রোববার, ১৯ মে ২০২৪

বৃষ্টি ও জোয়ারে প্লাবিত উপকূলীয় অঞ্চল

সুন্দরবনের অধিকাংশ এলাকায় জোয়ারে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে চার ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ছবি: দৈনিক বাংলা
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১১:৩৪

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরে সারা দেশে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এতে তলিয়ে গেছে দক্ষিণের সমুদ্র উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল। বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে।

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:

টানা চার দিনের ভারী বৃষ্টি ও পূর্ণিমার জোয়ারের অস্বাভাবিক পানি উপকূলীয় বেড়িবাঁধ অতিক্রম করে প্রবেশ করেছে লোকালয়ে। এতে প্লাবিত হয়েছে রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া, চরমোন্তাজ, কাউখালী এবং কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ও চম্পাপুরসহ প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে উপকূলের মাছের ঘেরসহ ফসলের ক্ষেত। অন্যদিকে জোয়ারের পানিতে স্যানিটেশনব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় চরম বিপাকে পড়েছে এসব এলাকার মানুষ।

বড় ধরনের বিপর্যয় এড়াতে মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। ফলে শত শত ট্রলার সাগর থেকে এসে মহিপুর ও আলিপুর মৎস্যবন্দরে নোঙর করে । এ ছাড়াও উপকূলীয় বেড়িবাঁধের বাইরের এলাকায় বসবাস করা শত শত লোকজনকে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া হয়েছে।

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাট সদর উপজেলার তিনটি গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

উপজেলা সদর, মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও রামপাল উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকার বাসন্দিারা জানান, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলে জোয়ারের পানি উঠে তাদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। এ সমস্যা সমাধানে ভৈরব নদের ওপর টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোছাদ্দেরুল ইসলাম বলেন, পানিবন্দি পরিবারগুলোর কাছে দ্রুতই খাদ্য সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে।

এ ছাড়া বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্র তলিয়ে গেছে।

পূর্ব সুন্দরবনের করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, ‘গত দুই দিন ধরে জোয়ারের পানিতে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত সুন্দরবনের প্রধান প্রধান নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত উচ্চতার পানি ছিল।’

তিনি আরো বলেন, ‘নদীতে যে হারে পানি বাড়ছে, তাতে সুন্দরবনের প্রাণিকুল হুমকির মুখে পড়েছে। বিশেষত বনের বাঘ, শূকর, হরিণ, বানর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।’

বাগেরহাট কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষবিদ আজিজুর রহমান বলেন, ‘গত দুই দিনে জেলায় ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি জমে বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে শীতকালীন সবজিক্ষেত নিমজ্জিত হয়ে পড়ছে। দ্রুত এই পানি না নামলে চাষিদের ক্ষতি হবে। তবে এই বৃষ্টিতে রোপা আমন ধানের দারুণ উপকার হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জেলায় ইতিমধ্যে ৮৭ ভাগ জমিতে রোপা আমন ধান রোপণ শেষ হয়েছে।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ বলেন, মোরেলগঞ্জ পৌরসভা অংশটি উচ্চ জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে। ওই অংশে নদীতীর রক্ষার জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। চলতি অর্থ বছরের নদীতীর রক্ষার কাজ শুরু করা হবে। জোয়ারের পানি ঢোকা বন্ধ করতে মোরেলগঞ্জ উপজেলার জন্য ৯৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন। এর জন্য চার হাজার কোটি টাকার একটি প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বাঁধ নির্মাণ হলে পার্শ্ববর্তী রামপাল ও মোংলা উপজেলাও রক্ষা পাবে। এ ছাড়া বাগেরহাট সদরে জোয়ারের পানি ঠেকাতে জাইকার অর্থায়নে নদীতীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে বলে জানান এ পাউবি কর্মকর্তা।

বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মলিন বলেন, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলার অন্তত দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ায় এ বছরে রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে। সোমবার থেকে মঙ্গলবার বেলা ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯২.৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে কুমারখালী আবহাওয়া অফিস। অফিসের ইনচার্জ মামুনার রশিদ বলেন, এটি এ বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। এবার বর্ষায় ২৪ ঘণ্টায় ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিও হয়নি।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে কুষ্টিয়া শহরের সব সড়কে হাঁটুপানি জমে যায়। বিকেল পর্যন্ত অনেক এলাকায় পানি আটকে ছিল। ফলে যাতায়াত ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ।

জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে কুষ্টিয়া পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে কিছু কাজ হয়েছে। আরো কাজ করার জন্য প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে রামগতির চরআবদুল্লাহ, বড়খেরী, কমলনগরের চরফলকন, চরকালকিনি, সাহেবেরহাট ও রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশীর চরকাচিয়া, চরখাসিয়া এবং সদর উপজেলার চর রমনীমোহন ইউনিয়নের প্রায় ২০টি এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বাঞ্চানগর, সমসেরাবাদ, শাহাপুর, মিয়া আবু তাহের সড়কসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

তাদের অভিযোগ, ড্রেনেজ ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেও পৌরসভার রাস্তাঘাটে হাঁটুপানি জমে যায়। এতে করে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

