সোমবার, ২৭ মে ২০২৪

ঋণের টাকা তুলে উধাও কম্পিউটার অপারেটর

সুন্দরগঞ্জ শিক্ষা অফিস। ছবি: দৈনিক বাংলা
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৫ অক্টোবর, ২০২২ ০৮:০৭

পিয়ারুল ইসলাম, গাইবান্ধা

জালিয়াতির মাধ্যমে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাত সহকারী শিক্ষকের সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিল (জিপিএফ) থেকে মোটা অঙ্কের টাকা তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের বিরুদ্ধে। ঋণ হিসেবে টাকা তুলে আত্মসাতের ঘটনাটি জানাজানির পর অভিযুক্ত কম্পিউটার অপারেটর আবু বক্কর সিদ্দিক গা ঢাকা দিয়েছেন।

জানা যায়, জালিয়াতির মাধ্যমে গত বছরের ডিসেম্বরে সাত শিক্ষকের সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিল, অবসর ভাতার ফান্ডের ব্যাংক হিসাব নম্বর থেকে ৯ লাখের বেশি টাকা ঋণ তুলে নেয়ার ঘটনা ঘটে।

ঋণের জন্য শিক্ষকরা আবেদন না করলেও সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড সুন্দরগঞ্জ এবং পাঁচপীর শাখা থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৬৪ হাজার এবং সর্বনিম্ন ৬৬ হাজার টাকা পর্যন্ত তুলে নেয়া হয়। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা।

অভিযোগে বলা হয়, সহকারী শিক্ষক স্বপ্না রানী, রহিমা বেগম, আতাউর রহমান, শামছুন্নাহার বেগম, মাসুদা বেগম, হাজেরা বেগম ও আনিছুর রহমান- এই সাতজন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ধোপাডাঙ্গা, কালীর খামার, দক্ষিণ রাজিবপুর, পূর্ব বজরা হলদিয়া পুঁটিমারী, নতুন দুলাল ভরট, পুঁটিমারী ও চণ্ডীপুর ২নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।

তাদের নামের বিপরীতে মোট ৯ লাখ ১৯ হাজার টাকা তুলে নেয়া হলেও কিছুই জানা নেই তাদের। ঋণের টাকার জন্য তারা শিক্ষা অফিসে কোনো দিন আবেদনও করেননি। এমনকি তাদের হিসাব নম্বরে কোনো টাকাও আসেনি।

দক্ষিণ ধোপাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক স্বপ্না রানী রায় বলেন, ‘গত ৪ সেপ্টেম্বর আমার অ্যাকাউন্ট থেকে ১৩ হাজার ২০০ টাকা কাটা হয়। পরে ট্রেজারি অফিসে গিয়ে দেখি, আমার জিপিএফ ফান্ড থেকে ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ঋণ নেয়া হয়েছে। অথচ এই ঋণের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।’

ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষক রহিমা বেগম বলেন, ‘আমার স্বাক্ষর ছাড়া আমার নামে কীভাবে ঋণ মঞ্জুর হয়? এই জালিয়াতির ঘটনা আবু বক্কর একা কখনো করতে পারেন না। এর সঙ্গে শিক্ষা অফিসার সরাসরি জড়িত।’

এদিকে জালিয়াতির এই ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে শিক্ষক সমাজ। ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত আবু বক্কর সিদ্দিকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিসার এ কে এম হারুন-উর-রশিদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। তা ছাড়া এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে গত রোববার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সামনে সড়কে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন কর্মসূচিও পালন করে উপজেলার শিক্ষক সমাজ। পরে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে একটি স্মারকলিপি দেন।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমাজ কমিটি সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কমিটির সভাপতি রাশেদুল ইসলাম যুতি বলেন, ‘দ্রুত এই জালিয়াতির ঘটনার সমাধান না এলে আমরা আন্দোলনে নামব।’

এদিকে জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণের টাকা তুলে নেয়ার ঘটনা জানা নেই সংশ্লিষ্ট শাখার ব্যাংক কর্মকর্তাদের। এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগও করেননি বলে জানান সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আব্দুল হাদী।

আর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম হারুন-উর-রশিদ টাকা জালিয়াতিতে তার যোগসাজশের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, ‘এমন ঘটনা কখনো কাম্য নয়। দ্রুত এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করে দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’


ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ১০

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারা বাংলা ডেস্ক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে মোট ১০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। উপকূলীয় ছয়টি জেলায় তাদের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে পটুয়াখালীতে তিনজন, ভোলা ও বরিশালে দুইজন এবং সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় একজন করে মারা গেছেন।

আজ সোমবার ভোরে বরিশাল নগরীর রূপাতলী এলাকায় বহুতল ভবনের দেয়াল ধসে দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন একজন।

পুলিশ জানিয়েছে, চারজন রেন্টুরেন্টে অবস্থান করছিলেন। বাতাসের তীব্রতায় আকস্মিক পাশের চারতলা ভবনের একটি অংশের দেয়াল ধসে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন হোটেল মালিক লোকমান ও কর্মচারী মোকছেদুল। আহত হন কর্মচারী সাকিব। তাকে শের-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।

