ লাখ পাউন্ড (প্রায় ৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা)। সেই ন্যাপকিন পেপারটি শেষ পর্যন্ত বিক্রি হলো ৭ লাখ ৬২ হাজার পাউন্ডে।

বিষয়:

ঝড়ে লণ্ডভণ্ড স্টেডিয়াম, ‘অনিশ্চিত’ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্স। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এই ঝড়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭ জন। এই ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্স। এখানেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলার কথা বাংলাদেশের।

আগামী ২১, ২৩ ও ২৫ মে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে ম্যাচগুলো। তবে ক্রিকেট ভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোর যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি পিটার ডেল্লা পেন্না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জানিয়েছেন, এই ম্যাচগুলো হওয়া এখন অনিশ্চিত।

তিনি লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি সিরিজ হওয়া এখন অনিশ্চিত হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার বড় একটি ঝড় হয়ে গেছে হিউস্টনে। সম্প্রতি তৈরি করা প্রেইরি ক্রিকেট কমপ্লেক্সের বেশিরভাগ স্থাপনাই তাতে ধ্বংস হয়ে গেছ।’

এর আগে বিশ্বকাপের উদ্দেশে গত ১৫ মে রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে দেশ ছাড়ে বাংলাদেশ দল। দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছান সাকিব-মাহমুদুল্লাহরা।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ‘ডি’ গ্রুপে দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা, নেপাল ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। ৮ জুন শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করবে টাইগাররা। এরপর গ্রুপ পর্বে ১০ জুন দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৩ জুন নেদারল্যান্ডস এবং ১৭ জুন নেপালের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ।


বার্সেলোনার ত্রাতা লোপেজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

গত ম্যাচে জয়ের পরই জানা গিয়েছিল শেষ তিন ম্যাচ জিতে রানার্সআপ হয়ে সম্মানের সঙ্গেই মৌসুম শেষ করতে চায় বার্সেলোনা। কারণ শিরোপার আশা ইতোমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। সেই লক্ষ্যে প্রথম ধাপটা ভালোভাবেই উৎরে গেল জাভি হার্নান্দেজের দল। এবার বার্সার ত্রাতা ফের্মিন লোপেজ। তার জোড়া গোলেই জয়ের স্বাদ পেয়েছে কাতালানরা।

বৃহস্পতিবার রাতে লা লিগার ম্যাচে প্রতিপক্ষ আলমেরিয়ার মাঠ থেকে ২-০ গোলের জয় নিয়ে ঘরে ফিরেছে জাভি হার্নান্দেজের দল। এ জয়ে ৩৬ ম্যাচে ২৪ জয় ও ৭ ড্রয়ে বার্সেলোনার পয়েন্ট হলো ৭৯। সমান ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে জিরোনা। আগেই শিরোপা জেতা রেয়াল মাদ্রিদের ৯৩ পয়েন্ট। বাকি আর দুই রাউন্ড।

ম্যাচজুড়ে চমৎকার খেললেন ফের্মিন লোপেজ। দুই অর্ধে করলেন একটি করে গোল। লিগ টেবিলের তলানির দল আলমেরিয়াকে হারিয়ে দ্বিতীয় স্থান মজবুত করল বার্সেলোনা। অন্যদিকে বার্সেলোনার কোচ হিসাবে লা লিগায় জাভির শততম ম্যাচ ছিল এটি। উপলক্ষটা জয়ে রাঙালেন দলটির সাবেক এই মিডফিল্ডার।

শুরু থেকে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা দলটাকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। গোলের দেখা পেতে খুব একটা দেরি হয়নি তাদের। ১৪তম মিনিটেই এগিয়ে যায় সফরকারীরা। বাম দিক থেকে ১৭ বছর বয়সী ডিফেন্ডার এক্তর ফোর্তের ক্রসে ছয় গজ বক্সে দারুণ হেডে ঠিকানা খুঁজে নেন ফের্মিন।

দ্বিতীয়ার্ধেও একই ধারা বজায় রাখে বার্সেলোনা। তবে খুব সহজে গোল আসছিল না। অবশেষে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় কাতালুনিয়ারা। ৬৭তম মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল পূর্ণ করেন ফের্মিন লোপেজ। বাম দিক থেকে সের্হি রবের্তো পাস দেন বক্সে, ছুটে গিয়ে প্রথম স্পর্শে বাম পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন ফের্মিন।