অপরদিকে মেঘনার তীব্র ঢেউয়ের কারণে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার প্রায় ১৫টি পয়েন্টে ব্যাপক হারে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত তিন দিনে শতাধিক পরিবার নদীভাঙনের শিকার হয়েছে। ভাঙন আরো বাড়ার আশঙ্কা করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। মঙ্গলবার সকাল থেকে কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন, সাহেবেরহাট, মাতাব্বরহাট, মতিরহাট, চরলরেঞ্চ, চরকালকিনি এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। একই অবস্থায় রয়েছে রামগতির চরআবদুল্লাহ, বড়খেরী, তেলিরচর, বয়ারচর, বাংলাবাজার, আসলপাড়া ও জনতা বাজার।

কমলনগর উপজেলার চরলরেঞ্চ এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘দুপুরে পানি উঠতে শুরু করে। বিকেল ৩টার দিকে পানি ঘরের ভেতর ঢুকে যায়। এতে শিশুসন্তান নিয়ে বিপাকে পড়ি। তাই সন্তান নিয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছি। পানি নামলে ঘরে ফিরে যাব।’

একই এলাকার বাসিন্দা কহিনুর বেগম বলেন, ‘জোয়ারের পানিতে তাদের রান্নার চুলা তলিয়ে গেছে। এতে রান্না করতে পারছেন না। এ ছাড়া গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।’

কমলনগরের চর কালকিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফউল্যা বলেন, ‘জোয়ারের পানি নামার সময় উপকূলে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। এতে অনেকের বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।’

রামগতি আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা সৌরভ হোসেন জানান, লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। এটি আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। সবাইকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া মেঘনায় মাছ ধরার নৌকা ও জেলেদের নিরাপদ স্থানে থাকতে বলা হয়েছে।’

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘টানা বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করতে সহায়তা করা হবে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করা হচ্ছে।

বরগুনা প্রতিনিধি

টানা বর্ষণ ও উচ্চ জোয়ারের পানিতে জেলার ৬টি উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলের ক্ষেত, ভেসে গেছে মাছের ঘের। বরগুনা, বেতাগী, পাথরঘাটা ও আমতলী পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ সড়কের খানাখন্দকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে জনজীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বরগুনা কার্যালয়ের বৃষ্টিপরিমাপক শাখা থেকে জানা যায়, গত সোমবার সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

এ ছাড়া জোয়ারের উচ্চতা পরিমাপক মাহতাব উদ্দীন জানিয়েছেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিষখালী, বুড়িশ্বর (পায়রা) ও বলেশ্বর নদীতে জোয়ারের পানি বিপৎসীমার তিন ফুট ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরগুনা জেলার নদীতীরবর্তী বেড়িবাঁধের বাইরে কয়েক হাজার বসতঘর বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। উপকূলের অনেক বাড়িতে রান্না করার মতো অবস্থা নেই। সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী আবাসনের বাসিন্দা খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের তিনটি ব্যারাকে আশ্রয়ণের ২৪০টি ঘর পানিতে প্লাবিত। আমরা খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।’

এ ছাড়া বরগুনা পৌর শহরের চরকলোনি, কলেজ সড়ক, কলেজ ব্রাঞ্চ সড়ক, ব্যাংক কলোনি, আমতলা পাড়, বাজার সড়ক, বঙ্গবন্ধু সড়ক, গোলাম সরোয়ার সড়ক, পশু হাসপাতাল সড়কে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

এ ছাড়াও জেলার ৬টি উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় জলাবদ্ধতার পাশাপাশি তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। বরগুনার বরইতলা-বাইনচটকি ও পুরাকাটা-আমতলী ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা খোঁজ নিচ্ছি। নিম্ন আয়ের মানুষদের জীবিকায় কষ্ট হলে তাদেরকে যথাসাধ্য সহায়তা করবে জেলা প্রশাসন।’


প্রবাসফেরত আনোয়ারের বাগানে থোকায় থোকায় রসালো আঙুর

আপডেটেড ১৯ মে, ২০২৪ ১২:৩৭
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা

সবুজ পাতায় আচ্ছাদিত মাচা। তার নিচে থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙুর। দিন কুড়ি পরে পেকে উঠলে তা সংগ্রহ করা হবে বাগান থেকে। আঙুর বাগানের এমন দৃশ্য দেখা গেল দেবিদ্বার উপজেলার মরিচা গ্রামে। ওই গ্রামের সৌদিপ্রবাসী আনোয়ার হোসেন সরকার আঙুর চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। বাগানটি দেখতে স্থানীয়রা ভিড় করছেন প্রতিদিনই।

স্থানীয়রা জানান, মো. আনোয়ার হোসেন সরকার সৌদি আরবে কাজ করতেন। দেশে এসে বিভিন্ন ব্যতিক্রমী ফসলের চাষ করেন। এবার তিনি মনোযোগী হয়েছেন আঙুর চাষে। ১৫ মাস আগে দুই বিঘা জমিতে আঙুর চাষ শুরু করেন। চারা এনেছেন ঝিনাইদহ থেকে।

