রোববার, ১৯ মে ২০২৪

নিরাময় কেন্দ্রে মাদক, নির্যাতন-যৌনতার ফাঁদ

গ্রাফিক্স দৈনিক বাংলা
শাহরিয়ার হাসান
প্রকাশিত
শাহরিয়ার হাসান
প্রকাশিত : ৬ নভেম্বর, ২০২২ ০৮:২১

মাদকাসক্তদের চিকিৎসার জন্য লাইসেন্স পাওয়া যেসব বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্র আছে তার অধিকাংশেরই অবস্থা খুব নাজুক। এসবের কোথাও চলে প্রকাশ্যে মাদক বেচাকেনা ও সেবন। কোথাও চিকিৎসার নামে টর্চার সেলে রেখে চলে শারীরিক নির্যাতন। কোথাও আবার যৌনতার ফাঁদ পেতে রোগী ও পরিবারের সদস্যদের করা হয় জিম্মি। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রোগীকে পিটিয়ে হত্যা করার মতো অভিযোগও আছে।

মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রক ও তত্ত্বাবধায়ক সংস্থা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তদন্তেই উঠে এসেছে এমন অনেক অভিযোগ।

আবার মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোর অধিকাংশ মালিকই মাদকাসক্ত। ওই সব কেন্দ্রে পুনর্বাসনে থাকা ছেলেদের দিয়েই নতুনদের সেবা করানো হয়। খাতায় নাম থাকলেও বাস্তবে চিকিৎসকই থাকেন না। ঘুমের ওষুধ দিয়ে রোগীকে নিস্তেজ করে রাখা হয় মাসের পর মাস। তাদের অপচিকিৎসায় রোগীরা ভালো তো হন-ই না, উল্টো ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর কাছ থেকে নেয়া হয় লাখ লাখ টাকা।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, নানা অভিযোগে চলতি বছরে ১০টিসহ গত সাত বছরে ৩৯টি নিরাময় কেন্দ্র সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। বন্ধের সুপারিশ পড়ে আছে আরও অন্তত ২১টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আজিজুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নিয়মিত বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করেন। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায়, সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।

নিরাময় কেন্দ্রের অনুমোদন দেয়ার আগে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করা হয় না বলে অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক বাংলাকে বলেছেন, শুরুর দিকে নিরাময় কেন্দ্র করতে সেভাবে কেউ আগ্রহ দেখাত না। তাই কেউ আগ্রহী হলেই ছাড়পত্র দিয়ে দেয়া হতো। এখন সেই পরিস্থিতি নেই। জেলা পর্যবেক্ষণ কমিটির তদন্ত রিপোর্ট ও সুপারিশ না পাওয়া পর্যন্ত কাউকে অনুমতি দেয়া হচ্ছে না।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর ১০টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। ২০১৫ সালে পাঁচটি, ২০১৬ সালে চারটি, ২০১৭ সালে পাঁচটি, ২০১৯ সালে তিনটি, ২০২০ সালে চারটি এবং ২০২১ সালে চারটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। এর মধ্যে ১১টির বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগ, সাতটির বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের, ২১টির বিরুদ্ধে টর্চার সেলে রেখে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ ও প্রমাণ পাওয়া গেছে।

মাদক বাণিজ্যের অভিযোগে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি নোয়াখালীর চৌমুহনীর ‘ক্রিয়া’ মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। রোগীকে আটকে রেখে যৌন নির্যাতনের দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ, সেটি পরিবারকে দেখিয়ে জিম্মি করে অর্থ আদায়ের অভিযোগে ৭ জানুয়ারি গাজীপুরের ‘ভাওয়াল মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্র’র লাইসেন্স বাতিল করা হয়। ওই মাসেই বন্ধ করে দেয়া হয় রাজশাহীর কাজীহাটার ‘চলো বদলাই’, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ‘দীপ্তি’, গাজীপুরের জয়দেবপুরের ‘বন্ধন মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র’। তাদের বিরুদ্ধে যথাক্রমে টর্চার সেলে রেখে নির্যাতন, মাদক বিক্রি, আর অচেতন করে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করার মতো অভিযোগ ছিল।

গাজীপুরের ভাওয়াল মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র বন্ধের পটভূমি ছিল খুবই ভয়ংকর। চলচ্চিত্র নায়ক অনিক রহমান অভিকে নয় মাস আটকে রেখে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রের মালিক ফিরোজা নাজনীন বাঁধনের বিরুদ্ধে। র‍্যাব ওই কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে অভিসহ ২০ জনকে উদ্ধার করে। পরে জানা যায়, কেন্দ্রটিতে পুনর্বাসনের জন্য আসা অভি এবং অনেক অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরের ওপর পাশবিক যৌন নির্যাতন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক।

কেন্দ্রটির পরিচালক আরিফ মাহবুব রোমান জানান, তিনি নিজেও একসময় (২০০৩ সালে) মাদকাসক্ত ছিলেন। নারায়ণগঞ্জের একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে মাদকাসক্তদের চিকিৎসা দিতে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার ছেলে হঠাৎ করেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। লোকলজ্জার ভয়ে তিনি বিষয়টি কাউকে না জানালেও পরিবারের সদস্য মিলে তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে গোপনে মগবাজারের একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সবগুলো ফ্লোর ভাড়া নিয়ে ছেলের চিকিৎসা করানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিছুদিন পর তারা সেখানে গিয়ে বুঝতে পারেন, ছেলেটিকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তদন্তে উঠে আসে, সেখানে চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থাই নেই। নেই চিকিৎসক বা নার্স। ছিল একটি টর্চার সেল, যেখানে রোগীদের উল্টো করে ঝুলিয়ে দিনভর নির্যাতন করা হতো।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ইশরাত চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে বলেন, নানা অভিযোগের ‍মুখে নিরাময় কেন্দ্রগুলোকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। সার্বক্ষণিক মনিটর করা হচ্ছে।