রেমালের তাণ্ডবে ভোলায় মারা গেছেন শিশুসহ দুইজন। এর মধ্যে বসতঘরে চাপা পড়ে মারা যান মনেজা খাতুন নামে এক নারী। তিনি লালমোহন উপজেলার চর উমেদ গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাদেরের স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানান, রাতে মনেজা খাতুন তার এক নাতিকে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। ঝোড়ো বাতাসে টিনের ঘর ভেঙে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি।

স্থানীয়রা জানান, রাতে বাবা-মার সঙ্গে ঘু‌মিয়ে ছিল শিশু মাইশা। ভোরের দিকে ঘূ‌র্ণিঝড় রেমালে তাদের ঘরের পাশে গাছ ভেঙে পড়ে। এতে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মাইশার মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন ওই প‌রিবারের আ‌রও তিনজন।

আজ সোমবার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার টেক্সটাইল এলাকায় দেয়াল চাপায় মারা যান এক পথচারী। স্থানীয়রা জানায়, ঝড়ের সময় ভারী বৃষ্টি হচ্ছিল। এ সময় একটি দেয়ালের পাশে আশ্রয় নেন সাইফুল ইসলাম হৃদয়। হঠাৎ সীমানা দেয়ালটি ভেঙে পড়লে চাপা পড়ে মারা যান হৃদয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস তার মরদেহ উদ্ধার করে।

পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে মারা গেছেন তিনজন। এর মধ্যে দুমকি উপজেলায় ঝড়ো হাওয়ায় গাছচাপায় জয়নাল হাওলাদার নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার পাঙ্গা‌শিয়া ইউ‌নিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড নলদোয়া‌নি স্লুইসগেট এলাকার বাসিন্দা।

পটুয়াখালীর বাউফলে ঘূর্ণিঝড় রিমালে মৃত্যু হয়েছে মো. আব্দুল করিম নামে এক পথচারীর। আজ সকাল ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।

রোববার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালি আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে শওকাত মোড়ল নামে ৬৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ মারা যান। একইদিন বিকেলে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধূলাসর ইউনিয়নের কাউয়ারচর এলাকায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে প্লা‌বিত এলাকা থেকে বোন ও ফুফুকে রক্ষা করতে গিয়ে স্রোতে ভেসে প্রাণ হারান শরীফ হাওলাদার নামে এক যুবক।

কুমিল্লায় বিদ্যালয়ে ক্লাসরত অবস্থায় পার্শ্ববর্তী নির্মাণাধীন সাততলা ভবনের দেয়াল ধসে সাইফুল ইসলাম সাগর (১২) নামে ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।

আজ সোমবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার নোয়াগাঁও চৌমুহনী এলাকায় নুর আইডিয়াল স্কুলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত সাইফুল ইসলাম সাগর সদর দক্ষিণ উপজেলার শাকতলা গ্রামের অলি হোসেনের ছেলে। সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) খাদেমুল বাহার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিষয়:

ঘূর্ণিঝড় রেমাল: বাগেরহাটে আনুমানিক ৪৫ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাতভর তাণ্ডবের পর আজ সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের তীব্রতা কমলেও বৃষ্টিপাত থামেনি।

জানা যায়, রেমালের প্রভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে জেলার ৪৫ হাজার ঘরবাড়ি। এর মধ্যে আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ৩৫ হাজার ও পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে ১০ হাজার বাড়িঘর। উপড়ে পড়েছে কয়েক হাজার গাছপালা। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পুরো জেলা। এছাড়া জেলার প্রায় শতাধিক গ্রাম ৬ থেকে ৮ ফুট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার প্রায় অর্ধলক্ষ পরিবার। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মৎস্য ঘেরে। জেলার মোংলা, রামপাল, শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও বাগেরহাট সদর উপজেলায় সাড়ে ৩হাজার চিংড়ি ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে আনুমানিক ৭৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া ১ হাজার ৫শ ৮১ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।জেলার মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলায় প্রায় দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে জেলার শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলা উপজেলায় সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব উপজেলার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পেয়েছি। আবহাওয়া পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য জানা যাবে। তবে গতকাল রাতে জেলার ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ও কয়েক হাজার গবাদি পশু আশ্রয় নিয়েছিলো। তাদের জন্য শুকনা খাবার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়। প্রয়োজন হলে নগদ অর্থ ও বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে।’

বিষয়:

ঘূর্ণিঝড় রেমাল: ভোলায় ঘরের নিচে চাপা পড়ে নারী নিহত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ভোলার লালমোহন উপজেলায় ঘরের নিচে চাপা পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় আজ সোমবার ভোরে প্রচণ্ড বাতাসে ঘর ভেঙে পড়লে এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর বাসসের।

প্রাণ হারানো ৫৪ বছর বয়সী ওই নারীর নাম মনেজা খাতুন। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এতে ঘটনাস্থলে ওই নারীর মৃত্যু হয়। তার বাবার নাম সিদ্দিক মাঝি। নিহতের পরিবারকে সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।’

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষা পেতে ৩৮ হাজারেরও বেশি মানুষ নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। একই সঙ্গে ৭ হাজার ৯০০ গবাদি পশু অবস্থান নিয়েছে মুজিব কেল্লাগুলোতে। রাতের জোয়ারে জেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলেও, ভাটার সঙ্গে সঙ্গে পানি নেমে যায়।

