রোববার, ২৬ মে ২০২৪

কূটনীতিকদের সীমা অতিক্রম না করার পরামর্শ সরকারের

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। ছবি: পিআইডি
প্রতিবেদক,
প্রকাশিত
প্রতিবেদক,
প্রকাশিত : ১৩ অক্টোবর, ২০২২ ২২:০২

বাংলাদেশে দায়িত্বরত বিদেশি কূটনীতিকদের নিজেদের সীমা অতিক্রম না করার জন্য আবারও পরামর্শ দিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন তিনি। জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের জয়, সাধারণ পরিষদে ইউক্রেনের অখণ্ডতা প্রশ্নে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটসহ সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

এ সময় বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সম্প্রতিক কালে দেয়া বিদেশি কূটনীতিকদের নানা বক্তব্যে বিরক্তি প্রকাশ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কূটনীতিকদের একটা সীমাবদ্ধতা আছে। তাদের সেই দিকে খেয়াল রাখা দরকার। তা না হলে অন্য চিন্তা করা হবে।’

কিছুদিন ধরে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বিষয়টি নিয়ে নানা কথা বলছেন। ঢাকায় যে কর্মসূচিতেই তিনি যোগ দেন, সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন রাখেন আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে। আর পিটার হাস তুলে ধরেন তার দেশের অবস্থান। সেদিন তিনি বলেছেন, ‘সহিংসতা বজায় থাকলে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

এর আগেও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কারও নাম উল্লেখ না করে কূটনীতিকদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বক্তব্য না রাখার বিষয়ে জোর দেন। সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের নাম উল্লেখ করেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।

গত ১১ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি আমাদের দেশে যারা ডিপ্লোম্যাট আছেন তারা পরিপক্ব। তারা কূটনৈতিক শিষ্টাচার মেনে চলবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও নির্বাচন নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের পরামর্শ সরকারের দরকার নেই।’

শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা সবার ওপর সম্মান রেখেই চলার চেষ্টা করি। এর অর্থ এই নয় যে, আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা মুক্তহস্তে হস্তক্ষেপ করবেন। তাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা ততটুকু বলতে পারবেন, তাদের দেশে অন্য দেশের কূটনীতিকরা যতটুকু করতে পারেন। আমাদের দেশের রাষ্ট্রদূতরা তাদের দেশে গিয়ে অনেক কিছুই করতে পারেন না।

কূটনীতিকদের কথা বলার বা চলার সীমাবদ্ধতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা যেভাবে অতিথিপরায়ণ হয়ে সব দেশের রাষ্ট্রদূতদের জন্য আমাদের দেশের দপ্তরগুলোর দরজা খোলা রাখি, সব মন্ত্রণালয়, সব অধিদপ্তর, সব বিভাগের জন্য এটি প্রযোজ্য; এটি যেন অব্যবহার না করে। যদি করে, তবে আমরা অন্যকিছু ভাবব।

কাউকে নির্বাচনে আনার নিশ্চয়তা দেবে না সরকার

যুক্তরাষ্ট্র সফরে সে দেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী উন্ডি আর শেরমেনের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। তবে আমি স্পষ্ট ভাষায় বলেছি, নির্বাচন অবশ্যই অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। তবে আমরা এটি নিশ্চিত করতে পারব না, কে নির্বাচনে আসবে আর কে আসবে না।’

নির্বাচনে আসা নির্দিষ্ট ব্যক্তি ও দলের ওপর নির্ভর করে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাস্তবতার নিরিখে যে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো নেতৃত্ব নেই, চালিকাশক্তি নেই, অতীতের ব্যাগেজ তারা কেন টেনেছে, তার প্রকৃত ব্যাখ্যা যারা জনগণের কাছে দিতে পারে না, তাদের বিষয়ে বাংলাদেশ কখনোই কোনো গ্যারান্টি দিতে পারে না।

ফখরুলের বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল

বুধবার চট্টগ্রামের সমাবেশে সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য রেখেছেন, তাতে রাষ্ট্রদ্রোহ হয়েছে বলে মনে করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

শাহরিয়ার আলম বলেন, এর মাধ্যমে আবার প্রমাণ হলো বিএনপি জনগণের ওপর আস্থা রাখে না। এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোকে ব্যবহার করার বা এই সব রাষ্ট্রের মুখ থেকে কিছু বের করা বা বর্তমান সরকারের সঙ্গে সেসব রাষ্ট্রের সম্পর্কে বাধা সৃষ্টি করা তাদের লক্ষ্য।

তারেক রহমানের প্রতি ইঙ্গিত করে শাহরিয়ার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সন্তান থাকাকালীন যুক্তরাষ্ট্র যেন তার (তারেক রহমান) প্রতি বিধিনিষেধ আরোপ করে এমন তারবার্তা বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে সে দেশের প্রশাসনের কাছে গিয়েছিল। পরে উইকিলিকসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রমাণ হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে তারেক রহমান একটা বাধা। সেই দলের মহাসচিবের উচিত যুক্তরাষ্ট্রকে বলা, তারেক রহমানকে মাফ করে দেয়া। তা না করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।


ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় জেলায় জেলায় প্রস্তুতি

মোংলায় ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সচেতন করতে কোস্টগার্ডের মাইকিং। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ মে, ২০২৪ ০৫:১৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বঙ্গোবসাগরে থাকা গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ায় তা ‘রেমালে’ পরিণত হয়েছে। আজ রোববার মধ্যরাতে এটি আঘাত হানার আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। এ জন্য দেশের ছয় জেলাকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। এ ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও ভূমি অতিক্রমের সম্ভাব্য এলাকার ভিত্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাগুলো হলো সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা।

গতকাল ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ঘূর্ণিঝড়সহ সব দুর্যোগে তার নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনায় আমরা যথাসময়ে প্রস্তুতি নিয়ে মানুষের দুর্দশা লাঘব এবং জীবন ও সম্পদের ক্ষতি কমাতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘূর্ণিঝড়টিও যাতে একই ধারাবাহিকতায় সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারি তার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’

প্রতিমন্ত্রী মুহিববুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে স্থানীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। উপকূলবর্তী সব জেলাকে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও সম্ভাব্য ভূমি অতিক্রম এলাকার ভিত্তিতে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা জেলাসমূহকে অধিকতর প্রস্তুত থাকার জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে এই ঝড়টির বিষয়ে আমরা খোঁজখবর রাখছি। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে নিয়মিতভাবে পূর্বাভাস দিচ্ছে এবং আগাম কার্যাবলি (অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন) ও সাড়া প্রদানে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করছে। আমরা ভারতে অবস্থিত আঞ্চলিক বিশেষায়িত আবহওয়া কেন্দ্রের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। এর পাশাপাশি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক পূর্বাভাস মডেল নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সময়োপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ করছি।’

সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ঘূর্ণিঝড়টি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক তথ্য বিনিময়ের লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এনডিআরসিসি ২৪ ঘণ্টা খোলা রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ কার্যক্রম প্রেরণ শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৭৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কয়েক দিন যাবৎ মাঠে আগাম সতর্কবার্তা প্রচারসহ আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন ও প্রস্তুতের কাজ করছে। মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ ও সাইক্লোন আর্লি অ্যাকশন প্রটোকল অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক আগাম কার্যক্রম শুরু করেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের গতি-প্রকৃতি এবং আবহাওয়া অধিদপ্তর কর্তৃক বিপদ সংকেত জারি করা মাত্র মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হবে। দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি অনুযায়ী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং বিভিন্ন পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো কার্যকর হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সভায় কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেগুলো হলো আগাম সতর্কতার বিজ্ঞপ্তি প্রচার ও জনগণকে সচেতন করা, আগাম মানবিক কার্যাবলি গ্রহণ করা, মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় ও বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিসমূহের সভা অনুষ্ঠান, সব পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা, আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনা খাবার, শিশু খাদ্য এবং গো-খাদ্যের ব্যবস্থা করা, জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার বিষয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ। দুর্যোগ তথ্য পাওয়ার জন্য টোল ফ্রি ১০৯০ ব্যবহারের কথা বলা হয় সভায়। দৈনিক বাংলার বিভিন্ন জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানোর সংবাদের ভিত্তিতে ‘রেমাল’ নিয়ে বিভিন্ন জেলার প্রস্তুতির সম্পর্কে জানা গেছে নানা তথ্য।

পিরোজপুর: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ এর জন্য পিরোজপুরে প্রস্তুত করা হয়েছে ৫৬১ টি ঘূর্ণিঝড়ের আশ্রয়কেন্দ্র। যার মধ্যে ২৯৫ টি সাইক্লোন শেল্টার এবং ২৬৬ টি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এই আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।

শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক সাইফ-মিজান সভাকক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান এ তথ্য দেন।

সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান আরও জানান, ঘূর্নিঝড় রেমাল মোকাবিলায় একটি জেলা প্রশাসন থেকে একটি কন্টোলরুমসহ প্রতিটি উপজেলায় একটি টিম করা হয়েছে, ৬৫ টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে, ২ লাখ ৬৩ হাজার পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেজ মজুত রাখা হয়েছে, ঝড়ের ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ১৩৫০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, ৬১১ মে. ট. চাল ও নগদ ৬ লক্ষ ১০ হাজার টাকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও দুর্যোগ পরিবর্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর মেরামতের জন্য ৯৭ বান্ডিল টিন রয়েছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় রেডক্রিসেন্টের ২৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক ও সিপিপি ২৪২০ জন সদস্য প্রস্তুত রয়েছে। রেমালের প্রভাবে পিরোজপুরের নদীসমূহে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বেশি পানি দেখা গেছে এবং জেলার কয়েক স্থানে হালাকা বৃষ্টি পড়েছে।

বরগুনা: বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে গোমট আবহাওয়া বিরাজসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদী তীরের বাসিন্দারা। শনিবার জেলার পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অন্তত তিন ফুট বেড়েছে বলে জানান নদী তীরের বাসিন্দারা। বরগুনা সদর উপজেলার বড়ইতলা এলাকায় গেলে দেখা যায়, পানিতে এখানকার বেড়িবাঁধের বাহিরের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এখানে আশ্রয়কেন্দ্রের স্বল্পতা রয়েছে। তাই যা আছে তাতে সকলের স্থান সংকুলান হয় না। বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, দুপুরে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে। সভার মাধ্যমে আমরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এদিকে বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ড জেলার বিভিন্ন স্থানে এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন এবং এসব বাঁধ ভেঙ্গে গেলে তা তাৎক্ষণিকভাবে মেরামতের জন্য ৮০০ জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জানানো হয়েছে। জেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় বরগুনায় ৬৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা মোহা. রফিকুল ইসলাম। শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনসহ সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বরগুনায় ৩টি মুজিব কেল্লা, ৬৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যারা ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করবেন। এ ছাড়া ৪২২ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য, ৩৭ লাখ নগদ অর্থ প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ৪২ টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। দুর্যোগ প্রস্তুতি সভায় জেলা এনজিও ফোরামের সভাপতি মোতালেব মৃধা, প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তফা কাদের, রেডক্রিসেন্ট, দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি), বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে তাদের প্রস্তুতির বিষয় তুলে ধরেন।

মোংলা: ‘রেমাল’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে রোববার সন্ধ্যায় সুন্দরবন উপকূলে আঘাত হানবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। মোংলা আবাহওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. হারুন অর রশিদ জানান, এটি বর্তমান যেই অবস্থান দেখাচ্ছে তাতে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রটি বাংলাদেশের ওপর দিয়েই অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সুন্দরবন এলাকা এবং বরিশালের পটুয়াখালী, বরগুনা, ও ভোলা জেলায় রেমাল এর আঘাত হানার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় এরই মধ্যে মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সব রকম সতর্কমূলক প্রস্তুতি নিয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। কোস্ট গার্ড, নৌ বাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে শনিবার দুপুরে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে জরুরি বৈঠক করা হয়েছে।

বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার সাইফুর রহমান বলেন, মোংলা বন্দরে এই মুহূর্তে সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিংকার, সার, পাথর ও গ্যাসবাহী ছয়টি জাহাজ অবস্থান করেছে। সেগুলোকে নিরাপদে নোঙ্গর করতে বলা হয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় সব রকম প্রস্ততি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসনও। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না বলেন, ১০৩ টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ ১৩২০জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস থেকে ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের কার্যক্রমের গতি বাড়ানো হবে। কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে।

এদিকে মোংলা উপকূলে সচেতনতামূলক মাইকিং করেছে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। শনিবার সকাল থেকে ঘণ্টাব্যাপী মোংলার পশুর বিভিন্ন স্থানে এ প্রচার মাইকিং করা হয়।

মোংলা কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. মুনতাসীর ইবনে মহসীন জানান, সকাল থেকে সুন্দরবন লাঘোয়া মোংলা উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় প্রচার মাইকিং করেন কোস্ট গার্ড সদস্যরা।

বাগেরহাট: ঘূর্ণিঝড় রেমাল ধেয়ে আসার খবরে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নদী তীরবর্তী এলাকায় বসবাস করা মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। তবে সকাল থেকে আকাশ কখনো রোদ আবার কখনো মেঘাচ্ছন্ন হচ্ছে। নদীতে থাকা মাছ ধরা ট্রলার গুলো উপকূলের ছোট ছোট খালে আশ্রয় নিয়েছে। কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে জনসচেতনামূলক প্রচার-প্রচারণা। এরই মধ্যে রেমাল মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় বাগেরহাটে ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে ও ৩ হাজার ৫শ ৫ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ৬৪৩ মেট্রিকটন চাল ও ৫লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলার সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকল কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিলের পাশাপাশি উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেরিবাধ এলাকায় গুলো নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

