শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

দেশি গ্যাসকূপে ঘুরে তাকাচ্ছে সরকার

৪০ মাসে ৪৬টি কূপ খননের পরিকল্পনা।
আরিফুজ্জামান তুহিন
প্রকাশিত
আরিফুজ্জামান তুহিন
প্রকাশিত : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০৯:৫০

আরিফুজ্জামান তুহিন

বৈশ্বিক মন্দাসহ আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে বিদেশ থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির পরিমাণ দৈনিক ১০০ কোটি ঘনফুট কমিয়েছে সরকার। এর পাশাপাশি এই চাহিদা মেটাতে দেশীয় গ্যাস উত্তোলনের অংশ হিসেবে সরকারি সংস্থা পেট্রোবাংলা আগামী ৪০ মাসে ৪৬টি কূপ খনন করবে। এর মাধ্যমে দৈনিক উৎপাদন অন্তত ৫০ কোটি ঘনফুট বৃদ্ধি পাবে, আর এলএনজি আমদানি প্রায় অর্ধেকে নেমে আসবে বলে সরকার আশা করছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যে কূপ খননের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৌখিক সম্মতি পাওয়া গেছে। উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রস্তুত হচ্ছে, শিগগির তা পাস হবে। বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ড, সিলেট গ্যাসফিল্ড ও বাপেক্সের অধীনে থাকা গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে এই কূপ খনন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সরকারি তথ্য ও বিশেষজ্ঞদের ধারণা হচ্ছে, এসব কূপ খনন সরকারি সংস্থা বাপেক্স করলে প্রতিটিতে ৬০ থেকে ৮০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। আর ওয়ার্ক ওভার কূপ অর্থাৎ কূপ সংস্কারে বাপেক্সের ব্যয় হবে ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা। অন্যদিকে বিদেশি কোম্পানি কূপ খনন করলে পরবর্তীতে ব্যয় হবে ১৫০ থেকে ১৭৫ কোটি টাকা। যদিও ভোলায় বিনা দরপত্রে কাজ পাওয়া গাজপ্রম তিনটি কূপ খনন করছে, যার প্রতিটির ব্যয় ২৪০ কোটি টাকা।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর ওপর আমরা সব সময় জোর দিয়েছি। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর একবার জোর দেয়ায় তখন এক কোটি ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদন বেড়েছিল। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৪৬টি কূপ খনন ও নতুন করে অনুসন্ধান চালানো হবে। এতে গ্যাসের উৎপাদন বাড়তে পারে দৈনিক ৬০ কোটি ঘনফুট।’

তিনি বলেন, ‘সরকার দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে সব সময় তৎপর। প্রয়োজনে আমরা ডিপ ড্রিলিং করব। গভীর খনন করে আমাদের আর কি কি সুযোগ আছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। দেশীয় গ্যাস উত্তোলনে আমরা সর্বশক্তি নিয়োগ করব।’

তবে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, দেশীয় গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সের সক্ষমতা ব্যবহার করতে হবে। বাপেক্সের সক্ষমতা যেখানে নেই, কেবল সেখানে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে মানসম্মত কোম্পানিকে দিয়ে সাশ্রয়ীমূল্যে কূপ খনন করা যেতে পারে। তারা কোনোভাবেই জিটুজির মাধ্যমে নেদারল্যান্ডসে নিবন্ধিত গাজপ্রমের মতো কোম্পানিকে দিয়ে বিনা দরপত্রে কূপ খনন না করার পক্ষে মত দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, এতে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা ব্যাহত হবে, আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ জ্বালানি সহকারী ও বুয়েটের অধ্যাপক ম তামিম বলেন, তিন বছরে ৪৬টি কূপ খনন করার ক্ষমতা বাপেক্সের নেই। আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে সবচেয়ে যোগ্য কোম্পানিকে প্রতিযোগিতামূলক দামে কূপ খননের কাজ দিতে হবে। বিশেষজ্ঞ ও রিগ ভাড়া করেও কূপ খনন করা যেতে পারে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কূপ খননের কাজ গাজপ্রমকে দেয়া মানে সেটা দুর্নীতিরই নামান্তর। গাজপ্রমের নিজস্ব লোকবল নেই, তারা যে টেকনোলজি দিয়ে কাজ করছে সেটাও বাপেক্সসহ অন্যদের আছে। জিটুজি মানে হলো ওই টাকা সরকার দেবে, কিন্তু গাজপ্রম তো কোনো টাকা দিচ্ছে না, ফলে এটা করা যাবে না।

এর আগে ২০১০ সালে ৫ বছরে ১১২টি কূপ খননের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। সেবার ৭ বছরে ২০টির মতো কূপ খনন করা হয়। যার মধ্যে রাশিয়ার গাজপ্রমকে দিয়ে ১৭টি কূপ খনন করা হলেও সেগুলোর পাঁচটি বালি ও পানি উঠে বন্ধ হয়ে যায়। ওই বন্ধ কূপগুলো ফের বাপেক্সকেই সচল করতে হয়।

কী আছে নতুন পরিকল্পনায়

পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা দৈনিক বাংলাকে জানিয়েছেন, ‘আগামী ৪০ মাসে ৪৬টি কূপ খননের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বাপেক্সের অধীনে থাকা ক্ষেত্রগুলোতে ২০টি কূপ খনন করা হবে। এর মধ্যে সংস্কার কূপ বা ওয়ার্কওভার কূপ ২টি, অনুসন্ধান কূপ ৯টি ও উন্নয়ন কূপ ৯টি। চারটি কূপ খনন করা হবে শ্রীকাইলে, ভোলার নর্থে ৪টি, ভোলার শাহবাজপুরে ২টি এবং সেমুংতাং ২টি। বাকিগুলো ফেঞ্চুগঞ্জ, নোয়াখালীর চর জব্বারপুর, শরীয়তপুর ও জকিগঞ্জে। শুধু বাপেক্সের নিয়ন্ত্রণে থাকা ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে ২০টি কূপ খনন করলে ৪ বছরে অন্তত ২৮ কোটি লাখ ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়বে।

বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ড লিমিটেডের (বিজেএফসিএল) নিয়ন্ত্রণে থাকা ক্ষেত্রগুলোতে ৪ বছরে ১২টি কূপ খনন করা হবে। এতে গ্যাসের উৎপাদন বাড়বে ১৭ কোটি ৩০ লাখ ঘনফুট। দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্রের তিতাসে ৭টি কূপ খনন করা হবে। বাকি ৫টি খনন করা হবে বাখরাবাদ-১, কামতা-১ ও ২, মেঘনা ও হবিগঞ্জ-৬।

সিলেট গ্যাসফিল্ড কোম্পানি লিমিটেডের আওতায় থাকা ক্ষেত্রগুলোতে ১৪টি কূপ খনন করা হবে। এর মধ্যে সংস্কার কূপ রয়েছে ৮টি বাকি ৬টি অনুসন্ধান কূপ। কৈলাসটিলা, বিয়ানীবাজার, রশীদপুর ও সিলেট ক্ষেত্রগুলোতেও কূপ খনন করা হবে। এটি দেশের পুরোনো গ্যাসক্ষেত্র। এতে ১৬ কোটি ৪০ লাখ ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদনে বাড়বে।

এ ছাড়া রশীদপুর-১৪, কৈলাসটিলা-৯ ও বাতচিয়াতে-১ উত্তোলন কূপ এবং রশীদপুর-৭ ও কৈলাসটিলা ১/৩ দুটি ওয়ার্কওভার কূপ খনন করা গেলে অন্তত ৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাপেক্সের সক্ষমতা কতটুকু?

বাপেক্সের এই মুহূর্তে রিগ আছে ৬টি। এর মধ্যে ৪টি কূপ খননের রিগ ও দুটি ওয়ার্কওভার করার জন্য। এই রিগ দিয়ে এক বছরে অন্তত ১০টি কূপ খনন করা সম্ভব। বাপেক্সের প্রকৌশলীরা বলছেন, রিগের যে শিডিউল করা হয়েছে তাতে রিগ বিজয়-১২ দিয়ে এক বছরে শ্রীকাইল নর্থ-১/এ ও কৈলাসটিলা-৮ কূপ খনন করা সম্ভব।

এ ছাড়া রিগ বিজয় ১০, বিজয় ১২ ও বিজয় ১৮ রিগকে দিয়ে এক বছরে আরও ছয়টি কূপ খনন করা সম্ভব। এ ছাড়া বাপেক্সের আবিষ্কৃত ভোলা ও ভোলা নর্থে রাশিয়ার গাজপ্রমকে দিয়ে ৩টি কূপ খননের কাজ শুরু করা হয়েছে। বাপেক্স বিজিএফসিলের তিতাসে ২টি ও এসজিএফলের ৩টি কূপ খনন করার পরিকল্পনা নিয়েছে তাদের নিজস্ব রিগ দিয়ে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাপেক্স বছরে অন্তত ৮টি কূপ খনন করতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি যদি আরও ২টি রিগ ভাড়া করে আনে তা হলে বছরে আরও ৪-৫টি কূপ খনন করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে বাপেক্সকে পুরোনো অভিজ্ঞ লোকবল দিয়ে কূপ খননের দায়িত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি বিদেশ থেকে কূপ খননের জন্য প্রকৌশলীদেরও চুক্তিভিত্তিক ভাড়া করে আনা যেতে পারে।

বাপেক্সের ভূতত্ত্ববিদ ও প্রকৌশলীরা বলছেন, বিজিএফসিএল ও এসজিএফল কত দ্রুত তাদের কূপগুলো খননের উপযোগী করে রাখতে পারে তার ওপর নির্ভর করছে কাজ কত দ্রুত হবে।

গ্যাসের মজুত বাড়াতে আরও জরিপ

দেশীয় গ্যাসের মজুত জানতে দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক জরিপের বড় কার্য ক্রম নিয়েছে বাপেক্স। এর মধ্যে প্রায় ৪১০০ লাইন কিলোমিটার ত্রিমাত্রিক জরিপকাজ শেষ করেছে বাপেক্সের ত্রিডি টিম। ত্রিমাত্রিক এই জরিপ করতে বাপেক্সের প্রতি লাইন কিলোমিটারে খরচ হয়েছে ৮ লাখ টাকার মতো। আর দ্বিমাত্রিক জরিপে খরচ হয়েছে ২ লাখ টাকার মতো। সেখানে চীনের সিনোপ্যাককে দিয়ে ৩ হাজার লাইন কিলোমিটার জরিপ করা হচ্ছে। এর মধ্যে সিনোপ্যাক ত্রিমাতিক জরিপের জন্য গড়ে প্রায় ৩০ লাখ টাকা নিচ্ছে। আর দ্বিমাত্রিক জরিপের জন্য নিচ্ছে ৮ লাখ টাকা।

পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলছেন, বাপেক্সের ত্রিমাত্রিক জরিপের মাধ্যমেই ভোলা, বরিশালসহ দেশের বড় একটি অংশে নতুন রিজার্ভ চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে ভোলার গ্যাস বরিশাল হয়ে খুলনা অঞ্চলে পৌঁছে দিতে চায় সরকার। কারণ কুষ্টিয়া থেকে খুলনা পর্যন্ত ১৩০০ কোটি টাকার একটি পাইপ লাইন প্রকল্প শেষ করেছিল সরকার ২০১৭ সালে। তবে পর্যাপ্ত গ্যাস না থাকায় ওই পাইপে আর গ্যাস সরবরাহ করা হয়নি। ভোলা থেকে যদি বরিশাল হয়ে খুলনা পর্যন্ত গ্যাস পৌঁছে দেয়া যায় তা হলে এককালের শিল্পাঞ্চল হিসেবে খ্যাত খুলনা আবার প্রাণ ফিরে পাবে।

