সোমবার, ১৩ মে ২০২৪

চুরি ঠেকাতে গিয়ে প্রাণ গেল বাগান মালিকের

লাশ। প্রতীকী ছবি
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশিত
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২২ আগস্ট, ২০২২ ০৯:০৫

রাতে নিজের মাল্টা বাগান পাহারা দিচ্ছেলেন মনু মিয়া (৬৫)। হঠাৎ টের পান, কেউ একজন বাগানে ঢুকেছে। চোর সন্দেহে এগিয়ে যান তিনি। এ সময় মনু মিয়াকে মারধর করে পালিয়ে যান সেই চোর। গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় তার।

গতকাল রোববার রাত ১১টার দিকে ঝিনাদহের সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়নের বাটিকাডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. সোহেল মিয়া জানান, রাতে বাগান পাহারা দিচ্ছিলেন মনু মিয়া। ওই সময় বাগানে চোর প্রবেশ করলে তিনি বিষয়টি টের পেয়ে যান। চোরকে ঠেকাতে গেলে চোর ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করেন মনু মিয়াকে। পরে তার চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন এগিয়ে এলে চোর পালিয়ে যায়।

ওসি আরও জানান, মনু মিয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।


ঝিনাইদহ-১ আসনে উপনির্বাচন ৫ জুন

নির্বাচন কমিশন ভবন। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১৩ মে, ২০২৪ ১৬:৪১
বাসস

ঝিনাইদহ-১ শূন্য আসনের উপনির্বাচন আগামী ৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। এই আসনে নির্বাচনের সময়সূচি পুনর্নিধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে নতুন সময়সূচি নির্ধারণের বিষয়টি জানানো হয়।

এর আগে গত ৮ মে ঝিনাইদহ-১ (শৈলকূপা) আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। ফলে ওই আসনে উপনির্বাচনে বাধা কেটে যায়।

গত ১৬ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। পরে এই আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

তবে গত ৬ মে আসনটির স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নজরুল ইসলামের এক আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ঝিনাইদহ-১ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করে আদেশ দেন বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ। ওইদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। পরে তিনি সাংবাদিকদের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ২১ দিনের জন্য এ নির্বাচন স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

সবশেষ গত ৮ মে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেন। এতে আসনটিতে নির্বাচনের বাধা কেটে যায়।

বিষয়:

জলঢাকায় ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় ২০০ একর জমির ধান নষ্ট

দিশাহারা কৃষক
ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৩ মে, ২০২৪ ১৪:০৭
রবিউল ইসলাম রাজ, জলঢাকা (নীলফামারী)

ছবি: দৈনিক বাংলা




নীলফামারীর জলঢাকায় এ কে ব্রিকস-২ ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় প্রায় ২০০ একর জমির ধান নষ্ট হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্বপ্নের সোনালি ধান হারিয়ে দিশাহারা হাজারও কৃষক। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের পূর্ব খুটামারা এলাকায়। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর গণস্বাক্ষর সংবলিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। এর অনুলিপি উপজেলা কৃষি অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

এ ছাড়া এ ঘটনায় গত ৭ মে (বুধবার) দুপুরে ইটভাটার প্রবেশ ফলকের সামনে মানববন্ধন করেছে শত শত নারী ও পুরুষ। মানববন্ধনে বক্তারা ইটভাটা বন্ধের পাশাপাশি কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে তারা সড়ক অবরোধের হুমকি দেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পূর্ব খুটামারা এলাকায় অবস্থিত এ কে ব্রিকস-২ কোম্পানি ৭ বছর আগে স্থানীয় কিছু কৃষকদের লোভ দেখিয়ে কিছু জমি ১০ বছরের জন্য চুক্তি নিয়ে একটি ইটভাটা স্থাপন করেন। এরপর প্রতিবছর পর্যায়ক্রমে আশপাশের জমির মালিকদের চাপে ফেলে সুকৌশলে আরও জমি নেয়। এভাবে কোম্পানিটি আবাদি ৩০ বিঘা জমি চুক্তি নিয়েছে। আর এতে সহযোগিতা করেন স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। এই ভাটা স্থাপনের পর থেকে প্রতিবছর ভাটার কালো ধোঁয়ায় কৃষকের ফসল নষ্ট হচ্ছে। এ বছর নষ্ট হয়েছে ধান, ভুট্টাখেতসহ আম ও লিচু গাছের।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ মে রোববার দিবাগত রাতে ৬ মাসের জমে থাকা ইটভাটার কালো ধোঁয়ার গ্যাস ছেড়ে দিলে পরের দিন সোমবার সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ধান গাছগুলো ঝলসে যেতে শুধু করে। গত দুই-তিন দিনে ইটভাটার উত্তর পশ্চিম দিকের প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে আনুমানিক ২০০ একর জমির আবাদি ধানের গাছ ঝলসে গেছে। ধান গাছগুলো লালচে আকার ধারণ করেছে। এতে ধানের দানাগুলো চিটা হয়ে গেছে।

এদিকে এ কে ব্রিকস-২-এর ইটভাটার বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই বলে স্বীকার করেছেন এ কে আনোয়ার ব্রিকস-২-এর ম্যানেজার তাজুল ইসলাম। ভাটার কালো ধোঁয়ায় ফসল নষ্টের কথাও স্বীকার করেন তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন আহমেদ বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি শোনার পর তাৎক্ষণিক সরেজমিনে দেখেছি। ধারণা করা হচ্ছে ভাটার কালো ধোঁয়ায় এমনটি হতে পারে। তবে আমরা কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করব এবং ধানখেত পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা থাকবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জি আর সারোয়ার বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত টিম গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