বার্সেলোনার মূল দলের হয়ে অভিষেক মৌসুমে ২১ বছর বয়সী স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের গোল হলো ১০টি, মৌসুমে দলটির কোনো মিডফিল্ডারের যা সর্বোচ্চ।

বাকি সময়ে সুযোগ পেলেও সেটাকে আর গোলে রূপান্তর করতে পারেনি জাভি হার্নান্দেজের দল। ফলে ২-০ গোলের জয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের। অন্যদিকে ঘরের মাঠেও কোনো গোলের দেখা পায়নি স্বাগতিক আলমেরিয়া।

৩৬ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে ১৮ নম্বরে আছে আলমেরিয়া। স্পেনের শীর্ষ লিগ থেকে তাদের অবনমন নিশ্চিত হয়েছে আগেই।


পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ের সুযোগ দেখছেন কারস্টেন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

বিশ্বকাপের আগেই পাকিস্তানের কোচিং প্যানেলে আমূল পরিবর্তন এনেছে বোর্ড। ঢেলে সাজানো হয়েছে তিন ফরম্যাটের কোচিং স্টাফ। ভিন্ন ভিন্ন ফরম্যাটের জন্য ভিন্ন ভিন্ন কোচ নিয়োগ দিয়েছে পিসিবি। পরিবর্তন এসেছে অধিনায়কত্বেও; শাহীন আফ্রিদিকে সরিয়ে আবারও আস্থা রেখেছে বাবর আজমের ওপরই। তিনিও নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছেন দায়িত্ব।

সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ম্যান ইন গ্রিনদের এ ফরম্যাটের কোচ দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক তারকা গ্যারি কারস্টেন। বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে পাকিস্তান। সে সিরিজ দিয়েই দায়িত্ব নেবেন গ্যারি কারস্টেন। তবে অধিনায়ক বাবরের ঘাড় থেকে দায়িত্বের বোঝা কমাতে চান তিনি। বাবর আজমের ওপর অতিনির্ভরশীলতা মোটেও তার প্রতি ন্যায্য নয় বলেও মনে করেন তিনি।

টকস্পোর্টে কথা বলার সময় কারস্টেন বাবর প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা (বাবরের ওপর নির্ভরশীলতা) কোনো খেলোয়াড়ের জন্যই ন্যায্য নয়। দলের জন্য সব সময়ই কিছু করতে হবে, তার এমন বোধ হওয়া উচিত নয়। আমার বাবরের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। সে দারুণ করেছে, দলের অনেকটা বোঝা সে নিজের কাঁধে বহন করে। কোচিং স্টাফ হিসেবে আমরা যা করব, সেই বোঝার ভার একটু কমাব। তাকে বোঝাতে হবে, সে একটা দলের একজন খেলোয়াড় মাত্র। সে নিজেকে আরেকটু স্বাধীনতা দিতে পারে সহজাত খেলাটা খেলতে।’

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচে ৪২ বলে ৭৫ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেন বাবর। কারস্টেনের আশা, সামনে এমন আরও ইনিংস দেখা যাবে, ‘আমার মনে হয় তার ওই স্বাধীন সত্তাটা যদি বের করে আনতে পারি এবং আমরা বুঝাতে পারি যে বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ম্যাচ জয়ে অবদান রাখার মতো আরও খেলোয়াড় আছে, তাহলে তার ওপর থেকে অনেকটা চাপ কমে আসবে।’

এবারের বিশ্বকাপেও পাকিস্তান বেশ শক্তিশালী দল। পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ের সম্ভাবনাও দেখেছেন অনেকেই। সেই দলেরই নতুন কোচ গ্যারি কার্স্টেন। তিনি বলেন, ‘আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমাদের সামর্থ্য দেখানো ও শক্তিশালী দল হিসেবে নিজেদের অতীত অর্জনকে ধরে রাখার দারুণ এক সুযোগ।’ সে জন্য তিনি মনে করেন, ‘সম্মিলিত চেষ্টা, যথাযথ পরিকল্পনা এবং একে অপরের প্রতি সমর্থনের ওপর সাফল্য নির্ভর করে। শিরোপার জন্য অন্য ১৯টি দলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করতে হবে।’

