বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪

দেশে কিছু মানুষ রিজার্ভ বিশেষজ্ঞ: প্রধানমন্ত্রী

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাচিপের জাতীয় সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আপডেটেড
২৫ নভেম্বর, ২০২২ ২০:২৪
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২৫ নভেম্বর, ২০২২ ২০:১৫

দেশের কিছু মানুষ রিজার্ভের বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্তি করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, একটি দেশের আমদানি নিশ্চিত করতে যে পরিমাণ রিজার্ভ দরকার, বাংলাদেশে তার চেয়ে বেশি আছে। তারপরও তারা চা-স্টলে ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় রিজার্ভ নিয়ে আলোচনা করছে।

শুক্রবার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সরকারপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) পঞ্চম জাতীয় সম্মেলনে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশে পর্যাপ্ত রিজার্ভ রয়েছে এবং রিজার্ভ জনসাধারণের কল্যাণে ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকার জনকল্যাণে সম্ভাব্য সবকিছু করবে, কাউকে ভোগান্তি পোহাতে হবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা ঠিক যে, আমাদের রিজার্ভ থেকে খরচ করতে হবে। আমাদের কাছে এত পরিমাণ রিজার্ভ মানি আছে যে, আমরা পাঁচ মাসের জন্য খাদ্য আমদানি করতে পারি, যদিও যেকোনো দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে তিন মাসের জন্য খাদ্য আমদানির জন্য রিজার্ভ থাকতে হয়।

চাল, গম, ভোজ্যতেল, জ্বালানি তেল এবং ভ্যাকসিন আমদানিসহ জনগণের কল্যাণে এই রিজার্ভ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ রিজার্ভের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠছে এবং তারা চা-স্টলে ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় রিজার্ভ নিয়ে আলোচনা করছে। কোভিড-১৯, ভর্তুকি দেয়া, কিছু প্রকল্পে বিনিয়োগ এবং বিদেশি ঋণ পরিশোধ করায় এই টাকা ব্যয় হয়েছে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া যে রিজার্ভ রেখে গিয়েছিল, তা থেকে আওয়ামী লীগ ২০০৮ এ নির্বাচিত হয়ে ২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করে, তখন সেই রিজার্ভ ছিল ৫ বিলিয়নের কিছু ওপরে। করোনাকালে যেহেতু আমদানি বন্ধ ছিল, রেমিট্যান্স সরকারিভাবে এসেছে, কোনো হুন্ডি ব্যবসা ছিল না, কোনো রকম খরচ ছিল না তাই আমাদের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছিল। তবে বাংলাদেশ তাদের সকল ঋণ সব সময় সঠিকভাবে পরিশোধ করে এসেছে এবং একবারের জন্যও ঋণ খেলাপি হয়নি। সরকারের যত সমস্যা হোক, এই অবস্থাটা তার সরকার ধরে রাখতে পেরেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে, দেশের কাজ বেড়েছে। তাছাড়া ভ্যাকসিন ক্রয় এবং করোনা মোকাবিলার আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটাতে হয়েছে। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে হয়েছে। এগুলোর জন্য টাকা খরচ হয়েছে। পানির মতো টাকা খরচ করতে হয়েছে। তারপরে এখন অধিক দামে আমাদের খাদ্য আমদানি করতে হচ্ছে।

সরকারপ্রধান বলেন, যতই দাম বাড়ুক, সরকার ইউক্রেন-রাশিয়া, কানাডা থেকে এই যুদ্ধকালীন গম কিনে আনছে। এ জন্য ২০০ ডলারের গম ৬০০ ডলারে কিনতে হচ্ছে। ভোজ্য তেল সেই ব্রাজিল থেকে শুরু করে পৃথিবীর যে দেশে পাওয়া যায়, আমরা নিয়ে আসছি। মানুষের ভোগ্য পণ্য প্রাপ্তিতে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছি। মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার।

দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক ইঞ্চি জমিও ফেলে রাখবেন না। যে যা পারেন উৎপাদন করেন। নিজেরা সাশ্রয় করেন। নিজের খাদ্য নিজে জোগান দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা গুজব ছড়ানো হচ্ছে ব্যাংকে টাকা নাই, ব্যাংকে টাকা পাওয়া যাবে না। আর সবাই টাকা ব্যাংক থেকে তুলে ঘরে রাখছে। আসলে ঘরে টাকা রাখা মানে চোরকে সুযোগ করে দেয়া। কাজেই চোরকে সুযোগ করে দেবেন না।


উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ী হলেন যারা

লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলার একটি কেন্দ্রে ভোটারদের লাইন। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৮ মে, ২০২৪ ২৩:০৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। বুধবার (৮মে) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোট গণনা শেষে রাতে এরইমধ্যে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা শুরু করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত যেসব উপজেলার ফল জানা গেছে :

বগুড়া: বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি মিনহাদুজ্জামান লিটন বিজয়ী হয়েছেন।

সদর (ফরিদপুর): চেয়ারম্যান পদে কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামচুল আলম চৌধুরী আনারস প্রতীকে ৩১ হাজার ৯৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মনিরুল হাসান টেলিফোন প্রতীকে পেয়েছেন ৩০ হাজার ৯ ভোট।

ফুলগাজী (ফেনী): চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন মজুমদার (কাপ-পিরিজ) ২৭ হাজার ৬৩৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মো. জাফর উল্ল্যাহ ভূইয়া (চিংড়ি মাছ) পেয়েছেন ৭৭৫ ভোট।

চরভদ্রাসন (ফরিদপুর): চেয়ারম্যান পদে চরভদ্রাসন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার আলী আনারস প্রতীকে ১৬ হাজার ১৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নিজাম উদ্দিন টেলিফোন প্রতীকে পেয়েছেন ১০ হাজার ৪৫৪ ভোট।

বানিয়াচং (হবিগঞ্জ): চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন খান আনারস প্রতীকে ৪২ হাজার ৪৩৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা যুবলীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কাসেম চৌধুরী (মোটরসাইকেল) প্রতীকে পেয়েছেন ৩১ হাজার ৮০৩ ভোট।

আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ): চেয়ারম্যান পদে মো. আলা উদ্দিন কাপ-পিরিচ প্রতীকে ১৫ হাজার ১৮২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. আলী আমজাদ তালুকদার পেয়েছেন ১২ হাজার ৫০৩ ভোট।

গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ): আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ ৪৪ হাজার ৫৩৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দুই বারের উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম পেয়েছেন ২৩ হাজার ৫৬৯ ভোট।