তিনি বলেন, ‘রিমালের প্রভাবে জেলার গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে ঘর বাড়িরও। আমরা ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরিতে কাজ করছি।’

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রোববার সকাল থেকেই ঝড়ো হাওয়া বইছে উপকূলীয় জেলা ভোলায়। দুপুর থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হলেও রাত থেকে ভারী বর্ষণ চলছে। সেই সাথে তীব্র বাতাস বইছে। উত্তাল রয়েছে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী। দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে সব ধরনের নৌযান চলাচল। রোববার রাত থেকে বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে পুরো জেলা।

বিষয়:

ঘূর্ণিঝড় রেমালে পটুয়াখালীতে গাছ পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৭ মে, ২০২৪ ১৫:১১
পটুয়াখালী প্রতিনিধি

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলায় বসতঘরে গাছ পড়ে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। উপজেলার পাঙ্গা‌শিয়া ইউ‌নিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড নলদোয়া‌নি সুইসগেট এলাকায় আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।‌

প্রাণ হারানো ৭০ বছর বয়সী জয়নাল হাওলাদার ওই এলাকার বাসিন্দা।

পাঙ্গা‌শিয়া ইউ‌নিয়নের চেয়ারম‌্যান নজরুল গাজী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে প্রচণ্ড বেগে ঝোড়ো হাওয়ার সময় হঠাৎ দু‌টি বড় বড় চাম্বল গাছ জয়নাল হাওলাদারের টিনের ঘরের ওপ‌র পড়লে ঘরের মধ্যে তি‌নি মারা যান।

তবে জেলা প্রশাসক নূর কুতুবুল আলম জানান, মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক স‌মস‌্যার কারণে অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না, যে কারণে বিষয়‌টি তার জানা নেই।

চেয়ারম‌্যান নজরুল গাজী জানান, তার ইউ‌নিয়নের ১, ২, ৩ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কোনো আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় ওই চার‌টি ওয়ার্ডের বা‌সিন্দাদের তি‌নি কোনো আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে পারেননি। যার ফলে তারা সবাই নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করছিলেন।

তি‌নি জানান, সকালে যখন প্রচণ্ড বেগে ঝোড়ো হাওয়া ও বৃ‌ষ্টি হচ্ছিল তখন জয়নাল হাওলাদার ও তার স্ত্রী ঘরে ছিলেন। ঘটনার সময় জয়নালের স্ত্রী রান্নাঘরে কাজে ব‌্যস্ত ছিলেন। আর জয়নাল ছিলেন ঘরের বারান্দায়। এ সময় ঘরের পাশে থাকা দু‌টি বড় বড় চাম্বল গাছ টিনের ওপরে পড়লে তা সরাস‌রি জয়নালের মাথায় আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

চেয়ারম‌্যান বলেন, ‘নেটওয়ার্ক সমস‌্যার কারণে তাৎক্ষণিক বিষয়‌টি প্রশাসনকে অবহিত করা সম্ভব হয়‌নি, তবে সঙ্গে সঙ্গে আমি ফেসবুকে পোস্ট করেছি সবাই যাতে জানতে পারে।’

বিষয়:

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ১৯ উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত

ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৭ মে, ২০২৪ ১৪:৩২
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় বেশ কিছু অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কথা ভেবে উপজেলা নির্বাচনে তৃতীয় ধাপের ১৯টি উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। উপজেলাগুলো হলো- বাগেরহাট জেলার শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা, খুলনা জেলার কয়রা, পাইকগাছা, ডুমুরিয়া, বরিশাল জেলার গৌরনদী, আগুনঝারা, পটুয়াখালী জেলার পটুয়াখালী সদর, মির্জাগঞ্জ, দুমকি, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া, ভোলা জেলার তজুমদ্দিন, লালমোহন, ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর, কাঁঠালিয়া, বরগুনা জেলার বামনা, পাথরঘাটা এবং রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি।

আজ সোমবার দুপুরে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম এই তথ্য জানান।

ইসি সচিব বলেন, ‘মূলত আগামী ২৯ মে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ১০৯টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ করতে মাঠ প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। ইতোমধ্যেই গতকাল রোববার সন্ধ্যায় থেকে ঘূর্ণিঝড় রেমাল বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আঘাত হেনেছে। যার ফলে কোথাও ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং ৯ নম্বর বিপদ সংকেত ঘোষিত হয়। এই পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী যেসব নির্বাচনী এলাকাগুলোতে জলোচ্ছ্বাসের পানি প্রবেশ, বেড়িবাঁধ ভেঙেছে, কোথাও কোথাও গাছ উপড়ে গেছে এবং কোথাও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মোট ১৯ উপজেলার ভোট আপাতত স্থগিত হয়েছে। এই ১৯টি উপজেলার ভোট স্থগিতের ফলে আগামী ২৯ মে ৯০টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই ১৯ উপজেলায় এখনও পানি জমে আছে। যার ফলে স্থানীয় প্রশাসন এসব এলাকার ভোট পিছিয়ে দিতে অনুরোধ করেছে।’

বিষয়:

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন বাগেরহাট জেলা

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৭ মে, ২০২৪ ১৩:১৪
বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে সম্পূর্ণ বাগেরহাট জেলা। গতকাল রোববার রাত থেকে শুরু হওয়া ঝড়-বৃষ্টি ও বাতাস এখনো অব্যাহত রয়েছে।

জেলার মোংলা, রামপাল, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলাসহ বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে। বহু মানুষের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেসে গেছে চিংড়ির ঘের।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাফর রানা জানান, ঝড়ে এখানকার প্রায় আট হাজার কাঁচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ি, ব্যাপক গাছপালা বিধ্বস্তসহ বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়ে গেছে। জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। এখনও আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু।

রামপাল উপজেলার বাইনতলা চাকশ্রী গ্রামের এক চিংড়ি চাষি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে নদী ও খালে জোয়ারের পানি তিন থেকে চার ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। রাতে জোয়ারের পানির চাপে ঘেরের বাঁধ ভেঙে প্রায় এক লাখ টাকার চিংড়ি মাছ ভেসে গেছে।’

একই এলাকার এক ঘের ব্যবসায়ী বলেন, ‘জোয়ারের পানির চাপ এতটাই প্রবল ছিল যে মুহূর্তের মধ্যেই আমার ঘের পানিতে তলিয়ে যায়। রাত থেকে আমার ঘেরসহ এখানকার প্রায় অর্ধশত মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে আছে।’

মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বারইখালি এলাকার আব্দুল্লাহ আল জিমি বলেন, বাতাসে আমাদের বাড়ির গাছগাছালি ভেঙে গেছে। এলাকা পুরো পানিতে তলিয়ে গেছে। আমার ঘরের ভিতরে প্রায় এক ফুট পানি এবং বাইরে তিন চার ফুট পানিতে তলানো। কাল রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছিলাম কিন্তু ঘরবাড়ি রক্ষার জন্য আশ্রয়কেন্দ্র থেকে চলে এসেছি। রান্নাবান্না না করতে পেরে কাল রাত থেকে এখনো খাওয়া-দাওয়া হয়নি।

শরণখোলার তাফালবাড়ি এলাকার নাজমুল জানান, গতকাল রাত থেকে সকাল পর্যন্ত একটানা বাতাস হচ্ছে। ‌এই বাতাসে আমাদের বেশ কিছু গাছ পড়ে গেছে। আমাদের এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কও পাওয়া যাচ্ছে না। সব মিলে আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি।

তাফালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাজিব বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আমার ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামের একটি বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ওই এলাকা তিন থেকে চার ফুট পানিতে প্লাবিত রয়েছে। সেখানকার মানুষরা অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে তবে এখনো অনেকে নিজেদের বাড়িঘরে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এখনো প্রচণ্ড বাতাস ও বৃষ্টি হচ্ছে।’

বাগেরহাটের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলনে, ‘রোববার দুপুরের পর থেকে এ পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে দুর্যোগ পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বিষয়:

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ৭ জনের প্রাণহানি

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে দমকা হাওয়াসহ ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি বয়ে যাচ্ছে দেশের উপকূল অঞ্চলে। এর প্রভাবে বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী ও সাতক্ষীরা এবং চট্টগ্রামে ৭ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

আজ সোমবার সকালে আবহাওয়া অফিস বলছে, দুর্যোগের আগেই সঠিক পূর্বাভাস এবং মানুষের সচেতনতায় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়েও তেমন প্রভাব পড়েনি। তবে দুর্বল বাঁধের কারণে ঘূর্ণিঝড় শুরুর আগেই বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। ৫ থেকে ৬ ফুট উচ্চতার ঢেউ আঘাত হানে উপকূলে। পটুয়াখালীতে উত্তাল ঢেউয়ে ভেসে একজন এবং সাতক্ষীরায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে একজনের প্রাণ গেছে। মোংলায় ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ রয়েছে শিশুসহ দুইজন। এ ছাড়াও বরিশাল, ভোলা ও চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’ রেমাল উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করে বর্তমানে খুলনার কয়রার নিকট অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ বৃষ্টিপাত বাড়িয়ে পরবর্তী ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে কিছুটা দুর্বল হয়ে ‘ঘূর্ণিঝড়ে’ রূপ নিতে পারে।

এরই মধ্যে রেমাল উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করে বর্তমানে কয়রা, খুলনার কাছে অবস্থান করছে। এরপর ধীরে ধীরে সমুদ্র এবং উপকূলীয় এলাকার পরিবেশ শান্ত হয়ে উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যে বৃষ্টিপাত বাড়বে ঢাকাসহ এর আশপাশের এলাকায়। সকাল থেকে ঢাকায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে তীব্র বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদফতরের ১৮ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিমি/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হলো।’

বিষয়:

ভূমিধস আতঙ্কে রোহিঙ্গারা, ক্যাম্পে বাড়তি সতর্কতা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
উখিয়া ও টেকনাফ প্রতিনিধি

