মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

সরকারি বাসায় মিলেমিশে ফ্রিতে থাকেন আ.লীগ-বিএনপি নেতারা

কেপিএমের আবাসিক ভবনগুলোয় বসবাস করলেও ভাড়া পরিশোধ করেন না অনেকেই। ছবি: সংগৃহীত
প্রকাশিত
প্রকাশিত : ১৫ অক্টোবর, ২০২২ ০৮:৪৮

তাসনীম হাসান, চট্টগ্রাম

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মফিজুল হক। একই সঙ্গে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকও। এই জনপ্রতিনিধি ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কর্ণফুলী পেপার মিলস (কেপিএম) লিমিটেডের বন ভবন-২-এর পূর্ব পাশের বাসাটি ভাড়া নেন। তার সঙ্গে কেপিএমের চুক্তির প্রথম শর্তই ছিল প্রতি মাসের ৫ তারিখের মধ্যে ভাড়া পরিশোধ করতে হবে।

কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী মফিজুল ভাড়া পরিশোধ করে আসেননি বলে অভিযোগ তুলেছে কেপিএম কর্তৃপক্ষ। ভাড়ার বকেয়া জমতে জমতে গত এক দশকে তার কাছে কেপিএমের পাওনা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৫৭৫ টাকা। বকেয়া টাকা চেয়ে ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১০ বার নোটিশ দেয়া হয় মফিজুলকে। অথচ বকেয়া পরিশোধ ছাড়াই উল্টো তিনি কোনো কিছু না জানিয়ে এক বছর আগে বাসা ছেড়েছেন বলে দাবি করেছে কেপিএম।

একই উপজেলা পরিষদের সাবেক নারী ভাইস চেয়ারম্যান নুর নাহার বেগম। তিনি বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের রাঙামাটি জেলা শাখার জ্যেষ্ঠ সহসভাপতিও। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১১ সালের শুরুতে কেপিএমের বন বিভাগ-২-এর পশ্চিম অংশটি বরাদ্দ পান নুর নাহার। তিনিও পরিশোধ করেননি বাসা ভাড়া। তার কাছে কেপিএমের পাওনা ১০ লাখ ২১ হাজার ২৫ টাকা। বকেয়া আদায়ে গত ৮ বছরে তাকে ১৯ বার নোটিশ দিয়েছে কেপিএম কর্তৃপক্ষ। কেবল জনপ্রতিনিধি থাকাকালীন পর্যন্ত বাসাটি ব্যবহারের শর্ত থাকলেও সেটি মানছেন না তিনি। এখনো পরিবার নিয়ে থাকছেন বাসাটিতে।

শুধু আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জেলা পর্যায়ের এই দুই শীর্ষ নেতাই নন, কেপিএমের আবাসিক ভবনগুলোর বাসায় থাকলেও ভাড়া পরিশোধ করেন না অনেকেই। সম্প্রতি কেপিএম কর্তৃপক্ষ এমন শতাধিক ব্যক্তিকে চিঠি দিয়ে বকেয়া পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছে। তাদের কাছে কেপিএমের পাওনা কোটি টাকার ওপর।

প্রতিষ্ঠানটির সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাজী মোশাররফ হোসেনের সই করা এসব নোটিশে দ্রুত বকেয়া পরিশোধ না করলে বাসার পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা হয়।

এর মধ্যে ৬৬ জনকে দেয়া নোটিশের কপি দৈনিক বাংলার এ প্রতিবেদকের কাছে আছে। এসব নোটিশ পর্যালোচনায় দেখা যায়, কেপিএমের সরকারি বাসায় থেকেও ভাড়া পরিশোধ না করাদের বড় অংশই জনপ্রতিনিধি। এই তালিকায় আরও আছেন কেপিএমের সাবেক শ্রমিক-কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী থেকে স্কুলশিক্ষকও।

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা এলাকায় ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কেপিএম। শুরু থেকেই কাগজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে গর্বের সঙ্গে উচ্চারিত হতো প্রতিষ্ঠানটির নাম। কিন্তু নানা অব্যবস্থাপনায় রাষ্ট্রায়ত্ত কাগজ কলটি প্রায় ডুবতে বসেছে। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) আওতাধীন প্রতিষ্ঠানটি সর্বশেষ লাভের মুখ দেখে তাও ১৪ বছর আগে, ২০০৮ সালে। এখন এক প্রকার বন্ধই আছে প্রতিষ্ঠানটি। পাঁচ হাজার শ্রমিকের মধ্যে এখন আছেন ৫০০ জনের মতো।

কেপিএমের কর্মকর্তা-শ্রমিকদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটি যে অনেকটা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে তার অন্যতম একটি কারণ, ভাড়া না দিয়ে বাসা দখল করে রাখা। তাদের মতে, এর ফলে সরকার একদিকে ভাড়া পাচ্ছে না, আবার প্রতিষ্ঠানের সম্পদও (বাসা, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি) অপচয় হচ্ছে।

আরও যারা ভাড়া দেন না

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে কেপিএমের পাওনা আছে ৫ লাখ ৭৬ হাজার ৮২৫ টাকা। তিনি বন ভবন-৩-এর নিচতলায় থাকছেন। ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত বকেয়া আদায়ে তাকে সাতবার নোটিশ দেয়া হলেও তিনি গা করেননি।

উপজেলা যুবলীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক ও চন্দ্রঘোনা ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য আবুল হাসনাত খোকন ২০১৮ সাল থেকে ইঞ্জিনিয়ার কলোনির একটি বাসায় থাকলেও ভাড়া পরিশোধ করছেন না। তার কাছে কেপিএমের পাওনা ২ লাখ ১৮ হাজার ১২৫ টাকা।

ইউপির সাবেক নারী সদস্য ফুসকারা বেগমও ভাড়া পরিশোধ করছেন না। তার কাছে কেপিএম পাবে ১ লাখ ৩ হাজার ৫৫ টাকা। ভাড়া পরিশোধ করছেন না আওয়ামী লীগ নেতা ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আলী এরশাদ। তার কাছে বকেয়া আছে ৫৯ হাজার ২৯২ টাকা।

