ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এবার মে মাস থেকেই অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
আজ বুধবার রাজধানীর গুলিস্তান শহীদ মতিউর পার্কে ড. কাজী বশির মিলনায়তনের সংস্কার কাজ পরিদর্শন শেষে তিনি এ তথ্য জানান।
মেয়র তাপস বলেন, ‘আসন্ন এডিস মশার মৌসুমকে সামনে রেখে আমাদের যে কর্মপরিকল্পনা ও সূচি রয়েছে, সে অনুযায়ী মে মাসে আমরা পুলিশ প্রশাসন, রাজউক, রেলওয়ে, গণপূর্ত অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করব।’
তিনি বলেন, আমাদের এসব কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য হলো, তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন যেসব স্থাপনা ও আবাসন রয়েছে, সেগুলো যেন তারা নিয়মিতভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখে। কোথাও যেন পানি জমতে না দেওয়া হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সর্বাত্মকভাবে একে অন্যকে সহযোগিতা করব।’
‘জুন মাসে যেহেতু বর্ষা মৌসুম শুরু হবে, তাই মৌসুমের আগেই আমরা যেন সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারি সে লক্ষ্যে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। প্রয়োজনে মে মাস থেকে অগ্রিম কিছু অভিযান আমরা পরিচালনা করব’- যোগ করে বললেন মেয়র তাপস।
মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস গতকাল গুলিস্তান মোড়ে বঙ্গবন্ধু ফোয়ারার সংস্কার-পরবর্তী কাজ পরিদর্শন, ২০ নম্বর ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিদ্যমান পাইপ লাইন ও খোলা নর্দমা পরিষ্কার কার্যক্রম উদ্বোধন এবং শ্যামপুর খালে চলমান বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের মধ্যে অঞ্চল-১ এর মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, অঞ্চল-২ এর সুয়ে মেন জো, অঞ্চল-৫ এর মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কায়জার মোহাম্মদ ফারাবী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসিম আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. খায়রুল বাকের ও রাজীব খাদেম প্রমুখ।
ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যে সারা দেশে গতকাল সোমবার (১৭ জুন) উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় সামর্থ্যবান মুসলমানেরা ত্যাগের মহিমায় পশু কোরবানি দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার ঈদের দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীবাসীকে পশু কোরবানি দিতে দেখা গেছে। পেশাদার কসাইয়ের সংকটের কারণেই অনেকে ঈদের দ্বিতীয় দিন কোরবানি দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পশু কোরবানি দিতে দেখা গেছে।
ওয়ারি এলাকার বাসিন্দা তৈমুর বলেন, ঈদের দিন মৌসুমি কসাই দিয়ে কোরবানি দিতে পারতাম কিন্তু তারা মাংস ঠিকমত বানাতে পারে না। ঈদের দিন পেশাদার কসাইয়ের সংকট থাকে। তাই আমরা পেশাদার কসাইয়ের সংকটের কারণে আজ ঈদের দ্বিতীয় দিন কোরবানি দিচ্ছি।
চাঁদ রাতে গরু কিনে বাসায় ফিরতে ফিরতে ভোর হয়ে গেছে। ঈদের দিন কসাই ঠিক করতে না পারায় আজ কোরবানি দিচ্ছি বলে জানালেন খিলগাঁওয়ের সোহান।
এ বছর রাজধানীতে প্রায় ৫০ লাখ গরু-ছাগল কোরবানি হয়েছে। পেশাদার কসাইয়ের সংকট থাকাটাই স্বাভাবিক। গতকাল সাতটি গরু কেটেছি আজ চারটি গরু কাটার অর্ডার রয়েছে বলে জানালেন মুগদার কসাই আলমগীর।
তিনি বলেন, ঈদের দিন ২০০ থেকে ২৫০ টাকা হাজারে নিয়েছি। অথচ আজ হাজারে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা নিচ্ছি। আজ এ নিয়ে দুটি গরু কেটেছি। এটির পর আরও দুটি গরু কাটার অর্ডার রয়েছে।
পশু কোরবানির পর দ্রুত বর্জ্য অপসারণে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। সোমবার কোরবানির দিন সকাল থেকেই সিটি করপোরেশনের লোকজন শহর পরিষ্কারের কাজে নামে। প্রতিটি এলাকাতেই পরিষ্কার অভিযান চালাচ্ছেন তারা। গতকাল অনেক এলাকাই পরিস্কার হয়ে গেছে। ডিএনসিসি এবং ডিএসসিসি দুই এলাকায় কোরবানির বর্জ্য পরিস্কার হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান।