দলাহাস গ্রামের কাছে সড়কের পাশে উঁচু জমি। সেখানে বাঁশ ও সিমেন্টের পিলার দিয়ে মাচা করা হয়েছে। মাচায় লতানো আঙুর গাছ। হালকা বাতাসে ঝুলছে আঙুর। প্রতিটি থোকায় ৫০ থেকে ১০০টি করে আঙুর রয়েছে।

আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, আঙুর বাগানের পেছনে তার ৬ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। প্রথমবারেই বাগানে ভালো ফলন এসেছে। আশা করছেন সামনের বছর এই ফলন আরও বাড়বে। একই গাছ থেকে ২০-২৫ বছর ফল আসবে বলেও তিনি জানান। আগামীতে আরও তিন বিঘা জমিতে আঙুর চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে আঙুর নিয়ে আনোয়ারের শুরুটা ভালো ছিল না। প্রথম প্রথম এলাকার লোকজন হাসিঠাট্টা করত। বাগানে ফলন ভালো হওয়ায় অন্যরাও উৎসাহিত হচ্ছেন আঙুর চাষে।

উপজেলা কৃষি অফিসার বানিন রায় বলেন, ‘বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ৬০ শতাংশ জমিতে আঙুর বাগান করেছেন কৃষক আনোয়ার হোসেন। আমরা বাগানটি পরিদর্শন করেছি। ভালো ফলন হয়েছে। পরিপক্ব হতে আরও ১৫-২০ দিন লাগবে। ফলন বা বাণিজ্যিক সফলতা বা ব্যর্থতা এখনই বলা যাচ্ছে না। আমরা পরামর্শ দিয়ে তাদের সহযোগিতা করছি।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) শেখ আজিজুর রহমান বলেন, ‘আঙুর মূলত ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় ভালো হয়। এদিকে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে আঙুর চাষ হচ্ছে। তবে কুমিল্লায় যারা আঙুর চাষ করেছেন, তাদের ফল সংগ্রহের পর আমরা একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারব। তারা কেমন সফল হয়েছেন, সেটা তখনই বোঝা যাবে।’


দূষণে মাছশূন্য শীতলক্ষ্যা নদী, পেশা বদল জেলেদের

আপডেটেড ১৯ মে, ২০২৪ ০৮:৩৪
এম এস ডালিম, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ জেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষ্যা নদীর পানি দূষিত হয়ে কালো কুচকুচে বর্ণ ধারণ করেছে। জেলায় গড়ে ওঠা অজস্র শিল্প-কারখানার বর্জ্য নদীতে ফেলায় এই দশা। বিষাক্ত পানিতে নদীর মাছ যাচ্ছে মরে। আর মাছ সংকটে জেলে পরিবারগুলো এই পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ফলে এই জেলায় প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি জেলের সংখ্যা কমেছে।

কয়েক যুগ আগেও নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে জেলেরা জাল ফেললেই ঝাঁকে ঝাঁকে রুই-কাতলা-বোয়ালসহ নানান রকমের মাছ পেতেন। এমনকি ইলিশ মাছ পর্যন্ত পাওয়া যেত। আর তাতেই বেশ স্বাচ্ছন্দে কেটেছে শীতলক্ষ্যা পাড়ের জেলেদের জীবন-সংসার।

কিন্তু সময়ের ব্যবধানে নদীর আশপাশে শত শত শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে এ জেলায়। সেসব প্রতিষ্ঠানের দূষিত পানি সরাসরি ফেলা হয় শীতলক্ষ্যা নদীতে। এতে ধীরে ধীরে নদীর পানি দূষিত হয়ে পড়েছে। আর সেই বিষে নদী মাছশূন্য হয়ে পড়েছে। তবে বর্ষা মৌসুমে অল্প পরিমাণে ঘাউরা, চাপিলা, বাছা মাছ পাওয়া যায়। তবে এটুকু দিয়ে জেলেদের সংসার চালানো মুশকিল। তাই তারা বাধ্য হচ্ছেন পেশা পরিবর্তন করতে।

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জে তরল বর্জ্য নির্গমন হয় এমন শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে চার শতাধিক। এর মধ্যে ৩৪৮টি প্রতিষ্ঠানের পানি শোধনাগার বা অ্যাফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) আছে। বাকি ৬৫টি প্রতিষ্ঠানে ইটিপি নেই।

জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘ইটিপি না থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৩টি প্রতিষ্ঠানের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া নদীদূষণ রোধে সরকারিভাবে নানা প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।’

এদিকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় শীতলক্ষ্যা নদীর নিকটবর্তী একরামপুর এলাকায় জেলে পল্লিতে প্রায় ১১৯টি জেলে পরিবার বসবাস করতেন। তবে এদের মধ্যে এখন মাত্র গুটিকয়েক পরিবারের ১০-১২ জন এ পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। বাকিরা পেশা পরিবর্তন করে গার্মেন্টশ্রমিক, মাছ ব্যবসা, নিম্নআয়ের নানা চাকরিসহ বিভিন্ন পেশা বেছে নিয়েছেন।

