রোববার, ২৬ মে ২০২৪

অধ্যাপক তাহের হত্যার আসামিদের ফাঁসি কার্যকরে বাধা নেই

আপডেটেড
৩ মে, ২০২৩ ১৫:৩৭
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ৩ মে, ২০২৩ ০৯:৪৮

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনসহ দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে।

বুধবার রায় প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী সেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ। তিনি জানান, এখন আসামিদের ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা নেই।

২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ। ওই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক তাহেরের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন। পদোন্নতিসংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে হত্যার শিকার হন অধ্যাপক তাহের। তাকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেয়। বিচারিক আদালতে দণ্ডিতরা হলেন রাবির ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, অধ্যাপক তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীরের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের সম্বন্ধি আব্দুস সালাম।

খালাসপ্রাপ্ত অভিযোগপত্রভুক্ত দুই আসামি হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও আজিমুদ্দিন মুন্সী। ২০০৮ সালে বিচারিক আদালতের রায়ের পর নিয়ম অনুযায়ী ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণ) হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন।

হাইকোর্টে শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় দুই আসামির ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল এবং অন্য দুই আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয় হাইকোর্ট।

ফাঁসির দণ্ড হাইকোর্টে বহাল থাকা দুই আসামি হলেন রাবির সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর। ফাঁসির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া দুই আসামি হলেন নাজমুল আলম ও আবদুস সালাম।

হাইকোর্টের রায়ের পর আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন। পাশাপাশি যাবজ্জীবন দণ্ডিত দুই আসামির দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে গত বছরের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে।

গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হয়। ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদন করেন আসামিরা। সেই রিভিউ আবেদন শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার খারিজ করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত।

এ রায়ের ফলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা কার্যকরে আর কোনো আইনি বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী ও অধ্যাপক তাহেরের মেয়ে সেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ।


যেভাবে ঘূর্ণিঝড়টির নাম ‘রেমাল’ হয়েছে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

একেকটি ঘূর্ণিঝড়ের একেক রকম নাম হয়ে থাকে। সিডোর,আইলা, মোখা, আমপান, নারগিসসহ এরকম কতো নামের ঘূর্ণিঝড় অতীতে আঘাত হেনেছিল। কথা হচ্ছে- ঘূর্ণিঝড়ের এই ধরনের নাম কিভাবে এবং কেনো করা হয়- এটা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে নানান প্রশ্ন থাকে। এখন যেমন দেশজুড়ে ‘রেমাল’- এর নাম সকলের মুখে মুখে।

জানা গেছে, ঘুর্ণিঝড়ের এরকম নামকরণের পেছনে থাকে বিভিন্ন সতর্কীকরণ কেন্দ্র দ্বারা পূর্বাভাস, ঘড়ি এবং সতর্কতা সম্পর্কিত পূর্বাভাসক এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করার জন্যই হয়ে থাকে।

খবর নিয়ে জানা গেছে, একটা সময় ঘূর্ণিঝড়ের কোনো নাম থাকত না। আমাদের দেশে ১৯৭০ সালে কিংবা ১৯৯১ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হয়ে গেছে। কিন্তু সেগুলোর কোনো নাম নেই। শুধু আমাদের দেশের নয়, অন্যান্য দেশে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়েরও কোনো নাম থাকত না। একসময় এসব ঝড়ের নাম রাখার একটি চল শুরু হয় একপর্যায়ে। কারণ, নামবিহীন থাকলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি, ধরন সম্পর্কে তথ্য দ্রুত জানা যায় না। এর আঘাত হানার সময় বা তারিখ বের করে পরবর্তী সময়ে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি নির্ণয় করতে হয় আবহাওয়াবিদদের। তাছাড়া ভবিষ্যতের তথ্য উপাত্তের জন্য এবং ডাটা সংরক্ষণের জন্যও ঘূর্ণিঝড়ের নাম প্রয়োজন হয়ে থাকে। নাম থাকলে সেগুলো ধরে পরবর্তীতে কাজ করতে সুবিধা হয়।

এই কাজটি করে থাকে আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও )। ডব্লিউএমও সে জন্য পাঁচটি বিশেষ আঞ্চলিক আবহাওয়া সংস্থার (আরএসএমসি) সঙ্গে সমন্বয় করে ২০০৪ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করেছে। আরএসএমসি তার সদস্যদেশগুলোর কাছ থেকে নামের তালিকা চেয়ে থাকে। তালিকা পেলে দীর্ঘ সময় যাচাই-বাছাই করে সংক্ষিপ্ত তালিকা করে ডব্লিউএমওর কাছে পাঠায়।

এরপর বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা অনুমোদন করে আঞ্চলিক কমিটির একটি প্যানেল। তার নাম ডব্লিউএমও/এসকাপ প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস। এর মধ্যে আছে ভারত, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, ইরান, কাতার, সৌদি আরব, ইয়েমেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০১৮ সালের আরএমএসসি নতুন করে ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা করে। এ সময় ১৩টি দেশ ১৩টি করে নাম দেয়। নামকরণের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মেনে চলা হয়। যেমন রাজনীতি বা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় বিশ্বাস, সংস্কৃতি বা লিঙ্গনিরপেক্ষ হতে হবে নামগুলোকে। বিশ্বের কোনো অঞ্চলের কোনো মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করে, এমন নাম দেওয়া যাবে না। নাম রূঢ় হতে পারবে না। এটি সংক্ষিপ্ত ও সহজে উচ্চারণ করা যায়, এমন হতে হবে। সর্বোচ্চ আটটি বর্ণ থাকতে হবে ওই নামে। নাম দেওয়ার পাশাপাশি এখানে উচ্চারণও দিয়ে দিতে হবে। এরকম নানা বিষয় ঠিকঠাক করে একেকটি ঘূর্ণিঝড়ের একেক নাম হয়ে থাকে।