বাতিলের সুপারিশ আরও ২১টির বিরুদ্ধে

সুস্থ ফিরোজকে মাদকাসক্ত সাজিয়ে তার প্রথম স্ত্রী আকলিমা আক্তারের পরিবার উত্তরার রেইনবো মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রে ২২ দিন আটকে রাখে। বিষয়টি জানাজানি হলে গত ৪ অক্টোবর তড়িঘড়ি করে ফিরোজকে আকলিমার পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয় রেইনবো। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অভিযোগ পেয়ে কেন্দ্রটির বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে ঘটনার সত্যতা পায়। ৬ অক্টোবর অধিদপ্তরে জমা দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগেও ২০১৯ সালে জমিসংক্রান্ত একটি বিরোধের জোরে এক ব্যক্তিকে আটকে রাখার অভিযোগ ছিল কেন্দ্রটির বিরুদ্ধে। তাই এর লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

অধিদপ্তরের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোগীদের এমন জিম্মিদশায় ফেলার জন্য ও নানা অনিয়মে সারা দেশে আরও ২১টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ জমা রয়েছে।

লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা করছে কয়েক শ নিরাময় কেন্দ্র

মাদকের ভয়াবহ বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে যত্রতত্র মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র গড়ে উঠছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অনুমোদন না নিয়ে গড়ে ওঠা এসব তথাকথিত কেন্দ্র চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের নামে মাদকাসক্তদের নির্যাতন করে। নজরদারির বাইরে থাকা এসব নিরাময় কেন্দ্রে ইয়াবাসহ সব ধরনের মাদকের অবাধ ব্যবহার চলছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অনেক কেন্দ্রই গড়ে তুলেছেন মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা। ফলে ওই সব কেন্দ্রে যাওয়া রোগীদের স্বজনরা বিপুল অঙ্কের টাকা ব্যয় করলেও কোনো লাভ হচ্ছে না।

র‌্যাব, পুলিশ ও মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের গোয়েন্দা সূত্র বলছে, রাজধানীতে লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৩০০। সারা দেশে লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭০০-৮০০। সুযোগ-সুবিধার বালাই না থাকলেও সাইনবোর্ড লাগিয়ে ব্যবসা খুলে বসেছেন তারা।

সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগে হলি মাইন্ড মাদকাসক্তি ও মানসিক রোগ নিরাময় কেন্দ্র সিলগালা করে দিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)।

কেন্দ্রটির চেয়ারম্যান আ. আজিজ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এটা তো সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। লাইসেন্স নিয়ে এটা পরিচালনা করতে হয়। সেটাই তো জানি না।’

১১ ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

২০২০ সালে রাজধানীর আদাবরে অবস্থিত মাইন্ড এইড মানসিক ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিমকে পিটিয়ে হত্যা করেন সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সে সময় পুলিশ জানায়, মানসিকভাবে অসুস্থ আনিসুল করিমের মৃত্যু আকস্মিক কোনো ঘটনা নয়, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। পুলিশ সে ঘটনায় নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালকসহ ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করে।

২০২১ সালে চিকিৎসাধীন মাহফুজুর রহমানকে ‘পিটিয়ে হত্যা’র ঘটনা ঘটে যশোর মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। পরে জানা যায়, সেটি অনুমোদনহীন কেন্দ্র ছিল। ২০১৪ সালে রাজধানীর বারিধারায় ‘প্রত্যয়’ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে আসাদুল ইসলাম নামে এক রোগীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। তাকে চিকিৎসার নামে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা। একই বছর চট্টগ্রামের ছোটপুলে ‘ছায়ানীড়’ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকে নিজাম উদ্দিন নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

২০১৪ সালের ২ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গায় এনজিও পরিচালিত ‘প্রত্যাশা’ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হেলাল নামে এক মুদি ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়। অন্য রোগীরা বলেন, নির্মম নির্যাতনের কারণে হেলালের মৃত্যু হয়েছে।

নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেন না কেউ

দেশে বিপুলসংখ্যক মাদকসেবীর বেশির ভাগই কোনো না কোনো মানসিক রোগে আক্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র আছে ৩৭০টি। এ কেন্দ্রগুলোতে মোট শয্যাসংখ্যা ৫ হাজার। এর মধ্যে সরকারি কেন্দ্রের সংখ্যা ৪টি। সেখানে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব ২০০ জনকে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন শাখা থেকে জানা যায়, নিরাময় কেন্দ্রের লাইসেন্স পেতে অন্তত ১৩টি শর্ত পূরণ করতে হয়। এর মধ্যে সার্বক্ষণিক একাধিক চিকিৎসক, নার্স, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, প্যাথলজি, পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহব্যবস্থা, সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স ও চিত্তবিনোদন কেন্দ্র থাকা বাধ্যতামূলক। বছরের পর বছর অনিয়মের মধ্য দিয়ে চলে এলেও কেন্দ্রগুলোকে নিয়মের মধ্যে আনতে পারছে না অধিদপ্তর।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে রোগী ভর্তির পর প্রতি মাসে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। এর বাইরে নানা কৌশলে সেবা ফির নামে অর্থ আদায় করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেক নিরাময় কেন্দ্র রোগী ভর্তি করার পর আর ছাড়তে রাজি হয় না। বছরের পর বছর রোগীকে আটকে রেখে চিকিৎসার নামে টাকা আদায় করতে থাকে।

