রোববার, ২৬ মে ২০২৪

তেজগাঁওয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ গেল যুবকের

আপডেটেড
৭ জুন, ২০২৩ ১৬:১৩
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ৭ জুন, ২০২৩ ১৫:৪৯

রাজধানীর তেজগাঁও লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে দুলাল হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। বুধবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।

দুলালের বাড়ি ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া থানার ছোনাউটা গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল মজিদ। তিনি হাতিরপুল ফ্রি স্কুল স্ট্রিট এলাকায় মেসে থাকতেন।

নিহতের ভাগনে তরিকুল ইসলাম জানান, দুলাল হোসেন নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন নামে একটি বিদ্যুৎ কোম্পানির গাড়ি চালাতেন। গাড়িটি নষ্ট হওয়ায় তেজগাঁও র‌্যাংগস গ্রুপের ওয়ার্কশপে মেরামত করতে দেয়া হয়। সেখান থেকে গাড়িটি আনতে যাওয়ার সময় ট্রেনে কাটা পড়েন তিনি।

তেজগাঁও বিভাগের ফায়ার সার্ভিস লিডার আবুল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি রেলওয়ে থানাকে জানানো হয়েছে।


আগামী কয়েক মাস বাংলাদেশের রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকবে: মুডিস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য স্বস্তির খবর দিল আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সি মুডিস। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি বলছে, আগামী কয়েক মাস দেশের রিজার্ভ পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে। এমন খবরে গেল কয়েক মাসে কমতে থাকা রিজার্ভ নিয়ে দুশ্চিন্তা ‍কিছুটা হলেও কাটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মুডিসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়া চলমান রাখায় রিজার্ভ নিয়ে দুশ্চিন্তার বড় কারণ নেই। বিদেশি ঋণগুলো মার্কিন ডলারে দেওয়া হয় বলে রিজার্ভ পরিস্থিতি ইতিবাচক হওয়া সময়ের ব্যাপার।

প্রতিষ্ঠানটি আরও বলছে, গত জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার পর ব্যবসায় অনিশ্চয়তা ধীরে ধীরে কমে আসতে শুরু করেছে। পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় আমদানির ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নজরদারি থাকায় চলতি অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স ইতিবাচক হয়েছে।

উল্লেখ্য, বর্তমান গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অপ্রয়োজনীয় আমদানি বন্ধ করতে পর পর কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করেন, যা বাস্তবায়নে ব্যাংকগুলোকেও দেওয়া হয়েছিল বিশেষ নির্দেশনা। এতে বিশ্ববাজারে অনেক পণ্যের দাম বাড়লেও বৈদিশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে।

মার্কিন এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের রেটিং নিয়ে পর্যায়ক্রমে গবেষণা করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। এতে জানানো হয়, বাংলাদেশের জন্য ‘বি ওয়ান’ রেটিং অপরিবর্তিত রেখেছে তারা। আরও বলছে, স্থিতিশীল আর্থিক পরিস্থিতি বজায় থাকায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ঋণ সহায়তা পাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেছে মুডিস।

তবে মুডিস বলছে, বাংলাদেশের আর্থিক পরিস্থিতি করোনা মহামারির আগের তুলনায় দুর্বল হয়েছে। তবে এখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। ঘুরে দাঁড়াতে তৈরি পোশাক খাতের বড় অঙ্কের রপ্তানি ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, নানা বাস্তবতা মোকাবিলা করেও পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। করোনা মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশ থেকে আশানুরূপ পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা রিজার্ভকে শক্তিশালী রাখতে ভূমিকা রাখছে।

মুডিসের গবেষণায় প্রশংসা পেয়েছে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধিও। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, নানা বাস্তবতা মোকাবিলা করেও ভালো প্রবৃদ্ধি পাচ্ছে বাংলাদেশ, যা আন্তর্জাতিক ঋণ পেতে দেশটিকে সহায়তা করছে। তবে ঋণের তুলনায় রাজস্ব আহরণ কমে যাওয়াকে দুশ্চিন্তার কারণ বলে মনে করে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা আর্থিক খাতের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে মনে করে মুডিস।

প্রতিবেদনে আরও কিছু চ্যালেঞ্জের কথাও উল্লেখ করেছে মুডিস। যার মধ্যে পোশাকের বৈশ্বিক চাহিদা কমে যাওয়া, এ খাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করতে না পারা, কম রাজস্ব আদায়, সুদ মেটাতে বেশি খরচ ও আর্থিক হিসাবের ঘাটতি রেটিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থানকে দুর্বল করে তুলতে পারে বলে মনে করে মুডিস। এসব পরিস্থিতিকে দুই-তিন বছর আগের তুলনায় নাজুক বলেছে প্রতিষ্ঠানটি।

বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ভোক্তা মূল্যস্ফীতিকে বড় দুশ্চিন্তার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে মুডিস। এটি অব্যাহত থাকলে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে ‍যাওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সীমিত হবে বলেও শঙ্কা তাদের। উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি নয় দশমিক ৭৪ শতাংশ ছিল- যা এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।

এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের চলমান চার দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার ঋণের পরের কিস্তি পেতে মুডিসের এমন প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। এ ছাড়া গেল কয়েক মাস ধরে কমতে থাকা রিজার্ভ নিয়ে মিলবে স্বস্তি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী রিজার্ভ রয়েছে ১৮ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২২ সালের জুনে ৪০ বিলিয়ন ডলারের চেয়েও বেশি ছিল।