বেপরোয়া গতিই তাদের জীবনের জন্য কাল হলো। প্রাইভেটকার নিয়ে পাঁচ বন্ধু বেড়াতে বের হয়েছিল। ঈদের ছুটিতে রাস্তা ফাঁকা পেয়ে গাড়ি চালানো বেপরোয়া গতিতে। ঘটনা যা হবার তাই ঘটলো। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সড়কদ্বীপে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সেই প্রাইভেটকারের দুই আরোহীর প্রাণ গেছে, আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
ঈদের দিন সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে কাফরুল থানার ওসি ফারুকুল আলম গণমাধ্যমকে জানান।
তিনি বলেন, ‘দ্রুত গতির গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কদ্বীপে উঠে যায় এবং গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে মুচড়ে যায়।’
ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দুজকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতরা হলেন রেজা রাব্বি (২৮) ও মোহাম্মদ রাসেল (৩০)। আহত অবস্থায় হাসপাতালে আছেন আহসান উল্লাহ হক রাতুল (২৭), সাগর (২৮) ও বিপ্লব (৩০)।
ওসি আরও জানান, তারা পরস্পরের বন্ধু এবং সবার বাসা দারুস সালাম এলাকায়। রাব্বির ওষুধের দোকান রয়েছে, আর রাসেল একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি করতেন।
আহত সবার অবস্থাই গুরুতর জানিয়ে ওসি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রাইভেটকারের চালকের আসনে ছিলেন রাতুল। তারা মিরপর ১০ নম্বরের দিক থেকে ফার্মগেইটের দিকে যাচ্ছিলেন। ঈদের রাতে রাস্তা ফাঁকা পেয়ে দ্রুত গতিতে চালাতে গিয়ে তারা এই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের পূর্বঘোষিত ৬ ঘণ্টায় শতভাগ কোরবানির বর্জ্য অপসারণ সম্পন্ন হয়েছে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘সবার সহযোগিতায় পূর্বঘোষিত ছয় ঘণ্টায় ঢাকা উত্তর সিটির কোরবানির বর্জ্য শতভাগ অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে। সচেতন নাগরিকদের আন্তরিক সহযোগিতায় এটি করতে পেরেছি। আমি নগরবাসীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আগামী দিনেও ঢাকা শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে জনগণ ও সিটি করপোরেশনকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
সোমবার ঈদের দিন যারা কোরবানি দিতে পারেননি তাদেরকে মঙ্গলবার সকালের মধ্যেই কোরবানি সম্পন্ন করার আহ্বান জানান তিনি।
মেয়র আরও বলেন, ‘অনেকে সন্ধ্যার পর এমনকি রাতেও কোরবানি দিচ্ছেন। তারা আমাদের হটলাইন ১৬১০৬ নম্বরে ফোন করে জানাবেন। আমাদের কর্মীরা বর্জ্য সংগ্রহ করে নিয়ে আসবে।’
সোমবার বেলা ২টায় ডিএনসিসির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত মিরপুর সেকশন-২ ব্লক-এইচ রোড নম্বর ৬-এ বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
দুপুর ২টা থেকে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু করে রাত ৮টায় নির্ধারিত ৬ ঘণ্টায় সব ওয়ার্ডের শতভাগ বর্জ্য অপসারণ সম্পন্ন করে ডিএনসিসি।
ডিএনসিসির সব ওয়ার্ড থেকে ঈদের দিন রাত ৮টা পর্যন্ত ২১০১ ট্রিপে প্রায় ১০ হাজার ৩৭৪ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।ডিএনসিসির বর্জ্য বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী ৫৪টি ওয়ার্ডের সব এলাকার শতভাগ বর্জ্য অপসারণ সম্পন্ন হয়েছে।
ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং সরাসরি তদারকি করেন। দুপুর ২টায় মিরপুরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে মিরপুর এলাকা পরিদর্শন করেন। পরে তিনি কালশী, বনানী, গুলশান, হাতিরঝিল, মধুবাগ, মগবাজার, রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাঁও, বাড্ডা, বারিধারা প্রগতি সরণিসহ উত্তরা এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম রাত ৮টা পর্যন্ত সশরীরে পরিদর্শন করেন।