পটুয়াখালী: জেলায় রেমাল মোকা‌বেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তু‌তি মূলক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের দরবার হলে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক নুর কুতুবুল আলম। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক যাদব সরকার। জেলা সিভিল সার্জন ডা. এসএম কবির হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার যোবায়ের আহাম্মেদ।

গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশিদ, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া রিদয়, সিপিপি, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক জানান দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলায় ৭০৩ টি সাইক্লোন শেল্টার ৩৫টি মুজিব কিল্লা, ৭৩০ মেট্রিক টন চাল, ১০ লক্ষ টাকার শিশু খাদ‌্য, ১০ লাখ টাকার গোখাদ‌্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড় শুকনা খাবার র‌য়ে‌ছে ১৫০০ প‌্যা‌কেট। নগদ টাকা র‌য়ে‌ছে ২৪ লাখ ৭ হাজার টাকা ৫০০ টাকা।

এ সময় মানুষকে সচেতন ও দুর্যোগে উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য রেডক্রিসেন্ট ও সিপিপির ৯ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকাসহ বিদ্যুৎ বিভাগ সড়ক বিভাগ ফায়ার সার্ভিসকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।

জেলায় মোট ৭৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্যালাইন, ঔষধ ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সংরক্ষিত রয়েছে। জেলায় ১৩০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ১০ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দুর্যোগের সময় কোথাও ভাঙন দেখা দিলে তা মেরামতের জন্য ১৬ হাজার জিও ব্যাগ রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এদিকে জেলায় ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে রয়েছে মুগ ডাল এবং ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিউদ্দিন মোহাম্মদ যোবায়ের বলেন গুজোব মোকাবেলার জন্যে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

এদিকে কলাপাড়া উপকূলীয় অঞ্চলের জনগন, মৎস্যজীবি ও নৌযান সমূহকে ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম শুরু করেছে নিজামপুর কোষ্টগার্ড। শনিবার সকাল নয়টায় মৎস্য বন্দর আলীপুর- মহিপুরে মাইকিং ও লিফলেট বিতরন করে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। এসময় তারা খাপড়াভাঙ্গা নদীতে অবস্থানরত ট্রলার সমূহে থাকা জেলেদের ঘূর্নিঝড়ের সময় করনীয় সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দেন।

ঝালকাঠি: জেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম। এ সভায় পুলিশ সুপার, স্বাস্থ্য, কৃষি, খাদ্য, শিক্ষা, দপ্তরের প্রধানগন এবং বিদ্যুৎ, ফায়ার সার্ভিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক বিভাগ, রেডক্রিসেন্টসহ জেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যোগ দেন।

সভায় জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে। এই কয় দিন সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্টেশন ত্যাগ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় নির্ধারিত সাইক্লোন শেল্টারসহ আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য সহ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে।


অপরাধী হলে, শিলাস্তির বিচার দাবী তার দাদার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শামীম আল মামুন, টাঙ্গাইল

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার সঙ্গে জড়িত গ্রেপ্তারকৃত শিলাস্তি রহমানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন তার চাচাতো দাদা বীরমুক্তিযোদ্ধা সেলিম মিয়া।

শনিবার (২৫ মে) দুপুরে শিলাস্তি রহমানের গ্রামের বাড়িতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ধবুরিয়া ইউনিয়নের পাইসানা গ্রামের মিয়া বাড়িটি পুরোপুরি ফাঁকা। শিলাস্তিদের টিনের ঘরে তালা ঝুলছে। টিনের ঘরের পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে দোতলা একটি বাড়ি। তবে বাড়ির ভেতরে নেই কোন আসবাবপত্র। এসময় পাশের ঘর থেকে বেড়িয়ে আসেন শিলাস্তির চাচাতো দাদা সেলিম মিয়া। তিনি শিলাস্তির বাবা আরিফুর রহমানের বাবার ছোট ভাই বীরমুক্তিযোদ্বা সেলিম মিয়া।

এসময় তিনি জানান, শিলাস্তিরা দুই বোন। শিলাস্তি বড় ও ছোট বোন সুবাহ। তাদের কোন ভাই নেই। তার বাবা আরিফুর রহমান একজন জুট ব্যবসায়ি। ছোট বেলা থেকেই তারা ঢাকার উত্তরায় বসবাস করে। মাঝে মধ্যে গ্রামের বাড়িতে আসলেও দুই একদিন পর আবার চলে যেত। কারো সাথেই তেমন কোন কথাবার্তা হতোনা।

তিনি আরও বলেন, শিলাস্তির চলাফেরা উচ্ছৃঙ্খল এবং বাড়ির বাইরে দিনের পর দিন সময় কাটানোর কারণে তাদের সঙ্গে কথা বলা বাদ দিয়েছি আমি ও আমার পরিবারের লোকজন। মাঝে এলেও শিলাস্তির যে ড্রেসআপ তা দেখে মনে হত কোটিপতি। সে বাড়িতে বসেই সবার সামনে সিগারেটও খায়তো। আমি বাঁধা দিলে শুনতো না। পরে বাঁধা দেওয়া বাদ দিয়েছি। আমার নাতি শিলাস্তি অপরাধ করলে এবং সে অপরাধী হলে তার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করছি।

স্থানীয় লোকজন জানায়, শিলাস্তি রহমান ও তার পরিবার ঢাকায় বসবাস শুরু করে দীর্ঘদিন যাবৎ। তারা কেউ এখানে আসে না। শিলাস্তি রহমানের দাদার সম্পত্তি তার বাবা আরিফুর রহমান বিক্রি করে ঢাকায় চলে যায়।

এবিষয়ে নাগরপুর ধুবরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান খান বলেন, তারা অনেক আগে থেকেই ঢাকায় থাকে। সঠিক কেউ বলতেও পারে না যে শিলাস্তি কোথাকার। এখন আমরা জানতে পারলাম যে তার বাড়ি নাগরপুরের। গতকাল পর্যন্তও জানতাম না।

নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, আমি এখনো কোন তথ্য পায়নি তার বিষয়ে। জানলে জানাতে পারবো।


চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়াল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

আবারও দেশের চুয়াডাঙ্গা জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। গত এপ্রিল মাসে জেলায় তাপমাত্রার রেকর্ড করেছিল। চলতি মে মাসে প্রথম দুই সপ্তাহ তাপমাত্রা কিছুটা প্রশমিত হলেও জেলায় টানা ৫ দিন মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। প্রখর তাপপ্রবাহ আর ভ্যাপসা গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত। দিনের পাশাপাশি রাতের তাপমাত্রাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে লোডশেডিং গরমের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদে পুড়ে কাজ করতে হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষকে।