মধুখালী (ফরিদপুর): চেয়ারম্যান পদে মধুখালী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. মুরাদুজ্জামান মুরাদ দোয়াত-কলম প্রতীকে ২৯ হাজার ৪৭৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আহসানুজ্জামান আজাউল ঘোড়া প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৮ হাজার ৪৮৫ ভোট।

জামালপুর সদর উপজেলা: চেয়ারম্যান পদে ৬৪ হাজার ৩৯ ভোট পেয়ে মোটরসাইকেল প্রতীকের বাবু বিজন কুমার চন্দ বেসরকারি ভাবে জয়ী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাফিজুর রহমান স্বপন পেয়েছেন ৫৯ হাজার ৩৩৫ ভোট।

চাঁদপুর : চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যাপক সিরাজুল মোস্তফা তালকুদার।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নাজমা আক্তার আঁখি নির্বাচিত হন। তবে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন শওকত হোসেন বাদল।

মতলব উত্তরে ঘোড়া প্রতীকে ৩৩ হাজার ৭০৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মোহাম্মদ মানিক (আওয়ামী লীগ)।

এই উপজেলায় পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে রিয়াজউদ্দিন রিয়াজ নির্বাচিত হন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন লাভলী চৌধুরী।

নোয়াখালী: নোয়াখালীর সূবর্ণচর উপজেলায় পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক সাবাব চৌধুরী (আনারস) ৩৭,৬৪৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত।


চটেছেন শ্রীদেবীকন্যা জাহ্নবী

আপডেটেড ৯ মে, ২০২৪ ০০:০৭
বিনোদন ডেস্ক

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন চরিত্রে নিজেকে পর্দায় হাজির করে ভক্তদের চমকে দিচ্ছেন শ্রীদেবীকন্যা বলিউড অভিনেত্রী জাহ্নবী কাপুর। কখনো বিমানবাহিনীর ক্যাপ্টেনের রূপে, তো কখনো একদমই সাদামাটা রূপে হয়েছেন প্রশংসিত। এবার তিনি বড় পর্দায় হাজির হবেন নারী ক্রিকেটার চরিত্রে। সিনেমার নাম ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহি’।

এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর খবর, শ্রীদেবীর চেন্নাইয়ের বাড়িটাকে গেস্ট হাউস বানাচ্ছেন জাহ্নবী। মায়ের সাধের বাড়িটাকে সকলের জন্য ফ্রি-তে প্রবেশের ব্যবস্থা করছেন অভিনেত্রী। অতিথি হিসাবে কিছু নথি জমা দিতে হবে। সেই নথির ওপর ভিত্তি করবে কারা গোল্ড কুপন পাবেন।

দিন কয়েক আগে মেয়ের প্রেমের গুঞ্জনে সিলমোহর দিয়েছেন বাবা বনি কপুর। জাহ্নবীর গলায় শিখু লেখা লকেট বারবার নজর কেড়েছে সকলের। এর মাঝেই বিয়ের প্ল্যান শেয়ার করেন অভিনেত্রী! ব্রাইডস টুডে-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিয়ের সাজসজ্জা নিয়ে মনের কথা বলেছিলেন জাহ্নবী কপুর। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই কী প্রতিক্রিয়া দিলেন শ্রীদেবী কন্যা?

অভিনেত্রী সাম্প্রতিক অতীতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি তিরুপতিতে বিয়ে করতে চাই। ওখান থেকেই আমি শুভকর্মে শুভসূচনা করতে চাই। ইন্টিমেট ওয়েডিংয়ে আমি বিশ্বাসী। সোনার নকশা করা করা কাঞ্জিভরম শাড়ি পরব। আর চুলজুড়ে থাকবে ফুলের মালা। বর পরবে লুঙ্গি। বিয়ের পর আমরা কলাপাতায় খাব। আমি প্রায়ই তিরুপতি যাই। যখনই জীবনে কোনো বড় কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার থাকে বা বড় কোনো কাজ থাকে তার আগে তীরুপতি দর্শনে যাই। তাই আমি চাই বিয়েটাও এখানেই হোক। পরিবার আর কাছের মানুষদের নিয়েই বিয়ের যাবতীয় আয়োজন করার ইচ্ছে রয়েছে। জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ে আমার মোটেই ভালো লাগে না।’

এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই জাহ্নবী সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন একটু কর্কশ ভাবে। একটি কমেন্টের নিচে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘যা খুশি তাই’। যা দেখে অনুমান বর্তমানে বিয়ের কোনো পরিকল্পনা নেই জাহ্নবীর। অভিনয় ক্যারিয়ারে খুব একটা সফল নন জাহ্নবী। বেশ কয়েকটি বলিউড ছবিতে কাজ করেছেন। তবে কোনো ছবিই বক্স অফিসে বাজিমাত করতে পারেনি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খুবই অ্যাক্টিভ জাহ্নবী কপুর। ফটোশুট থেকে হলিডে মুডের ছবি শেয়ার করেন অভিনেত্রী। বর্তমানে শ্রীদেবীর বাড়িকে হোটেল বানানোর জন্য চর্চার রয়েছেন অভিনেত্রী। চেন্নাইয়ের যে বাড়িতে মেয়েবেলা কেটেছে জাহ্নবীর এবার সেখানে সাধারণ মানুষের থাকার একটা সুবর্ণ সুযোগ আসতে চলেছে।


আলতাদীঘি পুনর্খননের নামে নির্বিচারে গাছ কাটার অভিযোগ

নওগাঁর আলতাদীঘি পুনর্খননের নাম চারদিকের কয়েক হাজার গাছ কেটে ফেলায় বিবর্ণ দীঘিটি। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৯ মে, ২০২৪ ০০:০৭
মো. সবুজ হোসেন, নওগাঁ

নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার ‘আলতাদীঘি পুনর্খননের মাধ্যমে আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যানের জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ’ প্রকল্পের জন্য কেটে ফেলা হয়েছে দীঘির চতুর্দিকের কয়েক হাজার গাছ। এ অবস্থায় প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নির্বিচারে গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

প্রতিবাদকারীদের অভিযোগ, কিছুদিন আগেও আলতাদীঘি ছিল একটুকরো সবুজ অরণ্য। উন্নয়ন প্রকল্পের নামে এখন খাঁ খাঁ করছে আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যান। সম্প্রতি উদ্যানের দীঘি খনন, ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ ও গাছ রোপণসহ বেশকিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ১৬ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। আর এই বাস্তবায়নের নামে কেটে ফেলা হয় নানা প্রজাতির হাজারও গাছ।