ছেলেকে ঢাকার একটি বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসা দিতে বগুড়া থেকে আসা মা জুলেখা দৈনিক বাংলাকে বলেন, চিকিৎসায় কোনো উন্নতি হয় না। শুধু টাকা যায়। বাসায় গিয়ে আবার সেই ইনজেকশন নেয়। এই অভিভাবক আরও অভিযোগ করেন, মোহাম্মদপুর এলাকায় ওই নিরাময় কেন্দ্র থেকেই তার ছেলে নতুন করে ইয়াবা খাওয়া ধরেছে।

মাদকাসক্তদের নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ‘মানস’-এর সভাপতি এবং জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ডা. অরূপ রতন চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে বলেন, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারণে নিরাময় কেন্দ্রের বেশ কিছু দায়িত্ব আছে। তাদের প্রধান কাজ রোগীর আসক্তি দূর করে সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনা। তবে অসৎ পুনর্বাসন কেন্দ্র যে নেই, তা নয়। এটি নিয়েও সংশ্লিষ্টদেরই কাজ করতে হবে।

কোটি টাকা প্রণোদনাতেও অনিয়ম ছাড়ছে না

বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ও মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহকে সরকারি আর্থিক অনুদান প্রদানের নীতিমালা প্রণয়নের পর ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে অনুদান দেয়ার কাজ শুরু হয়। ওই বছর ৯১টি বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রকে ১ কোটি টাকা অনুদান দেয়া হয়। একইভাবে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে দেড় কোটি টাকা দেয়া হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪০টি বেসরকারি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রকে দেড় কোটি টাকা দেয় সরকার।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (চিকিৎসা ও পুনর্বাসন) উর্মি দে দৈনিক বাংলাকে বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভালো কাজের উৎসাহ দিতেই সরকার এই কার্যক্রম চালু করেছে।

তবে অভিভাবকরা বলছেন, নিরাময় কেন্দ্রগুলো সরকারের অনুদান নিলেও সেবার মান বাড়ায় না। ভুক্তভোগীদের যে দুর্ভোগ সেটি থেকেই যায়।


উপজেলা নির্বাচন: দ্বিতীয় ধাপে ৪৫৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সারা দেশে ৪৫৭ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম আজ রোববার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আগামী ২১ মে, ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার নিমিত্তে In Aid to the Civil Power-এর আওতায় অদ্য ১৯ মে থেকে আগামী ২৩ মে, ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিজিবি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।’

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ভোটগ্রহণ হচ্ছে ২১ মে, মঙ্গলবার। রোববার মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে এ ধাপের প্রচার।

সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন করতে ১৫৭ উপজেলায় একই দিন মাঠে নামছে বিজিবি, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভোটের আগে-পরে পাঁচ দিনের জন্য তারা দায়িত্ব পালন করবে।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব আতিয়ার রহমান শনিবার জানান, বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা পাঁচ দিনের জন্য মাঠে নিয়োজিত থাকবেন। এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে পরিপত্র জারি করেছে।

বিষয়:

প্রবাসফেরত আনোয়ারের বাগানে থোকায় থোকায় রসালো আঙুর

আপডেটেড ১৯ মে, ২০২৪ ১২:৩৭
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা

সবুজ পাতায় আচ্ছাদিত মাচা। তার নিচে থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙুর। দিন কুড়ি পরে পেকে উঠলে তা সংগ্রহ করা হবে বাগান থেকে। আঙুর বাগানের এমন দৃশ্য দেখা গেল দেবিদ্বার উপজেলার মরিচা গ্রামে। ওই গ্রামের সৌদিপ্রবাসী আনোয়ার হোসেন সরকার আঙুর চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। বাগানটি দেখতে স্থানীয়রা ভিড় করছেন প্রতিদিনই।

স্থানীয়রা জানান, মো. আনোয়ার হোসেন সরকার সৌদি আরবে কাজ করতেন। দেশে এসে বিভিন্ন ব্যতিক্রমী ফসলের চাষ করেন। এবার তিনি মনোযোগী হয়েছেন আঙুর চাষে। ১৫ মাস আগে দুই বিঘা জমিতে আঙুর চাষ শুরু করেন। চারা এনেছেন ঝিনাইদহ থেকে।

দলাহাস গ্রামের কাছে সড়কের পাশে উঁচু জমি। সেখানে বাঁশ ও সিমেন্টের পিলার দিয়ে মাচা করা হয়েছে। মাচায় লতানো আঙুর গাছ। হালকা বাতাসে ঝুলছে আঙুর। প্রতিটি থোকায় ৫০ থেকে ১০০টি করে আঙুর রয়েছে।

আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, আঙুর বাগানের পেছনে তার ৬ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। প্রথমবারেই বাগানে ভালো ফলন এসেছে। আশা করছেন সামনের বছর এই ফলন আরও বাড়বে। একই গাছ থেকে ২০-২৫ বছর ফল আসবে বলেও তিনি জানান। আগামীতে আরও তিন বিঘা জমিতে আঙুর চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে আঙুর নিয়ে আনোয়ারের শুরুটা ভালো ছিল না। প্রথম প্রথম এলাকার লোকজন হাসিঠাট্টা করত। বাগানে ফলন ভালো হওয়ায় অন্যরাও উৎসাহিত হচ্ছেন আঙুর চাষে।

উপজেলা কৃষি অফিসার বানিন রায় বলেন, ‘বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ৬০ শতাংশ জমিতে আঙুর বাগান করেছেন কৃষক আনোয়ার হোসেন। আমরা বাগানটি পরিদর্শন করেছি। ভালো ফলন হয়েছে। পরিপক্ব হতে আরও ১৫-২০ দিন লাগবে। ফলন বা বাণিজ্যিক সফলতা বা ব্যর্থতা এখনই বলা যাচ্ছে না। আমরা পরামর্শ দিয়ে তাদের সহযোগিতা করছি।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) শেখ আজিজুর রহমান বলেন, ‘আঙুর মূলত ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় ভালো হয়। এদিকে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে আঙুর চাষ হচ্ছে। তবে কুমিল্লায় যারা আঙুর চাষ করেছেন, তাদের ফল সংগ্রহের পর আমরা একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারব। তারা কেমন সফল হয়েছেন, সেটা তখনই বোঝা যাবে।’


