রোববার, ১২ মে ২০২৪

শেষ মুহূর্তে স্বপ্নভঙ্গ রোনালদোদের

পারলেন না রোনালদো, পারল না পর্তুগাল। ছবি : উয়েফা
ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশিত
ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৬:১৯

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ‘ফ্লপ’ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকেই দেখা গেল উয়েফা নেশনস লিগেও। গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচেও স্পেনের বিপক্ষে নির্বিষ রোনালদো। ফল, ০-১ গোলে দলের হার, টুর্নামেন্ট থেকে পর্তুগালের বিদায়।

বাজে ফর্মের কারণে স্পেনের বিপক্ষে শেষ ম্যাচের আগেই দল থেকে রোনালদোকে বাদ দেয়ার দাবি উঠেছিল দেশটিতে। পর্তুগিজ দৈনিক এ বোলা তো লিখেই দিয়েছিল ‘লেস রোনালদো, মোর পর্তুগাল’। সেই জুনে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে জোড়া গোল করা রোনালদো আর কোনো ম্যাচে গোলের দেখাই পেলেন না! গতকাল যারা রোনালদোর খেলা দেখেছেন, তাদেরও এটা মনে হতে পারে-ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে পড়েছেন রোনালদো!

রোনালদোসহ অন্য পর্তুগিজ স্ট্রাইকাররা গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন। প্রথমার্ধে তাদের আক্রমণাত্মক খেলাও ছিল চোখে লাগার মতো। কিন্তু গোলের খেলা ফুটবলে গোল করতে না পারলে যা হয়! ম্যাচের শেষ দিকে গোল করে উল্টো বাজিমাৎ স্পেনের। ৮৮ মিনিটে ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দেয়া গোলটি করেন আলভারো মোরাতা।

যে গোলে ৩ জয় ও ২ ড্রয়ে ১১ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা হয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেছে স্পেন। আর টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে নেশনস লিগের সূচনা আসরের চ্যাম্পিয়নরা।

এই বিদায় অবশ্য দলের আত্মবিশ্বাস ও বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলেই জানালেন পর্তুগাল কোচ ফার্নান্দো সান্দোস। কাতার বিশ্বকাপে ঘানা, উরুগুয়ে ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ‘এইচ’ গ্রুপে খেলবে পর্তুগাল।

স্পেন ছাড়া নেশনস কাপের সেমিফাইনালের অন্য তিন দিল নেদারল্যান্ডস, ক্রোয়েশিয়া ও ইতালি। আগামী বছরের জুনে হবে প্রতিযোগিতার সেমিফাইনাল ও ফাইনাল।


হোয়াইটওয়াশ করা হলো না জিম্বাবুয়েকে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম চারটি জিতে আগেই সিরিজ জিতে নিয়েছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে তাই লক্ষ্য ছিল ৫-০ তে সিরিজ জিতে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করা। কিন্তু তার বদলে মিরপুর শের-ই-বাংলায় নিজেদের ডেরায় উল্টো হারের যন্ত্রণা পেতে হলো টাইগারদের। শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়ে তুলে নিয়েছে ৮ উইকেটের বিশাল জয়।

আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ১৫৭ রান করে। লক্ষ্য তাড়ায় জিম্বাবুয়ের জবাবটা ছিল দারুণ। ৪ ওভারেই বিনা উইকেট হারিয়ে ৩৮ রান তুলে নেয় অতিথিরা।

উইকেটের খোঁজে থাকা বাংলাদেশ তাদের প্রথম উইকেটের দেখা পায় সাকিবের প্রথম ওভারেই। নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই সাকিব তুলে নেন মারুমানির উইকেট।

এরপরই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় জিম্বাবুয়ে। সিকান্দার রাজা ও বেনেট পাল্টা আক্রমণে গিয়ে বোলারদের কড়া শাসন করেন। অষ্টম ওভারে সাইফ উদ্দিনকে মিড উইকেটে ছক্কা উড়ানোর পর দারুণ কভার ড্রাইভে চার হাঁকান রাজা। এরপর লেগ স্পিনার রিশাদকে একই ওভারে দুই ছক্কা মারেন রাজা ও বেনেট। রাজা ছাড় দেননি মোস্তাফিজকেও। কাভারের ওপর দিয়ে বল তুলে মেরে আদায় করেন দৃষ্টিনন্দন চার। বেনেট ১৩তম ওভারে রিশাদ হোসেনকে ছক্কা মেরে পেয়ে যান ফিফটির স্বাদ।

তাকে থামানোর পথ খুঁজে পেতে সৌম্যকে বোলিংয়ে আনেন শান্ত। তার প্রথম বলই লং অফ দিয়ে বিশাল ছক্কা মারেন বেনেট। কিন্তু এরপরপরই সাইফ উদ্দিন নিজের দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে ফেরান বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানকে।

পানি পানের বিরতির পর প্রথম ওভারেই বেনেট ক্যাচ তোলেন লং অফে। অনেক উচুঁতে উঠা বল সহজেই তালুবন্দি করেন রিশাদ। ৪৯ বলে ৫টি করে চার ও ছক্কায় ৭০ রান করেন বেনেট। ওই সময়ে ২৯ বলে ৪৫ রান দরকার ছিল জিম্বাবুয়ের। কাজটা কঠিন ছিল না। রাজা ক্রিজে থাকায় জিম্বাবুয়ে ছিল আত্মবিশ্বাসী। অধিনায়কও হতাশ করেননি।

ওই ওভারেই সাইফ উদ্দিনকে দুটি চার মারেন দৃষ্টিনন্দন শটে। পরের ওভারে মোস্তাফিজকে পুল করে চার মেরে ৪১ বলে রাজা তুলে নেন ফিফটি। যা তার ক্যারিয়ারের ১৪তম টি-টোয়েন্টি ফিফটি। পরের ওভারে সাইফ উদ্দিনের স্লোয়ারে মিড উইকেট দিয়ে নিজের দ্বিতীয় ছক্কা তুলে নেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। শেষ দুই বলে আসে আরো ১০ রান। তাতে জয়ের লক্ষ্য চলে আসে সিঙ্গেল ডিজিটে।

মাহেদীর করা ইনিংসের ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে জয় নিশ্চিত হয়ে যায় জিম্বাবুয়ের। ৯ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের দারুণ জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়ায় অতিথিরা। ৪৬ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৭২ রান কেরন রাজা। পুরো সিরিজে নিষ্প্রভ থাকলেও শেষ ম্যাচে জ্বলে উঠেন তিনি।