রেমাল-এর নাম যেভাবে এলো

ঝড়ের নাম ঠিক করার জন্যে প্রত্যেক দেশ কিছু নাম প্রস্তাব করে। প্যানেল অন ট্রপিকল সাইক্লোন-এর কাছে সেই নামগুলো পেশ করা হয় ও একটি তালিকা তৈরি হয়। উল্লেখিত ১৩ দেশের সংস্থা এস্কেপ ২০২০ সালেই ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করে একটি তালিকা তৈরি করে রেখেছে। সেই তালিকা থেকে এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয় ‘রেমাল’। ইংরেজি নামের আদ্যক্ষর অনুযায়ী নামের তালিকা হয়। যেমন ইংরেজি বর্ণমালা অনুযায়ী এই ১৩ দেশের মধ্যে সবচেয়ে আগে থাকে বাংলাদেশের নাম। আর শেষে থাকে ইয়েমেনের নাম। ঘূর্ণিঝড়ের নামের ওই তালিকা থেকেই এর আগের ঘূর্ণিঝড়ের নাম ছিল ইয়েমেনের দেওয়া ‘মোখা’। আর এবার ওমানের দেওয়া নাম ‘রেমাল’। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, রেমাল একটি আরবি শব্দ। এই নামের অর্থ ‘বালু’। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রেমাল’ নামটি ওমানের দেওয়া। এবারের ঘূর্ণিঝড়ের আনুষ্ঠানিক নামকরণের দায়িত্ব ছিল ওমানের।


ঘূর্ণিঝড় রেমাল: আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে ছাত্রলীগকে নির্দেশ

আপডেটেড ২৬ মে, ২০২৪ ১৬:০৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আজ রোববার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সংগঠনটি।

বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানায়, অতীতে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়কালীন সময়ে, শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে, অগ্নিকাণ্ড বা ভবন ধসে উদ্ধারকাজ চালিয়ে, মহামারী করোনাকালীন অসহায়-অসুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে, কৃষকের ধান কেটে নিরাপদে ঘরে পৌঁছে দিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমাজ ও মানুষের প্রতি তার কর্তব্য নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছে।

সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ এ রূপ নিয়েছে যা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বা সুপারসাইক্লোনে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এরই মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকাসহ মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরের জন্য ৭ নম্বর এবং চট্রগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরের জন্য ৬ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করেছে।

সংগঠনটি জানায়, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান করছে। ২৬ মে গভীর রাতে কিংবা ২৭ শে ভোরের মধ্যে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ উপকূলবর্তী এলাকায় তীব্রভাবে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আঘাত হানার সময় কেন্দ্রের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার হতে পারে। এ ছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সারা দেশব্যাপী অতি ভারী বৃষ্টি, প্রবল দুর্যোগ, বজ্রবৃষ্টি এবং সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সহ উপকূলীয় অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হতে পারে। প্রবল বৃষ্টির ফলে ভূমিধস হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

আরও পড়ুন: জ্বলোচ্ছাসে তলিয়ে গেছে সুন্দরবন

সংগঠনটি আরও জানায়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে, সচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়ে, মাইকিং করে, শুকনো ও রান্না করা খাবার, খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করে, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধারকাজ পরিচালনা করে, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঘরবাড়ি স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সংস্কার করে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে এবং স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রমে সহযোগিতা দিয়ে পাশে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার অগ্রদূত, পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ বৈশ্বিক পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ এ ভূষিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বৈশ্বিক রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। দুর্যোগে পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রাণহানি কমিয়ে আনা, আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, দুর্যোগে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, বজ্রপাত নিরোধক কর্মসূচি, গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় গৃহ নির্মাণ, সময়োপযোগী আইন প্রণয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগজনিত ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের ওপর গুরুত্বারোপ করে ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ প্রণয়ন ইত্যাদি কর্মকাণ্ড বাংলাদেশকে দুর্যোগসহনশীল রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলেছে। যার ফলে জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ‘জনসেবা পদক’ লাভ করেছে।

বিষয়:

দুদকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রামীণ ব্যাংকের অভিযোগ

ড. ইউনূস। পুরোনো ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দায়ের করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। অভিযোগে বলা হয়েছে, নিজের মালিকানাধীন পারিবারিক প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশনকে বহুবিধ অবৈধ সুবিধা প্রদান করেছেন ড. ইউনূস।

আজ রোববার গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর মোহাম্মদ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এই লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ব্যতিরেকে ইউনূস নিজেই দর নির্ধারণী কমিটি গঠন পূর্বক নিজের প্রণীত ও স্বাক্ষরিত গ্রামীণ ব্যাংক ক্রয় নীতিমালা লঙ্ঘন করে নিজের মালিকানাধীন পারিবারিক প্রতিষ্ঠানকে কোনো প্রকার প্রতিযোগিতামূলক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান ছাড়াই উচ্চদরে গ্রামীণ ব্যাংকের কোটি কোটি টাকার প্রিন্টিং সামগ্রী ছাপানোর কার্যাদেশ প্রদান করে নিজে ও পরিবারিকভাবে বিপুল অংকের আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন।

এতে বলা হয়েছে, ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ-১৯৮৩ লঙ্ঘন করে এবং পরিচালনা পর্ষদের কাছে গোপন রেখে নিজেই নিজের মালিকানাধীন পারিবারিক প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশনের সঙ্গে ব্যাংকের স্বার্থপরিপন্থি একটি তত্ত্বাবধায়ক (ম্যানেজিং এজেন্ট) চুক্তি করেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, পরিচালনা পর্ষদের কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই ড. ইউনূস ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটিতে গ্রামীণ ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রেষণে নিয়োগ দেন এবং নিজ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গ্রামীণ ব্যাংকের অফিস বিনা ভাড়ায় ব্যবহার করেন।

গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ-১৯৮৩ অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ সুবিধা শুধুমাত্র ভূমিহীন দরিদ্র ঋণগ্রহীতাদের জন্য সীমাবদ্ধ থাকলেও তিনি আইন ভঙ্গ করে তার পারিবারিক রুগ্ন ও লোকসানি প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশনকে বিপুল অংকের ঋণ প্রদান করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগে।

অভিযোগে আরও বলা হয়, পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ড. ইউনূস ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রামীণ ব্যাংকের আর্থিক ক্ষতিসাধন করে নিজ প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অনাদায়ী টাকা সুকৌশলে মওকুফ করিয়ে নিয়েছেন।


সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল: দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

দুর্যোগ মোকাবিলা এবং দুর্গত মানুষের পাশে থাকার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান।

আজ রোববার সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার পর প্রতিমন্ত্রী ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘৮ লাখের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন। বাকিদের আসার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। উপকূলীয় অঞ্চলে আপাতত স্কুল খোলা থাকবে, তবে ক্লাস বন্ধ থাকবে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল আমরা বলেছিলাম আজকে ভোর থেকে এটা শুরু হতে পারে। ঝড়ের গতি কম ছিল বলে আজ ভোরে আসেনি। গতকাল গতিবেগ ছিল ১৬ থেকে ১৭ কিলোমিটার। ভোরে গতি কমে দশের নিচে চলে আসে, পরবর্তীতে ৬ কিলোমিটারে নেমে আসে। যার জন্য এটা সময়মতো এখনো পৌঁছেনি। তবে আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এটা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে এবং আজ সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের প্রথম ভাগ অতিক্রম শুরু হবে। মধ্যরাতে মূল অংশ বাংলাদেশ অতিক্রম করবে।’