দূষণে মাছশূন্য শীতলক্ষ্যা নদী, পেশা বদল জেলেদের

আপডেটেড ১৯ মে, ২০২৪ ০৮:৩৪
এম এস ডালিম, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ জেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষ্যা নদীর পানি দূষিত হয়ে কালো কুচকুচে বর্ণ ধারণ করেছে। জেলায় গড়ে ওঠা অজস্র শিল্প-কারখানার বর্জ্য নদীতে ফেলায় এই দশা। বিষাক্ত পানিতে নদীর মাছ যাচ্ছে মরে। আর মাছ সংকটে জেলে পরিবারগুলো এই পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ফলে এই জেলায় প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি জেলের সংখ্যা কমেছে।

কয়েক যুগ আগেও নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে জেলেরা জাল ফেললেই ঝাঁকে ঝাঁকে রুই-কাতলা-বোয়ালসহ নানান রকমের মাছ পেতেন। এমনকি ইলিশ মাছ পর্যন্ত পাওয়া যেত। আর তাতেই বেশ স্বাচ্ছন্দে কেটেছে শীতলক্ষ্যা পাড়ের জেলেদের জীবন-সংসার।

কিন্তু সময়ের ব্যবধানে নদীর আশপাশে শত শত শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে এ জেলায়। সেসব প্রতিষ্ঠানের দূষিত পানি সরাসরি ফেলা হয় শীতলক্ষ্যা নদীতে। এতে ধীরে ধীরে নদীর পানি দূষিত হয়ে পড়েছে। আর সেই বিষে নদী মাছশূন্য হয়ে পড়েছে। তবে বর্ষা মৌসুমে অল্প পরিমাণে ঘাউরা, চাপিলা, বাছা মাছ পাওয়া যায়। তবে এটুকু দিয়ে জেলেদের সংসার চালানো মুশকিল। তাই তারা বাধ্য হচ্ছেন পেশা পরিবর্তন করতে।

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জে তরল বর্জ্য নির্গমন হয় এমন শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে চার শতাধিক। এর মধ্যে ৩৪৮টি প্রতিষ্ঠানের পানি শোধনাগার বা অ্যাফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) আছে। বাকি ৬৫টি প্রতিষ্ঠানে ইটিপি নেই।

জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘ইটিপি না থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৩টি প্রতিষ্ঠানের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া নদীদূষণ রোধে সরকারিভাবে নানা প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।’

এদিকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় শীতলক্ষ্যা নদীর নিকটবর্তী একরামপুর এলাকায় জেলে পল্লিতে প্রায় ১১৯টি জেলে পরিবার বসবাস করতেন। তবে এদের মধ্যে এখন মাত্র গুটিকয়েক পরিবারের ১০-১২ জন এ পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। বাকিরা পেশা পরিবর্তন করে গার্মেন্টশ্রমিক, মাছ ব্যবসা, নিম্নআয়ের নানা চাকরিসহ বিভিন্ন পেশা বেছে নিয়েছেন।

এ বিষয়ে জেলেপাড়ার সভাপতি মহাদেব বর্মণ বলেন, শীতলক্ষ্যা নদীতে মাছ না থাকায় অনেক জেলে মেঘনা ও ধলেশ্বরী নদীতে মাছ ধরতে যায়। প্রতি নৌকায় কমপক্ষে ৫-৭ জনের একটি দল মাছ ধরে তা বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে। এই খরচ বণ্টন করে জনপ্রতি কখনো ৫০০ কখনো ২০০-৩০০ টাকা উপার্জন করে। তবে এই টাকা দিয়ে সংসার চলে না। ফলে পরিবারের অন্য সদস্যদের আয়ের ওপর নির্ভর করতে হয় জেলেদের। যে কারণে শতাধিক জেলে পরিবার থেকে এখন মাত্র গুটিকয়েক পরিবারের ১০-১২ জন জেলে এই পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছে।

মহাদেব বর্মণের মেজো ছেলে মিঠু বর্মণ একটি সিমেন্ট তৈরির কারখানায় কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারে চার ভাইয়ের মধ্যে শুধু বড় ভাই জেলে পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। এখন জেলে পেশার অবস্থা ভালো না। তাই আমরা সবাই অন্য পেশা বেছে নিয়েছি।’

পেশা বদল করেছেন জেলে পাড়ার রতন বর্মণ। তিনি এখন পেশায় একজন গার্মেন্টকর্মী। তিনি বলেন, ‘নদীতে মাছ নেই। এরপরও কিছুদিন চেষ্টা করেছিলাম জেলে পেশায় টিকে থাকতে; কিন্তু অভাব-অনটন সংসারে জেঁকে বসে। এ কারণে বাধ্য হয়ে পেশা বদল করেছি।’

নারায়ণগঞ্জ জেলা মৎস্য জরিপ কর্মকর্তা ড. ফজলুল কবীর দৈনিক বাংলাকে বলেন, নদী দূষণের ফলে শীতলক্ষ্যার এখন মাছশূন্য হয়ে পড়েছে। এমনকি শীতলক্ষ্যার পানিদূষণের ফলে মেঘনা নদীর অনেক এলাকার মাছ মারা গেছে। এতে জেলের সংখ্যা দিন দিন কমছে। বর্তমানে এই জেলায় জেলের সংখ্যা প্রায় ৪৬০০ জন, এর মধ্যে নিবন্ধকৃত জেলের সংখ্যা ৪৪৯৫ জন। মৎস্য সম্পদ ও জেলেদের টিকিয়ে রাখতে হলে পানি দূষণমুক্ত করার কোনো বিকল্প নেই।


