বুধবার, ২৯ মে ২০২৪

ধর্মসভায় যাওয়ার পথে নৌকাডুবি, ২৪ মরদেহ উদ্ধার

নৌকাডুবির পর করতোয়া নদীতে উদ্ধার অভিযান। ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রতিবেদক,
প্রকাশিত
প্রতিবেদক,
প্রকাশিত : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৬:৪২

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় ধর্মসভায় যোগ দিতে মন্দিরের পথে রওনা দেয়া ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকা ডুবে গেলে ৮ শিশুসহ ২৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে উপজেলার মারেয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাট এলাকার করতোয়া নদীতে শতাধিক যাত্রী নিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়।

রাত ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের তথ্য বলছে, নদীতে উদ্ধার অভিযান চলছে। কমপক্ষে ৩০ জন নিখোঁজের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।

পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা দৈনিক বাংলাকে জানান, নৌকাডুবির ঘটনায় ২৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও ৮-১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে উদ্ধার কার্যক্রমের তদারকি করছিলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পঞ্চগড় স্টেশনের সহকারী উপপরিচালক শেখ মাহবুবুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ২৪টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকাজ এখনো চলছে। এ ঘটনায় আমাদের তথ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখান থেকে সর্বশেষ পাওয়া তথ্যে জানতে পারছি, এখন পর্যন্ত ৩০ জনের নিখোঁজের তালিকা করা হয়েছে।’

নৌকাডুবিতে প্রাণহানির শিকার ২৪ জনের মধ্যে ৮ শিশু, ১৬ জন নারী ও একজন পুরুষ। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ১৬ থেকে ১৭ জনকে মৃত অবস্থাতেই নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। বাকি ৭-৮ জনের মৃত্যু হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া উপলক্ষে এক ধর্মসভার আয়োজন ছিল। ওই ধর্মসভাতে যোগ দিতে নদীর এ পাড়ে মারেয়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাট থেকে নৌকা নিয়ে বদেশ্বরী মন্দিরের দিকে রওনা দেন বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বী। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি উল্টে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, নৌকাটি ডুবে গেলে সাঁতার জানা যাত্রীদের কেউ কেউ তীরে উঠে আসতে পারলেও বাকিরা পানিতে ডুবে যায়। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে প্রথমে উদ্ধার তৎপরতা চালায়। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। উদ্ধার তৎপরতায় নদী থেকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৪ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।

একই নৌকায় বড়শশীর বদেশ্বরী মন্দিরে যেতে চেয়েছিলেন স্থানীয় এক তরুণ। সঙ্গে মোটরসাইকেল থাকায় তিনি আর নৌকায় চড়তে পারেননি। ঘাটেই ছিলেন। সেখান থেকেই মাঝ নদীতে নৌকা উল্টে যেতে দেখেন। ওই তরুণ বলেন, ‘মাঝ নদীতে যাওয়ার পরই দেখলাম নৌকাটি কাত হয়ে উল্টে গেল। এ পারে আমরা যারা ছিলাম, সবাই মিলে যে যার মতো উদ্ধারকাজ শুরু করি। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়া হয়। তখন ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে।’

প্রত্যক্ষদর্শী আরেকজন জানান, ‘নৌকাটিতে যাত্রী ছিল দেড় শতাধিক। নৌকাডুবির পর তীর থেকে অনেকেই ছোট ছোট নৌকা নিয়ে গিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। আমরা ১৫-১৬ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করতে দেখেছি। বাকি যাদের উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেও অনেকে মারা গেছে শুনেছি।’

নৌকাডুবির ঘটনায় উদ্ধার ব্যক্তিদের বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সেখানে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে হতাহতদের পরিবারকে সহায়তার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, এ দুর্ঘটনা মর্মান্তিক। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে মরদেহ সৎকারের জন্য নগদ ২০ হাজার টাকা এবং আহতদের জন্য চিকিৎসাসেবা দেয়া হবে।

রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শোক

এদিকে, পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় প্রাণহানিতে শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যারা প্রাণ হারিয়েছেন, শোকবার্তায় তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি তারা গভীর সমবেদনা জানান।


রাফায় ইসরায়েলি হামলা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার রাফায় বিমান হামলা ইস্যুতে জরুরি বৈঠক ডেকেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়ার অনুরোধে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। জার্মান বার্তা সংস্থা ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এই বৈঠক হবে রুদ্ধদ্বার। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো সে বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি।