আজ শনিবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র গরমে ঘরে-বাইরে কোথাও এক মুহূর্ত স্বস্তি মিলছে না। তীব্র রোদের কারণে তাপ উঠছে মাটি থেকেও। সকাল থেকেই থাকছে প্রখর রোদের তাপ, ভ্যাপসা গরম। এতে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। রোদের তীব্র তাপে মানুষ বাইরে বের হতে পারছেন না। দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা কাজ করতে না পেরে অলস সময়ও পার করছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, টানা ৫ দিন ধরে এ জেলায় মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজ বেলা ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসে আদ্রতার পরিমান ছিল শতকরা ৪২ শতাংশ।


চুয়াডাঙ্গায় আবারও তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

চুয়াডাঙ্গায় আবারও বাড়তে শুরু করেছে তাপমাত্রা। গত কয়েকদিন ধরেই এ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ।

আজ সকাল থেকেই উত্তপ্ত হতে শুরু করছে এ জেলার জনপদ। বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। এতে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জনজীবন। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবীরা। একটু ছায়া পেলেই সেখানে বিশ্রাম নিতে হচ্ছে তাদের।

আজ শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস।

গত এপ্রিল ও মে মাসজুড়ে প্রথম সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে অতি তীব্র আকারের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। বৃষ্টির পর তাপমাত্রা সহনীয় হলেও মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহে আবারও অস্বস্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘গত কয়েকদিন থেকে অব্যাহত থাকা মাঝারি তাপপ্রবাহ আজ তীব্ররূপ নিয়েছে। আজ বিকেলে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল শতকরা ৪২ ভাগ।’


রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আগুন নিয়ন্ত্রণে

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৪ মে, ২০২৪ ১৪:২২
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের ১৩ নম্বর তানজিমারখোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে লাগা আগুন সোয়া এক ঘণ্টা চেষ্টার পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আজ শুক্রবার দুপুর পৌনে ১ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দৌজা নয়ন।

এর আগে আজ বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে উখিয়ার ১৩ নম্বর তানজিমারখোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-ব্লকের কাঁঠাল গাছতলাস্থ বাজারে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এতে আগুনে পুড়ে গেছে অর্ধশতাধিক বসত ঘর ও বেশ কিছু দোকানপাটসহ অন্তত ৮০ টির বেশি স্থাপনা।

তবে কিভাবে আগুনের সূত্রপাত তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান অতিরিক্ত শরণার্থী কমিশনার।

কমিশনার বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উখিয়ার ১৩ নম্বর তানজিমারখোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাঁঠাল গাছতলাস্থ বাজারে হঠাৎ আগুন লাগে। এরপর মুহুর্তেই তা বাজারের অন্য দোকানপাটসহ আশপাশে ক্যাম্পের বসত ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তাৎক্ষণিক উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দেওয়া হলে প্রথমে তাদের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। পরবর্তীতে স্টেশনটির আরও বেশ কয়েকটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনীসহ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরাও আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেছে।'

কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি তথ্য দিয়ে সামছু-দৌজা নয়ন বলেন, ‘এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা তা খতিয়ে দেখতে ফায়ার সার্ভিস ও আইন শৃংখলা বাহিনীসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা কাজ করছে। পাশাপাশি আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ধারণেও সংশ্লিষ্টরা কাজ অব্যাহত রেখেছে।

আগুন লাগার কেউ হতাহত হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে এখনো কোন তথ্য পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।

বিষয়:

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ৯টি ইউনিট

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৪ মে, ২০২৪ ১৩:০৫
সারা বাংলা ডেস্ক

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট ও সেনাবাহিনী।

আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ১৩নং ক্যাম্পের কাঁঠাল গাছতলা বাজারে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। তবে তাৎক্ষণিকভাবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি।

উখিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

১৩নং ক্যাম্পের বাসিন্দা শফিউল্লাহ বলেন, ‘আগুন এখনো জ্বলছে। ইতোমধ্যে অর্ধশত ঘর পুড়ে গেছে। জানি না কখন নিয়ন্ত্রণে আসবে।’

উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক কামাল হোসেন বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে। আগুনের পরিস্থিতি ভয়াবহ।’

বিস্তারিত আসছে...

বিষয়:

মাটির ট্রাকে বেহাল সড়ক

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৪ মে, ২০২৪ ১০:৩০
খোরশেদ আলম, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী)

নিয়ম-নীতি থাকলেও এর কোনো তোয়াক্কা নেই। প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘটছে এমনি ঘটনা। সবাই যেন দেখেও না দেখার ভান করে চলেছে। আর এই উদাসীনতায় সরকারের কোটি কোটি টাকার রাস্তা বছর না পেরুতেই ভেঙ্গেচুরে একাকার হয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, মাটি ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী। তাদের সহযোগিতা করছে স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন। সে জন্য ট্রাক্টর চলাচল বন্ধে বাধা দিয়েও কাজ হচ্ছে না।

জানা যায়, মাটিবাহী ট্রাকের দৌরাত্ম্যে সড়কগুলো ভেঙে গেছে। ফলে যান চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। পথচারীদের জন্য পায়ে হেঁটে চলাও কঠিন হয়ে পড়েছে। কোনো কোনো রাস্তায় চালকরা রিকশা-ভ্যান নিয়েও যেতে চাচ্ছেন না। জনসাধারণের এমন ভোগান্তিতে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন যেন নীরব দর্শক। আর ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে অবৈধ ট্রাক্টর ও মাটি কারবারিরা।

কখনো কখনো প্রশাসন বাধা দিলে মাটিদস্যুরা রাতে এসব সড়ক-মহাসড়কে মাটি বহন করে। বহনের সময় সড়কজুড়ে মাটি পড়ে পুরু আস্তরণ সৃষ্টি হয়েছে। এসব মাটি থেকে বৃষ্টির আগে প্রচণ্ড ধুলা ও বৃষ্টির পরে সড়কে কাদায় মাখামাখি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দেখে মনে হয় ইটের খোয়া, পাথর ও বিটুমিনের পরিবর্তে মাটি দিয়ে নির্মাণ করা সড়ক।

স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘মাঝে মাঝে রাতের বেলায় পুলিশের লোকজন এসে গাড়ি আটক করে। কিছু টাকা দিলেই তারা চলে যায়। মাটি ব্যবসায়ীরা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার, ক্ষমতাসীন দলের লোকজন হওয়ায় এলাকাবাসী ভয়ে মুখ খোলেন না। উপজেলার প্রায় রাস্তা দিয়েই ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। এতে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের অংশ গ্রামীণ সড়কগুলো বিলীন হয়ে যাচ্ছে।’