এছাড়াও ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলের তদারকির জন্য দশজন কর্মকর্তার সমন্বয়ে দশটি গ্রুপ গঠন করা হয়। ১০টি গ্রুপের নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীসহ অন্যান্য বিভাগীয় প্রধানগণ। দশটি গ্রুপ ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিং করে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণে ১০ হাজারের অধিক কর্মী কাজে নিয়োজিত ছিল। গুলশান নগর ভবনে কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগের হট লাইন নম্বর ১৬১০৬।
পরিদর্শন শেষে ডিএনসিসি মেয়র বর্জ্য বিভাগকে এবং তদারকির জন্য গঠিত দশটি গ্রুপকে মঙ্গলবারও কোরবানির বর্জ্য দ্রুত সময়ে পরিষ্কার করার নির্দেশ দেন।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিদর্শনে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ডিএনসিসির সব বিভাগীয় প্রধান ও ডিএনসিসির কাউন্সিলর এবং অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
অননুমোদিতভাবে কাঁচা চামড়া কেনা-বেচা করায় ৫ মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। আজ সোমবার (১৭ জুন) রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় তাদের ৪৭ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।
এ ব্যবসায়ীদের জরিমানা করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ শফিকুল ইসলাম।
আজ দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল পৌনে ৬টা পর্যন্ত তিনি ভ্রম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন ওই এলাকায়।
অভিযোগে বলা হয়, রাস্তার ওপর ট্রাক, ভ্যান বসিয়ে জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি এবং অননুমোদিতভাবে কাঁচা চামড়া ক্রয়-বিক্রয় করছিলেন ৫ মৌসুমি ব্যবসায়ী। পরে আদালত ৫ মামলায় তাদের ৪৭ হাজার টাকা জরিমানা করে।
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই একটি পরিষ্কার নগরী উপহার দেবেন বলে জনিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
আজ সোমবার ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের উদ্বোধনে ইউএসএ থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আমাদের কমিশনাররা মাঠে নেমে গেছেন। সবাইকে নিয়ে আমরা খুব দ্রুতই বর্জ্য অপসারণ করতে পারব বলে আশা করি।
ফজলে নূর তাপস বলেন, আমাদের দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীরা কাজ করছেন। আগামীকাল পর্যন্ত পরিচ্ছন্নতার কাজ চলবে। অনেকে দ্বিতীয় দিনেও কোরবানি দিয়ে থাকেন, তাই আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে। কোরবানির বর্জ্যের সঙ্গে দৈনন্দিন যে আবর্জনা আছে সেগুলো আমাদের পরিষ্কার করতে হবে। সুতরাং আমাদের পরিশ্রম অনেক।
তিনি আরও বলেন, আমরা গত রাত থেকেই হাট গুলো থেকে বর্জ্য অপসারণের কাজ শুরু করে দিয়েছি এবং এই কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে। ২৪ ঘণ্টার যে লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে। তার অনেক আগেই কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে সক্ষম হবো।
মেয়র আরও বলেন, দুপুর ২টার আগেই দক্ষিণ সিটির ১ নম্বর ওয়ার্ড হতে কোরবানির পশুর বর্জ্য শতভাগ অপসারণ করা হয়েছে। আমাদের নতুন কিছু সরঞ্জাম যোগ হওয়ার কারণে আমরা অনেক দ্রুতই বর্জ্য অপসারণ করতে পারবো।
সবাইকে নির্দিষ্ট স্থানে বর্জ্য রাখার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, এবার ৬ ঘণ্টার মধ্যেই অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান সড়ক পর্যন্ত সব জায়গা পরিষ্কার করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে। সেইসঙ্গে বর্জ্য অপসারণে সবার সহায়তা প্রত্যাশা করেন উত্তরের মেয়র।
আজ সোমবার সকালে মিরপুরের গোলারটেক মাঠে ঈদের জামাত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