এ বিষয়ে জেলেপাড়ার সভাপতি মহাদেব বর্মণ বলেন, শীতলক্ষ্যা নদীতে মাছ না থাকায় অনেক জেলে মেঘনা ও ধলেশ্বরী নদীতে মাছ ধরতে যায়। প্রতি নৌকায় কমপক্ষে ৫-৭ জনের একটি দল মাছ ধরে তা বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে। এই খরচ বণ্টন করে জনপ্রতি কখনো ৫০০ কখনো ২০০-৩০০ টাকা উপার্জন করে। তবে এই টাকা দিয়ে সংসার চলে না। ফলে পরিবারের অন্য সদস্যদের আয়ের ওপর নির্ভর করতে হয় জেলেদের। যে কারণে শতাধিক জেলে পরিবার থেকে এখন মাত্র গুটিকয়েক পরিবারের ১০-১২ জন জেলে এই পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছে।

মহাদেব বর্মণের মেজো ছেলে মিঠু বর্মণ একটি সিমেন্ট তৈরির কারখানায় কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারে চার ভাইয়ের মধ্যে শুধু বড় ভাই জেলে পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। এখন জেলে পেশার অবস্থা ভালো না। তাই আমরা সবাই অন্য পেশা বেছে নিয়েছি।’

পেশা বদল করেছেন জেলে পাড়ার রতন বর্মণ। তিনি এখন পেশায় একজন গার্মেন্টকর্মী। তিনি বলেন, ‘নদীতে মাছ নেই। এরপরও কিছুদিন চেষ্টা করেছিলাম জেলে পেশায় টিকে থাকতে; কিন্তু অভাব-অনটন সংসারে জেঁকে বসে। এ কারণে বাধ্য হয়ে পেশা বদল করেছি।’

নারায়ণগঞ্জ জেলা মৎস্য জরিপ কর্মকর্তা ড. ফজলুল কবীর দৈনিক বাংলাকে বলেন, নদী দূষণের ফলে শীতলক্ষ্যার এখন মাছশূন্য হয়ে পড়েছে। এমনকি শীতলক্ষ্যার পানিদূষণের ফলে মেঘনা নদীর অনেক এলাকার মাছ মারা গেছে। এতে জেলের সংখ্যা দিন দিন কমছে। বর্তমানে এই জেলায় জেলের সংখ্যা প্রায় ৪৬০০ জন, এর মধ্যে নিবন্ধকৃত জেলের সংখ্যা ৪৪৯৫ জন। মৎস্য সম্পদ ও জেলেদের টিকিয়ে রাখতে হলে পানি দূষণমুক্ত করার কোনো বিকল্প নেই।


প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে: পরশ

আপডেটেড ১৮ মে, ২০২৪ ২১:৩৭
পিরোজপুর প্রতিনিধি

যুবলীগ কর্মীদের যে কোন মূল্যে বঙ্গবন্ধু কন্যার অর্জন সমূহ নির্ণয় করতে হবে এবং মানুষের দোরগোড়ায় সুফল পৌঁছে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র রাজপথে মোকাবিলা করতে হবে বলে জানিয়েছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।

আজ শনিবার দুপুরে পিরোজপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পিরোজপুর জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ‘শেখ হাসিনা একজন আত্মপ্রত্যয়ী মানবতাবাদী এবং দূরদর্শী নেতৃত্ব হিসেবে নিজেকে সারা বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি গণমানুষের নেতা থেকে আজকে বিশ্বনেতায় পরিণত হয়েছেন। তিনি তার কর্মের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যে একমাত্র শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য। শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি- জামাত সরকার গঠন করে এদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছিল আর শেখ হাসিনার সরকার সেই জঙ্গিবাদ এ দেশ থেকে নির্মূল করে দিয়েছে। বিএনপি'র অপরাজনীতির একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পরনির্ভর রাজনীতি। তারা দেশের জনগণের বদলে বিদেশী শক্তির উপর নির্ভর করে ক্ষমতায় আসতে চায়। তার অন্যতম কারণ কোন জাতীয় সংকটে বিএনপি কখনোই জনগণের পাশে দাঁড়ায় নাই।’

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘ক্ষমতার লোভে মিথ্যাচার এবং অপপ্রচারের রাজনীতি বন্ধ করেন।’

স্থানীয় সরকারী বালক বিদ্যালয় মাঠে জেলা যুবলীগের প্রথম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সাধারন সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। সম্মেলনে জেলা যুবলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান ফুলুর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আফজাল হোসেন। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মো. মাঈনুল হোসেন খান নিখিল (এমপি)।

অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, পিরোজপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক এমপি এ কে এম এ আউয়াল, পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজ, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক কানাই লাল বিশ্বাস, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সালমা রহমান হ্যাপি,কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোঃ মাজহারুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, উপ-দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, আইটি সম্পাদক এস আই আহম্মেদ সৈকত , কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মহারাজ সহ কেন্দ্রীয়-জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্ধ।


আজ রাত ১টার মধ্যে যেসব জেলায় ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারা বাংলা ডেস্ক

আজ রাত ১টার মধ্যে দেশের পাঁচটি অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালি, নোয়াখালী এবং চট্টগ্রাম অঞ্চল সমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।’

এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।


চা-শ্রমিকের দুই সন্তান জিপিএ-৫ পেলেও উচ্চশিক্ষা নিয়ে শঙ্কায়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর এএটিএম বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এ বছর জিপিএ-৫ অর্জন করেছে কানিহাটি চা-বাগানের শ্রমিক বিরেন্দ্র সিংহের ছেলে মেধাবী ছাত্র অরুপ সিংহ ও ক্যামেলীয়া ডানকান ব্রাদার্স ফাউন্ডেশন স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে সুদর্শন তেলীর মেয়ে স্বর্ণালী তেলী। দুজনই বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। উচ্চশিক্ষা শেষে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে তারা; কিন্তু টাকার অভাবে তারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে।

জানা যায়, অভাব-অনটনের সংসারে বেড়ে উঠেছে অরুপ সিংহ ও স্বর্ণালী তেলীর। অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করে এতদূর এগিয়েছে। তাদের স্বপ্ন অনেক, কিন্তু বাঁধা অর্থ।

সবার সহযোগিতায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায় তারা।

দুই পরিবার অনেক অভাব-অনটনের মধ্যে বসবাস করছে। ছেলেমেয়ের লেখাপড়া করানোর জন্য দুই পরিবারের অভিভাবকরা চিন্তিত। পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের খবর পেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের লেখাপড়া করার সহযোগিতার জন্য ব্যক্তিগতভাবে কিছু অর্থ প্রদান করেন। এ সময় দুই শিক্ষার্থী ইউএনওর সহযোগিতার আশ্বাস পেয়ে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক ক্যামেলীয়া ডানকান ব্রাদার্স হাসপাতালে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত আছেন।

অরুপ সিংহ ও স্বর্ণালী তেলী বলে, ‘উচ্চশিক্ষা অর্জন করে, দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করব। ডাক্তার হয়ে এ দেশের মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করব।’

অরুপ সিংহের বাবা বিরেন্দ্র সিংহ ও স্বর্ণালী তেলীর বাবা সুদর্শন তেলী বলেন, ‘কষ্ট করে এতদূর এসেছে তারা। আমাদের যতই কষ্ট হোক- সন্তানদের পড়াশোনা করাব। মানুষের মতো মানুষ করে তুলব। পাশাপাশি সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’

শমশেরনগর এএটিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিহির ধর চৌধুরী বলেন, ‘দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও অরুপ সিংহের মনোবল ছিল দৃঢ়। তার সাফল্যে আমরা গর্বিত।’

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘অদম্য মনোবল আর ইচ্ছাশক্তির কারণে অরুপ সিংহ ও স্বর্ণালী তেলী সাফল্য পেয়েছে। তাদের প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করা হবে।

বিষয়:

লংগদুতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই কর্মী নিহত: ইউপিডিএফ

রাঙ্গামাটির লংগদু থানা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাঙামাটি প্রতিনিধি

রাঙ্গামাটির লংগদুতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই কর্মী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। পার্বত্য চট্টগ্রামভিত্তিক দলটির প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের পক্ষে নিরন চাকমা আজ শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন দাবি করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে লংগদুর বড়হাড়িকাবার ভালেদি ঘাটের পার্শ্ববর্তী স্থানে (পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি তথা জেএসএস) সন্তু গ্রুপের সাতজনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী এসে সেখানে সাংগঠনিক কাজে নিয়োজিত ইউপিডিএফ কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এ হামলায় ইউপিডিএফ সদস্য বিদ্যা ধন চাকমা ওরফে তিলক (৪৫) ও সমর্থক ধন্য মনি চাকমা (৩৫) ঘটনাস্থলে নিহত হন।’

এতে বলা হয়, নিহত ইউপিডিএফ সদস্য বিদ্যা ধন চাকমার বাড়ি লংগদুর কুকিছড়া গ্রামে। আর ধন্য মনি চাকমার বাড়ি উপজেলার ধুধুকছড়া গ্রামে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, হামলায় নেতৃত্ব দেন পোয়া চাকমা ওরফে আপন (৩২), যার বাড়ি বড় হাড়িকাবার পাশে কুট্টছড়ি গ্রামে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লংগদু থানার ওসি হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এ রকম ঘটনা শুনছি। আমরা ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছি। এখনও পৌঁছাই নাই। ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরে জানা যাবে।’

পুলিশ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নিশ্চিত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, এখনও নিশ্চিত না।’

ইউপিডিএফের দাবির বিষয়ে জেএসএসের কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।


টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ধান কাটতে এসে বজ্রপাতে দু’জন কৃষক নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার নোয়া বাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- দিনাজপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চৌদ্দপুর গ্রামের আব্দুল হোসেন ও আমির হোসেন। তারা দু’জন সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো ভাই।

স্থানীয়রা জানান, কালিহাতী উপজেলার নোয়াবাড়ি গ্রামের হযরত মিয়ার বাড়িতে ধান কাটার জন্য প্রায় সাতদিন ধরে অবস্থান করছেন তারা। পরে আজ সকালে ধান কাটার জন্য গেলে বজ্রপাতে সেখানে আব্দুল হোসেন ও আমির হোসেন মারা যান। পাশে অন্য জমিতে থাকা শ্রমিকরা তাদের উদ্ধার করে কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