‘ঝড়ের কারণে উপকূলীয় এলাকায় ১০ থেকে ১২ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত প্লাবিত হতে পারে। যদি জোয়ার থাকে এটা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রেমালের প্রভাবে সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পুরো এলাকাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এজন্য আমরা সবাইকে নিয়ে আজ সভা করেছি। সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি’- বললেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, ‘এখন থেকে ঝড় শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত যানবাহন লঞ্চ-স্টিমার চলাচল করছে সেগুলো বন্ধ থাকবে। এমনকি বঙ্গবন্ধু যে টানেল রয়েছে সেটি আজ সন্ধ্যা থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা সার্বিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে খাবার এবং বিভিন্ন উপকরণ পৌঁছে গেছে। মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার জন্য সর্বাত্মকভাবে কাজ করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, আমাদের মেডিকেল টিমগুলো প্রস্তুত রয়েছে। সেনাবাহিনী যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসও প্রস্তুত রয়েছে। পেছনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই ঘূর্ণিঝড়কে আরও শক্তভাবে মোকাবিলা করার জন্য আমরা সমস্ত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’

এদিকে ক্রমেই শক্তিশালি হয়ে ওঠছে বঙ্গোবসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। এ জন্য জারি করা হয়েছে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত। গতকাল রাতে পায়রা-মোংলায় ৭ ও কক্সবাজার-চট্টগ্রামে ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের পর আজ রোববার সকালে নতুন করে মহাবিপদ সংকেতের কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

নতুন বিপদ সংকেতে, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড় রিমাল নিয়ে দেওয়া ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে নতুন করে ৯ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে হবে।

ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। এর অগ্রভাগের প্রভাব ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের উপকূলে। ঘূর্ণিঝড় উপকূলের দিকে এগিয়ে আসায় এর গতিপথ এবং উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাব্য সময় জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।


ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’: কখন, কোন পথে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ মে, ২০২৪ ১৫:৪৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ক্রমেই শক্তিশালি হয়ে ওঠছে বঙ্গোবসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। এ জন্য জারি করা হয়েছে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত। গতকাল রাতে পায়রা-মোংলায় ৭ ও কক্সবাজার-চট্টগ্রামে ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের পর আজ রোববার সকালে নতুন করে মহাবিপদ সংকেতের কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

নতুন বিপদ সংকেতে, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড় রিমাল নিয়ে দেওয়া ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে নতুন করে ৯ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে হবে।

ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। এর অগ্রভাগের প্রভাব ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের উপকূলে। ঘূর্ণিঝড় উপকূলের দিকে এগিয়ে আসায় এর গতিপথ এবং উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাব্য সময় জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় রিমাল আজ সকাল ছয়টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে এগিয়ে ঘনিভূত হতে পারে।

রিমালের সম্ভাব্য গতিপথ এবং আঘাত হানার সময় নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি আজ রোববার সন্ধ্যা বা মধ্যরাত নাগাদ মোংলার কাছ দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়ার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের উপকূল অতিক্রম করার সুনির্দিষ্ট সময়ের বিষয়ে জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, এর গতি কখনো বাড়ছে কখনো কমছে। তাই ঠিক কোন সময়ে এটি উপকূল অতিক্রম করবে তা বলা যাচ্ছে না। তবে সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতের মধ্যেই এটি উপকূল অতিক্রম করবে।

সন্ধ্যার দিকে উপকূল অতিক্রম করলে সেই সময় অনেক স্থানে ভাটা থাকবে। তাই জলোচ্ছ্বাসের তীব্রতা কম হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তবে বেশি রাতের দিকে ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম করলে জলোচ্ছ্বাস বড় আকারে হতে পারে বলেও তারা উল্লেখ করেন।

আজ রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড় রেমাল নিয়ে দেওয়া ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে নতুন করে ৯ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।

এদিকে ‘রেমাল’ মোকাবিলায় দেশের ছয় জেলাকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। এ ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও ভূমি অতিক্রমের সম্ভাব্য এলাকার ভিত্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাগুলো হলো সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা।

গতকাল ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ঘূর্ণিঝড়সহ সব দুর্যোগে তার নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনায় আমরা যথাসময়ে প্রস্তুতি নিয়ে মানুষের দুর্দশা লাঘব এবং জীবন ও সম্পদের ক্ষতি কমাতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘূর্ণিঝড়টিও যাতে একই ধারাবাহিকতায় সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারি তার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’


ঘূর্ণিঝড় রেমাল : জারি হলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত

আপডেটেড ২৬ মে, ২০২৪ ১১:০১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ক্রমেই ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ শক্তিশালি হয়ে ওঠছে। গতকাল রাতে পায়রা-মোংলায় ৭ ও কক্সবাজার-চট্টগ্রামে ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের পর আজ রোববার সকালে নতুন করে মহাবিপদ সংকেতের কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

নতুন বিপদ সংকেতে, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড় রিমাল নিয়ে দেওয়া ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে নতুন করে ৯ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে হবে।

১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় (১৯.৫০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৪০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি আজ (২৬ মে) সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩০ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ (রোববার) সন্ধ্যা/মধ্যরাত নাগাদ মোংলার কাছ দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ) খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমানের স্বাক্ষর করা ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলোর নিচু এলাকা স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবের দেশের সব বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

এদিকে ‘রেমাল’ মোকাবিলায় দেশের ছয় জেলাকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। এ ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও ভূমি অতিক্রমের সম্ভাব্য এলাকার ভিত্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাগুলো হলো সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা।

গতকাল ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ঘূর্ণিঝড়সহ সব দুর্যোগে তার নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনায় আমরা যথাসময়ে প্রস্তুতি নিয়ে মানুষের দুর্দশা লাঘব এবং জীবন ও সম্পদের ক্ষতি কমাতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘূর্ণিঝড়টিও যাতে একই ধারাবাহিকতায় সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারি তার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’


ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’