গত বছর ৮ ঘণ্টা সময় নিলেও বর্জ্য অপসারণে এবার ৬ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে জানিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে একটি চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়। সেজন্য আমাদের কাউন্সিলররা সবাই মাঠে থাকবেন। গত বছর দুপুর ২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সময় লেগেছিল পরিষ্কার করতে। এবার আমি বলেছি, ২টা থেকে ৮টার মধ্যে ডিএনসিসির সব অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান রাস্তা পর্যন্ত সব জায়গা পরিষ্কার করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবো। আমি বিনয়ের সঙ্গে সবাইকে বলবো, আমাদেরকে সাহায্য করার জন্য।
মেয়র বলেন, বর্জ্য অপসারণে ১০ হাজারেরও বেশি কর্মী মাঠে রয়েছেন। কাউন্সিলররা এবং আমি নিজেও মাঠে থাকছি। এ ছাড়া ৩ নম্বর ওয়ার্ডে পশু কোরবানি দিচ্ছি একটি মাঠের মধ্যে। যারা পশু নিয়ে আসছেন, তাদেরকে প্রণোদনা হিসেবে এক হাজার টাকা করে দিচ্ছি। কারণ যত্রতত্র কোরবানি দেয়া হলে পরিবেশ নষ্ট হয়।
তিনি বলেন, ‘আর ঘণ্টা বলতে হবে না। পশু কোরবানি দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে জায়গা পরিষ্কার করে দেবো, এ ধরনের কনসেপ্ট নিয়ে আগাতে চাচ্ছি। আগামীবার আমাদের নির্দিষ্ট জায়গায় যারা পশু কোরবানি দেবেন, তাদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা থাকবে।’
একই দিন মিরপুরের গোলারটেক মাঠকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান ঈদগাহ মাঠ হিসেবেও ঘোষণা দেন মেয়র।
আগামীকাল ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে একই স্থানে পাঁচ শতাধিক পশু কোরবানির উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। ডিএনসিসির ৩নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত মিরপুর সেকশন-১১, ব্লক-সি, প্যারিস রোড সংলগ্ন মাঠে পশু কোরবানির এ আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও ৭নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত এলাকায় আরও পাঁচটি নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির আয়োজন করা হয়েছে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, একটি নির্দিষ্ট স্থানে একসঙ্গে পশু কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। ডিএনসিসির ওয়ার্ড-৩ এ প্যারিস রোড মাঠে একসঙ্গে পাঁচ শতাধিক পশু কোরবানির উদ্যোগ নিয়েছি। ৭ নম্বর ওয়ার্ডেও পাঁচটি নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ বছর দুটি ওয়ার্ডে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করেছি। পরবর্তীতে সব ওয়ার্ডে এটি বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
মেয়র বলেন, নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানি হলে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমটা সহজ হয়ে যাবে। পাশাপাশি অনেক মানুষ একসঙ্গে মাঠে থাকলে ঈদের আনন্দও অনেক বেড়ে যাবে।
নগরবাসীকে উৎসাহ দিতে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে প্যারিস রোড মাঠে কোরবানি দিতে আসলে প্রতিটি পশুর জন্য এক হাজার টাকা প্রণোদনা দেওয়া হবে। এছাড়াও মাংস পরিবহনের জন্য ৫০টি ভ্যান রাখা হয়েছে।
ঈদের দিন দুপুরে প্যারিস রোড মাঠে ৫ শতাধিক পশু কোরবানি কার্যক্রম পরিদর্শন করবেন বলেও জানান মেয়র আতিকুল ইসলাম।
আগামীকাল সোমবার দেশজুড়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করা হবে। ঈদে রাজধানীর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৭টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে।
জামাতে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবর্গ, ঢাকাস্থ মুসলিম দেশের কূটনৈতিকবৃন্দ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ নামাজ আদায় করবেন।তাই নামাজের আগে ও নামাজচলাকালীন সময়ে আশপাশের কয়েকটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখবে ডিএমপি।