প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে: পরশ

আপডেটেড ১৮ মে, ২০২৪ ২১:৩৭
পিরোজপুর প্রতিনিধি

যুবলীগ কর্মীদের যে কোন মূল্যে বঙ্গবন্ধু কন্যার অর্জন সমূহ নির্ণয় করতে হবে এবং মানুষের দোরগোড়ায় সুফল পৌঁছে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র রাজপথে মোকাবিলা করতে হবে বলে জানিয়েছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।

আজ শনিবার দুপুরে পিরোজপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পিরোজপুর জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ‘শেখ হাসিনা একজন আত্মপ্রত্যয়ী মানবতাবাদী এবং দূরদর্শী নেতৃত্ব হিসেবে নিজেকে সারা বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি গণমানুষের নেতা থেকে আজকে বিশ্বনেতায় পরিণত হয়েছেন। তিনি তার কর্মের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যে একমাত্র শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য। শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি- জামাত সরকার গঠন করে এদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছিল আর শেখ হাসিনার সরকার সেই জঙ্গিবাদ এ দেশ থেকে নির্মূল করে দিয়েছে। বিএনপি'র অপরাজনীতির একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পরনির্ভর রাজনীতি। তারা দেশের জনগণের বদলে বিদেশী শক্তির উপর নির্ভর করে ক্ষমতায় আসতে চায়। তার অন্যতম কারণ কোন জাতীয় সংকটে বিএনপি কখনোই জনগণের পাশে দাঁড়ায় নাই।’

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘ক্ষমতার লোভে মিথ্যাচার এবং অপপ্রচারের রাজনীতি বন্ধ করেন।’

স্থানীয় সরকারী বালক বিদ্যালয় মাঠে জেলা যুবলীগের প্রথম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সাধারন সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। সম্মেলনে জেলা যুবলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান ফুলুর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আফজাল হোসেন। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মো. মাঈনুল হোসেন খান নিখিল (এমপি)।

অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, পিরোজপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক এমপি এ কে এম এ আউয়াল, পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজ, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক কানাই লাল বিশ্বাস, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সালমা রহমান হ্যাপি,কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোঃ মাজহারুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, উপ-দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, আইটি সম্পাদক এস আই আহম্মেদ সৈকত , কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মহারাজ সহ কেন্দ্রীয়-জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্ধ।


আজ রাত ১টার মধ্যে যেসব জেলায় ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারা বাংলা ডেস্ক

আজ রাত ১টার মধ্যে দেশের পাঁচটি অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালি, নোয়াখালী এবং চট্টগ্রাম অঞ্চল সমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।’

এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।


চা-শ্রমিকের দুই সন্তান জিপিএ-৫ পেলেও উচ্চশিক্ষা নিয়ে শঙ্কায়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর এএটিএম বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এ বছর জিপিএ-৫ অর্জন করেছে কানিহাটি চা-বাগানের শ্রমিক বিরেন্দ্র সিংহের ছেলে মেধাবী ছাত্র অরুপ সিংহ ও ক্যামেলীয়া ডানকান ব্রাদার্স ফাউন্ডেশন স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে সুদর্শন তেলীর মেয়ে স্বর্ণালী তেলী। দুজনই বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। উচ্চশিক্ষা শেষে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে তারা; কিন্তু টাকার অভাবে তারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে।

জানা যায়, অভাব-অনটনের সংসারে বেড়ে উঠেছে অরুপ সিংহ ও স্বর্ণালী তেলীর। অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করে এতদূর এগিয়েছে। তাদের স্বপ্ন অনেক, কিন্তু বাঁধা অর্থ।

সবার সহযোগিতায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায় তারা।

দুই পরিবার অনেক অভাব-অনটনের মধ্যে বসবাস করছে। ছেলেমেয়ের লেখাপড়া করানোর জন্য দুই পরিবারের অভিভাবকরা চিন্তিত। পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের খবর পেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের লেখাপড়া করার সহযোগিতার জন্য ব্যক্তিগতভাবে কিছু অর্থ প্রদান করেন। এ সময় দুই শিক্ষার্থী ইউএনওর সহযোগিতার আশ্বাস পেয়ে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক ক্যামেলীয়া ডানকান ব্রাদার্স হাসপাতালে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত আছেন।

অরুপ সিংহ ও স্বর্ণালী তেলী বলে, ‘উচ্চশিক্ষা অর্জন করে, দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করব। ডাক্তার হয়ে এ দেশের মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করব।’

অরুপ সিংহের বাবা বিরেন্দ্র সিংহ ও স্বর্ণালী তেলীর বাবা সুদর্শন তেলী বলেন, ‘কষ্ট করে এতদূর এসেছে তারা। আমাদের যতই কষ্ট হোক- সন্তানদের পড়াশোনা করাব। মানুষের মতো মানুষ করে তুলব। পাশাপাশি সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’

শমশেরনগর এএটিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিহির ধর চৌধুরী বলেন, ‘দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও অরুপ সিংহের মনোবল ছিল দৃঢ়। তার সাফল্যে আমরা গর্বিত।’

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘অদম্য মনোবল আর ইচ্ছাশক্তির কারণে অরুপ সিংহ ও স্বর্ণালী তেলী সাফল্য পেয়েছে। তাদের প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করা হবে।

বিষয়:

লংগদুতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই কর্মী নিহত: ইউপিডিএফ