বাংলাদেশের ব্যাটিং পুরো সিরিজেই ছিল হতাশাজনক। আজকেও ছিল না তার ব্যতিক্রম। এদিন ১৫ রান তুলতেই নেই ৩ উইকেট। তানজিদ হাসান শুরুতে মুজারাবানির শর্ট বল তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন মিড উইকেটে। এরপর স্পিনার বেনেটের পর পর দুই ওভারে সৌম্য ও তাওহীদ উইকেট বিলিয়ে আসেন। উইকেট খানিকটা ধীরগতির ছিল। তবে বাউন্স আদায় করতে পারছিলেন বোলাররা। ওই লাফিয়ে উঠা বাউন্সেই সৌম্য পয়েন্টে ক্যাচ দেন। তাওহীদ আটকে যান উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে।

প্রবল চাপে পড়া বাংলাদেশকে ওই অবস্থান থেকে টেনে তোলার কাজটা সহজ ছিল না। মাহমুদউল্লাহ ও শান্ত চতুর্থ উইকেটে জুটি বেঁধে ৬৯ রান যোগ করেন।

দুজনের জুটির ফিফটি চলে আসে ৩২ বলে। কিন্তু শান্তর বিদায়ে আবার চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। ২৮ বলে ৩৬ রান করে শান্ত মাসাদাকজার বলে আউট হন। বাঁহাতি স্পিনারের শর্ট বল স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন। ৫ চার ও ১ ছক্কা শান্ত ইনিংসটি সাজান। পাঁচ ইনিংস পর শান্তর রান ত্রিশ পেরিয়েছে।

সঙ্গী হারানোর পর মাহমুদউল্লাহর রানের গতিও কিছুটা কমে আসে। বেনেটকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে মিড উইকেটে ছক্কা হাঁকিয়ে চল্লিশের ঘরে প্রবেশ করেন মাহমুদউল্লাহ। সেখান থেকে ক্যারিয়ারের অষ্টম টি-টোয়েন্টি ফিফটিতে পৌঁছতে আরো ১০ বল নেন। চাপে পড়ে আক্রমণ বাড়াতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে আসেন বাংলাদেশের ইনিংসের টপ স্কোরার। ৪৪ বলে ৫৪ রান করে মুজারাবানির বলে ডিপ কাভারে ক্যাচ দেন। ৬ চার ও ১ ছক্কায় মাহমুদউল্লাহ সাজান নিজের ইনিংস।

মাঝে সাকিব নেমে ভালো কিছুর আশা দেখাচ্ছিলেন। আগের ম্যাচে ১ রানে তার ইনিংস থামলেও আজ ১৭ বলে ২১ রান করেন ১ ছক্কায়। লুক জোয়াংগিকে উড়াতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়েছিলেন সাকিব। দারুণ ডাইভে সেই ক্যাচ নেন ক্যাম্পবেল।

জিম্বাবুয়ের বোলাররা কাজটা সহজ করে দেন। জোয়াংগির ফুলটস বল ফাইন লেগ দিয়ে ছক্কা উড়ান জাকের আলী। পরের ওভারে মুজারাবানির হাফ ভলি বল লং অফ দিয়ে সীমানা পাড় করান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। শেষ দিকে তার এই দুই ছক্কাতেই বাংলাদেশের স্কোরবোর্ড শেষপর্যন্ত পেরিয়েছে দেড়শ রানের কোটা।


আজ জানা যাবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

দরজায় কড়া নাড়ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বাকি নেই এক মাস সময়ও। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী ইতোমধ্যেই বিশ্বকাপের দল পাঠিয়েছে অংশগ্রহণকারী দলগুলো। অনেকেই সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণাও করেছে। তবে ব্যতিক্রম ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ এখনো পর্যন্ত জানানো হয়নি। তবে দর্শকদের সেই অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে আজ রোববার। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ বিকেলে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু।

প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘সবকিছু চূড়ান্ত, এখন ক্রিকেট অপরারেশন্সের সবুজ সংকেত পেলেই আমরা দল দেব। আমরা মানসিকভাবে প্রস্তুত রয়েছি। কাল ম্যাচ শেষে বিকেলের দিকে হয়তো ঘোষণা করব, যদি আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়।’

একই কথা জানিয়েছেন সহকারী নির্বাচক হান্নান সরকারও। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রস্তুত আছি দল ঘোষণা করার জন্য। বাকিটা বোর্ডের সিদ্ধান্ত। যেহেতু কাল ম্যাচ আছে, বোর্ড যখন বলবে তখন দল দেব। সেটা কাল হোক আর পরশু হোক।’

তবে কেমন হতে পারে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল সেটার আভাস দিয়ে রেখেছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। শ্রীলঙ্কার আর জিম্বাবুয়ে সিরিজের বেশির ভাগ ক্রিকেটারেরই নাম থাকবে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে।

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল কেমন হতে পারে, সে সম্পর্কে আভাস অবশ্য আগেই মিলেছিল অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কথায়। দলের এই টপ-অর্ডার ব্যাটার বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ে সিরিজের দলের বেশির ভাগ সদস্য যাবেন বিশ্বকাপে।


বড় চ্যালেঞ্জ ব্যাটার শান্তর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল সাগর

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ প্রস্তুতিটা প্রথম চার ম্যাচে বেশ ভালোই হয়েছে। সবগুলোতেই জয় তুলে নিয়েছে নাজমুল শান্তবাহিনী। চট্টগ্রামে প্রথম তিন ম্যাচে জয়টা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যের হলেও, ঢাকায় শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বুকে কাঁপুনি তুলে দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে; কিন্তু শেষপর্যন্ত আর বাংলাদেশকে হারের তিক্ত স্বাদ দিতে পারেনি রোডেশিয়ান। পাঁচ ম্যাচ সিরিজে চার জয়ে বাংলাদেশের লক্ষ্য এখন হোয়াইট ওয়াশ। সে লক্ষ্যেই আজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে টাইগাররা। হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে এ ম্যাচটি মাঠে গড়াবে সকাল ১০টায়। খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।

নিকট অতীতে বাংলাদেশ এ সময় কোনো ম্যাচ খেলেনি। মূলত বিশ্বকাপের কথা চিন্তা করেই এমন সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশ্বকাপে একই সময়ে ম্যাচ রয়েছে বাংলাদেশের।