আজ রোববার ডিএমপি ট্রাফিক রমনা বিভাগের পক্ষ থেকে এই ট্রাফিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, সকাল থেকে মৎস্য ভবন ক্রসিং, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ক্রসিং, কাঁটাবন ক্রসিংয়ে যান চলাচল করতে পারবে না। এসব সড়কে ডাইভারশন দিয়ে অন্য সড়ক দিয়ে যান চলাচল করবে। তবে হেঁটে এসব পয়েন্ট দিয়ে ঈদগাহে প্রবেশ করা যাবে।
ডিএমপি জানায়, ঈদ জামাতে আগত গাড়িগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম মাঠ, ফুলার রোড, মুহসীন হল মাঠে পার্কিং করতে হবে।
পবিত্র ঈদুল আজহার জামাতে জাতীয় ঈদগাহে পাঁচ স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান ।
তিনি আজ রোববার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
রাজধানীর প্রতিটি ঈদ জামাতকে ঘিরে আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় চারটি আলাদা পার্কিং ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং কিছু রাস্তায় ডাইভারশন দেয়া হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, 'রাজধানীর প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৭টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। এই জামাতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবর্গ, ঢাকাস্থ মুসলিম দেশের কূটনৈতিকবৃন্দ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ নামাজ আদায় করবেন। সে জন্য এখানে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ছাড়া জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পাঁচটি জামাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের প্রধান জামাতটি বাইতুল মোকাররমে স্থানান্তর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ঈদের প্রধান জামাতসহ রাজধানীর সকল মসজিদ ও ইদগাহে ঈদের জামাতকে ঘিরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকা ডিএমপির ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে। সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এছাড়াও ড্রোন পেট্রোলিং, সাইবার পেট্রোলিং ও ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে।
তিনি বলেন, পর্যাপ্ত সংখ্যক ইউনিফর্মধারী পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে জাতীয় ঈদগাহের চারপাশে বহিঃবেষ্টনী ও আন্তঃবেষ্টনী গড়ে তোলা হবে। প্রবেশ গেটে মেটাল ডিটেক্টর ও আর্চওয়ের মাধ্যমে তল্লাশি করা হবে। ইউনিফর্ম পুলিশের পাশাপাশি ডিবি পুলিশ, এসবি ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সোয়াট টিম, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট স্ট্যান্ডবাই থাকবে। এছাড়াও দুর্ঘটনা এড়াতে ফায়ার সার্ভিস ও তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবায় মেডিকেল টিম নিয়োজিত থাকবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, কোনো ধরনের দাহ্য বস্তু, বিস্ফোরক জাতীয় বস্তু ও ধারালো কিছু সঙ্গে আনা যাবে না।'
তিনি বলেন, চামড়া যাতে পাচার হতে না পারে এবং দালাল চক্র যাতে কোন অব্যবস্থাপনা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য ডিএমপির প্রত্যেকটি থানা কেন্দ্রিক ব্যবস্থা রয়েছে। চামড়া বেচা-কেনায় কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে নিকটস্থ থানাকে জানানোর অনুরোধ করেন তিনি।
ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রিয়জনদের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকা থেকে প্রায় এক কোটি মানুষ গ্রামের বাড়িতে গেছে। এই সময়ে বাসাবাড়ি, রাস্তাঘাট, অফিস-আদালত ফাঁকা থাকে। প্রতি বছরই পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়ে ঢাকাকে নিরাপদ রাখতে সক্ষম হয়। এবারও পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সাংবাদিকদেরে অপর এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় কোনো ধরনের জঙ্গি তৎপরতার তথ্য নেই। তারপরও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সব বিষয় বিবেচনায় রেখেই নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, চামড়া বেচা- কেনায় যাতে কেউ সিন্ডিকেট তৈরি করতে না পারে সে ব্যাপারেও আমাদের কঠোর নজরদারি রয়েছে। চামড়া বেচা- কেনায় চাঁদাবাজি বা কেউ প্রভাব বিস্তার করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত),অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারগণ ও বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাগণসহ এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর মালিবাগে রেললাইন পারাপারের সময় ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। রেলগেট এলাকায় রোববার দুপুর পৌনে ১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো মো. আলম হোসেনের (৫০) বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে। তিনি খিলগাঁও নন্দীপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় সপরিবারে থাকতেন।
খিলগাঁও ফায়ার সার্ভিসের লিডার কামরুল ইসলাম মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল (ঢামেক) কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ছেলে মোহাম্মদ আবু বক্কার সিদ্দিকী বলেন, ‘আমার বাবা পান-সুপারির ব্যবসা করেন। আজ দুপুরে তিনি দোকানের জন্য শান্তিনগর বাজারে পান-সুপারি আনতে যাওয়ার সময় মালিবাগে রেললাইন পারাপারের সময় ট্রেনে কাটা পড়ে।’
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি ঢাকা রেলওয়ে থানাকে জানানো হয়েছে।’
ফাঁকা ঢাকার সড়কে রেসিং করা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণে এসে আজ রোববার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
হাবিবুর রহমান বলেন, ফাঁকা ঢাকায় বাইক রাইডিংয়ের নামে কেউ যেন এই মরণ খেলায় মেতে না উঠেন। আমরা অতীতে অনেক দুর্ঘটনার কথা জানি। এবার পুলিশের পক্ষ থেকে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাতে কেউ রেসিং করতে না পারে।
চাঁদাবাজির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এরইমধ্যে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি, অনেককেই গ্রেপ্তার করেছি। পরে এ ধরনের কাজ যারা করবেন, তারা সতর্ক হবেন এবং ভবিষ্যতে এসব থেকে তারা নিবৃত থাকবেন।
তিনি বলেন, আমরা সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। আমরা সব সময় সর্বাত্মক এবং সর্বোচ্চ ব্যবস্থাটাই নিয়ে থাকি। এবারও সেটি করা হয়েছে।
জঙ্গি হামলার সুনির্দিষ্ট কোনো থ্রেট নেই, তারপরেও আমরা সবকিছু মাথায় রেখেই আমাদের নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজিয়ে থাকি, যোগ করেন তিনি।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে মিরপুর গোলারটেক মাঠে। আগামীকাল সোমবার ঈদের দিন প্রধান জামাত শুরু হবে সকাল ৮টায়। এলাকাবাসীর সঙ্গে নামাজের জামাতে অংশ নেবেনে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, ডিএনসিসির কাউন্সিলর এবং কর্মকর্তারা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্রতিটি ওয়ার্ডে পাঁচটি করে ঈদের জামাত আয়োজন করা হয়েছে। কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে ৫৪টি ওয়ার্ডে মোট ২৭০টি ঈদের জামাত আয়োজন করা হচ্ছে ডিএনসিসির উদ্যোগে। এর মধ্যে প্রথমবারের মতো মিরপুর গোলারটেক মাঠে ডিএনসিসির ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা উত্তরে বসবাসরত নগরবাসীর মধ্যে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে এবার ঈদে গোলারটেক মাঠে ডিএনসিসির প্রধান জামাত আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে এলাকাবাসীর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠবে। আমি নিজেও এই জামাতে অংশগ্রহণ করব।’