নওগাঁ জেলা শহর থেকে সাব্বির হোসেন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন আলতাদীঘি দেখতে। কথা হয় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে। তারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘দীঘিটি অবশ্যই সংস্কার করা জরুরি; কিন্তু তাই বলে এভাবে নির্বিচারে চর্তুদিকের সারিবদ্ধ সব গাছ কাটতে হবে? গাছগুলো রেখে কি সংস্কার করা যেত না? দীঘির চতুর্দিক দেখে এটাকে আর দীঘি বলা যায় না। এ যেন এক মরুভূমি।’

উদ্যানের উন্নয়ন কাজে গঠিত কমিটির সদস্য কায়েস উদ্দিনের দাবি, ‘আলোচনা সভায় গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়নি। হঠাৎ করে আলতাদীঘিতে এসে দেখি গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে।’

তবে ধামইরহাটের বনবিট কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলছেন, ‘মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। নতুন বনায়ন হবে, একটা গাছ তো আর সারাজীবন থাকবে না। এটি সামাজিক বনায়নের আওতায় স্বল্পমেয়াদে সৃজিত উডলট বাগান।’

বনবিভাগ বলেছে, সামাজিক বনায়নের আওতায় ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি প্রজাতির চারা দিয়ে বনায়ন করা গাছগুলো অপসারণ করে স্থানটিতে দেশীয় প্রজাতির চারা প্রতিস্থাপন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আলতাদীঘির খনন করা মাটি দিয়ে নিচু স্থান ও পাড় সংস্কার করার জন্য দীঘির চারপাশে বিদ্যমান ৫৪৬টি ইউক্যালিপটাস ও ৪৫৬টি আকাশমণি গাছ যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে ১৫টি লটে ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকায় টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়।

এখানে ঘুরতে আসা নওগাঁ শহরের একটি কলেজের শিক্ষার্থী লুবনা ইয়াসমিন বলেন, ‘গাছ কাটার আগে এসব জায়গায় বেশ কিছু পাখির বাসা দেখেছি। এখন সেখানে বালুর স্তূপ। এগুলো মেনে নেওয়া যায় না।’

পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, ‘পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর’ এই অজুহাতে ৫৪৬টি ইউক্যালিপটাস গাছ কাটার বিষয়টি হয়তো মেনে নেওয়া যায়। তবে দীঘির চতুর্দিকে সারিবদ্ধভাবে লাগানো পরিবেশবান্ধব বিশালাকৃতির ৪৫৬টি আকাশমণি গাছ কাটার বিষয়টি অযৌক্তিক।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) নওগাঁ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাফকুল ইসলাম বলেন, ‘সৌন্দর্যবর্ধন বৃক্ষরোপণের মধ্যে নিহিত, নিধনে নয়। আজকের এই গাছগুলো বেড়ে উঠতে সময় লেগেছে ১৫ থেকে ২০ বছর। অথচ নিমিষের মধ্যে তা ধ্বংস করা হচ্ছে। আধুনিক নকশায় গাছ রেখেই সুন্দর পরিকল্পনা করা সম্ভব।’

রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান এ বিষয়ে জানিয়েছেন, আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যানের মধ্যে অবস্থিত আলতাদীঘিটি দীর্ঘদিন ধরে খনন ও সংস্কার না করার কারণে এর গভীরতা কমে গিয়ে পানি নেমে যায় ১ ফুটের নিচে। সেই সঙ্গে চারপাশের পাড়গুলো ভেঙে যাওয়ায় দীঘিটি পুনর্খনন ও পাড় সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছিল। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে ৬৪৯.৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বন অধিদপ্তর বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের মাধ্যমে দীঘিটির খনন কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। আলতাদীঘির পাড়জুড়ে সামাজিক বনায়নের আওতায় ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি প্রজাতির গাছ অপসারণ করে সেখানে দেশীয় প্রজাতির তিন হাজার চারা প্রতিস্থাপন করার পরিকল্পনা করা হয়।

তিনি বলেন, প্রকল্পটির কাজ ডিসেম্বর ২০২৪ সালে সমাপ্ত হলে পুরো আলতাদীঘি এলাকা আবারও সবুজে পরিণত হতে শুরু করবে। দীঘির পানির পাপ্যতা নিশ্চিত ও বনাঞ্চল ব্যবস্থাপনার সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি পরিবেশের উন্নয়ন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদদ্র্য বিমোচন এবং ইকো ট্যুরিজমের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।

আলতাদীঘি অনেক প্রাচীন ও বিশাল দীঘি। উত্তর-দক্ষিণে লম্বা এ দীঘির দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার, চওড়া প্রায় ৪০০ মিটারের মতো। গ্রামের লোকমুখে প্রচলিত আছে বৌদ্ধ যুগের কীর্তি এটি। দীঘির পাড় ঘেঁষে ভারত সীমান্ত। উত্তর পাড়ে দাঁড়িয়ে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া, বিএসএফের সীমান্ত টহল, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতকে দেখা খুবই সহজ। আলতাদীঘির পাড়ে দাঁড়ালে মনে হবে অনেকটা সুন্দরবনের মতো, শীতের সময় এখানে অতিথি পাখির আগমন ঘটে।


উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা

প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন শেষে মেহেরপুর বড়বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে চলছে ভোট গণনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
আপডেটেড ৮ মে, ২০২৪ ১৮:২৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপ শেষ হয়েছে। ১৩৯ উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে।

আজ বুধবার সকাল ৮টা শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সকালে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতি বাড়ে। এখন চলছে ভোট গণনার কাজ।

এই ধাপে ১৩৯ উপজেলার ২২টিতে ইভিএমে এবং বাকিগুলোতে ব্যালটে ভোট হয়েছে। এক হাজার ৬৩৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এই নির্বাচনে। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬২৫ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন রয়েছেন।

প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদ, ভাইস চেয়ারম্যান এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৮ জন এরই মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন।

এবার স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে চার ধাপে। প্রথম ধাপে ভোটগ্রহণ করা হলো রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১৩৯টি উপজেলা পরিষদে।

উল্লেখ্য, ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে ১৬০টি উপজেলায়, ২৯ মে তৃতীয় ধাপে ১১০ উপজেলায় এবং ৫ জুন চতুর্থ ধাপে ৫০টির বেশি উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হবে।