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফাতেমা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহিন মিয়া এ বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ২০টি মামলায় অবৈধভাবে মাটি কাটার অপরাধে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন জানান, থানা পুলিশ ও স্থানীয় কিছু সাংবাদিককে টাকা দিয়েই ফসলি জমি থেকে মাটি কাটছেন। এ মাটি সড়ক দিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। উপজেলা প্রশাসন থেকে কোনো অভিযান পরিচালনা করতে নামলেই তাদের কাছে খবর চলে আসে। পুলিশ প্রশাসনেও তাদের সোর্স রয়েছে। তারাই অগ্রিম খবর পৌঁছে দেয়। যার কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত এসে তাদের পায় না।

স্থানীয় প্রবীণ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, এখানে পুলিশ ও স্থানীয় ভুঁইফোড় পত্রিকার সংবাদকর্মীরা বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে গিয়ে মাটি ব্যবসায়ীদের থেকে টাকা নেয়। এটা সত্য। আর এ কারণে এখানে তেমন কোনো গণমাধ্যমে মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হতে দেখা যায় না।

সোনাইমুড়ী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন মিয়া বলেন, ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা অপরাধ। মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ইউএনও কানিজ ফাতেমা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে কৃষিজমির মাটি কেটে বিক্রি করে আসছিল একটি চক্র। অভিযোগ পেয়ে মাটি কাটার অপরাধে বিভিন্ন সময় ২০টি মামলায় সাড়ে ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের সতর্কও করা হয়েছে।


‘নির্বাচনী প্রক্রিয়া ধ্বংস হলে তা জাতির জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না’

ছবি: বাসস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

নির্বাচনী ব্যবস্থা গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় চাবিকাঠি। নির্বাচনী প্রক্রিয়া ধ্বংস হয়ে গেলে তা জাতির জন্য কোন মঙ্গল বয়ে আনবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা।

আজ বৃহস্পতিবার নওগাঁ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

ইসি রাশেদা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সবগুলো নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা করেছে। যাতে এই নির্বাচনগুলো সহিংসতা মুক্ত হয়। মানুষ যাতে ভোট কেন্দ্র এসে নির্বিঘ্নে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন।’

তিনি বলেন, ‘প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা নির্বাচন ভালো ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সামনের নির্বাচনগুলোও আমরা আরও ভালোভাবে সম্পন্ন করতে চাই। যাতে সাধারণ মানুষ বলতে পারে এই নির্বাচন কমিশন ভালো নির্বাচন করতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন কোন ব্যাক্তিকে বিজয় করার লক্ষে কাজ করে না। প্রশাসনকেও সেভাবেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে স্বাধীনভাবে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। দেশে-বিদেশের সব জায়গায় যেন প্রশংসিত হয় বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে। নির্বাচন কমিশনের একটাই প্রত্যাশা নির্বাচন যেন কোন ব্যত্যায় না ঘটে। কালিমা লিপ্ত না হয়।’

প্রার্থীদের উদ্যেশ্যে তিনি বলেন, আচরণ বিধি মেনে প্রার্থীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রচার- প্রচারণা চালাতে হবে। বিনা কারণে একজন আরেকজনের প্রতিপক্ষ হয়ে আক্রমণ করে কথা বলা যাবে না। ভোটার যাতে ভোট কেন্দ্রে আসে সেই পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। কোন প্রার্থীর কোন অভিযোগ থাকলে কমিশনকে জানালে সাথে সাথে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক মো. গোলাম মওলার সভাপতিত্বে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ইমতিয়াজ হোসেন, রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি বিজয় বসাক, নওগাঁর পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক, রাজশাহীর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বক্তৃতা করেন।


চট্টগ্রাম নগরীতে কোরবানির জন্য প্রস্তুত সাড়ে ৮ লাখ গবাদি পশু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৩ মে, ২০২৪ ১১:১২
ডেইজী মউদুদ, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে বিভিন্ন উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকায় এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে সাড়ে ৮ লাখ গবাদি পশু। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ পশু লালন পালনে এগিয়ে আসায় গত ৯ বছরে পশু উৎপাদন বেড়েছে ৩ গুণ। ইতোমধ্যে বিভিন্ন খামারে পশু বেচাকেনাও শুরু হয়েছে। দেশব্যাপী চাহিদার তুলনায় ২২ লাখ কোরবানির পশু অতিরিক্ত থাকায় কোনো পশু আমদানির প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

নগরীতে এ বছরে কোরবানি পশুর চাহিদা ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬৫টি। এর মাঝে ৫ লাখ ২৬ হাজার ৪৭৫টি গরু, ৭১ হাজার ৩৬৫ টি মহিষ, ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৮৩ ছাগল, ভেড়া ৫৮ হাজার ৬৯২ টি এবং অন্যান্য পশু ৮৮টি।

জেলায় ছোট-বড় বিভিন্ন খামারে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৮ লাখ ৫২ হাজার ২৫৯টি গবাদি পশু। ফলে পশুর ঘাটতি রয়েছে ৩৩ হাজার ৪০৬টি। চাহিদার সঙ্গে জোগানের পার্থক্য এখন মাত্র ৩ শতাংশ। অথচ ২০১৫ সালে চট্টগ্রামে গবাদি পশুর উৎপাদন ছিল মাত্র ৩ লাখ ২০ হাজার। অর্থাৎ ৯ বছরে গবাদি পশুর উৎপাদন বেড়েছে ৩ গুণ।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. রেয়াজুল হক এই প্রতিবেদককে বলেন, চট্টগ্রামে গবাদি পশুর খামার রয়েছে ১২ হাজারের ও বেশি। খামার ছাড়া ও ব্যক্তিপত পর্যায়ে পশু লালন পালন করায় কোরবানিতে বিদেশি পশুর ওপর নির্ভরশীলতা কমেছে। দেশে উৎপাদিত পশু দিয়েই কোরবানির চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে।

মূলত প্রতি বছর কিছু পশুর ঘাটতি থাকে। তখন অন্য জেলা থেকে পশু এনে চাহিদা পূরণ করা হয়। এ বছরও পার্শ্ববর্তী জেলা রাঙামাটি, খাগড়াঝড়ি এবং দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে পশু এনে সেই ঘাটতি পুশিয়ে নেওয়া হবে।

বর্তমানে খামারগুলোতে চলছে পশু মোটাতাজকরণ প্রক্রিয়া। বিদেশ থেকে পশু আমদানি বন্ধ থাকায় এবার পশুর দাম ভালো পাবেন বলে আশা করছেন খামারিরা। কোরবানির আগেই সব পশু বিক্রি করে দেবেন বলে তারা আশা করছেন।

উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মতিউর রহমান এই প্রতিবেদককে জানান, এ বছরে কোরবানি পশুর চাহিদা স্থানীয় উৎপাদন নিয়ে মেটানো হবে। খামারিদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ায় পশু উৎপাদন বেড়েছে।

গৃহিণী সালেহা খানম বলেন, ‘পশুর দাম অতিরিক্ত। সেই সাথে মাংস রান্না করার সরঞ্জামাদির দামও গত বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। আমরা মধ্যবিত্ত মানুষ। কোরবানি করতে পারব কি না এখনো বুঝতে পাচ্ছি না।’


ঘুষ ছাড়া মেলে না ড্রাগ লাইসেন্স

নেপথ্যে অফিস সহকারী আলমগীর ও সুমন
ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৩ মে, ২০২৪ ০৯:৫১
আবু সাঈদ, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা জেলার পাঁচ হাজার ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স রয়েছে। যার মধ্যে দুই হাজারের মতো লাইসেন্স নীতিমালা না মেনেই ইস্যু করা হয়েছে। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এসব লাইসেন্স অবৈধ উপায়ে ইস্যু করা হয়। বাংলাদেশ ক্যামিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতির সাতক্ষীরা অফিস সহকারী আলমগীর হোসেন বস্ ওরফে আলমগীর এবং কম্পিউটার অপারেটর সুমনের মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলার ড্রাগ সুপার ঘুষ নিয়ে এ কাজ করে থাকেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিয়মানুযায়ী কোনো ওষুধের দোকান তথা ফার্মেসি করার জন্য ড্রাগ লাইসেন্স প্রয়োজন হয়। আর এই ড্রাগ লাইসেন্স তিনিই পাবেন, যার ফার্মাসিস্টের প্রশিক্ষণ ও সনদ রয়েছে। দুই বছর মেয়াদি এ ড্রাগ লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। এজন্য পৌরসভার মধ্যে তিন হাজার টাকা ও পৌরসভার বাইরে গ্রাম এলাকার জন্য এক হাজার পাঁচশ টাকা চালান কেটে জমা দিতে হয়। এরপর দুই বছর অন্তর এ লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়।

ড্রাগ লাইসেন্স করার জন্য ফার্মাসিস্টের এই শর্তটি অনেকেই সঠিকভাবে পূরণ করেন না। অনেকেই ছয় মাস মেয়াদি ফার্মাসিস্ট কোর্স করে ড্রাগ লাইসেন্স সংগ্রহের পর অন্যকে দিয়ে ওষুধ ব্যবসা পরিচালনা করেন। আবার অনেকে ভিন্ন ফার্মেসিতে থেকেই নতুন ফার্মেসি খুলে রমরমা ওষুধ ব্যবসা চালিয়ে বনে গেছেন ডাক্তার।

আর এভাবেই সাতক্ষীরা ড্রাগ সুপারের কার্যালয়ে অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চলে মোটা অংকের ঘুষ বাণিজ্য। ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে হাজারের অধিক অবৈধ লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আবার তাদের দাবি করা ঘুষ না দিলে সব শর্ত পূরণ করার পরও লাইসেন্স ইস্যু করতে গড়িমসি করা হয়। ড্রাগ লাইসেন্স পেতে ব্যাংক স্বচ্ছলতা সনদপত্র, লাইসেন্স ফি জমা দেয়ার ট্রেজারি চালান, দোকান ভাড়ার রশিদপত্র, ফার্মাসিস্টের অঙ্গীকারনামা ও পৌর/ইউনিয়নের ট্রেড লাইসেন্স জমা দিতে হয়। পাঁচ থেকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে নবায়ন করে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তাদের নির্দিষ্ট অংকের ঘুষ না দিলে বেগ পোহাতে হয় বছরের পর বছর।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন সুন্দরবন ফার্মেসির মালিক আবু জাফর সিদ্দিক ড্রাগ লাইসেন্স করতে সাতক্ষীরা জেলা ড্রাগ সুপারের কার্যালয়ে গেলে কতিপয় ব্যক্তি ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে। পরবর্তীতে অফিস সহকারী আলমগীরের মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা ঘুষ দিয়েও মেলেনি লাইসেন্স।

আশাশুনির আনুলিয়া বাজারের রহমান ফার্মেসিতে ফার্মাসিস্ট নেই। ওই ফার্মেসির মালিক এক ফার্মাসিস্টকে দোকানের কর্মচারী দেখিয়ে ড্রাগ লাইসেন্সের জন্য অফিস সহকারী আলমগীর ও সুমনের মাধ্যমে ড্রাগ সুপারের কার্যালয়ে আবেদন করেন। পরে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে ড্রাগ সুপার লাইসেন্স ইস্যু করেন।

এদিকে বেশিরভাগ ফার্মেসি টাকা দিয়ে লাইসেন্স নিলেও ভয় আর আতঙ্কে মুখ খুলতে চায় না। বাংলাদেশ ক্যামিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতির সাতক্ষীরা অফিসের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ড্রাগ সুপারের কার্যালয়ে ঘুষ লেনদেন দীর্ঘদিনের ব্যাপার। টাকা না দিলে এখানে মেলেনা ড্রাগ লাইসেন্স। আর এগুলো আলমগীর ও সুমনের মাধ্যমেই হয়।

এ ব্যাপারে মূল অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘মানুষ কি এতটাই পাগল হয়ে গেছে যে এতগুলো টাকা দেবে লাইসেন্স করার জন্য, যা শুনছেন তা মিথ্যা।’

কম্পিউটার অপারেটর সুমন মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এসব প্রতিবেদন বাদ দেন ভাই। আমি দেখা করবানে। দেখা হলে সব মিটে যাবেনে।’

সাতক্ষীরা জেলা ড্রাগ সুপার আবু হানিফ বলেন, ড্রাগ লাইসেন্স পেতে ও নবায়ন করতে সরকারি ফি ছাড়া কোনো টাকা নেওয়া হয় না। অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তার নাম ভাঙ্গিয়ে কে বা কারা টাকা নিয়ে থাকে তা তিনি জানেন না।


নিখোঁজ এমপি আনারের মরদেহ মিলল পশ্চিমবঙ্গে

আনোয়ারুল আজিম আনার। ফাইল ছবি
আপডেটেড ২২ মে, ২০২৪ ১১:২১
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতে গিয়ে নিখোঁজ বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে কলকাতার নিউটাউন থেকে।

ভারতীয় গণমাধ্যমে এ খবর দেওয়া হয়েছে। তবে তাকে হত্যা করা হয়েছে কি না সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।

সীমান্ত এলাকা ঝিনাইদহ-৪ আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য (এমপি) ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন আনোয়ারুল আজীম আনার।

১৯ মে আনোয়ারুল আজীমের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আব্দুর রউফ বলেছিলেন, ‘১১ মে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। কিন্তু এরপর ১৬ মে তার সঙ্গে শেষ কথা হয়েছে।’