আছে নানা সমালোচনা

গ্যাসক্ষেত্রে অনুসন্ধান কূপ করার অর্থ হলো- সেখানে গ্যাস আছে কি না তা জানার জন্য কূপ খনন করা। আর উন্নয়ন কূপ হলো- নিশ্চিতভাবে গ্যাস আছে এটা জানার পর কূপ খনন করা। ৪৬টি কূপের মধ্যে ১৭টি কূপ আছে অনুসন্ধান কূপ। সেই ১৭ কূপে গ্যাস পাওয়া যাবে ৩০ কোটি ঘনফুটের মতো বলে হিসাবে দেখানো হয়েছে। এই বিষয়টি হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন ভূতত্ত্ববিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম।

কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, প্রতি ৩টি অনুসন্ধান কূপ খনন করলে একটিতে গ্যাস মেলার রেকর্ড আছে বাংলাদেশের। এটি দুনিয়ার মধ্যে অন্যতম ভালো পরিসংখ্যান। এখন ১৭টি কূপ খনন করলে ১৭টিই গ্যাস পাওয়া যাবে না, বড়জোর ৫-৬টিতে গ্যাস মিলবে। কিন্তু পেট্রোবাংলা ১৭টি অনুসন্ধান কূপেই গ্যাস মিলবে বলে প্রাক্কলন করেছে। এ থেকে বোঝা যায়, এদের হাইডো কার্বন সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা নেই। সরকারের উচিত পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সের মতো জায়গায় যোগ্য ও দক্ষ লোকগুলোকে বসানো।


টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ধান কাটতে এসে বজ্রপাতে দু’জন কৃষক নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার নোয়া বাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- দিনাজপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চৌদ্দপুর গ্রামের আব্দুল হোসেন ও আমির হোসেন। তারা দু’জন সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো ভাই।

স্থানীয়রা জানান, কালিহাতী উপজেলার নোয়াবাড়ি গ্রামের হযরত মিয়ার বাড়িতে ধান কাটার জন্য প্রায় সাতদিন ধরে অবস্থান করছেন তারা। পরে আজ সকালে ধান কাটার জন্য গেলে বজ্রপাতে সেখানে আব্দুল হোসেন ও আমির হোসেন মারা যান। পাশে অন্য জমিতে থাকা শ্রমিকরা তাদের উদ্ধার করে কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

কালিহাতী উপজেলার বীর বাসিন্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব মিয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছি। মৃত ব্যাক্তিদের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা আসলে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’

বিষয়:

২০ বছর ধরে রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহ

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৮ মে, ২০২৪ ০৪:১৪
খোরশেদ আলম, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী)

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আঁতাত করে কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী রোগীদের মধ্যে খাবার বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে টানা ২০ বছর ধরে ঠিকাদারি করে আসছে একই প্রতিষ্ঠান। এতে মানসম্মত খাবার সরবরাহ নিশ্চিত হচ্ছে না বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহের অভিযোগ অনেক বছরের। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি এ ধরনের অনিয়ম করে আসছে।

২০০৬ সালে নোয়াখালী সদর উপজেলার খান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জহির খান সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই হাসপাতালের খাদ্য সরবরাহের টেন্ডার নেন। পরে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে খাদ্য সরবরাহের পাওনা টাকার দাবিতে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টেন্ডার প্রক্রিয়া বন্ধ করে রেখেছে চক্রটি। যার কারণে মামলা চলাকালীন অবস্থায় একই প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এই হাসপাতালের রোগীদের নিম্নমানের খাদ্য সরবরাহ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নির্ধারিত পরিমাণের চাইতে কম খাবার দেওয়ার অভিযোগও করেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।

চিকিৎসা নিতে আসা সোনাইমুড়ীর মাহোতোলা এলাকার শাহজাহান বলেন, প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়ে গত দুই দিন ধরে ভর্তি হয়েছেন। তবে হাসপাতলে নিম্নমানের খাবার সরবরাহের কারণে বাইরে থেকে খাবার কিনে খেতে হয়। হাসপাতালে ১৪নং বেডে ভর্তি আছেন ৬০ বছরের আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে যে খাবার দেওয়া হয় তা মুখে নেওয়া যায় না। এ জন্য বাড়ি থেকে পাঠানো খাবার খান।

আরেক রোগীর নাম আবুল কালাম। বয়স ৭০ বছর। বুকে ব্যথা নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৬ নম্বর বেডে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে। সোমবার দুপুরে খাবার হিসেবে তাকে দেওয়া হয় লাউ ও মুরগির মাংস। খেতে না পেরে পাশেই খাবার প্লেট রেখে দিয়েছেন।

জানা যায়, একজন রোগীর খাবারের জন্য প্রতিদিন সরকারিভাবে ১৭৫ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। তবে নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করায় তা খেতে পারেন না অধিকাংশ রোগী। অনেকেই খাবার না খেয়ে ফেলে দেন। আবার কেউ কেউ হাসপাতাল থেকে খাবার না নিয়ে বাড়ি থেকে এনে খান।

দরপত্র অনুযায়ী একজন রোগীর সকালের জন্য প্রতিদিন রুটি, একটি কলা, একটি ডিম ও ২৫ গ্রাম চিনির জন্য মোট ৩৬ টাকা ২৫ পয়সা বরাদ্দ রয়েছে। দুপুরে ও রাতে চিকন চালের ভাত, কারফু বা রুই মাছ, খাশি বা ব্রয়লার মুরগির মাংস, মুগডাল, ফুলকপি, গোল আলু, শিম ও পটলসহ সর্বমোট ১৭৫ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাবার সরবরাহে মোটা চাল, নিম্নমানের কলা, রুটি সরবরাহ করা হয়। অধিকাংশ রোগীই মোটা ভাত খেতে পারেন না।

সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আবুল খায়ের অভিযোগ করে জানান, এ হাসপাতালে প্রধান কর্মকর্তা, আরএমওর যোগসাজশে রোগীদের খাদ্য সরবরাহে অনিয়ম হচ্ছে। প্রতিদিন রোগীদের খাদ্য পরিমাপ করা হয় না, মান যাচাইও করে না। মাসে মাসে এসব কর্মকর্তাদের নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিয়েই ম্যানেজ করে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। আর বাবুর্চি নিম্নমানের তৈল, মসলা দিয়েই রান্না করছে এসব খাদ্য। ঠিকাদার এখানে তেমন আসেনও না। লোকজন দিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করেন।

সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাবুর্চি ওহিদুল আলম জানান, মাইজদী থেকে খান নামক একটি প্রতিষ্ঠান গত ২০ বছর ধরে রোগীদের খাবার সরবরাহ করে আসছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাওনা টাকার দাবিতে একটি মামলা থাকায় টেন্ডার হচ্ছে না। মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য কারও মাথাব্যথা নেই। ফায়েদা লুটতে একটি গ্রুপ টেন্ডার হতে দেয় না। তাকে যা দেওয়া হয় তা দিয়েই তিনি খাবার রান্না করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান খান গ্রুপের স্বত্বাধিকারী জহির খান জানান, রোগীদের সিডিউল মোতাবেক খাবার সরবরাহ করেন। হাসপাতালের ডাক্তাররা তা তদারকি করেন। বকেয়া পাওনা থাকায় আদালতে মামলা রয়েছে, বিধায় টেন্ডার হচ্ছে না।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘খাদ্য সরবরাহের কোনো অনিয়ম নেই। যদি কোনো অভিযোগ পান তাহলে আমাদের জানান। তবে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০ বছর ধরে খাদ্য সরবরাহ করছে এটা সত্য।’

নিম্নমানের খাবার ও দীর্ঘদিন টেন্ডার প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার বিষয়ে প্রতিবেদকের কথা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইসরাত জাহানের সঙ্গে। তিনি ফোনে বলেন, যে খাবার দেওয়া হয়, তা নোয়াখালী জেলার অন্য সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ভালো। এখানে ওজন মেপে খাবার দেওয়া হয়। মামলা থাকায় টেন্ডার বন্ধ রয়েছে।’

নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, ‘রোগীদের খাবার সরবরাহে অনিয়ম রয়েছে, তা জানা নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’


কুমিল্লায় আলুর হিমাগারে মিলল ২১ লাখ ডিম

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লায় একটি আলুর হিমাগারে মিলল অবৈধভাবে মজুত করে রাখা ২১ লাখ ডিম ও ২৪ হাজার কেজি মিষ্টি। বিষয়টির খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষকে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

ওই কোল্ড স্টোরেজে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ওই কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লার লালমাই বরল-বাগমারা এলাকায় অবস্থিত মেঘনা কোল্ড স্টোরেজে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. আছাদুল ইসলাম।

আছাদুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা কোল্ড স্টোরেজে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দেখা যায় কোল্ড স্টোরেজটিতে অবৈধভাবে ২১ লাখ ডিম এবং ৮০০ ড্রাম মিষ্টি যার আনুমানিক ওজন প্রায় ২৪ হাজার কে‌জি ও মিষ্টির সিরা মজুত করে রাখা হয়েছে।

আছাদুল বলেন, ‘এক‌টি আলুর কোল্ড স্টোরেজে এমন বিপুল ডিম ও মিষ্টি মজুত করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এ ছাড়া কোল্ড স্টোরেজ প‌রিচালনায় কৃ‌ষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে কৃ‌ষি পণ্য মজুতের লাইসেন্স প্রয়োজন হলেও কর্তৃপক্ষ সে‌টি দেখাতে ব্যর্থ হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘কৃ‌ষি বিপণনের লাইসেন্স না নিয়ে কোল্ড স্টোরেজ প‌রিচালনা এবং অবৈধভাবে বিপুল সংখ্যক ডিম ও মিষ্টি মজুত করায় কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কৃ‌ষি বিপণন আইন ২০১৮-এর দু‌টি ধারায় ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব পণ্য বাজারজাত করতে লি‌খিত অঙ্গীকারনামা নেওয়া হয়।’

এ ছাড়া কৃ‌ষি বিপণন কর্মকর্তাকে মনিটরিং করে বিষয়‌টি নি‌শ্চিত করে প্রতিবেদন দা‌খিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সময়ে আলুর কোল্ড স্টোরেজে অবৈধ প্রক্রিয়ায় মিষ্টি সংরক্ষণ করায় বিষয়‌টি ভোক্তা অধিকার বিরোধী কাজ হিসেবে আমলে নিয়ে চার মিষ্টি ব্যবসায়ীকে ৬০ হাজার টাকা জ‌রিমানা করা হয়।

মোবাইল কোর্ট প‌রিচালনা করেন, কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান শাওন। অভিযানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. আছাদুল ইসলাম উপ‌স্থিত ছিলেন।


কেএনএফের ১৫ সদস্য রিমান্ড শেষে আবারও কারাগারে

আটক হওয়া কয়েকজন সন্দেহভাজন কেএনএফ সদস্য। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১৭ মে, ২০২৪ ১৯:১৬
সারা বাংলা ডেস্ক

বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংক ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণসহ পুলিশের অস্ত্র লুটপাট ও মসজিদে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ১৫ সদস্যকে দুই দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে আনা হলে শুনানি শেষে তাদেরকে আবারও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার বান্দরবান সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. নুরুল হক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে দুপুরে ১৫ আসামিকে কঠোর পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে বান্দরবান চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) প্রিয়েল পালিত। তিনি জানান, রুমা ও থানচি থানার মামলায় ১৫ আসামিকে ২ দিনের রিমান্ড শেষে দুপুরে আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে আদালত ১৫ আসামিকে আবারও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ২ এপ্রিল রাতে এবং ৩ এপ্রিল দুপুরে বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় সশস্ত্র কেএনএফ সদস্যরা। তারা টাকা লুট করে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে, একজন ব্যাংক ব্যবস্থাপককে অপহরণ করে নিয়ে যায়; টাকার পাশাপাশি লুট করে বেশ কিছু অস্ত্র ও গুলি। এই ঘটনায় রুমা থানায় ৫টি এবং থানচি থানায় ৪টি মামলা দায়ের করা হয়। এরপরই অভিযানে নামে যৌথবাহিনী। এ পর্যন্ত মোট ৯টি মামলায় ৮৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।