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’-এর কারণে ভূমিধসপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। ঝড়ের প্রভাবে রোববার সকাল থেকে টেকনাফ-উখিয়ার কিছু জায়গায় দমকা ঝড়ো হাওয়া দেখা দিয়েছে। সেখানকার পাহাড় ও বনে ঝুঁকিতে থাকা ক্যাম্পের বাসিন্দারা বলছেন, তারা ভয়ে আছেন। ভারী বৃষ্টি হলে ভূমিধস হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দুর্যোগ মোকাবিলায় ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবকসহ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন। এ বিষয়ে কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্পে দায়িত্বে নিয়োজিত ১৪-এপিবিএনের এসপি আরেফিন জুয়েল বলেন, নিরাপদ ও সতর্ক থাকতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লকে ব্লকে মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়া ক্যাম্পে দাতা সংস্থা সেন্টারগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বেশির ভাগ রোহিঙ্গাদের বসতি পাহাড়ি এলাকায়। তাই ভারী বর্ষণ হলে ভূমিধসের শঙ্কা রয়েছে। তাই আমরা ফায়ার সার্ভিসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এছাড়া পরিস্থিতি দেখে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে নেওয়া হবে।’

মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বসবাস পাহাড়বেষ্টিত এই ক্যাম্পগুলোতে। এখানকার ঘরগুলো ত্রিপল, বাঁশের কাঠামোতে তৈরি, ক্ষতি কমাতে এরই মধ্যে ক্যাম্পের ব্লকে ব্লকে করা হচ্ছে মাইকিং।

উনচিপ্রাং রোহিঙ্গা শিবিরের নেতা মো. সিদ্দিক বলেন, যারা পাহাড়ের খাড়া ঢালে ঘর তুলেছে, তারা ঘূর্ণিঝড় আসার খবরে ভূমিধসের ভয়ে আছেন। আর যারা নিম্নাঞ্চলে থাকছে, বন্যায় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে তাদের মাঝেও। এ ছাড়া মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখানে বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি থাকে।

উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘আমার বাড়ি পাহাড়ের নিচে, আগেও বৃষ্টির কারণে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। মাইকিং চলছে, ভয়ে আছি জানি না কী হবে?’

আরআরআরসি কার্যালয় জানায়, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ক্যাম্পে স্কুল ও মসজিদ-মাদ্রাসাসহ মজবুত সেন্টারগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশেষ করে ক্যাম্পে এপিবিএন, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, রেডক্রস, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, দমকল বাহিনী বিভিন্ন দাতা সংস্থার কর্মী বাহিনীসহ রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবীরাও দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পে মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। তিন হাজারের বেশি ভলান্টিয়ার প্রস্তুত আছে।

জানতে চাইলে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসুদ্দৌজা নয়ন জানান, ক্যাম্প প্রশাসন ও কর্মরত সহযোগী সংস্থাগুলোর সমন্বিত চেষ্টায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

তবে টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের ডেভেলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সকালে আন্তর্জাতিক এনজিও সংস্থাসহ ক্যাম্পে মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। এছাড়া পাহাড়ে ঝুকিঁপূর্ণ বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুদের পাশের স্কুল ও খাদ্য বিতরণ সেন্টারে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।

উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মো. রফিক বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত আনতে পারে এমন আশঙ্কার খবর ক্যাম্পে প্রচার করা হচ্ছে। পাহাড়ের তীরে ঝুপড়ি ঘর হওয়ায় তাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিরাপদ স্থানে আশ্রয় না নিলে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।

‘স্থানীয়দের পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে উল্লেখ করে টেকনাফ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ সাফকাত আলী বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের ভেতরে অবস্থিত মসজিদ ও লার্নিং সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া দুর্যোগে অবহেলা না করে ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে নিরাপদ স্থানে থাকার জন্য মাইকিংসহ নানাভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে।


রেমালের প্রভাবে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার রাজবাড়ির দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে আজ রোববার সকাল পৌনে ১০টা থেকে সকল ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। নদী উত্তাল থাকায় যেকোনো দুর্ঘটনা এড়াতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর আগেই লঞ্চ বন্ধ ঘোষণা করে। এ রুটের যাত্রীদের বিকল্প হিসেবে ফেরিতে নদী পারাপার হতে অনুরোধ করেছে।

আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতি, দৌলতদিয়া ঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, ‘নিয়মমাফিক গতকাল শনিবার রাত ৯টার পর থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে সকল ধরনের লঞ্চ বন্ধ ছিল। আজ রোববার সকাল সোয়া ৬টা থেকে পুনরায় লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হয়। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন নৌবন্দর বন্ধ হলেও আমাদের এই রুটে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক ছিল।

তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে বাতাস সৃষ্টি হলে নদী উত্তাল হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে সকাল পৌনে দশটা থেকে আবার লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেই। এর আগ পর্যন্ত এই রুটে ছোট-বড় মিলে ১৭টি লঞ্চ ছিল। লঞ্চগুলোকে ঘাটের অদূরে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে রাখা হয়েছে।’

লঞ্চে যাত্রী পারাপার হয়, এমন একটি পরিবহনের ঘাট তত্বাবধায়ক ফিরোজ শেখ বলেন, ‘সকালে প্রথম একটি পরিবহনের যাত্রী লঞ্চে নদী পাড়ি দেয়। পরবর্তীতে নদী বেশি উত্তাল হয়ে বড় বড় ঢেউয়ের সৃষ্টি হলে আমরা ফেরিতে যাত্রী পারাপার শুরু করি। এখন তো লঞ্চ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে লঞ্চের সকল যাত্রী এখন ফেরিতেই নদী পাড়ি দিচ্ছেন।’

দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মা নদী উত্তাল থাকলেও যানবাহনবোঝাই ফেরিগুলো ধীরগতিতে নদী পাড়ি দিচ্ছে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে তেমন যানবাহন দেখা না গেলেও নদী পাড়ি দিতে আসা কিছু গাড়িকে ঘাটে ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়।

এছাড়া লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট থেকে একটু দূরে নিরাপদ স্থানে লালু মন্ডল পাড়ায় লঞ্চগুলোকে সরিয়ে রাখা হয়েছে। ফাঁকা পন্টুন পড়ে আছে।’

এদিকে বিআইডব্লিউটিএর দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক পরিদর্শক মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে সকাল থেকে নদীপথে সকল ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখার কথা বলা হয়। তবে এই নৌপথ অনেকটা স্বাভাবিক থাকায় লঞ্চ মালিক সমিতি লঞ্চ চলাচল অব্যাহত রাখে। তাদের পুনরায় বন্ধ রাখার তাগিদ দিলে পরবর্তীতে সকাল ৯টার পর পর চূড়ান্তভাবে বন্ধ করে দেন।’

অনেক সময় কর্তৃপক্ষ বলার পরও স্থানীয়রা নদীর অবস্থা বুঝে লঞ্চ চলাচল অব্যাহত রাখেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘নদীর পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তবেই লঞ্চ চালু করা হবে।

তবে যাত্রীদের নদী পাড়ি দিতে লঞ্চের পরিবর্তে ফেরিতে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। এই রুটের লঞ্চগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে রাখা হয়েছে। তার আগ পর্যন্ত আমরা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখছি।’


‘রেমাল’- এ কাঁপছে উপকূল

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আওয়াল শেখ, খুলনা ব্যুরো

প্রতিবছরই কোন কোন ঝড়ের কবলে পড়তে হচ্ছে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোকে। প্রতিনিয়ত দুর্যোগের ফলে জান-মাল রক্ষার সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হচ্ছে ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের।

এবছরও প্রবল শক্তি নিয়ে উপকূলে আঘাত করতে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। খুলনা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, ‘রোববার সকাল ৬টা থেকে ঝড়ের অগ্রভাগে অংশের প্রভাব শুরু হয়। ধীর ধীরে প্রভাব বাড়ছে। মধ্যে রাতে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেহাটের উপকূলে প্রবল বেগে আঘাত করবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। ঝড়ের প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুটের বেশি জলোচ্ছ্বাসে উপকূল প্লাবিত হতে পারে।’

ঝুকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে শঙ্কা

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বিশেষ করে ঝুকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে উপকূলের মানুষ। আগের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগে গৃহহারা হয়ে বেড়িবাঁধ অথবা উচু কোন স্থানে টং ঘর বেধে বসবাসকারি লোকেরা ফের বেড়িবাঁধ ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে।

এ বছর খুলনা, বাগেরহাটে ও সাতক্ষীরা জেলার মধ্যে সব থেকে ঝুকিতে রয়েছে সাতক্ষীরা জেলা। সেখানের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ খুবই দুর্বল রয়েছে। ফলে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ রক্ষায় নিজেরাই কাজ শুরু করে দিয়েছেন স্থানীয়রা।

আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের সুভদ্রাকাটি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতে গতকাল শনিবার রাত থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছে গ্রামবাসি। রাতে আলো জ্বালিয়ে তারা ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতে মাটির কাজ করেছেন।

আশাশুনি উপজেলার বিছট গ্রামের রুহুল আমিন মোড়ল জানান, রোববার সকাল থেকে হালকা বৃষ্টির সঙ্গে দমকা বাতাস বইতে শুরু করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে গ্রামের অধিকাংশ মানুষ। যেনতেনভাবে সংষ্কার করা পাউবো’র এই বেড়িবাঁধ ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের কারণে যেকোন মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী এম সালাউদ্দীন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে চার ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্যামনগরকে ঘিরে থাকা উপকূল রক্ষা বাঁধের প্রায় ১২৯ কিলোমিটারের মধ্যে সাত/আটটি পয়েন্টের প্রায় দুই কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ। ইতিমধ্যে মাটি ফেলে উচ্চতা বৃদ্ধিসহ জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে বাঁধের ভাঙন ও ধস ঠেকানোর কাজ চলছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, বিভাগের আওতাধীন ১৫ এর অধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ণ রয়েছে। এই মুহুর্ত্বে ৫/৬টি পয়েন্টে কাজ চলছে। পর্যাপ্ত জিও ব্যাগ ও জিও রোল মজুদত রয়েছে। এখন আমরা ৭/২ পোল্ডারের বিছট গ্রামের ভাঙন পয়েন্টে বেড়িবাঁধে জিও রোলের কাজ করছি। পর্যায়ক্রমে সবগুলো পয়েন্টে কাজ করা হবে বলে জানান তিনি।