বিষয়টি নিয়ে ১৯ মে ডিবি কার্যালয়েও যান আনোয়ারুল আজীমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘তিনদিন ধরে আমার বাবাকে ফোনে পাচ্ছি না। তার মোবাইল ফোনটি মাঝে মাঝে খোলা পাই আবার মাঝে মাঝে বন্ধ পাই। পরে এই বিষয়ে আমি ডিবি প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাকে বলেছেন বিষয়টি তিনি দেখছেন। পরে আজকে আমি ওনার কার্যালয়ে আসি। তিনি আমাদের সহযোগিতা করছেন। বাবাকে ফোনে না পাওয়ার কারণেই মূলত আমি ডিবি কার্যালয়ে এসেছি। আমি নিজেও ভারতে দ্রুত সময়ের মধ্যে যাব।’

এর আগে, গত ১১ মে চিকিৎসার জন্য ভারতে যান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। এরপর দুদিন পরিবার ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। ১৪ মে থেকে তার সঙ্গে সকল প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তার ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটিও বন্ধ থাকে।

বিষয়:

দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিত হলেন যারা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারা বাংলা ডেস্ক

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। ভোট গণনা শেষে রাতে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। সারা দেশের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর থেকে জানা যায়-

ফরিদপুর

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ফরিদপুরের নগরকান্দা ও সালথা উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নগরকান্দা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহসম্পাদক কাজী শাহ জামান বাবুল। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৭ হাজার ২০৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরদার পেয়েছেন ২৫ হাজার ২৩৭ ভোট।

অন্যদিকে সালথা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বর বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৫৪৫ ভোট তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মো. ওহিদুজ্জামান পেয়েছেন ৫ হাজার ৩৪২ ভোট।

নারায়ণগঞ্জ

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। ঘোড়া প্রতীকে তিনি পেয়েছেন এক লাখ ১৫ হাজার ২৫২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মো. শাহজালাল মিয়া পেয়েছেন ১৩ হাজার ১৩২ ভোট।

বিজয়ী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য। তিনি কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. শাহজালাল মিয়া আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও আখাউড়ায় উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কসবা উপজেলায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই ছাইদুর রহমান ও আখাউড়ায় মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান মনির হোসেন বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাাচিত হয়েছেন।

ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, কসবা উপজেলায় ছায়েদুর রহমান স্বপন কাপ-পিরিচ প্রতীকে ৮৬ হাজার ৬৯৮ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কুটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব রাশেদুল কাউসার ভূইয়া আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৫৯ ভোট।

অন্যদিকে আখাউড়া উপজেলায় মনির হোসেন ঘোড়া প্রতীকে ২৮ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৫৬৩ ভোট।

রাঙামাটি

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে রাঙামাটির রাজস্থলী, কাপ্তাই ও বিলাইছড়ি উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। রাজস্থলী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উবাচ মারমা আনারস প্রতীকে ৭ হাজার ৭৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. রিয়াজ উদ্দীন রানা দোয়াত কলম প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ১৮ ভোট।

অন্যদিকে কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. নাছির উদ্দিন দোয়াত কলম প্রতীকে ৭ হাজার ৩৬২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ৯৭৩ ভোট।

অপরদিকে বিলাইছড়ি উপজেলায় মোট ১৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫টি হেলিসর্টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। দুর্গম এলাকা হওয়ায় রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ফলাফল না আসায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোনো ফলাফল ঘোষণা করেননি। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) সমর্থিত দোয়াত কলম প্রতীকের বিরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যা চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

লালমনিরহাট

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। দুই উপজেলায় মধ্যে আদিতমারী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ফারুক ইমরুল কায়েস ও কালীগঞ্জ উপজেলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুজ্জামান আহমেদ বিজয়ী হয়েছেন।

রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা লুৎফর কবির তাদেরকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।

আদিতমারী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ফারুক ইমরুল কায়েস মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৩ হাজার ১৩৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৯ হাজার ১৮টি ভোট

কালীগঞ্জ উপজেলায় সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৪ হাজার ৩০৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তার চাচা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহমেদ ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১৯ হাজার ৩৫০ ভোট।

পিরোজপুর

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে পিরোজপুর জেলার দুই উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার পিরোজপুরের নেছারাবাদ ও কাউখালী উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের মোট ১২২টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

কাউখালী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মো. আবু সাঈদ মিঞা ও নেছারাবাদ উপজেলায় আব্দুল হক নির্বাচিত হয়েছেন। রাতে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ শফিকুল হক বেসরকারিভাবে তাদের বিজয়ী ঘোষণা করেন।

নেছারাবাদ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আব্দুল হক আনারস প্রতীকে ৩৮ হাজার ৬১২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এস এম মুইদুল ইসলাম মোটরসাইল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৫২০ ভোট।

অন্যদিকে কাউখালী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মো. আবু সাঈদ মিঞা ঘোড়া প্রতীকে ১১ হাজার ২৮৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার পল্টন কাপ-পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ২৯৪ ভোট।

ঝালকাঠি

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ঝালকাঠি সদর ও নলছিটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঝালকাঠি সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি খান আরিফুর রহমান। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৯৪৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মো. সুলতান খান পেয়েছেন ২৫ হাজার ৯৭১ ভোট।

অন্যদিকে নলছিটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন খান সেলিম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২৩ হাজার ৯৩৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র তছলিম উদ্দিন চৌধুরী আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৬ হাজার ৭৮৪ ভোট।

বাগেরহাট

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে বাগেরহাটে ফকিরহাট, মোল্লাহাট,ও চিতলমারী উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফকিরহাট উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন শেখ ওহিদুজ্জামান বাবু। মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৬৫৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনরস প্রতীকের প্রার্থী বর্তমানে উপজেলা চেয়ারম্যান স্বপন দাস পেয়েছেন ২৯ হাজার ৪৩৭ ভোট। এ উপজেলায় ভোট কাস্ট হয়েছে ৬২.৫০ শতাংশ।

চিতলমারী উপজেলার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন মো. আলমগীর হোসেন সিদ্দিকী। দোয়াত কলম প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৮৮৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অশোক কুমার বড়াল মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ২২ হাজার ৭৬৩ ভোট। এ উপজেলায় ভোট কাস্ট হয়েছে ৪৫.৭৫ শতাংশ।

অন্যদিকে মোল্লাহাট উপজেলার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহিনুর আলম ছানা। দোয়াত কলম প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২৯ হাজার ৯০২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা শেখ নাসির উদ্দীন আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৯ হাজার ৯৫৪ ভোট। এ উপজেলায় ভোট কাস্ট হয়েছে ৫৩.৭৭ শতাংশ। জেলায় গড় ভোট কাস্টিং হয়েছে ৫৪ শতাংশ।