‘এর ফলে ঢাকা উত্তরের জনগণের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ হবে। ওয়ার্ড ভিত্তিক ঈদের জামাত আয়োজনের পাশাপাশি এবার প্রথম বড় পরিসরে মিরপুরে ডিএনসিসির প্রধান জামাত আয়োজন হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নগরবাসীকে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপন এবং সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য উৎসব আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গুলশানে এ বছর পহেলা বৈশাখ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসও উদযাপন করা হয়েছে।’
মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনে স্থায়ী ২টিসহ মোট ২০টি পশুর হাটে শেষ মুহূর্তে বেচাকেনা বেশ জমে উঠেছে। পশুর হাটগুলোতে দামও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে বলে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানী দুই সিটিতে পশুর হাট বসেছে। চলবে ১৭ জুন অর্থাৎ ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত মোট ৫ দিন। বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিক হাট বসলেও হাটগুলোতে মূলত কয়েক দিন আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসতে শুরু করে পশুর পিকআপ ও ট্রাক। ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত হাট থাকলেও এখন আর ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। হাটে ঘুরেফিরে দর-দামে মিলে গেলেই নিয়ে নিচ্ছেন পছন্দের পশুটি।
আগামীকাল রোববার রাত পার হলেই পরের দিন সোমবার পবিত্র ঈদুল আজহা। রাজধানীজুড়ে মানুষ ও কোরবানির পশুতে একাকার। উত্তরার দিয়াবাড়ী ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টরের পাশের খালি জায়গায় বসেছে বড় দুটি পশুর হাট। এই পশুর হাটগুলোতে রয়েছে পর্যাপ্ত গরু, ছাগল, ভেড়া। শেষ মুহূর্তে বেচাকেনা বেশ জমে উঠেছে। গতকাল পর্যন্ত পশুর দাম একটু কম থাকলেও আজ দাম কিছুটা চড়া। তবে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মতে দাম এখনো সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।
শনিবার উত্তরার গরুর হাট সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, হাটভর্তি বিভিন্ন জাতের দেশীয় ছোট, মাঝারি ও বড় জাতের অসংখ্য গরু উঠেছে, হাটে ক্রেতাদের প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে পশুর হাটে আসা অধিকাংশ ক্রেতাই স্থানীয়ভাবে খামারে লালন-পালন করা দেশি গরুই পছন্দ করছেন। অনেক ক্রেতা মনে করছেন শেষ দিনে দাম কমে যাবে। তখন কোরবানির পশু তারা সস্তায় কিনবেন। তবে বেশির ভাগ ক্রেতাই আজকের মধ্যেই পশু কিনে নেবেন বলে জানিয়েছেন।
বিভিন্ন জায়গা থেকে গরু নিয়ে উত্তরার হাটে এসেছেন মোস্তফা মাতাব্বর, মো. রাসেল ও রফিক নামে তিন গরু ব্যবসায়ী। তারা জানান, এ বছর পশুর হাটে ভারতীয় গরু নেই বললেই চলে। হাটে যেসব ক্রেতা আসছেন তারা দেশীয় জাতের গরু এবং স্বাভাবিক খাবার দিয়ে খামারে লালন-পালন করা গরুই বেশি পছন্দ করছেন। উত্তরার হাটে গরুর সরবরাহ বেড়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ হাটে এলেও দর-দাম করেই তাদের পছন্দের গরু কিংবা ছাগল কিনে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। সেই সঙ্গে বাজারে বড় গরুরও কমতি নেই। তবে ছোট ও মাঝারি জাতের গরুর চাহিদাই বেশি।
হাটে পাবনা থেকে গরু নিয়ে আসা সালাম বেপারী বলেন, পরিবহনে করে গরুর নিয়ে আসা, হাটে তোলা, খাওয়ানো ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলা- এই পুরো সময়টাজুড়ে তাদের হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয়। এ ছাড়া সব সময় গরুর দড়ি ধরে থাকা, গরুকে সামলানো এবং গরুর গোবর তোলাসহ নানান কারণে হাতও পরিচ্ছন্ন রাখা যাচ্ছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম শিশির হাটে এসেছেন গরু কিনতে। তিনি বলেন, ‘যতটুক ঘুরে দেখেছি, আমার কাছে মনে হয়েছে এবার গরুর দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় একটু কমই আছে।’
গরুর পাশাপাশি হাটে প্রচুর ছাগল, ভেড়াও উঠেছে। ১০ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে কোরবানির একটি ছাগল ক্রয় করা সম্ভব। বগুড়ার নবাব, লাট বাহাদুর, কালো মানিক ও লাল বাদশা নামে ৪টি বড় জাতের বিশাল গরু উত্তরার হাটে আনা হয়েছে। এগুলোর দাম চাওয়া হচ্ছে ১২-১৫ লাখ টাকা।