বিষয়:

বাধা কাটল ঝিনাইদহ-১ আসনের উপজেলা নির্বাচনের

হাইকোর্ট। ফাইল ছবি
আপডেটেড ৮ মে, ২০২৪ ১৭:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঝিনাইদহ-১ শূন্য আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে এক প্রার্থীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। ফলে নির্বাচন হওয়ার ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

আগামী ৫ জুন এই আসনে নির্বাচনের জন্য তারিখ নির্ধারিত করা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা, শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও বি এম ইলিয়াস কচি। অন্যপক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব।

এর আগে এক আবেদনে ৬ মে বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ ২১ দিনের জন্য নির্বাচন স্থগিত করেন। পরে এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. নায়েব আলী জোয়াদ্দার।

এবছর ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আব্দুল হাইকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এতে অনিয়মের অভিযোগ এনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম হাইকোর্টে ইলেকশন পিটিশন দায়ের করেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বিবাদীদের নোটিশ ইস্যু করে গেজেট স্থগিত করেন। পরে অবশ্য আপিল বিভাগ গেজেট স্থগিতের আদেশ স্থগিত করেন। এর মধ্যে আব্দুল হাই ইন্তেকাল করেন।

নজরুল ইসলাম দুলালের আইনজীবীর দাবি, নিয়ম হলো বিজয়ী প্রার্থী মারা গেলে আবেদনকারীকে বিজয়ী ঘোষণা করা। সেটা না করে নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। এ বিষয়ে সম্পূরক আবেদন করায় ৬ মে হাইকোর্ট ২১ দিনের জন্য এ নির্বাচন স্থগিত করেছিলেন।

এ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই। অসুস্থ হয়ে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন তিনি। গত ১৬ মার্চ সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এতে ঝিনাইদহ-১ শূন্য হয়।

বিষয়:

হাওরে বজ্রপাত আতঙ্ক দুই দিনে ছয়জনের মৃত্যু

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দেবাশীষ দেবু, সিলেট

সিলেট বিভাগের হাওর এলাকার নতুন আতঙ্ক হয়ে উঠেছে বজ্রপাত। বৃষ্টির মৌসুমে হাওরে ঘনঘন ঘটছে বজ্রপাতের ঘটনা। এতে বাড়ছে প্রাণহানি। কয়েক বছর ধরে এমনটি ঘটতে থাকলেও এই ঝুঁকি ও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় নেই তেমন কোনো উদ্যোগ। এর মধ্যে গত দুই দিনে (রবি ও সোমবার) সিলেট বিভাগে বজ্রপাতে মারা গেছেন ছয়জন। বর্ষায় বজ্রপাতের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

গত কয়েক বছর ধরেই হাওরে বজ্রপাতে প্রাণহানি বেড়ে চললেও বজ্রপাতের আগাম তথ্য হাওরবাসীর কাছে পৌঁছানোর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি অদ্যাবধি। বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে হাওর এলাকায় কিছু আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের দাবি উঠলেও এ ব্যাপারে কোনো পরিকল্পনা নেই প্রশাসনের। গত পাঁচ বছরে লক্ষাধিক তালবীজ রোপণ করে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের চেষ্টা করা হয়েছে কেবল। তবে এই উদ্যোগও ব্যর্থ হয়েছে। কেননা, বেশির ভাগ তালবীজ থেকেই চারা গজায়নি।

এ অবস্থায় বৃষ্টির মৌসুম শুরু হতেই সিলেটে বেড়ে গেছে বজ্রপাত আর প্রাণহানি। গত সোমবার সিলেটের কানাইঘাট, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ ও হবিগঞ্জের বাহুবলে বজ্রপাতে মারা গেছেন তিনজন। তার আগের দিন রোববার সিলেটের গোয়াইনঘাট, মৌলভীবাজার সদর ও হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে বজ্রপাতে আরও তিনজন মারা যান।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম পিয়ার-রিভিউ জার্নাল হেলিয়নে ‘বাংলাদেশে বজ্রপাত পরিস্থিতির ওপর জিআইএস (জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম)-ভিত্তিক স্থানিক বিশ্লেষণ’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে, বেশির ভাগ প্রাণহানি বর্ষা-পূর্ববর্তী মৌসুম এবং বর্ষা ঋতুতে ঘটে, যার মধ্যে উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল (সিলেট) সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশে আবহাওয়ার ধরন ও বৈশিষ্ট্য ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে। যার ফলে দীর্ঘস্থায়ী তাপপ্রবাহ, শৈত্যপ্রবাহ এবং ঋতু পরিবর্তনের মতো ঘটনা ঘটছে। এ কারণেই বজ্রপাত বাড়ছে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, বৈশাখ থেকে ঝড়বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বজ্রপাতের পরিমাণ বাড়ে। এ সময়টিই হাওরের সবচেয়ে ব্যস্ততম সময়। হাওরের একমাত্র ফসল বোরো ধান তোলা হয় এই সময়ে। ফলে হাওরের কৃষকদের মাঠে যেতেই হয়। এতে প্রাণহানিও বাড়ে।

বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সিলেট বিভাগের ১০৫টি হাওর আছে সিলেট জেলায়। আর সুনামগঞ্জ জেলায় হাওর আছে ১৩৫টি।

হাওর বেশি হওয়ায় দেশের সবচেয়ে বজ্রপাতপ্রবণ এলাকাও সুনামগঞ্জ। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত গত ৮ বছরে বজ্রপাতে এ জেলায় অন্তত ১৫০ লোক মারা গেছেন।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগে থাকলেও সুনামগঞ্জে নেই কোনো আবহাওয়া অফিস। এদিকে বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি বেড়ে যাওয়ায় ২০১৮ সালে দেশের বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে সিলেট আবহাওয়া অফিসেও স্থাপন করা হয় বজ্রপাত পূর্বাভাস যন্ত্র ‘থান্ডারস্টর্ম ডিটেকটিভ সেন্সর’। এই যন্ত্রের মাধ্যমে প্রতিদিনই বজ্রপাতের পূর্বাভাস আসে। আবহাওয়া অফিস থেকে এই পূর্বাভাস প্রতিটি জেলার সরকারি অফিসগুলোতে ই-মেইলে পাঠানো হয়। তবে এই পূর্বাভাস মাঠপর্যায়ে প্রান্তিক মানুষের কাছে আর পৌঁছে না। কৃষকদের কাছে বজ্রপাতের পূর্বাভাস পাঠানোর এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেই।