যশোর

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে যশোরের ঝিকরগাছা, শার্শা ও চৌগাছা উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। ভোটগ্রহণ শেষে রাতে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন উপজেলাগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

চৌগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম হাবিবুর রহমান। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৫৬৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান পেয়েছেন ২৮ হাজার ৯৮০ ভোট।

নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুম্মিতা সাহা রাত সাড়ে ৯টায় এ ফলাফল ঘোষণা করেন।

ঝিকরগাছা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম। আনারস প্রতীকে মনিরুল ইসলাম পেয়েছেন ৪০ হাজার ৬৪৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সেলিম রেজা ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১৮ হাজার ৪৪৩ ভোট।

অন্যদিকে শার্শা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মো. সোহরাব হোসেন দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে ৩৭ হাজার ৫৭০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. অহিদুজ্জামান আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১২ হাজার ২৯১ ভোট।

রাজশাহী

দ্বিতীয় ধাপে রাজশাহীর বাগমারা, দুর্গাপুর ও পুঠিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাগমারা উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জাকিরুল ইসলাম সান্টু। তিনি ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৪৭ হাজার ৩২২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুর রাজ্জাক সরকার ওরফে আর্ট বাবু পেয়েছেন ৪ হাজার ৩২১ ভোট।

পুঠিয়া উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আবদুস সামাদ মোল্লা। তিনি আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৬ হাজার ৬৬৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২৩ হাজার ৬৭৯ ভোট।

অন্যদিকে দুর্গাপুর উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন শরীফুজ্জামান শরীফ। তিনি মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৪২ হাজার ১১৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল মজিদ সরদার পেয়েছেন ২৭ হাজার ৩৩২ ভোট।

সাতক্ষীরা

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে সাতক্ষীরার আশাশুনি, তালা ও দেবহাটা উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আশাশুনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি চিংড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৫১ হাজার ৬৬২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাহনেওয়াজ ডালিম ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৫০ হাজার ৭০৭ ভোট।

অপরদিকে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা নির্বাচনে মো. আল ফেরদাউস বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি হেলিকপ্টার প্রতীকে ২৬ হাজার ৩৭৭ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. মজিবুর রহমান মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ১৭ হাজার ১৫২ ভোট।

এ ছাড়া সাতক্ষীরার তালা উপজেলা নির্বাচনে ঘোষ সনৎ কুমার বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি কাপ পিরিচ প্রতীকে ৪৬ হাজার ৪৫৮ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সরদার মশিয়ার চিংড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৩২ হাজার ৪১৩ ভোট।

বিষয়:

একীভূত হচ্ছে খুলনার ৪৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ময়নাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানে ৩ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করান ২ জন শিক্ষক। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২২ মে, ২০২৪ ১০:৩৭
আওয়াল শেখ, খুলনা

কম শিক্ষার্থী নিয়ে পাশাপাশি থাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো একীভূত করার পরিকল্পনা করেছে সরকার। খুলনা জেলায় এমন ৪৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় একীভূত করার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হয়েছে।

খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম বলেন, ‘আমাদের জেলাতে মোট ১ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৪৭টি বিদ্যালয়ে ৫০ জনের কম শিক্ষার্থী আছে। তবে পারিপার্শ্বিক বিবেচনায় ৪৬টি বিদ্যালয়কে একীভূত করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।’

তবে একীভূত করার পর কোনো বিদ্যালয় বন্ধ হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি থাকা দুটি বিদ্যালয়ের একটিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠদান করা হবে। একইভাবে অন্যটিতে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান করা হবে। এটা ভাগাভাগি করে পাঠদান করানো হবে।’

৫০ জনের কম শিক্ষার্থী রয়েছে এমন কয়েকটি বিদ্যালয়ে পরিদর্শন করেছেন এই প্রতিবেদক। খুলনা শহর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে বিল খুলশী ও বিল ডাকাতিয়ার মাঝামাঝি প্রত্যন্ত ময়নাপুর গ্রামে রয়েছে ময়নাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানে তিনজন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করান দুজন শিক্ষক।

গত বছর জেলা শিক্ষা অফিস থেকে ওই বিদ্যালয়টির কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ বন্ধ করার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপ্না রানী বলেন, বিদ্যালয়টিতে দিন দিন শিক্ষার্থী সংখ্যা কমে আসেছে। কারণ এই বিলে কম পরিবারের বসবাস। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী অনেক বিদ্যালয়ও রয়েছে।

ভালো অবকাঠামো না থাকায় শিক্ষার্থীরা সেখানে ভর্তি হতে চায় না জানিয়ে তিনি বলেন, এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯১ সালে। ২০১৩ সালে সরকার বিদ্যালয়টিকে জাতীয়করণ করে। ২০১৫ সাল পর্যন্ত এখানে ৬০-৭০ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করত। তবে পার্শ্ববর্তী আধা কিলোমিটারের মধ্যে আরেকটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ২০১৫ সালে সেখানে দুইতলা পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। যে কারণে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা ওই বিদ্যালয়টিতে চলে যায়।

স্বপ্না রানী জানান, বিদ্যালয়টি থেকে গত ৫ বছরে পাস করে বের হয়েছে মাত্র ৩০ জন। আর ২০২২ সালে শিক্ষার্থী ছিল মাত্র একজন। ২০২৩ সালে আরও দুজন নতুন করে ভর্তি হওয়ায় বর্তমানে তিনজন শিক্ষার্থী রয়েছে। তারাও চলে যেতে পারে। কারণ দুর্বল অবকাঠামোর জন্য তাদের মায়েরাও এখানে পড়াতে চান না। ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ জেলা পরিষদের মাধ্যমে এখানে একটি আধাপাকা ভবন নির্মাণ করিয়ে দেন। পরে আর অবকাঠামো নির্মাণ হয়নি।

শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম বলেন, এ ধরনের বিদ্যালয়গুলোতে শ্রেণিভিত্তিক পাঠদান ভাগাভাগি হলে আর শিক্ষার্থী সংকট হবে না। অর্থাৎ একটিতে কম শিক্ষার্থী বা অন্যটিতে বেশি শিক্ষার্থী এমন সমস্যা হবে না।

তিনি আরও বলেন, একীভূত হওয়ার ফলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতাও বাড়বে। ফলে শিক্ষার মান আরও ভালো হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালক মো. মোসলেম উদ্দিন বলেন, অল্প শিক্ষার্থী রয়েছে, তবে পাশাপাশি কোনো বিদ্যালয় নেই- এমন বিদ্যালয়গুলো যথারীতি চালু থাকবে। ঢালাওভাবে কিছু করা হচ্ছে না। স্থানীয় বাস্তবতা ও পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যালয়গুলো একীভূত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘সারা দেশে এ ধরনের ৩০০টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হয়েছে। এটা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। নির্দেশনা এলে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করা হবে।’


banner close