মহাবিপদ সংকেত জারির সম্ভাবনা
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ মে, ২০২৪ ০০:০২
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালে’ পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) গতকাল শনিবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছে। এটি সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি-১ শক্তিমাত্রার ঝড় হিসেবে আজ রোববার দিবাগত রাত থেকে আগামীকাল সোমবার সকালের মধ্যে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি)। ঝড়ের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। গতকাল রাত ৯টায় আবহাওয়া অধিদপ্তর মোংলা ও পায়রায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখানোর নির্দেশ দিয়েছে। তবে গতকাল দুপুরেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান প্রবল শক্তিসম্পন্ন ঝড়টির বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন রাতেই মহাবিপদ সংকেত জারি হতে পারে। তিনি উপকূলবাসীকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিডব্লিউওটির প্রধান আবহাওয়া গবেষক খালিদ হোসেনের সই করা এক বার্তায় বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দীঘা থেকে বাংলাদেশের পটুয়াখালীর মাঝামাঝি যেকোনো জায়গা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে। তবে এর সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটসহ এর আশপাশের কিছু জেলা।

এখন পর্যন্ত ঝড়ের গতিপথ সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা হওয়ায় আইলা, সিডরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি ক্ষতির আশঙ্কা সুন্দরবনে।

বার্তায় বলা হয়, এ ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ শক্তিমাত্রা হতে পারে ক্যাটাগরি-১। তবে আশা করা যায়, ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটারের বেশি এটি গতিবেগ পাবে না। তবে আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে এটি তার পূর্ণ শক্তিতে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এসময় দমকা বা ঝোড়ো বাতাসের বেগ আরও কিছুটা বেশি থাকতে পারে।

‘রেমাল’র কারণে গতকাল রাত সাড়ে ৮টার পর থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হতে দেখা গেছে। মধ্যরাতের পর তা বেড়েছে বলে জানা যায়।

গতকাল এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সর্বশেষ ৬ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় থাকা গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে একই এলাকায় আছে।

এটি গতকাল সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।

গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।

সাগর উত্তাল থাকায় উপকূলীয় এলাকাগুলোতে যাত্রীবাহী লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তবে দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথগুলোতে চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দেশের ছয় জেলাকে বিশেষ সতর্ক নির্দেশনা দিয়েছে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। নির্দেশ দেওয়া জেলাগুলো হলো- সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা। এই জেলাগুলোতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।

অন্যদিকে, বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসা গভীর নিম্নচাপে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’র প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা থেকে ভারতের চারটি রাজ্যে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)।

এদিকে বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসা গভীর নিম্নচাপে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’র প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের আশঙ্কায় ভারতের চারটি রাজ্যে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)।

জারি হতে পারে মহাবিপদ সংকেত

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ আজ রোববার নাগাদ সাতক্ষীরা ও কক্সবাজারের মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে। এজন্য গতকাল শনিবার মধ্যরাতে মহাবিপদ সংকেত জারি হওয়ার কথা জানান। গতকাল সচিবালয়ে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আমরা বুঝতে পেরেছি, ঘূর্ণিঝড়টি আসন্ন।’

মহিববুর রহমান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টিতে সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত কমবেশি এফেকটেড (আক্রান্ত) হতে পারে। ৭ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। এজন্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হতে পারে।’

আজ সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানতে পারে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘উপকূলীয় জেলায় আমাদের প্রায় ৪ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এগুলো আমরা প্রস্তুত রেখেছি। খাদ্যের জন্য আমাদের প্রত্যেকটি জেলায় গুদামে পর্যাপ্ত শুকনো খাবারসহ যেসব জিনিস দরকার হবে এগুলো মজুত রেখেছি। প্রয়োজনে ঢাকা থেকে যাতে আরও সাপ্লাই (সরবরাহ) দিতে পারি এজন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’

উপকূলীয় এলাকায় লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপকে কেন্দ্র করে উপকূলীয় এলাকায় লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। শনিবার বিকালে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ এর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন।

তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে যে গভীর নিম্নচাপটি সৃষ্টি হয়েছে সেটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ায় আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। সমুদ্র বন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেজন্য উপকূলীয় এলাকায় সব ধরনের লঞ্চ এবং নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএর সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

অপরদিকে সাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ এবং সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের ভবনের ষষ্ঠ তলায় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত থেকে আবহাওয়া অফিস, কর্তৃপক্ষের সকল নদীবন্দরে স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, বন্দরের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা, নদীবন্দরের বিভিন্ন বিভাগের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা এবং ড্রেজার বেইজের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখবেন।

নিয়ন্ত্রণ কক্ষে যোগাযোগ করার জন্য টেলিফোন নম্বর +৮৮০২২২৩৩৫২৩০৬ ও মোবাইল নম্বর ০১৯৫৮৬৫৮২১৩ ব্যবহারের অনুরোধ করা হয়েছে।

টেকনাফে তীব্র বাতাস ভারী বৃষ্টি

দৈনিক বাংলার টেকনাফ প্রতিনিধির দেওয়া তথ্যমতে, গতকাল সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’, পরিস্থিতি কিছুটা ভালো থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায় রূপ। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উপকূলের দিকে এগোতে থাকায় কক্সবাজার টেকনাফ সেন্টমার্টিন ও শাহপরীরদ্বীপ এলাকায় তীব্র গতির বাতাস বইছে ও অঝোরে ঝরছে বৃষ্টি। অন্যদিকে তীব্র ঢেউয়ের কারণে উত্তাল হয়ে উঠেছে সাগর।

শনিবার বিকেল ৪টার দিকে টেকনাফ, শাহ পরীর দ্বীপ এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত শুরু হয়। অন্যদিকে বাতাসের তীব্র গতির কারণে আশপাশের গাছগাছালি যেন ভেঙে পড়ার অবস্থা তৈরি হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, আশপাশের দোকানগুলো সবই বন্ধ। বন্ধ দোকানের সামনে বসে আছেন অনেকেই। খোলা জায়গায় অনেক স্থানে গরু বাধা থাকলেও কোনো মানুষ দেখা যায়নি। টেকনাফ সড়কের চেকপোস্টগুলো ফাঁকা দেখা গেছে। স্থানীয় পরিবহন চলাচলও বন্ধ রয়েছে।