কৃষক ও ধান ব্যবসায়ীদের ৩৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৩ মে, ২০২৪ ১২:২৫
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর মহাদেবপুরে ওসমান অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রা.) লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওসমান গনির বিরুদ্ধে ধান ব্যবসায়ী ও কৃষকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এদিকে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা টাকা না পেয়ে হণ্যে হয়ে ঘুরছেন। বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগী পাওনাদাররা রোববার মহাদেবপুর উপজেলার মডেল স্কুল মোড়ে ‘ভুক্তভোগী সব পাওনাদার গং’ এর ব্যানারে মানববন্ধন করছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।

মানববন্ধনে আড়ৎদার আবু আহসান হাবিরের সভাপতিত্বে আড়ৎদার সামিউল আলম, ইমতিয়াজ হোসেন সরদার, মাসুদ মোল্লাসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ও ভুক্তভোগী কৃষকরা বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধনে প্রায় দুই শতাধিক ব্যবসায়ী ও কৃষক উপস্থিত ছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার মহাদেবপুর উপজেলার নওগাঁ-মহাদেবপুর সড়কের আখেড়া এলাকায় ওসমান গনি প্রায় ৪০ বছর আগে চালকল গড়ে তুলে ব্যবসা শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে চালকলটি অটোমেটিকে রূপান্তর করে ওসমান অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রা.) লিমিটেড নাম দেন। যেখানে কয়েক একর জায়গার ওপর পাঁচটি ইউনিট গড়ে তুলেন, যা টাকার অঙ্কে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ।

ধানের আড়ৎদারদের কাছ থেকে নগদ ও বাকিতে ধান কিনে চালকল পরিচালনা করা হতো। এতে ব্যবসার সুবাদে আড়ৎদারদের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে। এভাবে জেলা ও জেলার বাইরের প্রায় ২৬০ জন ধান ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নগদ ও বাকিতে ধান কিনতেন তিনি। এক পর্যায়ে প্রায় ৩৫ কোটি টাকার ধান ব্যবসায়ীদের কাছে বকেয়া রাখেন। গত ৩-৪ মাস ধরে ধান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ওসমানের দূরত্ব বাড়তে থাকে। তিনি ওই এলাকা ছেলে পরিবারসহ ঢাকায় অবস্থান করতে থাকেন। গোপনে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি একটি কোম্পানির কাছে ভাড়া দিয়ে দেন। এরপর ধান ব্যবসায়ীরা বুঝতে পারেন ওসমান লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছেন। গত দেড় মাস ধরে ওই প্রতিষ্ঠানটি অন্য একটি কোম্পানির দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। কৌশল হিসেবে ওসমান গনি ব্যবসায় লোকসান দেখিয়ে নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছেন।

উপজেলার মাতাজি হাট এলাকার মোল্লা ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী সামিউল আলম বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে ওসমান গনিকে ধান দিয়ে আসছি। প্রায় ১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা পাওনা রয়েছি। পাওনা টাকা চাইলেই বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করেন। ঢাকায় বাড়ি-গাড়ি করে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে আলিসান জীবনযাপন করছেন। আর আমরা পথে পথে ঘুরছি।’

জেলার ধামইরহাট উপজেলার মেসার্স বেলাল ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী আবু আহসান বলেন, ‘ওসমান গনির সঙ্গে প্রায় ১৫ বছর ধরে ব্যবসা করে আসছি। আমন মৌসুম থেকে আর লেনদেন করা হয়নি। কিন্তু সপ্তাহে ৫০ হাজার করে টাকা দিতেন। সবশেষ ফেরুয়ারিতে ১ লাখ টাকা দিয়েছেন। লেনদেনের সুবাদে প্রায় ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বকেয়া পড়ে যায়। পাওনা টাকা দিচ্ছি, দেব বলে সময়ক্ষেপণ করছিলেন। এখন লাপাত্তা হয়ে গেছেন। কৃষকের কাছ থেকে ধান নিয়েছিলাম। তারা এখন টাকার জন্য চাপ দিচ্ছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহাদেবপুর উপজেলার ওসমান অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রা.) লিমিটেড এর চেয়ারম্যান ওসমান গনি বলেন, ‘প্রায় ৩৮ বছর ধরে ব্যবসা করছি। ব্যবসার সুবাদে অনেক টাকা লোকসান হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের কাছেও আমার দেনা রয়েছে। আমার কাছে নগদ টাকা নাই। পাওনাদারদের বলেছি যে সম্পদ আছে তা বিক্রি করে দেনা পরিশোধ করা হবে। আমি গত ৩১ জানুয়ারি নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করার জন্য আদালতে একটি আবেদন করেছি। তবে আমি আমার প্রতিষ্ঠানটি ভাড়া দিয়েছি।’


চার মাসের কাজ শেষ হয়নি ১৫ মাসেও, ফের বন্যার আশঙ্কা

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৩ মে, ২০২৪ ১১:১৬
দেবাশীষ দেবু, সিলেট

২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় পুরো সিলেট তলিয়ে যাওয়ার পর দাবি ওঠে সুরমা নদী খননের। অব্যাহত দাবির মুখে ২০২৩ সালে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বল্প পরিসরে সুরমা নদীর খননকাজ শুরু হয়। ওই বছরেরই জুনে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে চার মাসের সেই কাজ শেষ হয়নি ১৫ মাসেও।