ক্ষত মোকাবিলায় প্রস্তুতি

খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য ৬০৪টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে পরিস্থিতি অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ লোকজন সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন। এসব সাইক্লোন শেল্টারে মোট ৩ লাখ ১৫ হাজার ১৮০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। এছাড়া ৩টি মুজিব কিল্লায় ৪৩০ জন মানুষ আশ্রয় ও ৫৬০টি গবাদি পশু রাখা যাবে। কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলায় ৫ হাজার ২৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্টেশন ত্যাগ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে এ মৌসুমে একটি সাধারণ প্রস্তুতি আমাদের থাকেই।

তিনি বলেন, সাতক্ষীরায় ১৮৭টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রয়েছে। এসব সাইক্লোন শেল্টারে ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫০০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। এ ছাড়া জরুরি ত্রাণ কার্যে ব্যবহারের জন্য ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা মজুদ রয়েছে। একইসঙ্গে ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবকসহ স্বাস্থ্য বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, ও কোস্টগার্ড কাজ করবে।

এছাড়া বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ,৩ হাজার ৫০৫ জন স্বেচ্ছাসেবক, ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ৬৪৩.৪০০ মেট্রিক টন চাল মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স খুলনার উপপরিচালক মামুন মাহমুদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের ৩০টি টিম গতকাল শনিবার সকাল ৬টা থেকে কাজ শুরু করেছে। এর মধ্যে খুলনায় ১৪টি, বাগেরহাটে ১০টি এবং সাতক্ষীরায় ৬টি ফায়ার স্টেশনের টিম কাজ করছেন। টিমের সদস্যরা মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি রেসকিউ, বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা, নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে আনাসহ যাবতীয় কাজ করবে। জল ও স্থল উভয় পথে ফায়ার সার্ভিসের টিম এবং যাবতীয় সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খুলনা সদরদপ্তরে স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে ২০ সদস্যের স্পেশাল টিম। খোলা হয়েছে মনিটরিং সেল।

সুন্দরবনে বাড়তি সতর্কতা

সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এ কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, সাতক্ষীরা রেঞ্জের চারটি স্টেশনসহ সকল টহলফাঁড়িতে অবস্থানরত বনকর্মীদের সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সুন্দরবন ও সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া জেলেদের লোকালয়ে ফিরতে পরামর্শ দিয়ে তাদের উদ্ধারে বনকর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম জানান, ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসার খবরে বনবিভাগের সব কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল করে তাদের নিরাপদ থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, করমজল বন্যপ্রাণী ও প্রজনন কেন্দ্রের বন্যপ্রাণীদেরও নিরাপদে রাখা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সার্বক্ষণিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় আরও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মোংলা বন্দরের অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ

ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন প্রস্তুতি নিয়েছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, এই মুহূর্তে মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়ায় ৪ টি জাহাজ, বেসক্রিক এরিয়ায় ১টি ও জেটিতে ২ টি জাহাজসহ মোট ৬টি বিদেশি জাহাজ রয়েছে। ঝড় থেমে না যাওয়া পর্যন্ত মোংলা বন্দরের সকল প্রকার অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে।

তিনি বলেন, বাণিজ্যিক সকল জাহাজগুলোকে জেটির পাশ ত্যাগ করে চ্যানেলের বিভিন্ন পয়েন্টে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে নোঙ্গর করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। মোংলা বন্দরের নিজস্ব জলযান সমূহকে ২ টায়ারে বিদ্যমান বার্থসমূহে নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এছাড়া বন্দর চ্যানেলকে নিরাপদে রাখার জন্য দেশি কার্গো ও লাইটারেজগুলোকে চ্যানেলের বাইরে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বন্দরে আমদানিকৃত গাড়ি নিরাপদে রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ও আমদানিকারকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

উপকূলে বাববার আঘাত

আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, গত ১৫ বছরে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানে উপকূলে। তার মধ্যে রয়েছে, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বরে সিডর, ২০০৯ সালের ২৫ মে আইলা, ২০১৩ সালের ১৬ মে মহাসেন, ২০১৫ সালের ৩০ জুলাই কোমেন, ২০১৬ সালের ২১ মে রোয়ানু ও ২০১৭ সালের ৩০ মে মোরা, ২০১৯ সালের ৪ মে ফণী, ২০১৯ সালের ১০ নভেম্বর বুলবুল, ২০২০ সালের ২০ মে আম্পান, ২০২১ সালের ২৬ মে ইয়াস এবং ২০২১ সালের ৪ ডিসেম্বর ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ ও সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর উপকূলে আঘাত হানে সিত্রাং। এই ১৫ বছরে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে সিডর ঝড়ে।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, ‘বাংলাদেশর হতিহাসে অন্যতম পাঁচটি বড় ঝড়ের মধ্যে হল একটি সিডর। এ ঝড়ে বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগ সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। এর মধ্যে খুলনার দাকোপ উপজেলার কালাবগি এলাকা ও বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী এলাকা সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। এছাড়াও সুন্দরবনের বেশ ক্ষতি হয়েছিল। আঘাতের সময় সিডরের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে উপকূলে ১০ থেকে ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়েছিল।’

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক দিলীপ কুমার দত্ত বলেন, ‘বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই অঞ্চলে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে।’