সদরঘাট থেকে সব রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জবি প্রতিনিধি

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালʼ- এর প্রভাবে নৌপথ উত্তাল হওয়ায় রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি খেয়া নৌকাগুলোকেও নদী পারাপারে সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাটে দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিএ এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে গতকাল শনিবার রাত ১০টা থেকে সব রুটের ছোট বড় সকল ধরনের লঞ্চ স্টিমার বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে।

সরেজমিনে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, টার্মিনাল এলাকা পুরোপুরি সুনসান। মানুষের চলাচল নেই, নেই হাক ডাক। এদিকে পন্টুনেও কোনো লঞ্চ বাঁধা ছিলো না। অনেকে লঞ্চ বন্ধের খবর পেয়ে বিকল্প হিসেবে বাসে যাতায়াতের পথ খুঁজছেন। অনেকে ঘাট থেকে প্রাইভেটকার যোগে বাড়ির পথে রওনা করছেন।

লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা জানান, আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবের কারণে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্বাভাবিক অবস্থায় না আসা পর্যন্ত ঘাট থেকে লঞ্চ ছাড়া নিরাপদ হবে না। আবহাওয়া অধিদপ্তর ও বিআইডব্লিউটিএর নির্দেশনা অমান্য করারও কোনো সুযোগ নেই।

এদিকে বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরগুলোকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ কারণে সকাল ৬টা থেকে সব ধরনের লঞ্চ এবং নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।’

এছাড়াও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, ‘ঘূর্ণিঝড়ের কারণে যাত্রীসাধারনের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে শনিবার রাত ১০ঘটিকায় ঢাকা নদী বন্দর হতে অভ্যন্তরীণ নৌপথের সকল লঞ্চসমূহ পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’

এদিকে ভয়ংকর রূপ নেয়া ঘূর্ণিঝড় রেমালের কেন্দ্র আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার বিকেলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গতি বাড়িয়েছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এটি এখন ১৩ কিলোমিটার গতিতে ধেয়ে আসছে।


সন্ধ্যা ৬টার পর খেপুপাড়া অতিক্রম করবে শক্তিশালি রেমাল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভয়ংকর রূপ নেয়া ঘূর্ণিঝড় রেমালের কেন্দ্র সন্ধ্যা ৬টার পর পরবর্তী ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আজ রোববার বিকেলে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গতি বাড়িয়েছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এটি এখন ১৩ কিলোমিটার গতিতে ধেয়ে আসছে।

তিনি বলেন, ‘উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে বৃষ্টিসহ দমকা বা ঝড়ো হাওয়া অব্যাহত রয়েছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে মোংলার কাছ দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ) খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে।’

‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র অতিক্রমের পর এর নিম্নভাগ অতিক্রম অব্যাহত থাকবে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে’- বললেন আজিজুর রহমান।

এদিকে রেমালের প্রভাবে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

এদিকে রেমালের প্রভাবে কক্সবাজার ও কোলকাতার সকল ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে উপকূলের লঞ্চ চলাচল। দৌলতিয়া-পাটুরিয়ায়ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।

অন্যদিকে দুর্যোগ মোকাবিলা এবং দুর্গত মানুষের পাশে থাকার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান।

আজ রোববার সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার পর প্রতিমন্ত্রী ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘৮ লাখের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন। বাকিদের আসার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। উপকূলীয় অঞ্চলে আপাতত স্কুল খোলা থাকবে, তবে ক্লাস বন্ধ থাকবে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল আমরা বলেছিলাম আজকে ভোর থেকে এটা শুরু হতে পারে। ঝড়ের গতি কম ছিল বলে আজ ভোরে আসেনি। গতকাল গতিবেগ ছিল ১৬ থেকে ১৭ কিলোমিটার। ভোরে গতি কমে দশের নিচে চলে আসে, পরবর্তীতে ৬ কিলোমিটারে নেমে আসে। যার জন্য এটা সময়মতো এখনো পৌঁছেনি। তবে আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এটা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে এবং আজ সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের প্রথম ভাগ অতিক্রম শুরু হবে। মধ্যরাতে মূল অংশ বাংলাদেশ অতিক্রম করবে।’

ঝড়ের কারণে উপকূলীয় এলাকায় ১০ থেকে ১২ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত প্লাবিত হতে পারে। যদি জোয়ার থাকে এটা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রেমালের প্রভাবে সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পুরো এলাকাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এজন্য আমরা সবাইকে নিয়ে আজ সভা করেছি। সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি’- বললেন প্রতিমন্ত্রী।


জুনে পাওয়া যাবে আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি ৪.৭ বিলিয়ন ডলার: অর্থমন্ত্রী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

আইএমএফ থেকে ঋণের তৃতীয় কিস্তি ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার জুন মাসেই পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

আজ রোববার সচিবালয়ে আইএমএফের নির্বাহী পরিচালক ড. কৃষ্ণমূর্তি ভি সুব্রামানিয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি, যাতে ডলারের প্রবাহ বাড়ানো যায়। এখানে অনেক আলোচনা আছে। আমরা যেটা আশা করছি, এ সমস্যা সমাধান করতে পারব। আমরা কাজ করছি।’