রাঙ্গামাটির লংগদু থানা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাঙামাটি প্রতিনিধি

রাঙ্গামাটির লংগদুতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই কর্মী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। পার্বত্য চট্টগ্রামভিত্তিক দলটির প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের পক্ষে নিরন চাকমা আজ শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন দাবি করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে লংগদুর বড়হাড়িকাবার ভালেদি ঘাটের পার্শ্ববর্তী স্থানে (পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি তথা জেএসএস) সন্তু গ্রুপের সাতজনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী এসে সেখানে সাংগঠনিক কাজে নিয়োজিত ইউপিডিএফ কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এ হামলায় ইউপিডিএফ সদস্য বিদ্যা ধন চাকমা ওরফে তিলক (৪৫) ও সমর্থক ধন্য মনি চাকমা (৩৫) ঘটনাস্থলে নিহত হন।’

এতে বলা হয়, নিহত ইউপিডিএফ সদস্য বিদ্যা ধন চাকমার বাড়ি লংগদুর কুকিছড়া গ্রামে। আর ধন্য মনি চাকমার বাড়ি উপজেলার ধুধুকছড়া গ্রামে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, হামলায় নেতৃত্ব দেন পোয়া চাকমা ওরফে আপন (৩২), যার বাড়ি বড় হাড়িকাবার পাশে কুট্টছড়ি গ্রামে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লংগদু থানার ওসি হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এ রকম ঘটনা শুনছি। আমরা ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছি। এখনও পৌঁছাই নাই। ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরে জানা যাবে।’

পুলিশ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নিশ্চিত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, এখনও নিশ্চিত না।’

ইউপিডিএফের দাবির বিষয়ে জেএসএসের কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।


টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ধান কাটতে এসে বজ্রপাতে দু’জন কৃষক নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার নোয়া বাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- দিনাজপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চৌদ্দপুর গ্রামের আব্দুল হোসেন ও আমির হোসেন। তারা দু’জন সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো ভাই।

স্থানীয়রা জানান, কালিহাতী উপজেলার নোয়াবাড়ি গ্রামের হযরত মিয়ার বাড়িতে ধান কাটার জন্য প্রায় সাতদিন ধরে অবস্থান করছেন তারা। পরে আজ সকালে ধান কাটার জন্য গেলে বজ্রপাতে সেখানে আব্দুল হোসেন ও আমির হোসেন মারা যান। পাশে অন্য জমিতে থাকা শ্রমিকরা তাদের উদ্ধার করে কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

কালিহাতী উপজেলার বীর বাসিন্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব মিয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছি। মৃত ব্যাক্তিদের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা আসলে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’

বিষয়:

২০ বছর ধরে রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহ

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৮ মে, ২০২৪ ০৪:১৪
খোরশেদ আলম, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী)

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আঁতাত করে কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী রোগীদের মধ্যে খাবার বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে টানা ২০ বছর ধরে ঠিকাদারি করে আসছে একই প্রতিষ্ঠান। এতে মানসম্মত খাবার সরবরাহ নিশ্চিত হচ্ছে না বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহের অভিযোগ অনেক বছরের। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি এ ধরনের অনিয়ম করে আসছে।

২০০৬ সালে নোয়াখালী সদর উপজেলার খান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জহির খান সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই হাসপাতালের খাদ্য সরবরাহের টেন্ডার নেন। পরে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে খাদ্য সরবরাহের পাওনা টাকার দাবিতে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টেন্ডার প্রক্রিয়া বন্ধ করে রেখেছে চক্রটি। যার কারণে মামলা চলাকালীন অবস্থায় একই প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এই হাসপাতালের রোগীদের নিম্নমানের খাদ্য সরবরাহ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নির্ধারিত পরিমাণের চাইতে কম খাবার দেওয়ার অভিযোগও করেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।

চিকিৎসা নিতে আসা সোনাইমুড়ীর মাহোতোলা এলাকার শাহজাহান বলেন, প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়ে গত দুই দিন ধরে ভর্তি হয়েছেন। তবে হাসপাতলে নিম্নমানের খাবার সরবরাহের কারণে বাইরে থেকে খাবার কিনে খেতে হয়। হাসপাতালে ১৪নং বেডে ভর্তি আছেন ৬০ বছরের আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে যে খাবার দেওয়া হয় তা মুখে নেওয়া যায় না। এ জন্য বাড়ি থেকে পাঠানো খাবার খান।

আরেক রোগীর নাম আবুল কালাম। বয়স ৭০ বছর। বুকে ব্যথা নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৬ নম্বর বেডে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে। সোমবার দুপুরে খাবার হিসেবে তাকে দেওয়া হয় লাউ ও মুরগির মাংস। খেতে না পেরে পাশেই খাবার প্লেট রেখে দিয়েছেন।

জানা যায়, একজন রোগীর খাবারের জন্য প্রতিদিন সরকারিভাবে ১৭৫ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। তবে নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করায় তা খেতে পারেন না অধিকাংশ রোগী। অনেকেই খাবার না খেয়ে ফেলে দেন। আবার কেউ কেউ হাসপাতাল থেকে খাবার না নিয়ে বাড়ি থেকে এনে খান।

দরপত্র অনুযায়ী একজন রোগীর সকালের জন্য প্রতিদিন রুটি, একটি কলা, একটি ডিম ও ২৫ গ্রাম চিনির জন্য মোট ৩৬ টাকা ২৫ পয়সা বরাদ্দ রয়েছে। দুপুরে ও রাতে চিকন চালের ভাত, কারফু বা রুই মাছ, খাশি বা ব্রয়লার মুরগির মাংস, মুগডাল, ফুলকপি, গোল আলু, শিম ও পটলসহ সর্বমোট ১৭৫ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাবার সরবরাহে মোটা চাল, নিম্নমানের কলা, রুটি সরবরাহ করা হয়। অধিকাংশ রোগীই মোটা ভাত খেতে পারেন না।

সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আবুল খায়ের অভিযোগ করে জানান, এ হাসপাতালে প্রধান কর্মকর্তা, আরএমওর যোগসাজশে রোগীদের খাদ্য সরবরাহে অনিয়ম হচ্ছে। প্রতিদিন রোগীদের খাদ্য পরিমাপ করা হয় না, মান যাচাইও করে না। মাসে মাসে এসব কর্মকর্তাদের নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিয়েই ম্যানেজ করে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। আর বাবুর্চি নিম্নমানের তৈল, মসলা দিয়েই রান্না করছে এসব খাদ্য। ঠিকাদার এখানে তেমন আসেনও না। লোকজন দিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করেন।

সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাবুর্চি ওহিদুল আলম জানান, মাইজদী থেকে খান নামক একটি প্রতিষ্ঠান গত ২০ বছর ধরে রোগীদের খাবার সরবরাহ করে আসছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাওনা টাকার দাবিতে একটি মামলা থাকায় টেন্ডার হচ্ছে না। মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য কারও মাথাব্যথা নেই। ফায়েদা লুটতে একটি গ্রুপ টেন্ডার হতে দেয় না। তাকে যা দেওয়া হয় তা দিয়েই তিনি খাবার রান্না করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান খান গ্রুপের স্বত্বাধিকারী জহির খান জানান, রোগীদের সিডিউল মোতাবেক খাবার সরবরাহ করেন। হাসপাতালের ডাক্তাররা তা তদারকি করেন। বকেয়া পাওনা থাকায় আদালতে মামলা রয়েছে, বিধায় টেন্ডার হচ্ছে না।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘খাদ্য সরবরাহের কোনো অনিয়ম নেই। যদি কোনো অভিযোগ পান তাহলে আমাদের জানান। তবে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০ বছর ধরে খাদ্য সরবরাহ করছে এটা সত্য।’

নিম্নমানের খাবার ও দীর্ঘদিন টেন্ডার প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার বিষয়ে প্রতিবেদকের কথা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইসরাত জাহানের সঙ্গে। তিনি ফোনে বলেন, যে খাবার দেওয়া হয়, তা নোয়াখালী জেলার অন্য সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ভালো। এখানে ওজন মেপে খাবার দেওয়া হয়। মামলা থাকায় টেন্ডার বন্ধ রয়েছে।’

নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, ‘রোগীদের খাবার সরবরাহে অনিয়ম রয়েছে, তা জানা নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’


কুমিল্লায় আলুর হিমাগারে মিলল ২১ লাখ ডিম

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লায় একটি আলুর হিমাগারে মিলল অবৈধভাবে মজুত করে রাখা ২১ লাখ ডিম ও ২৪ হাজার কেজি মিষ্টি। বিষয়টির খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষকে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

ওই কোল্ড স্টোরেজে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ওই কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লার লালমাই বরল-বাগমারা এলাকায় অবস্থিত মেঘনা কোল্ড স্টোরেজে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. আছাদুল ইসলাম।

আছাদুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা কোল্ড স্টোরেজে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দেখা যায় কোল্ড স্টোরেজটিতে অবৈধভাবে ২১ লাখ ডিম এবং ৮০০ ড্রাম মিষ্টি যার আনুমানিক ওজন প্রায় ২৪ হাজার কে‌জি ও মিষ্টির সিরা মজুত করে রাখা হয়েছে।

আছাদুল বলেন, ‘এক‌টি আলুর কোল্ড স্টোরেজে এমন বিপুল ডিম ও মিষ্টি মজুত করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এ ছাড়া কোল্ড স্টোরেজ প‌রিচালনায় কৃ‌ষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে কৃ‌ষি পণ্য মজুতের লাইসেন্স প্রয়োজন হলেও কর্তৃপক্ষ সে‌টি দেখাতে ব্যর্থ হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘কৃ‌ষি বিপণনের লাইসেন্স না নিয়ে কোল্ড স্টোরেজ প‌রিচালনা এবং অবৈধভাবে বিপুল সংখ্যক ডিম ও মিষ্টি মজুত করায় কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কৃ‌ষি বিপণন আইন ২০১৮-এর দু‌টি ধারায় ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব পণ্য বাজারজাত করতে লি‌খিত অঙ্গীকারনামা নেওয়া হয়।’

এ ছাড়া কৃ‌ষি বিপণন কর্মকর্তাকে মনিটরিং করে বিষয়‌টি নি‌শ্চিত করে প্রতিবেদন দা‌খিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সময়ে আলুর কোল্ড স্টোরেজে অবৈধ প্রক্রিয়ায় মিষ্টি সংরক্ষণ করায় বিষয়‌টি ভোক্তা অধিকার বিরোধী কাজ হিসেবে আমলে নিয়ে চার মিষ্টি ব্যবসায়ীকে ৬০ হাজার টাকা জ‌রিমানা করা হয়।

মোবাইল কোর্ট প‌রিচালনা করেন, কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান শাওন। অভিযানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. আছাদুল ইসলাম উপ‌স্থিত ছিলেন।


কেএনএফের ১৫ সদস্য রিমান্ড শেষে আবারও কারাগারে

আটক হওয়া কয়েকজন সন্দেহভাজন কেএনএফ সদস্য। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১৭ মে, ২০২৪ ১৯:১৬
সারা বাংলা ডেস্ক

বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংক ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণসহ পুলিশের অস্ত্র লুটপাট ও মসজিদে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ১৫ সদস্যকে দুই দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে আনা হলে শুনানি শেষে তাদেরকে আবারও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার বান্দরবান সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. নুরুল হক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে দুপুরে ১৫ আসামিকে কঠোর পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে বান্দরবান চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) প্রিয়েল পালিত। তিনি জানান, রুমা ও থানচি থানার মামলায় ১৫ আসামিকে ২ দিনের রিমান্ড শেষে দুপুরে আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে আদালত ১৫ আসামিকে আবারও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ২ এপ্রিল রাতে এবং ৩ এপ্রিল দুপুরে বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় সশস্ত্র কেএনএফ সদস্যরা। তারা টাকা লুট করে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে, একজন ব্যাংক ব্যবস্থাপককে অপহরণ করে নিয়ে যায়; টাকার পাশাপাশি লুট করে বেশ কিছু অস্ত্র ও গুলি। এই ঘটনায় রুমা থানায় ৫টি এবং থানচি থানায় ৪টি মামলা দায়ের করা হয়। এরপরই অভিযানে নামে যৌথবাহিনী। এ পর্যন্ত মোট ৯টি মামলায় ৮৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।

বিষয়:

বেনাপোল বন্দরে ৫ দিন বন্ধ থাকবে আমদানি-রপ্তানি

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

ভারতের লোকসভা নির্বাচন, বুদ্ধ পূর্ণিমা ও বাংলাদেশে যশোরের শার্শা উপজেলায় নির্বাচনের কারণে আগামীকাল শনিবার থেকে আগামী বুধবার পর্যন্ত ৫ দিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে।

লোকসভা নির্বাচন কারণে ১৭ মে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামী ২০ তারিখ সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত সরকার।

বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপারে বিধিনিষেধের এ তিন দিনে বাংলাদেশ থেকে নতুন কোনো যাত্রী ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন না, তবে মেডিক্যাল ভিসা বা ইমার্জেন্সি ভিসা নিয়ে কোনো যাত্রী যেতে চাইলে সে ভারতে প্রবেশ করতে পারবে। বাংলাদেশে অবস্থানকারী ভারতীয় যাত্রীরা এ তিন দিনে ভারতে প্রবেশ করতে পারলেও ভারতে অবস্থানকারী বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রীরা বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারবে না। ২১ তারিখ সকাল থেকে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।

বেনাপোল চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতীয় চেকপোস্ট থেকে একটি পত্রের মাধ্যমে লোকসভা নির্বাচনের কারণে তিন দিন যাত্রী পারাপার বিধিনিষেধের বিষয়ে জানতে পেরেছি। এ তিন দিনে নতুন কোনো যাত্রী ভারতের প্রবেশ করতে পারবেন না, তবে বাংলাদেশে অবস্থানকারী ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রীরা ভারতে ফিরে যেতে পারবেন এবং যে সব বাংলাদেশিরা মেডিক্যাল ভিসা বা ইমার্জেন্সি ভিসা নিয়ে ভারতে যেতে চায়, তারাই বন্ধের তিন দিনে ভারতে যেতে পারবেন।’

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম জানান, ভারতীয় লোকসভা নির্বাচন, বুদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি ও শার্শা উপজেলায় উপজেলা নির্বাচনের কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে, তবে এ কয়দিন বেনাপোল বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে।

আগামী বৃহস্পতিবার থেকে পুনরায় দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু হবে বলে তিনি জানান।

বিষয়:

চবির ঝরনায় নিখোঁজ স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার

চবি ঝরনায় গোসল করতে নামা শিক্ষার্থী জুনায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চবি প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ক্যাম্পাসের ‘নিষিদ্ধ’ ঝরনায় গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়া স্কুলছাত্র জুনায়েদ হোসেনের (১৩) মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহত জুনায়েদ হোসেন হাজী মহসিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝরনা থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। আমরা মরদেহটি হাটহাজারী মডেল থানায় পাঠিয়েছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, চট্টগ্রাম শহরের প্রবর্তক বিদ্যালয় ও হাজী মহসিন বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের একটি দল ঘুরতে যায় চবিতে। দুপুর ১২টার দিকে তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝরনায় গোসল করতে নামে। কিছুক্ষণ পর থেকে তাদের একজন কে খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন অন্যান্যরা মিলে ঝরনা ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করেও জুনায়েদকে পান না। পরবর্তীতে তার বড় ভাই ও বাবা ক্যাম্পাসে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জুনায়েদের নিখোঁজ হওয়ার কথা জানান। সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঝরনায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ডুবে যাওয়া স্কুলছাত্র জুনায়েদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত জুনায়েদের বন্ধু ইকরাম হসেন রিমন বলে, ‘আমরা দুই স্কুলের বন্ধুরা মিলে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ জন ঘুরতে আসি। ১২টার দিকে ঝরনায় গোসল করতে নামে সবাই। আমি ড্রেস চেঞ্জ করে সবার শেষে পানিতে নামি। তখন জুনায়েদকে না দেখে জিজ্ঞেস করলে অনেকেই বলে আশেপাশে আছে হয়তো। পরে অনেকক্ষণ খুঁজে না পেয়ে আমরা চলে যাই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র বলেন, ‘বাচ্চাটি দুপুরে নিখোঁজ হয়, কিন্তু তার বন্ধুরা আমাদের কিছু জানায়নি। বিকেলের দিকে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানায়। আমরা দ্রুত ফায়ার সার্ভিসে কল দিলে তারা এসে ঝরনায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে। আড়াই ঘণ্টা অভিযানের পর তার মরদেহটি খুঁজে পাওয়া যায়।’

তিনি বলেন, ‘প্রায় প্রতি বছরই এখানে দুই একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। এ এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। সেখানে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।’


banner close