বিষয়:

বেনাপোল বন্দরে ৫ দিন বন্ধ থাকবে আমদানি-রপ্তানি

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

ভারতের লোকসভা নির্বাচন, বুদ্ধ পূর্ণিমা ও বাংলাদেশে যশোরের শার্শা উপজেলায় নির্বাচনের কারণে আগামীকাল শনিবার থেকে আগামী বুধবার পর্যন্ত ৫ দিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে।

লোকসভা নির্বাচন কারণে ১৭ মে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামী ২০ তারিখ সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত সরকার।

বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপারে বিধিনিষেধের এ তিন দিনে বাংলাদেশ থেকে নতুন কোনো যাত্রী ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন না, তবে মেডিক্যাল ভিসা বা ইমার্জেন্সি ভিসা নিয়ে কোনো যাত্রী যেতে চাইলে সে ভারতে প্রবেশ করতে পারবে। বাংলাদেশে অবস্থানকারী ভারতীয় যাত্রীরা এ তিন দিনে ভারতে প্রবেশ করতে পারলেও ভারতে অবস্থানকারী বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রীরা বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারবে না। ২১ তারিখ সকাল থেকে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।

বেনাপোল চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতীয় চেকপোস্ট থেকে একটি পত্রের মাধ্যমে লোকসভা নির্বাচনের কারণে তিন দিন যাত্রী পারাপার বিধিনিষেধের বিষয়ে জানতে পেরেছি। এ তিন দিনে নতুন কোনো যাত্রী ভারতের প্রবেশ করতে পারবেন না, তবে বাংলাদেশে অবস্থানকারী ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রীরা ভারতে ফিরে যেতে পারবেন এবং যে সব বাংলাদেশিরা মেডিক্যাল ভিসা বা ইমার্জেন্সি ভিসা নিয়ে ভারতে যেতে চায়, তারাই বন্ধের তিন দিনে ভারতে যেতে পারবেন।’

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম জানান, ভারতীয় লোকসভা নির্বাচন, বুদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি ও শার্শা উপজেলায় উপজেলা নির্বাচনের কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে, তবে এ কয়দিন বেনাপোল বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে।

আগামী বৃহস্পতিবার থেকে পুনরায় দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু হবে বলে তিনি জানান।

বিষয়:

চবির ঝরনায় নিখোঁজ স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার

চবি ঝরনায় গোসল করতে নামা শিক্ষার্থী জুনায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চবি প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ক্যাম্পাসের ‘নিষিদ্ধ’ ঝরনায় গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়া স্কুলছাত্র জুনায়েদ হোসেনের (১৩) মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহত জুনায়েদ হোসেন হাজী মহসিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝরনা থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। আমরা মরদেহটি হাটহাজারী মডেল থানায় পাঠিয়েছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, চট্টগ্রাম শহরের প্রবর্তক বিদ্যালয় ও হাজী মহসিন বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের একটি দল ঘুরতে যায় চবিতে। দুপুর ১২টার দিকে তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝরনায় গোসল করতে নামে। কিছুক্ষণ পর থেকে তাদের একজন কে খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন অন্যান্যরা মিলে ঝরনা ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করেও জুনায়েদকে পান না। পরবর্তীতে তার বড় ভাই ও বাবা ক্যাম্পাসে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জুনায়েদের নিখোঁজ হওয়ার কথা জানান। সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঝরনায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ডুবে যাওয়া স্কুলছাত্র জুনায়েদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত জুনায়েদের বন্ধু ইকরাম হসেন রিমন বলে, ‘আমরা দুই স্কুলের বন্ধুরা মিলে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ জন ঘুরতে আসি। ১২টার দিকে ঝরনায় গোসল করতে নামে সবাই। আমি ড্রেস চেঞ্জ করে সবার শেষে পানিতে নামি। তখন জুনায়েদকে না দেখে জিজ্ঞেস করলে অনেকেই বলে আশেপাশে আছে হয়তো। পরে অনেকক্ষণ খুঁজে না পেয়ে আমরা চলে যাই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র বলেন, ‘বাচ্চাটি দুপুরে নিখোঁজ হয়, কিন্তু তার বন্ধুরা আমাদের কিছু জানায়নি। বিকেলের দিকে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানায়। আমরা দ্রুত ফায়ার সার্ভিসে কল দিলে তারা এসে ঝরনায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে। আড়াই ঘণ্টা অভিযানের পর তার মরদেহটি খুঁজে পাওয়া যায়।’

তিনি বলেন, ‘প্রায় প্রতি বছরই এখানে দুই একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। এ এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। সেখানে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।’


কুমিল্লায় বাস উল্টে ৫ যাত্রী নিহত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বসন্তপুর এলাকায় আজ শুক্রবার ভোরে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বসন্তপুরে একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে উল্টে গেছে। এ ঘটনায় বাসের পাঁচজন যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আনুমানিক ১৫ জন। আজ শুক্রবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ত্রিনাথ সাহা তন্ময়।

হাইওয়ে পুলিশের মিয়াবাজার ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী রিলাক্স পরিবহন নামের বাসটি বসন্তপুর পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে যায়। আহতদেরকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, ‘আমরা ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠাই। পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় গাড়ির ভেতর থেকে নিহত পাঁচ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।


অধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

আপডেটেড ১৭ মে, ২০২৪ ১০:৫০
শফিকুল ইসলাম জয়, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল)

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের জারি করা পরিপত্রের বিধি লঙ্ঘন করে স্বজনপ্রীতি ও বিধিবহির্ভূতভাবে পছন্দের একজনকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পৌরনীতি ও সুশাসন বিষয়ের প্রভাষক মো. জিল্লুর রহমান। নিয়োগ পাওয়া ওই অধ্যক্ষের নাম সোহেল রানা খান। তিনি বাংলা বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। বিধিবিধানবহির্ভূত নিয়োগ পেয়েও নিয়মিত তুলছেন বেতন–ভাতা। এতে শিক্ষা বোর্ডের নেই কোন নজরদারি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ২০ জানুয়ারি পৌরনীতি ও সুশাসন বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন মো. জিল্লুর রহমান। যোগদানের পর সাংগঠনিক কমিটির রেজুলেশনের মাধ্যমে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি। তার উপর অর্পিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব ২০১০ সালের ১৭ মে পর্যন্ত পালন করেছেন। ওই বছরের ১৮ মে ব্যক্তিগত সমস্যার কারণ দেখিয়ে তিনি অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। পরে ২০১০ সালের ১৮ মে পরিচালনা পর্ষদ ওই কলেজের অর্থনীতি বিষয়ের প্রভাষক সোহেল রানা খানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। পরে সোহেল রানা খানকে অব্যাহতি দিয়ে ৫ নম্বর ক্রমিকের বাংলা বিষয়ের প্রভাষক মো. নজরুল ইসলামকে ২০১৯ সালের ৮ মার্চ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন।

তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলামকে তার দায়িত্ব থেকে কবে অব্যাহতি দেন এ সম্পর্কিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সোহেল রানা খানকে পরিপত্রের বিধি লঙ্ঘন করে সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হয় অধ্যক্ষ হিসেবে।
সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৫ মার্চ জারি করা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশিদ স্বাক্ষরিত পরিপত্রের ‘খ’ অংশে বলা আছে– উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের অধ্যক্ষ হতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থিকে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ অথবা উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের অধ্যক্ষ অথবা ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ পদে এমপিওভুক্ত হিসেবে কর্মরত অথবা এমপিওভুক্ত সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে নূন্যতম ৩ বছরের অভিজ্ঞতাসহ মোট (১২) বার বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

অন্যদিকে কলেজের সংরক্ষিত নথিপত্র থেকে জানা যায়, ধলাপাড়া কলেজ এমপিওভুক্ত হয় ২০১৯ সালের ১ জুলাই। আর সোহেল রানা খান ২০০৫ সালের ২২ জানুয়ারিতে অর্থনীতি বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। অর্থাৎ তিনি কলেজের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেওয়ার সময় ওই কলেজ এমপিওভুক্ত হয়নি। অন্যদিকে ধলাপাড়া কলেজ হলো সোহেল রানা খানের প্রথম কর্মস্থল। তিনি অন্য কোনো কলেজে অধ্যক্ষ কিংবা উপাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নি। সুতরাং অধ্যক্ষ হিসেবে তার নিয়োগের ক্ষেত্রে পরিপত্রের ‘খ’ অংশের সব শর্ত লঙ্ঘন করেছেন। তবুও নিয়মিত তুলছেন বেতন–ভাতা।

অভিযোগকারী ধলাপাড়া কলেজের পৌরনীতি ও সুশাসন বিভাগের প্রভাষক সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘অধ্যক্ষ তার খেয়ালখুশি মতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন। পরিচালনা পরিষদের স্বজনপ্রীতি ও বিধিবহির্ভূতভাবে পছন্দের ব্যক্তিকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।’ এর সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তার। এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সোহেল রানা খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিধিবিধান মেনেই আমাকে পরিচালনা পর্ষদ অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এ নিয়ে আনিত সব অভিযোগ মিথ্যা।’

কোনো নিয়মের বিধানে সোহেল রানা খানকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে– এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ববিন হায়দার চৌধুরী সাদী। তার ভাষ্য, ‘সব নিয়মকানুন মেনে বিধি মোতাবেক অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগকারী ওই শিক্ষকের নিয়োগই ঠিক নেই। তিনি অহেতুক খোঁচাখোঁচি করছেন।’ এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরতিজা হাসান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিধি মোতাবেক তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সনদহীন চিকিৎসকের ‘খোলা চেম্বারে’ অস্ত্রোপচার

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয়ধারী এস এম মারুফ হোসেন।
আপডেটেড ১৭ মে, ২০২৪ ০৩:৩৩
আওয়াল শেখ, খুলনা ব্যুরো

নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি বা চিকিৎসাসেবা দেওয়ার অনুমতি। তবুও শহরের মধ্যে রয়েছে নিজস্ব চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র (চেম্বার)। সেখানে বসে শুধু রোগীদের পরামর্শ দেওয়া নয়, নোংরা পরিবেশে অহরহ অস্ত্রোপচারও করেন। বারবার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অভিযানে দণ্ড আরোপ করা হলেও, ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি প্রতারণা করে আসছেন। একাধিক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয়ধারী ওই ব্যক্তি হলেন এস এম মারুফ হোসেন।

খুলনা শহরের জনবহুল এলাকা শান্তিধাম মোড়ের কাছে ইসলামপুর রোডে রয়েছে ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার। ওই ভবনের নিচতলায় ডান পাশের অংশেই মারুফ হোসেনের ব্যক্তিগত চেম্বার। চেম্বারে রয়েছে একটি ছোট শয্যা। তাতে সারি সারি সাজানো অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম।

গ্যারান্টিসহকারে তিনি সেখানে পাইলস ও নাকের পলিপাসের অস্ত্রোপচার করেন। সেই সঙ্গে রোগীদের পরামর্শ দেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে।

তার প্রেসক্রিপশনে নামের আগে লেখা রয়েছে ডা. (ডাক্তার)। বিশেষজ্ঞ হিসেবে লেখা রয়েছে, পাইলস ও নাকের পলিপাস স্পেশালিস্ট (মেডিসিন)। ডিগ্রির তালিকায় রয়েছে ডিএইচএমএস (ঢাকা) ও বিএসএএম (কলকাতা)। যদিও ডিএইচএমএস হলো বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের একটি ডিপ্লোমা ডিগ্রি ও বিএসএএম ডিগ্রির কোনো স্বীকৃতি বাংলাদেশে নেই।

ওই যোগ্যতা নিয়ে নামের আগে ডা. লেখার কোনো বৈধতা নেই বলে জানিয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মো. নিয়াজ মুস্তাফি চৌধুরী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) আইন মোতাবেক ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রি প্রাপ্তরা ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। এ ছাড়া বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধন ছাড়া কেউ চিকিৎসাসেবাও দিতে পারবেন না।

রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে গত ২৩ এপ্রিল এস এম মারুফ হোসেনের চেম্বারে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। সেখানে তারা খুঁজে পান রোগীকে অজ্ঞান করার ওষুধ লিডোকেইন।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. শেখ আওরঙ্গজেব প্রিন্স বলেন, শরীরের ছোট ছোট অংশে অস্ত্রোপচারে আগে সংবেদন হারানোর জন্য লিডোকেইন ব্যবহার করা হয়। তবে এর ব্যবহারের একটি নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে। রোগীর বয়স, ওজন ও মানসিক অবস্থাসহ কয়েকটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে ওষুধের মাত্রা নির্ধারণ করতে হয়, যা অ্যানেসথেশিয়া বিশেষজ্ঞ ছাড়া কখনই সম্ভব নয়। এর সঠিক প্রয়োগ না হলে রোগীর জীবন ঝুঁকিসহ অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে।

ওই অভিযানটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ভোক্তা-অধিকারের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মতো তার কাছে ন্যূনতম কোওনা কাগজপত্র নেই। এমনকি একটি চেম্বার করতে গেলে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হয়, সেটিও তার কাছে নেই। তারপরও তিনি অ্যানেসথেশিয়ার মতো জটিল ওষুধ রোগীকে পুশ করতে অস্ত্রোপচার করেন। এসব অপরাধের দায়ে তাকে ভোক্তা-অধিকারের ৪৫ ও ৫১ ধারা অনুযায়ী ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

তবে ভোক্তা অধিকারের সেই অভিযানের পর তিন দিনের জন্য বন্ধ ছিল ওই চেম্বারটি। পরে আবারও যথারীতি রোগীদের সঙ্গে তিনি প্রতারণা শুরু করেছেন।

তার চেম্বারের কাছেই ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবসা করছেন মো. তালেব। তিনি বলেন, এই ব্যক্তিকে আগেও দণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে জেল বা জরিমানা দেওয়ার পর কয়েক দিন আড়ালে থেকে আবারও তিনি রোগী দেখা শুরু করেন। এভাবেই তিনি প্রচুর টাকার মালিক।

তার কাছে চিকিৎসা নিয়ে প্রতারিত হয়েছেন এমন একাধিক রোগীর সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। এর মধ্যে একজন হলেন আলীম উদ্দীন।

তিনি বলেন, ‘আমি পাইলসের চিকিৎসার জন্য তার কাছে গিয়েছিলাম। তখনি তিনি আমাকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। পরে আমাকে রোগমুক্ত করার গ্যারান্টি দিয়ে অপারেশন করেন। তবে অপারেশনের ৫ দিন পরে আমার মলদ্বার থেকে রক্ত ক্ষরণ শুরু হয়। তখন তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে, আমাকে অন্য হাসপাতালে যেতে বলেন। পরে আমি একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পুনরায় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হই।’

তিনি বলেন, পরবর্তীতে অন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, তিনি আমার পাইলসের অস্ত্রোপচারের জন্য এক ধরনের অ্যাসিড ব্যবহার করেছিলেন। যার কারণে রক্ত ক্ষরণ হয়েছিল।

এ ধরনের চিকিৎসার ফলে রোগীর জীবন বিপন্ন হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মো. নিয়াজ মুস্তাফি চৌধুরী। তিনি বলেন, পাইলসের চিকিৎসায় অ্যাসিড ব্যবহার করলে, সেখান থেকে পরবর্তীতে রক্তক্ষরণসহ অন্যান্য রোগ সৃষ্টি হতে পারে। এমন কি ক্যান্সারের মতো জটিল রোগ সৃষ্টি হয়ে রোগীর জীবন বিপন্ন করে দিতে পারে। তাই চিকিৎসা নেওয়ার আগে চিকিৎসকের মান যাচাই করে নেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসক পরিচয়ধারী এস এম মারুফ হোসেন বলেন, ‘ভাই আমি ডাক্তার হিসেবে খারাপ না। তবে আমার সনদ একটু কম আছে, তাই বারবার জরিমানা দিতে হয়। অভিযানে এসে আমার এই কাগজ নেই, সেই কাগজ নেই বলে বলে দণ্ড আরোপ করে। তবে রোগীরা আমার সেবায় সন্তুষ্ট হয়।’

চিকিৎসাসেবায় এ ধরনের প্রতারণা নির্মূলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভূমিকা জানতে চাইলে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মনজুরুল মুরশিদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের সহায়তায় আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর অভিযান শুরু করা হবে।’


নীলফামারীতে অটো চালক হত্যা, গ্রেপ্তার ৩

আপডেটেড ১৬ মে, ২০২৪ ২২:০৯
নাসির উদ্দিন শাহ মিলন, নীলফামারী

নীলফামারীতে ছাপিনুর রহমান (৫০) নামে এক অটো চালকে গলা কেটে হত্যা ও অটো রিক্সা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার কুন্দপুকুর ইউনিয়নের মধ্য সুটিপাড়া ফুলতলা এলাকার মজিবুল হকের ছেলে মোঃ রাসেল মিয়া (২২), উত্তর হাড়োয়া পঞ্চপুকুর এলাকার মৃত মজির আলীর ছেলে ফেরদৌস আলম (৩৫) ও নীলফামারী পৌরসভার বাড়াই পাড়া এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে জলিল ইসলাম ইসলাম ওরফে পিনিক বাবু (৩০)।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার গোলাম সবুর পিপিএম।

পুলিশ সুপার গোলাম সবুর জানান, 'গত ১২ মে রাত ১২টার দিকে ঘাতকরা যাত্রি সেজে ছাপিনুরের অটো রিক্সাতে উঠে জনশূন্য রাস্তায় নিয়ে যায়। এরপর তাকে পৌর শহরের ধনি পাড়া তিস্তা সেচ ক্যানেল এলাকায় নিয়ে গিয়ে পার্শ্ববর্তী ভুট্টা ক্ষেতে গলা কেটে ফেলে দিয়ে অটো রিক্সা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ছাপিনুরের গোঙানির শব্দে স্থানীয় লোকজন টের পেলে তাকে উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থানান্তর করলে পথিমধ্যে মৃত্যুবরণ করে ছাপিনুর।'