টেকনাফের সেন্টমার্টিনেও বাতাসের গতিবেগ বেড়েছে, সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। খবর নিয়ে জানা গেছে, আতঙ্কের মধ্যে সময় কাটাচ্ছে সেন্টমার্টিনের সাধারণ মানুষ। সতর্ক আছি উল্লেখ করে সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস জনজীবন, মনে হচ্ছে বড় কিছু হতে যাচ্ছে। দ্বীপে সাগর উত্তাল রয়েছে। সকাল থেকে আকাশ মেঘ থাকলেও বাতাস শুরু হয়েছে। এ ছাড়া স্বাভাবিকের চেয়ে সাগরের পানির উচ্চতা বেড়েছে।’

টেকনাফ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ সাফকাত আলী বলেন, ‘মেডিকেল টিমসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া সাগর-নাফ নদের কারণে আমরা সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপকে গুরুত্ব দিচ্ছি বেশি।’

উপকূলের নদীতে বেড়েছে জোয়ারের পানি

বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের নদ-নদীগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি বেড়েছে। ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে উপকূলের জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধের ওপর আছড়ে পড়েছে পানির স্রোত। এতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে উপকূলের মানুষ।

শ্যামনগর উপজেলার উপকূলবর্তী গাবুরা, পদ্মপুকুর, আটুলিয়া, বুড়িগোয়ালিনী, কৈখালী, রমজাননগর ও মুন্সীগঞ্জ এলাকায় নদীপাড়ের বসবাসকারীদের কাছ থেকে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে জোয়ারে স্বাভাবিকের চেয়ে নদীতে দুই থেকে তিন ফুট পর্যন্ত পানি বেড়েছে।

শ্যামনগর উপকূলের চুনা নদীতে জোয়ারের পানি কয়েক ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় কলবাড়ি জেলেপাড়ায় বসবাসকারী ১৩টি জেলে পরিবারের বসতঘরের আঙিনায় জোয়ারের পানি ওঠার খবর পাওয়া যায়। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিবুল আলম বলেন, শ্যামনগর উপজেলার ১৬৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া প্রয়োজনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য বহুতল ভবন নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ব্যবহার করা হবে। এছাড়া, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুকনা খাবারসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী মজুত আছে। আমরা ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা দেখে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করব। তবে সবার জন্য বলব, কেউ যেন ঝুঁকি নিয়ে অনিরাপদ আশ্রয়ে না থাকেন।

এদিকে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ও উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি), রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও রোভার স্কাউটের সদস্যরাও যেকোনো ধরনের সহায়তার জন্য প্রস্তুত আছেন বলে জানা গেছে।

চলতি প্রাক-বর্ষা মৌসুমে বঙ্গোপসাগরে এটিই প্রথম ঘূর্ণিঝড় হতে যাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ায় ‘রেমাল’। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঝড়ের নাম দিয়েছে ওমান। আরবি শব্দ রেমালের অর্থ বালি।


রিজার্ভ ১৮ কোটি ডলার বেড়েছে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ মে, ২০২৪ ১১:৪৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে ১৮০ মিলিয়ন বা ১৮ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ২১ মে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে, অর্থাৎ এক সপ্তাহে রিজার্ভ বেড়েছে ১৮০ মিলিয়ন বা ১৮ কোটি ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ম্যানুয়াল-৬ অনুযায়ী, ১৫ মে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ১৮ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের জুলাই থেকে আইএমএফের পরামর্শে নতুন পদ্ধতিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গণনা শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে, গত ১১ মে ১১ মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যায়।

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মার্চ-এপ্রিল মেয়াদের ১ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ কমে ১৮ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল। ‘গ্রস’ হিসাবে রিজার্ভ নেমেছিল ২৩ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে। কোরবানির ঈদ এবং টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ায় রেমিট্যান্স পালে হাওয়া লাগায় রিজার্ভ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা। বাংলাদেশ ব্যাংক সপ্তাহে একদিন রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করে। সেই তথ্য অনুযায়ী, গত ৮ মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। ‘গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার।

১৪ মে আকুর দেনা শোধের পর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ কমে ১৮ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। ‘গ্রস’ হিসাবে নেমেছিল ২৩ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে। হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, নয় দিনে বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ বেড়েছে ৩৬ কোটি ডলার। ‘গ্রস’ হিসাবে বেড়েছে ৩৭ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। ডলারের দাম বাড়াতেও রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়েও প্রভাব পড়েছে। সব কিছু মিলিয়ে রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে। এখন রিজার্ভ আর কমবে না; বাড়তেই থাকবে।

এর আগে গত ১১ মার্চ আকুর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের ১ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ কমে ১৯ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল। ‘গ্রস’ হিসাবে নেমেছিল ২৫ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলারে। ৯ জানুয়ারি আকুর নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের ১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ নেমেছিল ২০ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারে। ‘গ্রস’ হিসাবে নেমেছিল ২৫ দশমিক ৭৫ ডলারে। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এর পর থেকে তা কমতে থাকে। এক বছর আগে গত বছরের ২১ মে ‘গ্রস’ হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম দিকে কমতে কমতে বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামে। ১৩ ডিসেম্বর রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার। এর পর আইএমএফের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির ৬৯ কোটি ডলার, এডিবির ৪০ কোটি ডলার এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ৯ কোটি ডলার যোগ হওয়ায় বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ বেড়ে ২১ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। ‘গ্রস’ হিসাবে ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।

গত বছরের ১২ জুলাই থেকে আইএমএফের কথামতো রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘গ্রস’ হিসাবের পাশাপাশি বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুসরণ করেও রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই দিন ‘গ্রস’ হিসাবে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম-৬ হিসাবে ছিল ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। ১২ জুলাইয়ের আগে শুধু ‘গ্রস’ হিসাবের রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করত বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক বিপিএম-৬ হিসাবের রিজার্ভকে ‘তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য’ রিজার্ভ হিসাবে দাবি করে।

সবশেষ গত মার্চ মাসের আমদানির তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, ওই মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। সে হিসাবে ‘তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য’ বর্তমানের ১৮ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুত থাকতে হয়।


সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে আসছে আরও ৪ লাখ মানুষ

সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়লেও মাসিক বরাদ্দ বাড়ছে না
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ মে, ২০২৪ ১৪:১৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী (২০২৪-২৫) অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সুবিধাভোগীর সংখ্যা আরও ৪ লাখ বাড়াবে সরকার। তবে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি সত্ত্বেও মাসিক ভাতা বাড়বে না বলে জানা গেছে। প্রায় ১.১৪ কোটি বয়স্ক মানুষ, বিধবা বা স্বামী-নিগৃহীতা নারী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বর্তমানে মাসে ৫৫০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকা পর্যন্ত সরকারি ভাতা পান।