এ অবস্থায় আরেকটি বর্ষা মৌসুম সামনে। এবার বর্ষায় সিলেট ও সিলেটের উজানে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমনটি হলে সিলেট আবারও বন্যায় তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

আর পরিবেশ কর্মীরা বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গাফিলতির কারণে নদী খননের পুরো টাকাই বরবাদ হচ্ছে। যতটুকু খনন হয়েছে, তারও কোনো সুফল পাবে না সিলেটবাসী। কারণ আসন্ন বর্ষা মৌসুমেই আবার পানির সঙ্গে পলি এসে জমবে নদীতে। ফলে আবার শুরু থেকে খননকাজ করতে হবে।

তবে পাউবো কর্মকর্তারা বলছেন, নদীতে প্লাস্টিক, পলিথিনসহ আবর্জনার স্তূপ জমে থাকায় বারবার খননযন্ত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে খননকাজে দেরি হচ্ছে। আগামী জুনে প্রকল্পের পুরো কাজ সম্পন্নের আশা তাদের।

২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় তলিয়ে যায় সিলেট নগরসহ জেলার প্রায় ৭০ শতাংশ। দীর্ঘমেয়াদি এই বন্যায় মাসখানেক দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে। পলি জমে সুরমা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই সিলেটে বন্যা হয়ে যাচ্ছে বলে সে সময় জানান বিশেষজ্ঞরা। এরপর পুরো সুরমা নদী খননের জোরালো দাবি ওঠে। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সিলেট নগরীর কুশিঘাট থেকে বিশ্বনাথের দশগ্রাম পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটারের খননকাজ শুরু হয়। এই ১৫ কিলোমিটারের খননকাজ ১৫ মাসেও শেষ হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, আগামী জুন পর্যন্ত তারা খননকাজ চালিয়ে যাবে। এর মধ্যে ১৫ কিলোমিটার খনন সম্পন্ন না হলেও যতটুকু কাজ হবে, তা নিয়েই প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাবে। এর মধ্যে অন্তত ৮০ ভাগ কাজ শেষ করতে চায় পাউবো।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দাবি, চলতি মৌসুমে দ্রুত খননকাজ এগিয়ে চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কনফিডেন্স গ্রুপের সিনিয়র ম্যানেজার আজিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে টুকেরবাজার ও জাঙ্গাইল এলাকায় খননকাজ চলছে।

এ বিষয়ে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ‘চলমান প্রকল্পটি আগামী জুন পর্যন্ত চালানো যাবে। এর মধ্যে শতভাগ খননকাজ শেষ না হলেও অন্তত ৮০ শতাংশ শেষ হবে।’

তিনি বলেন, সুরমার সিলেট অংশের কুশিঘাট এলাকা নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হচ্ছে, সেটি প্রকল্পের আওতাধীন। দুই-এক মাসের মধ্যে এই অংশে খননকাজ শুরু হবে। এখানে একসঙ্গে সব ড্রেজার চালাতে হবে। এ জন্য সবশেষে কুশিঘাট এলাকা খনন শুরু হবে। প্রকল্পের মেয়াদ নতুন করে আর বাড়বে না।

জানা যায়, গত ১১ বছরে সিলেটের সুরমা নদী খননে চারটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনাগুলো (ডিপিপি) মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর তিনবার সমীক্ষাও চালানো হয়। কিন্তু ওই প্রকল্পগুলোর কোনোটাই আলোর মুখ দেখেনি। এরপর ২০২৩ সালে ছোট পরিসরে যে একটি প্রকল্প চলছে তাও নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি।

সিলেট পরিবেশ রক্ষা ট্রাস্টের আহ্বায়ক ডা. মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী বলেন, সিলেটের মানুষ আশা করেছিল সুরমা নদী খননের মাধ্যমে নাব্য ফেরানো হবে। কিন্তু নদী খননের কাজ লক্ষ্যমাত্রা থেকে বহু দূরে। নদী খনন নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বের নজরদারি না থাকায় প্রকল্পের ৫০ কোটি টাকা বরবাদ হবে বলে মনে হচ্ছে। এতে সিলেটের মানুষ কোনো সুফল পাবে না। উলটো এবারো বন্যা দেখা দিতে পারে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম বলেন, গত বছরের ২১ জানুয়ারি সুরমা নদীর খননকাজের উদ্বোধন করেছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। সে সময় তিনি আসছে বর্ষার আগে খননকাজ শেষ হওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু বর্ষা শেষ হয়ে আরেক বর্ষা আসছে। অথচ কাজের অগ্রগতি খুব কমই হয়েছে। ধীরগতিতে এ খননকাজ চলছে।

তিনি বলেন, কেবল ১৫ কিলোমিটার নয়। পুরো সুরমা নদী খনন করতে হবে। না হলে সিলেটে বন্যা জলাবদ্ধতা কমবে না। কারণ পলি জমে পুরো নদী ভরাট হয়ে গেছে। উৎসমুখসহ নদীজুড়ে অসংখ্য চর পড়েছে। ফলে বর্ষায় বৃষ্টির পানি নদী দিয়ে নামতে পারে না। শহরে ঢুকে পড়ে।

খননকাজ যথাসময়ে শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের বর্তমান এমপি ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘২০২২ সালের বন্যার পর দুটি প্রধান দাবি ছিল সুরমা খনন ও শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ। সেসময় প্রধানমন্ত্রী সিলেট এলে তাকেও এসব দাবি জানানো হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনোটিরই কাজ সম্পন্ন হয়নি, যা খুবই হতাশাজনক।’