আইএমএফের নির্বাহী পরিচালক জানিয়েছেন, আমরা সঠিক পথে আছি। যে কাজ করছি, সমস্যা সমাধানে সেটাতে তাদের সমর্থন আছে।

জুনে আইএমএফের তৃতীয় কিস্তির টাকা পাচ্ছি কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, জুন মাসেই তারা দেবে। সেখানে বাধা তো নেই।


রেমাল: কক্সবাজার ও কলকাতার ফ্লাইট বাতিল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে রোববার কক্সবাজারের সারা দিনের সব ফ্লাইট বাতিল করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

শনিবার এক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম। তিনি জানান, রেমালের কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ২৬ মে কক্সবাজারগামী সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া, আগামী ২৬ মে কলকাতাগামী বিজি-৩৯৫ ও ২৭ মে কলকাতাগামী বিজি-৩৯১ ফ্লাইটটিও বাতিল করা হয়েছে। অন্যান্য ফ্লাইটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত সেগুলো স্বাভাবিক থাকবে বলে জানিয়েছে বিমান।

এর আগে শনিবার রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দেশের চারটি সমুদ্র বন্দরের ওপর সতর্ক সংকেত বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) জানায়, বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপটি সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে ঘূর্ণিঝড় রেমালে পরিণত হয়েছে। যা সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি-১ শক্তিমাত্রার ঝড় হিসেবে ২৬ মে দিবাগত রাত থেকে ২৭ মে সকালের মধ্যে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।


যেভাবে ঘূর্ণিঝড়টির নাম ‘রেমাল’ হয়েছে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ মে, ২০২৪ ১৬:৪১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

একেকটি ঘূর্ণিঝড়ের একেক রকম নাম হয়ে থাকে। সিডোর,আইলা, মোখা, আম্পান, নারগিসসহ এরকম কতো নামের ঘূর্ণিঝড় অতীতে আঘাত হেনেছিল। কথা হচ্ছে- ঘূর্ণিঝড়ের এই ধরনের নাম কিভাবে এবং কেনো করা হয়- এটা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে নানান প্রশ্ন থাকে। এখন যেমন দেশজুড়ে ‘রেমাল’- এর নাম সকলের মুখে মুখে।

জানা গেছে, ঘুর্ণিঝড়ের এরকম নামকরণের পেছনে থাকে বিভিন্ন সতর্কীকরণ কেন্দ্র দ্বারা পূর্বাভাস, ঘড়ি এবং সতর্কতা সম্পর্কিত পূর্বাভাসক এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করার জন্যই হয়ে থাকে।

খবর নিয়ে জানা গেছে, একটা সময় ঘূর্ণিঝড়ের কোনো নাম থাকত না। আমাদের দেশে ১৯৭০ সালে কিংবা ১৯৯১ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হয়ে গেছে। কিন্তু সেগুলোর কোনো নাম নেই। শুধু আমাদের দেশের নয়, অন্যান্য দেশে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়েরও কোনো নাম থাকত না। একসময় এসব ঝড়ের নাম রাখার একটি চল শুরু হয় একপর্যায়ে। কারণ, নামবিহীন থাকলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি, ধরন সম্পর্কে তথ্য দ্রুত জানা যায় না। এর আঘাত হানার সময় বা তারিখ বের করে পরবর্তী সময়ে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি নির্ণয় করতে হয় আবহাওয়াবিদদের। তাছাড়া ভবিষ্যতের তথ্য উপাত্তের জন্য এবং ডাটা সংরক্ষণের জন্যও ঘূর্ণিঝড়ের নাম প্রয়োজন হয়ে থাকে। নাম থাকলে সেগুলো ধরে পরবর্তীতে কাজ করতে সুবিধা হয়।

এই কাজটি করে থাকে আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও )। ডব্লিউএমও সে জন্য পাঁচটি বিশেষ আঞ্চলিক আবহাওয়া সংস্থার (আরএসএমসি) সঙ্গে সমন্বয় করে ২০০৪ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করেছে। আরএসএমসি তার সদস্যদেশগুলোর কাছ থেকে নামের তালিকা চেয়ে থাকে। তালিকা পেলে দীর্ঘ সময় যাচাই-বাছাই করে সংক্ষিপ্ত তালিকা করে ডব্লিউএমওর কাছে পাঠায়।

এরপর বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা অনুমোদন করে আঞ্চলিক কমিটির একটি প্যানেল। তার নাম ডব্লিউএমও/এসকাপ প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস। এর মধ্যে আছে ভারত, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, ইরান, কাতার, সৌদি আরব, ইয়েমেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০১৮ সালের আরএমএসসি নতুন করে ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা করে। এ সময় ১৩টি দেশ ১৩টি করে নাম দেয়। নামকরণের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মেনে চলা হয়। যেমন রাজনীতি বা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় বিশ্বাস, সংস্কৃতি বা লিঙ্গনিরপেক্ষ হতে হবে নামগুলোকে। বিশ্বের কোনো অঞ্চলের কোনো মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করে, এমন নাম দেওয়া যাবে না। নাম রূঢ় হতে পারবে না। এটি সংক্ষিপ্ত ও সহজে উচ্চারণ করা যায়, এমন হতে হবে। সর্বোচ্চ আটটি বর্ণ থাকতে হবে ওই নামে। নাম দেওয়ার পাশাপাশি এখানে উচ্চারণও দিয়ে দিতে হবে। এরকম নানা বিষয় ঠিকঠাক করে একেকটি ঘূর্ণিঝড়ের একেক নাম হয়ে থাকে।