রাফার তাল আস-সুলতান শহরে অবস্থিত একটি তাঁবুতে রোববার হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এর আগে জাবালিয়া, নুসেইরাত এবং গাজা সিটির বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ১৬০ জন নিহত হয়।

ইসরায়েলের এই বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, নিরপরাধ বেসামরিক মানুষরা যেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেখানে হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলের এই কাজ খুবই নিন্দনীয় ও দুঃখজনক। গাজায় আর কোনো নিরাপদ জায়গা নেই। সেখানকার মানুষ যে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে, তার সমাপ্তি ঘটা উচিত।

এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাই-কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের তাঁবুতে হামলার যেসব ছবি সামনে এসেছে, তা ভয়াবহ। ইসরায়েল যেভাবে যুদ্ধ করছে, তাতে প্রচুর সাধারণ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। আর রোববারের বিমান হামলা বুঝিয়ে দিয়েছে যে গাজায় কোনো নিরাপদ জায়গা নেই।

ভলকার তুর্ক আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) রাফায় হামলা বন্ধের রায় দিলেও ইসরায়েল তা মানছে না। তা ছাড়া ইসরায়েলের যুদ্ধ কৌশল ও পদ্ধতিতে এখনো তেমন কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি। আমি ইসরায়েলকে আইসিজের নির্দেশ মেনে রাফায় আক্রমণ বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার ইসরায়েলকে রাফায় হামলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে আইসিজে। তবে নির্দেশ অমান্য করেই গাজা উপত্যকার শেষ নিরাপদস্থল রাফা অঞ্চলে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।


সুন্দরবনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

প্রায় ৩৬ ঘণ্টা ধরে উপকূলীয় অঞ্চল ও সুন্দরবনে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। ঝড়ে সুন্দরবনের গাছপালা, বন্যপ্রাণী ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে পানি বেড়ে তলিয়ে গেছে বেশিরভাগ এলাকা।

রেমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনে অনেক হরিণ মারা গেছে। এ পর্যন্ত বনের শুধু কটকা এলাকা থেকে ৩০টি মৃত হরিণ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।

পাশাপাশি বনজুড়ে তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে। মৃত হরিণের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। এ ছাড়া ঝড়ে বনের অভ্যন্তরে ২৫টি টহল ফাঁড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বনের ভেতরে লবণ পানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে অন্তত ৮০টি মিষ্টি পানির পুকুরও।

খুলনাঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো জানান, রোববার বিকেল থেকে একটানা ২০ ঘণ্টা ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডব ও জ্বলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে বিশেষ করে বনের অনেক হরিণ মারা গেছে। এ পর্যন্ত বনের শুধু কটকা এলাকা থেকে ৩০টি মৃত হরিণ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। মৃত বন্যপ্রাণীর সন্ধানে বনজুড়ে বনরক্ষীদের তল্লাশি চলছে। তল্লাশিতে আরও মৃত বন্যপ্রাণী উদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছে বন বিভাগ।

এদিকে বনের গাছপালারও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে বন বিভাগের বিভিন্ন অফিসসহ টহলবোট, টিনের চালা, জানালা-দরজা, সোলার প্যানেল ও অবকাঠামোর। এ ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে কটকা অভয়াণ্যের অফিস ঘাটের জেটি ও পুকুর বঙ্গোপসাগরের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দুবলা, কটকা, কচিখালি, বগি ও বিভিন্ন অফিসসহ ২৫টি টহলফাঁড়ির রান্নাঘরসহ অবকাঠামোর টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে।

সুন্দরবনে অভ্যন্তরের মিঠা পানির পুকুরগুলোও জলোচ্ছ্বাসে লোনা পানিতে তলিয়ে গেছে। সুন্দরবনের ৮০টি মিঠা পানির উৎস পুকুরে ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে লোনা পানিতে তলিয়ে যাওযায় বনকর্মীদের পাশাশাশি বাঘ, হরিণসহ বন্যপ্রাণীরাও সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে।

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্ব সুন্দরবনের একমাত্র করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের নানা অবকাঠামো। সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে এখানকার পর্যটক চলাচলের কাঠের পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে তছনছ হয়েছে অসংখ্য গাছপালা। তবে পুরো সুন্দরবনের গাছপালাসহ কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিশ্চিত করে এখনই বলা সম্ভব নয়।’


সাজেকে আটকা শতাধিক পর্যটক

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিজয় ধর, রাঙামাটি

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট অতিবৃষ্টিতে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটেছে।

পাহাড় ধসের কারণে উপজেলার সাজেক-দীঘিনালা সড়কে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে আটকা পড়েছেন শতাধিক পর্যটক। এ ছাড়া উপজেলার পুরো নিম্নাঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভারী বৃষ্টির কারণে উপজেলার মারিশ্যা-দীঘিনালা সড়কে ১০টি স্থানে পাহাড় ধসের কারণে সকাল থেকে সারা দেশের সঙ্গে বাঘাইছড়ি উপজেলার যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। পাহাড় ধসের ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া না গেলেও সড়কের দুই পাশে আটকা পড়েছে বহু যানবাহন। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সাজেকের মাচালং ও বাঘাইহাট বাজার, বহু ঘর-বাড়ি, স্কুল এবং মাছের পুকুর পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে।

সাজেক পর্যটনের হিলভিউ রিসোর্ট স্বত্বাধিকারী ইন্দ্র চাকমা জানান, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সাজেক সড়কে মাচালং ও বাঘাইহাট সেতুতে পানি উঠে গেছে। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে ১২০ জন পর্যটক আটকা পড়েছেন।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার পাহাড় ধসের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে উপজেলায় পাহাড় ধস ও নিম্নাঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে বৃষ্টি পড়া বন্ধ হলে সড়ক ও জনপদ বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন সমন্বয়ের মাধ্যমে সড়কের মাটি সরানোর কাজ শুরু হবে।


সঞ্জীবা গার্ডেনসের সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহের খণ্ডাংশ উদ্ধার

ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৮ মে, ২০২৪ ২০:৩০
নিজস্ব প্রতিবেদক

কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেন্সের সেপটিক ট্যাংক থেকে একটি মরদেহের খণ্ডিতাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এটি ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের মরদেহের অংশ। তবে এই দেহাংশ যে তারই তা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি কলকাতায় যাওয়া ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগের ডিসি মো. আব্দুল আহাদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা কলকাতার স্থানীয় সাংবাদিক ও গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পেরেছি, সঞ্জীবা গার্ডেন্সের সেপটিক ট্যাংক থেকে একটি মরদেহের অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সেটি সংসদ সদস্য আনারের কি না তা আমরা এখনও নিশ্চিত নই। তা ছাড়া কলকাতা সিআইডি বা পুলিশ আমাদের এখনও অফিসিয়ালি নিশ্চিত করেনি। আমরা এই মুহূর্তে ঘটনা তদন্তের স্বার্থে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরের একটি খালে তল্লাশির কাজ পরিদর্শনে রয়েছি। এর মধ্যে আমরা এই তথ্য পেয়েছি। আমরা এখন ঘটনাস্থলের (সঞ্জিভা গার্ডেন) দিকে যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে আমরা নিশ্চিত হতে পারব।’

তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহ বা দেহাংশ উদ্ধার হলেও সেটি যে সংসদ সদস্য আনারের তা আগাম বলার সুযোগ নেই। ডিএনএ টেস্ট করার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

এ দিকে ডিবি সূত্র বলছে, ‘ভারতের সিআইডি সেপটিক ট্যাংকে তল্লাশি করে আশানুরূপ ফল পেয়েছে। কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া কসাই জিহাদ হাওলাদার বলেছিল প্রায় ৪ কেজি ওজনের দেহাংশ কমোডে ফেলা হয়েছে।’

বিষয়:

ঘূর্ণিঝড় রেমাল: আরও তিন উপজেলায় ভোট স্থগিত

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতির কারণে আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে আরও তিনটি উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ মঙ্গলবার ইসির জনসংযোগ শাখার পরিচালক মো. শরিফুল আলম এ তথ্য জানান। উপজেলাগুলো হচ্ছে- নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুরী এবং চাঁদপুর জেলার কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা।

ইসি জানিয়েছে, খালিয়াজুরী উপজেলায় সড়ক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এবং কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ইভিএমের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

এর আগে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে উপজেলা নির্বাচনে তৃতীয় ধাপের ১৯টি উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

উপজেলাগুলো হলো- বাগেরহাট জেলার শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা, খুলনা জেলার কয়রা, পাইকগাছা, ডুমুরিয়া, বরিশাল জেলার গৌরনদী, আগুনঝারা, পটুয়াখালী জেলার পটুয়াখালী সদর, মির্জাগঞ্জ, দুমকি, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া, ভোলা জেলার তজুমদ্দিন, লালমোহন, ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর, কাঁঠালিয়া, বরগুনা জেলার বামনা, পাথরঘাটা এবং রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা।

এর মাধ্যমে তৃতীয় ধাপে সর্বমোট ২২ উপজেলার ভোট স্থগিত করলো ইসি। ফলে আগামী ২৯ মে ৮৭ উপজেলায় ভোট হবে।

বিষয়:

পটুয়াখালীর দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করতে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. নূর কুতুবুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আগামী ৩০ মে প্রধানমন্ত্রী পটুয়াখালী সফরে আসবেন। প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে আমরা কাজ করছি।’

তিনি আরও জানান, জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিন লাখ ২৭ হাজার মানুষ। এছাড়া ২৩৫ ঘরবাড়ি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। পাশাপাশি ১৮৬৫ বাড়িঘর আংশিক বিধ্বস্ত এবং কৃষির ২৬ কোটি ২১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। মৎস্য খাতের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ২৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকার।

জেলা প্রশাসক জানান, আশ্রয়কেন্দ্র থেকে সব মানুষ বাড়িঘরে ফিরে গেছে।


ঈদুল আজহা: শুরু হচ্ছে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আজ মঙ্গলবার রেল ভবনের সম্মেলন কক্ষে ঈদ উপলক্ষ্যে যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা ও বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রস্তুতি বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী।

তিনি বলেন, ‘আগামী ২ জুন থেকে শুরু হবে অগ্রিম টিকেট বিক্রি। যাত্রীদের সুবিধার্থে এবারও শতভাগ আসন অনলাইনে বিক্রি করা হবে।’

অগ্রিম আসন বিক্রির তারিখ ঘোষণার পর মহাপরিচালক জানান, ঈদের আগে আন্তঃনগর ট্রেনের ১২ জুনের আসন বিক্রি হবে ২ জুন; ১৩ জুনের আসন বিক্রি হবে ৩ জুন; ১৪ জুনের আসন বিক্রি হবে ৪ জুন; ১৫ জুনের আসন বিক্রি হবে ৫ জুন; ১৬ জুনের আসন বিক্রি হবে ৬ জুন।

তিনি আরও বলেন, ‘এবার ঢাকা থেকে বহির্গামী ট্রেনের মোট আসন সংখ্যা হবে ৩৩ হাজার ৫০০টি। যা শতভাগ অনলাইনে বিক্রি করা হবে। ২ জুন থেকে যাত্রা শুরুর ১০ দিন আগের আন্তঃনগর ট্রেনের আসন অগ্রিম হিসেবে বিক্রি করা হবে। পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করার সব আন্তঃনগর ট্রেনের সকাল ৮টায় এবং পূর্বাঞ্চলে চলাচল করা সব ট্রেনের আসন ২টায় বিক্রি করা হবে।’

বরাবরের মতো এবারও ঈদের আগে বিশেষ ব্যবস্থায় ৫ দিনের ট্রেনের আসন বিক্রি করবে রেলওয়ে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম, উপসচিব মো. তৌফিক ইমাম (সচিবের একান্ত সচিব), বাংলাদেশ রেলওয়ের বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) মো. আরিফুজ্জামান, (রোলিং স্টক) পার্থ সরকার, (অপারেশন) এ এম সালাহ উদ্দীন প্রমুখ।

বিষয়:

উপজেলা নির্বাচন: তৃতীয় ধাপে ৩০০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের ভোট উপলক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৩০০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) এক বিজ্ঞপ্তিতে আজ মঙ্গলবার এ কথা জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, ‘ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তৃতীয় ধাপে সারা দেশে ৩০০ প্লাটুন (এক প্লাটুনে ৩০ থেকে ৪০ সদস্য) বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২৯ মে অনুষ্ঠাতব্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার নিমিত্তে ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার-এর আওতায় ২৭ মে থেকে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিজিবি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।

বিষয়:

উপকূলজুড়ে ক্ষতের চিহ্ন, প্লাবিত লোকালয়

আপডেটেড ২৮ মে, ২০২৪ ১১:০৭
আওয়াল শেখ, খুলনা ব্যুরো

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল রোববার রাতে উপকূলে আঘাত হানে। রাত ৮টার দিকে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করে। ফলে এর প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ উপকূলের বিভিন্ন জেলায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। তখন বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। এতে বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়। ফলে উকূলীয় এলাকায় অসংখ্য বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে, গ্রামের পর গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে। এখন উপকূলের মানুষের মধ্যে হাহাকার চলছে।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে খুলনার কয়রা উপজেলার ৩টি জায়গার বাঁধ ভেঙে অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ভেসে গেছে শতাধিক চিংড়ির ঘের, ভেঙে গেছে কয়েকশ কাঁচা ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। এ ছাড়া রাতভর ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়ার পাশাপাশি পাইকগাছা উপজেলার ৫টি পয়েন্ট ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, রোববার রাতে জোয়ারের তীব্র চাপে মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের সিংহেরকোণা, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বেলাল গাজীর বাড়ির সামনের বাঁধ ভেঙে গেছে। স্থানীয়রা জানান, বাঁধের দুর্বল অংশের ওই ৩টি স্থানে প্রায় ১৫০ মিটার ভেঙে নদীর নোনা পানিতে প্লাবিত হয়েছে এলাকা।

এ ছাড়া বাঁধের নিচু কয়েকটি জায়গা ছাপিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এসব জায়গায় এলাকার মানুষ রাতভর মেরামত কাজ চালিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারেনি।

মহারাজপুরের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘জোয়ারের চাপে ইউনিয়নের দশহালিয়া এলাকায় প্রায় ৫০ মিটার বাঁধ ভেঙে কপোতাক্ষ নদের পানি ঢুকে পড়েছে। এতে অন্তত দুটি গ্রাম ও কয়েকশ চিংড়ির ঘের তলিয়ে গেছে। ঝড়ের প্রভাবে অনেক বাড়িঘর পড়ে গেছে। তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে আমি নিজ উদ্যোগে যাকে যা পারছি সহায়তা করছি।’

মহেশ্বরীপুরের ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারি বলেন, ‘ইউনিয়নের সিংহেরকোণা এলাকায় বাঁধ ভেঙে গেছে। এ ছাড়া নয়ানি এলাকার বাঁধের নিচু জায়গা ছাপিয়ে সারারাত পানি ঢুকেছে। এতে অন্তত ৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া অসংখ্য চিংড়ির ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ঝড়ের তাণ্ডব ও ভারী বৃষ্টিতে কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে শতাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী জানান, তার ইউনিয়নের মাটিয়াভাঙ্গা এলাকায় রাতের জোয়ারে বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। এতে ৫-৭টি গ্রামে নদীর পানি ঢুকেছে। এ ছাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় নিচু বাঁধ ছাপিয়ে পানি প্রবেশ করেছে এলাকায়।

একইভাবে খুলনার দাকোপ উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার শিবসা ও ঢাকী নদীর বাঁধ ভেঙে তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের কামিনীবাসিয়া গ্রামের ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা তলিয়ে যায়।

তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ক্ষিতীশ গোলদার বলেন, ‘একই এলাকায় পাঁচটি পয়েন্ট ভেঙে এখন পানি ঢুকছে। কামিনীবাসিয়া গ্রামের ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় পুরোটা লোনাপানি ঢুকে তলিয়ে গেছে। এলাকাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩১ নম্বর পোল্ডারের আওতাভুক্ত।’

তিনি আরও বলেন, ‘এত উঁচু জোয়ার আগে তিনি দেখেননি। ঢাকী ও শিবসা নদীর মোহনায় কামিনীবাসিয়া পুরাতন পুলিশ ক্যাম্পসংলগ্ন ওই এলাকায় বেড়িবাঁধের অংশ খুব বেশি দুর্বল ছিল না। তবে বেশ কিছুটা নিচু হওয়ায় উচ্চ জোয়ারের চাপে পানি বেড়িবাঁধ ছাপিয়ে ভেতরে ঢোকে। এরপর বেড়িবাঁধের পাঁচটি পয়েন্ট ভেঙে যায়।’

পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী লিয়াকত আলী জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের সতর্ক সংকেত পাওয়ার পর থেকে স্থানীয় মানুষ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করা হয়। টানা বৃষ্টি ও নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বেড়ে যাওয়ায় কয়েকটি স্থানে বাঁধ সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরের জোয়ারের আগে তা মেরামতের চেষ্টা চলে।

