শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪

কেএনএফের ১৭ নারীসহ ৫২ জনের ৪ দিনের রিমান্ড

ছবি: সংগৃহীত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১৬:৪০

বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংকে সন্ত্রাসী হামলা, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ এবং অস্ত্র ও টাকা লুটের দুটি মামলায় ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)’ সংশ্লিষ্টতায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা ৫৭ জনকে আজ বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হয়। এর মধ্যে ১৭ জন নারীসহ ৫২ জনের চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এছাড়া চারজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টায় আসামিদের বান্দরবান চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাজমুল হোসাইনের এজলাসে হাজির করা হয়।

এসময় কোর্ট ইন্সপেক্টর বিশ্বজিৎ সিংহ রিমান্ডের আবেদন এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী মহতুল হোসেন যত্ন জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামমঞ্জুর করে রিমান্ডের আবেদনের ওপর শুনানি শেষে তাদের চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালত সূত্র জানায়, রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে ৫২ জনকে। এছাড়া এক নারী আসামিকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের শর্ত আরোপ করা হয়েছে।

গত ৮ এপ্রিল যৌথবাহিনী বিশেষ অভিযান চালিয়ে রুমা উপজেলার বেথেলপাড়া থেকে ১৮ নারীসহ ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।

বাকিদের বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ২ এপ্রিল রাতে রুমা উপজেলা সদরের সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি করে কেএনএফ। ওই সময় তারা পুলিশের ১০টি অস্ত্র এবং আনসারের চারটি অস্ত্র লুট করে নেয়। যাওয়ার সময় তারা ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এর পরদিন ৩ এপ্রিল দুপুরে পার্শ্ববর্তী উপজেলা থানচির সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি করে তারা। ওই সময় সন্ত্রাসীরা দুটি ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টার থেকে নগদ টাকা লুট করে। এ ঘটনার পর বান্দরবান জেলার রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনীর বিশেষ চিরুনি অভিযান চলছে। এসব অভিযানে এ পর্যন্ত ৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।


প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে গেল জাহাজ

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

চাল, ডাল, পেঁয়াজ, তেলসহ নানা ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও মালামাল নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে এমভি ‘বারো আউলিয়া’ নামে একটি জাহাজ।

আজ শুক্রবার (১৪ জুন) দুপুর ২টা ১৫মিনিটের দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে জাহাজটি সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

জানা যায়, জাহাজটিতে দেড় শতাধিক লোকজন ও সরকারি সহায়তায় খাদ্যপণ্য এবং পাঁচটি কোরবানির গরু রয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন জানান, দ্বীপের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করে জাহাজটি পাঠানো হয়েছে। এটি বঙ্গোপসাগর দিয়ে টেকনাফ পৌঁছে ঘোলারচর হয়ে সেন্টমার্টিন পৌঁছাবে। পণ্য সামগ্রীর পাশাপাশি কক্সবাজারে আটকে পড়া সেন্টমার্টিনের অনেক বাসিন্দাও এই জাহাজে করে সেন্টমার্টিন যাবেন।

শুক্রবার সকাল ১০টায় বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ‘এমভি বারো আউলিয়া’ জাহাজে তোলা হয় চাল, ডাল, পেঁয়াজসহ নানা ধরনের ভোজ্যপণ্য। একই সঙ্গে কক্সবাজারের বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়া সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারাও জড়ো হন নিজ এলাকায় ফেরার জন্য।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বিকালে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের নিরাপত্তায় সেন্টমার্টিন থেকে তিনটি ট্রলারে করে দুই শতাধিক মানুষ টেকনাফ পৌঁছান। এ সময় টেকনাফ থেকে চারটি ট্রলারে করে তিন শতাধিক লোক সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা হন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে চারটি ট্রলার লোকজন নিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যায়। সেখান থেকে অন্তত দুই শতাধিক মানুষ টেকনাফে ফিরে আসেন। এসময় বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা নিরাপত্তা জোরদার করেছিলেন।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারে সংঘাতের জেরে টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌরুটের নাফ নদীর নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে বাংলাদেশি ট্রলারকে লক্ষ করে মিয়ানমার থেকে বার বার গুলি ছোঁড়া হয়। এ ঘটনায় গত এক সপ্তাহ ধরে ট্রলার চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দ্বীপটিতে খাদ্য সংকট দেখা দেয়। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার থেকে কক্সবাজার থেকে বিকল্প পথে জাহাজ চলাচল শুরু করা হয়।


টাঙ্গাইলে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাইভেটকারের চালকসহ চারজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত চারজন।

আজ শুক্রবার (১৪ জুন) ভোরে কালিহাতী উপজেলার বাগুটিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, কালিহাতী উপজেলার বাগুটিয়া এলাকায় বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইলের কলেজের সামনে ভোরে ট্রাক ও প্রাইভেটকারের সংঘর্ষে প্রাইভেট কারের চালকসহ তিনজন নিহত ও চারজন আহত হন।

নিহত ব্যক্তিদের এখনো কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে এক ব্যক্তি প্রাইভেটকারের চালক ছিলেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এ বিষয়ে অ্যালেঙ্গা হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মো. সাজেদুর রহমান বলেন, ‘মাঝ রাতের কোনো এক সময় কালিহাতী উপজেলার বাগুটিয়া এলাকায় একটি গরু বোঝাই ট্রাকের সঙ্গে একটি প্রাইভেটকারের সংঘর্ষ ঘটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর অবস্থায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ৭ জনকে নেওয়া হয়।’

এ সময় জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক ছয় জনের মধ্যে তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। এখনো নিহত দুইজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।

ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধুসেতু মহাসড়কে কালিহাতী উপজেলার পৌলী নামক স্থানে সকাল ৮টার দিকে সিমেন্ট ভর্তি ট্রাকের সঙ্গে যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষে একজন মারা যান।

এ ছাড়াও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আইল্যান্ডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।


বৃষ্টির মধ্যে বাড়ি ফিরছেন মানুষ, মহাসড়কে ধীরগতি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে গুড়ি-গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেউ ট্রাক-পিকআপ কেউ বা মোটরসাইকেলযোগে ছুটছেন। বাড়ি ফিরছেন কর্মস্থল থেকে ঘরমুখো মানুষ।

আজ শুক্রবার (১৪ জুন) সকাল থেকে বেলা ১১ টা পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের অ্যালেঙ্গা ও বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

এদিকে, ঈদযাত্রায় মহাসড়কে স্বাভাবিকের তুলনায় দুই থেকে প্রায় আড়াইগুণ যানবাহন চলাচলের চাপ বেড়েছে। ফলে ঈদে ছুটির প্রথম দিনই মহাসড়কে উত্তরবঙ্গগামী লেনে যানবাহনের দীর্ঘদিন লাইন সৃষ্টি হয়েছে।

ঈদের ছুটি পেয়ে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বাড়ি ফিরছেন গাইবান্ধার হাসান আলী ও তার পরিবার।

তিনি বলেন, ভোরে সাভার থেকে বাসে উঠেছি। এলেঙ্গা এসে যানজটে না পড়লেও গাড়ি চলাচলে ধীরগতি।

পোশাককর্মী জাহানারা সুলতানা বলেন, তার বাড়ি বগুড়ার সান্তাতার। চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের রাবনা বাইপাস পর্যন্ত কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি তার। কিন্তু সেখান থেকে সেতু পূর্ব আসতে সময় লেগে দুই ঘণ্টার মতো।

অপরদিকে, উত্তরবঙ্গগামী লেনের পুংলী হতে আশেকপুর বাইপাস পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে মালামালসহ ট্রাক সরিয়ে নেওয়ার পর পরিবহনগুলো ধীরগতি চলাচল করছে।

অ্যালেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মীর মো. সাজেদুর রহমান জানান, ভোরে সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাক পুংলী এলাকায় উল্টে ট্রাকে থাকা বস্তাগুলো সড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। এতে কিছু সময় পরিবহন চলাচল বন্ধ ছিল উত্তরবঙ্গগামী লেনে।

তিনি আরও জানান, সার্ভিস লেন চালু রাখা হয়েছিল। পরে ক্ষতিগ্রস্ত ট্রাকটি সরিয়ে নেওয়ার পর উত্তরবঙ্গ লেন খুলে দেয়া হলে তখন থেকেই উত্তরবঙ্গগামী লেনে যানবাহনগুলো ধীরগতিতে চলাচল করছে এবং মহাসড়কে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ রয়েছে।


পদ্মা সেতুতে ঘরমুখো যানবাহনের ঢল

ঈদে ঘরমুখো যানবাহনের ঢল নামে পদ্মা সেতুতে। শুক্রবার সকালের ছবি। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

ঈদের ছুটির প্রথম দিন সূর্য ওঠার আগেই যানবাহনের ঢল নামে দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশদ্বার পদ্মা সেতুতে। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।

আজ শুক্রবার (১৪ জুন) ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উত্তর টোল প্লাজামুখী যানবাহনের ধীরগতি লক্ষ্য করা যায়। বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের শ্রীনগর উপজেলার ছনবাড়ি এই অবস্থা দেখতে পাওয়া যায়।

মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘রাতে পদ্মা সেতু সংলগ্ন ওয়েট স্কেলে পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রাখায় শুক্রবার ভোরে মহাসড়কে যানবাহনের জটলা দেখা দেয়। এতে প্রায় ছয় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহনের ধীর গতি ছিল।’

তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা বুথসহ সাতটি বুথে নিরবচ্ছিন্ন টোল আদায় করা হচ্ছে। রাতের অপেক্ষমাণ পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানও এখন চলাচল শুরু করেছে। ফলে টোল আদায়ে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।’

সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় যানবাহনগুলোকে টোল দিতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে কিছু সময়। সেতু এলাকায় যানবাহন এগুচ্ছে ধীরগতিতে।

মাগুড়াগামী বাসযাত্রী সোহেল রানা বলেন, ‘আমি ঢাকার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ করি। প্রতিবছরের মত ঈদ ছুটির প্রথম দিনে বাড়ি যাচ্ছি। মহাসড়কে আসতে কোন অসুবিধা না হলেও পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় যানজটে পড়েছি।’

পদ্মা সেতু টোল প্লাজায় অপেক্ষমাণ যাত্রী পিরোজপুর জেলার বাসিন্দা আলী আহসান বলেন, ‘দেশে গিয়ে কোরবানির পশু কিনবো। বাড়িতে সবাই আমার অপেক্ষায় আছেন। তাই ঈদ ছুটির প্রথম দিনই বাড়ির দিকে রওনা হয়েছি। সেতু এলাকায় ৪০ মিনিট ধরে অপেক্ষা করছি।’

মোটরসাইকেল চালক ফয়সাল শাহপরাণ বলেন, ‘ভোরে মোটরসাইকেল নিয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে রওনা হয়েছি বাড়ির উদ্দেশ্যে। ভেবেছিলাম ভোরে সেতুর টোল প্লাজা ফাঁকা থাকবে। কিন্তু এখানে এসে কিছুটা ধীরগতিতে পড়েছি। তারপরও তেমন কষ্ট হচ্ছে না। সেতু পার হতে পারলেই আর বেশি সময় লাগবে না বাড়ি পৌঁছতে। এটা ভেবেই ভালো লাগছে।’


ঈদুল আজহা: বাংলাবান্ধায় ৭ দিন বন্ধ থাকেব আমদানি-রপ্তানি

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৪ জুন, ২০২৪ ১৩:২০
পঞ্চগড় প্রতিনিধি

মুসলমান ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ও সাপ্তাহিক ছুটিসহ দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে চার দেশের সঙ্গে পাথরসহ সকল প্রকার পণ্য আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এসময় বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভূটানের সঙ্গে পণ্য আমদানি রপ্তানি বন্ধ থাকলেও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।

আজ শুক্রবার সকালে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কুদরত-ই খুদা মিলন এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার (৫ জুন) চারদেশীয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধের বিষয়ে নোটিশ জারি করে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপ।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ভারতের ফুলবাড়ি এক্সপোর্টসরস এ্যাসোসিয়েশন, সিএন্ডএফ এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন যৌথ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক, উল্লিখিত সাপ্তাহিক ছুটিসহ ৭ দিন ব্যাবসায়িক কার্যক্রম বন্ধের একটি চিঠি এরই মধ্যে উভয় স্থল শুল্ক স্টেশন কাস্টমস কর্মকর্তা, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন ও স্টেশন, বাংলাদেশ,সভাপতি/সচিব, মেচি কাস্টমস ক্লিয়ারিং ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, কাকরভিটা, মেছিনগর, নেপাল, ভুটান এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনকে দেওয়া হয়েছে।

সেখানে আগামী ১৫ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত টানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে৷ সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার থাকায় আগামী শনিবার (২২ জুন) বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর স্থল বন্দরে যথারীতি বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে।

এ বিষয়ে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কুদরত-ই খুদা মিলন বলেন, ঈদুল আযহা ও সাপ্তাহিক ছুটিসহ মোট ৭ দিন বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানি বন্ধ থাকবে৷

বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অমৃত অধিকারী জানান, ঈদ উপলক্ষে ৭ দিন আমদানি রপ্তানি বন্ধ থাকলেও স্বাভাবিক থাকবে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপার।


সাত দিন পর ঝুঁকি নিয়ে সেন্ট মার্টিনে চলাচল শুরু

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফে (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

মিয়ানমার সীমান্ত থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যাতায়াতকারী নৌযান লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের কারণে ৭ দিন বন্ধ থাকার পর বিজিবি ও কোস্টগার্ডের নিরাপত্তায় শুরু হয়েছে ট্রলার চলাচল। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ২৫০ যাত্রী নিয়ে অন্তত ১০টি ট্রলার টেকনাফের মুন্ডারডেইল ঘাটে ভেড়ে। তবে সাগর উত্তাল ঝুঁকি নিয়ে এসব ট্রলার থেকে লোকজনকে সরাসরি কূলে ওঠানো সম্ভব হচ্ছিল না। পরে কূল থেকে কয়েকটি ডিঙি নৌকা উপকূলের কিছু দূরে সাগরে অবস্থানকারী ট্রলারগুলোর কাছে পাঠানো হয়।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় মেরিন ড্রাইভ সড়ক-সংলগ্ন টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের মুন্ডারডেইল এলাকার সাগর উপকূলের পয়েন্ট দিয়ে সেন্ট মার্টিন থেকে ট্রলারযোগে এসব মানুষ ফিরেছেন বলে জানান।

টেকনাফের ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী বলেন, দুপুর ১টার দিকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জেটি ঘাট থেকে ৩টি ট্রলারযোগে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যদের নিরাপত্তায় তিন শতাধিক মানুষ টেকনাফের উদ্দেশে রওনা দেয়। বিকেল ৩টার দিকে ট্রলারগুলো টেকনাফের মুন্ডারডেইল সাগর উপকূলে পৌঁছে। কিন্তু সাগরের প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে পণ্যবাহী ট্রলার যাওয়া সম্ভব হয়নি।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম জানান, গত ৭ দিন দ্বীপে আসা-যাওয়া বন্ধ থাকায় দ্বীপের খাদ্য পণ্যসংকট দেখা দিয়েছে। এখন বিকল্পভাবে ট্রলার চলাচল শুরু হওয়ায় স্বস্তি মিলছে। যে ট্রলারগুলো গেছে ওইসব ট্রলার নিয়ে টেকনাফে থাকা মানুষ ফিরে আসবে।

টানা ৭ দিন বন্ধ থাকার পর বুধবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের এক জরুরি সভায় বৃহস্পতিবার থেকে যাত্রী আসা-যাওয়া এবং পণ্যবাহী ট্রলার চলাচল শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

এ নিয়ে ইউএনও আদনান জানান, বৃহস্পতিবার টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটের সাগরের বিকল্প পথে যাত্রী পারাপার শুরু হলেও পণ্যবাহী কোনো ট্রলার সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে টেকনাফ ছাড়েনি।

টেকনাফের নাফ নদীর সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের কাছে টানা দুই দিন ধরে দেখা মিলছে বড় ধরনের একটি জাহাজের। আর সেই জাহাজ ও মিয়ানমারের স্থলভাগে বুধবার রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত চলেছে গোলাগুলি। এ সময় বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে টেকনাফের সীমান্তবর্তী এলাকায়।

বিষয়:

সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের চাবি হস্তান্তর

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারা বাংলা ডেস্ক

সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সহ-সভাপতি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য, দৈনিক ভোরের পাতা ও দ্য ডেইলি পিপলস্ টাইমের সম্পাদক ও প্রকাশক, এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক ড. কাজী এরতেজা হাসান সিআইপির নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে।

বুধবার (১২ জুন) সন্ধ্যায় জেলা শহরের সুলতানপুর বড়বাজার সড়কের ডে-নাইট কলেজ মোড়ে প্রতিষ্ঠিত অস্থায়ী কার্যালয়ে ড. কাজী এরতেজা হাসানের পক্ষে চাবি হস্তান্তর করেন জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর রশিদ।

এসময় দলের পক্ষে চাবি গ্রহণ করেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব একে ফজলুল হক। এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আখতার হোসেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন অনু, জেলা তাঁতীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি এস এম তুহিন, জেলা তাঁতীলীগের সহ-সভাপতি জাবেদ হোসেন টিপু, পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইলিয়াস কবির, পৌর যুবলীগের আসাদুজ্জামান রনি, জেলা ছাত্রলীগের শেখ জুবায়ের আল জামান, পৌর যুবলীগের সদস্য মাসুম বিল্লাহ,মিলন প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, ড. কাজী এরতেজা হাসান নিজ খরচে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের একটি স্থায়ী কার্যালয় নির্মাণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেটি হওয়ার আগ পর্যন্ত কার্যালয় হিসেবে ব্যবহারের জন্য ২০২২ সালের ১২ জুন ২ হাজার বর্গফুটের ওপর নিজ খরচে অত্যাধুনিক অঙ্গসজ্জায় সজ্জিত এই অস্থায়ী কার্যালয়টি নির্মাণ করে দেন।


রেকার উল্টে পাটুরিয়ার ৫নং ফেরিঘাট বন্ধ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারা বাংলা ডেস্ক

পাটুরিয়ার ৫ নং ফেরি ঘাটে একটি রেকার উল্টে গেছে। এতে ওই ঘাটে যানবাহন পারাপার বন্ধ রয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে দুর্ঘটনায় আটকে পড়া একটি ট্রাক উদ্ধার করতে গিয়ে ওই রেকারটি উল্টে যায়।

জানা যায়, পাটুরিয়ার ৫নং ঘাটে একটি ট্রাক ফেরিতে উঠতে গিয়ে আটকে যায়। এ সময় বিআইডব্লিউটিসির রেকার দিয়ে ট্রাকটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়। এতে রেকারটিও উল্টে যায়। এরপর থেকে ৫নং ঘাটতি বন্ধ রয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসির ডিজিএম শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ জানান, সকাল ৬টার দিকে পাটুরিয়া ৫নং ঘাট এলাকায় একটি ফেরিতে যানবাহন লোড দেওয়া হচ্ছিল। এ সময় একটি ট্রাক ফেরিতে উঠতে গেলে আটকে যায়। ওই ট্রাকটি উদ্ধারের জন্য বিআইডব্লিউটিসির রেকর ডাকা হয়। এরপর ট্রাকটি উদ্ধারের চেষ্টার সময় রেকারটি উল্টে যায়। এ সময় কেউ হতাহত না হলেও ৫ নং ফেরি ঘাটটি বন্ধ করা হয়। তবে ওই রেকারটি উদ্ধারের জন্য আরেকটি রেকার আনার চেষ্টা চলছে।

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ২৩টি ফেরি, ৩৩টি লঞ্চ ও ৪১টি স্পিডবোট চলাচল করছে।


এত গ্রেপ্তারের পরও কেন নির্মূল হচ্ছে না আরসা?

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রহমত উল্লাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার)

মিয়ানমারের চরমপন্থি সশস্ত্র সংগঠন আরসার আগের নাম ছিল আল ইয়াকিন বা ইসলামি সংগঠন। রোহিঙ্গা মুসলমানদের নিয়ে কাজ করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। ২০১৩ সালের দিকে সংগঠনের নাম পাল্টে রাখা হয় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসা, যদিও দলের একাংশ এখনো আল ইয়াকিন নামেই পুরোনো সংগঠনকে আকড়ে ধরে আছে। আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনি সেসময়ে হন স্যালভেশন আর্মির (আরসা) কমান্ডার ইন চিফ। এই আতাউল্লাহর জন্ম সৌদি আরবে, তার বাবা-মা আরাকান থেকে গিয়ে সৌদি আরবে স্থায়ী হন। কিন্তু জন্ম সৌদি আরবে হলেও আতাউল্লাহ পরে পাকিস্তানের করাচিতে এসে বসবাস করতেন।

রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায় করতে ঠিক কবে মিয়ানমারে তিনি ফিরে আসেন, তা জানা যায় না। তবে তা ২০১৩ সালের আগেই অর্থাৎ আল ইয়াকিন থেকে আরসার যাত্রা শুরুর আগেই হয়েছে, তা নিশ্চিত। সংগঠনটি সশস্ত্র হয়ে উঠেছে, তা প্রথম বোঝা যায় ২০১৫-১৬ সালের দিকে। লক্ষ্য ছিল, মিয়ানমারের মুসলিম অধ্যুষিত আরাকান প্রদেশ দখল। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি মিয়ানমারের থানায় হামলা, পুলিশের অস্ত্র লুটের ঘটনার পর সংগঠনটির বিরুদ্ধে প্রথম মনোযোগ দেয় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তবে ওই বছরেই আগস্টে তার নির্দেশে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে আরকান দখল ও অস্ত্র লুট করার জন্য আবার হামলা চালায় আরসা। এ ঘটনায় ভীষণ ক্ষুব্ধ সেনাবাহিনী আরসা নির্মূলের উদ্দেশে আরকান প্রদেশে হামলা শুরু করে। তখন উত্তপ্ত হয়ে পড়ে মিয়ানমারে মুসলমানদের গ্রামগুলোর পরিস্থিতি। ওই দেশের সেনাবাহিনী ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে চড়াও হয়ে অভিযান ও রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন, হামলা ও গণধর্ষণের ঘটনা শুরুর পর নিজ দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা। সম্পূর্ণ মানবিক কারণে তাদের তখন আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ সরকার। আর বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আরসার সদস্যদের সম্পর্কে তথ্য না থাকার সুযোগে এসব রোহিঙ্গার সঙ্গে আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশে চলে আসে আরসার কিছু সদস্য আর সমর্থকও।

উদ্দেশ্য তাদের মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করা হলেও অস্ত্র তৈরি ও সংগ্রহ, বাহিনীর জন্য সদস্য সংগ্রহ, সদস্যদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া ইত্যাদি কাজে তারা তখন থেকেই গোপনে বাংলাদেশের পাহাড়ি নির্জন এলাকাগুলো ব্যবহার শুরু করে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরগুলোতে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে তারা সেগুলোতে আধিপত্য বিস্তার শুরু করে। রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির সর্দার বা মাঝিদের করায়ত্ত করা বা ভয় দেখানো দিয়েই এর শুরু। একই সঙ্গে নিজেদের অর্থভাণ্ডার ঠিক রাখতে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের অরক্ষিত সীমান্ত অঞ্চলকে রুট হিসেবে ব্যবহার করে এদেশে মাদক চোরাচালান আরও বাড়িয়ে দেয়।

শুরুতে আরসা সম্পর্কে অন্ধকারে থাকলেও দিনের পর দিন রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরগুলোতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পরস্পরের মধ্যে হামলা, গুলি, হত্যার ঘটনা বাড়তে থাকায় এবং বিপুল পরিমাণ মাদকসহ রোহিঙ্গা ও তাদের প্ররোচনায় স্থানীয়দের আটক বা গ্রেপ্তাদের মধ্য দিয়ে এই চরমপন্থি সংগঠন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেতে শুরু করে বাংলাদেশের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। র‌্যাব, এপিবিএন আরসা দমনে কঠোর অভিযান চালাচ্ছে মাঝেমধ্যেই। তার পরও তাদের গোপন তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়া এবং বেশির ভাগ রোহিঙ্গা সশস্ত্র যুদ্ধে জড়িত হতে না চাওয়ায় আরসার নেতাসহ সদস্যরা বরাবরই আছে উৎকণ্ঠায়। রোহিঙ্গাদের মধ্যে আরসা ছাড়াও আছে আরও কিছু সশস্ত্র গ্রুপ। তবে তারা পরস্পর যেন পরস্পরের শত্রু। আরাকানে যে বিদ্রোহী সশস্ত্র গ্রুপ আরাকানের স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র লড়াই করে যাচ্ছে, আরাকান আর্মি, ওদের সঙ্গেও এসব গ্রুপের শত্রুতা রয়েছে। আরাকান আর্মি সাধারণভাবে সব আরাকানির জন্যে স্বাধীন আরাকান চায়, কিন্তু আরসাকে ওরা চিহ্নিত করে মুসলিম সন্ত্রাসী গ্রুপ হিসেবে। সব মিলিয়ে অস্থির হয়ে উঠছে রোহিঙ্গা শিবির।

আরসার শীর্ষ নেতা অলি আকিজ দীর্ঘদিন মিয়ানমারে আত্মগোপনে থাকলেও গত ১৯ মে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফিরেছেন। আরসার শীর্ষ কমান্ডার আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনি এবং সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ওস্তাদ খালেদের নির্দেশে ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারের নতুন পরিকল্পনা নিয়ে অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র গ্রুপ আরসার প্রশিক্ষণ। অস্ত্র তৈরি, আত্মগোপন, মিটিংসহ নানা কর্মকাণ্ড সেখানে সংগঠিত হতো। গত রোববার মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে ক্যাম্প-৪-এ গোপন বৈঠক থেকে আকিজসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি দেশীয় তৈরি এলজি, একটি ওয়ানশুটার গান, ১০ রাউন্ড কার্তুজ, দুই কেজি বিস্ফোরকদ্রব্য, তিনটি মোবাইল এবং নগদ ২ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়।

র‌্যাব-১৫-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা এ পর্যন্ত ১১২ জনের ওপরে আরসার ভিন্ন পদবিধারী নেতা গ্রেপ্তার করেছি। গত রোববারের আরসার শীর্ষ নেতা আকিজসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করি। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

২০১৭ সালে সীমান্ত পার হয়ে ভারত হয়ে বাংলাদেশে এসে ক্যাম্প-৫-এ সপরিবারে বসবাস শুরু করেন মৌলভী আকিজ। পরে আরসার হয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। এরপর ক্যাম্প-৫-এ আরসার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান। নেটওয়ার্ক গ্রুপে কাজ করতেন। ক্যাম্পের বিভিন্ন তথ্য আরসা কমান্ডারদের কাছে পৌঁছে দিতেন। এভাবে শীর্ষ নেতৃত্বে পৌঁছান। রোহিঙ্গাদের প্রত‍্যাবাসনের পক্ষে কাজ করায় ওস্তাদ খালেদের নির্দেশে রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মহিবুল্লাহকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন আকিজ। তা ছাড়া মতাদর্শিক দ্বন্দ্বে ক্যাম্পে সেভেন মার্ডারে সরাসরি অংশ নেন। তাদের নেতা-কর্মী আটক হলে কিছুটা দুর্বল হয়ে যায় কিন্তু আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশাল এই জনগোষ্ঠীতে আরসা, আল-ইয়াকিনসহ অন্তত ১৫টি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন সক্রিয়। ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ছয় বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় ৩০০ জন নিহত হয়েছে। মামলা হয়েছে পাঁচ হাজারের অধিক। এসব মামলার বেশির ভাগই হয়েছে মাদক ও আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে।

রোহিঙ্গা নেতা ড. জোবায়ের বলেন, আরসা রোহিঙ্গা ক্যাম্প দখল করে রাজত্ব কায়েম করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত তাদের দুই শতাধিক নেতা-কর্মী আটক হয়েছেন। আটক করলেও তারা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে, তার কারণ তাদের রোহিঙ্গা সরকার মদদ দিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যাবাসন বন্ধ রাখার জন্য মিয়ানমার সরকার তাদের ব্যবহার করে যাচ্ছে, যে কারণে তারা এতটা শক্তিশালী।

গত রোববার রাতে উখিয়ার মধুরছড়া ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আরসার শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে। সে জায়গায় ভোরে ৪০-৪৫ জন আরসা সন্ত্রাসী পাহাড় থেকে সীমানার কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে ৪ নম্বর ক্যাম্পে আসে। ঘটনাস্থলে এসে ক্যাম্পে পাহারারত রোহিঙ্গা ইলিয়াছকে তারা গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হাতে, পায়ে ও তলপেটে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। এতে ইলিয়াস ঘটনাস্থলেই মারা যান।

১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে এপিবিএন সদস্যদেরও লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা।

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন করে সংগঠিত এবং নাশকতা করার চেষ্টা করছে আরসা। মূলত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালায় আরসা সন্ত্রাসীরা। এতে তারা গুলি এবং কুপিয়ে তিন রোহিঙ্গাকে হত্যা করে। আর গুরুতর আহত হয় সাতজন। হতাহতরা আরএসও সদস্য বলে জানা গেছে।

রোহিঙ্গা গবেষক অধ্যাপক ড. রাহমান নাসির উদ্দিন দৈনিক বাংলাকে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায় করতে আরসা ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের দিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালায়। কিন্তু এটার কারণে নির্যাতনের তীব্রতায় নিজ দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা। সে কারণে আরসা রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব হয়ে উঠতে পারে নাই। বিভিন্ন সময় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, রোহিঙ্গাদের এ দুর্দশার জন্য আরসা দায়ী। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আরসার একটা বড় গ্রুপ বাংলাদেশে এসেছে। বাংলাদেশে ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের অবস্থান ধরে রাখার জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে এবং যখন কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার চেষ্টা করেছে তখন তারা তাদের দমন করেছে। এর মধ্যে একজন ছিলেন মুহিব উল্লাহ। মুহিব উল্লাহ যখন রোহিঙ্গাদের নেতা হয়ে ওঠে বিশ্বের কাছে পরিচিত হন এবং আন্তর্জাতিকভাবে রোহিঙ্গাদের জন্য আন্দোলন করেন তখন তাকে নেতা হিসেবে গ্রহণ করে রোহিঙ্গারা। বাংলাদেশ যখন প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করে তখন রোহিঙ্গাদের রাজি করানোর জন্য মুহিব উল্লাহ সোর্স ছিল। ধীরে ধীরে মুহিব উল্লাহ প্রধান পাঁচ রোহিঙ্গা নেতার একজন হয়ে ওঠেন। ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট ৩ থেকে ৫ লাখ রোহিঙ্গার মহাসমাবেশ করে তাক লাগিয়ে দেন এবং আনন্দে আত্মহারা করে দেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে লেগে থাকা বিদেশি এনজিওগুলোকে। এসব কারণে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ভেঙে দেওয়ার জন্য মুহিব উল্লাহকে হত্যা করা হয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শত্রু হচ্ছে আরাকান আর্মি। আরাকান আর্মির শত্রু হচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। আবার মিয়ানমারের শত্রুও আরসা। মিয়ানমার নৌবাহিনী ঘোষণা দিয়ে বলছে আরকান আর্মি ও আরসা মিলে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। যেহেতু মিয়ানমার আরাকানে আরকান আর্মি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। সে কারণে আরসা ও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।

দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে ড. রাহমান নাসির বলেন, দুই শতাধিক আরসার নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার করাতেই আরসা দুর্বল হয়ে পড়েছে এমন যুক্তি হয়তো সঠিক নয়। এই চরমপন্থি দলে আরও অনেক সদস্য ও সমর্থক রয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপ তাদের আধিপত্য বিস্তার করার জন্য এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে থাকে। আগুন নাশকতা এসব মাঝেমধ্যে বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু ঘটনা আমরা সন্দেহ করি এগুলো নাশকতা। আমরা আরসা বলে কিছু পাইনি। তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী গ্রুপ আছে। যারা উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে জড়াবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সমন্বিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।

রোহিঙ্গা ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা খিন মং বলেন, রোহিঙ্গাদের অধিকারের জন্য লড়াই করার দাবি করেছিল আরসা। তখন তাদের বিশ্বাস করেছিল রোহিঙ্গারা। কিন্তু এখন সাধারণ রোহিঙ্গারাও মনে করে আরসা মিয়ানমারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। যারা প্রত্যাবাসনের কথা বলছেন তাদের হত্যা করা হচ্ছে। তাই আরসার ওপর তাদের আর বিশ্বাস নেই।

বিষয়:

আবাসিক হোটেলে সাবেক বন কর্মকর্তার রহস্যজনক মৃত্যু

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

পটুয়াখালীর মহিপুর থানার মৎস্য বন্দর আলীপুরে ভাই-ভাই আবাসিক নামের একটি হোটেল থেকে মো. শফিকুর রহমান (৭০) নামের সাবেক বন কর্মকর্তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার সকাল ১১টার দিকে হোটেলের দরজা ভেঙে তার মরদেহ উদ্ধার করে মহিপুর থানা পুলিশ।

নিহত শফিকুর রহমান চাঁদপুরের চান্দরা পাটোয়ারী বাড়ি এলাকার বাখরপুর গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে।

পুলিশ ও হোটেল সূত্রে জানা যায়, তিনি গত ২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে এ হোটেলে ব্যাচেলর ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। বুধবার সকালে হোটেল কর্তৃপক্ষ নাস্তা খাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করলে কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে আশেপাশের লোকজনকে খবর দেন। এ সময়ে হোটেলের জানালার ফাঁক দিয়ে তার মরদেহ খাটের পাশে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেল তালুকদার বলেন, আমরা এসে দরজা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করি। পটুয়াখালী থেকে ক্রাইমসিনের সদস্যরা আসছেন। তাদের কাজ শেষ হলে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। তার আত্মীয়-স্বজনরা আসছেন। তারা আসলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয়:

কুমিল্লার গরুবোঝাই ট্রাক উল্টে দু’জন নিহত

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জে গরুবোঝাই ট্রাক উল্টে দু’জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন।

আজ বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জেলার পুটিয়া ইউটার্নে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, ঢাকা থেকে কুমিল্লা অভিমুখি গরুবোঝাই একটি ট্রাক মহাসড়কের পুটিয়া ইউটার্নে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অপর একটি কাভার্ডভ্যানকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে গরুবোঝাইকৃত ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান সড়কের পাশে খাদে পড়ে যায়। এসময় গরু ব্যবসায়ী রাসেলসহ দুইজন নিহত হন। এ দুর্ঘটনায় আহত ৪ জনকে গৌরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।

ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মো. মনজুরুল আলম মোল্লা বলেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে নিহতদের একজনের নাম জানা গেছে। কিন্তু অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। দুর্ঘটনায় দুইটি গরু মারা যায় এবং অন্তত ৫টি গরুর পা ভেঙ্গে গেছে।

বিষয়:

কলেজের পিওনের কোটি টাকার আলিশান বাড়ি 

আপডেটেড ১২ জুন, ২০২৪ ১০:১৪
নড়াইল প্রতিনিধি

নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের ১০ হাজার ১৬১ টাকা বেতনের (মাস্টার রোল; অস্থায়ী) পিওন মোহাম্মদ উল্লাহ (৪০)। এক সময় ছিলেন বাসাবাড়িতে পেটেভাতে কাজ করা কর্মী। এখন তিনি অঢেল সম্পত্তির মালিক। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেটেলমেন্ট অফিসের দালালিকে পুঁজি করে দখল করেছেন ব্যক্তি নামীয় ও সরকারি খাসজমি। জমি দখল নিয়ে গতকাল তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভও করেছেন ভুক্তভোগীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নড়াইল শহরের ভওয়াখালীতে ১০ শতক জমির ওপর তার ৩ তলা আলিশান বাড়ি রয়েছে মোহাম্মদ উল্লাহর। শহরের প্রাণকেন্দ্র রূপগঞ্জ বাজারসহ পৌরসভায় বিভিন্ন মৌজায় নামে-বেনামে অঢেল সম্পত্তির মালিক তিনি। হাল রেকর্ডে (আরএস) তার নামে রেকর্ড হয়েছে কুড়িগ্রাম মৌজার জাতীয় মহাসড়ক ও রূপগঞ্জ বাজারের সরকারি খাস খতিয়ানের জমিসহ ব্যক্তিনামীয় প্রায় ২ একর জমি। সেটেলমেন্ট অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, শহরের সন্ত্রাসী ও প্রভাবশালী ভূমি দস্যুদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন দুর্নীতির বিশাল সিন্ডিকেট।

নড়াইল সেটেলমেন্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, হাল (আরএস) রেকর্ডে ৪৬৫ ও ১৫৫নং খতিয়ানে সাবেক (এসএ) ২৪৮, ২৪৯ ও ২৪৭নং দাগসহ আর অন্তত ১৫টি দাগে ৩ একরের বেশি সরকারি ও ব্যক্তিনামীয় জমি ভওয়াখালী গ্রামের মোহাম্মদউল্লাহ ও কুড়িগ্রামের সন্তোষ কুমার আচার্য্যের কন্যা যুথিকা রানী মজুমদারসহ ভূমিদস্যুদের নামে রেকর্ড হয়েছে।

নড়াইল পৌর ভূমি অফিসের তহশিলদার (উপ-সহকারী ভূমি কমিশনার) মো. মোস্তাফিজুর রহমান মিলন বলেন, ‘আমরা সরকারি জমির হাল (আরএস) পর্চাসহ অন্যান্য তথ্যের জন্য সেটেলমেন্ট অফিসে চিঠি পাঠাচ্ছি। এখনো পর্চাসহ অন্যান্য তথ্য হাতে পায়নি।’

অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমানের জমিও মোহাম্মদ উল্লাহর নামে রেকর্ড হয়ে এসেছে। প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমানের লন্ডন প্রবাসী ছেলে পলাশ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি প্রবাসে থাকি। আমার বাবার বয়স হয়েছে, তিনি বাসা-বাড়িতেই অবসর কাটান। প্রতিনিয়ত জমিজমার বিষয়ে অফিসে গিয়ে খোঁজখবর রাখা বাবার পক্ষে সম্ভব নয়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমাদের নামীয় ৩০ শতক জমি মোহাম্মদ উল্লাহ তার নামে রেকর্ড করে নিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘মোহাম্মদউল্লাহ সেটেলমেন্ট অফিসে দালালি করেন। সেই সুবাদে অফিসের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার সহযোগিতায় আমাদের মতোই স্বপন কুণ্ডুসহ আরও অনেকের জমি রেকর্ড করে নিয়েছেন।’

কলেজ সূত্রে জানা যায়, ১০ হাজার ১৬১ টাকা বেতনে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে অফিস সহায়কের কাজ করেন মোহাম্মদ উল্লাহ। নামপ্রকাশ না করার শর্তে কলেজের একাধিক স্টাফ জানান, অধ্যক্ষের সঙ্গে মোহাম্মদ উল্লাহর সুসম্পর্ক থাকায় তার কলেজে আসা লাগে না। অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত কাজ আর মাসিক বেতন নেওয়া ছাড়া মোহাম্মদ উল্লাহ কলেজে আসেন না।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ উল্লাহর বাড়ি সদর উপজেলার আউড়িয়া গ্রামে। তার বাবা ইফসুফ মোল্যা নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে পিওনের চাকরি করতেন। সেই সুবাদে মোহাম্মদ উল্লাহ ও তার ভাই নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে চাকরি পান।

নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ খান শাহাবুদ্দিনের কাছে মোহাম্মদ উল্লাহর কলেজে অনুপস্থিতি ও সুসম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যেই তাকে কয়েকবার সতর্ক করেছি। এখন সে নিয়মিত কলেজে আসে। আমার সঙ্গে তার কোনো সুসম্পর্ক নেই।’

সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি দেবাশীষ অধিকারী বলেন, ‘সরকারি খাস খতিয়ানের জমি আমরা রেজিস্টারভুক্ত করে সংরক্ষণ করি। সরকারি খাস খতিয়ানের জমি রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা করব। এসব জমি আত্মসাতের কোনো সুযোগ নেই।’

নড়াইল সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সেলিম হাসানের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি রেকর্ড কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে ছিলাম না। এখন শুধু বিতরণ চলছে। কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে আইনের আওতায় সুযোগ থাকলে তিনি প্রতিকার পাবেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদ উল্লাহর সঙ্গে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন, জমিসংক্রান্ত সব বৈধ কাগজপত্র তার কাছে রয়েছে।


সেন্টমার্টিনগামী স্পিডবোটে আবারও মিয়ানমার থেকে গুলি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১১ জুন, ২০২৪ ২১:০৮
টেকনাফে (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

মিয়ানমারে সংঘাতের জেরে টানা চার দিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে নৌযান চলাচল বন্ধ আছে। গত শনিবার (৮ জুন) দুপুর ১টার দিকে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার সময় নাফ নদীর মাঝপথে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী ভর্তি একটি ট্রলার লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণ করা হয়।

সর্বশেষ আজ মঙ্গলবার সকালে সেন্টমার্টিনগামী একটি স্পিডবোটকে লক্ষ্য করে মিয়ানমারের ওপার থেকে গুলি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। ফলে সেন্টমার্টিন দ্বীপের জনসাধারণের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, গত শনিবার গুলি বর্ষণের পর আবারও আজ মঙ্গলবার পণ্যসামগ্রী ভর্তি একটি ট্রলার লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে কেউ হতাহত না হলেও ট্রলারটি দ্বীপে আসতে পারেনি। এরপর থেকে ভয়ে আর কোনো ট্রলার টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে চলাচল করেনি। এর ফলে দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে সেন্টমার্টিনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নৌযান চলাচল শুরু না হলে সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রায় সাড়ে ১০ হাজার মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সংকট দেখা দিতে পারে।

এদিকে, এ নৌপথে ট্রলার চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও বিজিবির টহল জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে বিজিবি ও কোস্ট গার্ড কাজ করছে। এ ঘটনায় আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এর পরিপ্রেক্ষিতে দ্বীপে অবস্থানরত মানুষ খাদ্যসংকটে পড়বে। সেখানে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী নাকি বিদ্রোহীরা গুলি চালাচ্ছে, তা-ও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

বিজিবির টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ গুলি ছোড়ার বিষয়টি শুনেছেন বলে জানান। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, সার্ভিস ট্রলারে গুলিবর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির কাছে প্রতিবাদলিপি পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলা সংঘাত বাংলাদেশ সীমান্তেও ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। কয়েক দিন ধরে নাফ নদের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে পণ্যবাহী ট্রলারেও মিয়ানমার থেকে গুলি ছোড়া হচ্ছে।


banner close