মোংলায় আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছে মানুষ

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে মোংলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর ফলে মোংলা বন্দরে নিজস্ব এলার্ট ‘ফোর’ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। বন্ধ রয়েছে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত বিদেশী জাহাজের পণ্য ওঠানামার কাজ। এছাড়া ঝড়ের কবলে পড়ে দূর্ঘটনা এড়াতে বন্দরে ৬টি বাণিজ্যিক জাহাজ নিরাপদে নোঙ্গরে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রোমেলের প্রভাবে আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। দমকা বাতাসও বইছে। ফলে আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছেন সাধারণ মানুষ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না বলেন, সুন্দরবন সংলগ্ন ও পশুর নদীর পাড়ে বসবাসকারি উপকূলবাসিদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনার জন্য সব কিছুই করা হচ্ছে। এরইমধ্যে অনেকে আনাও হয়েছে। তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এখনও যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আসেনি তাদেরকে আনার জন্য তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এছাড়া সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলে সতর্কতা মাইকিং প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের বাসিন্দারা। তারা সুন্দরবনের পাশেই বসবাস করেন। এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী আকবর হেসেন বলেন, 'তার ইউনিয়নে ২৫টি আশ্রয় কেন্দ্রের প্রায় সবগুলোতেই উপকূলবাসীকে আনা হচ্ছে। ২৫টি কেন্দ্রের জন্য খিচুড়িসহ শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করেছি'।

মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মুনতাসীর ইবনে মহসীন জানান, 'গতকাল শনিবার (২৫মে) থেকেই তারা সতর্ক রয়েছেন। উপকূলবাসীকে প্রতি মুহুর্তে সচেতনতার করার লক্ষ্যে সতর্কমূলক প্রচার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। রোববার ভোর থেকে মোংলার পশুর নদী ও সুন্দরবন তীরবর্তী এলাকায় তাদের সদস্যরা অবস্থান করছে। যে কোন পরিস্থিতি সামাল দিতে তারা প্রস্তুত রয়েছেন।’


জ্বলোচ্ছাসে তলিয়ে গেছে সুন্দরবন 

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সুন্দরবন উপকূলসহ মোংলায় ১০ নম্বর বিপদ সংকেত বহাল রয়েছে। এরই মধ্যে বৃষ্টিসহ দমকা বাতাস বইতে শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে জ্বলোচ্ছাসে পানি বেড়ে তলিয়ে গেছে পুরো সুন্দরবন এলাকা।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র ও পর্যটন কেন্দ্রের মোঃ আজাদ কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ ফুট পানি বেড়ে সুন্দরবন তলিয়ে গেছে। পানির চাপ আরও বাড়বে। তবে বণ্যপ্রাণীর কোন ক্ষয়ক্ষতির আশংকা নেই বলে জানান তিনি। আজাদ কবির বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পুরো সুন্দরবন বিভাগের কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বনবিভাগের ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাম্পগুলোতে থাকা বনরক্ষীদের এরই মধ্যে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এরই মধ্যে মোংলা নদীতে যাত্রীবাহী ট্রলার চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, ঝুঁকি এড়াতে যাত্রীবাহি নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে জরুরি কাজ ও রোগিদের কথা চিন্তা করে মোংলা নদীতে ফেরি চালু রাখা হয়েছে। পৌর শহরের আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজনকে আনার জন্য ব্যাপক তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ হারন অর রশিদ জানান, এই রেমাল মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৯ ৫কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। এটি আজ সন্ধ্যা নাগাদ সুন্দরবন ও মোংলা উপকূল অতিক্রম করে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় আছড়ে পড়ার কথা রয়েছে।


ঘূর্ণিঝড় রেমাল: চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ অ্যালার্ট-৪, বিমানবন্দর বন্ধ ৮ ঘণ্টা

আপডেটেড ২৬ মে, ২০২৪ ১৫:০৫
বাসস

ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একইসঙ্গে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেত দেখে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ অ্যালার্ট-৪ জারি করেছে। রেমালের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়ায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৮ ঘণ্টা ফ্লাইট ওঠা-নামা বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেত ৬ এর ওপরে ওঠার পর থেকে বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। জেটিতে নতুন করে কোনো জাহাজ ভেড়ানো হচ্ছে না। মাদার ভেসেলগুলো বহির্নোঙরে থাকবে। এছাড়া লাইটার জাহাজগুলোকে কর্ণফুলীর উজানে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বন্দরের জেটিতে অপারেশনাল ইকুইপমেন্ট নিরাপদে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৮ ঘণ্টা ফ্লাইট ওঠা-নামা বন্ধ থাকবে বলে নিশ্চিত করে বিমানবন্দরটির পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসলিম আহমেদ বলেন, রোববার দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠা-নামা বন্ধ থাকবে। প্রাথমিকভাবে রাত আটটা পর্যন্ত এ ঘোষণা বহাল থাকবে। তবে এখনো স্বাভাবিকভাবে ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে। কোনো ফ্লাইট বাতিল হয়নি।

এদিকে, রোববার আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তি-১০ এ জানানো হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় (১৯.৫০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৪০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি আজ (২৬ মে) সকাল ৬ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬০ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৩০ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ (রোববার) সন্ধ্যা বা মধ্যরাত নাগাদ মোংলার নিকট দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ) খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে।


banner close