দুই বছরেও চালু হয়নি মেহেরপুরের ওয়েদার ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেম

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৩ মে, ২০২৪ ০৩:৪৮
সোহেল রানা বাবু, মেহেরপুর

পাইলট প্রকল্প হিসেবে দুই বছর আগে মেহেরপুরে ওয়েদার ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেম স্থাপন করা হলেও জনবল সংকটসহ নানা সমস্যার অজুহাতে আজ অবধি যন্ত্রটি চালু হয়নি। ফলে শীত কিংবা গরম সব ঋতুতেই এর সেবা থেকে বঞ্চিত থাকছে জেলার মানুষ।

ওয়েদার ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেমটি এখন শুধু খাতা কলমেই বিদ‍্যমান। দীর্ঘসময় পেরিয়ে গেলেও এখান থেকে আবহাওয়ার কোনো তথ্য-উপাত্ত না পেয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন অনেকে। সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছেন কষিনির্ভর জেলার লাখো কৃষক।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও বতর্মান জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ওয়েদার ডিসিশন সিস্টেমের কন্ট্রোল রুম উদ্বোধন করেন।

সে সময়ে জেলা প্রশাসক এ সিস্টেমটি সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘অত্যাধুনিক এ সিস্টেমটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকলেও বাংলাদেশের মধ্যে মেহেরপুরই হচ্ছে প্রথম জেলা, যেখানে এ সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। যন্ত্রটি চালু হলে জেলার মানুষ প্রাত্যহিক জেলার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ডসহ জেলায় বজ্রপাত, ঝড়, ভূমিকম্প, ভূগর্ভস্থ পানি দূষণসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাসের তথ‍্যসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা পাবেন। ফলে কমবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।

তিনি আরও বলেছিলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে লোকবল না দেওয়া পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের দুজন লোকবল দিয়ে সিস্টেমটির কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। তবে এটি এখন পুরোপুরি অকেজো হয়ে পড়ে আছে।

কৃষক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘এই সামনে ঝড় বৃষ্টির সময় আসছে। মাঠে উঠতি ফসল থাকলে আমরা বাড়িতে খুব দুশ্চিন্তায় থাকি। না জানি কখন ঝড় বৃষ্টি হয়। আমার এমনো হয়েছে ধান কাটতে দুইদিন দেরি হওয়ায় সব ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। অথচ একদিন আগে জানতে পারলে অনেক ফসলই রক্ষা করা যেতো। এমনকি আমাদের ইউনিয়ন পরিষদে থাকা আবহাওয়া সাপোর্ট সিস্টেম থেকেও আমরা কোন সেবা পাইনি।’

মাছ চাষি কালু বাবু বলেন, ‘দুই বছর আগে আমার পুকুরে বর্ষা মৌসুমে মাছ ভরা ছিলো। হঠাৎ মধ‍্যরাতে ব‍্যাপক ঢল (বৃষ্টি) শুরু হয়ে পুকুর ভেসে আমার প্রায় দশ লক্ষ টাকার মাছ বেরিয়ে গেছে। অথচ আমি যদি আগে থেকে বৃষ্টির তথ‍্য পেতাম, তাহলে পুকুর পাড়ে নেট দিয়ে মাছগুলো রক্ষা করতে পারতাম।’

বামন্দী আনন্দ ডিজিটাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘মাস চারেক আগেও প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। অথচ আমরা জেলা থেকে আবহাওয়ার সঠিক তাপমাত্রার তথ‍্য না পাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে বিপাকে পড়েছিলাম।’

বামন্দী গ্রামের ব্লক কৃষি সুপার ভাইজার জাফর কুদ্দুস বলেন, ‘আমরা কৃষকদের নিয়ে মাঠে কাজ করি। তাদের পাশে থেকে সবসময় কৃষির উন্নয়নের জন‍্য পরামর্শ দিয়ে থাকি। অথচ তাদের আবহাওয়ার পূর্বাভাস সমন্ধে তথ‍্য দিতে গেলে মোবাইল অ্যাপস থেকে তথ‍্য দিয়ে থাকি, যা অধিকাংশ সময় মেলেনা। এতে অনেক সময় ঝড় বৃষ্টির কারণে মাঠে থাকা ফসলের ক্ষতিসাধন হয়। অগ্রীম তথ‍্য পেলে কৃষকের ফসলের ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কমানো সম্ভব হয়।’

গণমাধ্যমকর্মী সুমন বলেন, আমাদের আবহাওয়ার তথ‍্য জানতে হলে এখনো পার্শ্ববর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে সংগ্রহ করতে হয়। সেজন‍্য যতদ্রুত সময়ে সম্ভব আমাদের জেলায় অবস্থিত ওয়েদার ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেমটি চালু করা প্রয়োজন।

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক শামীম হাসান বলেন, ‘ওয়েদার ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেমটি চালু করতে আমরা লোকবল চেয়ে একাধিকবার চিঠি দিয়েছি। কিন্তু এখনো কোনো লোকবল না পাওয়ায় সিস্টেমটির কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।’