কালিহাতী উপজেলার বীর বাসিন্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব মিয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছি। মৃত ব্যাক্তিদের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা আসলে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’

বিষয়:

২০ বছর ধরে রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহ

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৮ মে, ২০২৪ ০৪:১৪
খোরশেদ আলম, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী)

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আঁতাত করে কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী রোগীদের মধ্যে খাবার বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে টানা ২০ বছর ধরে ঠিকাদারি করে আসছে একই প্রতিষ্ঠান। এতে মানসম্মত খাবার সরবরাহ নিশ্চিত হচ্ছে না বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহের অভিযোগ অনেক বছরের। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি এ ধরনের অনিয়ম করে আসছে।

২০০৬ সালে নোয়াখালী সদর উপজেলার খান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জহির খান সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই হাসপাতালের খাদ্য সরবরাহের টেন্ডার নেন। পরে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে খাদ্য সরবরাহের পাওনা টাকার দাবিতে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টেন্ডার প্রক্রিয়া বন্ধ করে রেখেছে চক্রটি। যার কারণে মামলা চলাকালীন অবস্থায় একই প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এই হাসপাতালের রোগীদের নিম্নমানের খাদ্য সরবরাহ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নির্ধারিত পরিমাণের চাইতে কম খাবার দেওয়ার অভিযোগও করেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।

চিকিৎসা নিতে আসা সোনাইমুড়ীর মাহোতোলা এলাকার শাহজাহান বলেন, প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়ে গত দুই দিন ধরে ভর্তি হয়েছেন। তবে হাসপাতলে নিম্নমানের খাবার সরবরাহের কারণে বাইরে থেকে খাবার কিনে খেতে হয়। হাসপাতালে ১৪নং বেডে ভর্তি আছেন ৬০ বছরের আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে যে খাবার দেওয়া হয় তা মুখে নেওয়া যায় না। এ জন্য বাড়ি থেকে পাঠানো খাবার খান।

আরেক রোগীর নাম আবুল কালাম। বয়স ৭০ বছর। বুকে ব্যথা নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৬ নম্বর বেডে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে। সোমবার দুপুরে খাবার হিসেবে তাকে দেওয়া হয় লাউ ও মুরগির মাংস। খেতে না পেরে পাশেই খাবার প্লেট রেখে দিয়েছেন।

জানা যায়, একজন রোগীর খাবারের জন্য প্রতিদিন সরকারিভাবে ১৭৫ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। তবে নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করায় তা খেতে পারেন না অধিকাংশ রোগী। অনেকেই খাবার না খেয়ে ফেলে দেন। আবার কেউ কেউ হাসপাতাল থেকে খাবার না নিয়ে বাড়ি থেকে এনে খান।

দরপত্র অনুযায়ী একজন রোগীর সকালের জন্য প্রতিদিন রুটি, একটি কলা, একটি ডিম ও ২৫ গ্রাম চিনির জন্য মোট ৩৬ টাকা ২৫ পয়সা বরাদ্দ রয়েছে। দুপুরে ও রাতে চিকন চালের ভাত, কারফু বা রুই মাছ, খাশি বা ব্রয়লার মুরগির মাংস, মুগডাল, ফুলকপি, গোল আলু, শিম ও পটলসহ সর্বমোট ১৭৫ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাবার সরবরাহে মোটা চাল, নিম্নমানের কলা, রুটি সরবরাহ করা হয়। অধিকাংশ রোগীই মোটা ভাত খেতে পারেন না।

সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আবুল খায়ের অভিযোগ করে জানান, এ হাসপাতালে প্রধান কর্মকর্তা, আরএমওর যোগসাজশে রোগীদের খাদ্য সরবরাহে অনিয়ম হচ্ছে। প্রতিদিন রোগীদের খাদ্য পরিমাপ করা হয় না, মান যাচাইও করে না। মাসে মাসে এসব কর্মকর্তাদের নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিয়েই ম্যানেজ করে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। আর বাবুর্চি নিম্নমানের তৈল, মসলা দিয়েই রান্না করছে এসব খাদ্য। ঠিকাদার এখানে তেমন আসেনও না। লোকজন দিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করেন।

সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাবুর্চি ওহিদুল আলম জানান, মাইজদী থেকে খান নামক একটি প্রতিষ্ঠান গত ২০ বছর ধরে রোগীদের খাবার সরবরাহ করে আসছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাওনা টাকার দাবিতে একটি মামলা থাকায় টেন্ডার হচ্ছে না। মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য কারও মাথাব্যথা নেই। ফায়েদা লুটতে একটি গ্রুপ টেন্ডার হতে দেয় না। তাকে যা দেওয়া হয় তা দিয়েই তিনি খাবার রান্না করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান খান গ্রুপের স্বত্বাধিকারী জহির খান জানান, রোগীদের সিডিউল মোতাবেক খাবার সরবরাহ করেন। হাসপাতালের ডাক্তাররা তা তদারকি করেন। বকেয়া পাওনা থাকায় আদালতে মামলা রয়েছে, বিধায় টেন্ডার হচ্ছে না।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘খাদ্য সরবরাহের কোনো অনিয়ম নেই। যদি কোনো অভিযোগ পান তাহলে আমাদের জানান। তবে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০ বছর ধরে খাদ্য সরবরাহ করছে এটা সত্য।’