অন্যদিকে চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মো. আজিজুল হক দখল করে আছেন কয়লার ডিপো এলাকার একটি বাসা। তাকে দ্রুত বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হলেও তিনি ছাড়েননি। একইভাবে বাসা দখল করে রেখেছেন সাবেক ইউপি সদস্য নয়ন বেগম, মো. মাইনুল ইসলাম।

বেশ কিছু শিক্ষকও কেপিএমের বাসায় থাকলেও ভাড়া দিচ্ছেন না। তাদের মধ্যে বারঘোনিয়া মুখ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিক শামিমা আক্তারের কাছে ২ লাখ ৮ হাজার ৭২৫ টাকা, ডলুছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিলকিস সুলতানার কাছে ২ লাখ ৯ হাজার ৬২৫, কে আর সি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল ইসলামের কাছে ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা পাবে কেপিএম।

জানতে চাইলে কাপ্তাই উপজেলা চেয়ারম্যান মফিজুল হক অভিযোগ করেন, কেপিএম তাকে অতিরিক্ত বিল ধরিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি ২০২১ সালের জুনে বাসা ছাড়লেও এখন পর্যন্ত বাসা ভাড়া দাবি করছে। আমি বকেয়ার এই হিসাব সংশোধনের জন্য আবেদন করেছি। একই সঙ্গে ভাড়াও দিয়ে যাচ্ছি।’

মফিজুল আরও বলেন, ‘বিসিআইসির আইনে বাসা ভাড়া দেয়ার নিয়ম নেই। বিষয়টি আমরা আগে না জানলেও এখন জেনেছি। আমার জানামতে, এখন সেখানে আমাদের দলের ১০-১২ জনসহ বিভিন্ন দলের অনেকে পরিবার নিয়ে থাকছে।’

কেপিএম ভুতুড়ে বিল ধরিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেন নুর নাহার বেগমও। তিনি বলেন, ‘২০১১ সালে পরিত্যক্ত বাসা মেরামতসাপেক্ষে আমাদের এখানে থাকতে দেয়া হয়েছে। আর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মূলত ২০১৭ সালে। বিসিআইসির আইনে যেহেতু বরাদ্দের নিয়ম নেই, তাই কাগজপত্রও নেই। বকেয়া বিলের বিষয়ে আপত্তি আছে। এ বিষয়ে কেপিএমের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তারা আমাদের কথা শুনতে চান না।’

অন্যদিকে চন্দ্রঘোনার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরীর দাবি, কেপিএম হয়রানি করার জন্য অতিরিক্ত ঘর ভাড়া দাবি করছে।

চাপে পড়ে বাসা ভাড়া দিয়ে আরও চাপে

মূলত কেপিএমের শ্রমিক-কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের আবাসনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল সেখানকার আবাসিক ভবনগুলো। কিন্তু হাতের নাগালে গ্যাস, বিদ্যুৎ আর পানিসমৃদ্ধ এসব ভবনে বাসা পেতে অনেকটাই মরিয়া হয়ে ওঠেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তারা নানাভাবে কেপিএমের ওপর চাপও তৈরি করতে থাকেন। বাধ্য হয়ে একসময় বিসিআইসির নিয়ম ভেঙে এক যুগ আগে তাদের বাসা ভাড়া দেয় কেপিএম কর্তৃপক্ষ। কেপিএমের ৩০০ বাসার মধ্যে ১০০ বাসা বর্তমানের প্রতিষ্ঠানের বাইরের ব্যক্তিদের নামে বরাদ্দ দেয়া। জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রভাবশালী ও বদলি হয়ে যাওয়া শ্রমিক-কর্মকর্তাদের পরিবার এসব বাসায় থাকছে। কিন্তু তাদের কাছে বাসা ভাড়া দেয়াটাই এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে কেপিএম কর্তৃপক্ষের কাছে।

কেপিএমের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা দৈনিক বাংলাকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘পাওনা আদায়ে যখনই কেপিএম উদ্যোগী হয়েছে, তখনই রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালীরা উল্টো কারখানার পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছেন। এখন বকেয়া পরিশোধের নোটিশ দেয়ার পরও তারা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’

জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীদের তোপের মুখে পড়ার ভয়ে এ নিয়ে কথা বলতে চাননি কেপিএমের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনোয়ার হোসেন। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বকেয়া আদায়ে সবাইকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। তবে এর বেশি আমি বলতে পারব না।’

কেপিএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সুদীপ মজুমদারকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। এমনকি খুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।


অবশেষে স্বজনদের দেখা পেলেন এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক

জলদস্যূদের হাত থেকে মুক্তির পর জাহাজে উল্লাস করেন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের নাবিকরা। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১৪ মে, ২০২৪ ১৬:৪০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত হওয়া জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ২৩ জন নাবিক নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে এসে পৌঁছেছে। জাহাজ এমভি জাহান মনি-৩ তাদের নিয়ে আসে। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে জাহাজটি জেটিতে পৌঁছায়।

জাহাজের নাবিকরা এরই মধ্যে স্বজনদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। দীর্ঘদিন প্রাণভয়ে থাকার পর অবশেষে স্বজনদের কাছে পেয়ে নাবিকদের অনেকে কেঁদে ফেলেন। নাবিকদের বরণ করতে ফুল হাতে জেটিতে এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন স্বজনরা।

জলদস্যুদের কবলে থাকার দিনগুলোকে বিভিষীকার দিন বলে আখ্যা দেন নাবিকদের বরণ করতে আসা একজন স্বজন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সেই দিনগুলোকে আর মনে করতে চাই না।’

এক মাস আগে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়া এমভি আব্দুল্লাহ বাংলাদেশের কুতুবদিয়ায় নোঙ্গর করেছে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায়। কিন্তু দেশে ফিরলেও স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তাদের আরও এক দিন অপেক্ষা করতে হয়।

গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে ৫৮ হাজার টন কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে যাওয়ার পথে ১২ মার্চ সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে জাহাজটি।

৩২ দিন জিম্মি থাকার পর ১৩ এপ্রিল জলদস্যুদের থেকে মুক্ত হয়ে দুবাই যায় জাহাজটি। এ সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুইটি যুদ্ধ জাহাজের পাহারায় এমভি আবদুল্লাহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পার হয়।