রেমাল-এর নাম যেভাবে এলো

ঝড়ের নাম ঠিক করার জন্যে প্রত্যেক দেশ কিছু নাম প্রস্তাব করে। প্যানেল অন ট্রপিকল সাইক্লোন-এর কাছে সেই নামগুলো পেশ করা হয় ও একটি তালিকা তৈরি হয়। উল্লেখিত ১৩ দেশের সংস্থা এস্কেপ ২০২০ সালেই ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করে একটি তালিকা তৈরি করে রেখেছে। সেই তালিকা থেকে এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয় ‘রেমাল’। ইংরেজি নামের আদ্যক্ষর অনুযায়ী নামের তালিকা হয়। যেমন ইংরেজি বর্ণমালা অনুযায়ী এই ১৩ দেশের মধ্যে সবচেয়ে আগে থাকে বাংলাদেশের নাম। আর শেষে থাকে ইয়েমেনের নাম। ঘূর্ণিঝড়ের নামের ওই তালিকা থেকেই এর আগের ঘূর্ণিঝড়ের নাম ছিল ইয়েমেনের দেওয়া ‘মোখা’। আর এবার ওমানের দেওয়া নাম ‘রেমাল’। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, রেমাল একটি আরবি শব্দ। এই নামের অর্থ ‘বালু’। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রেমাল’ নামটি ওমানের দেওয়া। এবারের ঘূর্ণিঝড়ের আনুষ্ঠানিক নামকরণের দায়িত্ব ছিল ওমানের।


ঘূর্ণিঝড় রেমাল: আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে ছাত্রলীগকে নির্দেশ

আপডেটেড ২৬ মে, ২০২৪ ১৬:০৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আজ রোববার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সংগঠনটি।

বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানায়, অতীতে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়কালীন সময়ে, শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে, অগ্নিকাণ্ড বা ভবন ধসে উদ্ধারকাজ চালিয়ে, মহামারী করোনাকালীন অসহায়-অসুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে, কৃষকের ধান কেটে নিরাপদে ঘরে পৌঁছে দিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমাজ ও মানুষের প্রতি তার কর্তব্য নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছে।

সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ এ রূপ নিয়েছে যা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বা সুপারসাইক্লোনে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এরই মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকাসহ মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরের জন্য ৭ নম্বর এবং চট্রগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরের জন্য ৬ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করেছে।

সংগঠনটি জানায়, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান করছে। ২৬ মে গভীর রাতে কিংবা ২৭ শে ভোরের মধ্যে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ উপকূলবর্তী এলাকায় তীব্রভাবে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আঘাত হানার সময় কেন্দ্রের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার হতে পারে। এ ছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সারা দেশব্যাপী অতি ভারী বৃষ্টি, প্রবল দুর্যোগ, বজ্রবৃষ্টি এবং সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সহ উপকূলীয় অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হতে পারে। প্রবল বৃষ্টির ফলে ভূমিধস হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

আরও পড়ুন: জ্বলোচ্ছাসে তলিয়ে গেছে সুন্দরবন

সংগঠনটি আরও জানায়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে, সচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়ে, মাইকিং করে, শুকনো ও রান্না করা খাবার, খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করে, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধারকাজ পরিচালনা করে, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঘরবাড়ি স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সংস্কার করে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে এবং স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রমে সহযোগিতা দিয়ে পাশে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার অগ্রদূত, পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ বৈশ্বিক পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ এ ভূষিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বৈশ্বিক রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। দুর্যোগে পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রাণহানি কমিয়ে আনা, আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, দুর্যোগে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, বজ্রপাত নিরোধক কর্মসূচি, গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় গৃহ নির্মাণ, সময়োপযোগী আইন প্রণয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগজনিত ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের ওপর গুরুত্বারোপ করে ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ প্রণয়ন ইত্যাদি কর্মকাণ্ড বাংলাদেশকে দুর্যোগসহনশীল রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলেছে। যার ফলে জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ‘জনসেবা পদক’ লাভ করেছে।

বিষয়:

দুদকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রামীণ ব্যাংকের অভিযোগ

ড. ইউনূস। পুরোনো ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দায়ের করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। অভিযোগে বলা হয়েছে, নিজের মালিকানাধীন পারিবারিক প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশনকে বহুবিধ অবৈধ সুবিধা প্রদান করেছেন ড. ইউনূস।

আজ রোববার গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর মোহাম্মদ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এই লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ব্যতিরেকে ইউনূস নিজেই দর নির্ধারণী কমিটি গঠন পূর্বক নিজের প্রণীত ও স্বাক্ষরিত গ্রামীণ ব্যাংক ক্রয় নীতিমালা লঙ্ঘন করে নিজের মালিকানাধীন পারিবারিক প্রতিষ্ঠানকে কোনো প্রকার প্রতিযোগিতামূলক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান ছাড়াই উচ্চদরে গ্রামীণ ব্যাংকের কোটি কোটি টাকার প্রিন্টিং সামগ্রী ছাপানোর কার্যাদেশ প্রদান করে নিজে ও পরিবারিকভাবে বিপুল অংকের আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন।

