পার্কজুড়ে সুনসান নীরবতা। প্রচণ্ড দাবদাহে দর্শনার্থীর সংখ্যা একেবারে নেই বললেই চলে। পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্তরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে সরেজমিনে এমনটাই দেখা গেছে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের সকল ইউনিটে।
কোর সাফারী পার্কে ঘুরে দেখা যায়, টানা তীব্র দাবদাহে হাঁসফাঁস করছে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রাণীকুল। পার্কের অপেক্ষাকৃত ছায়া যুক্ত স্থানে থাকতে চাচ্ছে প্রাণীরা। টানা খরায় পার্কের লেকগুলোতে কমে গেছে পানি। কর্তৃপক্ষ পানির সরবরাহ বাড়াতে চালাচ্ছেন প্রানান্ত চেষ্টা। আশার কথা তীব্র দাবদাহে দেশি-বিদেশি কোনো পশু পাখি অসুস্থ হয়ে পড়েনি। প্রাণীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরিচর্যা করছে কর্তৃপক্ষ। দাবদাহ থেকে প্রাণীদের রক্ষা করতে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি যত্ন। পর্যাপ্ত পানির জন্য স্থানে স্থানে স্থাপন করা হয়েছে পাম্প।
পার্কের আফ্রিকান সাফারি ঘুরে দেখা গেছে, জেব্রার পাল একটু ছায়ার জন্য দৌড়াচ্ছে। দূরে বনের গভীরে ঠাঁই দাড়িয়ে আছে নীল গাই, গয়াল, ওয়াইলবিস্ট, হরিণের পাল। শাবক হরিণের জন্য দেওয়া হয়েছে পানির চৌবাচ্চাসহ বিশেষ ইনক্লুজার। সেডের ছায়ায় খাবার সামনে রেখে হাঁপাচ্ছে ভাল্লুক।
রয়েল বেঙ্গল বাঘের বেষ্টনীর খালে কমে গেছে পানি। বেষ্টনীর যে জায়গায় ছায়া আছে বাঘ ছুটছে সেখানে। কখনোবা খালের পানিতে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টাও করছে। আফ্রিকান সিংহ তীব্র রোদে ক্লান্ত হয়ে ঝিমাচ্ছে। বিশেষ গাড়িতে খুব কাছে গিয়ে দেখা গেছে সিংহ ছায়া যুক্ত গাছের নিচে আয়েশে ঝিমাচ্ছে। রোদের তীব্রতায় ময়ুর গুলো গাছের ছায়ায় পাখনা মেলে আছে। জলহস্তির বেষ্টনীতে কমে গেছে পানি। অল্প পানিতে দুটি জলহস্তি নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে। উট পাখিগুলো সেডের ভেতর সামান্য ছায়ায় বসে থাকতে দেখা গেছে। প্রচণ্ড খরা আর দাবদাহে পার্কের প্রাকৃতিক জলাধারগুলোতে কমে গেছে পানি।
পার্ক ঘুরে দেখা গেছে কর্তৃপক্ষ নিয়েছেন বিশেষ ব্যবস্থা। জলা ধারে পানি সরবরাহ বাড়াতে স্থাপন করা হয়েছে সাতটি সাবমারসিভল পাম্প। বিভিন্ন প্রাণীর বেষ্টনীতে স্থানে স্থানে স্থাপন করা হয়েছে কৃত্রিম জলাধার। এসব জলাধারে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করা হয়। আফ্রিকান সাফারিতে থাকা হিংস্র প্রাণীসহ সকল প্রাণীর গতিবিধি মনিটর করতে লাগানো হয়েছে সিসিটিবি ক্যামেরা। এসব ক্যামেরায় প্রত্যেকটি প্রাণীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী বনসংরক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে জানান, পার্কে বর্তমানে আটটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চারটি সিংহ,আটটি হাতি,প্রায় দেড় শত হরিণ, দুটি জিরাফ, নয়টি ননীলগাই,ত্রিশটি জেবরাসহ দেশি-বিদেশি দুর্লভ প্রাণী ও পাখি রয়েছে। তীব্র দাবদাহের কারণে পার্কের প্রাণিকুল এখন হাঁসফাঁস করছে। এসব পশু-পাখির স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। হাতি, বাঘ, সিংহকে শান্ত রাখতে দিনে তিন চার বার গোসল করানো হচ্ছে। পানির সাথে সেলাইন,গ্লুকোজ দেওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। চব্বিশ ঘণ্টা প্রাণীদের মনিটরিং করা হচ্ছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে হিংস্র প্রাণীদের মনিটরিং করা হয়। এ ছাড়া পার্কে দুইটি জেব্রা ও দুটি গয়ালের সাবক রয়েছে। এদের বিশেষ যত্ন নেওয়া হচ্ছে। দাবদাহের কারণে এখনো পার্কে কোন প্রাণী অসুস্থ্য হয়নি। তবে দর্শনার্থীর সংখ্যা কমে গেছে।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বাড়ির উঠান ঝাড়ু দেওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- মৃত. নুর মিয়ার স্ত্রী নূর বানু (৬০) ও তার মেয়ে বিলকিস বেগম (৪০)। তাদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর থানার চরআবাবিল গ্রামে।
আজ মঙ্গলবার (১৮ জুন) ভোরে ফতুল্লার মাহমুদপুর বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাহমুদপুর বটতলা এলাকায় গোলাপ মিয়ার বাড়িতে মা ও মেয়ে ভাড়া থেকে স্থানীয় লোকজনের বাসা-বাড়িতে কাজ করতেন। তাদের আত্মীয়-স্বজন থাকলেও কেউ মা ও মেয়ের খোঁজ খবর রাখত না।
বাড়িওয়ালা গোলাপ মিয়া কুমিল্লায় বসবাস করেন। তার বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ নেওয়া হয়েছে পুরাতন টুকরো-টুকরো তার দিয়ে। এতে বিদ্যুতের তারের লিকেজ থেকে লোহার খুঁটিতে বিদ্যুৎ চলে আসে। ভোরে বৃদ্ধ মা নূর বানু বাড়ির উঠান ঝাড়ু দেওয়ার সময় সেই খুঁটিতে ধরে চিৎকার দেয়। এ সময় মেয়ে বিলকিস বেগম মাকে ধরলে সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। তখন আশপাশের লোকজন গিয়ে বিদ্যুতের সংযোগের তার বিচ্ছিন্ন করে তাদের উদ্ধার করেন।
ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় নিহতের স্বজনরা কেউ মামলা করবে না বলে জানিয়েছে। এ কারণে ময়না তদন্ত ছাড়াই নিহতদের লাশ দাফন করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, এই মৃত্যুর জন্য বাড়িওয়ালার অবহেলাকে দায়ী করেছেন এলাকাবাসি। এজন্য বাড়িওয়ালাকে আইনের আওতায় নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বৃষ্টিপাত ছাড়াই আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টা থেকে বৃদ্ধি পেতে থাকে পাহাড়ি ঢলের পানি। সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে দুপুরে বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার বা ২.২৩ ফুট উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