বিএসএফের বাধায় ৩ বছর ধরে বন্ধ মনু বাঁধের কাজ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৪ মে, ২০২৪ ১১:৩৭
এম শাকিল রশীদ চৌধুরী, কুলাউড়া (মৌলভীবাজার)

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় প্রায় তিন বছরেও মেরামত সম্পন্ন হয়নি মনু নদীর বাঁধ। ভারত সরকারের নানা অজুহাত ও বিএসএফের বাধার মুখে প্রতিরক্ষা বাঁধটির বাংলাদেশ অংশে কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর সীমান্তে ১ হাজার ৪০০ মিটার এলাকায় ভাঙন তীব্র হয়েছে। কয়েক হাজার মানুষ বর্ষায় বন্যাতঙ্কে রয়েছে। চাতলা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টটিও হুমকির মুখে পড়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, যৌথ নদী কমিশন মনু নদীর বাঁধ মেরামত ও তীর সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে।

মনু নদীর ভাঙন আর বন্যা থেকে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলাকে রক্ষার জন্য স্থায়ীভাবে নদীর তীর সংরক্ষণ ও বাঁধ মেরামতের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০২১ সালে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নদীর বাঁধ মেরামত ও তীর সংরক্ষণের কাজ শুরু করলেও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এতে বাধা দেয়। তাদের বাধায় এখন পর্যন্ত কাজ বন্ধ রয়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর সীমান্তের মনু নদী প্রতিরক্ষা বাঁধের তিনটি পয়েন্টে ১ হাজার ৪০০ মিটার এলাকায় ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। শরীফপুর ইউনিয়নের বাঁধের এ অংশ অনেক আগেই নদীর সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে গেছে। বর্ষায় নদীতে পানি বাড়লে কোনটি প্রতিরক্ষা বাঁধ, কোনটি নদী, আর কোনটি গ্রাম তা বোঝার উপায় থাকে না।

সীমান্তবর্তী এই ইউনিয়নের মানুষ এখন বন্যাতঙ্কে রয়েছে। ২০১৮ সালের বন্যায় পুরো এই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ওই সময় চাতলাপুর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এলাকার রাস্তাঘাট, সেতু ও কালভার্ট বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

বাঁধ মেরামতের কাজের কথা ভারতকে জানানো হলেও দীর্ঘদিন সাড়া মেলেনি। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে যৌথ নদী কমিশনের কাছে এ কাজের অনুমতি চেয়ে ডিও চিঠি পাঠানো হয়। তাতেও ভারতপক্ষের সাড়া পাওয়া যায়নি। চলতি বছরের মার্চে ভারত তাদের পাঁচটি স্থানে নতুন করে নদীর তীর সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশের সম্মতি চায়। এ স্থানগুলো তাদের অংশে পড়েছে বলে ভারতীয় পক্ষ দাবি করেছে। এতে কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়ন সীমান্তের নদীভাঙন প্রতিরোধ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য, বর্ষার আগেই নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ মেরামতের কাজ শেষ করতে হবে। না হলে বন্যার আতঙ্কে থাকতে হবে।

পাউবোর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, গত ১ এপ্রিল পাউবো তত্ত্বাবধায়কের নেতৃত্বে একটি টিম সীমান্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে। সে সময় ভারত সরকারের দাবি করা পাঁচটি স্থান বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় না থাকায় এ ব্যাপারে
সঠিক কোনো কিছু জানা যায়নি।

তিনি আরও বলেন, গত বছর যৌথ নদী কমিশনের মাধ্যমে কাজ শুরু করার জন্য আবেদন করা হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে অন্যপক্ষের সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপর আরও কয়েকবার আবেদন করা হয়। সম্প্রতি যৌথ নদী কমিশনের মাধ্যমে মনু নদীর ভারত অংশে ভাঙনের ৫টি স্থান দেখার জন্য পাউবোর পক্ষ থেকে বিজিবির মহাপরিচালকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। বিএসএফ স্থানগুলো দেখার অনুমতি দিলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।


মহাসড়কে চেয়ারম্যান প্রার্থীর পথসভা!  

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চেয়ারম্যানপ্রার্থীর পথসভা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৪ মে, ২০২৪ ১১:৩৭
চকরিয়া-পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যানপদপ্রার্থী ফজলুল করিম সাঈদী যান চলাচল বন্ধ করে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে পথসভা করেছেন। গতকাল রোববার রাতে চকরিয়া পৌরশহরের কাজী মার্কেট চত্বরে মঞ্চ তৈরি করে এ পথসভা করা হয়। জনসমাগমে সড়ক ও মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে প্রায় ৩ ঘণ্টা।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আচরণবিধি অনুযায়ী, জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয় এমন কোনো সড়কে জনসভা কিংবা পথসভা করা যাবে না। প্রার্থীদের পক্ষে কোনো ব্যক্তিও অনুরূপ জনসভা ও পথসভা করতে পারবেন না। কোনো পথসভা করতে হলে কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে সভার জায়গা ও সময় সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে, যাতে ওই স্থানে চলাচল ও আইনশৃঙ্খলার জন্য পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। এটি উপজেলা নির্বাচন আচরণবিধির ৭ ধারায় সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে; কিন্তু এ ক্ষেত্রে কোনো বিধান মানেনি উপজেলা চেয়ারম্যানপ্রার্থী ফজলুল করিম সাঈদি।

সড়কের দুই পাশে বাঁশ দিয়ে যান ও জনসাধারণের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৬টা থেকে কর্মী-সমর্থকরা মিছিল নিয়ে পথসভায় জড়ো হন। এ সময় মহাসড়কের একপাশে যানবাহন ও মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাত ১০টার দিকে পথসভা শেষ হলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। বিকল্প রাস্তা না থাকায় লোকজন ধাক্কাধাক্কি করে কোনো রকমে চলাচল করে। এতে চুরি ছিনতাইয়ের মতো একাধিক ঘটনাও ঘটে।

চেয়ারম্যানপ্রার্থী ফজলুল করিম সাঈদির এ পথসভায় বক্তব্য দেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা সরওয়ার আলম, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম ও পৌর যুবলীগের সভাপতি হাসানগীর হোছাইন।

চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এ পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনী আচরণবিধি বিষয়ে জানতে তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মহাসড়কে পথসভা হয়নি। মার্কেটের গাড়ি পার্কিং ও পাশের সড়কে হয়েছে। এর কারণে যানবাহন ও মানুষের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে, তা ঠিক। তবে বিষয়টি সম্পূর্ণ চেয়ারম্যানপ্রার্থী সাঈদী দেখবেন।

কক্সবাজারগামী এক পর্যটক বলেন, ‘এ সড়কটি কক্সবাজারের সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। কিন্তু নির্বাচনে প্রার্থীর লোকজন পথসভা করেছেন। এ সভার কারণে যানজটের কবলে পড়ে চকরিয়া পৌরশহর পার হতে প্রায় ৪০ মিনিট সময় লেগেছে।’ এ ব্যাপারে বক্তব্য নিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজলুল করিম সাঈদীর সঙ্গে ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, ‘কাজী মার্কেট চত্বরের গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে পথসভা করা হয়েছে। আমার জনপ্রিয়তা আছে, জনসমাগম হয়েছে। তবে মহাসড়কে পথসভা করিনি। তারপরও জনসাধারণের সুবিধার্থে আমরা সভা দীর্ঘ করিনি।

মহাসড়কে পথসভার বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘মহাসড়কে পথসভা করার খবর জানা নেই। এ বিষয়ে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। মহাসড়কে পথসভা করে যানবাহন ও মানুষের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে সত্যতা পেলে আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ আগামী ২১ মে চকরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।


যুবককে গাছে বেঁধে মারধরের ঘটনায় তোলপাড়

আপডেটেড ১৪ মে, ২০২৪ ১১:৩৬
ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে এক যুবককে গাছে বেঁধে মারধরের ঘটনায় আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। তবে আবার কয়েক ঘণ্টা পর সেই ভিডিও ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।

মারধরের শিকার ওই যুবকের নাম সোহেল রানা (৩০)। তিনি ঘাটাইল উপজেলার লক্ষ্মীন্দর ইউনিয়নের আবদুল হামিদের ছেলে। পেশায় একজন গাড়িচালক। যুবকের পরিবারের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে ওই নারীর পরিবার। তাদের ফাঁসানো হচ্ছে বলে যুবকের পরিবারের দাবি।

নেটিজেনরা বলছেন, আইন হাতে তুলে নিয়ে এমন অমানবিক নির্যাতন ও মারধর করা ঠিক হয়নি। অপরাধী হলে প্রচলিত আইনেই বিচার হতো। তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। এ নিয়ে তীব্র নিন্দাও প্রকাশ করেছেন অনেকে।

এ ঘটনায় মোবারক হোসেন ফনি নামের একজন মন্তব্যে লিখেছেন, ‘দেশে মাতব্বর বেড়ে এই দশা। আসুন আমরা সামাজিক ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই।’

নজরুল ইসলাম নামে একজন মন্তব্য করে লিখেছেন, ‘পাপ করলে শাস্তি পাবে কিন্তু গাছে বেঁধে নির্যাতন এটা অমানবিক। আইন আইনের গতিতে চলে আর যে মেয়েটাকে শ্লীলতাহানি করা হলো তার জীবনের কি হবে, তাকে তো জামাইও নিবে না।’

মেহেদী হাসান সিয়াম নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘যদি অপরাধ করেই থাকে তাহলে, তদন্ত সাপেক্ষে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। এভাবে আইন যারা নিজেরা হাতে তুলে নিয়েছে তারাও অনেক বড় আর বেশি অন্যায় ও অপরাধ করে ফেলেছে।’

এদিকে, নারীর দায়ের করা অভিযোগে পুলিশ ওই যুবককে উদ্ধারের পর ওইদিনই জেলে পাঠিয়েছেন। একাধিকবার ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়নি তারা।

অন্যদিকে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানায় ওই যুবকের পরিবার। এ বিষয়ে ওই যুবকের বড় ভাই মো. সোলায়মান বলেন, ‘একটি চক্রান্তমূলক ঘটনায় তাদের ফাঁসানো হচ্ছে। এতে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

এ বিষয়ে মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. বিপন খান বলেন, আইন হাতে তুলে নেওয়াটাই অপরাধ। অপরাধীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিতে হবে। এতে প্রচলিত আইনেই তার বিচার হবে। তবে মধ্যযোগীয় কায়দায় মারধর করার কারও অধিকার নেই।

গত শনিবার টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে এক যুবকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে রাতভর তাকে আটকে রেখে গাছে বেঁধে পেটানোর অভিযোগ ওঠে। পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ ওই যুবকের পরিবারের। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে কয়েক ঘণ্টা পর তা আবার সরিয়ে ফেলা হয়।


পরিবেশ রক্ষায় মানবিক পাঠশালার প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোর

আপডেটেড ১৪ মে, ২০২৪ ১০:৫৭
ইউসুফ বিন হোছাইন, (চকরিয়া-পেকুয়া) কক্সবাজার

কক্সবাজারের চকরিয়ায় ছুড়ে ফেলা বা ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্য জমা দিলেই মিলছে উপহার। পরিবেশ দূষণরোধ ও পরিবেশের সৌন্দর্য রক্ষায় এ উদ্যোগ নিয়েছে সামাজিক সংগঠন ‘মানবিক পাঠশালা’। শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য ‘প্লাস্টিকের বিনিময়ে উপহার নিন’ নামের এ কর্মসূচি ঘোষণা করে সংগঠনটি।

গত ২৯ এপ্রিল চকরিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এ ক্যাম্পেইনের যাত্রা শুরু হয়েছে। ক্যাম্পেইন উদ্বোধন করেন মানবিক পাঠশালার উপদেষ্টা ও চকরিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক জসিম উদ্দিন। প্রতিদিন চকরিয়া পৌর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে এ কর্মসূচি চলছে।

ছুড়ে ফেলা বা ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্য জমা দিয়ে উপহার পাওয়া শিক্ষার্থী রিজভী বলেন, ‘এই উদ্যোগটি অনন্য। প্লাস্টিকের বোতল যত্রতত্র পাওয়া যায়। এর বিনিময়ে যে উপহার পাব, তা কখনো ভাবিনি। অনেক ভালো লাগছে। এর মাধ্যমে আমরা সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ তৈরিতে উৎসাহিত হচ্ছি।’