পাকিস্তানের মতো আন্তর্জাতিক দলের হয়ে কাজ করতে পেরে নিজের খুশির কথাও জানান বিশ্বকাপ জয়ী এ কোচ।


রোনালদোর কাছে এটা অবিশ্বাস্য

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

২০ বছরের শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবল ক্যারিয়ার, বয়সটাও চল্লিশ ছুঁইছুঁই; কিন্তু পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো যেন এখনো চির তরুণ। রোনালদো যেন ওয়াইনের মতো- যতই পুরোনো হচ্ছে, ততই স্বাদ বাড়ছে। এ বয়সে এসে যখন সবাই বুট জোড়া তুলে রেখে একটু আরাম-আয়েসে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে চান, সিআরসেভেন তখন সৌদি আরবে সাজাচ্ছেন গোলের পসরা। একটুও কমেনি তার পুরোনো সেই গতি কিংবা শারীরিক শক্তি। তরুণদের চেয়েও তিনি তরুণ। বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এভাবেই উঁচুমানের খেলা চালিয়ে যেতে চান এই পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড।

সৌদি ক্লাব আল নাসরের হয়ে চলতি মৌসুমে ৪১ ম্যাচ খেলে ৪২ গোল করেছেন রোনালদো। লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতাও তিনিই। স্বাভাবিকভাবেই গোল বুট জয়েরও দ্বারপ্রান্তে তিনি। ক্যারিয়ারের এমন পড়ন্ত বেলায়ও নিজেকে ধারাবাহিক রাখতে পেরে গর্বিত বোধ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, অবিশ্বাস্যও লাগে তার কাছে।

এক পডকাস্টে রোনালদো বলেন, ‘এই বয়সে এখনো সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে যাওয়ায় আমি গর্বিত বোধ করি। এটাই আমাকে চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দেয়। গত ২০ বছরে আমার ক্যারিয়ারের দিকে তাকালে দেখবেন, আমার মানটা উঁচুতে আছে। ২০ বছর ধরে শীর্ষ পর্যায়ে থাকাটা অবিশ্বাস্য। আমি সেটা করছি এবং করতে থাকি। আমার কাছে এটি একটি বড় অর্জন।’

এই বয়সে এসেও শীর্ষ পর্যায়ে থাকা যে সহজ নয় সেটা মানেন, ‘এই (শীর্ষ) পর্যায়ে থাকাটা সহজ নয়। নিজেকে তাড়না দিতে, অনুপ্রাণিত করতে, চালিয়ে যেতে, গোল করতে, ভালো ছন্দে থাকতে, উঠে আসা তরুণ সিংহদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে শুধু শারীরিকভাবেই নয়, মানসিকভাবেও খুব ভালোভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। এটাই চ্যালেঞ্জ।’

ক্যারিয়ার দীর্ঘ করার জন্য প্রতিভা ও পরিশ্রম দুটোই দরকার বলে মনে করেন রোনালদো। একই সঙ্গে বজায় রাখতে হবে ধারাবাহিকতাও। তিনি বলেন, ‘প্রতিভা ছাড়া পরিশ্রম এবং পরিশ্রম ছাড়া প্রতিভা কিছুই নয়। দুটোই একসঙ্গে থাকা দরকার। আমার মধ্যে দুটোই আছে। অবশ্য এটা বলতে পারি না, একটার চেয়ে অন্যটা বেশি আছে। ছোট বিষয়গুলোই পার্থক্য তৈরি করে দেয়। তাই ধারাবাহিকতা ধরে রাখা সবচেয়ে কঠিন জিনিস।’

রোনালদো একটি ব্র্যান্ড! বিশ্বের অনেক তরুণই তার মতো হতে চায় কিন্তু সেটা সহজ বলেই জানালেন তিনি, ‘সবাই ক্রিস্টিয়ানো হতে চায়, কিন্তু তেমনটা হওয়া কঠিন। নিজেকে শৃঙ্খলার মধ্যে রাখাটা সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার। কখনো কখনো নিজের মনের বিরুদ্ধে লড়াই করি আমি, আমরা সবাই মানুষ। অবশ্যই প্রতিদিন জিমে যেতে আমারও ভালো লাগে না, কারোরই লাগে না; কিন্তু তা করতে হবে।’