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের কাছাকাছি। মোটা চাল, আলু, ডিম থেকে শুরু করে ওষুধ পর্যন্ত সবকিছুর দাম বেড়েছে। কিন্তু সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পের আওতায় বয়স্ক এবং দুস্থ মানুষের ভাতার পরিমাণ বাড়বে না। অবশ্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরের নতুন বাজেটে সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনীর উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার যদি মাসিক ভাতার পরিমাণ না বাড়ালে মূল্যস্ফীতির মধ্যে হিমশিম খেতে থাকা উপকারভোগীদের জন্য জীবন চালানো খুব কঠিন হয়ে পড়বে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর জন্য চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ রয়েছে ১.২৬ লাখ কোটি টাকার বেশি। আগামী অর্থবছরে এর পরিমাণ প্রায় ১.৩ লাখ কোটি টাকা হতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।

চলতি অর্থবছর ৫৮.০১ লাখ বয়স্ক নাগরিক ভাতার আওতায় রয়েছেন। এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৪ হাজার ২০৫.৯৬ কোটি টাকা। ৯০ বছর বা তার অধিক বয়স্কদের ভাতা বৃদ্ধির পাশাপাশি উপকারভোগীর সংখ্যা আরও দুই লাখ বাড়ানোর লক্ষ্য থাকায় ব্যয়ের পরিমাণ প্রায় ২২০ কোটি টাকা বাড়তে পারে। এজন্য আগামী অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে ৪ হাজার ৪২৫.৩৫ কোটি টাকা রাখা হচ্ছে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (বয়স্ক ভাতা) ফরিদ আহমেদ মোল্লা বলেন, ৯০ বছর বা তার অধিক বয়সি প্রায় দুই লাখের মতো বয়স্ক নাগরিক বর্তমানে বয়স্ক ভাতার আওতায় রয়েছেন। তাদের ভাতা বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বয়স্ক ভাতা প্রকল্পে দুই লাখ নতুন উপকারভোগী যুক্ত হতে পারেন। চলতি অর্থবছরে ২৫.৭৫ লাখ বিধবা ও স্বামী-নিগৃহীতা নারীর ভাতার জন্য ১ হাজার ৭১১.৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। বর্তমানে তারা প্রতি মাসে ৫৫০ টাকা ভাতা পাচ্ছেন। আগামী অর্থবছর বিধবা ও স্বামী-নিগৃহীতাদের ভাতা বাবদ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ১ হাজার ৯৩০.৭৭ কোটি টাকা। আরও এক লাখ নারী এ ভাতার আওতায় আসবেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

বর্তমানে ২৯.৮৭ লাখ অসচ্ছল প্রতিবন্ধী মাসে ৮৫০ টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন। চলতি অর্থবছরে এজন্য বরাদ্দ রয়েছে ২ হাজার ৯৭৮.৭১ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে আরও এক লাখ প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আসবেন। তবে ভাতার পরিমাণ অপরিবর্তিত থাকবে। নতুন উপকারভোগী যুক্ত হওয়ায় এ খাতে বরাদ্দ বেড়ে ৩ হাজার ১৯৮.০৮ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে বলে জানান কর্মকর্তারা।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মাসিক সম্মানী ৩০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। বর্তমানে বীর মুক্তিযোদ্ধারা মাসে ২০ হাজার টাকা করে সম্মানী পান।

মাসে ১০ হাজার টাকার কম আয় করেন এমন ৬৫ বছরের অধিক বয়সি পুরুষ ও ৬২ বছরের অধিক বয়সি নারীরা বয়স্ক ভাতার আওতায় রয়েছেন। বর্তমানে তারা মাসে ৬০০ টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন।

চলতি অর্থবছর দেশের ২৬২ উপজেলায় সব যোগ্য প্রবীণ নাগরিক এ সুবিধা পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা। বাকি ২৩৩ উপজেলার সব যোগ্য ব্যক্তিকে বয়স্ক ভাতার আওতায় আনলে উপকারভোগীর সংখ্যা আরও আট লাখ বাড়াতে হবে বলে জানান তারা।

অবশ্য সর্বজনীন পেনশনের আওতায় যখন বয়স্করা মাসিক পেনশন পাওয়া শুরু করবেন, তখন পর্যায়ক্রমে বয়স্ক ভাতায় উপকারভোগীর সংখ্যা আবার কমতে থাকবে বলে জানান কর্মকর্তারা।

পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের তৈরি করা ‘সামাজিক সুরক্ষা সেক্টর অ্যাকশন প্ল্যান’ প্রতিবেদনে দেশের ৬০ বছরের বেশি বয়সি সব নাগরিককে বয়স্ক ভাতার আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর উপকারভোগীদের তালিকা যাচাই করে প্রকৃত দরিদ্রদের সুবিধা দেওয়া এবং এ খাতে বরাদ্দের হার বাড়িয়ে জিডিপির ৩ শতাংশে উন্নীত করার সুপারিশ করা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে চলতি অর্থবছরে জিডিপির ২.৫২ শতাংশ বরাদ্দ রয়েছে।


৮০ শতাংশ বিত্তবান কর ফাঁকি দিচ্ছেন: ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

ইউএনওদের দামি গাড়ি দেওয়া রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয়
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৫ মে, ২০২৪ ২২:৩২
নিজস্ব প্রতিবেদক

কর ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা, বৈষম্য, দুর্নীতি ও অন্যায্যতা বহাল রেখে আসন্ন বাজেটে করারোপ করা হলে সেটি রাজস্ব আহরণে ভালো ফল দেবে না। রাজনীতিবিদ বা প্রভাবশালীদের চাপের কারণে রাজস্ব আহরণ যাতে বিঘ্নিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ৮০ শতাংশ বিত্তবান কর ফাঁকি দিচ্ছেন। ব্যবসায়ীদের বড় একটা অংশ ভ্যাট দেয় না। এত কম রাজস্ব আয় দিয়ে সরকারি কর্মচারীদের বেতন চালানোই যাচ্ছে না সেখানে উন্নয়ন ব্যয় মেটাবে কীভাবে।

এফডিসিতে আজ শনিবার অর্থনৈতিক সুরক্ষায় আগামী বাজেটের কৌশল নিয়ে ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