এই আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়ে মানবিক পাঠশালার উপদেষ্টা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষাঙ্গনকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে এই উদ্যোগটি প্রসংশনীয়। শুরু থেকেই দারুণ সাড়া পাচ্ছে সংগঠনটি। উপহার হিসেবে বই পেয়ে দারুণ খুশি শিক্ষার্থীরাও। এখান থেকে আমরা দুটি জিনিস শিখছি। একটি পরিবেশ থেকে শিক্ষা, অন্যটি বই থেকে শিক্ষা। সুন্দর আয়োজনের জন্য নিশ্চয়ই মানবিক পাঠশালা প্রশংসার দাবিদার।’

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তাসিন রাজ্জাক আলভি বলেন, রাস্তাঘাটে প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ফেলা হয়। এতে পরিবেশের সৌন্দর্য হানি ঘটছে। এসব বর্জ্য পরিষ্কারের পাশাপাশি জনসচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে। প্লাস্টিক বর্জ্য জমা দিলেই সবার হাতে উপহার তুলে দেওয়া হচ্ছে। এই কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে আমাদের পরিবেশবান্ধব মন-মানসিকতার সৃষ্টি হচ্ছে। জনসচেতনতা ও বসবাসযোগ্য সুন্দর পরিবেশ তৈরিতে সবাইকে উৎসাহিত করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মানবিক পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়ক ইরানুল ইসলাম জানান, পানির বোতল ও চিপসের প্যাকেটসহ বিভিন্ন প্লাস্টিক সামগ্রী রাস্তাঘাটে ফেলায় সামাজিক পরিবেশ যেমন দূষণ করে তেমনি জীববৈচিত্র্যের জন্যও হুমকি। তাই প্রাকৃতিক পরিবেশ সমুন্নত রাখতে এ বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ‘মানবিক পাঠশালা’। চকরিয়ার বিভিন্ন পয়েন্টে অস্থায়ী বুথ স্থাপন করা হয়েছে যেখানে বই, গাছের চারা ও অন্যান্য পরিবেশবান্ধব উপহার ও বিন সাজানো আছে। জনসাধারণ ও শিক্ষার্থীরা এই বুথে ব্যবহার্য প্লাস্টিক জমা দেবেন এবং উপহার গ্রহণ করবেন।


দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার বাদ পড়েনি হাসপাতালও

আপডেটেড ১৪ মে, ২০২৪ ১০:০২
খোরশেদ আলম, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী)

দেয়ালে দেয়ালে ঝুলছে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানপ্রার্থীর পোস্টার। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের রঙিন পোস্টারও রয়েছে। কোনো ধরনের নির্বাচনী বিধি না মেনেই এসব পোস্টার লাগানো হয়েছে সরকারি স্থাপনাতেও। বাদ পড়েনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেয়াল পর্যন্ত। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগে এমনই অবস্থা দেখা গেছে নির্বাচনী এলাকায়।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, ভবন, দেয়াল, গাছ, বিদ্যুৎসহ টেলিফোনের খুঁটি বা অন্য কোনো দণ্ডায়মান বস্তুতে পোস্টার লাগানো নিষেধ। সরকারি স্থাপনাতেও পোস্টার লাগানো নিষেধ। কিন্তু উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি তোয়াক্কা করছেন না প্রার্থীরা। অন্যদিকে নির্বাচনী প্রচারে মিছিল নিষিদ্ধ থাকলেও মানছেন না কেউই। প্রার্থীরা নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় মিছিল নিয়ে ঘুরছেন। আবার এই মিছিলের ছবি ও ভিডিও নিজেদের ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থীদের মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে মহড়া করতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেয়ালে প্রার্থীদের ছবি লাগানো হয়েছে। নবাবগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুলের দেয়াল, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও বিভিন্ন স্থাপনায় লাগানো হয়েছে পোস্টার। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রকেয়া বেগম রঙ্গিন পোস্টার করে বিভিন্ন দেয়ালে লাগিয়েছেন।

এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রার্থী রয়েছেন। সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ প ম বাবুল বাবু। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের নোয়াখালী জেলা শাখার সভাপতি ও উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক মনির ইসলাম মনির।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে খলিলুর রহমান, আবু বকর সিদ্দিক রুবেল। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রুবিনা আক্তার, আয়েশা আক্তার পারুল, রোকেয়া বেগম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। তারা প্রার্থীদের আচরণবিধি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।


জবরদখলকারীদের কব্জায় কোটি কোটি টাকার সরকারি জমি

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের পুকুর ভরাট করে জমি দখল চলছে। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৪ মে, ২০২৪ ০৩:১৯
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমি জবরদখল করে সড়ক-মহাসড়কের পাশে গড়ে তোলা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। সংশ্লিষ্টদের চোখের সামনে এভাবেই বেদখল হচ্ছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের সরকারি জমি; কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এসব ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।

এলাকাবাসী এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলোর মধ্যে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অন্যতম। কালিয়াকৈর উপজেলার ওপর দিয়ে চলে গেছে এ মহাসড়ক। এ ছাড়া এ উপজেলায় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সড়ক রয়েছে। এসব মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

সড়ক বিভাগের জমি রক্ষায় চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কের পাশে উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় একটি রেস্ট হাউস ও ধামরাই-কালিয়াকৈর-মাওনা সড়কের কালিয়াকৈর বাজার এলাকায় একটি সাইট অফিস তৈরি করা হয়। তারপরেও দিন দিন সড়ক ও মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে দখল করে অবৈধ হাট-বাজার ও ফুটপাত দখল করে অবৈধ দোকানপাট বসিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বিভিন্ন চক্রের সদস্যরা।

চন্দ্রা এলাকায় সড়ক বিভাগের রেস্ট হাউসের পাশেও হাট-বাজার এবং ফুটপাতে দোকানপাট বসিয়ে রমরমা বাণিজ্য চালানো হচ্ছে। হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, জেলা পুলিশের চোখের সামনে অবৈধভাবে এসব বাণিজ্য হলেও অজ্ঞাত কারণে তারা নীরব দর্শক। এ ছাড়া সড়ক বিভাগের জমি জবর-দখল করে বিভিন্ন স্থানে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে বাণিজ্য চালিয়ে আসছে সিন্ডিকেট চক্র। এভাবে সড়ক বিভাগের জমি দখল করে অনায়াসে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। আর এসব টাকার ভাগ যাচ্ছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পকেটে। ফলে তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না।

সংশ্লিষ্টদের এমন উদাসীনতায় গত কয়েক দিন ধরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপজেলার লতিফপুর এলাকার জোড়া ব্রিজের পাশে সড়ক বিভাগের জমি জবরদখল করে বিল্লাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি বড় দোকান নির্মাণ করছেন। এর পাশে ট্রাক স্টেশন এলাকায় মোরশেদ আলম দুরে (সাগর) গং বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে সড়ক বিভাগের সরকারি জমি ভরাট করে। এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কালিয়াকৈর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এরপর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রজত বিশ্বাসের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ভেকু গাড়ি জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত; কিন্তু প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দু-এক দিন পর আবার রাতের আঁধারে ওই সরকারি জমি ভরাট করা শুরু হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করেই কোটি কোটি টাকার সরকারি জমি ভরাটের মাধ্যমে জবরদখল করে সাগর গং। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোরশেদ আলম দুরে (সাগর) বলেন, ‘এটা আমাদের সম্পত্তি। এর এক পাশের সম্পত্তি মহাসড়কে গেছে; কিন্তু এখনো অ্যাকোয়ার করা হয়নি। অন্য পাশে মহাসড়ক থেকে অ্যাপ্রোচ সড়কের জন্য আবেদন করেছি; কিন্তু সড়ক বিভাগের জমি দখল করছি না। তবে এখানে অস্থায়ী গরুর হাট করা হবে।’

এ ছাড়া কালিয়াকৈর বাজার এলাকায় সড়ক বিভাগের ওই সাইট অফিসের পাশে একটি বড় দোকান নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্তমানে প্রকাশ্য দিবালোকে সে দোকানের ফ্লোর ঢালাই চলমান রেখেছেন দোকান মালিক দীপংকর।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সড়ক বিভাগের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেই এটা নির্মাণ করতেছি।’ এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে দোকান মালিক বলেন, ‘আপনারা কেন আসছেন? এ বিষয়ে আপনাদের কি করার আছে?’

গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের কার্যসহকারী তায়েব আলম বলেন, ‘ওই জমি ভরাট করার বিষয়ে মামলা হবে। ওই জমি ভরাটের বিষয়ে চিঠি করেছি। এটা ইউএনও অফিস ও থানায়ও দেওয়া আছে। সরকার পক্ষ থেকে ভরাটকারীদের নামে মামলা হবে। বিষয়টি মন্ত্রী মহোদয়ও জানেন। এটা নিয়ে তিনবার বসা হয়েছে। আমরা খুব শিগগির এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী অভি আহম্মেদ সুজন বলেন, ‘ওই জমি ভরাটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া দোকানপাট নির্মাণের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসব সমস্যা সমাধানে এ সপ্তাহে অভিযান পরিচালনা করা হবে।’


কেএনএফের অপতৎপরতা যতদিন, ততদিন চলবে যৌথ অভিযান: বিজিবি মহাপরিচালক

কেএনএফের অপতৎপরতা বন্ধে বান্দরবানের থানচি ও রুমা সীমান্তে বিজিবির সক্রিয় দায়িত্ব পালন দেখার পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৩ মে, ২০২৪ ১৯:০৩
বান্দরবান প্রতিনিধি

বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন, স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে দুঃসাহসিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে কোনো সন্ত্রাসী পার পাবে না। কেএনএফের কার্যক্রম যতদিন থাকবে যৌথ অভিযান ততদিন চলবে। সরকারের আদেশে কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে বিভিন্ন বাহিনী মিলে যৌথ বাহিনী হিসেবে অভিযান এখনো চলমান রয়েছে।

আজ সোমবার বিকেল ৪টার দিকে বান্দরবানের থানচি ও রুমা উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে রুমা দোপানিছড়া বিওপি পরিদর্শন শেষে সব পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে অপারেশনাল, প্রশিক্ষণ ও প্রশাসনিক বিষয়ে মতবিনিময় করেন। পরে বলিপাড়া ব্যাটালিয়নের অধীন স্পটহাইট টিওবি, থানচি বিওপি এবং থানচি বাজার পোস্ট পরিদর্শন করেন।

বিজিবি মহাপরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যাংক ডাকাতির মতো দুঃসাহসিক সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে কেউ পার পাবে না। তা ছাড়া সাধারণ বম জনগোষ্ঠীরাও কেএনএফের সন্ত্রাসী ঘটনা সমর্থন করে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিরীহ বম সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচারের অপপ্রচারের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’

তিনি বলেন, ‘যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে, তা সরেজমিনে পরিদর্শন করতে এসেছি। থানচি বলিপাড়া ৩৮ বিজিবি ও রুমা ৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবি অভিযানে অংশগ্রহণ করায় তাদের উৎসাহ ও পরামর্শ প্রদান করার জন্য এসেছি।’

তিনি আরও বলেন, বলিপাড়ায় একটি নতুন বেইস ক্যাম্প করা হয়েছে এবং বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় অপারেশন এবং সীমান্তের ওপারে যাতে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যেতে না পারে সে জন্য বিজিবির সব সদস্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

এ সময় বান্দরবান বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সোহেল আহমেদ, কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম, বান্দরবান রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মেহেদি হাসান, রুমা ৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেনান্ট কর্নেল হাসিবুল হকসহ বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ২ ও ৩ এপ্রিল কেএনএফ সন্ত্রাসীরা জেলার রুমা ও থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি, ব্যাংক ব্যবস্থাপক অপহরণ, টাকা লুট ও পুলিশ-আনসারের ১৪টি অস্ত্র ছিনতাই করে। ব্যাংক ব্যবস্থাপক উদ্ধার হলেও লুট হওয়া অস্ত্র ও টাকা উদ্ধার করা যায়নি। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, অস্ত্র ও টাকা উদ্ধারের অভিযানে অংশ নিচ্ছেন সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। অভিযান সমন্বয় করছে সেনাবাহিনী।


কুতুবদিয়া পৌঁছেছে জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৩ মে, ২০২৪ ১৮:৩২
চট্টগ্রাম ব্যুরো

সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে ২৩ ক্রুসহ মুক্ত হওয়া জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ আজ সোমবার বিকেলে কক্সবাজারের কুতুবদিয়াতে পৌঁছেছে। এরপর জাহাজটির দায়িত্ব নেবে নাবিকদের আরেকটি টিম। ওই ২৩ নাবিকের টিম আজ বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে রওনা দিয়েছেন। এমভি জাহান মনি-৩ নামে একটি লাইটার জাহাজে করে তারা রওনা দিয়েছেন।

জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এমভি জাহান মনি কুতুবদিয়া পৌঁছাতে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা লাগবে। ওই জাহাজে করে এমভি আবদুল্লাহ-তে থাকা ২৩ নাবিক আগামীকাল ১৪ মে ভোরে রওনা দেবেন। এবং দুপুরের পর চট্টগ্রামের সদরঘাট কেএসআরএম জেটিতে পৌঁছাবেন। সেখানে মালিকপক্ষ এবং নাবিকদের স্বজনরা তাদের বরণ করে নেবেন।

কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জানান,আজ সন্ধ্যা নাগাদ আব্দুল্লাহ কুতুবদিয়া পৌঁছাতে পারে। সেখানে কিছু চুনাপাথর খালাস করার পর চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা দেবে জাহাজটি। এতে দুদিন সময় লাগতে পারে। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আসার পর জাহাজটির বাকি পণ্য খালাস করবে।

গত ৩০ এপ্রিল ৫৬ হাজার টন চুনাপাথর নিয়ে আরব আমিরাতের মিনা সাকার বন্দর থেকে ২৩ জন নাবিকসহ দেশের পথে রওনা দেয় জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ।

এর আগে ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে ৫৮ হাজার টন কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে যাওয়ার পথে ১২ মার্চ সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে জাহাজটি।

৩২ দিন জিম্মি থাকার পর ১৩ এপ্রিল জলদস্যু থেকে মুক্ত হয়ে দুবাই যায় জাহাজটি। এ সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুইটি যুদ্ধ জাহাজের পাহারায় এমভি আবদুল্লাহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পার হয়। বাড়তি সতর্কতা হিসেবে তখন জাহাজের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া, ডেকে হাই প্রেসার ফায়ার হোস বসানো হয়, যাতে জলদস্যুরা ফের হামলা করলে উচ্চচাপে পানি ছিঁটানো যায়।


উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ১৩০ জনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ২৯ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে ১৩০ জন প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কারণে ৬ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন বলে জানান ইসির পরিচালক (জনসংযোগ) শরিফুল আলম।

তিনি আরও জানান, প্রার্থিতা প্রত্যাহারকারীদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৭৩ জন, সংরক্ষিত নারী পদে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৩ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৪ জন প্রার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলায় ৩টি পদে ৬জন, শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে এবং ফেনীর সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সংরক্ষিত নারী প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন।

আজ থেকে নির্বাচন কমিশন তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পর প্রার্থীরা প্রচারণা শুরু করতে পারবেন। তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬১৮ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪০০ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, তৃতীয় ধাপে ২৯ মে ১১২টি উপজেলা পরিষদে এবং ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে ১৬০টি উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ২৮ জন এবং দ্বিতীয় ধাপে ২১ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

বিষয়:

ঝিনাইদহ-১ আসনে উপনির্বাচন ৫ জুন

নির্বাচন কমিশন ভবন। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১৩ মে, ২০২৪ ১৬:৪১
বাসস

ঝিনাইদহ-১ শূন্য আসনের উপনির্বাচন আগামী ৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। এই আসনে নির্বাচনের সময়সূচি পুনর্নিধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে নতুন সময়সূচি নির্ধারণের বিষয়টি জানানো হয়।

এর আগে গত ৮ মে ঝিনাইদহ-১ (শৈলকূপা) আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। ফলে ওই আসনে উপনির্বাচনে বাধা কেটে যায়।

গত ১৬ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। পরে এই আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

তবে গত ৬ মে আসনটির স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নজরুল ইসলামের এক আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ঝিনাইদহ-১ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করে আদেশ দেন বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ। ওইদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। পরে তিনি সাংবাদিকদের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ২১ দিনের জন্য এ নির্বাচন স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

সবশেষ গত ৮ মে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেন। এতে আসনটিতে নির্বাচনের বাধা কেটে যায়।

বিষয়:

জলঢাকায় ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় ২০০ একর জমির ধান নষ্ট

দিশাহারা কৃষক
ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৩ মে, ২০২৪ ১৪:০৭
রবিউল ইসলাম রাজ, জলঢাকা (নীলফামারী)

ছবি: দৈনিক বাংলা




নীলফামারীর জলঢাকায় এ কে ব্রিকস-২ ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় প্রায় ২০০ একর জমির ধান নষ্ট হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্বপ্নের সোনালি ধান হারিয়ে দিশাহারা হাজারও কৃষক। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের পূর্ব খুটামারা এলাকায়। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর গণস্বাক্ষর সংবলিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। এর অনুলিপি উপজেলা কৃষি অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

এ ছাড়া এ ঘটনায় গত ৭ মে (বুধবার) দুপুরে ইটভাটার প্রবেশ ফলকের সামনে মানববন্ধন করেছে শত শত নারী ও পুরুষ। মানববন্ধনে বক্তারা ইটভাটা বন্ধের পাশাপাশি কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে তারা সড়ক অবরোধের হুমকি দেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পূর্ব খুটামারা এলাকায় অবস্থিত এ কে ব্রিকস-২ কোম্পানি ৭ বছর আগে স্থানীয় কিছু কৃষকদের লোভ দেখিয়ে কিছু জমি ১০ বছরের জন্য চুক্তি নিয়ে একটি ইটভাটা স্থাপন করেন। এরপর প্রতিবছর পর্যায়ক্রমে আশপাশের জমির মালিকদের চাপে ফেলে সুকৌশলে আরও জমি নেয়। এভাবে কোম্পানিটি আবাদি ৩০ বিঘা জমি চুক্তি নিয়েছে। আর এতে সহযোগিতা করেন স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। এই ভাটা স্থাপনের পর থেকে প্রতিবছর ভাটার কালো ধোঁয়ায় কৃষকের ফসল নষ্ট হচ্ছে। এ বছর নষ্ট হয়েছে ধান, ভুট্টাখেতসহ আম ও লিচু গাছের।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ মে রোববার দিবাগত রাতে ৬ মাসের জমে থাকা ইটভাটার কালো ধোঁয়ার গ্যাস ছেড়ে দিলে পরের দিন সোমবার সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ধান গাছগুলো ঝলসে যেতে শুধু করে। গত দুই-তিন দিনে ইটভাটার উত্তর পশ্চিম দিকের প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে আনুমানিক ২০০ একর জমির আবাদি ধানের গাছ ঝলসে গেছে। ধান গাছগুলো লালচে আকার ধারণ করেছে। এতে ধানের দানাগুলো চিটা হয়ে গেছে।