শহরের কাঁচাবাজারে হাঁটুর উপরে পানি। পশ্চিমবাজার, মধ্যবাজারে বন্যার পানি উঠছে। বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে শহরে ঢুকছে পানি। বড় পাড়া, তেঘরিয়া থেকে শুরু করে নবীনগর, ধারারগাঁও পর্যন্ত নদী পাড়ের সকল সড়ক- হাট-বাজারে প্রায় দেড় থেকে ৩ ফুট পর্যন্ত পানি উঠেছে। হুট করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন শহরবাসী। নদীর পাড়ের বাসিন্দারা ঘরে থাকার মতো অবস্থা না থাকায় ঘরবাড়ি ছেড়ে উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে উঠেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এদিকে অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে জেলার সকল নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নিম্বাঞ্চলের মানুষের বসত ঘরে পানি উঠে গেছে। ছাতকেও বিপদসীমার ১৫৫ সে.মি বা ৫.০৯ ফুট উপর দিয়ে সুরমার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও বিশ^ম্ভরপুরে বিপদসীমার ২ সে.মি বা ০.৭৯ ফুট উপর দিয়ে সুরমার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে পাহাড়ি ঢল নেমে আগে থেকেই প্লাবিত ছিল সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর, তাহিরপুরের দেড় শতাধিক গ্রাম। নতুন করে পানি বাড়ায় বিশ্বম্ভরপুর, মধ্যনগর, দিরাইসহ জেলার প্রায় সবকয়টি উপজেলাতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ পৌর শহরে বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার বা ২.২৩ ফুট, ছাতকে বিপদসীমার ১৫৫ সে.মি বা ৫.০৯ ফুট উপর দিয়ে সুরমার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও বিশ^ম্ভরপুরের শক্তিয়ারখলা পয়েন্টে বিপদসীমার ২ সে.মি বা ০.৭৯ ফুট উপর দিয়ে সুরমার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে, সেজন্য পানি বিপদসীমার উপরে থাকতে পারে। তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জের লাউড়েরগড় পয়েন্টে ১৫৯ মি.মি, ছাতকে ৯৫ মি.মি, সুনামগঞ্জ পৌর শহরে ৬৮ মি.মি এবং দিরাইয়ে ৬৬ মি.মি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, নদীতে পানি টইটুম্বুর রয়েছে। নদীতে আর পানি ধারণ ক্ষমতা নাই। পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকা এবং ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও আগামী দুইদিন ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। সেজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ইতিমধ্যে মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠতে শুরু করেছেন। পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রীও রয়েছে। এছাড়াও অতিরিক্ত ত্রাণ সামগ্রীর জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করছি।
সুনামগঞ্জ সদর-বিশ্বম্ভরপুর আসনের সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। এই দুর্সময়ে বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে সবাইকে থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, উতিমধ্যে সকল আশ্রয়কেন্দ্র খোলে দেয়া হয়েছে। সর্বিক সহযোগিতার জন্য সরকারের উচ্চ মহলে আমি জানিয়েছি। আমি সকাল থেকেই মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। বিপদে সবাইকে ধৈর্য্য ধরার অনুরোধ জানান তিনি।
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটে বিশ দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় তলিয়ে গেছে সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোর নিন্মাঞ্চল। ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির আশংকা করা হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন অবস্থায় আছে নগরও। নগরের অনেক রাস্তাঘাট ও বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার পরও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বেড়েই চলছে পানি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকালে সিলেটের ৪টি নদীর পানি ৬ পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, গতকাল সোমবার রাত পর্যন্ত সিলেট জেলায় প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। তবে মঙ্গলবার স্থানীয় সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, জেলায় দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঈদের দিন কোরবানির পশুর মাংস, শুকনো খাবার, সেলাইন ও ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারি আবহাওয়াবিদ শাহ মো সজিব জানান, সিলেটে সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার ৬টা পর্যন্ত ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৪৪ মি.মি বৃষ্টি হয়েছে। আর ৯ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১২ মিলিমিটার। আগামী দুইদিন সিলেটে টানা বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে গত ২৭ মে ঢলে সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। এতে জেলার সব উপজেলায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি হন। সেই বন্যার পানি পুরোপুরি নামার আগেই ফের বন্যা কবলিত হয়েছে সিলেট।
সোমবার রাতে সিলেট জেলা প্রশাসন জানায়, জেলার ১৩টির মধ্যে ১০টি উপজেলার প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ পানিবন্দী। তবে বৃষ্টি ও ঢল অব্যাহত থাকায় বাড়ছে প্লাবিত এলাকা। ইতোমধ্যে জেলার কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও জকিগঞ্জ উপজেলার বিস্তৃর্ন এলাকা তলিয়ে গেছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলার মামার দোকার এলাকার ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, বন্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রবল বেগে ঢল নামছে। এলাকার অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে।
এদিকে, গতকাল সোমবার ঈদের দিন সকালে টানা বৃষ্টিতে নগরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে ঈদের জামাত ও কোরবানি নিয়ে বিপাকে পড়েন নগরবাসী। তবে দুপুরের পর বৃষ্টি থামলে নামতে শুরু করে নগরের পানি। কিন্তু মঙ্গলবার ভোররাত থেকে ফের শুরু হয় সিলেটে বৃষ্টিপাত। ফলে মঙ্গলবার সকাল থেকে আবারও বাড়তে শুরু করেছে সিলেট নগরের পানি। ফলে আবারও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে নগরে।
নগরের উপশহর এলাকার বাসিন্দা কাইয়ুম আহমদ বলেন, পানিতে বাসা ও সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় গতকাল কোরবানি দিতে পারিনি। গতকাল থেকে আজ পরিস্থিতি আরও খারাপ। পানি দ্রুত বেগে বাড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহানগরের সব নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে শাহজালাল উপশহর প্রায় পুরোটাই পানির নিচে। অনেকের বাসার নিচতলায় গলা পর্যন্ত পানি। এছাড়া যতরপুর, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, রায়নগর, সোবহানীঘাট, কালিঘাট, কামালগড়, মাছিমপুর, তালতলা, জামতলা, কাজিরবাজার, মাদিনা মার্কেট, আখালিয়া ও মেজরটিলাসহ মহানগরের অধিকাংশ এলাকা বন্যা কবলিত।
এছাড়া নগরের মধ্যে অনেক সড়কে পানি রয়েছে। এয়ারপোর্ট সড়ক, সিলেট-তাবিল সড়ক, দক্ষিণ সুরমার বঙ্গবীর রোডসহ বিভিন্ন সড়কের বেশ কয়েকটি স্থান পানির নিচে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট কার্যালয় মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জানায়, এ সময় পর্যন্ত সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা থেকে ১৩৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীটির সিলেট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপরে রয়েছে। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার এবং নদীর সারিগোয়াইন পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ইন্ডিয়া মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের তথ্যমতে, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার ৬টা পর্যন্ত ৩৯৫ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে দ্রুত বাড়ছে সিলেটের নদ-নদীর পানি। সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। জেলায় ৫৩৮ আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
যশোরের বেনাপোলসহ শার্শার সীমান্ত দিয়ে ভারতে চামড়া পাচার প্রতিরোধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশ সতর্কতা জারি করেছে। বেনাপোল সীমান্তের কয়েকটি এলাকায় বিজিবি ও পুলিশকে টহল দিতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকালে সতর্কতা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল, ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল খুরশিদ আনোয়ার ও বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত।
জানা যায়, গত কয়েক বছরের মতো এবারও পশুর চামড়ার দাম কম। কেনা দামেও ব্যবসায়ীরা চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না। সরকারি দামেও সাড়া মেলেনি। সেজন্য বেশি মুনাফার আশায় ভারতে চামড়া পাচার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শার্শা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাঁচ মণ ওজনের গরুর চামড়া সাড়ে তিনশ’ থেকে চারশ’ এবং ১০ মণ ওজনের গরুর চামড়া ছয়শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পাঁচ মণ ওজনের কোরবানি গরুর চামড়া চারশ’ থেকে ছয়শ’ রুপি ও ১০ মণ ওজনের গরুর চামড়া আটশ’ থেকে হাজার রুপি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে বিশেষ একটি সূত্র জানায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, যশোরের যেসব সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচারের সম্ভবনা থাকে সেসব এলাকাকে বেশি নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যেমন বেনাপোলের গাতীপাড়া, বড়আঁচড়া, সাদিপুর, রঘুনাথপুর, ঘিবা, ধান্যখোলা, পুটখালী ও শার্শার গোগা, কায়বা, অগ্রভুলোট, রুদ্রপুর, কাশিপুর, শিকারপুর, শালকোনা এবং শাহজাতপুর সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
বেনাপোল বাগে জান্নাত কওমি মাদ্রাসার মুয়াজ্জিন রেজাউল করিম বলেন, এলাকার মানুষ কোরবানির পশুর চামড়া দান করেছেন মাদ্রাসায়। কিন্তু চামড়ার দাম খুবই কম। গরুর চামড়া ছোট বড় মিলে গড়ে সাড়ে চারশ’ টাকা দাম পেয়েছি। গত দুই বছর আগে চামড়ার দাম ছিল ৭০০ টাকা পর্যন্ত। ছাগলের চামড়ার দাম হয়েছে প্রতি পিস ৫০-১০০ টাকা।
যশোর ৪৯ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল বলেন, সীমান্ত দিয়ে ভারতে চামড়া পাচার রোধে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে। বিশেষ করে রাতে টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যাতে কেউ ভারতে চামড়া পাচার করতে না পারে। সেজন্য ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তগুলো চিহ্নিত করে টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই আদেশ বলবত থাকবে।
বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত জানান, চামড়া পাচার রোধে বিভিন্ন বাহিনীর পাশাপাশি পুলিশকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। পুলিশের বিশেষ একটি টিম ইতোমধ্যে টহল দিতে শুরু করেছে।
নেত্রকোণার কলমাকান্দায় মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল বাতেনকে (৬০) তার শয়নকক্ষে প্রবেশ করে ছুরিকাঘাত করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বিশাউতি জামে মসজিদের বারান্দায় থাকা শয়নকক্ষে এই ঘটনা ঘটে।
মাওলানা আব্দুল বাতেন কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী সন্যাসীপাড়ার বাসিন্দা মৃত বাশির পণ্ডিতের ছেলে। তিনি রংছাতি দাখিল মাদ্রাসার সহ-সুপার ও পার্শ্ববর্তী বিশাউতি বাইতুন নুর জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন।
আজ সোমবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফুল হক।
পুলিশ, স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা ও নিহতের স্বজনরা জানান, মাওলানা আব্দুল বাতেন মাদ্রাসার সহ-সুপারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিশাউতি বাইতুন নুর জামে মসজিদে পেশ ইমামের দায়িত্বেও ছিলেন। রাতে মসজিদের বারান্দায় থাকা ইমামের কক্ষে থাকতেন। রোববার দিবাগত রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে মসজিদের শয়নকক্ষে আব্দুল বাতেনকে দুর্বৃত্তরা ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়ে আব্দুল বাতেন মসজিদের পাশে একটি বাড়ির সামনে গিয়ে চিৎকার দেন। চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন ঘর থেকে বের হয়ে ইমাম আব্দুল বাতেনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উঠানে পড়ে থাকতে দেখেন। তখন তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে কতর্ব্যরত চিকিৎসক তাৎক্ষণিক ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (মমেক) রের্ফাড করেন।
সোমবার (১৭ জুন) সকালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (মমেক) নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুল বাতেনকে মৃত ঘোষণা করেন।
কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সৌরভ ঘোষ জানান, শেষ রাতের দিকে মাওলানা আ. বাতেনকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বুকের বাম পাশে ধারালো অস্ত্রে আঘাতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রের্ফাড করা হয়।
এ বিষয়ে মাওলানা আব্দুল বাতেনের বড় ছেলে বদিউজ্জামান বদি বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে কলমাকান্দা হাসপাতালে যাই। সেখানকার দায়িত্বে থাকা ডাক্তার বাবার অবস্থা অবনতি দেখে তাৎক্ষণিক ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রের্ফাড করেন। পরে সোমবার সকালে ওখানে জরুরি বিভাগে পৌঁছা মাত্রই তিনি মারা যান। কে বা কারা এমন নির্মমভাবে আমার বাবাকে খুন করেছে জানি না। আমার বাবা তো কোনো অপরাধী ছিলেন না। কেন হত্যা করলো আমার বাবাকে। আমরা বাবা হত্যার ন্যায় বিচার চাই।’
কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফুল হক বলেন, ‘কি কারণে কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে সব দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এসে ক্রাইমসিনটি ঘিরে রেখে সেটি সংরক্ষণ করবে। এতে আরও আলামত পাওয়া যেতে পারে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। আশা করছি দ্রুত হত্যার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।’
তিনি আরও জানান, মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। সেখান থেকে ময়না তদন্তের পর মরদেহ নিয়ে আসতে আরও হয়তো দুই-একদিন সময় লাগবে।
কক্সবাজারের রামুতে কোরবানির পশু জবাই করতে গিয়ে গরুর লাথিতে এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার (১৭ জুন) ঈদুল আজহার দিন রামু উপজেলা ঈদগড় ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ডের কোদালিয়াকাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত প্রবাসী আব্দুল কাদির (৪৫) ওই এলাকার মৃত রামাদান করিমের ছেলে। তিনি সৌদি প্রবাসী ছিলেন।
ঈদগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ ভুট্টো জানান, ঈদের জামাত শেষে গ্রামে গরু জবাই করার সময় হঠাৎ গরুটি আব্দুল কাদিরে বুকে লাথি মারে। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। আাত্মীয়রা তাকে দ্রুত ঈদগড় মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আব্দুল কাদিরের স্ত্রীসহ দুই ছেলে, পাঁচ মেয়ে রয়েছে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
রামু থানার তদন্ত কর্মকর্তা ঈমন চৌধুরী জানান, সংগঠিত গঠনায় কারো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।
মানিকগঞ্জে সেতুর নিচ থেকে এক কারা হিসাবরক্ষকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঈদের দিন সোমবার সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জাগীর ইউনিয়নের ধলেশ্বরী নদীর জাগীর সেতুর নিচ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো শহিদুল ইসলাম (৫২) সিরাজগঞ্জের বাজন দারগাতী এলাকার বাসিন্দা। তিনি গাজীপুর কারাগারে কারা হিসাবরক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
নিহতের স্ত্রী শামসুন্নাহার রুমি জানান, রোববার রাত ১১টার দিকে ফোনে কথা বলে ঈদ করার জন্য গাজীপুর থেকে রওনা দেন স্বামী শহিদুল ইসলাম। এর পর একাধিকবার ফোন করেও শহিদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরে ঈদের দিন সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে মরদেহের কথা জানতে পেরে জাগীর সেতুর নিচে যান এবং নিহত শহিদুল ইসলামকে শনাক্ত করেন তিনি।
মানিকগঞ্জ সদর ওসি মো.হাবিল হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় কৃষকরা জাগীর সেতুর নিচে একটি মরদেহ দেখতে পেয়ে জরুরি ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে এবং খবর পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ গিয়ে নিহতের সুরতহাল শেষে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নিহত শহিদুল ইসলাম মানিকগঞ্জ শহরের গঙ্গাধরপট্টি এলাকায় স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন বলেও জানান ওসি।
ভারি বৃষ্টিতে সিলেট নগরে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে নগরের বেশিরভাগ এলাকা। ঈদের দিন সকালে এমন পরিস্থিতির কারনে দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী। জলাবদ্ধতার কারনে নগরের অনেক এলাকায় ঈদগায়ের ঈদের জামাত পেছানো হয়। বাসা বাড়ি ও সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কোরবানি দেয়া নিয়েও দুশ্চিন্তায় নগরবাসী।
এদিকে পাহাড়ি ঢলে নগরের বাইরে উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বিশেষত সুনামগঞ্জ শহরে ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি।
জানা গেছে, গতকাল রোববার রাত থেকেই সিলেটে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। যা আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এতে সিলেট নগরের অর্ধেকের বেশি এলাকা জলমগ্ন হয়ে গেছে। কোথায়ও হাটু সমান, কোথাও কোমর সমান পানিতে ডুবে আছে নগর।
আজ সোমবার (১৭ জুন) ঈদুল আজহার ভোরে নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও বিভিন্ন এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে এমনটা জানা গেছে। পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে অনেক এলাকার মসজিদ ও ঈদগাহ।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারি আবহাওয়াবিদ শাহ মো সজিব জানান, রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত সিলেটে ১৭৩.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আরও দুদিন এমন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সান্তনু দত্ত সন্তু জানান, রোববার রাতেই আমার ওয়ার্ডের তালতলা, মাছুদিঘীর পাড়, জামতলা, মনিপুরী রাজবাড়ী, রামের দিঘীরপাড়, খুলিয়া পাড়া, তোপখানাসহ প্রায় সকল এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। মানুষের বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় ঈদ উদযাপনে ভাটা পড়েছে।
নগরের বনকলা পাড়া এলাকার আব্বাসী জামে মসজিদে পানি ঢুকে পড়েছে। এই মসজিদে সকালে ঈদের জামাত হওয়ার কথা ছিল। সকাল থেকে স্থানীয়রা মসজিদ থেকে পানি সেচে বের করার চেষ্টা করেছেন।
এদিকে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থতির অবনতি হয়েছে। সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিতে তলিয়ে গেছে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বেশ কয়েকটি এলাকার। এসব এলাকার বাসা বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে।
এছাড়া জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ সদর ও তাহিরপুর উপজেলার অন্তত ৩০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। জেলার অন্তত শতাধিক অভ্যন্তরীণ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশে চারটি গাড়ির সংঘর্ষে একজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন।
আজ রোববার দুপুরে ভিটিকান্দি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ওই পথচারীকে বাঁচাতে গিয়ে গাড়ি চারটির সংঘর্ষ হয়। গুরুতর আহত চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক। তবে প্রাণ হারানো ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি। তার বয়স আনুমানিক ৫৮ বছর হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আহতরা হলেন, বাইকের চালক শাহাদাত হোসেন (৩৪), বাসের যাত্রী বেলাল হোসেন (৪০), শাকিল দেওয়ান (৩৮) ও শিল্পী আক্তার (৩৫)।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোববার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশের ভিটিকান্দি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন এক পথচারী। এ সময় ঢাকা থেকে কুমিল্লাগামী দ্রুত গতির একটি মোটরসাইকেল ওই পথচারীকে বাঁচাতে গিয়ে ব্রেক করে তার উপরে উঠে যায়। তখন বাইকের পেছনে থাকা একটি প্রাইভেট কার বাইকটিকে ধাক্কা দেয়। এমন সময় প্রাইভেট কারটির সামনে ও পেছনে যাত্রীবাহী দুটি চলন্ত বাস এসে ধাক্কা দেয়। সংঘর্ষের ঘটনায় প্রাইভেট কারটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং যাত্রীবাহী বাস দুটিরও ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এ ঘটনায় পথচারী, বাইকের চালক ও বাসের তিনজন যাত্রী আহত হন। হতাহতদের উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায় স্থানীয়রা।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. কামরুন নাহার বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের পাঁচজনকে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার মধ্যে হাসপাতালে আনার পরপরই একজনের মৃত্যু হয়। আহত অপর চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
গজারিয়া ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ হুমায়ুন কবির জানান, মরদেহ গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িগুলো মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
ঈদের ছুটিতে গ্রামে ছুটছে মানুষ। কর্মজীবনের ক্লান্তি কাটিয়ে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে বাড়ি যাওয়ার একটাই উদ্দেশ্য শান্তিময় আনন্দে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন। তবে ঈদের দিনটাও অনেকের জন্যই হতে পারে উদ্বেগের। কারণ দেশের উত্তরবঙ্গ ও সিলেট বিভাগের নিম্নাঞ্চলগুলোতে বাড়ছে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি। ফলে তিস্তা, সুরমা, যমুনা অববাহিকায় বন্যার আশঙ্কা করছেন এলাকার মানুষ। এ অঞ্চলের প্রতিটি নদীতে বেড়েছে পানি সমতলের উচ্চতা। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তিস্তা নদীর পানি। প্লাবিত করেছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢলে বেড়েছে ২৬ নদীর পানি: সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সুরমা, যাদুকাটা, কুশিয়ারাসহ ২৬ নদনদীর পানি বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি ২৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
গতকাল শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘ভারতের চেরাপুঞ্জিতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামছে। আর সেই ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জের সব নদনদীর পানি দ্রুত বাড়ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে পাহাড়ি ঢল নামা অব্যাহত থাকলে আজকেই নদ নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। এতে সুনামগঞ্জে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।’
এ দিকে দ্রুত নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যা আতঙ্কে দিন পার করছেন জেলার ২০ লাখ বাসিন্দা। তাদের শঙ্কা, যেভাবে নদীর পানি বাড়ছে তাতে ঈদের আগে বন্যা হয়ে যেতে পারে। আর বন্যা হলে তাদের ঈদ আনন্দ শেষ হয়ে যাবে।
তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই, বন্যার পূর্বাভাস: লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমে ভারী বৃষ্টির প্রভাবে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। ইতোমধ্যে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এবং চরাঞ্চলে পানি উঠতে শুরু করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে মানুষ, তলিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য বলছে, গতকাল শনিবার সকাল ৬টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ছিল বিপৎসীমার মাত্র তিন সেন্টিমিটার নিচে। ডালিয়া পয়েন্টেও মাত্র তিন সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে নদীর পানি প্রায় ৮০ সেন্টিমিটার বেড়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও কাউনিয়া পয়েন্টে মাত্র ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই দিন সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও কাউনিয়া পয়েন্টে ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং দুপুর ১২টায় ডালিয়া পয়েন্টে ৬৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও কাউনিয়া পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এদিকে তিস্তার পানি বাড়ায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটি, খুনিয়াগাছ, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, গোবর্ধন, সর্দারপাড়া, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, পাটিকাপাড়া, সিংগীমারী এবং সিন্দুর্না ইউনিয়ন এলাকার শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নবাসী জানান, শুক্রবার সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বন্যা হলে নদীর তীরে বসবাসকারী মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এতে চিনাবাদাম ও বিভিন্ন শাকসবজিসহ ফসলেরও ক্ষতি হবে। আর কাউনিয়ার চরগনাই গ্রামের বাসিন্দারা জানান, শুক্রবার ভোর থেকে পানি বাড়ছে এবং আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। আমরা আতঙ্কে আছি। ঈদের আগে যদি আমাদের ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়, তাহলে আমরা পানিবন্দি হয়ে পড়ব। বড় কষ্ট হবে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার জানান, আগামী ৫ দিনে দেশের উত্তরাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী এবং কিছু স্থানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ইত্যাদি নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং তিস্তা নদীর কিছু পয়েন্টে স্বল্প মেয়াদে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
উজানে ভারী বৃষ্টি, কুড়িগ্রামে বন্যার শঙ্কা: কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কুড়িগ্রামের নদ-নদীগুলোতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। এভাবে বৃষ্টি ঝরতে থাকলে ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার নদ অববাহিকার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাতে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান। পাউবো নিয়ন্ত্রণকক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। দেশের অভ্যন্তর ছাড়াও এসব নদ-নদীর উজানে ভারতের বিভিন্ন অংশে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলার পানি কুড়িগ্রাম শহর (ধরলা সেতু) পয়েন্টে ৮৩ সেন্টিমিটার বেড়েছে। একই সময়ে দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৮০ সেন্টিমিটার, তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা অববাহিকায় ১০২ দশমিক ২ মিলিমিটার এবং তিস্তা অববাহিকায় ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা দুধকুমার, ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি কিছু সময় দ্রুত বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে পাউবো। আগামী কয়েক দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থেকে বিপৎসীমার কাছ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
এদিকে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে কুড়িগ্রাম সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদ-নদীতে জেগে ওঠা চরগুলো নিমজ্জিত হতে শুরু করেছে। সদরের হলোখানা ইউনিয়নের ধরলাতীরবর্তী বাসিন্দা আহমেদ বলেন, ‘গতকাল থেকে পানি খুব বাড়তি। দুই ফুটের বেশি বেড়েছে। কিছু চর ডুবতে শুরু করেছে। তবে সেগুলোতে জনবসতি নেই।’
রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের বাসিন্দা মিলন বলেন, ‘শুক্রবার সারা দিন পানি খুব বেড়েছে। কিন্তু রাতে কমেছে। তবে আবার ভারী বৃষ্টি হয়েছে।’
পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী কয়েক দিন উজানে ভারী বৃষ্টিপাত রয়েছে। এ সময় জেলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে। পানি বিপৎসীমার কাছ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলাগুলোতে ত্রাণ সহায়তা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্যোগ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলার দায়িত্বশীলদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতির ওপর আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি।’
তীব্র হচ্ছে যমুনার ভাঙন: টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর ভাঙন তীব্র হয়েছে। গত কয়েকদিনে নিঃস্ব হয়েছে ৩৫ পরিবার। বাড়িঘর হারিয়ে তাদের কেউ কেউ খোলা আকাশের নিচে আছেন। কেউ আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের জমিতে। এসব পরিবারের দাবি, সাহায্য নয়- ভাঙন রোধে এলাকায় বাঁধ নির্মাণ প্রয়োজন।
টাঙ্গাইল সদরের কাকুয়া ইউনিয়নের চরপৌলি গ্রামের মুক্তার মণ্ডল। একসময় জমিজমা বাড়িঘর থাকলেও এখন তিনি নিঃস্ব। যমুনায় হারিয়ে গেছে তার আবাদি জমি ও বাড়িঘর। শুধু মুক্তারই নন, যমুনার ভাঙনে এই এলাকায় প্রতিবছর ভিটেমাটি হারান বহু মানুষ। তবে এবারের ভাঙন শুরু হয়েছে বর্ষার আগেই।
এলাকাবাসীর দাবি, টাঙ্গাইল সদরের কাকুয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙনের দুর্যোগ রয়েছে ৩০ বছর ধরে। যমুনার পূর্বপাড় গোয়ালিয়াবাড়ী এলাকায় স্থায়ী বাঁধ হয়েছে। কিন্তু এ পাড়ে বাঁধ না হওয়ায় তারাই বার বার ক্ষতির মুখে পড়ছেন। কাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা সবার কাছেই বলছি। কিন্তু কেউ কিছুই করছেন না।
টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন জানান, সদরের চরপৌলী, কালিহাতী উপজেলার ভৈরববাড়ী ও আলীপুর এলাকার বাকি এক হাজার ৬২৫ মিটার বাঁধের কাজের জন্য নতুন প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে। সাময়িকভাবে আমরা নতুন ভাঙন রোধেরও চেষ্টা করছি। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় আপাতত জিও ব্যাগ ফেলে যমুনার তীর রক্ষার চেষ্টা চলছে।
ঈদুল আজহার ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে ছুটছে মানুষ। তাদের বহনকারী ব্যক্তিগত পরিবহন ও গণপরিবহনে মহাসড়কগুলোতে দেখা দিয়েছে ঠাসা ভিড়। এ ছাড়া পণ্যবাহী ট্রাকগুলো বিধিনিষেধের কারণে চলাচল কম করলেও মফস্বল থেকে ঢাকার পথে আসছে গরুবাহী ট্রাক। ফলে দুই পাড়ের দুই বড় নদী পদ্মা ও যমুনার ওপরে নির্মিত দুই সেতুর টোলপ্লাজায় টোল আদায়ও বেশ জমজমাট। এবারের ঈদের তিন দিন ছুটির সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি শুক্র ও শনিবার মিলে যাওয়ায় টানা ৫ দিনের ছুটি পেয়েছেন কর্মজীবীরা। গতকাল শুক্রবার ছিল ছুটির প্রথম দিন। শুক্রবারের ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা সেতুর টোলপ্লাজায় আদায় হয়েছে ৪ কোটি ৮২ লাখ ১৭ হাজার ৪০০ টাকা, পারাপার হয়েছে ৪৪ হাজার ৩৩টি যানবাহন। অন্যদিকে টোল আদায়ের রেকর্ড করে ফেলেছে বঙ্গবন্ধু সেতুর টোলপ্লাজায়। এদিন ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে যানবাহন পারাপার হয়েছে ৫৩ হাজার ৪০৭টি যানবাহন, টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ ৬৩ হাজার ৪০০ টাকা। বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, এই সেতু চালু হওয়ার পর থেকে গত ২৬ বছরে এটি নতুন রেকর্ড। আজ শনিবার উভয় সেতুর কর্তৃপক্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এবারের ঈদুল আজহার সরকারি ছুটির প্রথম দিনে শুক্রবার (১৪ জুন) পদ্মা সেতু পারাপার হয়েছে ৪৪ হাজার ৩৩টি যানবাহন, যা থেকে টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
পদ্মা সেতুর ব্যবস্থাপক (টোল) মো. আহমেদ আলী জানান, ‘১৪ জুন ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা সেতুতে পারাপার হয়েছে ৪৪ হাজার ৩৩টি যানবাহন, যা থেকে সর্বমোট আয় হয়েছে ৪ কোটি ৮২ লাখ ১৭ হাজার ৪০০ টাকা। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে পদ্মা সেতু পার হয় ২৮ হাজার ৮৯৬টি যানবাহন, যা থেকে নগদ টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৭২ লাখ ৬৪ হাজার ৫৫০ টাকা। এ ছাড়া বাকিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানের যান পারাপারে টোল রয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৩৫০ টাকা। আর চলন্ত অবস্থায় ইটিসিএস পদ্ধতিতে টোল জমা হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা। অন্যদিকে জাজিরা প্রান্ত থেকে সেতু পার হয়েছে ১৫ হাজার ১৩৭টি যানবাহন। সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ৫৩ হাজার ৭৫০ টাকা বকেয়াসহ মোট আয় হয়েছে ২ কোটি ৮ লাখ ১৯ হাজার ৩০০ টাকা।’
অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব সাইট অফিস সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাত ১২টা থেকে শুক্রবার (১৪ জুন) রাত ১২টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ এক দিনে ৩ কোটি ৮০ লাখ ৬৩ হাজার ৪০০ টাকা আদায় করা হয়েছে এবং এর বিপরীত সেতুর উভয় টোল দিয়ে ৫৩ হাজার ৪০৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। গতকাল শনিবার বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ১৯৯৮ সালে সেতুটি উদ্বোধনের পর এর চেয়ে বেশি টোল আদায় আর কখনো হয়নি।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব সাইট অফিস সূত্র আরও জানায়, শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব অংশের ঢাকা ও ময়মনসিংহের দিকে ৩৩ হাজার ২৫টি যানবাহন পারাপার হয়। এ থেকে টোল আদায় হয় ২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা এবং সিরাজগঞ্জ সেতু পশ্চিম অংশে উত্তরবঙ্গের দিকে ২০ হাজার ৬৮৩টি যানবাহন পারাপার হয়। এ থেকে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৭৪ লাখ ২৩ হাজার ৪০০ টাকা।
এর মধ্যে সেতুর টাঙ্গাইলের পূর্ব প্রান্তে ও সিরাজগঞ্জের পশ্চিম প্রান্তে ১০ হাজার ১০৫টি মোটরসাইকেল পারাপার হয়েছে। হালকা ছোট যানবাহনের সংখ্যা ১৯ হাজার ৯৭২টি, বাস পারাপারের সংখ্যা ১২ হাজার ৮৭১টি এবং ট্রাক পারাপার হয়েছে ১০ হাজার ৭৬০টি। এদিকেও যানবাহন পারাপারে বেশি রয়েছে।
২০২৩ সালের ২৮ জুন ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ এক দিনে ২৪ ঘণ্টায় সেতুর ওপর দিয়ে ৫৫ হাজার ৪৮৮টি যানবাহন পারাপার হয়েছিল। এসব যানবাহন থেকে টোল আদায় হয় ৩ কোটি ৫৮ লাখ ৪০ হাজার ২০০ টাকা। এটিই ছিল সর্বশেষ এ বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আদায়ের রেকর্ড, যা গত বছরের তুলনায় বেশি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন বঙ্গবন্ধু সেতু উদ্বোধন করা হয়। আর ২০২২ সালের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন।
রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় পৃথক স্থানে বজ্রাঘাতে এক নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে এসব ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়।
লংগদু থানা পুলিশের ওসি হারুনুর রশিদ গণমাধ্যমকে বজ্রাঘাতে চার জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লংগদু উপজেলার আটারকছড়া ইউনিয়নের করল্যাছড়ি চেয়ারম্যান টিলার মো. ইব্রাহিমের স্ত্রী রিনা বেগম (৩৬) নিজ বাড়িতে বজ্রপাতে মারা যান। এ ছাড়া কাপ্তাই হ্রদে বোট চলমান অবস্থায় বজ্রপাতে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
অন্য আরেকটি সূত্র থেকে জানা যায়, উপজেলার আটারকছড়া ইউনিয়নের একজন ও কাপ্তাই হ্রদে চলমান বোটে বজ্রপাতে তিনজন নিহত হন।
আটরকছড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আল আমিন বলেন, ‘আটারকছড়া ইউনিয়নের করল্যাছড়ি চেয়ারম্যান টিলার ইব্রাহিম ভাইয়ের স্ত্রী রিনা বেগম (৩৬) বজ্রপাত নিহত হয়েছেন।’
ভাসান্যদম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান হযরত আলী বলেন, ‘মাইনীমুখ থেকে মিনা বাজার যাওয়ার পথে বজ্রপাতে তিনজন নিহত হন এবং একজন পানিতে ডুবে নিখোঁজ রয়েছেন।’
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (লংগদু সার্কেল) মো. আবদুল আউয়াল জানান, লংগদু উপজেলার দুই স্থানে বজ্রপাতে মোট চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছেন।
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া মাঠে দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাতের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ঈদুল আজহার জামাত নির্বিঘ্নে করতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জামাত শুরু হবে ঈদের দিন সকাল ৯টায়।
জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, ঈদগাহ কমিটির কর্মকর্তাদের তৎপরতা ও দিন-রাতের পরিশ্রমে নামাজের উপযোগী হয়ে উঠছে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। এ মাঠে একসঙ্গে এক লাখের বেশি মুসল্লি জামাতে নামাজ আদায় করেন। রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরুর আগে বন্দুকের গুলির শব্দে নামাজের প্রস্তুতি নেওয়ার সংকেত দেওয়া হয়।
এরই মধ্যে মাঠে দাগ কাটা, বালু ফেলা, দেয়ালে রং করাসহ শোলাকিয়া ময়দানকে জামাতের উপযোগী করার কাজ শেষ হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে ওজুখানা ও টয়লেট। চলছে শোভাবর্ধনের কাজও।
তাছাড়া মুসল্লিদের জন্য সুপেয় পানি, মেডিক্যাল টিম, দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ নানা আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে এরই মধ্যে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বহুসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ও কয়েকটি মেডিক্যাল টিম।
দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। ট্রেন দুটি মুসল্লি নিয়ে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে এসে নামাজের শেষে আবার ফিরে যাবে।
শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, সুষ্ঠুভাবে জামাত অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। জামাতের মুসল্লিদের জন্য দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবার কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জামাত অনুষ্ঠিত হবে। যেন মুসল্লিরা নিরাপদে জামাতে এসে নির্বিঘ্নে ফিরে যেতে পারেন। জামাতে শুধু টুপি, মাস্ক ও জায়নামাজ ছাড়া কিছুই বহন করা যাবে না।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, ২০১৬ সালে শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার কথা মাথায় রেখে এবারও অন্যান্য বারের চেয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মাঠসহ আশপাশের এলাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি জানান, নামাজের সময় ২ প্লাটুন বিজিবি, বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব. আনসার সদস্যের সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলয়ের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোশাকে নজরদারি করবে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। এছাড়াও মাঠসহ প্রবেশ পথগুলোতে থাকছে সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার। আর আকাশে উড়বে পুলিশের ড্রোন ক্যামেরা। এর ফলে নিরাপদে, নির্বিঘ্নে ও নিশ্চিন্তে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করতে পারবেন।
মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারি প্রতিষ্ঠার পর ইংরেজি ১৮২৮ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ৭ একর জমির উপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। সে বছর শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশ নেন বলে মাঠের নাম হয় “সোয়া লাখি মাঠ”। সেখান থেকে উচ্চারণের বিবর্তনে পরিণত হয়ে নাম হয়েছে আজকের শোলাকিয়া মাঠে। মাঠে একসঙ্গে দুই লাখেরও বেশি মুসল্লি জামাতে নামাজ আদায় করেন। প্রায় সাত একর আয়তনের মাঠটিতে নামাজের ২৬৫টি কাতার রয়েছে। এবার এ মাঠে ১৯৭তম ঈদের জামাত হবে।