গোলাম সবুর আরও বলেন, 'এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘাতকদের ধরতে তিন থেকে চারটি টিম অভিযান শুরু করে। তারই প্রেক্ষিতে ছিনতাইকৃত অটোসহ ঘাতক রাসেল মিয়াকে ঢেলাপির থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ফেরদৌস ও জলিলকে গাছবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।'

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আমিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নীলফামারী সার্কেল) মোস্তফা মঞ্জুর পিপিএম, প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএম মনজুরুল আলম সিয়াম, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তানভীরুল ইসলামসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা বিশ্বে রোল মডেল হবে: ইসি

যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের সঙ্গে আচরণবিধি ও অন্যান্য বিষয়ে মতবিনিময়কালে ইসি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.) বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা একসময় বিশ্বে রোল মডেল হবে। প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে সারা দেশে গড়ে ৩৬ শতাংশ ভোটার এসেছে। এটিকে কম বলব না। ধান কাটার মৌসুম, গরম ও ভোটারদের প্রার্থী দেখে পছন্দ হয়নি বলেই ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কমেছে। তবে এ অবস্থা উন্নতির দিকে যাচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে যশোর, মাগুরা ও নড়াইল জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে আচরণবিধি ও অন্যান্য বিষয়ে মতবিনিময় সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, নির্বাচনে কোনো প্রার্থী যদি সন্ত্রাসীকর্মকাণ্ড বা কোনো ঝামেলা করার চেষ্টা করে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হবে। একই সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষকদেরও ছাড় দেওয়া হবে না। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদরা ভোটারদের কাছে যেতে পারছেন। আর এ যাওয়ার পরিবেশ তৈরি করতে পেরেছে নির্বাচন কমিশন। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ এবং উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর হয়েছে। সামনের নির্বাচনগুলো আরও ভালো হবে।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, এই কমিশন সাংবাদিকদের সুরক্ষায় আইন করেছে। নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করার সময় কেউ যদি সাংবাদিকদের আহত কিংবা ক্যামেরা ভাঙচুর করে তাহলে তার শাস্তি হবে। তবে, নির্বাচনের সময় কিছু মৌসুমি সাংবাদিক হাজির হয়। তারা কারও পক্ষে, আবার কারও বিপক্ষে প্রচার-অপপ্রচার করে। এ বিষয়টির প্রতিও আমাদের লক্ষ রাখতে হবে।

তিনি নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের প্রেসক্লাবের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে সাংবাদিকদের পাস দেওয়ার নির্দেশনা দেন।

উপজেলা নির্বাচনে এমপিদের ভূমিকার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, এমপিরা কেবল ভোট দিতে পারবেন। তারা কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন না।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, যশোর নির্বাচন কর্মকর্তা আনিছুর রহমান প্রমুখ।

বিষয়:

১৫৭ উপজেলায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে দেশের ৬৩ জেলার ১৫৭ উপজেলায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ২১ মে নির্বাচনে অনিয়ম বন্ধে এসব ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের আগে-পরে ৫ দিন কাজ করবে।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আইনশাখার উপসচিব আব্দুস সালাম এ সংক্রান্ত চিঠি সংশ্লিষ্টদের পাঠিয়েছেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ৬৩টি জেলার ১৫৭ উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য ভোটের আগের দুইদিন, ভোটের দিন ও ভোটের পরের দুইদিন অর্থাৎ ১৯-২৩ মে পর্যন্ত ১৫৭ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

চিঠি সূত্রে আরও জানা গেছে, এসব ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ২০১৩ এর বিধি ৮৪ক- তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নির্বাচনী অপরাধ আমলে নিয়ে সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচার করবেন। এক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালনের সময় ১ জন বেঞ্চ সহকারী, স্টেনোগ্রাফার এবং অফিস সহকারীকে নিজের সহকারী হিসেবে সঙ্গে নিতে পারবেন। একইসঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় যানবাহন সরবরাহ করতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসককেও বলা হয়েছে।

ম্যাজিস্ট্রেটরা সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় আদালত পরিচালনার জন্য ২ জন সশস্ত্র পুলিশও পাবেন।

প্রসঙ্গত, ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত ৮ মে প্রথম ধাপের ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের ১৫৭ উপজেলার ভোটগ্রহণ আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে। তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৫ জুন ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে।

বিষয়:

নেত্রকোণায় বিল থেকে স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নেত্রকোণা প্রতিনিধি

নেত্রকোণা পূর্বধলায় আকিব হাসান মাহিন নামে এক স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি পূর্বধলা জগৎমনি পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের একজন ছাত্র।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে পূর্বধলার থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মরদেহটি উদ্ধার করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল বুধবার উপজেলার রাজধলা বিলের উত্তর পশ্চিম কোণে মেহগনি বাগানে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে আসে রাজপাড়া গ্রামের ফারুক আহমেদ ওরফে কাশেমের ছেলে আকিব হাসান মাহিন (১৭)। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন উপজেলা শহরের সোহেল রানার ছেলে আবির ও তার বন্ধু সাইমন। বেলা ৫টার দিকে সাইমন এবং আবির দুইজন ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। কিন্তু মাহিন রাত ১০টা পর্যন্ত বাসায় না ফিরলে তার স্বজনরা রাত ভর তাকে খোঁজাখুজি করেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তার স্বজনরা রাজধলা বিলের উত্তর পশ্চিম কোণে মাহিনের পরিহিত জামা ও ব্যাবহৃত মোবাইল দেখতে পান। স্থানীয় লোকজন এবং তার স্বজনরা অনুমান করেন মহিনের মৃতদেহ বিলে থাকতে পারে। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করেন। এ সময় পূর্বধলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে নেত্রকোণা জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বিষয়:

banner close