চতুর্থ ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে তাসকিন আহমেদ জানিয়েছিলেন, সিরিজ জয়ের পর বাকি দুই ম্যাচকে প্রস্তুতির মঞ্চ হিসেবেই নিচ্ছেন তারা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চান নিজেদের অস্ত্রগুলো। মাঠেও দেখা গেল সেটাই। একাদশেও এনেছিল তিন পরিবর্তন। মাহমুদউল্লাহ, সাইফুদ্দিন আর লিটনকে বিশ্রামে পাঠানো হয়েছিল। ওপেনিংয়ে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে সৌম্য সরকারকে। শেষ ম্যাচেও তাই ব্যতিক্রম হওয়ার সম্ভাবনা কম।

ওপেনিং পজিশন নিয়ে বাংলাদেশের সমস্যা বেশ পুরোনো। বিশেষ করে লিটন দাসের অফফর্ম সেই চিন্তাকে আরও বৃদ্ধি করেছে। তবে চতুর্থ ম্যাচে বেশ আশাজাগানিয়া ওপেনিং জুটির দেখা মিলেছে। ইনফর্ম তানজিদ তামিমের সঙ্গে বেশ গুরুত্বপূর্ণ রোল প্লে করেছে সৌম্য সরকার। দুজনে মিলে ১০০ রানের জুটি গড়েছিল। শেষ ম্যাচেও তাদের ওপর আশা থাকবে বিশেষ কিছু করার।

তানজিদ-সৌম্য ফেরার পর ধস নেমেছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনে। ৪২ রান তুলতেই বাংলাদেশ হারিয়েছে ১০ উইকেট। দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও এমন অবস্থা বেশ চিন্তার। শেষ ম্যাচে তাই তাড়া থাকবে ব্যাটারদের রানে ফেরার।

অধিনায়ক হিসেবে নাজমুল শান্ত প্রশংসা কুড়ালেও তার পারফরম্যান্স বেশ হতাশার। বিশেষ করে তার ধারাবাহিক অফফর্ম বিশ্বকাপে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। শান্তর সামনে তাই চ্যালেঞ্জ থাকবে শেষ ম্যাচে ব্যাটহাতে রানে ফেরার।

প্রত্যেক ম্যাচেই জিম্বাবুয়ের অগ্রগামিতার দেখা মিলেছে। প্রতি ম্যাচেই তারা নিজেদের ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। যার প্রতিফলন দেখা গেছে চতুর্থ ম্যাচে। জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল ম্যাচ। শেষ ওভারে তো বাংলাদেশিদের হৃদয়ে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল তারা। তাই এটা বলতে কোনো দ্বিধা থাকার কথা নয়, শেষ ম্যাচে মরণ কামড় দিতে চাইবে সিকান্দার রাজারা।

সে ক্ষেত্রে শেষ ম্যাচটাও হয়তো কঠিনই হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের জন্য। তবে সেটা হলেও প্রস্তুতিতেই মন দেওয়া উচিত বাংলাদেশের।


ক্লিন সুইপের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

আরেকটি ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। প্রথম চার ম্যাচে দাপুটে ক্রিকেট খেলেছে বাংলাদেশ। ফলাফল হিসাবে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে নাজমুল-শান্ত বাহিনী। জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়েই আজ শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাঠে নামবে টাইগাররা। লক্ষ্য শেষ ম্যাচে জয় দিয়ে রাঙিয়ে রোডেশিয়ানদের ধবল ধোলাই করা।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এর আগেও তিনবার এ কীর্তি গড়েছে বাংলাদেশ। আজ সিকান্দার রাজাদের হারাতে পারলেই টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইট ওয়াশের হালি পূর্ণ করবে বাংলাদেশ; অর্থাৎ চতুর্থ হোয়াইট ওয়াশের কীর্তি গড়বে।

সিরিজ জয়ের পাশাপাশি দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের আরেকটি লক্ষ্য বিশ্বকাপের প্রস্তুতি। সেই কথা মাথায় রেখেই এ ম্যাচের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে সকাল ১০টায়। নিকট অতীতে এ সময় কোনো ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ; এমন অভিজ্ঞতা খুব একটা নেই জিম্বাবুয়েরও। তাই এ ম্যাচে আবহাওয়া একটা ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা যেহেতু সদ্য সমাপ্ত ডিপিএলে একই সময় খেলেছে, তাই তাদের জন্য কন্ডিশন খুব একটা অপরিচিত হওয়ার কথা নয়।

বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি নিয়ে যে সমস্যা এতদিন ছিল তার কিছুটা হলেও মিটতে দেখা গেছে চতুর্থ ম্যাচে তানজিদ হাসান তামিম আর সৌম্য সরকারের ব্যাটিং দেখে। দীর্ঘদিন পরে টি-টোয়েন্টিতে ১০০ রানের জুটি গড়েছিল তারা। লিটন দাসের বিশ্রামে সুযোগ পেয়েই বিশ্বকাপে নিজের ওপেনিং পজিশনের দাবিটা জানিয়েছেন তিনি। শেষ ম্যাচে দাবিটা জোরাল করার চ্যালেঞ্জ থাকবে তার জন্য।

প্রথম চার ম্যাচেই জিম্বাবুয়ের ব্যাটিংয়ের দৈন্যদশা দেখা গেছে। খুব একটা দায়িত্ব নিতে পারেনি সিকান্দার রাজা-মাসাকাদজারা। ব্যর্থতার রেকর্ড তাদেরই বেশি। তাই অন্তত শেষ ম্যাচে তাদের সামনে চাপ থাকবে রানে ফেরার। তবে অভিজ্ঞ এ ক্রিকেটার বরাবরই চাপ সামলে নিয়েছেন।

পুরো সিরিজেই দুর্দান্ত বোলিং করেছে বাংলাদেশের বোলাররা। বিশেষ করে পেসার তাসকিন আহমেদ, সাইফুদ্দিন, তানজিদ হাসান সাকিব। ঘুরিয়ে দেখা হচ্ছে সব পেসারদের। তাই শেষ ম্যাচে আবারও একাদশে দেখা যেতে পারে সাইফুদ্দিনকে। আর ইনজুরির শঙ্কা চিন্তা করে বিশ্রামে দেওয়া হতে পারে তাসকিন আহমেদকে।