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব বলেন, ২০১৬ সালের পর থেকে বজ্রপাতকে একটি দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। সাধারণত পাহাড়বেষ্টিত এলাকা ও খোলা জায়গায় বজ্রপাতের আশঙ্কা বেশি থাকে। এই হিসেবে সিলেট বজ্রপাতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা।

তিনি বলেন, ‘১২ ঘণ্টা আগে আমরা বজ্রপাতের পূর্বাভাস পাই। আমরা যে বজ্রপাত পূর্বাভাস সরকারি দপ্তরে পাঠাই, সেটি হাওরাঞ্চলের মানুষজনের কাছে পৌঁছাতে হবে। এটি স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদেরই করতে হবে। আগাম সতর্কবার্তা পেলে ওই সময় হাওরে কাজ করা থেকে তারা বিরত থাকতে পারবেন।’

বজ্রপাত আটকে দেবে তালগাছ, এই ধারণা থেকে কেবল সুনামগঞ্জ জেলায়ই ২০১৮ সালে ৩৪ হাজার ও চলতি বছরে ৮০ হাজার তালবীজ বিতরণ করা হয়। তবে স্থানীয়রা বলছেন, এই লক্ষাধিক বীজ থেকে হাজারখানেক চারাও গজায়নি।

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ৫নং সরমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান এহসান চৌধুরী বলেন, ‘২০১৭ সালে আমাদের কিছু তালবীজ দেওয়া হয় উপজেলা প্রশাসন থেকে। আমরা রোপণ করেছি কিন্তু গাছ হয়নি। সব বীজই নষ্ট হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘বজ্রপাতের কোনো পূর্বাভাস আমরা পাই না। তাই যখন দেখি আকাশের অবস্থা ভালো না তখন ইউপি সদস্যদের কল দিয়ে বলি তাদের এলাকায় কেউ যেন মাঠে না যায়।’

সুনামগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রতিটি উপজেলায় ২০১৮ সালে তালবীজ বিতরণ করা হয়েছে। জেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে তালবীজ দেওয়া হলেও পরবর্তী সময় আর কোনো তদারকি করা হয়নি।

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, ‘হাওরে কিছু আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি আমরা। যাতে কৃষকরা মাঠে কাজ করতে গেলে বজ্রবৃষ্টির সময় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে পারেন। এ ছাড়া হাওরে বজ্রপাত নিরোধক দণ্ড স্থাপন করা দরকার। এসব দাবি আমরা বিভিন্ন সময় জানিয়েছি। তবে মৌখিক আশ্বাস ছাড়া এখন পর্যন্ত কিছুই পাইনি।’

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে হাওর এলাকায় তালবীজ রোপণ ও বিতরণ করা হয়েছিল। তবে এটা অনেক দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এখন গাছগুলোর কী অবস্থা তা জানা নেই। ইউএনওদের মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে জানাব।’

বিষয়:

প্রথম দুই ঘণ্টায় ১০ শতাংশ ভোট: ইসি

নির্বাচন কমিশন ভবন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৮ মে, ২০২৪ ১৭:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটগ্রহণে প্রথম দুই ঘণ্টায় ১০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মনিটরিং সেল। আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানা যায়।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দেশের ৫৯ জেলার ১৩৯টি উপজেলায় সকাল সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

ইসির দেওয়া তথ্যমতে, উপজেলায় এ পর্বে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন দুই কোটি ৮০ লাখের বেশি মানুষ। প্রায় সব উপজেলায় মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ১৩৯টি উপজেলা পরিষদে প্রতিটি উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রায় ১৬০০ প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলার মধ্যে ২২টিতে ইভিএম এবং বাকিগুলোতে ব্যালট পেপারে ভোট হচ্ছে। এ ধাপে মোট এক হাজার ৬৩৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬২৫ এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৮, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ করে অর্থাৎ মোট ২৮ প্রার্থী এরই মধ্যে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন।

বিষয়:

বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক নিহত

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ছোড়া গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবকের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আজ বুধবার সকালে তেঁতুলিয়া সীমান্তের ৪৪৭/৫ নং পিলারের কাছে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর ভারতীয় থানা পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

নিহতরা হলেন- তেঁতুলিয়া উপজেলার মাগুড়া গ্রামের জুনু মিয়ার ছেলে জলিল (২৪) ও তিরনইহাট ব্রমতোল গ্রামের কেতাব আলীর ছেলে ইয়াসীন আলী (২৩)।

পঞ্চগড় ১৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল মো. যুবায়ের হাসান (পিএসসি) বলেন, ‘ঘটনার পরেই আমারা খবর পেয়েছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের মরদেহ ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।’

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার বলেন, ‘বিজিবির মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে নিহত ওই দুই যুবক গরু চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।’

বিষয়:

১৩৯ উপজেলায় ভোট গ্রহণ চলছে

ফাইল ছবি
আপডেটেড ৮ মে, ২০২৪ ১০:৩৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোট গ্রহণ চলছে। আজ বুধবার সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে চলবে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত। প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলার তফসিল ঘোষণার পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা, নির্বাচন স্থগিত ও ধাপ পরিবর্তনের কারণে কিছু উপজেলা বাদ পড়ে।

এই ধাপে ১৩৯ উপজেলার মধ্যে ২২টিতে ইভিএম এবং বাকিগুলোতে ব্যালটে ভোট হবে। এই ধাপে মোট ১ হাজার ৬৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০, ভাইস চেয়ারম্যান ৬২৫ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন প্রার্থী রয়েছেন। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৮, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ করে অর্থাৎ ২৮ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন।

হাতিয়া, মুন্সীগঞ্জ সদর, বাগেরহাট সদর, পরশুরাম ও শিবচর এই পাঁচটি উপজেলার সব পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। অর্থাৎ এই পাঁচ উপজেলায় কোনো পদেই ভোটের প্রয়োজন পড়ছে না। পার্বত্য জেলা বান্দরবানে তিনটি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করেছে ইসি।

এ ছাড়া জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে ইসি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে জামালপুরের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সরিষাবাড়ীতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে আজ বুধবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সব পদের নির্বাচন কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। কমিশনের নির্দেশে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে ভোটের পরিবেশ শান্ত রাখতে স্বাভাবিক এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৭ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ বা ১৯ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া বিশেষ এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২০ বা ২১ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। উপজেলার আয়তন, ভোটার সংখ্যা ও ভোটকেন্দ্রের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রতি উপজেলায় ২ থেকে ৪ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবেন।