ফতুল্লায় ফ্লাইওভারের পাইলিংয়ে গ্যাস পাইপ ফেটে অগ্নিকাণ্ড

নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ সড়কে ফতুল্লার শাসনগাঁও এলাকায় রোববার তিতাসের গ্যাসরে পাইপ ফেটে আগুন লাগে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১২ মে, ২০২৪ ১৮:৩৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ফ্লাইওভার প্রকল্পের নির্মাণ কাজের জন্য পাইলিং করার সময় তিতাস গ্যাসের মূল সংযোগের পাইপ ফেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে রাস্তার পাশের একটি ভবনের প্লাস্টিকের সুয়ারেজের বেশ কয়েকটি লাইন ও বিদ্যুতের তার পুড়ে যাওয়া সহ ৮ থেকে ৯টি টিনসেড দোকান পুড়ে যাওয়াতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আজ রোববার সকালে নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ সড়কে ফতুল্লার শাসনগাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ সড়কে ২০২৩ সাল থেকে দ্বিতল ফ্লাইওভার প্রকল্পের নির্মাণ কাজ চলছে। রোববার সকাল ১০টার দিকে শাসনগাঁও এলাকায় রাস্তা খুঁড়ে পাইলিং নির্মাণের কাজ করার সময় মাটির নিচে তিতাস গ্যাসের মূল বিতরণ সংযোগের বারো ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ ফেটে সেখানে আগুন ধরে যায়।

তারা আরও জানান, গ্যাসের অতিরিক্ত চাপের কারণে আগুন প্রায় ছয় তলা ভবন সমান উঁচুতে উঠতে দেখা গেছে। এ সময় আতঙ্কে আশপাশের লোকজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তার বের হয়ে এসে ছোটাছুটি শুরু করেন। তবে আগুনে কেউ হতাহত হননি বলে জানা গেছে।

আগুন লাগার খবর পেয়ে তিতাস কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ওই এলাকার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিলে আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ফতুল্লা, পাগলা ও শহরের মন্ডলপাড়া স্টেশনের ছয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে বেলা ১১টার দিকে আগুন পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রণে আনে।

তিতাসের নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফখর উদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আগুনের খবর পাওয়ার পর আমাদের তিনটি স্টেশন থেকে মোট ছয়টি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। তবে এর আগে তিতাস কর্তৃপক্ষ ওই পাইপ লাইনের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল।’

তবে এলাকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়িদের অভিযোগ, কোন ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা না রেখে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ফ্লাইওভার প্রকল্পের নির্মাণ কাজ করায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। শিগগিরই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ করার দাবি জানান তারা।


হাসপাতালের লিফটে ‘৪৫ মিনিট’ আটকা পড়ে রোগীর মৃত্যু

গাজীপুরে অবস্থিত শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১২ মে, ২০২৪ ১৬:৩৮
গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লিফটে আটকা পড়ে মমতাজ বেগম (৫০) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে হাসপাতালের ৩ নম্বর লিফটে এ ঘটনা ঘটে।

মৃত মমতাজ বেগম গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের বাড়িগাঁও গ্রামের শারফুদ্দিন স্ত্রী।

মৃতের ভাগ্নে খন্দকার শাহদত হোসেন সেলিম জানান, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগ নিয়ে হাসপাতালের ১১ তলার মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয় মমতাজ বেগমকে। এরপর চিকিৎসকরা তাকে একই ভবনের চতুর্থ তলার কার্ডিওলজি বিভাগে নিয়ে যেতে বলেন। রোগীর স্বজনরা তাকে দ্রুত নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রলিতে উঠিয়ে লিফটে তোলেন। কিন্তু লিফট হাসপাতালের নবম ও দশম তলার মাঝমাঝি এসে থেমে যায়। তখন লিফটের অপারেটরদের রোগীর স্বজনেরা বার বার ফোন করলেও তারা কোনো যোগাযোগ করেননি। একপর্যায়ে আটকে থাকার ৪৫ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও লিফট অপারেটররা দরজা ফাঁকা করে কয়েকজনকে বের করে আনেন। কিন্তু ততক্ষণে লিফটের ভেতরই মমতাজ বেগমের মৃত্যু হয়।

লিফটে আটকে পড়ে রোগীর মৃত্যুর খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ‘ঘটনার তদন্তে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. রুবিনা ইয়াসমিনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কারও ঘাফিলতি থাকলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এর আগে ৪ মে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলার কারণে হাসপাতালের ১২ তলার ভেতরের দেওয়াল ও মেঝের মধ্যে থাকা ফাঁকা স্থান দিয়ে এক রোগী ১০ তলা থেকে পড়ে মৃত্যুর বরণ করেন। ওই ঘটনার সপ্তাহ না ঘুরতেই আবার আরেকজন রোগী একই হাসপাতালে মারা গেলেন।


কালিয়াকৈরে লড়াই হবে গুরু-শিষ্যের 

কামাল উদ্দিন সিকদার (আনারস প্রতীক), সেলিম আজাদ (মোটরসাইকেল প্রতীক)। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১২ মে, ২০২৪ ০৮:৩৮
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে জমে উঠেছে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। উপজেলা চেয়ারম্যানের চেয়ারটি দখলে নিতে মরিয়া গুরু ও তার শিষ্য। চেয়ার পেয়ে গুরুর জনবিমুখ ও চেয়ার পেয়ে শিষ্যের জনমুখো হওয়া নিয়ে হিসাব কষছেন জনগণ। তবে জনমুখো ও কর্মফলের কারণে তাদের এ লড়াইয়ে জনমুখে ভাসছে শিষ্যের নাম।