এদিকে খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানান, ঝড়পরবর্তী ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলায় ৫ হাজার ২৮০ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে।


ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বিদ্যুৎহীন দেড় কোটি মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডব থামলেও এর প্রভাবে ঝড়-বৃষ্টি এখনো চলছে। এ অবস্থায় সাগরে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় ঢেউ। স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু জলোচ্ছ্বাস হয়েছে উপকূলীয় অঞ্চলে। এ অবস্থায় দেশের উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকায় ১ কোটি ৫৫ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এসব গ্রাহকের সরবরাহ বন্ধ রেখেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। অনেক স্থানে বিদ্যুৎবিহীন পরিস্থিতি ১৫-১৬ ঘণ্টা অতিক্রম করেছে। ঝড় থেমে গেলে সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছেন বিদ্যুৎকর্মীরা।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) পরিচালক (কারিগরি) মো. রফিকুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দুর্ঘটনা এড়াতে সোমবার বেলা ১২টা পর্যন্ত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ১ কোটি ৫৫ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ঝড় কমে যাওয়ার পর দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করে দিতে আমাদের কর্মীরা প্রস্তুত। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার প্রকৃত চিত্র এখনো জানা যায়নি।

পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা বলছেন, উপকূলীয় কয়েকটি জেলার সাগর তীরবর্তী উপজেলাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতার জোয়ারে তলিয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের লাইন চালু থাকলে জান-মালের ক্ষতি হতে পারে। আবার বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রগুলো পানির নিচে তলিয়ে গেলে দীর্ঘমেয়াদে সেগুলোর ক্ষতি হতে পারে, যা মেরামত করতে অন্তত সাত দিন সময় প্রয়োজন। এসব দিক বিবেচনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।

বিষয়:

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ১০

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারা বাংলা ডেস্ক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে মোট ১০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। উপকূলীয় ছয়টি জেলায় তাদের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে পটুয়াখালীতে তিনজন, ভোলা ও বরিশালে দুইজন এবং সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় একজন করে মারা গেছেন।

আজ সোমবার ভোরে বরিশাল নগরীর রূপাতলী এলাকায় বহুতল ভবনের দেয়াল ধসে দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন একজন।

পুলিশ জানিয়েছে, চারজন রেন্টুরেন্টে অবস্থান করছিলেন। বাতাসের তীব্রতায় আকস্মিক পাশের চারতলা ভবনের একটি অংশের দেয়াল ধসে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন হোটেল মালিক লোকমান ও কর্মচারী মোকছেদুল। আহত হন কর্মচারী সাকিব। তাকে শের-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।

রেমালের তাণ্ডবে ভোলায় মারা গেছেন শিশুসহ দুইজন। এর মধ্যে বসতঘরে চাপা পড়ে মারা যান মনেজা খাতুন নামে এক নারী। তিনি লালমোহন উপজেলার চর উমেদ গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাদেরের স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানান, রাতে মনেজা খাতুন তার এক নাতিকে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। ঝোড়ো বাতাসে টিনের ঘর ভেঙে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি।

স্থানীয়রা জানান, রাতে বাবা-মার সঙ্গে ঘু‌মিয়ে ছিল শিশু মাইশা। ভোরের দিকে ঘূ‌র্ণিঝড় রেমালে তাদের ঘরের পাশে গাছ ভেঙে পড়ে। এতে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মাইশার মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন ওই প‌রিবারের আ‌রও তিনজন।

আজ সোমবার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার টেক্সটাইল এলাকায় দেয়াল চাপায় মারা যান এক পথচারী। স্থানীয়রা জানায়, ঝড়ের সময় ভারী বৃষ্টি হচ্ছিল। এ সময় একটি দেয়ালের পাশে আশ্রয় নেন সাইফুল ইসলাম হৃদয়। হঠাৎ সীমানা দেয়ালটি ভেঙে পড়লে চাপা পড়ে মারা যান হৃদয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস তার মরদেহ উদ্ধার করে।

পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে মারা গেছেন তিনজন। এর মধ্যে দুমকি উপজেলায় ঝড়ো হাওয়ায় গাছচাপায় জয়নাল হাওলাদার নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার পাঙ্গা‌শিয়া ইউ‌নিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড নলদোয়া‌নি স্লুইসগেট এলাকার বাসিন্দা।