উত্তরার শ্রমিক নেতা রুবেল জানান, ‘গতকাল রাতে আমার বন্ধু উত্তরার গরুর হাট থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে দুটি বেশ বড় আকৃতির গরু কিনেছেন। আমার কাছে মনে হলো হাটে হঠাৎ গরুর দাম কমে গেছে। এতে আমি বেশ খুশি এ কারণে যে, এ বছর অনেকেই তার সাধ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি দিতে পারবেন।’
রাজধানীর গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাটে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন শুধু ছোট সাইজের গরুগুলো বিক্রি হচ্ছে বেশি। এ ছাড়া বাজারে প্রচুর পরিমাণ ছাগলও উঠেছে। বেচাকেনাও বেশ জমে উঠেছে। ছোট খাসির দাম ১০-১৫ হাজার টাকা। মাঝারি খাসি ২০-২৫ হাজার এবং বড় জাতের খাসি ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
গাবতলী পশুর হাটে ভারতের রাজস্থান থেকে আনা উট তোলা হয়েছে। উট দেখতে ভিড় করছেন দর্শনার্থী ও ইউটিউবাররা। মো. মাহফুজুর রহমান অপু দুটি উট এক মাস আগেই কিনেছেন। এরপর সড়কপথে উট দুটি বাংলাদেশে আনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
উটের মালিক মো. মাহফুজুর রহমান অপু বলেন, ‘প্রতি উটে ১৪-১৫ মণ মাংস হবে। আমার পরিবার উটের ব্যবসার সঙ্গে ২০-৩০ বছর ধরে জড়িত। আমার বাবাও এই ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। পরিচর্যা হিসেবে ঘাস, কুড়া ও ভুসি খাওয়ানো হচ্ছে উট দুটিকে। রাজস্থান থেকে দুটি উট নিয়ে আসা হয়েছে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য কোরবানির সময় বিক্রি করা। আমরা দুটি উটের দাম চাচ্ছি ৬০ লাখ টাকা। তবে কিছু কমে হলেও বিক্রি করব।’
উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর বৃন্দাবন পশুর হাটের ইজারাদার মো. কফিল উদ্দিন মেম্বার বলেন, ‘হাটে এবার দেশি গরুর প্রাধান্যই বেশি। হাটে গরুতে সয়লাব হয়ে গেছে। প্রচুর পরিমাণ গরু উঠেছে। তবে পশুর হাটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। আশা করছি, আজ রোববার আবহাওয়া ভালো থাকলে বিকেল থেকে হাটে পশুর বেচাকেনা তুলনামূলকভাবে বাড়বে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কোরবানির পশু আসা অব্যাহত রয়েছে। এই হাটে শতকরা ৫ টাকা হারে হাসিল নেওয়া হচ্ছে। হাটে নিরাপত্তার কোনো অভাব নেই।’
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় গাবতলীর স্থায়ী হাটসহ ৯টি হাট এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় সারুলিয়া স্থায়ী পশুর হাটসহ ১১টি হাট বসেছে। তবে এ বছর আদালতের নির্দেশনার কারণে আফতাবনগরে হাট বসেনি।
ঢাকা উত্তরে অস্থায়ী ৮টি হাটের মধ্যে রয়েছে- উত্তরা দিয়াবাড়ীর ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টরের পাশের খালি জায়গা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের খালি জায়গা, মস্তুল চেকপোস্ট এলাকা, মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, ভাটারার সুতিভোলা খালের কাছের খোলা জায়গা, মোহাম্মদপুরের বছিলায় ৪০ ফুট সড়কের পাশের খালি জায়গা, ভাটুলিয়া সাহেব আলী মাদ্রাসা থেকে রানাভোলা স্লুইচগেট পর্যন্ত খালি জায়গা ও দক্ষিণখানের জামুন এলাকার খালি জায়গা।
ঢাকা দক্ষিণে অস্থায়ী ১০টি হাটের মধ্যে রয়েছে- খিলগাঁও রেলগেট মৈত্রী সংঘ ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, হাজারীবাগের ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজসংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, বনশ্রীর মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাবসংলগ্ন খালি জায়গা, কমলাপুর স্টেডিয়ামসংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনালসংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা, লালবাগে রহমতগঞ্জ ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা।