বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪

সিত্রাং‌য়ে ক্ষ‌তিগ্রস্ত ১০ হাজার ঘর, ৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমি

স‌চিবাল‌য়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। ছবি: দৈনিক বাংলা
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২৫ অক্টোবর, ২০২২ ১৪:৩৪

ঘূ‌র্ণিঝড় সিত্রাং‌য়ের আঘা‌তে ‌দে‌শের ৪১৯টি ইউ‌নিয়‌নে ১০ হাজার ঘরবা‌ড়ি ক্ষ‌তিগ্রস্ত হ‌য়ে‌ছে। নষ্ট হয়েছে ছয় হাজার হেক্টর জ‌মির ফসল ও এক হাজার মৎস্য ঘের। এই ঝ‌ড়ে সারা দে‌শে নয়জন মারা গে‌ছেন।

আজ মঙ্গলবার স‌চিবাল‌য়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, পূর্বাভাস ছিল অ‌নেক ক্ষয়ক্ষ‌তি হ‌বে, কিন্তু তা হয়‌নি। এটা প্রবল, অ‌তি প্রবল বা সুপার সাই‌ক্লো‌নে রূপ নেয়‌নি। ঘো‌ষিত সম‌য়ের অ‌নেক আগে উপকূল অ‌তিক্রম ক‌রে‌ছে। রাত ১০টার পর ঘূ‌র্ণিঝড়টি বাংলা‌দেশ অ‌তিক্রম ক‌রে।

তিনি জানান, ঝড়ের আগে ছয় হাজার ৯২৫টি আশয়‌কে‌ন্দ্রে ১০ লাখ মানুষ আশ্রয় নি‌য়ে‌ছিল। গত মধ্যরাত থে‌কে তারা বা‌ড়ি ফির‌তে শুরু ক‌রেন, মঙ্গলবার সকা‌লের ম‌ধ্যে সবাই বা‌ড়ি ফি‌রে‌ছেন।

যা‌দের ঘরবা‌ড়ি ভে‌ঙে গে‌ছে তা‌দের ঘর তুল‌তে ঢেউ‌টিন, নগদ টাকা সহায়তা দেয়া হ‌বে বলেও জানান প্র‌তিমন্ত্রী।


মৌলভীবাজারে অতি বৃষ্টিতে পানিবন্দি মানুষ

সুনামগঞ্জেও নদনদীর পানি বাড়ছে
ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উত্তর চৌমুহনী, কলেজ রোড, হাটবন্দ, পানিদার, কাঁঠালতলী, হাকালুকিসহ বিভিন্ন এলাকায় বাসা-বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে উপজেলার ফসলি জমি এবং পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনসাধারণ। অন্যদিকে, সুনামগঞ্জে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে সুরমা নদীসহ বিভিন্ন নদনদীর পানি বাড়ছে। তবে বড় কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে গত রোববার রাত থেকে জেলায় টানা বৃষ্টি শুরু হয়। ঘূর্ণিঝড় রেমাল সাগরে সৃষ্টি হয়ে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আঘাত হানার পর স্থল নিম্নচাপ হয়ে সিলেট অঞ্চল দিয়ে দেশের সীমানা অতিক্রম করায় অতিবৃষ্টির ঘটনা ঘটে। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে পাথারিয়া পাহাড় থেকে নেমে আসা পানি গত তিন দিন ধরে পৌর শহরের উত্তর চৌমুহনী, কলেজ রোড, আদিত্যের মহাল, হাটবন্দ, পানিদার এলাকায় প্রবেশ করতে থাকে। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় জনসাধারণ।

এদিকে বড়লেখা সরকারি ডিগ্রি কলেজ, নারী শিক্ষা একাডেমিতে পানি প্রবেশ করতে দেখা গেছে। তাছাড়া বড়লেখা-কুলাউড়া সড়কের কাঁঠালতলী ও শাহবাজপুর সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, ‌‘বিভিন্ন ছড়া পর্যাপ্ত খনন না হওয়ায় উজান থেকে নেমে আসা পানিতে এলাকার লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ফসলি জমি, পুকুর, ফিশারিসহ অনেক ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। পৌর শহরের উত্তর চৌমুহনীর একাংশে প্রধান সড়কের ওপর দিয়ে ও জফরপুর আঞ্চলিক সড়কে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অনেক লোকজন ঘরবাড়ি ফেলে অন্যত্র স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।’

স্থানীয় ব্যবসায়ী রিপন বলেন, ‘প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। এতে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমার বাড়িতেও পানি। তবে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। এখন আবার লাগাতার বৃষ্টি হলে সমস্যায় পড়তে হবে।’

পৌর শহরে পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় ও বিভিন্ন ছোট-বড় ছড়া অবৈধভাবে ভরাট করে বাসা-বাড়ি স্থাপনা তৈরি করার কারণে পানি ঠিকমতো নিচ দিকে প্রবাহিত হতে পারছে না। সে জন্য অতি বৃষ্টিপাত হলেই উত্তর চৌমুহনীর একাংশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। তবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে নিমজ্জিতের পরিমাণ আরও বাড়বে।

বড়লেখা পৌরসভার মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী বলেন, ‘পৌর এলাকার প্লাবিত অংশে সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। পানিবন্দি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বড়লেখা সরকারি ডিগ্রি কলেজে পানিবন্দিদের আপাতত আশ্রয় এবং তাদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’

তিনি বলেন, ‘ছোট-বড় ছড়া অবৈধভাবে ভরাট করে স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে পানি নিষ্কাশনে ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া পানি নিষ্কাশনের জন্য স্থানীয়দের সহযোগিতা কামনা করেও কোনো ফল পাইনি। পৌর শহরে ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকলেও যথাযথ পানি নিষ্কাশনের উপযোগী নয় তাই ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় স্থানগুলো মেরামতের জন্য দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’

অন্যদিকে সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সুনামগঞ্জে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে সুরমা নদীসহ বিভিন্ন নদনদীর পানি বাড়ছে। তবে বড় কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

সুনামগঞ্জের পাউবোর তথ্যমতে, সুনামগঞ্জ পৌর শহরের সুরমা নদীর ষোলঘর পয়েন্টে গতকাল বিকেল ৩টায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ৯৮ সেন্টিমিটার। এর আগের দিন একই সময়ে পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার। এক দিনে পানির উচ্চতা বেড়েছে দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। এখানে সুরমা নদীর পানির বিপৎসীমা ৭ দশমিক ৮০ মিটার। সে হিসাবে নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ৩৯ মিলিমিটার। একই সময়ে সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণেই উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামছে। সুনামগঞ্জে বৃষ্টি কম হলেও উজানের নামা ঢলে নদী ও হাওরে পানি বাড়ছে।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা, পাটলাই, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রক্তি, বৌলাই, ছাতকের চেলা, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার চলতি, জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছে। তবে হাওরে এখনো পানি কম আছে।

সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, বৃষ্টি ও উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে সুরমা নদীর পানি বাড়ছে। উজানের ঢল নামা অব্যাহত থাকলে পানি বাড়া অব্যাহত থাকবে। এতে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। তবে সুনামগঞ্জে এখনো বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই।


নরসিংদীতে প্রায় ৪ লাখ শিশুকে খাওয়ানো হবে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নরসিংদী প্রতিনিধি

জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার নরসিংদী সিভিল সার্জন কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।

নরসিংদীর ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন (সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা) ডা. আবু কাউছার সুমনের সভাপতিত্বে এ প্রেস ব্রিফিং-এ ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুকে ১টি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুকে ১টি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

আগামীকাল শনিবার ১ জুন ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ৪০ হাজার ৪৮৭ জন শিশুকে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৮০৮ জন শিশুকে ১টি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

এ উপলক্ষে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সিভিল সার্জন অফিস।

এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. মোবারক হোসেন, সাবেক সভাপতি নিবারণ রায় প্রমুখ।

বিষয়:

এক রাতেই তলিয়ে গেল পাঁচ উপজেলা

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দেবাশীষ দেবু, সিলেট

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে পাঁচ উপজেলা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় তিন লাখ মানুষ। আজ বৃহস্পতিবার এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও দ্রুত বাড়ছিল পানি। ফলে আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে সিলেটের সব নদনদীর পানি।

পানিবন্দিদের জন্য জেলায় ৪৭০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ ছাড়া পানিবন্দিদের উদ্ধারে প্রস্তুত রাখা হয়েছে সেনাবাহিনীকে। তবে দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, নৌকার অভাবে তারা আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে পারছেন না।

স্থানীয়রা দাবি করেছেন, পাহাড়ি ঢলে নদী রক্ষা বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢুকছে। এই বাঁধ দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়েছেন তারা।

সিলেটের উজানে অবস্থান ভারতের মেঘালয় ও আসাম রাজ্য। রাজ্য দুটি সিলেটের চেয়ে উঁচুতে অবস্থিত হওয়ায় এই দুই রাজ্যে ভারী বৃষ্টি হলে পানি ঢলের আকারে সিলেটের দিকে নেমে আসে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে গত কদিন ধরে ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে মেঘালয়ে। এতে করে ঢলের তোড়ে সিলেটের সীমান্তবর্তী পাঁচ উপজেলা গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে।

দুর্গত এসব এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত সোমবার থেকে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামা শুরু হয়। এতে বাড়তে থাকে পানি। তবে বুধবার বিকেল থেকে অস্বাভাবিক হারে পানি বাড়তে শুরু করে। বুধবার একরাতেই তলিয়ে যায় এই পাঁচ উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা। রাতেই পানি ঢুকে পড়ে এসব এলাকার বেশিরভাগ বাসাবাড়িতে। অনেকের ঘরে গলা পর্যন্ত পানি উঠে যায়। এতে আতঙ্ক দেখা দেয় বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। উদ্ধারের আকুতি জানিয়ে অনেকই রাতে ফেসবুকে পোস্টও দেন।

সীমান্তবর্তী পাঁচ উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে জানিয়ে সিলেট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল কুদ্দুস বুলবুল বলেন, তিন লাখের মতো লোক বন্যায় প্লাবিত হয়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুরো জেলায় ৪৭০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচ উপজেলার মধ্যে গোয়াইনঘাটে ৫৬টি, জৈন্তাপুরে ৪৮টি, কানাইঘাটে ১৮টি, কোম্পানীগঞ্জে ৩৫টি ও জকিগঞ্জে ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

এদিকে, অনেক সড়ক ডুবে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে পড়েছে যান চলাচল। বন্যার কারণে জাফলং, সাদাপাথরসহ কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের এখন না আসার আহ্বান জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

জৈন্তাপুর উপজেলার ময়নারহা খেয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা সাজিদুর রহমান সাজন বুধবার রাতে আকুতি জানিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘হায়রে ফেরি ঘাটের নৌকা, একটা নৌকা নাইনি বাছাইবার লাগি। লাশ উদ্ধার অইমু হয়তো, জীবিত উদ্ধার অইতে পারতাম না, হয়তো এইটা শেষ পোস্ট।’

ভয়ে এমন পোস্ট দিয়েছিলেন জানিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সাজিদুর বলেন, ‘রাতে হু হু করে বাড়তে থাকে পানি। রাত ১০টার দিকে ঘরে পানি ঢুকে যায়। ১১টার দিকে ঘরের পানি হাঁটুর ওপরে উঠে যায়। কিন্তু ঘরে নারী ও শিশুদের অন্যত্র নেওয়ার জন্য কোনো নৌকা পাচ্ছিলাম না। রাত হওয়ায় কোনো মাঝি নৌকা চালাতে রাজি হচ্ছিল না। এমন অবস্থায় আতঙ্কে ফেসবুকে এমন পোস্ট দিই।’

অবশ্য পরে রাতেই তার পরিবারকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আনেন বলে জানান সাজিদুর।

জানা গেছে, গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়ন, লেঙ্গুড়া, ডৌবাড়ি, নন্দীরগাঁও, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাঁও, পশ্চিম জাফলং, মধ্য জাফলং ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে। এসব উপজেলার অনেক বাসিন্দাই আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে গবাদিপশু আর গোয়ালের ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে।

রুস্তমপুর এলাকার বাসিন্দা ফয়জুর রহমান বলেন, ঘরে কাল রাতে পানি উঠে গেছে। বাধ্য হয়ে ঘরের শিশু ও নারীদের অন্যত্র রেখে এসেছি। কিন্তু গোয়ালের গরুর কারণে আমি কোথাও যেতে পারছি না। আশপাশের সব জায়গা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গরুগুলো কোথাও নিতেও পারছি না। এভাবে আরও দু-একদিন গেলেই গো-খাদ্যের সংকট দেখা দেবে।

এই উপজেলার সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক তলিয়ে যাওয়ার কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্যমতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪৫ সেন্টিমিটার ওপরে, কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জের অমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০২ সেন্টিমিটার ওপরে ও শেওলা পয়েন্টে ৫৬ সেন্টিমিটারে এবং সারি নদীর পানি জৈন্তাপুরের সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপরে এবং সারিগোয়াইন নদীর পানি গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত বুধবারের চেয়ে গতকাল সবগুলো নদীর পানিই বেড়েছে।

এভাবে ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে কানাইঘাটে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

কানাইঘাট উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ১নং লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়ন, ২নং লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়ন, কানাইঘাট সদর, দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে।

কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আকস্মিক ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারণে সুরমা ও লোভা নদীর পানি বেড়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় উপজেলার সবকটি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এদিকে, আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়েছে, ধলাই নদীর পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি হওয়ায় ও পর্যটনকেন্দ্রসমূহ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রসহ সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হলো।

সিলেটে বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে জানিয়ে সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন বলেন, চলতি মাসের ৩০ দিনে সিলেটে ৭০৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অথচ গত বছর মে মাসে বৃষ্টি হয়েছিল ৩৩০ মিলিমিটার। আগামী তিন দিন সিলেটে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোবারক হোসেন জানান, আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে। সব উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সার্বক্ষণিক তদারকি করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারে সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজন হলেই তারা তৎপরতা শুরু করবে।


ভৈরবে টেকসই চামড়া শিল্প গড়ার লক্ষ্যে কর্মশালা

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পাদুকা শিল্পের ব্যবহৃত বর্জ্য ও টেকসই চামড়া শিল্প গড়ার লক্ষ্যে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ভৈরব জান্নাত রেস্টুরেন্ট এন্ড রিসোর্টের সম্মেলন কক্ষে বেসরকারি সংস্থা সলিডার সুইস, ওশি ফাউন্ডেশন এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন আয়োজনে ‘এলায়েন্স বিল্ডিং মিটিং অন এনভায়নমেন্টাল ইমপেক্ট এন্ড রাইটস এট লেদার সেক্টর’ দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সলিডার সুইসের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ অক্যুপেশনাল সেইফটি হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ফাউন্ডেশন এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে ‘বিল্ডিং এ সাসটেইনেবল লেদার সেক্টর ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

দেশের সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে টেকসই খাত হিসেবে এগিয়ে নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতায় একযোগে কাজ চলছে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, কর্মশালায় ভৈরবের পাদুকা শিল্পের উন্নয়ন ও কারখানায় ব্যবহৃত চামড়া ও রিক্সিনের বর্জ্য অপসারণ ও রিসাইকেলিং করে ব্যবহার যোগ্য করার বিষয়ে পাদুকা শিল্পের সংশ্লিষ্টদের সচেতন হওয়ার ও পরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দেন। যদি পাদুকা শিল্পে ব্যবহৃত চামড়া জাত পণ্য যদি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় উৎপাদন করা হয় তাহলে চামড়া খাতের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠবে। ভৈরবের পাদুকা শিল্পের উন্নয়ন, আর্থিক সহযোগিতা ও অতিরিক্ত বর্জ্য উৎপাদনজনিত পরিবেশ দূষণ নিরসন করার উপায়, চ্যালেঞ্জ ও কর্মকৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের হেড অব ইভেন্ট খন্দকার আহমেদ শাহিদ, প্রোগ্রাম কোঅডিনেটর খাইরুল আনাম, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জলি বোদন তৈয়বা, সমাজসেবা কর্মকর্তা রিফাত জাহান ত্রপা প্রমূখ।

বিষয়:

কেরানীগঞ্জে রাজউকের উচ্ছেদ অভিযান

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি

রাজউকের অনুমোদনহীন ও নকসা বহিরভূত ভবন নির্মাণ করায় কেরানীগঞ্জের শাক্তা আরশিনগর এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনির হোসেন হাওলাদার।

এসময় ছয়টি ভবনে অভিযানে চালিয়ে চারটি ভবনের বর্ধিত অংশ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি পাঁচ ভবন মালিককে ৫০ হাজার টাকা করে মোট আড়াই লাখ টাকা জরিমানা এবং আনাদায়ে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এসময় রাজউকের অথরাইজ অফিসার শেখ মোহাম্মদ এহসানুল ইমাম, ইমারত পরিদর্শক শুভ সাহাসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।


সুন্দরবন থেকে আরও ১৫টি মৃত হরিণ উদ্ধার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারা বাংলা ডেস্ক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনে বন্যপ্রাণীর মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান থেকে আরও ১৫টি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন খুলনা অঞ্চলের বনসংরক্ষক মিহির কুমার দো।

এর আগে সুন্দরবন থেকে আরও ৩৯টি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ফলে সুন্দরবন থেকে মোট ৫৪টি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হলো।

বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, রেমালের আঘাতে সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম বন বিভাগের ফরেস্ট স্টেশন অফিস, ক্যাম্প ও ওয়াচ টাওয়ারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বনের ভেতরে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য যোগাযোগের মাধ্যম ওয়্যারলেস টাওয়ারও। মিষ্টি পানির পুকুর নিমজ্জিত হয়েছে লবণাক্ত পানিতে।

খুলনা অঞ্চলের বনসংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ৫৪টি হরিণ এবং দুটি শূকর মিলিয়ে সুন্দরবনের ৫৬টি বণ্যপ্রাণীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত হরিণগুলো কটকা অভয়ারণ্য এলাকায় মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভেসে আসা ১৭টি জীবিত হরিণ উদ্ধার করা করা হয়। যা বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দফায় দফায় উচ্চ জোয়ারে সুন্দরবনের সব নদী-খাল উপচে বনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। জোয়ারের পানি সুন্দরবনের গহিনে উঠে যাওয়ায় হরিণগুলো সাঁতরে কূলে উঠতে না পেরে মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বনের অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়াসহ অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক পরিমাণ ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার ওপরে হবে।’

বিষয়:

২৫ বছর পর ব্রিজের খুঁটিতে বসল পাটাতন

আপডেটেড ৩০ মে, ২০২৪ ১৩:১৯
মোস্তাক আহমেদ মনির, সরিষাবাড়ী (জামালপুর)

জামালপুরের সরিষাবাড়ী ও সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার প্রায় ২০ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের রাস্তায় জিয়া খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের জন্য ৯০-এর দশকের শেষদিকে তৈরি করা হয়েছিল খুঁটি। এরপর ঠিকাদার টাকা-পয়সা তুলে নিয়ে কাজ শেষ না করেই তল্পিতল্পা গুটিয়ে চলে যান। দুই যুগের বেশি সময় পর সেই পিলারের ওপর ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ করলেন আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক। এতে এলাকাবাসীর ২৫ বছরের যাতায়াত ভোগান্তির সমাপ্তি হবে।

পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, পোগলদিঘা ইউনিয়নের টাকুরিয়ায় জিয়া খালের ওপর এ ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হয় নব্বই দশকের শেষ দিকে। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে আশপাশের ২০ গ্রামের মানুষের চলাচলের দুর্দশা ঘোচাতে এ ব্রিজের কাজ শুরু হয়; কিন্তু কোনো অজানা কারণে পিলার স্থাপনের পরপরই অর্ধ সমাপ্ত অবস্থায় বন্ধ হয়ে যায় নির্মাণকাজ। ফলে দীর্ঘদিন ধরে দুই উপজেলার বাসিন্দারা ফসল আনা-নেওয়া, স্কুল-কলেজ, কর্মক্ষেত্রে যাতায়াতসহ চলাচলের জন্য চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছে।

সরিষাবাড়ী উপজেলার টাকুরিয়া, মালিপাড়া, ব্রাহ্মণজানী, মানিক পটল, বিন্নাফৈর, চর সরিষাবাড়ী, কাজিপুর উপজেলার মনসুরনগর, শালগ্রাম, মাজনাবাড়ীসহ ২০টি গ্রামের হাজারো মানুষ শুকনো মৌসুমে খালটি হেঁটে পার হলেও দুর্ভোগে পড়ে বর্ষায়। বর্ষা মৌসুমে পানি বৃদ্ধি পেলে এই জনপদের মানুষকে প্রায় ৬-৭ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করতে হতো। এতে বাড়তি সময়ের পাশাপাশি পোহাতে হতো চরম দুর্ভোগ।

অবশেষে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ ঘোচাতে কাজ শুরু করেন পোগলদিঘা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মানিক। তিনি সব পিলারের ওপর লোহা ও কাঠ দিয়ে ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেন।

টাকুরিয়া গ্রামের কৃষক আবদুল গফুর বলেন, ‘খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু হলে আমরা আশার আলো দেখেছিলাম। পরবর্তিতে তা গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের স্বপ্ন, স্বপ্নই রয়ে গিয়েছিল। তবে দীর্ঘ ২৫ বছরেরও বেশি সময় পর ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক ব্রিজটি করে দিলেন।’

শিক্ষার্থী লিখন বলেন, ‘বন্যার সময় এই খালে পানি থাকার কারণে আমাদের অনেকেরই বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে যেত। কখনো কখনো সাঁতরে খাল পার হতে হতো, আবার কখনো ভিজে স্কুলে যেতে হতো; কিন্তু এখন আর কোনো চিন্তা নেই।’

স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য আসমাউল হোসনা শাহনাজ বলেন, এই চরাঞ্চলের মানুষের আয়ের একমাত্র উৎসই হচ্ছে কৃষিকাজ। এখানে রবিশস্যসহ অন্যান্য ফসল ভালো ফলন হলেও এই খালের ওপর ব্রিজ না থাকায় কৃষিপণ্য বাজারে নিয়ে নায্য দামে বিক্রি করতে পারেনি কৃষক। কেউ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি ছিল না। তবে এখন ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ব্রিজ করে দেওয়ায় মানুষের ভোগান্তির অবসান হয়েছে।

পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আশরাফুল আলম মানিক বলেন, ‘দুই উপজেলার প্রায় ২০ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের কথা চিন্তা করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সহযোগিতায় আপাতত চলাচলের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে লোহার অ্যাঙ্গেল ও কাঠ দিয়ে ব্রিজ তৈরি করে দিয়েছি। পাশাপাশি উপজেলা এলজিইডির কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে কীভাবে এখানে পূর্ণাঙ্গ ব্রিজ নির্মাণ করা যায়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।


রেমালের তাণ্ডব: সুন্দরবনের সুপেয় পানির আধারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত

বাগেরহাটে এখনও অন্ধকারে ২ লাখ গ্রাহক
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ দেশের উপকূল অঞ্চলসহ এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। ঝড়ের শেষে দেখা দিতে শুরু করেছে ক্ষতের চিহ্নগুলো। গত রোববার রাতে উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এর তাণ্ডবে বাড়িঘর ও গাচপলার নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারান ১১ জন। বিধ্বস্ত হয়েছে উপকূলসহ বিভিন্ন এলাকার দেড় লাখ বাড়িঘর। উপড়ে ও ভেঙে গেছে হাজার হাজার গাছপালা। ৬১ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভেসে গেছে হাজার হাজার মৎস্যঘের। প্রাণ হারিয়েছে বিপুল পরিমাণ গবাদি পশু। এছাড়া স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু জলোচ্ছ্বাসের কারণে নোনা পানি দীর্ঘক্ষণ জমে থাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফসলের।

প্রচণ্ড আকারের এই ঝড় বুক দিয়ে আগলে আরও ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়-ক্ষতি ঠেকিয়ে দিয়েছে দেশের একমাত্র ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন। এখানে গাছপালার ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। তবে স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু জলোচ্ছ্বাস বেশিক্ষণ অবস্থান করায় প্রাণ হারিয়েছে বনচর প্রাণী হরিণ ও শূকর। গত তিন দিনে বন থেকে উদ্ধার হয়েছে ৪০টি হরিণের মৃতদেহ। এরমধ্যে গতকাল উদ্ধার হয় আরও ১০টি হরিণের মরদেহ। বনের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল এসব মৃতদেহ।

সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানা যায়, সেখানে ঝড়ে উপড়ে গেছে অসংখ্য গাছপালা। বন বিভাগের জেটি, মিষ্টি পানির পুকুরসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অবকাঠামোও।

সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘রেমালের বিষয়ে আমরা আগে থেকেই সতর্ক ছিলাম। যার কারণে মানুষের কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে অবকাঠামোর বেশকিছু ক্ষতি হয়েছে। সুন্দরবন মায়ের মতো বুক পেতেই আমাদেরকে রক্ষা করে চলেছে। ঝড়ে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হলদেবুনিয়া, কচিকাটাসহ অভয়ারণ্যের ক্যাম্পগুলোর রাস্তা ভেঙে গেছে। পুকুর ডুবে গেছে, পাড় ভেঙে গেছে। বেশ কিছু ক্যাম্পেরও অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি ৫ থেকে ৭ ফুট পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পায়। ফলে লোকালয়ে ভেসে আসা বুড়িগোয়ালিনী, গাবুরা, চুনকুড়ি নামক এলাকা থেকে ৩টি হরিণ উদ্ধার করা হয়। পরে সেগুলো সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছিতে অবমুক্ত করা হয়েছে।’

সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন বিভাগের জেটি, স্বাদু পানির পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, ‘পূর্ব বন বিভাগের দুবলার চর, শেলার চর, কচিখালী, কটকা, শরণখোলা ও বরগুনা জেলার পাথরঘাটা স্টেশনের টিনের চালা উড়ে গেছে। কটকা কেন্দ্রের কাঠের জেটি ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। বনকর্মী, জেলে, বাওয়ালি ও বন্যপ্রাণীদের জন্য সুপেয় পানির যে আধার ছিল, সেগুলো পানিতে প্লাবিত হয়ে নোনা পানি ঢুকে গেছে। কটকায় সুপেয় পানির যে পুকুরটি ছিল, সেটি সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

আমাদের ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম অনেক জায়গায় নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের বিভিন্ন ক্যাম্পে ছোট ছোট যে ট্রলারগুলো ছিল, সেগুলো জলোচ্ছ্বাসের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক কাঠ ভেসে গেছে। প্রবল বাতাসের ফলে বনের গাছ-গাছালি ভেঙেছে। বেশ কিছু বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর খবরও পেয়েছি।’

খুলনার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৩৯টি মৃত হরিণ ও একটি মৃত বন্য শূকর উদ্ধার করা হয়েছে। শতাধিক মিষ্টি পানির পুকুর নোনা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। আর ৭০টিরও বেশি জেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ১৭টি হরিণ জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।’

প্রাথমিকভাবে সুন্দরবনে বন বিভাগের ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

এখনও বিদ্যুৎ পাননি ২ লাখ গ্রাহক

অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বাগেরহাটে ঝোড়ো বাতাসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির তিন দিন পর বিদ্যুৎহীন তিন লাখের বেশি গ্রাহকের সংযোগ পুনঃস্থাপন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ। বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত এসব বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাগেরহাট কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) সুশান্ত রায় জানান। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০০-এর বেশি শ্রমিক নিয়ে কাজ করে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়।

ঘূর্ণিঝড়ে পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনে গাছপালা পড়ে জেলার প্রায় পৌনে পাঁচ লাখের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েন। জানা গেছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন রয়েছেন।

সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তার ওয়ার্ডে তিনটি গ্রামে চার হাজারের অধিক পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। ঝড়ের দিন (রোববার) বিকেলে বিদ্যুৎ চলে যায়। কয়েক দিন কাজ করে তারের ওপর পড়ে যাওয়া গাছপালা সরিয়ে ছিঁড়ে যাওয়া তার পরিবর্তন করে নতুন সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

কচুয়া উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম বুলু বলেন, উপজেলা সদরের থানা, হাসপাতাল, উপজেলা পরিষদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবনে ছিঁড়ে যাওয়া তার মেরামত করে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।

পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা সুশান্ত রায় বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বাগেরহাটের নয়টি উপজেলায় বিদ্যুতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঝড়ে পৌনে পাঁচ লাখের বেশি গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঝড় থেমে যাওয়ার পর কাজ শুরু করি।’


পৌনে দুই ঘণ্টা পর উত্তরাঞ্চলে ট্রেন চলাচল শুরু

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বগুড়া প্রতিনিধি

বগুড়ার কাহালুতে বগি লাইনচ্যুত হওয়ার কারণে রাজধানীর সঙ্গে পৌনে দুই ঘণ্টা যোগাযোগ বন্ধের পর স্বাভাবিক হয়েছে ট্রেন চলাচল। বুধবার বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে উত্তরবঙ্গ মেইল ট্রেনের লাইনচ্যুত বগিটি উদ্ধার করা হয়। এর মধ্য দিয়ে স্বাভাবিক হয়ে আসে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন যোগাযোগ।

জানা গেছে, ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হওয়ার সময় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হলেও কেউ হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। ট্রেনটির মাঝখান থেকে একটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার কারণে ওই বগি দুই নম্বর লাইনে রেখেই বাকি বগিগুলো ইঞ্জিন লাগিয়ে এক নম্বর মেইন লাইনে এনে জোড়া দেয়া হয়।

এ কারণে ট্রেনের যাত্রীরা বিড়ম্বনার শিকার হন। অবশ্য এর মধ্যে অনেক যাত্রী ট্রেন রেখে বিকল্প পথে গন্তব্যে রওনা হয়ে যান।

বগুড়া রেল স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট সাজেদুর রহমান সাজু বলেন, ‘সান্তাহার থেকে ছেড়ে আসা লালমনিরহাটগামী উত্তরবঙ্গ মেইল ট্রেনটি বিকেল ৩টার দিকে কাহালু স্টেশনে প্রবেমের আগ মুহূর্তে বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে উত্তরবঙ্গ থেকে রাজধানী ঢাকার দিকে রেল যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়।

এ দুর্ঘটনার কারণে বগুড়া স্টেশনে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন লালমনি এক্সপ্রেস ও দোলনচাঁপা আটকা পড়ে। খবর পেয়ে লাইনচ্যুত ট্রেন উদ্ধারে সান্তাহার থেকে রিলিফ ট্রেন রওয়ানা দেয়। পৌনে ৫টার দিকে লাইন পরিষ্কার হলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।


৮৭ উপজেলায় ৩৫ শতাংশের কম-বেশি ভোট পড়েছে : সিইসি

বুধবার নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ৮৭ উপজেলায় ৩৫ শতাংশের কম-বেশি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। ভোট পড়ার প্রকৃত তথ্য জানতে আরও কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান তিনি।

আজ বুধবার বিকেলে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই এসব কথা বলেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘এক হাজার ১৫২ জন প্রার্থী ছিলেন। ইভিএমে ১৬ উপজেলায় বাকিগুলো ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। অবাধ নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এই লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেক তৎপর ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘খুবই সীমিত পরিসরে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। ভোট কারচুপির চেষ্টায় ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। দুজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ৬ জন আহত হয়েছেন। একজন প্রিজাইডিং অফিসার অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন বলে জানান তিনি।’

এবারের নির্বাচনেও অধিকাংশ উপজেলার ভোটকেন্দ্রে ছিল ভোটার খরা। তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে রাজশাহী, ফরিদপুর, কুমিল্লা, ফেনী, রংপুর, নীলফামারী, কুষ্টিয়া, পাবনা, নোয়াখালী, বগুড়া, সুনামগঞ্জ, জামালপুরসহ অধিকাংশ জেলার ভোটকেন্দ্রে সারাদিন ভোটার উপস্থিতি কম দেখা গেছে।

তৃতীয় ধাপে ১০৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে সোমবার ১৯টি এবং মঙ্গলবার ৩টি উপজেলার ভোট স্থগিত করেছে কমিশন। ফলে বুধবার ৮৭টি উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের এ ধাপে ১ হাজার ১৫২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৯৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৫৬ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৯৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বিষয়:

শেষ হলো তৃতীয় ধাপের ভোট, চলছে গণনা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ৮৭ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এখন গণনা চলছে।

এবারের নির্বাচনেও অধিকাংশ উপজেলার ভোটকেন্দ্রে ছিল ভোটার খরা। তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সারা দেশেই ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল অনেক কম। এ নির্বাচনে প্রথম চার ঘণ্টায় ২০ শতাংশের কম ভোট পড়েছে।

বুধবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব বলেন, ‘মোবাইল নেটওয়ার্ক ঠিকমতো কাজ না করায় এখন পর্যন্ত ঠিক কত শতাংশ ভোট পড়েছে তার পুরো তথ্য সংগ্রহ করতে পারছি না। এজন্য ম্যানুয়ালি তথ্য সংগ্রহ করছি। যে কেন্দ্রগুলোর তথ্য পেয়েছি সেখানে ২০ শতাংশের নিচে ভোট পড়েছে বলে জানা গেছে, এটা প্রাথমিক তথ্য। দুপুর ১২টা পর্যন্ত কোথাও ১৫, কোথাও ১৬, কোথাও ২০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি।’

বিষয়:

আ.লীগ সরকার দুর্যোগে মানুষের পাশে আছে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মনির আহাম্মদ শুভ্র, চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সাহায্য নিয়ে দ্রুত আপনাদের পাশে এসেছি এবং আওয়ামী লীগ সরকার যে কোন দুর্যোগে আপনাদের পাশে আছেন বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান।

আজ বুধবার দুপুর ১টায় চরফ্যাশন সরকারি টিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে

৫ শত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিতরণ শেষে উপস্থিত জনতার সামনে প্রধান অতিথি'র বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। ঘুর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে চরফ্যাশনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে আমরা দ্রুত প্রস্তুতি নেওয়ার জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে আমার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার সবধরনের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবো। উপকূলীয় এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের জন্য কাজ করছেন, তিনি সর্বদা আপনাদের খোঁজ খবর রাখছেন। আপনার প্রধানমন্ত্রী উপর আস্থা রাখুন। ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের উদ্দেশ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের অবস্থার কথা এখান থেকে ফিরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে জানাবো ৷ আপনাদের এলাকার সমস্যা গুলো সমাধানে ব্যবস্থা গ্রহন করবো ।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি'র বক্তব্য রাখেন ভোলা-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ কামরুল হাসান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার মো: মাহিদুজ্জামান।

উপজেলা প্রশাসন চরফ্যাশন এর আয়োজনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভোলা জেলা প্রশাসক মো: আরিফুজ্জামান।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নওরীন হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ভিপি, পৌর মেয়র মো: মোরশেদ, সাবেক মেয়র শ্রী বাদল কৃষ্ণ দেবনাথ, চরফ্যাসন প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আবুল হাসেম মহাজনসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে প্রতিমন্ত্রী হেলিকপ্টারে চরফ্যাশনের ঢালচর, চরপাতিলা ও কুকরীমুকরী ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।


ঘূর্ণিঝড় রেমাল: স্থগিত ২০ উপজেলায় ভোট ৯ জুন

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে ২২ উপজেলার ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। স্থগিত করা এই ২২ উপজেলার মধ্যে ২০ উপজেলায় আগামী ৯ জুন ভোট অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম।

আজ বুধবার দুপুরে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রথমে ১৮টি উপকূলীয় জেলা ও একটি পার্বত্য উপজেলার ভোট স্থগিত করেছিলাম। পরে বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে চাঁদপুরের দুটি উপজেলা এবং সড়ক যোগাযোগ সমস্যার কারণে নেত্রকোণার খালিয়াজুরী উপজেলার ভোট স্থগিত করেছিলাম। মোট দুইবারে ২২টি উপজেলার ভোট স্থগিত করা হয়েছিল। এ ছাড়া মামলাজনিত কারণে চান্দিনার ভোট স্থগিত করা হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘স্থগিত হওয়া ২০টি উপজেলার ভোট আগামী ৯ জুন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া কুমিল্লার চান্দিনা, চাঁদপুরের কচুয়া ও ফরিদগঞ্জের ভোট হবে ৫ জুন।’

ভোট স্থগিত হওয়া ২০টি উপজেলা হলো- বাগেরহাটের শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা, খুলনা জেলার কয়রা, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা, বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, পটুয়াখালী সদর, দুমকী, মির্জাগঞ্জ, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, ভোলার তজুমদ্দিন, লালমোহন, ঝালকাঠির রাজাপুর ও কাঠালিয়া, বরগুনার বামনা ও পাথরঘাটা, রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা এবং নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুরী।

বিষয়:

banner close