পটুয়াখালীর বাউফলে ঘূর্ণিঝড় রিমালে মৃত্যু হয়েছে মো. আব্দুল করিম নামে এক পথচারীর। আজ সকাল ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।

রোববার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালি আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে শওকাত মোড়ল নামে ৬৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ মারা যান। একইদিন বিকেলে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধূলাসর ইউনিয়নের কাউয়ারচর এলাকায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে প্লা‌বিত এলাকা থেকে বোন ও ফুফুকে রক্ষা করতে গিয়ে স্রোতে ভেসে প্রাণ হারান শরীফ হাওলাদার নামে এক যুবক।

কুমিল্লায় বিদ্যালয়ে ক্লাসরত অবস্থায় পার্শ্ববর্তী নির্মাণাধীন সাততলা ভবনের দেয়াল ধসে সাইফুল ইসলাম সাগর (১২) নামে ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।

আজ সোমবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার নোয়াগাঁও চৌমুহনী এলাকায় নুর আইডিয়াল স্কুলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত সাইফুল ইসলাম সাগর সদর দক্ষিণ উপজেলার শাকতলা গ্রামের অলি হোসেনের ছেলে। সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) খাদেমুল বাহার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিষয়:

ঘূর্ণিঝড় রেমাল: বাগেরহাটে আনুমানিক ৪৫ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাতভর তাণ্ডবের পর আজ সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের তীব্রতা কমলেও বৃষ্টিপাত থামেনি।

জানা যায়, রেমালের প্রভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে জেলার ৪৫ হাজার ঘরবাড়ি। এর মধ্যে আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ৩৫ হাজার ও পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে ১০ হাজার বাড়িঘর। উপড়ে পড়েছে কয়েক হাজার গাছপালা। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পুরো জেলা। এছাড়া জেলার প্রায় শতাধিক গ্রাম ৬ থেকে ৮ ফুট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার প্রায় অর্ধলক্ষ পরিবার। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মৎস্য ঘেরে। জেলার মোংলা, রামপাল, শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও বাগেরহাট সদর উপজেলায় সাড়ে ৩হাজার চিংড়ি ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে আনুমানিক ৭৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া ১ হাজার ৫শ ৮১ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।জেলার মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলায় প্রায় দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে জেলার শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলা উপজেলায় সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব উপজেলার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পেয়েছি। আবহাওয়া পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য জানা যাবে। তবে গতকাল রাতে জেলার ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ও কয়েক হাজার গবাদি পশু আশ্রয় নিয়েছিলো। তাদের জন্য শুকনা খাবার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়। প্রয়োজন হলে নগদ অর্থ ও বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে।’

বিষয়:

ঘূর্ণিঝড় রেমাল: ভোলায় ঘরের নিচে চাপা পড়ে নারী নিহত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ভোলার লালমোহন উপজেলায় ঘরের নিচে চাপা পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় আজ সোমবার ভোরে প্রচণ্ড বাতাসে ঘর ভেঙে পড়লে এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর বাসসের।

প্রাণ হারানো ৫৪ বছর বয়সী ওই নারীর নাম মনেজা খাতুন। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এতে ঘটনাস্থলে ওই নারীর মৃত্যু হয়। তার বাবার নাম সিদ্দিক মাঝি। নিহতের পরিবারকে সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।’

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষা পেতে ৩৮ হাজারেরও বেশি মানুষ নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। একই সঙ্গে ৭ হাজার ৯০০ গবাদি পশু অবস্থান নিয়েছে মুজিব কেল্লাগুলোতে। রাতের জোয়ারে জেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলেও, ভাটার সঙ্গে সঙ্গে পানি নেমে যায়।

তিনি বলেন, ‘রিমালের প্রভাবে জেলার গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে ঘর বাড়িরও। আমরা ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরিতে কাজ করছি।’

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রোববার সকাল থেকেই ঝড়ো হাওয়া বইছে উপকূলীয় জেলা ভোলায়। দুপুর থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হলেও রাত থেকে ভারী বর্ষণ চলছে। সেই সাথে তীব্র বাতাস বইছে। উত্তাল রয়েছে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী। দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে সব ধরনের নৌযান চলাচল। রোববার রাত থেকে বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে পুরো জেলা।

বিষয়:

banner close