এতে বলা হয়েছে, ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ-১৯৮৩ লঙ্ঘন করে এবং পরিচালনা পর্ষদের কাছে গোপন রেখে নিজেই নিজের মালিকানাধীন পারিবারিক প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশনের সঙ্গে ব্যাংকের স্বার্থপরিপন্থি একটি তত্ত্বাবধায়ক (ম্যানেজিং এজেন্ট) চুক্তি করেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, পরিচালনা পর্ষদের কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই ড. ইউনূস ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটিতে গ্রামীণ ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রেষণে নিয়োগ দেন এবং নিজ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গ্রামীণ ব্যাংকের অফিস বিনা ভাড়ায় ব্যবহার করেন।

গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ-১৯৮৩ অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ সুবিধা শুধুমাত্র ভূমিহীন দরিদ্র ঋণগ্রহীতাদের জন্য সীমাবদ্ধ থাকলেও তিনি আইন ভঙ্গ করে তার পারিবারিক রুগ্ন ও লোকসানি প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশনকে বিপুল অংকের ঋণ প্রদান করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগে।

অভিযোগে আরও বলা হয়, পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ড. ইউনূস ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রামীণ ব্যাংকের আর্থিক ক্ষতিসাধন করে নিজ প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অনাদায়ী টাকা সুকৌশলে মওকুফ করিয়ে নিয়েছেন।


সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল: দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

দুর্যোগ মোকাবিলা এবং দুর্গত মানুষের পাশে থাকার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান।

আজ রোববার সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার পর প্রতিমন্ত্রী ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘৮ লাখের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন। বাকিদের আসার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। উপকূলীয় অঞ্চলে আপাতত স্কুল খোলা থাকবে, তবে ক্লাস বন্ধ থাকবে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল আমরা বলেছিলাম আজকে ভোর থেকে এটা শুরু হতে পারে। ঝড়ের গতি কম ছিল বলে আজ ভোরে আসেনি। গতকাল গতিবেগ ছিল ১৬ থেকে ১৭ কিলোমিটার। ভোরে গতি কমে দশের নিচে চলে আসে, পরবর্তীতে ৬ কিলোমিটারে নেমে আসে। যার জন্য এটা সময়মতো এখনো পৌঁছেনি। তবে আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এটা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে এবং আজ সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের প্রথম ভাগ অতিক্রম শুরু হবে। মধ্যরাতে মূল অংশ বাংলাদেশ অতিক্রম করবে।’

‘ঝড়ের কারণে উপকূলীয় এলাকায় ১০ থেকে ১২ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত প্লাবিত হতে পারে। যদি জোয়ার থাকে এটা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রেমালের প্রভাবে সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পুরো এলাকাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এজন্য আমরা সবাইকে নিয়ে আজ সভা করেছি। সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি’- বললেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, ‘এখন থেকে ঝড় শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত যানবাহন লঞ্চ-স্টিমার চলাচল করছে সেগুলো বন্ধ থাকবে। এমনকি বঙ্গবন্ধু যে টানেল রয়েছে সেটি আজ সন্ধ্যা থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা সার্বিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে খাবার এবং বিভিন্ন উপকরণ পৌঁছে গেছে। মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার জন্য সর্বাত্মকভাবে কাজ করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, আমাদের মেডিকেল টিমগুলো প্রস্তুত রয়েছে। সেনাবাহিনী যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসও প্রস্তুত রয়েছে। পেছনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই ঘূর্ণিঝড়কে আরও শক্তভাবে মোকাবিলা করার জন্য আমরা সমস্ত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’

এদিকে ক্রমেই শক্তিশালি হয়ে ওঠছে বঙ্গোবসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। এ জন্য জারি করা হয়েছে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত। গতকাল রাতে পায়রা-মোংলায় ৭ ও কক্সবাজার-চট্টগ্রামে ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের পর আজ রোববার সকালে নতুন করে মহাবিপদ সংকেতের কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

নতুন বিপদ সংকেতে, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড় রিমাল নিয়ে দেওয়া ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে নতুন করে ৯ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে হবে।

ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। এর অগ্রভাগের প্রভাব ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের উপকূলে। ঘূর্ণিঝড় উপকূলের দিকে এগিয়ে আসায় এর গতিপথ এবং উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাব্য সময় জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।


ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’: কখন, কোন পথে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ মে, ২০২৪ ১৫:৪৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ক্রমেই শক্তিশালি হয়ে ওঠছে বঙ্গোবসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। এ জন্য জারি করা হয়েছে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত। গতকাল রাতে পায়রা-মোংলায় ৭ ও কক্সবাজার-চট্টগ্রামে ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের পর আজ রোববার সকালে নতুন করে মহাবিপদ সংকেতের কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

নতুন বিপদ সংকেতে, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড় রিমাল নিয়ে দেওয়া ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে নতুন করে ৯ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে হবে।

ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। এর অগ্রভাগের প্রভাব ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের উপকূলে। ঘূর্ণিঝড় উপকূলের দিকে এগিয়ে আসায় এর গতিপথ এবং উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাব্য সময় জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় রিমাল আজ সকাল ছয়টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে এগিয়ে ঘনিভূত হতে পারে।

রিমালের সম্ভাব্য গতিপথ এবং আঘাত হানার সময় নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি আজ রোববার সন্ধ্যা বা মধ্যরাত নাগাদ মোংলার কাছ দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়ার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের উপকূল অতিক্রম করার সুনির্দিষ্ট সময়ের বিষয়ে জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, এর গতি কখনো বাড়ছে কখনো কমছে। তাই ঠিক কোন সময়ে এটি উপকূল অতিক্রম করবে তা বলা যাচ্ছে না। তবে সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতের মধ্যেই এটি উপকূল অতিক্রম করবে।

সন্ধ্যার দিকে উপকূল অতিক্রম করলে সেই সময় অনেক স্থানে ভাটা থাকবে। তাই জলোচ্ছ্বাসের তীব্রতা কম হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তবে বেশি রাতের দিকে ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম করলে জলোচ্ছ্বাস বড় আকারে হতে পারে বলেও তারা উল্লেখ করেন।

আজ রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড় রেমাল নিয়ে দেওয়া ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে নতুন করে ৯ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।

এদিকে ‘রেমাল’ মোকাবিলায় দেশের ছয় জেলাকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। এ ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও ভূমি অতিক্রমের সম্ভাব্য এলাকার ভিত্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাগুলো হলো সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা।

গতকাল ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ঘূর্ণিঝড়সহ সব দুর্যোগে তার নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনায় আমরা যথাসময়ে প্রস্তুতি নিয়ে মানুষের দুর্দশা লাঘব এবং জীবন ও সম্পদের ক্ষতি কমাতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘূর্ণিঝড়টিও যাতে একই ধারাবাহিকতায় সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারি তার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’


ঘূর্ণিঝড় রেমাল : জারি হলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত

আপডেটেড ২৬ মে, ২০২৪ ১১:০১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ক্রমেই ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ শক্তিশালি হয়ে ওঠছে। গতকাল রাতে পায়রা-মোংলায় ৭ ও কক্সবাজার-চট্টগ্রামে ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের পর আজ রোববার সকালে নতুন করে মহাবিপদ সংকেতের কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

নতুন বিপদ সংকেতে, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড় রিমাল নিয়ে দেওয়া ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে নতুন করে ৯ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে হবে।

১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় (১৯.৫০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৪০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি আজ (২৬ মে) সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩০ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ (রোববার) সন্ধ্যা/মধ্যরাত নাগাদ মোংলার কাছ দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ) খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমানের স্বাক্ষর করা ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলোর নিচু এলাকা স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবের দেশের সব বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

এদিকে ‘রেমাল’ মোকাবিলায় দেশের ছয় জেলাকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। এ ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও ভূমি অতিক্রমের সম্ভাব্য এলাকার ভিত্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাগুলো হলো সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা।

গতকাল ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ঘূর্ণিঝড়সহ সব দুর্যোগে তার নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনায় আমরা যথাসময়ে প্রস্তুতি নিয়ে মানুষের দুর্দশা লাঘব এবং জীবন ও সম্পদের ক্ষতি কমাতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘূর্ণিঝড়টিও যাতে একই ধারাবাহিকতায় সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারি তার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’


ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’

মহাবিপদ সংকেত জারির সম্ভাবনা
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ মে, ২০২৪ ০০:০২
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালে’ পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) গতকাল শনিবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছে। এটি সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি-১ শক্তিমাত্রার ঝড় হিসেবে আজ রোববার দিবাগত রাত থেকে আগামীকাল সোমবার সকালের মধ্যে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি)। ঝড়ের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। গতকাল রাত ৯টায় আবহাওয়া অধিদপ্তর মোংলা ও পায়রায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখানোর নির্দেশ দিয়েছে। তবে গতকাল দুপুরেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান প্রবল শক্তিসম্পন্ন ঝড়টির বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন রাতেই মহাবিপদ সংকেত জারি হতে পারে। তিনি উপকূলবাসীকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিডব্লিউওটির প্রধান আবহাওয়া গবেষক খালিদ হোসেনের সই করা এক বার্তায় বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দীঘা থেকে বাংলাদেশের পটুয়াখালীর মাঝামাঝি যেকোনো জায়গা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে। তবে এর সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটসহ এর আশপাশের কিছু জেলা।

এখন পর্যন্ত ঝড়ের গতিপথ সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা হওয়ায় আইলা, সিডরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি ক্ষতির আশঙ্কা সুন্দরবনে।

বার্তায় বলা হয়, এ ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ শক্তিমাত্রা হতে পারে ক্যাটাগরি-১। তবে আশা করা যায়, ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটারের বেশি এটি গতিবেগ পাবে না। তবে আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে এটি তার পূর্ণ শক্তিতে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এসময় দমকা বা ঝোড়ো বাতাসের বেগ আরও কিছুটা বেশি থাকতে পারে।

‘রেমাল’র কারণে গতকাল রাত সাড়ে ৮টার পর থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হতে দেখা গেছে। মধ্যরাতের পর তা বেড়েছে বলে জানা যায়।

গতকাল এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সর্বশেষ ৬ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় থাকা গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে একই এলাকায় আছে।

এটি গতকাল সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।

গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।

সাগর উত্তাল থাকায় উপকূলীয় এলাকাগুলোতে যাত্রীবাহী লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তবে দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথগুলোতে চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দেশের ছয় জেলাকে বিশেষ সতর্ক নির্দেশনা দিয়েছে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। নির্দেশ দেওয়া জেলাগুলো হলো- সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা। এই জেলাগুলোতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।

অন্যদিকে, বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসা গভীর নিম্নচাপে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’র প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা থেকে ভারতের চারটি রাজ্যে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)।

এদিকে বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসা গভীর নিম্নচাপে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’র প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের আশঙ্কায় ভারতের চারটি রাজ্যে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)।

জারি হতে পারে মহাবিপদ সংকেত

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ আজ রোববার নাগাদ সাতক্ষীরা ও কক্সবাজারের মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে। এজন্য গতকাল শনিবার মধ্যরাতে মহাবিপদ সংকেত জারি হওয়ার কথা জানান। গতকাল সচিবালয়ে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আমরা বুঝতে পেরেছি, ঘূর্ণিঝড়টি আসন্ন।’

মহিববুর রহমান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টিতে সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত কমবেশি এফেকটেড (আক্রান্ত) হতে পারে। ৭ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। এজন্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হতে পারে।’

আজ সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানতে পারে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘উপকূলীয় জেলায় আমাদের প্রায় ৪ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এগুলো আমরা প্রস্তুত রেখেছি। খাদ্যের জন্য আমাদের প্রত্যেকটি জেলায় গুদামে পর্যাপ্ত শুকনো খাবারসহ যেসব জিনিস দরকার হবে এগুলো মজুত রেখেছি। প্রয়োজনে ঢাকা থেকে যাতে আরও সাপ্লাই (সরবরাহ) দিতে পারি এজন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’

উপকূলীয় এলাকায় লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপকে কেন্দ্র করে উপকূলীয় এলাকায় লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। শনিবার বিকালে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ এর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন।

তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে যে গভীর নিম্নচাপটি সৃষ্টি হয়েছে সেটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ায় আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। সমুদ্র বন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেজন্য উপকূলীয় এলাকায় সব ধরনের লঞ্চ এবং নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএর সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

অপরদিকে সাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ এবং সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের ভবনের ষষ্ঠ তলায় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত থেকে আবহাওয়া অফিস, কর্তৃপক্ষের সকল নদীবন্দরে স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, বন্দরের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা, নদীবন্দরের বিভিন্ন বিভাগের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা এবং ড্রেজার বেইজের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখবেন।

নিয়ন্ত্রণ কক্ষে যোগাযোগ করার জন্য টেলিফোন নম্বর +৮৮০২২২৩৩৫২৩০৬ ও মোবাইল নম্বর ০১৯৫৮৬৫৮২১৩ ব্যবহারের অনুরোধ করা হয়েছে।

টেকনাফে তীব্র বাতাস ভারী বৃষ্টি

দৈনিক বাংলার টেকনাফ প্রতিনিধির দেওয়া তথ্যমতে, গতকাল সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’, পরিস্থিতি কিছুটা ভালো থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায় রূপ। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উপকূলের দিকে এগোতে থাকায় কক্সবাজার টেকনাফ সেন্টমার্টিন ও শাহপরীরদ্বীপ এলাকায় তীব্র গতির বাতাস বইছে ও অঝোরে ঝরছে বৃষ্টি। অন্যদিকে তীব্র ঢেউয়ের কারণে উত্তাল হয়ে উঠেছে সাগর।

শনিবার বিকেল ৪টার দিকে টেকনাফ, শাহ পরীর দ্বীপ এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত শুরু হয়। অন্যদিকে বাতাসের তীব্র গতির কারণে আশপাশের গাছগাছালি যেন ভেঙে পড়ার অবস্থা তৈরি হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, আশপাশের দোকানগুলো সবই বন্ধ। বন্ধ দোকানের সামনে বসে আছেন অনেকেই। খোলা জায়গায় অনেক স্থানে গরু বাধা থাকলেও কোনো মানুষ দেখা যায়নি। টেকনাফ সড়কের চেকপোস্টগুলো ফাঁকা দেখা গেছে। স্থানীয় পরিবহন চলাচলও বন্ধ রয়েছে।

টেকনাফের সেন্টমার্টিনেও বাতাসের গতিবেগ বেড়েছে, সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। খবর নিয়ে জানা গেছে, আতঙ্কের মধ্যে সময় কাটাচ্ছে সেন্টমার্টিনের সাধারণ মানুষ। সতর্ক আছি উল্লেখ করে সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস জনজীবন, মনে হচ্ছে বড় কিছু হতে যাচ্ছে। দ্বীপে সাগর উত্তাল রয়েছে। সকাল থেকে আকাশ মেঘ থাকলেও বাতাস শুরু হয়েছে। এ ছাড়া স্বাভাবিকের চেয়ে সাগরের পানির উচ্চতা বেড়েছে।’

টেকনাফ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ সাফকাত আলী বলেন, ‘মেডিকেল টিমসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া সাগর-নাফ নদের কারণে আমরা সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপকে গুরুত্ব দিচ্ছি বেশি।’