এদিকে এ কে ব্রিকস-২-এর ইটভাটার বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই বলে স্বীকার করেছেন এ কে আনোয়ার ব্রিকস-২-এর ম্যানেজার তাজুল ইসলাম। ভাটার কালো ধোঁয়ায় ফসল নষ্টের কথাও স্বীকার করেন তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন আহমেদ বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি শোনার পর তাৎক্ষণিক সরেজমিনে দেখেছি। ধারণা করা হচ্ছে ভাটার কালো ধোঁয়ায় এমনটি হতে পারে। তবে আমরা কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করব এবং ধানখেত পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা থাকবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জি আর সারোয়ার বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত টিম গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


কৃষক ও ধান ব্যবসায়ীদের ৩৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৩ মে, ২০২৪ ১২:২৫
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর মহাদেবপুরে ওসমান অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রা.) লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওসমান গনির বিরুদ্ধে ধান ব্যবসায়ী ও কৃষকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এদিকে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা টাকা না পেয়ে হণ্যে হয়ে ঘুরছেন। বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগী পাওনাদাররা রোববার মহাদেবপুর উপজেলার মডেল স্কুল মোড়ে ‘ভুক্তভোগী সব পাওনাদার গং’ এর ব্যানারে মানববন্ধন করছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।

মানববন্ধনে আড়ৎদার আবু আহসান হাবিরের সভাপতিত্বে আড়ৎদার সামিউল আলম, ইমতিয়াজ হোসেন সরদার, মাসুদ মোল্লাসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ও ভুক্তভোগী কৃষকরা বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধনে প্রায় দুই শতাধিক ব্যবসায়ী ও কৃষক উপস্থিত ছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার মহাদেবপুর উপজেলার নওগাঁ-মহাদেবপুর সড়কের আখেড়া এলাকায় ওসমান গনি প্রায় ৪০ বছর আগে চালকল গড়ে তুলে ব্যবসা শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে চালকলটি অটোমেটিকে রূপান্তর করে ওসমান অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রা.) লিমিটেড নাম দেন। যেখানে কয়েক একর জায়গার ওপর পাঁচটি ইউনিট গড়ে তুলেন, যা টাকার অঙ্কে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ।

ধানের আড়ৎদারদের কাছ থেকে নগদ ও বাকিতে ধান কিনে চালকল পরিচালনা করা হতো। এতে ব্যবসার সুবাদে আড়ৎদারদের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে। এভাবে জেলা ও জেলার বাইরের প্রায় ২৬০ জন ধান ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নগদ ও বাকিতে ধান কিনতেন তিনি। এক পর্যায়ে প্রায় ৩৫ কোটি টাকার ধান ব্যবসায়ীদের কাছে বকেয়া রাখেন। গত ৩-৪ মাস ধরে ধান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ওসমানের দূরত্ব বাড়তে থাকে। তিনি ওই এলাকা ছেলে পরিবারসহ ঢাকায় অবস্থান করতে থাকেন। গোপনে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি একটি কোম্পানির কাছে ভাড়া দিয়ে দেন। এরপর ধান ব্যবসায়ীরা বুঝতে পারেন ওসমান লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছেন। গত দেড় মাস ধরে ওই প্রতিষ্ঠানটি অন্য একটি কোম্পানির দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। কৌশল হিসেবে ওসমান গনি ব্যবসায় লোকসান দেখিয়ে নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছেন।

উপজেলার মাতাজি হাট এলাকার মোল্লা ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী সামিউল আলম বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে ওসমান গনিকে ধান দিয়ে আসছি। প্রায় ১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা পাওনা রয়েছি। পাওনা টাকা চাইলেই বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করেন। ঢাকায় বাড়ি-গাড়ি করে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে আলিসান জীবনযাপন করছেন। আর আমরা পথে পথে ঘুরছি।’

জেলার ধামইরহাট উপজেলার মেসার্স বেলাল ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী আবু আহসান বলেন, ‘ওসমান গনির সঙ্গে প্রায় ১৫ বছর ধরে ব্যবসা করে আসছি। আমন মৌসুম থেকে আর লেনদেন করা হয়নি। কিন্তু সপ্তাহে ৫০ হাজার করে টাকা দিতেন। সবশেষ ফেরুয়ারিতে ১ লাখ টাকা দিয়েছেন। লেনদেনের সুবাদে প্রায় ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বকেয়া পড়ে যায়। পাওনা টাকা দিচ্ছি, দেব বলে সময়ক্ষেপণ করছিলেন। এখন লাপাত্তা হয়ে গেছেন। কৃষকের কাছ থেকে ধান নিয়েছিলাম। তারা এখন টাকার জন্য চাপ দিচ্ছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহাদেবপুর উপজেলার ওসমান অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রা.) লিমিটেড এর চেয়ারম্যান ওসমান গনি বলেন, ‘প্রায় ৩৮ বছর ধরে ব্যবসা করছি। ব্যবসার সুবাদে অনেক টাকা লোকসান হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের কাছেও আমার দেনা রয়েছে। আমার কাছে নগদ টাকা নাই। পাওনাদারদের বলেছি যে সম্পদ আছে তা বিক্রি করে দেনা পরিশোধ করা হবে। আমি গত ৩১ জানুয়ারি নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করার জন্য আদালতে একটি আবেদন করেছি। তবে আমি আমার প্রতিষ্ঠানটি ভাড়া দিয়েছি।’


banner close