নিম্নমানের খাবার ও দীর্ঘদিন টেন্ডার প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার বিষয়ে প্রতিবেদকের কথা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইসরাত জাহানের সঙ্গে। তিনি ফোনে বলেন, যে খাবার দেওয়া হয়, তা নোয়াখালী জেলার অন্য সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ভালো। এখানে ওজন মেপে খাবার দেওয়া হয়। মামলা থাকায় টেন্ডার বন্ধ রয়েছে।’

নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, ‘রোগীদের খাবার সরবরাহে অনিয়ম রয়েছে, তা জানা নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’


কুমিল্লায় আলুর হিমাগারে মিলল ২১ লাখ ডিম

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লায় একটি আলুর হিমাগারে মিলল অবৈধভাবে মজুত করে রাখা ২১ লাখ ডিম ও ২৪ হাজার কেজি মিষ্টি। বিষয়টির খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষকে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

ওই কোল্ড স্টোরেজে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ওই কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লার লালমাই বরল-বাগমারা এলাকায় অবস্থিত মেঘনা কোল্ড স্টোরেজে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. আছাদুল ইসলাম।

আছাদুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা কোল্ড স্টোরেজে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দেখা যায় কোল্ড স্টোরেজটিতে অবৈধভাবে ২১ লাখ ডিম এবং ৮০০ ড্রাম মিষ্টি যার আনুমানিক ওজন প্রায় ২৪ হাজার কে‌জি ও মিষ্টির সিরা মজুত করে রাখা হয়েছে।

আছাদুল বলেন, ‘এক‌টি আলুর কোল্ড স্টোরেজে এমন বিপুল ডিম ও মিষ্টি মজুত করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এ ছাড়া কোল্ড স্টোরেজ প‌রিচালনায় কৃ‌ষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে কৃ‌ষি পণ্য মজুতের লাইসেন্স প্রয়োজন হলেও কর্তৃপক্ষ সে‌টি দেখাতে ব্যর্থ হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘কৃ‌ষি বিপণনের লাইসেন্স না নিয়ে কোল্ড স্টোরেজ প‌রিচালনা এবং অবৈধভাবে বিপুল সংখ্যক ডিম ও মিষ্টি মজুত করায় কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কৃ‌ষি বিপণন আইন ২০১৮-এর দু‌টি ধারায় ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব পণ্য বাজারজাত করতে লি‌খিত অঙ্গীকারনামা নেওয়া হয়।’

এ ছাড়া কৃ‌ষি বিপণন কর্মকর্তাকে মনিটরিং করে বিষয়‌টি নি‌শ্চিত করে প্রতিবেদন দা‌খিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সময়ে আলুর কোল্ড স্টোরেজে অবৈধ প্রক্রিয়ায় মিষ্টি সংরক্ষণ করায় বিষয়‌টি ভোক্তা অধিকার বিরোধী কাজ হিসেবে আমলে নিয়ে চার মিষ্টি ব্যবসায়ীকে ৬০ হাজার টাকা জ‌রিমানা করা হয়।

মোবাইল কোর্ট প‌রিচালনা করেন, কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান শাওন। অভিযানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. আছাদুল ইসলাম উপ‌স্থিত ছিলেন।


কেএনএফের ১৫ সদস্য রিমান্ড শেষে আবারও কারাগারে

আটক হওয়া কয়েকজন সন্দেহভাজন কেএনএফ সদস্য। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১৭ মে, ২০২৪ ১৯:১৬
সারা বাংলা ডেস্ক

বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংক ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণসহ পুলিশের অস্ত্র লুটপাট ও মসজিদে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ১৫ সদস্যকে দুই দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে আনা হলে শুনানি শেষে তাদেরকে আবারও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার বান্দরবান সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. নুরুল হক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে দুপুরে ১৫ আসামিকে কঠোর পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে বান্দরবান চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) প্রিয়েল পালিত। তিনি জানান, রুমা ও থানচি থানার মামলায় ১৫ আসামিকে ২ দিনের রিমান্ড শেষে দুপুরে আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে আদালত ১৫ আসামিকে আবারও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ২ এপ্রিল রাতে এবং ৩ এপ্রিল দুপুরে বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় সশস্ত্র কেএনএফ সদস্যরা। তারা টাকা লুট করে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে, একজন ব্যাংক ব্যবস্থাপককে অপহরণ করে নিয়ে যায়; টাকার পাশাপাশি লুট করে বেশ কিছু অস্ত্র ও গুলি। এই ঘটনায় রুমা থানায় ৫টি এবং থানচি থানায় ৪টি মামলা দায়ের করা হয়। এরপরই অভিযানে নামে যৌথবাহিনী। এ পর্যন্ত মোট ৯টি মামলায় ৮৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।

বিষয়:

বেনাপোল বন্দরে ৫ দিন বন্ধ থাকবে আমদানি-রপ্তানি

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

ভারতের লোকসভা নির্বাচন, বুদ্ধ পূর্ণিমা ও বাংলাদেশে যশোরের শার্শা উপজেলায় নির্বাচনের কারণে আগামীকাল শনিবার থেকে আগামী বুধবার পর্যন্ত ৫ দিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে।

লোকসভা নির্বাচন কারণে ১৭ মে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামী ২০ তারিখ সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত সরকার।

বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপারে বিধিনিষেধের এ তিন দিনে বাংলাদেশ থেকে নতুন কোনো যাত্রী ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন না, তবে মেডিক্যাল ভিসা বা ইমার্জেন্সি ভিসা নিয়ে কোনো যাত্রী যেতে চাইলে সে ভারতে প্রবেশ করতে পারবে। বাংলাদেশে অবস্থানকারী ভারতীয় যাত্রীরা এ তিন দিনে ভারতে প্রবেশ করতে পারলেও ভারতে অবস্থানকারী বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রীরা বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারবে না। ২১ তারিখ সকাল থেকে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।

বেনাপোল চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতীয় চেকপোস্ট থেকে একটি পত্রের মাধ্যমে লোকসভা নির্বাচনের কারণে তিন দিন যাত্রী পারাপার বিধিনিষেধের বিষয়ে জানতে পেরেছি। এ তিন দিনে নতুন কোনো যাত্রী ভারতের প্রবেশ করতে পারবেন না, তবে বাংলাদেশে অবস্থানকারী ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রীরা ভারতে ফিরে যেতে পারবেন এবং যে সব বাংলাদেশিরা মেডিক্যাল ভিসা বা ইমার্জেন্সি ভিসা নিয়ে ভারতে যেতে চায়, তারাই বন্ধের তিন দিনে ভারতে যেতে পারবেন।’

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম জানান, ভারতীয় লোকসভা নির্বাচন, বুদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি ও শার্শা উপজেলায় উপজেলা নির্বাচনের কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে, তবে এ কয়দিন বেনাপোল বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে।

আগামী বৃহস্পতিবার থেকে পুনরায় দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু হবে বলে তিনি জানান।

বিষয়:

চবির ঝরনায় নিখোঁজ স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার

চবি ঝরনায় গোসল করতে নামা শিক্ষার্থী জুনায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চবি প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ক্যাম্পাসের ‘নিষিদ্ধ’ ঝরনায় গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়া স্কুলছাত্র জুনায়েদ হোসেনের (১৩) মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহত জুনায়েদ হোসেন হাজী মহসিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝরনা থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। আমরা মরদেহটি হাটহাজারী মডেল থানায় পাঠিয়েছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, চট্টগ্রাম শহরের প্রবর্তক বিদ্যালয় ও হাজী মহসিন বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের একটি দল ঘুরতে যায় চবিতে। দুপুর ১২টার দিকে তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝরনায় গোসল করতে নামে। কিছুক্ষণ পর থেকে তাদের একজন কে খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন অন্যান্যরা মিলে ঝরনা ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করেও জুনায়েদকে পান না। পরবর্তীতে তার বড় ভাই ও বাবা ক্যাম্পাসে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জুনায়েদের নিখোঁজ হওয়ার কথা জানান। সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঝরনায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ডুবে যাওয়া স্কুলছাত্র জুনায়েদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত জুনায়েদের বন্ধু ইকরাম হসেন রিমন বলে, ‘আমরা দুই স্কুলের বন্ধুরা মিলে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ জন ঘুরতে আসি। ১২টার দিকে ঝরনায় গোসল করতে নামে সবাই। আমি ড্রেস চেঞ্জ করে সবার শেষে পানিতে নামি। তখন জুনায়েদকে না দেখে জিজ্ঞেস করলে অনেকেই বলে আশেপাশে আছে হয়তো। পরে অনেকক্ষণ খুঁজে না পেয়ে আমরা চলে যাই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র বলেন, ‘বাচ্চাটি দুপুরে নিখোঁজ হয়, কিন্তু তার বন্ধুরা আমাদের কিছু জানায়নি। বিকেলের দিকে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানায়। আমরা দ্রুত ফায়ার সার্ভিসে কল দিলে তারা এসে ঝরনায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে। আড়াই ঘণ্টা অভিযানের পর তার মরদেহটি খুঁজে পাওয়া যায়।’

তিনি বলেন, ‘প্রায় প্রতি বছরই এখানে দুই একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। এ এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। সেখানে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।’


কুমিল্লায় বাস উল্টে ৫ যাত্রী নিহত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বসন্তপুর এলাকায় আজ শুক্রবার ভোরে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বসন্তপুরে একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে উল্টে গেছে। এ ঘটনায় বাসের পাঁচজন যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আনুমানিক ১৫ জন। আজ শুক্রবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ত্রিনাথ সাহা তন্ময়।

হাইওয়ে পুলিশের মিয়াবাজার ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী রিলাক্স পরিবহন নামের বাসটি বসন্তপুর পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে যায়। আহতদেরকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, ‘আমরা ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠাই। পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় গাড়ির ভেতর থেকে নিহত পাঁচ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।


banner close