উপকূলের নদীতে বেড়েছে জোয়ারের পানি

বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের নদ-নদীগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি বেড়েছে। ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে উপকূলের জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধের ওপর আছড়ে পড়েছে পানির স্রোত। এতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে উপকূলের মানুষ।

শ্যামনগর উপজেলার উপকূলবর্তী গাবুরা, পদ্মপুকুর, আটুলিয়া, বুড়িগোয়ালিনী, কৈখালী, রমজাননগর ও মুন্সীগঞ্জ এলাকায় নদীপাড়ের বসবাসকারীদের কাছ থেকে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে জোয়ারে স্বাভাবিকের চেয়ে নদীতে দুই থেকে তিন ফুট পর্যন্ত পানি বেড়েছে।

শ্যামনগর উপকূলের চুনা নদীতে জোয়ারের পানি কয়েক ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় কলবাড়ি জেলেপাড়ায় বসবাসকারী ১৩টি জেলে পরিবারের বসতঘরের আঙিনায় জোয়ারের পানি ওঠার খবর পাওয়া যায়। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিবুল আলম বলেন, শ্যামনগর উপজেলার ১৬৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া প্রয়োজনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য বহুতল ভবন নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ব্যবহার করা হবে। এছাড়া, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুকনা খাবারসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী মজুত আছে। আমরা ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা দেখে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করব। তবে সবার জন্য বলব, কেউ যেন ঝুঁকি নিয়ে অনিরাপদ আশ্রয়ে না থাকেন।

এদিকে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ও উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি), রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও রোভার স্কাউটের সদস্যরাও যেকোনো ধরনের সহায়তার জন্য প্রস্তুত আছেন বলে জানা গেছে।

চলতি প্রাক-বর্ষা মৌসুমে বঙ্গোপসাগরে এটিই প্রথম ঘূর্ণিঝড় হতে যাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ায় ‘রেমাল’। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঝড়ের নাম দিয়েছে ওমান। আরবি শব্দ রেমালের অর্থ বালি।


রিজার্ভ ১৮ কোটি ডলার বেড়েছে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ মে, ২০২৪ ১১:৪৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে ১৮০ মিলিয়ন বা ১৮ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ২১ মে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে, অর্থাৎ এক সপ্তাহে রিজার্ভ বেড়েছে ১৮০ মিলিয়ন বা ১৮ কোটি ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ম্যানুয়াল-৬ অনুযায়ী, ১৫ মে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ১৮ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের জুলাই থেকে আইএমএফের পরামর্শে নতুন পদ্ধতিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গণনা শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে, গত ১১ মে ১১ মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যায়।

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মার্চ-এপ্রিল মেয়াদের ১ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ কমে ১৮ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল। ‘গ্রস’ হিসাবে রিজার্ভ নেমেছিল ২৩ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে। কোরবানির ঈদ এবং টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ায় রেমিট্যান্স পালে হাওয়া লাগায় রিজার্ভ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা। বাংলাদেশ ব্যাংক সপ্তাহে একদিন রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করে। সেই তথ্য অনুযায়ী, গত ৮ মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। ‘গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার।

১৪ মে আকুর দেনা শোধের পর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ কমে ১৮ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। ‘গ্রস’ হিসাবে নেমেছিল ২৩ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে। হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, নয় দিনে বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ বেড়েছে ৩৬ কোটি ডলার। ‘গ্রস’ হিসাবে বেড়েছে ৩৭ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। ডলারের দাম বাড়াতেও রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়েও প্রভাব পড়েছে। সব কিছু মিলিয়ে রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে। এখন রিজার্ভ আর কমবে না; বাড়তেই থাকবে।

এর আগে গত ১১ মার্চ আকুর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের ১ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ কমে ১৯ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল। ‘গ্রস’ হিসাবে নেমেছিল ২৫ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলারে। ৯ জানুয়ারি আকুর নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের ১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ নেমেছিল ২০ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারে। ‘গ্রস’ হিসাবে নেমেছিল ২৫ দশমিক ৭৫ ডলারে। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এর পর থেকে তা কমতে থাকে। এক বছর আগে গত বছরের ২১ মে ‘গ্রস’ হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম দিকে কমতে কমতে বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামে। ১৩ ডিসেম্বর রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার। এর পর আইএমএফের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির ৬৯ কোটি ডলার, এডিবির ৪০ কোটি ডলার এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ৯ কোটি ডলার যোগ হওয়ায় বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ বেড়ে ২১ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। ‘গ্রস’ হিসাবে ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।

গত বছরের ১২ জুলাই থেকে আইএমএফের কথামতো রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘গ্রস’ হিসাবের পাশাপাশি বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুসরণ করেও রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই দিন ‘গ্রস’ হিসাবে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম-৬ হিসাবে ছিল ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। ১২ জুলাইয়ের আগে শুধু ‘গ্রস’ হিসাবের রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করত বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক বিপিএম-৬ হিসাবের রিজার্ভকে ‘তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য’ রিজার্ভ হিসাবে দাবি করে।

সবশেষ গত মার্চ মাসের আমদানির তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, ওই মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। সে হিসাবে ‘তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য’ বর্তমানের ১৮ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুত থাকতে হয়।


banner close