এলাকাবাসী, নেতা-কর্মী ও উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২১ মে কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। দ্বিতীয় ধাপের এ নির্বাচন সামনে রেখে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত। নেতা-কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নিয়ে। এখানে চেয়ারম্যান পদে কাগজে-কলমে তিন প্রার্থী। তাদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী (কাপ-পিরিচ) মুরাদ কবীর শেষ মুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তাই এ পদে লড়ছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সিকদারের (আনারস) সঙ্গে তারই এক সময়ের ঘনিষ্ঠ সহচর, বর্তমান উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান ও গাজীপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম আজাদ (মোটরসাইকেল)। নেতা-কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ ভোটাররা এই দুই নেতার লড়াইকে গুরু-শিষ্যের লড়াই হিসেবে দেখছেন। তাদের ভাষ্যমতে, কামাল উদ্দিন সিকদার দুইবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু তিনি নির্বাচনের পর উন্নয়নে ভূমিকা রাখলেও ধীরে ধীরে জনবিমুখ হয়ে পড়েছেন। নির্বাচনের পর তিনি জনগণের কাছে না যাওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে বলে মনে করছেন ভোটাররা।

পক্ষান্তরে, তার শিষ্য সেলিম আজাদ বিপুল ভোটে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েও থেমে থাকেননি। প্রত্যেকটা গ্রাম পাড়া-মহল্লায় জনগণের দ্বারে দ্বারে গিয়েছেন এবং এখনো যাচ্ছেন। তাদের সমস্যা ও সুখ-দুঃখে পাশে দাঁড়ান সেলিম আজাদ। সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় তিনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা রেখেছেন। ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে প্রায় তিন হাজারের বেশি ওয়াজ মাহফিলে যোগদান করেন। তার অনুদানের ছোঁয়া লেগেছে বিভিন্ন মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মন্দিরসহ প্রতিষ্ঠানগুলোতে। এমন কোনো গ্রাম, পাড়া-মহল্লা নেই যেখানে চেয়ারম্যান প্রার্থী সেলিম আজাদের অনুদান যায়নি। এমন জনমুখো ও কর্মফলের কারণে গুরু-শিষ্যের এ লড়াইয়ে জনমুখে ভাসছে শিষ্যের নাম। তাদের ভাষ্য, যাকে আমরা কাছে পাই, তাকেই আমরা নির্বাচিত করব। জনগণ মোটরসাইকেল মার্কায় ভোট দিবে, এতে সেলিম আজাদের ভোটের অভাব হবে না।

তবে সাধারণ ভোটারদের ভাষ্য, বর্তমান চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন সিকদার উন্নয়নমূলক কাজ করলেও এলাকায় যোগাযোগ কম। তবে সেলিম আজাদও উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন। আবার বারবার এলাকাবাসীর কাছে গিয়েছেন, তাদের সমস্যার কথা শুনেছেন ও অনুদান দিয়েছেন।

মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী সেলিম আজাদ বলেন, ‘আনারস প্রতীকের প্রার্থী নিজেও তার সমর্থক, নেতা-কর্মীরা আমার মোটরসাইকেল সমর্থকদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। তাই আমি সুষ্ঠ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত। সুষ্ঠ নির্বাচন হলে অনেক ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হব।’

অন্যদিকে আনারস প্রতীকের প্রার্থী কামাল উদ্দিন সিকদার তার প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে গিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার আশ্বাস দিচ্ছেন। তবে তিনি এবারও বিজয়ের মালা গলায় পরার বিষয়ে আশাবাদী।

অবাধ, সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার হাফিজুর রহমান জানান, এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতজন ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৭৯৪ জন।


ভাঙ্গা ও নরসিংদীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশের ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও নরসিংদীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও নরসিংদীতে পৃথকভাবে এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে। ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আজ চার ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একটি দুর্ঘটনায় ছেলে, বাবা, চাচা নিহত হয়েছেন। অপর দুটি দুর্ঘটনায় এক কলেজছাত্রী ও এক ষাটোর্ধ্ব নারী নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, শনিবার বেলা ১১টার দিকে মোটরসাইকেলে করে ছেলে মুরসালিন শিকদারকে (৮) ফরিদপুরের একটি মাদরাসায় ভর্তি করাতে নিয়ে যাচ্ছিলেন বাবা কাশেম শিকদার (৪০)। সঙ্গে ছিলেন ভাই নাজমুল শিকদার (৩৫)। পথে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী ওই তিনজন নিহত হয়েছেন। ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহেল বাকী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহতরা সবাই গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাটিকামারী ইউনিয়নের কহলদিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের হামিরদি বাসস্ট্যান্ডে পেছনদিক থেকে একটি ট্রাক মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন।

নিহত শিশু মুরসালিনের মামা আবু বক্কর বলেন, ‘আমার ভাগ্নে মুরসালিনকে ফরিদপুর শহরের একটি মাদরাসায় ভর্তি করাতে নিয়ে যাচ্ছিলেন ভগ্নিপতি। পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আমি ভাঙ্গা হাইওয়ে থানায় আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহগুলো বাড়িতে নিয়ে যাই।’

ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহেল বাকী বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করে থানায় রাখা হয়েছে। মরদেহগুলো পরিবারের সদস্যদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এর আগে সকাল আটটার দিকে ভাঙ্গা পৌরসভার কৈডুবি সদরদী এলাকায় যাত্রীবাহী একটি ইজিবাইককে অজ্ঞাত একটি গাড়ি চাপা দিয়ে চলে যায়। এই দুর্ঘটনাও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ঘটে। এ ঘটনায় ওই ইজিবাইকের চার যাত্রী আহত হন। আহত ব্যক্তিদের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। গুরুতর আহত অপর তিনজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে সেখানে শাবান্তী আক্তার (১৭) নামের এক কলেহছাত্রীর মৃত্যু হয়।