দীর্ঘদিন পরে দলে ফিরেই বল হাতে দুর্দান্ত করেছেন সাকিব আল হাসান। শেষ ওভারে গিয়ে দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচ জিতিয়েছেন। যদিও তিনি ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন। আশা করা যায় ব্যাট হাতেও চ্যাম্পিয়ন রূপেই ফিরবেন তিনি।

আইপিএলে দুর্দান্ত করা মুস্তাফিজ ধারা বজায় রেখেছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও। ধোনী আর ব্রাভোর দেওয়া টোটকা ব্যবহার করতে দেখা গেছে চতুর্থ ম্যাচে। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের জন্য ফিজের বোংলিং এক্স ফ্যাক্টর হয়ে যেতে পারে।

তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের জন্য বাংলাদেশকে ভরসা করতে হবে তরুণদের ওপরই। বিশেষ করে ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম, জাকের আলি, তাওহীদ হৃদয়। তাদের ব্যাট হাসলেই জয়ের দ্বার উন্মোচিত হবে বাংলাদেশের। পাশাপাশি অধিনায়ক নাজমুল শান্তর ব্যাট হাসলে বাংলাদেশের জয় কেবলই সময়ের ব্যাপার।


সাকিবের ঘূর্ণিতেই জয়ের উল্লাস

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল সাগর

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চতুর্থ ম্যাচটিতে থ্রিলারের কোনো কমতি ছিল না। বাংলাদেশ উড়ন্ত শুরু পেলো, যেটা দেখে মনে হচ্ছিল বোধহয় আগের তিন ম্যাচের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে টাইগাররা। কিন্তু হঠাৎ ছন্দপতনে সেটা আর হল না। বোলিং ইনিংসেও সহজ ম্যাচটাও হয়ে গেলো কঠিন। শেষ ওভারে তো বাংলাদেশী সমর্থকদের বুকে কাপুনি তুলে দিয়েছিলেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। তবে সাকিবের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে সেটা আর সম্ভব হয়নি। চতুর্থ ম্যাচেও বাংলাদেশ জিতেছে ৫ রানে। দীর্ঘদিন পরে দলে ফিরেই চার উইকেট নিয়ে জয়ের নায়ক সাকিব।

টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু পায় বাংলাদেশ। শুরুতেই মারমুখী হয়ে ব্যাটিং করতে থাকেন তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। তার যোগ্য সঙ্গী ছিলেন ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা সৌম্য সরকার। দুজনে মিলে গড়েন ১০১ রানের জুটি। ব্যাট চালিয়ে যান ১১ ওভার পর্যন্ত। অর্ধশতক তুলে নেন তানজিদ। ৭ চার আর এক ছক্কায় ৩৭ বল থেকে ৫২ রান করে ফেরেন তামিম। ওই ওভারেই বিদায় নেন সৌম্য সরকারও। ৩২ বল থেকে করেন ৪১ রান।

এরপরই শুরু হয় বাংলাদেশের অন্ধকার অধ্যায়। মাত্র ৪২ রান তুলতেই সাজ ঘরে ফিরেছে আট ব্যাটার। ভালো শুরুর পরও তাওহিদ হৃদয় ফিরেছেন মোটে ১২ রান করে। সাকিব কাটা পড়েছেন ১ রানেই। ব্যর্থতা চলমান রেখেছেন অধিনায়ক নাজমুল শান্তও (২)। হাল ধরতে পারেনি জাকের আলিও (৬)। শেষ পর্যন্ত ১৪৩ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।

জবাবে শুরুটা এদিনও ভালো হয়নি জিম্বাবুয়ের। প্রথম ওভারেই হারায় উইকেট। ৯ ওভার ৩ বলে মাত্র ৫৭ রান তুলতেই হারায় ৪ উইকেট। তবে জীবন পেয়ে বাংলাদেশের উপর চড়াও হতে শুরু করেন জোনাথান ক্যাম্পবেল আর রায়ান বার্ল। দশম ওভারে মোস্তাফিজের জোড়া আঘাতে ফেরেন বার্ল আর লুক জঙ্গউ।

শেষ দিকে ব্যাট হাতে ঝড় তোলার আভাস দেন হ্যামিল্টন মাসাদাকজা। খেলা নিয়ে যান শেষ ওভারে। জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ের দরকার ১৪ রান। শেষদিকে দুই উইকেট তুলে নিয়ে সাকিব দেন মোটে ৮ রান। তৃতীয় বলে দারুণ দক্ষতায় মুজারাবানিকে স্টাম্পিং করেন জাকের। আর চতুর্থ বলে বোল্ড করেন এনগারাভাকে।

চার উইকেটে নিয়ে বাংলাদেশকে জয় এনে দেন সাকিব। এতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৪-০ তে এগিয়ে থাকলো বাংলাদেশ।


উদ্বিগ্ন নয় লিটন দাস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

লিটন দাসের রান খরার ইতিহাসটা বেশ পুরোনোই। কি ওয়ানডে, টেস্ট, আর কি টি-টোয়েন্টি- কোনো ফরম্যাটেই হাসছে না তার ব্যাট। দীর্ঘ অফফর্ম সমালোচনার জন্ম দিয়েছে দর্শকদের মনে। প্রশ্ন উঠছে লিটন দাসের আউট হওয়ার ধরন নিয়েও। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে এ ওপেনার ৪৩ বল খেলে করেছেন ৩৬ রান। বিশ্বকাপের আগে লিটন দাসের এমন পারফরম্যান্স উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে।

তৃতীয় ম্যাচ শেষে ব্রডকাস্টে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের অফফর্মের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন লিটন দাস। তবে এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়, জানালেন অচিরেই হাসবে তার ব্যাট। লিটন বলেন, ‘অবশ্যই (চেনা রূপে নাই)। চেষ্টা করছি, হচ্ছে না। পরিশ্রম করছি। এমন না যে পরিশ্রম করছি না। অনেক সময় আপনি পরিশ্রম করবেন, কিন্তু এটা তো ক্রিকেট। হতেই পারে। এটা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন না। চেষ্টা করছি। অবশ্যই আমার ভালো করা উচিত।’

শেষ ম্যাচে লিটন দাস যেন উইকেট বিলিয়ে এসেছেন। পরপর তিন বলে স্কুপ খেলেছেন, এরপর উইকেট দিয়ে এসেছেন। লিটনের এমন আউট নিয়ে সমালোচনায় মুখর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ক্রিকেট বিশ্লেষক। সেই আউটের ব্যাখ্যায় লিটন জানালেন, ‘না না তেমন না (জোর করে স্কুপ মারা)। আমার কাছে মনে হয়েছিল ওটাই আমার কাছে আদর্শ (বিকল্প)। এ জন্য আমি এটা চেষ্টা করেছি। দেখেন ব্যাটে লেগে স্টাম্পে লেগেছে। এটা ওদিক দিয়ে চলে গেলে বাউন্ডারি পেতাম। এটা ক্রিকেটের একটা অংশ। কোনো সময় ভালো শট খেলেও আউট হয়ে যাবেন। কোনো সময় খারাপ খেলেও রান পেয়ে যাবেন।’

শেষ দুই ম্যাচের দলে আছেন লিটন দাস। দুই ম্যাচে ভালো কিছু করে দেখানোর কথা জানালেন লিটন, ‘দেখা যাক আরও দুটি ম্যাচ আছে। আমি যেভাবে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার চেষ্টা করি, সেভাবেই খেলছি। আশা করি সামনেই আমার ব্যাট হাসবে।’

গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছিল রান খরায় থাকার পরও অনুশীলন না করে হোটেলে বিশ্রামে কাটিয়েছেন লিটন। এটা নিয়ে হয়েছে সমালোচনাও। লিটন বলেন, ‘গণমাধ্যমকে আমার পক্ষ থেকে কিছু বলার নেই। আমার কাজ আমি করে যাচ্ছি। হোটেলে থেকেও, ওটা যদি উন্নতির কাজ হয় ওটাও করব। আপনি যদি টানা পাঁচ দিন অনুশীলন না করেন তাহলেও ভালো। কিন্তু নিয়মিত অনুশীলন করেও যদি ব্যর্থ হন তাহলে ভাববে ওটাই খারাপ। ওটা নিয়ে উদ্বিগ্ন না।’

বিষয়:

হৃদয় জয় করলেন বাঙালির হৃদয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল সাগর

হৃদয় বাংলার ক্রিকেট প্রেমীদের হৃদয় জয় করে নিচ্ছেন আস্তে আস্তে। সময় যত গড়াচ্ছে ততই যেন নিজেকে পরিপক্ব করে গড়ে তুলছেন টাইগারদের তরুণ এ ব্যাটার। চার-ছক্কার ফুলঝুরি ফুটাচ্ছেন বাইশ গজে। প্রতিপক্ষ যেই হোক না কেন, সেটা কোনো বিষয়ই নয় হৃদয়ের কাছে। তার কাজ সে ঠিকই করে যাচ্ছে।

গত বছরের মার্চে বাংলাদেশ জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছিল তাওহিদ হৃদয়ের। এরপর থেকেই তিনি জাতীয় দলের প্রায় নিয়মিত সদস্য। ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে যাচ্ছেন দলের হয়ে। পরিণত হচ্ছেন ভরসার প্রতীকে। হৃদয় যেভাবে বলকে বাউন্ডারি ছাড়া করেন, তাতে একটা তকমা তাকে দেওয়াই যায় বাংলাদেশের ‘লিটল পাওয়ার হাউস’। এটি বোধহয় বেশি কিংবা ভুল হবে না।

গতকাল চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় চাপে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ২৯ রানেই দুই উইকেট হারায় টাইগাররা। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে দলের হাল ধরেছেন। জাকের আলির সঙ্গে ৮৭ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথ দেখিয়েছেন। ৩ চার আর ২ ছক্কায় ৩৮ বল থেকে করেছেন দলের সর্বোচ্চ ৫৭ রান। জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

শুরুতে দেখেশুনে খেলতে থাকেন হৃদয়। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাতখুলে খেলা শুরু করেছেন তিনি। শুরুর ১০ বল থেকে ১০ রান করা হৃদয় পরে ১৫০ স্ট্রাইক রেটে ৩৮ বল থেকে করেছেন ৫৭ রান।

এমন ইনিংসের পরে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে জানালেন নিজের পরিকল্পনার কথা। হৃদয় বলেন, ‘নিজের পরিকল্পনাটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। উইকেট আজ একটু মন্থর ছিল। সে জন্য আমরা একটু সময় নিয়েছি। সঙ্গীকেও (অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যান) সেটাই বলেছি, আগে সেট হয়ে নিই, তারপর পরিকল্পনা কাজে লাগানো যাবে।’

হৃদয় দলে নিজের ভূমিকাটা বেশ ভালো করেই যে জানেন, সেটাও বোঝা গেল তার কথা থেকে। তিনি বলেন, ‘আমি এমন জায়গায় ব্যাট করছি পাওয়ারপ্লেতেও নামা লাগতে পারে, ১৫-১৬ ওভার পরও নামা লাগতে পারে, প্রথম ওভারেও নামা লাগতে পারে। ম্যাচের চাহিদা অনুযায়ী ব্যাট করি। আজ (গতকাল) দ্রুত ২ উইকেট হারানোয় বড় পার্টনারশিপ দরকার ছিল। আমি আর জাকের ভাই জুটি গড়েছি। চেষ্টা করেছি চাহিদা অনুযায়ী ব্যাট করার।’

দলের জয়ে অবদান রাখতে পারায় খুশি হৃদয় জানালেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, রান করলে অবশ্যই ভালো লাগে। একজন ব্যাটার হিসেবে আমার কাজ দলে অবদান রাখা। আমি চেষ্টা করি ফিল্ডিং করে হোক কিংবা রান করে, দলে যেন অবদান রাখতে পারি। যেদিন শুরুতে ব্যাটিং পাব, দলের জন্য যেন ভালো কিছু এনে দিতে পারি।’


শান্তর অধিনায়কত্বে প্রথম সিরিজ জয়ের উপাখ্যান

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৮ মে, ২০২৪ ১১:২৯
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ। টপঅর্ডারের ব্যর্থতার পরও জুটি গড়ে দলকে লড়াইয়ে এগিয়ে রাখল তৌহিদ হৃদয় আর জাকের আলী। এরপর দাপট দেখাল বোলাররাও। সেটাতে মনে হলো আরেকটি একপেশে জয়ের ক্ষীণ অপেক্ষা বাংলাদেশের। কিন্তু শেষদিকে উইকেটে এসে হঠাৎই ঝড় তুলতে শুরু করলেন ফরাজ আকরাম। আর এতে একপেশে ম্যাচে তৈরি হলো নতুন উত্তেজনা। জয়ের সম্ভাবনাও তৈরি করেছিল জিম্বাবুয়ে। খেলা নিয়ে গেল শেষ ওভারে। কিন্তু সেসবে জল ঠেলে জয়টা নিজেদেরই করে নিল বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচ সিরিজে টানা তিন ম্যাচ জিতে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই আরেকটি সিরিজ জয়ের উপাখ্যান লিখল বাংলাদেশ।

গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৯ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ওই রান তাড়া করতে নেমে ১৫৬ রানের বেশি করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে।

বাংলাদেশের জয়ে বড় অবদান দুই তরুণ ব্যাটার তৌহিদ হৃদয় আর জাকের আলি অনিকের। ভুল পথে পা বাড়ানো বাংলাদেশকে পথ চিনিয়েছে তারা। অভিজ্ঞ লিটন-শান্তরা ব্যর্থ হলে দলের হাল ধরেছেন তারা। খেলেছেন ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে। মন্থর উইকেটে শুরুতে সময় নিয়েছেন, তারপর বাউন্ডারি ছাড়া করেছেন জিম্বাবুয়ের বোলারদের। হৃদয় তুলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম অর্ধশতক। আর জাকের ফিরেছেন দ্বিতীয় অর্ধশতকের কাছে গিয়ে। হৃদয়-জাকেরের এমন ব্যাটিং আশা দেখাচ্ছে বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার।

তৃতীয় ম্যাচে টসে জিতে বোলিংটাই বেছে নেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ বেগ পেতে হয়েছে বাংলাদেশের দুই ওপেনারকে। তৃতীয় ম্যাচে বর্থতার পরিচয় দিয়ে ফিরে গেছেন লিটন দাস (১২)। এদিন ইনিংস বড় করতে পারেননি তানজিদ হাসানও (২১)। ব্যর্থ হয়েছেন নাজমুল শান্তও (৬)।

টপঅর্ডারের ব্যর্থতায় কিছুটা চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তবে সেই চাপকে সামলে নেন দুই তরুণ ব্যাটার তৌহিদ হৃদয় আর জাকের আলী। দুজনে মিলে গড়েন ৮৭ রানের জুটি। লক্ষ্যপথে ফেরে বাংলাদেশ। ৩ চার আর ২ ছক্কায় ৩৮ বল থেকে ৫৭ রান করে ফেরেন হৃদয়। আর সমান বাউন্ডারিতে ৩৪ বলে ৪৪ রান করেন জাকের। দুজনই ব্যর্থ হয়েছেন মুজারাবানির ইয়র্কার খেলতে। শেষ পর্যন্ত ১৬৫ রানের পুঁজি দাঁড় করায় বাংলাদেশ।

মাঝারি রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এ দিনও ব্যাটিং ব্যর্থতায় পড়ে রোডেশিয়ানরা। ৪৮ রান তুলতেই হারান টপঅর্ডারের চার ব্যাটারকে। ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান ক্রেইগ আরভিন, সিকান্দার রাজাদের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটাররা। এরপরও আগ্রাসী বোলিং চালিয়ে চান সাইফুদ্দিন-সাকিব-রিশাদরা। আর সেটাতে ৯১ রান তুলতেই আট উইকেট হারিয়ে বসে জিম্বাবুয়ে। কিন্তু এরপর উইকেটে এসে প্রতিরোধ গড়েন ফারাজ আকরাম। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের আভাস দিয়ে, ম্যাচে তৈরি করে উত্তেজনা। ৮ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়েকে টেনে নিয়ে যান শেষ বল পর্যন্ত। শেষ ওভারে ১৯ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেননি তিনি। সমান ২ চার আর ছক্কায় ১৯ বল থেকে ৩৪ রান করলেও সেটা ম্যাচ জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়নি: কেবল অপেক্ষা বাড়িয়েছে বাংলাদেশের। শেষ পর্যন্ত ৯ রানে জয় পায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের হয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আর ২টি উইকেট নিয়েছে রিশাদ হোসাইন। এ জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো নাজমুল শান্ত বাহিনী।


প্রস্তুতিতে জিম্বাবুয়েকে মানতে পারছেন না সাকিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাকি নেই আর এক মাস সময়। বিশ্বকাপের দলগঠন থেকে শুরু করে প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো। ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও। শেষ সময়ের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলছে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এরপর এ মাসের শেষ দিকে বিশ্বকাপের আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে খেলবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।

ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের ইতোমধ্যে মাঠে গড়িয়েছে দুই ম্যাচ। প্রথম দুই ম্যাচেই দাপুটে জয় পেয়েছে টাইগাররা। দেড়শ পেরোনোর আগেই আটকে রেখেছে সফরকারীদের। দেখে মনে হবে বেশ ভালো প্রস্তুতিই সারছে বাংলোদেশ। কিন্তু বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান জানালেন ভিন্ন কথা।

সিরিজ শুরুর আগে থেকেই নেট দুনিয়ায় সমালোচনা চলছিল, প্রতিপক্ষ হিসেবে বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়া তুলনামূলক দুর্বল জিম্বাবুয়েকে বাছাই করায়। প্রশ্ন উঠছিল, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি কতটা আদর্শ হবে। এবার সেই সুরেই সুর মেলালেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাকিব আল হাসান সাংবাদিকদের বলেছেন, জিম্বাবুয়ে আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে খেলে বিশ্বকাপের স্বপ্ন দেখা উচিত নয়। বিশ্বকাপ পুরো আলাদা একটা মঞ্চ, অনেক চাপ থাকে। সেই চাপ কাটিয়ে উঠলেই ভালো পারফরম্যান্স হবে। তবে গতবারের থেকে এবারের পারফরম্যান্স ভালো করার চেষ্টা তো থাকবেই দলের, সে ক্ষেত্রে গ্রুপপর্বে তিনটি ম্যাচ জিততেই হবে।

তাই বিশ্বকাপের আগে টানা দুই ম্যাচ জয়ের পরও আশায় বুক বাঁধতে পারছেন না জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার বলছেন- জিম্বাবুয়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো তুলনামূলক দুর্বল দলের সঙ্গে জিতে তেমন আত্মবিশ্বাস পাওয়া যাবে না। তার চেয়ে ভারত-পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের মতো ক্রিকেট পরাশক্তি দলগুলোর সঙ্গে খেলতে পারলে ভালো হতো।

জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ যেহেতু আমাদের অজানা, তাই সেখানে তাদের বিরুদ্ধে খেলার সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু একদম দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলে কখনো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে নামার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব নয়। গতবার নিউজিল্যান্ড আর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজ খেলে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম।


প্রথম সিরিজ জয়ের হাতছানি অধিনায়ক শান্তর  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল সাগর

চট্টগ্রামে প্রথম দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই দেখা গেল টাইগার বোলারদের আধিপত্য। তাসকিন-সাইফুদ্দিনদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণই করল জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররা। চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে প্রথম দুই ম্যাচেই বড় হার দেখেছে সিকান্দার রাজার দল। তাই তৃতীয় ম্যাচটি এখন তাদের জন্য বাঁচা-মরার লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে এ ম্যাচে টাইগারদের লক্ষ্য থাকবে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করা।

আজ মঙ্গলবার সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচটিও মাঠে গড়াবে সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার। প্রথম দুই ম্যাচে আগ্রাসী বোলিং করেছে টাইগার বোলাররা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসেই জয়ের ভীত করে দিয়েছে তারা। তাসকিন-সাইফুদ্দিনরা স্বল্প রানে বেধে রাখায়; বাংলাদেশের জয় ছিল কেবলই সময়ের ব্যাপার। বাঁচা-মরার ম্যাচে নিশ্চয়ই মরণ কামড় দেওয়ার চেষ্টা করবে জিম্বাবুয়ে। তাই বাংলাদেশকে সিরিজ জিততে হলে তৃতীয় ম্যাচেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে বোলারদের। অবশ্য সে আশা করাই যায়।

শুরুর দুই ম্যাচেই বড় কোনো পরীক্ষা দিতে হয়নি টাইগার বোলারদের। স্বল্প রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে তারা সেটা বেশ সহজেই শেষ করেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের ব্যাটার তানজিদ হাসান তামিম আর তৌহিদ হৃদয়। দুইজনই দেখিয়েছে তাদের শক্তি-সামর্থ্য। টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাট করে বিশ্বকাপ নিয়ে আশার আলো দেখিয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচে এসে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও মরিচা ছুটিয়েছে; আশা দেখিয়েছে। হৃদয়-তানজিদ আশা দেখালেও আশাহত করেছে ওপেনার লিটন দাস আর অধিনায়ক নাজমুল শান্ত। লিটনের অফফর্ম নতুন নয়, সেটারই ধারাবাহিকতা ধরে রাখছে সে। অন্যদিকে নাজমুল শান্তর স্টাইকরেট নিয়ে সমস্যার পাশাপাশি সেট হয়েও ইনিংশ বড় করতে না পারা বেশ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাড়াবে বাংলাদেশের জন্য। চলমান সিরিজে না হলেও বিশ্বকাপে হবে।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এ সিরিজকে বলা হচ্ছে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির অংশ; সেক্ষেত্রে সেরা প্রস্তুতির জন্য তৃতীয় ম্যাচে অন্তত টসে জয়লাভ করলে বাংলাদেশের ব্যাটিং নেওয়া প্রয়োজন। তাহলে ব্যাটাররাও নিজেদের যথেষ্ট প্রস্তুত করার সুযোগ পাবে; বড় রান করার একটা তাড়া থাকবে। পাশাপাশি বোলাররাও প্রতিপক্ষকে ডিফেন্ড করার সুযোগ পাবে। দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আরও অন্তত সপ্তাহ খানেক বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তৃতীয় ম্যাচেও হানা দিতে পারে বৃষ্টি। ম্যাচ পরিত্যাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলেও ওভার কেমে যেতে পারে। অধিনায়কের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সিরিজেই লঙ্কানদের বিপক্ষে হার দেখেছে শান্ত। এবার অধিনায়ক নাজমুল শান্তর সামনে হাতছানি দিচ্ছে তৃতীয় ম্যাচ জিতে প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের।

বিষয়:

হৃদয়ের ব্যাটেই আরেকটি জয়ের উপাখ্যান  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামলো জিম্বাবুয়ে। কিন্তু ভাগ্যের পরিবর্তন আর হলো না। এদিনও প্রথম টি-টোয়েন্টির মতোই টাইগার বোলারদের তোপে নাস্তানাবুদ হলো সিকান্দার রাজারা। ব্যাটিং ব্যর্থতায় তৈরি হল শতক না পূরনের শঙ্কা। তবে অভিষেক ম্যাচেই ঝড়ো ব্যাটিংয়ে আশার আলো দেখালো জনাথন ক্যাম্পবেল। কিন্তু সেটিও জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ফলাফল হিসেবে ৬ উইকেটের হারে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে গেলো জিম্বাবুয়ে।

এদিনও একই ধারা বজায় রাখলো তাসকিন-সাইফুদ্দিন-রিশাদরা। শুরু থেকেই আগ্রাসী বোলিংয়ে কোমড় ভেঙে দিল জিম্বাবুয়ের। ৪২ রানেই তুলে নিল টপঅর্ডারের উইকেট। ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিল প্রথম ইনিংসেই। সহজ রানের লক্ষ্যে বাকি কাজটা বেশ সহজেই শেষ করল ব্যাটাররা।

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও বাংলাদেশের বোলারদের আগ্রাসী বোলিংয়ে, স্কোরবোর্ডে ৪২ রান যোগ করতেই, সাজঘরের পথ দেখলো জিম্বাবুয়ের টপঅর্ডারের পাঁচ ব্যাটার। তবে ৭ নম্বরে উইকেটে নেমে জিম্বাবুয়েকে কিছুটা আশার আলো দেখাল অ্যালিষ্টার ক্যাম্পবেলের ছেলে জোনাথন ক্যাম্পবেল। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে অভিষেকেই দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করে লড়াইয়ের পুঁজি গড়লেন। তার সঙ্গে তাল মেলালেন ব্রায়ান বেনেট। দুইজন মিলে গড়লেন ৭৩ রানের জুটি। যেই জুটি পথ দেখাল জিম্বাবুয়েকে। ৪ চার আর ৩ ছক্কায় ক্যাম্পবেল করলেন ৪৫ রান। আর ২ চার ও ৩ ছক্কায় ২৯ বল থেকে ৪৪ রান করলেন ব্রেনেট। ২০ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ১৩৭ রান।

বল হাতে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। সমান উইকেট গেছে রিশাদ হোসেনের ঝুলিতেও।

স্বল্প রানের জবাবে খেলতে নেমে সাবধানী শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। পাওয়ার-প্লের শেষ বলে গিয়ে জঙ্গির বলে ক্যাচ তুলে দেন তানজিদ হাসান (১৮)। অধিনায়ক নাজমুল শান্ত এদিনও ইনিংস বড় করতে পারেননি (১৬)। এরপর বেশিক্ষণ উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি লিটন দাসও (২৩)। দ্রুতই ফিরে যান জাকির আলিও (১৩)। এরপর জিম্বাবুয়ের আঁটোসাটো বোলিংয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।

তবে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে সেই চাপকে জয় করেন তৌহিদ হৃদয় আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দুইজনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৯ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেট উইকেটে হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ১৬ বল থেকে অপরাজিত ২৪ রান করেন মাহমুদউল্লাহ আর তৌহিদ হৃদয় করেন ২৫ বল থেকে ৩৭ রান।


২-০ তে এগিয়ে গেলো টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

চট্টগ্রামে আরও একটি সহজ জয় বাংলাদেশের। ১৩৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করে টাইগাররা জিতেছে ৬ উইকেট আর ৯ বল হাতে রেখে। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে টাইগাররা।

ওপেনিং জুটিতে ৩৫ বলে ৪১ রান তুলে তানজিদ হাসান তামিম আর লিটন দাস রান তাড়ায় শুরুতা করে দেন বাংলাদেশের। আগের ম্যাচের হাফসেঞ্চুরিয়ান তামিম অবশ্য ভালো করতে পারেননি। ১৯ বলে ১৮ রানেই থামে তার ইনিংস। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ফেরেন ক্যাচ দিয়ে।

নাজমুল হোসেন শান্তও ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়েন বাউন্ডারিতে। ১৫ বলে বাংলাদেশ অধিনায়ক করেন ১৬। লিটন দাস শুরুটা ভালো করলেও এরপর ফর্মে ফেরার চেষ্টায় বল নষ্ট করেন। শেষ পর্যন্ত ২৫ বলে ২৩ করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৬২ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এই রান আসে ১০ ওভারে।

এর মধ্যে বৃষ্টিতে বন্ধ হবার পর আবার খেলা শুরু হলে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন তাওহিদ হৃদয় আর জাকের আলি অনিক। তবে তাদের জুটিটি টেকেনি ২৩ বলে ৩১ রানের বেশি। জাকের আলি বোল্ড হন ১২ বলে ১৩ করে।

তবে দলকে বিপদে পড়তে দেননি তাওহিদ হৃদয় আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পঞ্চম উইকেটে ২৯ বলে অবিচ্ছিন্ন ৪৯ রানের জুটিতে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তারা। ১৬ বলে ২ চার আর ১ ছক্কায় ২৬ রানে মাহমুদউল্লাহ আর ২৫ বলে ৩ বাউন্ডারিতে আর ২ ছক্কায় ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন হৃদয়।

চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৪১ রানে ৭ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ে তুলেছিল ১২৪। এবার একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় ম্যাচে ৪২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে শেষ পর্যন্ত দাঁড় করায় ৭ উইকেটে ১৩৮ রানের সংগ্রহ।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই চাপে ছিল জিম্বাবুয়ে। ধীরগতিতে শুরু করে তারা। কিন্তু লাভ হয়নি।

ইনিংসের চতুর্থ ওভারের শেষ বলে আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। তাদিওয়ানাশে মারুমানি ২ করে হন তাসকিনের এলবিডব্লিউয়ের শিকার।

উইকেট বাঁচানোর চেষ্টায় অনেক বল খেলে ফেলেন আরেক ওপেনার জয়লর্ড গাম্বি। ৩০ বলে ১৭ করে তিনি অবশেষে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।

দশম ওভারে তিন বলের মধ্যে দুই উইকেট তুলে নেন রিশাদ হোসেন। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা (৩) আর ক্লাইভ মাদান্দে (০) ফেরেন ক্যাচ দিয়ে। ১৬ বলে ১৩ করে শেখ মেহেদীকে উইকেট দেন ক্রেইগ আরভিন। ৪২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ে।

সেখান থেকে আজই অভিষেক হওয়া জিম্বাবুইয়ান কিংবদন্তি অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলের ছেলে জোনাথান ক্যাম্পবেল দলের হাল ধরেন। ব্রায়ান বেনেটকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৪৩ বলে ৭৩ রান যোগ করে দিয়ে যান তিনি।

অবশেষে এই জুটিটা ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। ছক্কা হাঁকাতে গিয়েছিলেন ক্যাম্পবেল। মিডউইকেট বাউন্ডারিতে সাইফউদ্দিনের ক্যাচ হয়ে ফেরেন এই অভিষিক্ত। ২৪ বলে ৪৫ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ৪টি চার আর ৩টি ছক্কা হাঁকান ক্যাম্পবেল।

শেষদিকে ঝড় তুলেছেন বেনেট। ২৯ বলে ২ চার আর ৩ ছক্কায় ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন এই ব্যাটার।

তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ১৮ আর রিশাদ হোসেন ৩৩ রানে শিকার করেন দুটি করে উইকেট। শরিফুল ৪ ওভারে দেন ২৬, শেখ মেহেদী ৪ ওভারে ১৮ আর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৪ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে নেন একটি করে উইকেট।


টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

আপডেটেড ৫ মে, ২০২৪ ১৮:২৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

সিরিজ জয় করতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিং নিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ৫ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ১৯ রান।

গত ম্যাচের জয়ী একাদশ নিয়েই দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে জিম্বাবুয়ের একাদশে এ ম্যাচে এসেছে দুটি পরিবর্তন।

বাংলাদেশের একাদশে রয়েছেন নাজমুল হোসেন (অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ, জাকের আলী, মেহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

সিকান্দার রাজা (অধিনায়ক), ক্রেগ আরভিন, জয়লর্ড গাম্বি, ব্রায়ান বেনেট, ক্লাইভ মানদান্দে (উইকেটকিপার), লুক জঙ্গি, রায়ান বার্ল, ব্লেসিং মুজারাবানি ও রিচার্ড এনগারাভা, জোনাথন ক্যাম্পবেল ও অ্যাশলে এনডিলুভু।


banner close