উপকূলীয় এলাকার দ্বীপাঞ্চলে কোস্টগার্ড, মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। ভোট কেন্দ্রে আনসার ব্যাটালিয়ন মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোট গ্রহণের আগের দুই দিন, ভোট গ্রহণের দিন ও ভোট গ্রহণের পরের দুদিন মোট পাঁচ দিন নিয়োজিত থাকবেন।

গতকাল রাত ১২টা থেকে আজ বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত বোটসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে মোটর সাইকেল চলাচল। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

ভোট গ্রহণের সাত দিন আগে ও ভোট গ্রহণের পরবর্তী সাত দিন পর্যন্ত লাইসেন্সধারীরা অস্ত্রসহ চলাচল না করতে কিংবা বহন ও প্রদর্শন না করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে নির্দেশনা জারি করেছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোট গ্রহণের তিন দিন পূর্ব পর্যন্ত আচরণ বিধি প্রতিপালন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও প্রতিরোধে প্রতি উপজেলায় একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট এবং ভোট গ্রহণের তিন দিন পূর্ব থেকে ভোট গ্রহণের পরের দিন পর্যন্ত প্রতি তিন ইউনিয়নের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে। এ ছাড়া ভোট গ্রহণের দুই দিন আগে থেকে ভোট গ্রহণের দুই দিন পর পর্যন্ত প্রতি উপজেলায় একজন করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন।

এদিকে দেশের ১৫০টি উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ৪১৮ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৬ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত বিজিবির সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় বিজিবি সদস্যরা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

যা বলছেন সিইসি

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের প্রমাণ পাওয়ামাত্র ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। গতকাল মঙ্গলবার এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সকালে সিইসি বলেন, ‘এটা নিয়ম রক্ষার ভোট নয়। নির্বাচন অনিবার্যভাবে প্রয়োজন। আমাদের কাজ নির্বাচন আয়োজন করা। কে, কোন দলের প্রার্থী, এটা কোনো বিষয় না। আমরা দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখছি না। প্রার্থীর সঙ্গে প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখছি। যদি একজন প্রার্থী থাকে, তবে ভোট হবে।’

বিএনপির নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি পদে চারজন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই, সে কথা বলা যাবে না। কমিশনের দায়িত্ব প্রার্থী আছে কি না, সুষ্ঠুভাবে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হচ্ছে কি না, সেটি দেখা। দলীয় বিষয়গুলো দেখা আমাদের দায়িত্ব না।’

উপজেলার ভোটে প্রভাব বিস্তার নিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ভোটে কেউ যাতে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সে ব্যাপারে ইসির অবস্থান স্পষ্ট। প্রমাণ পেলেই ব্যবস্থা। ভোটকেন্দ্রে অনুপ্রবেশকারীরা যাতে ঢুকতে না পারে, সে ব্যাপারে রিটার্নিং অফিসারকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ইসি কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। উৎসাহ-উদ্দীপনা থেকে ভোটের মাঠে যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশনা রয়েছে কমিশনের।’

প্রথম ধাপে ১১ হাজার ৫৫৬ কেন্দ্রের ৮১ হাজার ৮০৪ ভোট কক্ষে ৩ কোটি ১৪ লাখ ৬৮ হাজার ১০২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ১ কোটি ৬০ লাখ ২ হাজার ২২৪, নারী ১ কোটি ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯০ এবং ১৮৮ জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন।


বিভিন্ন জেলায় ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত নষ্ট হয়েছে ফসলের খেত

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কালবৈশাখীতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে বিদ্যুৎ সংযোগ। ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলের খেত। ফলে তীব্র দাবদাহে ফসল নষ্ট হওয়ার পর আরেক দফা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন কৃষক। বিস্তারিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মুন্সীগঞ্জ, ত্রিশাল প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে।

ঝড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন নাসিরনগরের ৭ গ্রাম

নাসিরনগরে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ৭টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে বন্ধ বিদ্যুৎ সরবরাহ। ৪০টির মতো বসতঘর, দোকানপাট ও হাঁস-মুরগির খামার ক্ষতিগ্রস্ত। গত রোববার সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত থাকা কালবৈশাখীতে এমনটি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো হলো- উপজেলা সদর ইউনিয়ন, নাসিরপুর, দাতমণ্ডল, ধনকুড়া, কুলিকুণ্ডা ও মন্নরপুর।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় ঝড়ে এসব এলাকার বসতঘর, খামার ও দোকানপাটের টিনের চাল প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে উড়ে যায়। তাছাড়া প্রতিটি গ্রামের গাছপালা ভেঙে বিদ্যুতের তারের ওপর ঝুলে আছে। ভেঙে গেছে পল্লী বিদ্যুতের পাঁচটি খুঁটি ও বেশ কিছু ট্রান্সমিটার। চার শতাধিক সংযোগ লাইন ও দুই শতাধিক মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নাসিরনগরে কালবৈশাখীতে সদরে ৯টি, কুলিকুণ্ডা ৩টি, দাতমণ্ডল ১০টি, নাসিরপুর ৫টি, ধনকুড়া ৪টি মন্নরপুর গ্রামে ৮-১০টি ও বুড়িশ্বর গ্রামে ৩টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নাসিরনগর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল ম্যানেজার প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘রোববারের কালবৈশাখী ঝড়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক জায়গায় বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশকিছু খুঁটি ও মিটারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা জেলা অফিসে যোগাযোগের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে খুঁটি মেরামতের কাজ করছি। ঝড়ে ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিকল্প পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ সরবারহের চেষ্টা করা হলেও সে লাইনটি কাজ করছে না। ফলে রাত থেকে বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না গ্রাহকরা।’