বিষয়:

ফিনিশিংয়ের বস ডোয়াইন ব্রাভো

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

বল হাতে প্রতিপক্ষকে কঠিন মুহূর্তে চেপে ধরা, ব্যাট হাতে দলের হাল ধরা, ফিল্ডিংয়ে নেমে দুর্দান্ত কিছু রান আটকানো বা ক্যাচ লুটে নেওয়া; এগুলোই একজন আদর্শ অলরাউন্ডারের বৈশিষ্ট্য। আর এর সবটাই উপস্থিত ক্যারিবীয় তারকা ডোয়াইন ব্রাভো। ব্যাট হাতে তিনি দুর্দান্ত এক ফিনিশার। পরিস্থিতি বুঝে ব্যাট করায় তার ‍জুড়ি নেই। তিনি ডেথ ওভারের তুখোড় বোলার। বিরল প্রজাতির পেস বোলিং অলরাউন্ডার তিনি। তার নিখুঁত পারফরম্যান্স দিয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন পুরো ক্রিকেট বিশ্ব।

ডোয়াইন ব্রাভো ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে পরিচিত আরেকটা কারণে, ক্যারিবীয় ক্রিকেটারদের উপস্থিতি কিংবা উদ্‌যাপন সব সময়ই ক্রিকেট মাঠে বাড়তি সৌন্দর্য ছড়ায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভোও তার ব্যতিক্রম নন। বিশেষ করে উইকেট পাওয়ার পর তার নাচ আইপিএলের অন্যতম ট্রেডমার্ক দৃশ্য। তবে এসবের মাঝেও লুকিয়ে আছে বিরাট এক সৌন্দর্য।

দুইটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য তিনি। নিজের মানকে তিনি এমন জায়গায় নিয়ে গেছেন যে, শত নিজেদের মধ্যে শত ঝামেলা আর বিবাদের পরও বারবারই ক্যারিবিয়ান বোর্ড তার দ্বারস্থ হয়। আর তিনিও ফিরেন, আর আন্তর্জাতিক ময়দানে এন্টারটেইন করেন।

১৯৮৩ সালে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর সান্তা ক্রুজ এলাকায় জন্ম নেওয়া ব্রাভোর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক ২০০২ সালে ত্রিনিদাদ ও টোবাগো ক্রিকেট দলের হয়ে। ব্রাভোর শুরুটা হয়েছিল ব্যাটার হিসেবেই; অভিষেকের এক মাস পরেই পেয়েছিলেন সেঞ্চুরি। পুরস্কার হিসেবে ডাক পেয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলে। অলরাউন্ডার ব্রাভোর আত্মপ্রকাশ ঘটে ২০০৩ সালে উইন্ডওয়ার্ড আইল্যান্ডের বিপক্ষে ১১ রান খরচ করে ৬ উইকেট শিকারের পর।

২০০৪ সালে ভাগ্য খুলে যায় ব্রাভোর। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে প্রথমবারের মতো ক্যারিবীয় জার্সি গায়ে জড়ানোর সুযোগ পান ডানহাতি এ অলরাউন্ডার। ওই সিরিজেই গায়ে জড়ান ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণ টেস্টের জার্সি। ব্রাভোর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হয় ২০০৬ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।

ব্রাভো টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানান ২০১৫ সালে। বিদায় বলেছিলেন ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টিকেও কিন্তু বোর্ডের অনুরোধে আবার ফিরেও এসেছিলেন। কিন্তু আর কত দিন? ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরই বিদায় জানান জাতীয় দলকে। ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টকেও বিদায় জানিয়েছেন।