ডিসি-ইউএনওদের দামি গাড়ি দেওয়ার সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় জা‌নি‌য়ে ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ব‌লেন, ‘বর্তমানে আশঙ্কাজনকভাবে ঋণ নির্ভরতা বাড়ছে। দেশে রিজার্ভের পরিমাণ যেভাবে কমে যাচ্ছে তা শঙ্কার কারণ হতে পারে। আর্থিক খাতে সুশাসনে আমরা অনেকটা এগিয়েছিলাম, কিন্তু বর্তমানে কীভাবে পিছিয়ে গেলাম সেটাই বিস্ময়কর।’

বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পর্কে আইএমএফ খুব বেশি জানে এটি বিশ্বাস করার কারণ নেই। আইএমএফের পরামর্শ দেশ ও জনগণের স্বার্থ বিবেচনা করে গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের কিছু ব্যক্তি দুবাই-সিঙ্গাপুরসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিলিয়নিয়ারদের মধ্যে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন। তারা কোন দেশের নাগরিক সেটাও স্পষ্ট নয়। তারা কীভাবে টাকা আনা নেওয়া করছেন বাংলাদেশ ব্যাংক সে বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারছে না।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, অনিয়ন্ত্রিত দ্রব্যমূল্য, বৈদেশিক ঋণের চাপ, আর্থিক খাতে অনিয়ম, প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধিসহ নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে ঘোষিত হচ্ছে আসন্ন বাজেট। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান আয় বৈষম্য সমাজে নীরব অসন্তোষ তৈরি করছে। রিজার্ভের ঘাটতির ফলে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে। আমদানি ব্যয় বেড়েছে। দেশে বর্তমানে মোট অনাদায়ি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৬ লাখ কোটি টাকা। ক্রমান্বয়ে আমাদের কঠিন শর্তের ঋণ বাড়ছে, ডেট সার্ভিসিংয়ের বোঝা বাড়ছে। সে কারণে আমরা যে টাকাটা ঋণ হিসেবে নিচ্ছি তা সঠিকভাবে ব্যয় হচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাংলাদেশে কর আহরণের পরিমাণ বিশ্বের সর্বনিম্ন। দেশের মানুষের মধ্যে কর না দেওয়ার মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। বছরে কোটি টাকা আয় করেন এ রকম মানুষের মধ্যে ৬৭ শতাংশ কর প্রদান করে না। নেপাল, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকার চেয়েও কম আয়কর দেন আমাদের দেশের মানুষ। এমনকি কেনিয়া ও সিয়েরা লিয়নের মানুষ আমাদের চেয়েও বেশি আয়কর দেন।’

চৌধুরী কিরণ আরও বলেন, ‘আমাদের মতো দেশে বাজেট বাস্তবায়নের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দুর্নীতি। বাজেট বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকলে কর আহরণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা যাবে না। কর আহরণ প্রক্রিয়ায় সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে। শুধু রাজস্ব আদায় করেই অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে না। আর্থিক খাতে বর্তমানে যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে তা বন্ধ করতে হবে। ঋণ জালিয়াতকারী, ঋণ খেলাপি, অর্থপাচারকারীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অর্থপাচারের মতো ক্যান্সারের চিকিৎসা উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার এখন জরুরি। বাংলাদেশ ব্যাংক আরোপিত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করলে আর্থিকখাতে সুশাসন নিশ্চিত করা যাবে না। তাহলে ধীরে ধীরে মানুষ ব্যাংকিং খাতের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলবে। ব্যাংকে নিরাপদে আমানত রাখার নিশ্চয়তা না থাকলে অর্থপাচার বাড়বে। তাই রাজস্ব আয়ের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ আয় বাড়ালেও আর্থিক খাতে সুশাসন ও জবাবদিহিতা না থাকলে অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে না।

অর্থনৈতিক সুরক্ষায় আসন্ন বাজেটের কৌশল নিধার্রণে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান ১০ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করেন-

১. খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে কৃষিবান্ধব বাজেট প্রণয়ন করা, ২. পোশাকসহ অন্যান্য রপ্তানি খাতে অপ্রয়োজনীয় প্রণোদনা কমিয়ে আনা, ৩. নতুন কোনো প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা, ৪. শেয়ার বাজারে ক্যাপিটাল গেইনের ওপর ট্যাক্স আরোপ করা, ৫. যারা কর প্রদান করছে তাদের ওপর অযৌক্তিকভাবে করের বোঝা না বাড়িয়ে করের আওতায় বাড়ানো, ৬, প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিট্যান্সের ওপর প্রণোদনা ২.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা, ৭. শিক্ষা ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বর্তমান মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় বরাদ্দ বাড়িয়ে এর আকার বৃদ্ধি করা, ৮. আসন্ন বাজেটকে সামনে রেখে জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিতের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রবেশ নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তা নিরসন করা, ৯. এনবিআরকে কর আহরণে কঠোর অবস্থান নিতে রাজনৈতিক সুরক্ষা প্রদান করা ও ১০. বাংলাদেশ রেলওয়ে, বিআরটিসি ও বিমানসহ লোকসানি খাতে বরাদ্দ প্রদানে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা।

‘অর্থনৈতিক সুরক্ষায় রাজস্ব আয় বৃদ্ধি আগামী বাজেটের প্রধান কৌশল হওয়া উচিত’ শীর্ষক ছায়া সংসদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ইডেন মহিলা কলেজে বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, বিআইডিএস এর রিসার্চ ফেলো তাহরিন তাহরীমা চৌধুরী, প্রফেশনাল অ্যাকাউনট্যান্ট আবুল বশির খান, সাংবাদিক শাহ আলম খান। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।


চীনে গেল আ. লীগের ৫০ সদস্যের প্রতিনিধিদল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৫০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল চীনে গেছে। সেখানে প্রতিনিধিদলটি দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ ঝেজিয়াংয়ে মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেবে।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে শাসক দলের বিশাল বহরটির এই সফর। আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চীনের পথে রওনা হন প্রতিনিধিদলটির সদস্যরা।

প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ও জাতীয় সংসদের সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়। এ প্রতিনিধি দলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী ও প্রার্থী প্রথম সংগঠনের নেতারা হয়েছেন।

দলের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এ প্রতিনিধিদলে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন লীগের নেতারা।

দলের একটি সূত্র জানায়, প্রতিনিধিদলটিতে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের ৮ জন কেন্দ্রীয় নেতা, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৮ জন কেন্দ্রীয় নেতা, মহিলা আওয়ামী লীগের ৮ জন, যুব মহিলা লীগের ৬ জন, মহিলা শ্রমিক লীগের ৫ জন, ছাত্রলীগের ৮ জন ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ডেটাবেজ টিমের ৮ সদস্য রয়েছেন।

প্রতিনিধিদলটির সদস্যরা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আয়োজনে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মশালা অংশ নেবেন। পাশাপাশি তারা চীনের মানুষ পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক ও মতবিনিময় করবেন বলে জানা গেছে।

মূলত সেখানে একটি প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন এই প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। পাশাপাশি চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক, দলটির জনগণের জন্য পরিচালিত কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, এক মাস পর আগামী ২৫ জুন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের আরেকটি দলের চীন সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে এ মাসের মাঝামাঝি চীন সফরে যান ১৪-দলীয় জোটের তিন শরিক দলের ৯ শীর্ষ বাম নেতা। এরা হচ্ছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, জাসদের কার্যকরী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম, জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহম্মদ মোহসীন, ওয়ার্কার্স পার্টির নারী নেত্রী লুৎফুন্নেছা খান, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য মোস্তফা লুৎফুল্লাহ, সাম্যবাদী দলের নেতা তৃপ্তি বড়ুয়া, হ মোশায়হিদ।

আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতারা বলছেন, জোটের বাম নেতারা প্রায় প্রতি বছরই আমন্ত্রিত হয়ে চীন সফরে যান। চলতি বছর কয়েক ধাপে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা সফরে যাবেন, যা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।


কসাই জিহাদকে নিয়ে এমপির দেহাংশের খোঁজে আবারও তল্লাশি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কলকাতায় খুন হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের দেহাংশের খোঁজে আবারও অভিযানে নেমেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। এ জন্য তারা গ্রেপ্তার ‘কসাই’ জিহাদকে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ও জলাশয়ে তল্লাশি চালিয়েছে। তবে মরদেহের অংশবিশেষের খোঁজ মেলেনি।

শনিবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১২টা থেকে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার পোলেরহাট থানার কৃষ্ণমাটির বাগজোলা খালে তল্লাশি শুরু করে সিআইডি। খালে জাল ফেলে ও নৌকা দিয়ে চলছে এই তল্লাশি অভিযান। কিন্তু এখন পর্যন্ত সন্ধান মেলেনি নিহত এমপির দেহাংশের। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে জিহাদকে সঙ্গে নিয়ে দফায় দফায় চলছে এই অভিযান।

সকালে বাগজোলা খালের পানিতে নামানো হয় কলকাতা পুলিশের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যদের।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, খালে তল্লাশি শেষে জিহাদকে নিয়ে তাদের সঞ্জিভা আবাসনের বিইউ সিক্সটি ফোর ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে বনগাঁ থেকে জিহাদকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, সংসদ সদস্য আনারকে শ্বাসরোধে হত্যার পর হাড় থেকে মাংস আলাদা করে বানানো হয় কিমা। টুকরো টুকরো করে ফেলা হয় হাড়। মাংসে মাখানো হয় হলুদ ও মশলা। এরপর তা পলিব্যাগ ও ট্রলিতে ভরে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়। আর এই পুরো কাজটি করে কসাই জিহাদ।

বৃহস্পতিবার রাতেই জিহাদকে নিয়ে বাগজোলা খালে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। কিন্তু লাশের কোনো টুকরা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই শুক্রবার জিহাদকে এনে আবারও তল্লাশি শুরু করে পুলিশ।

এদিকে শুক্রবার দুপুরে জিহাদকে বারাসাতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের (সিজিএম) এজলাসে তোলা হলে আদালত জিহাদের ১২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

আদালত থেকে তাকে নিয়ে আবার শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। তারপর শুরু হয়েছে অভিযান। সে দেখিয়ে দেয়, কোথায় ফেলা হয়েছে সংসদ সদস্যের দেহাংশ। সিআইডির সঙ্গে এবার মাঠে নেমেছে স্থানীয় ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ।

গত ১২ মে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে কলকাতায় যাওয়ার পরেরদিন রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান তিনবারের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার।

বুধবার সকালের দিকে তার খুনের খবর প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ বলছে, কলকাতার উপকণ্ঠে নিউ টাউনের অভিজাত আবাসন সঞ্জিভা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে আনারকে খুন করা হয়।

খুনের আলামত মুছে ফেলতে দেহ কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়। এরপর স্যুটকেস ও পলিথিনে ভরে ফেলে দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়।

হত্যাকাণ্ডের পর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে। এরা হলেন- হত্যাকাণ্ডের মূল সংঘটক ও চরমপন্থি সংগঠন পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, শিলাস্তি রহমান ও ফয়সাল আলী ওরফে সাজি। এই তিনজনকে শুক্রবার আট দিনের হেফাজতে পেয়েছে ডিবি।

পুলিশ বলছে, পুরো হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী বা মাস্টারমাইন্ড হলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আখতারুজ্জামান শাহীন। এমপিকে হত্যার পর মরদেহের মাংস কিমা ও হাড় টুকরো টুকরো করে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়। কয়েকজন হত্যাকারীকে নিয়ে এ কাজে নেতৃত্ব দেন শিমুল। তিনি পরিচয় গোপন করে আমানউল্লাহ আমান নামে পাসপোর্ট করে কলকাতা যান।

জিহাদকে দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় মরদেহ ফেলার পর বান্ধবী শিলাস্তিকে নিয়ে ঢাকায় ফেরেন শিমুল ভূঁইয়া। আখতারুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে বৈঠক করেন। শাহীন দেশ ত্যাগ করে পালিয়ে যায়।


ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’: পায়রা-মোংলায় ৭, কক্সবাজার-চট্টগ্রামে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত

আপডেটেড ২৫ মে, ২০২৪ ২১:০৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দেশের চারটি সমুদ্র বন্দরের ওপর সতর্ক সংকেত বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আজ শনিবার রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) জানায়, বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপটি সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালে’ পরিণত হয়েছে। যা সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি-১ শক্তিমাত্রার ঝড় হিসেবে কাল ২৬ মে দিবাগত রাত থেকে আগামী পরশু ২৭ মে সকালের মধ্যে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারনে দেশের ছয় জেলাকে বিশেষ সতর্ক নির্দেশনা দিয়েছে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। নির্দেশ দেওয়া জেলাগুলো হলো- সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা। এই জেলাগুলোতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।

অন্যদিকে বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসা গভীর নিম্নচাপে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’র প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা থেকে ভারতের চারটি রাজ্যে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)।


banner close