মুন্সীগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত বাঙ্গি খেত

রোববার দিনগত রাতে মুন্সীগঞ্জে ৩০ মিনিটের ঝড়-শিলা বৃষ্টিতে বিভিন্ন জায়গায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে মেঘনা নদী তীরবর্তী পৌরসভার অন্তত ৩ এলাকায় ৫ হেক্টর জমিতে আবাদ করা খেতের বাঙ্গি পুরোপুরি বিনষ্ট হয়ে ক্ষতি কয়েক লাখ টাকা বলে দাবি কৃষকের। কৃষি অফিস জানিয়েছে, কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টিতে জেলা সদর ও গজারিয়া উপজেলার বাঙ্গি-সবজিসহ অন্তত ৬১০ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। এ ছাড়া বেশিরভাগ খেতের বাঙ্গি শিলাবৃষ্টিতে পুরোপুরি বিনষ্ট হয়ে গেছে। মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার খাসকান্দি, রমজানবেগ ও চরকেওয়ার ইউনিয়নের চরমশুরা এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। এছাড়াও সদর উপজেলার পঞ্চসার, রামপাল ইউনিয়নে ঝিঙ্গা, তীল, বোরো ধান, ভুট্টা করলা, চিচিঙ্গাসহ শাকসবজির ক্ষেত শীলাবৃষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে। সোমবার সকালে সরেজমিনে পৌরসভার খাসকান্দি এলাকায় গেলে ক্ষেতের পাশে বিমর্ষ অবস্থায় বসে থাকা বাঙ্গি চাষি জয়নাল হাসানের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি জানান, ‘এবার ৮৬ শতাংশ জমিতে বাঙ্গি আবাদ করেছি। মাত্র বাঙ্গিগুলো পরিপক্ব হতে শুরু করেছিল। আর কিছুদিন পরে সেগুলো খেত থেকে তুলে বাজারে বিক্রি করার কথা। কিন্তু রোববার রাতে সর্বনাশ হয়ে গেছে। আমার মাথায় হাত পড়ে গেছে। এমন পরিস্থিতির শিকার আগে হইনি।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমাদের মাঠ কর্মীদের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে যে তথ্য পেয়েছি তাতে জেলা সদর ও গজারিয়া উপজেলার ৬১০ হেক্টর জমির ফসল শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে কিছু বেঁচে যাবে আবার কিছু ক্ষতির মুখে পড়বে। তিনি জানান, ৬৫ হেক্টর জমির সবজি, ১৪০ হেক্টর জমির ভুট্টা, ১২০ হেক্টর জমির তীল, ৪২ হেক্টর জমির পাট, ৫ হেক্টর জমির বাঙ্গি, দেড় হেক্টর জমির মরিচ ও ২৭৪ হেক্টর জমির বোরো ধান আক্রান্ত হয়েছে।’ এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বাঙ্গির ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকের বেগ পেতে হবে। এ ছাড়া অন্যান্য ফসলের ক্ষতিও ব্যাপক। তবে আর্থিক পরিমাণ নিরুপণ করা এখনি সম্ভব নয়।’

ত্রিশালে শিলাবৃষ্টিতে ধানের ক্ষতি

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া অনেক টিনের ঘরের (উপরের অংশ) চাল ছিদ্র হয়ে গেছে। উপজেলা রামপুর ইউনিয়নের কাকচর এলাকার ব্যবসায়ী আবু ইয়াহিয়া বলেন, ‘গতকাল রাতে শিলা বৃষ্টিতে আমাদের ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমার জন্মের পর কখনো এমন শিলা বৃষ্টি দেখিনি।’ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শহিদউল্লাহ বলেন, ‘ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদ সদস্য এবিএম আনিছুজ্জামান শিলা বৃষ্টির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জেনে তাকে অবহিত করতে বলেছেন। আমরা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের তালিকা দেওয়ার জন্য অবগত করেছি।’


উপজেলা নির্বাচন: প্রথম ধাপের ভোট কাল, কেন্দ্রে ব্যালট যাবে সকালে

আপডেটেড ৭ মে, ২০২৪ ১০:২৭
নিজস্ব প্রতিনিধি

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপের ১৪১ উপজেলায় প্রার্থীদের নানা প্রতিশ্রুতি আর অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে জমজমাট প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে গতকাল সোমবার মধ্যরাতে; ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল বুধবার।

এতে কেন্দ্র রয়েছে ১১ হাজার ৫৫৬টি। দুর্গম এলাকার ৪২৪ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের আগের দিন ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। আর ১১ হাজার ১৩২ কেন্দ্রে ব্যালট যাবে ভোটের দিন সকালে।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, যাতায়াতের অসুবিধার জন্য দুর্গম এলাকায় ভোটের আগের দিন ব্যালট পাঠানোর সিদ্ধান্ত দিয়েছে ইসি। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, ১০টি জেলার ২৪টি উপজেলার দুর্গম কেন্দ্রে ব্যালট আগের দিন পাঠানো হবে। উপজেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে কুড়িগ্রামের চিলমারী, রৌমারী, চর রাজীবপুর; মৌলভীবাজারের বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া; হবিগঞ্জের বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, সরাইল, সন্দ্বীপ; রাঙামাটির রাঙামাটি সদর, কাউখালী, জুড়াছড়ি, বরকল; বান্দরবানের বান্দরবান সদর, আলীকদম; খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি, মানিকছড়ি, মাটিরাঙ্গা, রামগড়; সুনামগঞ্জের দিরাই, শাল্লা ও লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা। এসব উপজেলার ৪২৪টি কেন্দ্র দুর্গম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, চার ধাপে অনুষ্ঠেয় উপজেলা নির্বাচনের সব ধাপেই দুর্গম কেন্দ্রে আগের দিন ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। অন্যগুলো যাবে ভোটের দিন সকালে। মাঠ প্রশাসন থেকে দুর্গম এলাকা চিহ্নিত করে প্রতিবেদন পাঠালে নির্বাচন কমিশন সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়। কয়েক বছর ধরে ভোটে কারচুপি রোধ করতে আগের রাতে ব্যালট না পাঠিয়ে সকালে পাঠায় কমিশন।

দেশের ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে চার ধাপে ৪৭৬টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন। ১৯টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের সময় হয়নি, পরবর্তীতে সেসব পরিষদে ভোট নেওয়া হবে।

তফসিল অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৫ জুন ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১ ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ হবে।

বুধবার দেশের ১৪১ উপজেলায় ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।

সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামানের সই করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের চাহিদা অনুযায়ী ১৪১ উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে ভোট গ্রহণের দিন আগামীকাল বুধবার সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো।

প্রথম ধাপের ভোট উপলক্ষে তিন দিনের জন্য মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইসি।