পুরো নাম: ডোয়েন জেমস জন ব্র্যাভো।

জন্ম: ৭ অক্টোবর, ১৯৮৩ সাল।

জন্মস্থান: সান্তা ক্রুজ, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো।

রাশি: তুলা রাশি।

প্রিয় খেলা: ক্রিকেট, গলফ, বাস্কেটবল।

প্রিয় খাবার: স্টু চিকেন, পাস্তা ও চকোলেট।

প্রিয় পানীয়: ওয়াইন।

প্রিয় রং: সাদা।

প্রিয় ক্রিকেটার: ব্রায়ান লারা, ম্যাথিউ হেইডেন।

প্রিয় ক্রিকেট দল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল।

প্রিয় সতীর্থ: আন্দ্রেরাসেল, নিকোলাস পুরান, কাইরন পোলার্ড।

প্রিয় ফুটবলার: কিলিয়ান এমবাপ্পে।

প্রিয় ফুটবল দল: চেলসি এফসি।

প্রিয় গাড়ি: লর্ড রোভার স্পোর্ট।

প্রিয় স্টেডিয়াম: কুইন’স পার্ক ওভাল, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো।

প্রিয় স্থান: লাস ভেগাস।

প্রিয় শখ: নৃত্য করা ও গান শোনা।

প্রিয় জুতার ব্র‌্যান্ড: নিউ ব্যালেন্স।


যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বিপাক্ষিক সিরিজ এবং বিশ্বকাপ খেলতে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল।

যুক্তরাষ্ট্রে হিউজটনের জর্জ বুশ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের ভিডিও নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে পোস্ট করে জাতীয় দলের পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। খবর বাসসের।

ভিডিওতে দেখা যায়, বাংলাদেশকে দলকে বহনকারী বিমানটি বিমানবন্দরে অবতরণ করছে। এরপর নিজেদের লাগেজসহ বিমানবন্দর থেকে বের হচ্ছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। সেখান থেকে টিম বাসে চড়ে হোটেলে যান তারা।

বিশ্বকাপের উদ্দেশে ১৫ মে রাত ১টা ৪০ মিনিটে দেশ ছাড়ে বাংলাদেশ দল। দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছান সাকিব-মাহমুদুল্লাহরা।

বিশ্বকাপ মিশন শুরুর আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের দ্বিাপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। ২১, ২৩ ও ২৫ মে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ অনুষ্ঠিত হবে।

এরপর বিশ্বকাপের মঞ্চে খেলতে নামার আগে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ২৮ মে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এবং পহেলা জুন ভারতের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ রয়েছে টাইগারদের।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ‘ডি’ গ্রুপে দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা, নেপাল ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। ৮ জুন শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করবে টাইগাররা। এরপর গ্রুপ পর্বে ১০ জুন দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৩ জুন নেদারল্যান্ডস এবং ১৭ জুন নেপালের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ।


বাংলাদেশ দলকে মাশরাফির বার্তা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

মাশরাফি জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন, সেও প্রায় অনেকদিন হলো। জাতীয় সংসদের হুইপ মাশরাফি এখন ব্যস্ত রাজনীতি নিয়ে। তবে জাতীয় দলের খোঁজখবর রাখেন ঠিকই। দলের সুসময়ে যেমন প্রশংসায় ভাসান, তেমনি দুঃসময়েও অভিভাবকের মতো পাশে থেকে অনুপ্রেরণা জোগান। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নাজমুল হোসেন শান্তদের শুভকামনা জানালেন সাবেক এই অধিনায়ক।

বিশ্বকাপ দলকে শুভকামনা জানিয়ে সাবেক এই অধিনায়ক নিজের ফেসবুকে এক পোস্টে লিখেছেন, “সাহস সব সময় গর্জন করে না, শুধু দিন শেষে শান্ত কণ্ঠস্বরে বলে, আগামীকাল চেষ্টা করব। ‘Go and kill it champs’ সব সময় শুভকামনা আমার প্রাণের দেশ, প্রাণের দলের প্রতি বাংলাদেশ।”

আগামী ২ জুন যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বসতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। আইসিসির মেগা আসরটিতে অংশ নেওয়ার আগে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। ২১, ২৩ ও ২৫ মে হবে সিরিজের ম্যাচগুলো। সে কারণেই আগেভাগে দেশ ছেড়েছে টিম টাইগার্স।

বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হবে আগামী ৮ জুন। যেখানে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে টাইগারদের বিশ্বকাপ মিশন, ভেন্যু যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ১০ জুন বাংলাদেশ লড়বে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। তৃতীয় ম্যাচে ১৩ জুন নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলবে টাইগাররা। এরপর ১৭ জুন নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে গ্রুপপর্ব শেষ করবে বাংলাদেশ।


banner close