নিহত শাবান্তী ভাঙ্গার ঘারুয়া ইউনিয়নের খামিনারবাগ গ্রামের শাহাদাত হোসেনের মেয়ে। সে ভাঙ্গা সরকারি কাজী মাহবুবউল্লাহ কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

আর সকাল সাতটার দিকে ভাঙ্গার পুখুরিয়া-সদরপুর আঞ্চলিক সড়কে একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সড়কে পড়ে গিয়ে নিহত হন রিজিয়া বেগম (৬৫) নামের এক নারী। তিনি ভাঙ্গার মানিকদাহ ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের রজব আলী মিয়ার স্ত্রী। বাড়ির সামনে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় এ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে।

নরসিংদীতে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে গায়ক পিয়ালসহ নিহত

নরসিংদীর পাঁচদোনায় বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে গায়ক আহসান তানভীর পিয়ালসহ দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন মাইক্রোবাসে থাকা অন্য তিন যাত্রী। শনিবার ভোরে পাঁচদোনার ড্রিম হলিডে পার্কের সামনের সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- মাইক্রোবাসের চালক মো. সালাম (৪৩) ও যাত্রী আহসান তানভীর পিয়াল (২৬)। আহতরা হলেন ঢাকার মহাখালি এলাকার আফতাব উদ্দিনের ছেলে আকিব (২৬), সিলেট হবিগঞ্জ এলাকার খোরশেদ আলমের ছেলে সাকিব (২৬) এবং চট্রগ্রাম পাথর ঘাটা এলাকার অনুপের ছেলে অমিত (২৭)।

দেহপাশে কেউ কেঁদো না, গল্পগুলো রেখো অজানা’ গানের ভোকালিস্ট ও ‘অড সিগনেচার’ মিউজিক ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য ছিলেন আহসান তানভীর পিয়াল।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আজ ভোরে ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা একটি মাইক্রোবাস ভোর ৫টার দিকে নরসিংদীর চৈতাব এলাকার ড্রিম হলিডে পার্কের সামনে পৌঁছালে হানিফ পরিবহনের এটি বাসের সঙ্গে সেটির সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মাইক্রোবাসের চালক সালাম ও শিল্পী পিয়াল নিহত হন। আহত তিন যাত্রীকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তারা ছেড়ে দেওয়া হয়।

দুর্ঘটনার পর যাত্রীবাহী বাসটি পালিয়ে যাচ্ছিল, পরে ভুলতা থেকে সেটি আটক করেছে বলে হাইওয়ে থানা পুলিশ জানায়।

মাধবদী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার খাইরুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করি এবং মাধবদী থানায় হস্তান্তর করি।


চাকরির কথা বলে অর্থ আত্মসাৎ, দুই পুলিশ বরখাস্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মাদারীপুরে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় পুলিশের দুই সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়া দুই ‍পুলিশ সদস্য হলেন, পুলিশ কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম ও তানজিলা আক্তার।
শনিবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় চাকরি দেয়ার কথা বলে চাকরি প্রার্থী রতন দাসের কাছে থেকে অর্থ নিয়ে আত্মসাৎ করেছে মাদারীপুরে কর্মরত কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম ও নারী কনস্টেবল তানজিলা আক্তার।
পরে রতন রতন দাস এ বিষয়ে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) বরাবর অভিযোগ করেন। ইতোমধ্যে অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্যতা পাওয়ায় বৃহস্পতিবার (৯ মে) তাদের অভিযুক্ত দুই কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।


পুরোপুরি দৃশ্যমান হলো ‘বঙ্গবন্ধু রেলসেতু’

দেশের সবচেয়ে বড় রেলওয়ে সেতু ‘বঙ্গবন্ধু রেলসেতু’। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যমুনা নদীর বুকে অবশেষে দৃশ্যমান হলো ‘বঙ্গবন্ধু রেলসেতু’। সর্বশেষ ৪৯ নম্বর স্প্যানটির স্থাপনের কাজ শেষ হওয়ার মাধ্য দিয়ে এখন পুরোপুরি দৃশ্যমার দেশের সবচেয়ে বড় রেলওয়ে সেতুর অবয়ব। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। ঢাকার সঙ্গে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা অঞ্চলের রেল যোগাযোগে বর্তমান যে বিড়ম্বনা রয়েছে, সেটা আর থাকবে না। বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল অংশের যমুনা নদীর দু’প্রান্তে দুটি প্যাকেজে নির্মিত হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরের শেষ দিকে সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।

আজ শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান বলেন, রেলওয়ে সেতুর ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যান বসিয়ে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার সুপার স্ট্রাকচার এখন পুরোটাই দৃশ্যমান। এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে ৮৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ১৬ শতাংশ কাজ দ্রুতই সম্পন্ন করা হবে। বাকি কাজের মধ্যে এখন সেতুর ওপর ডুয়েল গেজ রেললাইন বসানোর কাজ চলছে।

তিনি আরও বলেন, এরইমধ্যে ৪০ থেকে ৫০ ভাগ রেললাইন বসানোর কাজও সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু অ্যাডজাস্টমেন্ট বাকি রয়েছে। অ্যালাইনমেন্ট ও লেভেল ঠিক করা হচ্ছে। বিভিন্ন ড্রেনের কাজ ও কালভার্টগুলোর কাজ শেষ হয়ে গেছে। দুই পাশের স্টেশন বিল্ডিংয়ের কাজ, প্ল্যাটফর্ম স্থাপনের কাজ ও ট্র্যাকের কাজ চলছে। আর দ্রুত সময়ের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করতে ৭ হাজার ৩৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক কাজ করছে। চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে। তবে আশা করা যায় ডিসেম্বরের শেষদিকে উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।