ইসির নির্দেশনা পেয়ে রোববার (৫ মে) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সহকারী সচিব মো. জসিম উদ্দিনের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামীকাল ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর ৩২ ধারা অনুযায়ী, নির্বাচন উপলক্ষে ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিবসের পূর্ববর্তী মধ্যরাত অর্থাৎ ৭ মে মধ্যরাত ১২টা থেকে ৮ মে মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত ট্যাক্সিক্যাব, পিকআপ, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। এদিকে ৬ মে মধ্যরাত ১২টা থেকে ৯ মে মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত মোটর সাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, যানজট নিরসন ইত্যাদি প্রয়োজনে বাস্তবতার নিরিখে ও স্থানীয় বিবেচনায় উল্লিখিত যানবাহন ছাড়াও উক্তরূপে যেকোনো যানবাহন চলাচলের ওপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে। এ নিষেধাজ্ঞা রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী/তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি/বিদেশি পর্যবেক্ষকদের (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য।

এ ছাড়া, নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি/বিদেশি সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং কতিপয় জরুরি কাজ যেমন-অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য উল্লিখিত যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে উক্ত নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।


টেকনাফের ওপারে আবারও গোলার বিকট শব্দ

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

বাংলাদেশের টেকনাফ সীমান্তের অদূরে আবারও মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ টিকিয়ে রাখতে দুই পক্ষই বোমা ও মর্টার শেল হামলা চালাচ্ছে।

আজ সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ও সাবরাং সীমান্তসহ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় রাখাইন থেকে বোমা বিস্ফোরণ ও মর্টার শেলের বিকট শব্দ শোনা গেছে। গোলার শব্দে স্থানীয় লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে।

টেকনাফ পৌরসভার বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে গোলার শব্দে এপার কেঁপে উঠছে। বেশ কিছু দিন গোলার শব্দ শোনা না গেলেও ভোর থেকে বিকট গোলার শব্দ পাচ্ছি। মনে হচ্ছে, বোমা এসে এপারে পড়ছে। সকাল থেকে ভারী গোলার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফের পৌরভার কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, রাখাইনে চলমান যুদ্ধে এ পারে অনেক ভারী গোলার বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। এ ধরনের গোলার আওয়াজ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।

হ্নীলা সীমান্তের আব্দুর গফুর জানান, সকালে ওপার থেকে আসা ভয়ঙ্কর কয়েকটি শব্দ শুনেছি। মনে হয়েছে বোমা বিস্ফোরণের শব্দ। দিনের বিভিন্ন সময় বড় ধরনের কয়েকটি বিকট শব্দ শোনা গেছে। টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গোলাগুলির শব্দ এপারে শোনা যাচ্ছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। নাফ নদীর সীমান্তে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। হ্নীলা সীমান্তের বাসিন্দা হুমায়ুন রশিদ বলেন, সকাল থেকে সীমান্তে ভারী গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। অন্যদিনের তুলনায় গোলার শব্দ বিকট।

এদিকে আরকান আর্মি মংডু টাউনশিপ দখল করে নিয়েছে বলে অসমর্থিত তথ্য পাওয়া গেছে। দেশটির সরকারি সংস্থা বিজিপির সদস্যদের কেউ কেউ বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিচ্ছে। গত দুই দিনে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের ১০০ জনের মতো বিজিপি সদস্য এ পারে আত্মসমর্পণ করেছে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের কাছে।

এ বিষয়ে কোস্ট গার্ড চট্টগ্রাম পূর্ব জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তাহসিন রহমান বলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ৮৮ জন বিজিপি সদস্যকে আমরা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবির) কাছে হস্তান্তর করেছি। সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি। স্থানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত দুই দিনে নাফ নদী পেরিয়ে টেকনাফের সাবরাং সীমান্তে নৌকায় করে ১০০ বিজিপি সদস্য অস্ত্রসহ টেকনাফ কোস্ট গার্ড সদস্যদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাদের নিরস্ত্র করে হেফাজতে নেওয়া হয়। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদী এলাকা এবং সীমান্ত সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সদস্যরা টহল বাড়িয়েছে।

এ বিষয়ে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (বিজিবি-২) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, রাখাইনের সংঘাত মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে সংঘাতের জের ধরে যাতে রোহিঙ্গা বা অন্য কোনো গোষ্ঠী বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সেজন্য নাফ নদী ও সীমান্তে অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।


সম্পদ অর্জনে এমপিদের চেয়ে এগিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানরা

ভোটের প্রথম ধাপে কোটিপতি প্রার্থী ১১৭ জন: টিআইবি
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্পদ বৃদ্ধিতে উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা পেছনে ফেলেছেন সংসদ সদস্যদের। পাঁচ বছরে একজন উপজেলা চেয়ারম্যানের সম্পদ বৃদ্ধির হার ৪ হাজার ২০০ শতাংশের বেশি। এর বিপরীতে সংসদ সদস্যদের সম্পদ বৃদ্ধির হার ছিল সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৬৫ শতাংশ। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া ১৪৪ উপজেলার প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

এতে ১৫২টি উপজেলার তিনটি নির্বাচনের প্রায় ৪ হাজার ৮০০টি হলফনামায় দেওয়া আট ধরনের তথ্যের বহুমাত্রিক ও তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

সংস্থাটির পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এতে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ১১৭ জন কোটিপতি। যেখানে ৫৬০ চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ৯৪ জন কোটিপতি। এ ছাড়া ৬১১ ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে ১৭ জন ও ৪৩৫ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে ৬ জন কোটিপতি প্রার্থী এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত নারী চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়াদের ৫৬ শতাংশই পেশায় ব্যবসায়ী। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী, ৬৯ শতাংশ ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এবং ২৪ শতাংশ সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী।

২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে একই উপজেলায় এ হার ছিল ৫৩ শতাংশ। আর ২০১৪ সালে ছিল ৪৮ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ৯৪ জন চেয়ারম্যান, ১৭ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ৬ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ মোট ১১৭ জন প্রার্থীর প্রত্যেকের এক কোটি টাকা বা তার বেশি মূল্যের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। এই ধরনের প্রার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে বলেও জানায় টিআইবি।

২০১৯ সালের নির্বাচনে মোট ৪৫ জন প্রার্থীর এক কোটি টাকা বা তার বেশি মূল্যের অস্থাবর সম্পদ ছিল। ২০১৪ সালে ছিল ৩৪ জনের।

উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির বিষয়টি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন, এনবিআর ও দুদকের বলে মনে করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. মো. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি প্রথম ধাপে প্রথম পর্বে মন্ত্রী-এমপিদের ১৩ জন স্বজন নির্বাচন করছেন। প্রথম ধাপেই চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, উপজেলা নির্বাচন দলীয় হলেও নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলগতভাবে কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি। বিএনপি এ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও তা অমান্য করে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করেছে দলটি।


banner close