শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

ঢাকা উত্তর সিটির আবদারে আটকে পাতাল রেলের কাজ

প্রস্তাবিত পাতাল রেল। ছবি: দৈনিক বাংলা
তৌফিকুল ইসলাম
প্রকাশিত
তৌফিকুল ইসলাম
প্রকাশিত : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০৮:৩০

তৌফিকুল ইসলাম

মাটির নিচে থাকা টেলিফোন, গ্যাস, পানিসহ ইউটিলিটি সেবার লাইন সরানো নিয়ে

মেট্রোরেলের প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। উল্টো আরেকটি প্রস্তাব দিয়েছে তারা। ডিএনসিসির প্রস্তাবে যে ‘আবদার’ জানানো হয়েছে তাকে অযৌক্তিক বলছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। এই টানাপোড়েনে আটকে গেছে পাতাল রেলের কাজ।

জুন মাসে এ কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও চার মাস পেরিয়ে গেছে। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু করতে না পারায় নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

একই সঙ্গে এই প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) অবসরে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও নতুন পিডি নিয়োগ হয়নি, এতে প্রকল্পের কাজে অগ্রগতি হচ্ছে না।

পাতাল ও উড়াল মিলে মেট্রোরেল লাইন-১ এর মোট দৈর্ঘ্য ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত পাতাল অংশের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। অন্যদিকে নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত নির্মাণ হবে উড়ালপথ, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার। পাতাল পথে স্টেশন হবে ১২টি এবং উড়ালপথে থাকবে ৭টি। উভয় পথে মোট ১৯টি স্টেশন চূড়ান্ত হয়েছে। ২০২৬ সালে পাতাল রেলের নির্মাণ কাজ শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণ করা আছে।

ইতিমধ্যেই পাতাল রেলের নকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ নকশায় যেভাবে ইউটিলিটি সরানোর প্রস্তাব দিয়েছে তাতে আপত্তি করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।

প্রকল্প সূত্র জানায়, রাজধানীর অন্যান্য এলাকার মতো পাতাল রেলের রুটেও মাটির নিচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন সেবা সংস্থার লাইন। পাতাল রেল কর্তৃপক্ষ ইউটিলিটি সেবার লাইন ব্যবস্থাপনা নিয়ে নকশায় বিস্তারিত তুলে ধরেছে। তারা বলেছে, পাতাল পথে যেসব স্টেশন হবে সেখানে কয়েকটা কমন করিডর করে সব ইউটিলিটির লাইন একসঙ্গে রাখা হবে। তবে স্টেশনের বাইরে এমন করা হবে না।

আর এখানেই আপত্তি সিটি করপোরেশনের। তাদের আবদার শুধু স্টেশনেই না, পাতাল রেলের পুরো রুটেই ইউটিলিটি লাইনগুলো একসঙ্গে কংক্রিটের পাইপে কমন করিডরে করে দিতে হবে। তাদের বক্তব্য, এতে ইউটিলিটি সেবাগুলোর ব্যবস্থাপনা সহজ হবে এবং বারবার রাস্তা খুঁড়তে হবে না। সিটি করপোরেশনের প্রস্তাবে একমত নয় মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মেট্রোরেলে লাইন-১ এর একজন সহকারী প্রকৌশলী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি যে প্রস্তাব দিয়েছে তা করতে গেলে আমাদের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু কাজ শেষ হবে না। তাতে খরচও বাড়বে। আমরা আমাদের প্রস্তাবমতো ব্যবস্থা শুধু স্টেশনগুলোতেই রাখতে পারি। সিটি করপোরেশন চাইলে বাকিটা নিজেদের ব্যবস্থাপনায় করে নিতে পারে। মালিবাগ থেকে নদ্দা অংশে ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমাদের প্রস্তাবে এখনো একমত হয়নি ডিএনসিসি। আমরা চেষ্টা করছি সমন্বয় করে বিষয়টি সমাধান করার।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘সরকারের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আরেকটি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ের অভাব আছে, এটি নতুন নয়। এতে প্রকল্পের কাজে ব্যাঘাত ঘটে, নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয় না প্রকল্পের কাজ। সে ক্ষেত্রে কাজ শুরুর পরিকল্পনার আগেই তাদের মধ্যে সমন্বয় করা উচিত। তাহলে পরে জটিলতা হবে না।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘কাজের ক্ষেত্রে সমন্বয়ের কোনো ঘাটতি নেই। যেটা করলে দুপক্ষের জন্যই উইন উইন সিচুয়েশন হবে সেভাবেই আমরা কাজ করছি। আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করার আমরা সেটা করছি। তবে আমাদের ড্রেনেজ ব্যবস্থা, রাস্তায় ফুটপাতসহ অন্যান্য বিষয় ঠিক রেখেই তাদের নকশা করতে হবে।’

মেট্রোরেলের মালিক প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন সিদ্দিক দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘তেমন বড় কোনো জটিলতা নেই। যখন যে কাজ হবে সেটির বিষয়ে করপোরেশনের অনুমতি নেয়া হবে। আশা করছি ইউটিলিটি নিয়েও কোনো সমস্যা হবে না। মেট্রোরেল লাইন-৬ এর কাজ যখন করতে পেরেছি, তখন লাইন-১ এর কাজও হয়ে যাবে। আর পাতাল রেলের প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। বাকিটা সরকারের হাত।’

টানেল বোরিং মেশিন আসবে এপ্রিলে

কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত মাটির নিচে রেল ট্র্যাক যাবে রাস্তার প্রায় ১০ মিটার নিচ দিয়ে। দুটি টানেল বোরিং মেশিন প্রতিদিন সামনের দিকে মাটি কেটে এগোবে। বিমানবন্দর, কুড়িল, নতুন বাজার এবং কমলাপুরে বসবে এসব টানেল বোরিং মেশিন।

মেট্রোরেল লাইন-১ এর প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাস থেকে টানেলের খনন শুরু হবে। এই কাজের জন্য এপ্রিল মাসে টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) আনা হবে। মোট ৯টি টানেল বোরিং মেশিন আসবে, এর মধ্যে চারটি দিয়ে কাজ শুরু করার কথা আছে। বিমানবন্দর রেলস্টেশন, টার্মিনাল-৩ ও খিলক্ষেত- এই তিনটি পাতাল স্টেশনে প্রথমে খনন কাজ একসঙ্গে শুরু হবে। তাই সবার আগে এই তিনটি স্টেশনেরই ইউটিলিটি সরানোর শুরু হবে। ইউটিলিটির কাজ শেষ করতেই চার মাস সময় লাগবে।

কেমন হবে পাতাল স্টেশন

প্রতিটি পাতাল স্টেশন হবে তিনতলাবিশিষ্ট। টিকিট কাউন্টার ও অন্যান্য সুবিধা থাকবে প্রথম বেসমেন্টে এবং প্ল্যাটফর্ম থাকবে দ্বিতীয় বেসমেন্ট। তবে উড়াল স্টেশনের টিকিট কাউন্টার এবং প্ল্যাটফর্ম থাকবে তিন তলায়। যাত্রীদের চলাচলের জন্য উড়াল এবং পাতাল- দুই পথের স্টেশনেই থাকবে লিফট, সিঁড়ি এবং এস্কেলেটর সুবিধা। স্টেশনগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ বাতাস এবং অক্সিজেন আসতে থাকবে অতিরিক্ত ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা।

নির্মাণকাজ শুরু হচ্ছে অক্টোবরে

মেট্রোরেলের লাইন-১ এর ডিপো নির্মাণ হবে নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জে। গত জুলাই মাসে এই ডিপো এলাকায় মূল নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় পিছিয়ে দিয়ে আগস্ট বা সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়ার কথা ছিল মূল নির্মাণকাজ। তারপরও শুরু হয়নি কাজ।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘পাতাল রেলের ডিপোর কনস্ট্রাকশন কাজ অক্টোবর মাসে শুরু হবে। আশা করছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কাজ উদ্বোধন করবেন। ডিপো নির্মাণের মধ্য দিয়ে পাতাল রেলের আনুষ্ঠানিক কনস্ট্রাকশন কাজ শুরু হবে। ডিপো নির্মাণ কাজের দরপত্র ও ঠিকাদার নিয়োগসহ যাবতীয় কাজ শেষ।’

এদিকে পুরো প্রকল্পটির কাজ ১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে। এর মধ্যে ৮টি প্যাকেজের টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে । আরো দুই থেকে তিনটি প্যাকেজের টেন্ডার কাজ এই মাসের মধ্যে শুরু হবে।

প্রকল্পটি শেষ হলে এই রুটে প্রতিদিন ৮ লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর যেতে সময় লাগবে ২০ মিনিট। পাতাল রেলের জন্য কেনা হবে ২৫টি ট্রেন। প্রতিটি ট্রেনে কোচ থাকবে ৮টি করে ৷ একেকটি ট্রেন সেটে একসঙ্গে ৩ হাজার ৮৮ জন যাত্রী পরিবহন করা যাবে।

পাতাল মেট্রোরেল নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪০ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এবং বাকিটা বাংলাদেশ সরকার।


কেএনএফের ১৫ সদস্য রিমান্ড শেষে আবারও কারাগারে

আটক হওয়া কয়েকজন সন্দেহভাজন কেএনএফ সদস্য। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১৭ মে, ২০২৪ ১৯:১৬
সারা বাংলা ডেস্ক

বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংক ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণসহ পুলিশের অস্ত্র লুটপাট ও মসজিদে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ১৫ সদস্যকে দুই দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে আনা হলে শুনানি শেষে তাদেরকে আবারও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার বান্দরবান সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. নুরুল হক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে দুপুরে ১৫ আসামিকে কঠোর পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে বান্দরবান চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) প্রিয়েল পালিত। তিনি জানান, রুমা ও থানচি থানার মামলায় ১৫ আসামিকে ২ দিনের রিমান্ড শেষে দুপুরে আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে আদালত ১৫ আসামিকে আবারও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ২ এপ্রিল রাতে এবং ৩ এপ্রিল দুপুরে বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় সশস্ত্র কেএনএফ সদস্যরা। তারা টাকা লুট করে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে, একজন ব্যাংক ব্যবস্থাপককে অপহরণ করে নিয়ে যায়; টাকার পাশাপাশি লুট করে বেশ কিছু অস্ত্র ও গুলি। এই ঘটনায় রুমা থানায় ৫টি এবং থানচি থানায় ৪টি মামলা দায়ের করা হয়। এরপরই অভিযানে নামে যৌথবাহিনী। এ পর্যন্ত মোট ৯টি মামলায় ৮৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।

বিষয়:

বেনাপোল বন্দরে ৫ দিন বন্ধ থাকবে আমদানি-রপ্তানি

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

ভারতের লোকসভা নির্বাচন, বুদ্ধ পূর্ণিমা ও বাংলাদেশে যশোরের শার্শা উপজেলায় নির্বাচনের কারণে আগামীকাল শনিবার থেকে আগামী বুধবার পর্যন্ত ৫ দিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে।

লোকসভা নির্বাচন কারণে ১৭ মে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামী ২০ তারিখ সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত সরকার।

বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপারে বিধিনিষেধের এ তিন দিনে বাংলাদেশ থেকে নতুন কোনো যাত্রী ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন না, তবে মেডিক্যাল ভিসা বা ইমার্জেন্সি ভিসা নিয়ে কোনো যাত্রী যেতে চাইলে সে ভারতে প্রবেশ করতে পারবে। বাংলাদেশে অবস্থানকারী ভারতীয় যাত্রীরা এ তিন দিনে ভারতে প্রবেশ করতে পারলেও ভারতে অবস্থানকারী বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রীরা বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারবে না। ২১ তারিখ সকাল থেকে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।

বেনাপোল চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতীয় চেকপোস্ট থেকে একটি পত্রের মাধ্যমে লোকসভা নির্বাচনের কারণে তিন দিন যাত্রী পারাপার বিধিনিষেধের বিষয়ে জানতে পেরেছি। এ তিন দিনে নতুন কোনো যাত্রী ভারতের প্রবেশ করতে পারবেন না, তবে বাংলাদেশে অবস্থানকারী ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রীরা ভারতে ফিরে যেতে পারবেন এবং যে সব বাংলাদেশিরা মেডিক্যাল ভিসা বা ইমার্জেন্সি ভিসা নিয়ে ভারতে যেতে চায়, তারাই বন্ধের তিন দিনে ভারতে যেতে পারবেন।’

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম জানান, ভারতীয় লোকসভা নির্বাচন, বুদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি ও শার্শা উপজেলায় উপজেলা নির্বাচনের কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে, তবে এ কয়দিন বেনাপোল বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে।

আগামী বৃহস্পতিবার থেকে পুনরায় দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু হবে বলে তিনি জানান।

বিষয়:

চবির ঝরনায় নিখোঁজ স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার

চবি ঝরনায় গোসল করতে নামা শিক্ষার্থী জুনায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চবি প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ক্যাম্পাসের ‘নিষিদ্ধ’ ঝরনায় গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়া স্কুলছাত্র জুনায়েদ হোসেনের (১৩) মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহত জুনায়েদ হোসেন হাজী মহসিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝরনা থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। আমরা মরদেহটি হাটহাজারী মডেল থানায় পাঠিয়েছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, চট্টগ্রাম শহরের প্রবর্তক বিদ্যালয় ও হাজী মহসিন বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের একটি দল ঘুরতে যায় চবিতে। দুপুর ১২টার দিকে তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝরনায় গোসল করতে নামে। কিছুক্ষণ পর থেকে তাদের একজন কে খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন অন্যান্যরা মিলে ঝরনা ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করেও জুনায়েদকে পান না। পরবর্তীতে তার বড় ভাই ও বাবা ক্যাম্পাসে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জুনায়েদের নিখোঁজ হওয়ার কথা জানান। সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঝরনায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ডুবে যাওয়া স্কুলছাত্র জুনায়েদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত জুনায়েদের বন্ধু ইকরাম হসেন রিমন বলে, ‘আমরা দুই স্কুলের বন্ধুরা মিলে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ জন ঘুরতে আসি। ১২টার দিকে ঝরনায় গোসল করতে নামে সবাই। আমি ড্রেস চেঞ্জ করে সবার শেষে পানিতে নামি। তখন জুনায়েদকে না দেখে জিজ্ঞেস করলে অনেকেই বলে আশেপাশে আছে হয়তো। পরে অনেকক্ষণ খুঁজে না পেয়ে আমরা চলে যাই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র বলেন, ‘বাচ্চাটি দুপুরে নিখোঁজ হয়, কিন্তু তার বন্ধুরা আমাদের কিছু জানায়নি। বিকেলের দিকে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানায়। আমরা দ্রুত ফায়ার সার্ভিসে কল দিলে তারা এসে ঝরনায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে। আড়াই ঘণ্টা অভিযানের পর তার মরদেহটি খুঁজে পাওয়া যায়।’

তিনি বলেন, ‘প্রায় প্রতি বছরই এখানে দুই একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। এ এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। সেখানে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।’


কুমিল্লায় বাস উল্টে ৫ যাত্রী নিহত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বসন্তপুর এলাকায় আজ শুক্রবার ভোরে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বসন্তপুরে একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে উল্টে গেছে। এ ঘটনায় বাসের পাঁচজন যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আনুমানিক ১৫ জন। আজ শুক্রবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ত্রিনাথ সাহা তন্ময়।

হাইওয়ে পুলিশের মিয়াবাজার ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী রিলাক্স পরিবহন নামের বাসটি বসন্তপুর পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে যায়। আহতদেরকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, ‘আমরা ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠাই। পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় গাড়ির ভেতর থেকে নিহত পাঁচ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।


অধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

আপডেটেড ১৭ মে, ২০২৪ ১০:৫০
শফিকুল ইসলাম জয়, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল)

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের জারি করা পরিপত্রের বিধি লঙ্ঘন করে স্বজনপ্রীতি ও বিধিবহির্ভূতভাবে পছন্দের একজনকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পৌরনীতি ও সুশাসন বিষয়ের প্রভাষক মো. জিল্লুর রহমান। নিয়োগ পাওয়া ওই অধ্যক্ষের নাম সোহেল রানা খান। তিনি বাংলা বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। বিধিবিধানবহির্ভূত নিয়োগ পেয়েও নিয়মিত তুলছেন বেতন–ভাতা। এতে শিক্ষা বোর্ডের নেই কোন নজরদারি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ২০ জানুয়ারি পৌরনীতি ও সুশাসন বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন মো. জিল্লুর রহমান। যোগদানের পর সাংগঠনিক কমিটির রেজুলেশনের মাধ্যমে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি। তার উপর অর্পিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব ২০১০ সালের ১৭ মে পর্যন্ত পালন করেছেন। ওই বছরের ১৮ মে ব্যক্তিগত সমস্যার কারণ দেখিয়ে তিনি অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। পরে ২০১০ সালের ১৮ মে পরিচালনা পর্ষদ ওই কলেজের অর্থনীতি বিষয়ের প্রভাষক সোহেল রানা খানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। পরে সোহেল রানা খানকে অব্যাহতি দিয়ে ৫ নম্বর ক্রমিকের বাংলা বিষয়ের প্রভাষক মো. নজরুল ইসলামকে ২০১৯ সালের ৮ মার্চ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন।

তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলামকে তার দায়িত্ব থেকে কবে অব্যাহতি দেন এ সম্পর্কিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সোহেল রানা খানকে পরিপত্রের বিধি লঙ্ঘন করে সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হয় অধ্যক্ষ হিসেবে।
সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৫ মার্চ জারি করা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশিদ স্বাক্ষরিত পরিপত্রের ‘খ’ অংশে বলা আছে– উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের অধ্যক্ষ হতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থিকে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ অথবা উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের অধ্যক্ষ অথবা ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ পদে এমপিওভুক্ত হিসেবে কর্মরত অথবা এমপিওভুক্ত সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে নূন্যতম ৩ বছরের অভিজ্ঞতাসহ মোট (১২) বার বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

অন্যদিকে কলেজের সংরক্ষিত নথিপত্র থেকে জানা যায়, ধলাপাড়া কলেজ এমপিওভুক্ত হয় ২০১৯ সালের ১ জুলাই। আর সোহেল রানা খান ২০০৫ সালের ২২ জানুয়ারিতে অর্থনীতি বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। অর্থাৎ তিনি কলেজের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেওয়ার সময় ওই কলেজ এমপিওভুক্ত হয়নি। অন্যদিকে ধলাপাড়া কলেজ হলো সোহেল রানা খানের প্রথম কর্মস্থল। তিনি অন্য কোনো কলেজে অধ্যক্ষ কিংবা উপাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নি। সুতরাং অধ্যক্ষ হিসেবে তার নিয়োগের ক্ষেত্রে পরিপত্রের ‘খ’ অংশের সব শর্ত লঙ্ঘন করেছেন। তবুও নিয়মিত তুলছেন বেতন–ভাতা।

অভিযোগকারী ধলাপাড়া কলেজের পৌরনীতি ও সুশাসন বিভাগের প্রভাষক সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘অধ্যক্ষ তার খেয়ালখুশি মতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন। পরিচালনা পরিষদের স্বজনপ্রীতি ও বিধিবহির্ভূতভাবে পছন্দের ব্যক্তিকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।’ এর সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তার। এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সোহেল রানা খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিধিবিধান মেনেই আমাকে পরিচালনা পর্ষদ অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এ নিয়ে আনিত সব অভিযোগ মিথ্যা।’

কোনো নিয়মের বিধানে সোহেল রানা খানকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে– এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ববিন হায়দার চৌধুরী সাদী। তার ভাষ্য, ‘সব নিয়মকানুন মেনে বিধি মোতাবেক অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগকারী ওই শিক্ষকের নিয়োগই ঠিক নেই। তিনি অহেতুক খোঁচাখোঁচি করছেন।’ এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরতিজা হাসান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিধি মোতাবেক তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সনদহীন চিকিৎসকের ‘খোলা চেম্বারে’ অস্ত্রোপচার

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয়ধারী এস এম মারুফ হোসেন।
আপডেটেড ১৭ মে, ২০২৪ ০৩:৩৩
আওয়াল শেখ, খুলনা ব্যুরো

নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি বা চিকিৎসাসেবা দেওয়ার অনুমতি। তবুও শহরের মধ্যে রয়েছে নিজস্ব চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র (চেম্বার)। সেখানে বসে শুধু রোগীদের পরামর্শ দেওয়া নয়, নোংরা পরিবেশে অহরহ অস্ত্রোপচারও করেন। বারবার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অভিযানে দণ্ড আরোপ করা হলেও, ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি প্রতারণা করে আসছেন। একাধিক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয়ধারী ওই ব্যক্তি হলেন এস এম মারুফ হোসেন।

খুলনা শহরের জনবহুল এলাকা শান্তিধাম মোড়ের কাছে ইসলামপুর রোডে রয়েছে ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার। ওই ভবনের নিচতলায় ডান পাশের অংশেই মারুফ হোসেনের ব্যক্তিগত চেম্বার। চেম্বারে রয়েছে একটি ছোট শয্যা। তাতে সারি সারি সাজানো অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম।

গ্যারান্টিসহকারে তিনি সেখানে পাইলস ও নাকের পলিপাসের অস্ত্রোপচার করেন। সেই সঙ্গে রোগীদের পরামর্শ দেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে।

তার প্রেসক্রিপশনে নামের আগে লেখা রয়েছে ডা. (ডাক্তার)। বিশেষজ্ঞ হিসেবে লেখা রয়েছে, পাইলস ও নাকের পলিপাস স্পেশালিস্ট (মেডিসিন)। ডিগ্রির তালিকায় রয়েছে ডিএইচএমএস (ঢাকা) ও বিএসএএম (কলকাতা)। যদিও ডিএইচএমএস হলো বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের একটি ডিপ্লোমা ডিগ্রি ও বিএসএএম ডিগ্রির কোনো স্বীকৃতি বাংলাদেশে নেই।

ওই যোগ্যতা নিয়ে নামের আগে ডা. লেখার কোনো বৈধতা নেই বলে জানিয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মো. নিয়াজ মুস্তাফি চৌধুরী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) আইন মোতাবেক ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রি প্রাপ্তরা ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। এ ছাড়া বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধন ছাড়া কেউ চিকিৎসাসেবাও দিতে পারবেন না।

রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে গত ২৩ এপ্রিল এস এম মারুফ হোসেনের চেম্বারে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। সেখানে তারা খুঁজে পান রোগীকে অজ্ঞান করার ওষুধ লিডোকেইন।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. শেখ আওরঙ্গজেব প্রিন্স বলেন, শরীরের ছোট ছোট অংশে অস্ত্রোপচারে আগে সংবেদন হারানোর জন্য লিডোকেইন ব্যবহার করা হয়। তবে এর ব্যবহারের একটি নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে। রোগীর বয়স, ওজন ও মানসিক অবস্থাসহ কয়েকটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে ওষুধের মাত্রা নির্ধারণ করতে হয়, যা অ্যানেসথেশিয়া বিশেষজ্ঞ ছাড়া কখনই সম্ভব নয়। এর সঠিক প্রয়োগ না হলে রোগীর জীবন ঝুঁকিসহ অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে।

ওই অভিযানটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ভোক্তা-অধিকারের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মতো তার কাছে ন্যূনতম কোওনা কাগজপত্র নেই। এমনকি একটি চেম্বার করতে গেলে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হয়, সেটিও তার কাছে নেই। তারপরও তিনি অ্যানেসথেশিয়ার মতো জটিল ওষুধ রোগীকে পুশ করতে অস্ত্রোপচার করেন। এসব অপরাধের দায়ে তাকে ভোক্তা-অধিকারের ৪৫ ও ৫১ ধারা অনুযায়ী ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

তবে ভোক্তা অধিকারের সেই অভিযানের পর তিন দিনের জন্য বন্ধ ছিল ওই চেম্বারটি। পরে আবারও যথারীতি রোগীদের সঙ্গে তিনি প্রতারণা শুরু করেছেন।

তার চেম্বারের কাছেই ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবসা করছেন মো. তালেব। তিনি বলেন, এই ব্যক্তিকে আগেও দণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে জেল বা জরিমানা দেওয়ার পর কয়েক দিন আড়ালে থেকে আবারও তিনি রোগী দেখা শুরু করেন। এভাবেই তিনি প্রচুর টাকার মালিক।

তার কাছে চিকিৎসা নিয়ে প্রতারিত হয়েছেন এমন একাধিক রোগীর সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। এর মধ্যে একজন হলেন আলীম উদ্দীন।

তিনি বলেন, ‘আমি পাইলসের চিকিৎসার জন্য তার কাছে গিয়েছিলাম। তখনি তিনি আমাকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। পরে আমাকে রোগমুক্ত করার গ্যারান্টি দিয়ে অপারেশন করেন। তবে অপারেশনের ৫ দিন পরে আমার মলদ্বার থেকে রক্ত ক্ষরণ শুরু হয়। তখন তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে, আমাকে অন্য হাসপাতালে যেতে বলেন। পরে আমি একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পুনরায় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হই।’

তিনি বলেন, পরবর্তীতে অন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, তিনি আমার পাইলসের অস্ত্রোপচারের জন্য এক ধরনের অ্যাসিড ব্যবহার করেছিলেন। যার কারণে রক্ত ক্ষরণ হয়েছিল।

এ ধরনের চিকিৎসার ফলে রোগীর জীবন বিপন্ন হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মো. নিয়াজ মুস্তাফি চৌধুরী। তিনি বলেন, পাইলসের চিকিৎসায় অ্যাসিড ব্যবহার করলে, সেখান থেকে পরবর্তীতে রক্তক্ষরণসহ অন্যান্য রোগ সৃষ্টি হতে পারে। এমন কি ক্যান্সারের মতো জটিল রোগ সৃষ্টি হয়ে রোগীর জীবন বিপন্ন করে দিতে পারে। তাই চিকিৎসা নেওয়ার আগে চিকিৎসকের মান যাচাই করে নেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসক পরিচয়ধারী এস এম মারুফ হোসেন বলেন, ‘ভাই আমি ডাক্তার হিসেবে খারাপ না। তবে আমার সনদ একটু কম আছে, তাই বারবার জরিমানা দিতে হয়। অভিযানে এসে আমার এই কাগজ নেই, সেই কাগজ নেই বলে বলে দণ্ড আরোপ করে। তবে রোগীরা আমার সেবায় সন্তুষ্ট হয়।’

চিকিৎসাসেবায় এ ধরনের প্রতারণা নির্মূলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভূমিকা জানতে চাইলে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মনজুরুল মুরশিদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের সহায়তায় আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর অভিযান শুরু করা হবে।’


নীলফামারীতে অটো চালক হত্যা, গ্রেপ্তার ৩

আপডেটেড ১৬ মে, ২০২৪ ২২:০৯
নাসির উদ্দিন শাহ মিলন, নীলফামারী

নীলফামারীতে ছাপিনুর রহমান (৫০) নামে এক অটো চালকে গলা কেটে হত্যা ও অটো রিক্সা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার কুন্দপুকুর ইউনিয়নের মধ্য সুটিপাড়া ফুলতলা এলাকার মজিবুল হকের ছেলে মোঃ রাসেল মিয়া (২২), উত্তর হাড়োয়া পঞ্চপুকুর এলাকার মৃত মজির আলীর ছেলে ফেরদৌস আলম (৩৫) ও নীলফামারী পৌরসভার বাড়াই পাড়া এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে জলিল ইসলাম ইসলাম ওরফে পিনিক বাবু (৩০)।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার গোলাম সবুর পিপিএম।

পুলিশ সুপার গোলাম সবুর জানান, 'গত ১২ মে রাত ১২টার দিকে ঘাতকরা যাত্রি সেজে ছাপিনুরের অটো রিক্সাতে উঠে জনশূন্য রাস্তায় নিয়ে যায়। এরপর তাকে পৌর শহরের ধনি পাড়া তিস্তা সেচ ক্যানেল এলাকায় নিয়ে গিয়ে পার্শ্ববর্তী ভুট্টা ক্ষেতে গলা কেটে ফেলে দিয়ে অটো রিক্সা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ছাপিনুরের গোঙানির শব্দে স্থানীয় লোকজন টের পেলে তাকে উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থানান্তর করলে পথিমধ্যে মৃত্যুবরণ করে ছাপিনুর।'

গোলাম সবুর আরও বলেন, 'এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘাতকদের ধরতে তিন থেকে চারটি টিম অভিযান শুরু করে। তারই প্রেক্ষিতে ছিনতাইকৃত অটোসহ ঘাতক রাসেল মিয়াকে ঢেলাপির থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ফেরদৌস ও জলিলকে গাছবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।'

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আমিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নীলফামারী সার্কেল) মোস্তফা মঞ্জুর পিপিএম, প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএম মনজুরুল আলম সিয়াম, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তানভীরুল ইসলামসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা বিশ্বে রোল মডেল হবে: ইসি

যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের সঙ্গে আচরণবিধি ও অন্যান্য বিষয়ে মতবিনিময়কালে ইসি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.) বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা একসময় বিশ্বে রোল মডেল হবে। প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে সারা দেশে গড়ে ৩৬ শতাংশ ভোটার এসেছে। এটিকে কম বলব না। ধান কাটার মৌসুম, গরম ও ভোটারদের প্রার্থী দেখে পছন্দ হয়নি বলেই ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কমেছে। তবে এ অবস্থা উন্নতির দিকে যাচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে যশোর, মাগুরা ও নড়াইল জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে আচরণবিধি ও অন্যান্য বিষয়ে মতবিনিময় সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, নির্বাচনে কোনো প্রার্থী যদি সন্ত্রাসীকর্মকাণ্ড বা কোনো ঝামেলা করার চেষ্টা করে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হবে। একই সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষকদেরও ছাড় দেওয়া হবে না। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদরা ভোটারদের কাছে যেতে পারছেন। আর এ যাওয়ার পরিবেশ তৈরি করতে পেরেছে নির্বাচন কমিশন। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ এবং উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর হয়েছে। সামনের নির্বাচনগুলো আরও ভালো হবে।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, এই কমিশন সাংবাদিকদের সুরক্ষায় আইন করেছে। নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করার সময় কেউ যদি সাংবাদিকদের আহত কিংবা ক্যামেরা ভাঙচুর করে তাহলে তার শাস্তি হবে। তবে, নির্বাচনের সময় কিছু মৌসুমি সাংবাদিক হাজির হয়। তারা কারও পক্ষে, আবার কারও বিপক্ষে প্রচার-অপপ্রচার করে। এ বিষয়টির প্রতিও আমাদের লক্ষ রাখতে হবে।

তিনি নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের প্রেসক্লাবের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে সাংবাদিকদের পাস দেওয়ার নির্দেশনা দেন।

উপজেলা নির্বাচনে এমপিদের ভূমিকার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, এমপিরা কেবল ভোট দিতে পারবেন। তারা কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন না।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, যশোর নির্বাচন কর্মকর্তা আনিছুর রহমান প্রমুখ।

বিষয়:

১৫৭ উপজেলায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে দেশের ৬৩ জেলার ১৫৭ উপজেলায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ২১ মে নির্বাচনে অনিয়ম বন্ধে এসব ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের আগে-পরে ৫ দিন কাজ করবে।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আইনশাখার উপসচিব আব্দুস সালাম এ সংক্রান্ত চিঠি সংশ্লিষ্টদের পাঠিয়েছেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ৬৩টি জেলার ১৫৭ উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য ভোটের আগের দুইদিন, ভোটের দিন ও ভোটের পরের দুইদিন অর্থাৎ ১৯-২৩ মে পর্যন্ত ১৫৭ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

চিঠি সূত্রে আরও জানা গেছে, এসব ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ২০১৩ এর বিধি ৮৪ক- তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নির্বাচনী অপরাধ আমলে নিয়ে সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচার করবেন। এক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালনের সময় ১ জন বেঞ্চ সহকারী, স্টেনোগ্রাফার এবং অফিস সহকারীকে নিজের সহকারী হিসেবে সঙ্গে নিতে পারবেন। একইসঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় যানবাহন সরবরাহ করতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসককেও বলা হয়েছে।

ম্যাজিস্ট্রেটরা সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় আদালত পরিচালনার জন্য ২ জন সশস্ত্র পুলিশও পাবেন।

প্রসঙ্গত, ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত ৮ মে প্রথম ধাপের ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের ১৫৭ উপজেলার ভোটগ্রহণ আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে। তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৫ জুন ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে।

বিষয়:

নেত্রকোণায় বিল থেকে স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নেত্রকোণা প্রতিনিধি

নেত্রকোণা পূর্বধলায় আকিব হাসান মাহিন নামে এক স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি পূর্বধলা জগৎমনি পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের একজন ছাত্র।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে পূর্বধলার থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মরদেহটি উদ্ধার করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল বুধবার উপজেলার রাজধলা বিলের উত্তর পশ্চিম কোণে মেহগনি বাগানে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে আসে রাজপাড়া গ্রামের ফারুক আহমেদ ওরফে কাশেমের ছেলে আকিব হাসান মাহিন (১৭)। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন উপজেলা শহরের সোহেল রানার ছেলে আবির ও তার বন্ধু সাইমন। বেলা ৫টার দিকে সাইমন এবং আবির দুইজন ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। কিন্তু মাহিন রাত ১০টা পর্যন্ত বাসায় না ফিরলে তার স্বজনরা রাত ভর তাকে খোঁজাখুজি করেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তার স্বজনরা রাজধলা বিলের উত্তর পশ্চিম কোণে মাহিনের পরিহিত জামা ও ব্যাবহৃত মোবাইল দেখতে পান। স্থানীয় লোকজন এবং তার স্বজনরা অনুমান করেন মহিনের মৃতদেহ বিলে থাকতে পারে। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করেন। এ সময় পূর্বধলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে নেত্রকোণা জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বিষয়:

সড়ক সংস্কারের কার্পেটিং হাত দিয়ে টেনে তুললেন স্থানীয়রা

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৬ মে, ২০২৪ ১৪:২৮
খোরশেদ আলম, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী)

সোনাইমুড়ীতে আমকি-থানার হাট সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। ফলে সড়ক থেকে কার্পেটিং তুলে ফেলল বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। জানা যায়, উপজেলার নোয়াখালী-চাটখিল মহাসড়ক থেকে আমকি হয়ে থানার হাট পর্যন্ত সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় ছিল। গত বছরের নভেম্বরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পায়। দুই কিলোমিটার রাস্তাটি ১ কোটি ৫২ লাখ টাকায় টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এম ট্রের্ডাস সংস্কারের কাজ পায়।

শুরুতেই নিম্নমানের ইট, বালি দিয়ে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী দেওয়ায় শুরু থেকেই এলাকাবাসী প্রতিবাদ করে আসছে। কয়েকবার সড়কের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়; কিন্তু ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকৌশল অফিসের অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যায়। গতকাল বুধবার সকালে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে সড়কের ঢালাইয়ের কিছু অংশের কার্পেটিং হাত দিয়ে টেনে টেনে তুলে ফেলে। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় মাহতলা গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে জানান, শুরুতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন দলীয় প্রভাব খাটিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়কের কাজ শুরু করে। কয়েকবার বাধা দেওয়ার পরেও তারা শোনেনি। ন্যূনতম বিটুমিন ও পাথর দিয়ে ঢালাই দেওয়ায় তা এলাকাবাসী হাত দিয়ে টেনে তুলে ফেলেন। পরে স্থানীয়রা সড়কের কাজ বন্ধ করে দেয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী রনি জানান, সিডিউল অনুযায়ী সড়কের কাজ হচ্ছে, তবে এলাকার লোকজন কয়েকবার বাধা দিয়েছে। আজকেও বাধা দেওয়ার পর সড়কের কাজ বন্ধ আছে।

উপজেলা প্রকৌশলী এমদাদুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পেরেছি, সড়কের কার্পেটিং হাত দিয়ে টেনে তুলেছে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় ঠিকাদারের লোকজন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। তবে সিডিউল অনুযায়ী ও তাদের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধায়নে সড়কের কাজ চলছে। জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা গতকাল সরেজমিনে পরিদর্শন করে সড়কের নির্মাণকাজে সন্তোষ প্রকাশ করেন।’


কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার রসুলপুর রেল স্টেশনের কাছে মাজারের সামনে ট্রেনে কাটা পড়ে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিক্ষার্থী রসুলপুর গ্রামের রসুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী মিম আক্তার।

ঘটনার পর থেকে রেললাইনে অবস্থান করে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। এর ফলে রসুলপুর স্টেশনে আটকে পড়ে ঢাকাগামী মহানগর প্রভাতী ট্রেন। পরে পুলিশ ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্কুলে যাওয়ার সময় মাজার গেট দিয়ে রেল লাইন পার হচ্ছিল শিক্ষার্থী মিম। ঢাকাগামী চট্রলা এক্সপ্রেস ও চট্টগ্রামগামী পর্যটন এক্সপ্রেস একসঙ্গে ক্রস করছিল। ওই শিক্ষার্থী একপাশের ট্রেন দেখলেও অপরপাশের ট্রেন না দেখায় কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। ঘটনার পর থেকে অবরোধ শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

স্থানীয়রা আরও জানান, এই রেলক্রসিংটি দীর্ঘদিন ধরে এভাবে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।

কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোস্তফা কামাল দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ওই শিক্ষার্থীরা কেন রেললাইন অবরোধ করেছে তা জানিনা। তাদের সঙ্গে কথা বলছি আমরা। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

বিষয়:

ফতুল্লায় ছাদ থেকে পড়ে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের তৃতীয় তলার ছাদ থেকে পড়ে মো. ইসমাইল (৫৫) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুরের শারজাহান রোলিং মিলস খাঁ বাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শ্রমিক মো. ইসমাইল নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার রফিকপুরের মুসলিম মিয়ার ছেলে ও শিয়াচর সামাদ মিয়ার বাড়ীর নিচতলার ভাড়াটিয়া।

স্থানীয়রা জানান, দুপুরে ভবনে কাজ করার সময় অসাবধনতায় তিনি ভবনের তৃতীয় তলার ছাদ থেকে পড়ে যান। সে সময় অন্য শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত খানপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘ভবন থেকে পড়ে ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। কেউ অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


banner close