জানা যায়, জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে সেতুটি। এর নির্মাণ ব্যয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এই রেলসেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে। ডব্লিউডি-১ ও ডব্লিউডি-২ নামে দুটি প্যাকেজে জাপানি পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ডব্লিউডি-১ প্যাকেজটি বাস্তবায়ন করছে জাপানি আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওবাইসি, টোআ করপোরেশন ও জেইসি (ওটিজে) জয়েন্ট ভেঞ্চার।

ডব্লিউডি-২ প্যাকেজটি বাস্তবায়নে রয়েছে জাপানের আইএইচআই ও এসএমসিসি জয়েন্ট ভেঞ্চার। এ ছাড়া সেতুর উভয় প্রান্তের দুই স্টেশনে সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনে ডব্লিউডি-৩ নামে অপর একটি প্যাকেজের কাজও চলছে। সেতুটি নির্মাণে জাপান, ভিয়েতনাম, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের কর্মীরা নিয়োজিত রয়েছেন। ডব্লিউডি-১ প্যাকেজের ৯৬ দশমিক ১৫ শতাংশ, ডব্লিউডি-২ প্যাকেজের ৯০ শতাংশ ও ডব্লিউডি-৩ প্যাকেজের প্রায় ৬৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম বলেন, সেতুটির ওপরে রেললাইন স্থাপন শেষ হয়েছে ২ দশমিক ২৫ কিলোমিটার। প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানিদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হচ্ছে। ফলে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের সেতুটির নির্মাণকাজ ডিসেম্বরেই শেষ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবু ইউসুফ সূর্য বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে প্রতিদিন মাত্র ৩৮টি ট্রেন চলাচল করতে পারে। আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু চালু হওয়ার পর ৮৮টি ট্রেন চলাচল করতে পারবে। রেল থামিয়ে বসে থাকতে হবে না। কারণ এটি ডবল লাইনের হওয়ায় একইসঙ্গে একাধিক ট্রেন চলতে পারবে। এতে এ অঞ্চলে ব্যবসার প্রসার ঘটবে।

বিষয়:

বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ার খয়খাটপাড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত হওয়া বাংলাদেশি দুই যুবকের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে আইনি প্রক্রিয়া শেষে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন ও ভারতের ফুলবাড়ি সীমান্তে ওই দুই যুবকের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। এ সময় পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের কর্মকর্তাসহ নিহতদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

তেতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন: বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক নিহত

তিনি বলেন, ‘বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে নিহত দুই যুবকের মরদেহ গ্রহণ করা হয়েছে। ভারতে মরদেহ ময়নাতদন্ত হওয়ায় আমরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দুই পরিবারের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছি।’

গত ৮ মে ভোরে পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া উপজেলার খয়খাটপাড়া সীমান্তে বিএসএফের ১৭৬ ব্যাটালিয়নের ফকিরপাড়া ক্যাম্পের সদস্যদের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিক জলিল (২৪) ও আলীর (২৩) মৃত্যু হয়। পরে মরদেহ নিয়ে যায় বিএসএফ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে একই দিন বিকেলে বিএসএফের সঙ্গে বিজিবি সদস্যরা পতাকা বৈঠক করেন।

বিষয়:

গাইবান্ধায় রেল লাইনে নারীর দ্বিখণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধায় রেললাইনেরর ওপর থেকে আনুমানিক ৪৮ বছর বয়সী অজ্ঞাত এক নারীর দ্বিখণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। পরে নাম-পরিচয় না পাওয়ায় মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করেছে গাইবান্ধার আঞ্জুমান মফিদুল।

শুক্রবার বিকেল ৫ টার দিকে গাইবান্ধার পৌর কবরস্থানে ওই নারীর মরদেহ দাফন করা হয়। একইদিন সকালে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে গাইবান্ধার আঞ্জুমান মফিদুলে মরদেহ হস্তান্তর করে রেলওয়ে পুলিশ। এরআগে বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার কুপতলা এলাকার লাইনের ওপর থেকে ওই নারীর দ্বিখন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ।

বেওয়ারিশ হিসেবে মরদেহ দাফনের বিষয়টি মোবাইল ফোনে দৈনিক বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন আঞ্জুমান মফিদুলের গাইবান্ধার উপ-পরিচালক মো. শাহজাহান খান। তিনি বলেন, দুপুর নাগাদ পুলিশ রেলে কাটা পড়ে মৃত্যু হওয়া নাম-পরিচয়হীন এক নারীর মরদেহ আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। পরে বাদ আছর (বিকেল) আমরা ওই নারীর মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে পৌর কবরস্থানে দাফন করি।

বোনারপাড়া রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম

মুঠোফোনে বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে স্থানীয়দের খবরে কামারপাড়া-কূপতলার মাঝামাঝি এলাকার (৩৯৪/২-৪ কেএম সংলগ্ন) রেল লাইনের ওপর থেকে অজ্ঞাত এক নারীর দ্বিখন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই নারী একইদিন রাত ৮ টা ২০ মিনিটের দিকে ১৯-আপ ট্রেনে কাটা পড়ে দ্বিখন্ডিত হয়। পরে পুলিশি পদ্ধতি অবলম্বন করেও তার নাম-পরিচয় না পাওয়ায় সকালে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ আঞ্জুমান মফিদুলে হস্তান্তর করা হয়েছে।


banner close